‘আমি সঠিকভাবে বাঁচতে চাইছিলাম, কিন্তু পারলাম না। ওরা আমার পেছনে খুব ভালোমতো লেগেছে। আমি না মরা পর্যন্ত শান্তি পাবে না। শুভ, আলিফ, মিহির ওরা আমাকে বাঁচতে দিলো না।’
খুলনার কয়রায় কলেজছাত্রী তনুশ্রী মাঝি (১৮) তিনজনকে দায়ী করে এই সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের হড্ডা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
মৃত তনুশ্রী মাঝি দীপক মাঝির একমাত্র মেয়ে। এছাড়া তনুশ্রী গড়ইখালী আবু মুছা মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
আরও পড়ুন: মোবাইল গেম খেলতে না দেয়ায় স্কুলছাত্রের ‘আত্মহত্যা’
দীপক মাঝি জানান, দুপুরের খাবার খেয়ে নদীর চরে গাছ থেকে কেওড়া পাড়তে যান। বিকালে সাড়ে ৪টার দিকে জানতে পারেন তার মেয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে। দ্রæত বাড়ি এসে মেয়ের ঘরে দরজা দেয়া দেখতে পেলে জানালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন। তিনি মেয়ের পা উঁচু করে ধরেন এবং তার মা দড়ি কেটে দেয়। তখন বেডে শোয়ানোর সময় মোবাইল দিয়ে চাপা দেয়া একটি কাগজ দেখতে পান।
ওই কাগজে তিনজনকে দায়ী করে নোট লেখা ছিল।
মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের মেম্বার চায়না মন্ডল বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে খবর পেয়েই আমি তনুশ্রীদের বাড়ি যাই। সেখানে গিয়ে দেখি সে ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশ সেখান থেকে একটা সুইসাইড নোট উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)এবিএমএস দোহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ওই কলেজ ছাত্রীর লাশ উদ্ধারের সময় একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই নোটে মৃত্যুর জন্য তিনজনকে দায়ী করেছেন তনুশ্রী। সুইসাইড নোটের একটি অংশে লেখা ছিল-আমি সঠিকভাবে বাঁচতে চাইছিলাম, কিন্তু পারলাম না। ওরা আমার পেছনে খুব ভালোমতো লেগেছে। আমি না মরা পর্যন্ত শান্তি পাবে না। শুভ, আলিফ, মিহির ওরা আমাকে বাঁচতে দিলো না।
তিনি আরও জানান, লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের হাতের লেখা যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আত্মহত্যার বিষয়ে করো প্ররোচনা থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় তরুণ-তরুণীর বিষপানে আত্মহত্যা
ডুমুরিয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূর বিষপানে আত্মহত্যার অভিযোগ