বিলের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা এ রাস্তায় এখন একদিকে যেমন চলাচলের দুর্ভোগ লাঘব হবে, অন্যদিকে আগের চাইতে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে বেশি ফসল উৎপাদন হবে।
আরও পড়ুন: চসিক নির্বাচন: নগরবাসীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করার প্রতিশ্রুতি বিএনপি প্রার্থীর
স্থানীয়রা জানান, পাকিস্তান আমলে এলাকার পানি নিষ্কাশন এবং রক্তদহ বিল থেকে কৃষি উৎপাদিত ফসল বহন ও চলাচলের জন্য মাধাইমুড়ী গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার একটি খাল কাম রাস্তা নির্মাণ করা হয়। এরপর সংস্কারের অভাবে একদিকে যেমন রাস্তা জমির সাথে মিশে যায়, অন্যদিকে খাল ভরাট হয়ে এলাকার ফসলি জমির পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণ ও বন্যার পানির কারণে জমিতে দীর্ঘ জলাবদ্ধা সৃষ্টি হলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হতে থাকে। এছাড়া বিলের মধ্য থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে উৎপাদিত ফসল পরিবহনে চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই এলাকার মাধাইমুড়ী, মধুপুর, বেলঘড়িয়া ও আমগ্রামসহ প্রায় ৭-৮টি গ্রামের মানুষ।
আরও পড়ুন: ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করার গুরুদায়িত্ব নিয়েছি: মেয়র তাপস
দীর্ঘ ৩০ বছর আগে কোনোমতে খাল খনন ও রাস্তা সংস্কার করা হলেও আবারও আগের মতোই অবস্থা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে কাবিটা প্রকল্প থেকে এক লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ নিয়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। এতেও পুরো নির্মাণ না হওয়ায় মাধাইমুড়ী গ্রামের লোকজন বাধ্য হয়ে নিজেদের থেকে প্রায় এক লাখ ৬ হাজার টাকা উত্তোলন করে রাস্তা নির্মাণ কাম খাল খনন কাজ শুরু করে। এরপরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মন্ডল বাবলু এগিয়ে এসে আরও এক দফা কাবিটা প্রকল্প থেকে আরও এক লাখ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ এনে খাল থেকে মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে মানববন্ধন
মাধাইমুড়ী গ্রামের শফিকুল ইসলাম, নুরুল হক ও আব্দুল হালিম শিশিরসহ অনেকে জানান, রাস্তা না থাকায় ধান কাটা, মাড়াই ও পরিবহনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এছাড়া খাল ভরাট হওয়ায় বর্ষা ও বন্যার পানিতে দীর্ঘ জলাবদ্ধতা থাকার কারণে কয়েক হাজার বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হতো। এখন মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ করায় একদিকে যেমন পরিবহন দুর্ভোগ লাঘব হবে, অন্যদিকে পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ফলে অধিক পরিমাণ জমিতে ফসল উৎপাদন হবে।
আরও পড়ুন:বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, চরম দুর্ভোগে ডিএনডিবাসী
তবে এলাকাবাসী জানান, এরপরও আরও প্রায় দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার রাস্তা কাম খাল খনন অবশিষ্ট থাকল। দুর্ভোগ পুরোপুরি লাঘব করতে প্রকল্পের মাধ্যমে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন তারা।
চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে কাজ শেষ করলে আরও অন্তত আড়াই কিলোমিটার রাস্তা অবশিষ্ট থাকবে। যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পের মাধ্যমে বরাদ্দ নিয়ে অবশিষ্ট রাস্তা নির্মাণ ও নির্মাণকৃত রাস্তায় ইট সোলিংয়ের কাজ করা হবে। এতে রাস্তা ও খাল দুটিই সচল হবে।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে মৌসুমের রেকর্ড বৃষ্টিপাত, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে শহরবাসী
রানীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে যেত। এছাড়া রাস্তা না থাকায় কৃষকদের ধান কাটা, মাড়াই ও কৃষিপণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হতো। এ জন্য গত বোরো মৌসুমে ওই এলাকার কৃষকদের সংগঠিত করেছিলাম রাস্তা নির্মাণ ও খাল খননের জন্য। তারা সফল হয়েছেন।’
আরও পড়ুন: পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ: সিডিএ’র পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা