আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের দিন রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রবিবার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে 'বঙ্গবন্ধু সমগ্র' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ। এ কর্মসূচি নিয়ে আপনারা চাপ অনুভব করছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, 'দেখুন বিএনপির মহাসমাবেশ, ছোট সমাবেশ, মাঝারি সমাবেশ, বিএনপির হাঁটা কর্মসূচি, দৌড় কর্মসূচি, বসা কর্মসূচি, ভবিষ্যতে হয়তো হামাগুড়ি কর্মসূচি- এগুলো নিয়ে আমরা কখনোই চাপ অনুভব করিনি। আমরা রাজপথের দল আমরা রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব। ২৮ তারিখে রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে ইনশাআল্লাহ।'
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে তা ধুলায় মিশে গেছে। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে- এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'ফখরুল সাহেব আসলে কি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন- এটি তার কাছে আমার প্রথম প্রশ্ন। কারণ তিনি কয়েক মাস আগে বলেছিলেন পাকিস্তানই ভালো ছিল। যিনি পাকিস্তানই ভালো ছিলেন বলেছেন, তিনি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন কি না সেটি তো বিরাট একটা প্রশ্ন।'
আরও পড়ুন: যমুনা-বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়ার জন্য বিএনপির রোড মার্চ: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, 'আমি কারো বাবা নিয়ে কথা বলতে চাই না। তার (মির্জা ফখরুল) বাবা পাকিস্তান সমর্থক একজন মানুষ ছিলেন, এটি দিবালোকের মতো সত্য। সত্যকে তো কেউ অস্বীকার করতে পারে না। তার (মির্জা ফখরুল) বক্তব্য বলে তিনি বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্নই দেখেননি। যারা বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখেনি বরং পাকিস্তানের পক্ষে অবলম্বন করেছিল, সেইসব লোকের সন্নিবেশ ঘটিয়ে বিএনপি গঠিত হয়েছিল।'
'স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশটা রচনা করে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আমাদের পূর্বসূরী মুক্তিযোদ্ধারা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকরা- সেই দেশের চেতনার বেদীমূলে আঘাত করেছিল জিয়াউর রহমান ও বিএনপি।'
মির্জা ফখরুলরা যেসব কথা বলে তা নিজেরা বিশ্বাস করেন না মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সব সূচকে আমরা পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি। যখন দেশকে নিয়ে সবাই প্রশংসা করে, উনি তখন হতাশ। কারণ উনি পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেন।'
বিএনপি অভিযোগ তুলেছে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে থেকে জিয়াউর রহমানকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি- এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, 'এটি বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে একটি বায়োপিক। বঙ্গবন্ধু কীভাবে খোকা থেকে শেখ মুজিব, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হলেন এই ছবিতে সেটি উঠে এসেছে। এই ছবির দেশে-বিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। বিদেশ থেকে আমি প্রতিদিন ফোন ও মেসেজ পাই, কখন তারা ছবিটা দেখতে পাবেন। কবে এটি আন্তর্জাতিকভাবে রিলিজ হবে।'
'যখন মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া তখন স্বাভাবিকভাবেই বিএনপির একটু গাত্রদাহ হচ্ছে হয়তো। তাদের দু-একজন কথা বলেছেন, একটা লিগ্যাল নোটিশও নাকি দেওয়া হয়েছে। যেগুলো ঐতিহাসিক সত্য সেই ঘটনাগুলোই এখানে উঠে এসেছে।'
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর খুনের সঙ্গে যে জিয়াউর রহমান যুক্ত ছিল সেটি খুনিরাই দম্ভ করে যখন খুনের দায় স্বীকার করেছেন তখনই বলে গিয়েছিল। সেই রেকর্ড আছে, সেটা আপনারা দেখেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আছে। এই মামলায় সাধারণ আদালতে বিচার হয়েছে, এক যুগের বেশি সময় ধরে বিচার হয়েছে। খুনি ও সাক্ষীরা সবাই জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন।'
তিনি বলেন, 'ছবিতে সেই বিষয়টি পুরো আসেনি। বিএনপি যদি বলে থাকে জিয়াউর রহমানকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। সেটা সঠিক, কারণ উনি যে কী পরিমাণ বঙ্গবন্ধুর খুনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, ছবিতে সেটা পুরো আসেনি।
তিনি আরও বলেন, আমি যদি পরিচালক হতাম তবে আরও একটু বেশি করে দেখাতাম। কারণ ইতিহাসটা জানা প্রয়োজন।'