রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।
সিঁড়ির নিচে সন্তান প্রসব করা প্রসূতি মরিয়ম বেগম (২৫) শাহজাদপুর উপজেলার খাস সাতবাড়িয়া গ্রামের শাহিন আলমের স্ত্রী।
মরিয়মের নিকট আত্মীয় আয়েশা খাতুনের অভিযোগ, ‘রবিবার সকালে হাসপাতালের গাইনি বিভাগে মরিয়মকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে কোনো সিট না থাকায় তাকে মেঝেতে রাখা হয়। এরপর সারাদিন কোনো চিকিৎসক তাকে দেখতে আসেননি। সন্ধ্যায় ডা. আফরোজা খাতুন এসে মরিয়মকে দেখে সিজার করার কথা বললে বিভিন্ন পরীক্ষা করানোর পর অতিরিক্ত রক্তের ব্যবস্থা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে মরিয়মকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেয়ার কিছুক্ষণ পরেই রোগীর অবস্থা ভালো না এবং সিজার করানো সম্ভব না বলে জানিয়ে দেন ডাক্তাররা। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে রেফার্ড করা হয়।’
প্রসূতি মরিয়ম বলেন, ‘আমার যখন প্রচন্ড প্রসব ব্যথা ওঠে ঠিক তখনই অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে আমাকে বের করে দেয়া হয়। চিকিৎসকরা প্রসব করানোর কোনো চেষ্টাই করেননি। প্রসব যন্ত্রণা নিয়েই সিঁড়ি বেয়ে হেঁটে নিচতলায় আসি। এরপর মেঝেতে শুয়ে পড়ি। সেখানেই আমার একটি কন্যা সন্তান প্রসব করান সাথে আসা দাইমা করিমুন্নেসা।’
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ভর্তির পর রবিবার গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. মাহবুবা বেগম, রেজিস্টার ডা. তুহিন ও সহকারী রেজিস্টার ডা. আফরোজা খাতুন ওই রোগীকে দেখেছেন। ওই প্রসূতিকে কেন রেফার্ড করা হয়েছিল কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে তা জানার চেষ্টা করছি।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর সদর উপজেলার রূপসাচর এলাকার আব্দুর রহিমের স্ত্রী রহিমা খাতুন নামে এক প্রসূতিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ হাসপাতাল থেকে রেফার্ড করা হয়। ওই প্রসূতি সিএনজি অটোরিকশায় ওঠার সময় হাসপাতালের প্রধান ফটকে সন্তান প্রসব করেন।
এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
সিরাজগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের মেঝেতে সন্তান প্রসবের বিষয়টি এখনো তাকে কেউ জানায়নি। তবে ১ ডিসেম্বর হাসপাতাল ফটকে প্রসূতির সন্তান প্রসবের বিষয়টি জানার পর দুটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।