কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার মো. জসিম মোল্লা (৩০) জীবিকার তাগিদে থাকেন প্রবাসে। স্ত্রী হালিমা খাতুন গৃহিণী। ঘরের কাজের পাশাপাশি গৃহবধূ হালিমা একটি ষাঁড় গরু লালন-পালন করেছেন।
ছয় বছরের সংসার জীবন তাদের। প্রায় চার বছর ধরে সন্তানের মতোই গরুটিকে পরিচর্যা করে আসছেন। আদর করে গরুটির নাম রেখেছেন ‘রাজাবাবু’।
এই দম্পতি উপজেলার সদকী ইউনিয়নের উত্তর মূলগ্রামের বাসিন্দা। রাজাবাবু নামের ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুটির উচ্চতা প্রায় পাঁচ ফুট ১০ ইঞ্চি এবং লেজ থেকে মাথার দৈর্ঘ্য প্রায় আট ফুট। যার ওজন আনুমানিক ৯৫৭ কেজি অর্থাৎ ২৩ মণের বেশি। হালিমা গরুটির দাম চাচ্ছেন ১০ লাখ টাকা।
জানা গেছে, প্রায় ছয় বছর আগে উত্তর মূলগ্রামের মৃত সামছদ্দিন মোল্লার ছেলে জসিম মোল্লার সঙ্গে একই এলাকার মো. চাঁদ আলীর মেয়ে হালিমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পরের বছর জসিম মোল্লা জীবিকার তাগিদে চলে যান ইরাকে। আর হালিমাকে তার শ্বশুর ফ্রিজিয়ান বাছুরসহ একটি গাভী গরু কিনে দেন। সেই বাছুরটিই আজকের বিশাল রাজাবাবু।
প্রায় চার বছর ধরে ঘাঁস, খড়, ছাল-ছোলা, ভুট্টাসহ বিভিন্ন খাবার দিয়ে নিজের সন্তানের মতোই গরুটিকে পালন করেছেন হালিমা। প্রতিদিন প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার খাবার খায় গরুটি। এটিকে ঘিরেই হালিমার চোখে এখন নানান স্বপ্ন।
কোরাবানির ঈদের সময় ঘনিয়ে আসছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্রেতাদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে তার দুশ্চিন্তার শেষ নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টিনশেডের পাকা মেঝের ঘরের সামনে একটি আম গাছ রয়েছে। সেখানে দড়ি দিয়ে বাঁধা রয়েছে কালো রঙের রাজাবাবু। তাকে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন হালিমা খাতুন।
এ সময় হালিমা খাতুন বলেন যে তিনি প্রায় চার বছর ধরে নিজ সন্তানের মতোই গরুটিকে লালন-পালন করছেন। দেখতে সুন্দর ও বিশাল দেহের অধিকারী হওয়ায় তিনি আদর করে নাম রেখেছেন রাজাবাবু। তার প্রতিমাসে ঘাঁস, খড়, ছোলা, গম, ধানের গুড়াসহ গরুর খাবাবের জন্য প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
প্রায় ২৩ মণ ওজনের গরুটিকে তিনি ১০ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন।