খাদ্য সংকট
দেশের খাদ্য সংকট দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত: মন্ত্রী
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দেশের খাদ্য সংকট দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত।
তিনি বলেন, খাদ্য ও প্রাণিজ আমিষের যোগান আসে এ খাত থেকে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও ভূমিকা রাখছে এ খাত।
বুধবার (২২ নভেম্বর) সকালে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরাম (এফএলজেএফ) প্রকাশিত ‘এফএলজেএফ ভয়েসের’প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: শ্রম অধিকার রক্ষায় সরকার ও শ্রমিকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে যুক্ত তা তুলে ধরেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী: মুখপাত্র মিলার
এসময় মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ৫২টি দেশে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি হয়। বাংলাদেশ থেকে মাংস রপ্তানিরও অনেক সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ বিদেশে বাংলাদেশের মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এজন্য রোগ মুক্ত গবাদিপশুর অঞ্চল তৈরি করে আমরা মাংস রপ্তানির প্রক্রিয়ায় রয়েছি।
তিনি বলেন, এভাবেই সাম্প্রতিককালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। এ উন্নয়ন দৃশ্যমান উন্নয়ন, এ উন্নয়ন কথার ফুলঝুড়ি নয়, এ উন্নয়ন বাস্তবসম্মত উন্নয়ন। এ উন্নয়নের একটি বড় অংশীদার গণমাধ্যমকর্মীরা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত বিকশিত হওয়ার অনেক পথ ও পন্থা দেখিয়েছে গণমাধ্যম।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৮২ শতাংশ, এটি বিস্ময়কর। এক সময় বলা হতো মাছের আকাল, মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ যেগুলো একসময় বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গিয়েছিল, সেগুলো এখন সবখানে পাওয়া যাচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আমরা অর্জন করেছি। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাছের মোট উৎপাদন হয়েছে ৪৯ দশমিক ১৫ লাখ টন লাখ মেট্রিক টন, যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মোট উৎপাদনের চেয়ে প্রায় ৮২ শতাংশ বেশি।
তিনি বলেন, মাছ উৎপাদনে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও এসেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, চাষের মাছ উৎপাদনে পঞ্চম এবং ইলিশ আহরণে প্রথম স্থানে রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, জনসাধারণের জন্য নিরাপদ খাদ্য সরবরাহের লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এ মন্ত্রণালয়ের আওতায় আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাবরেটরি করা হয়েছে। ফলে দেশের মানুষের খাবারের জন্য মাছ সুস্বাদু ও নিরাপদ হবে এবং বিদেশে রপ্তানির মাছও নিরাপদ হবে। ফলে মাছ রপ্তানিতে মানসম্পন্ন জায়গায় আমরা পৌঁছুতে পেরেছি। নিরাপদ মাছ উৎপাদনের জন্য মৎস্য ও পশুখাদ্য আইন, ২০১০ ও মৎস্য ও মৎস্যপণ্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ আইন, ২০২০ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সামুদ্রিক মাছের টেকসই আহরণ ও ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০২০ ও সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ নীতিমালা ২০২২ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের সমুদ্রসীমায় মৎস্য নৌযান মনিটরিং, কন্ট্রোল ও সার্ভিল্যান্স জোরদারকরণে ভেসেল মনিটরিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জয়েন্ট মনিটরিং সেন্টার। এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৫০০টি আর্টিসনাল মৎস্য নৌযান ও ৫টি বাণিজ্যিক মৎস্য নৌযান প্রযুক্তিভিত্তিক ভেসেল মনিটরিং সিস্টেমের আওতায় আনা হয়েছে। সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ‘গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে পাইলট প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে আসার জন্য সরকার কাউকে চাপ সৃষ্টি করছে না: তথ্যমন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ খাতের অর্জন তুলে ধরে এসময় মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। দুধ উৎপাদনের পরিমাণও পূর্বের তুলনায় অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত ১৫ বছরে দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন যথাক্রমে প্রায় ৫ গুণ, ৭ গুণ এবং ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতের খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান, উপকরণ সহায়তা প্রদান ও সহজ শর্তে সরকার ঋণ দিচ্ছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃত্রিম প্রজনন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। প্রাণিচিকিৎসা খামারির দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের ৬১টি জেলার ৩৬০টি উপজেলায় মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ফলে অসুস্থ প্রাণিকে এখন হাসপাতালে নিতে হয় না, হাসপাতাল প্রাণির কাছে চলে যাচ্ছে। প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নের ফলে কোরবানির সময় এখন পাশ্ববর্তী দেশের ওপর নির্ভর থাকতে হয় না বরং উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে কোরবানির হাটে গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকছে।
শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, দেশে চিড়িয়িাখানা পরিচালনার জন্য কোনো আইন ছিলনা। সম্প্রতি চিড়িয়াখানা আইন সংসদে পাশ হওয়ায় দেশের চিড়িয়াখানার আইনগত ভিত্তি তৈরি হয়েছে। দেশে ডেইরি খাতের জন্য ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড ছিল না। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সম্প্রতি ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড গঠনের উদ্দেশ্যে সরকার আইন প্রণয়ন করেছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল ও মো. আব্দুল কাইয়ূম, যুগ্মসচিব ও মন্ত্রীর একান্ত সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার, ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি এম এ জলিল মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম সুমনসহ ফোরামের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত মানুষ পুড়িয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়: প্রধানমন্ত্রী
১১ মাস আগে
বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের কোনও শঙ্কা নেই: বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি
সারা বিশ্বে খাদ্য সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের কোনও শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
বৃহস্পাতিবার সচিবালয়ে সংস্থাটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন আমন কাটা চলছে। তারা আমাকে বলেছে যে তাদের কাছে তথ্য আছে কোনও ক্রমেই বাংলাদেশে খাদ্য সংকট বা দুর্ভিক্ষ হওয়ার সামান্যতম সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ডব্লিউএফপিএ'র কান্ট্রি ডিটেক্টরের সাক্ষাৎ
তিনি আরও বলেন, ‘ইউএন ও বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন মাল্টিলেটারাল ডোনারা অনুমান করছে যে পৃথিবীতে একটি খাদ্য সংকট হওয়ার সম্ভাবনা আছে অতিসত্ত্বর। এটাকে বিবেচনায় নিয়েই সরকার কাজ করছে। স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সহযোগিতা করছে। ছয় বছর যাবৎ রোহিঙ্গাদের জন্য যে খাদ্য প্রয়োজন সেটিও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মাধ্যমেই দেয়া হচ্ছে।’
মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ বাংলাদেশকে তারা কিভাবে দেখছে এবং কিভাবে ভবিষ্যতে এখানে তারা কাজ করবে তা নিয়ে কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের আমনটা একটি মূল ফসল। প্রতিকূলতার মধ্যে সেচ দিয়ে কৃষকরা ধান লাগিয়েছে। সবাই বলছে যে স্মরণাতীতকালে সবচেয়ে ভালো ধান হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বলি, গরীব মানুষ আছে তাদের কষ্টও হচ্ছে। তবে টাকা নিয়ে খাবার কিনতে পারছে না এমন পরিস্থিতি হয়নি।
ডলার সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বলেছি সার আমদানিতে কোনও সমস্যা তৈরি করা যাবে না। এটার পেমেন্ট স্মুথ করতে হবে। খাদ্য আমদানিতে কিছু প্রভাব পড়ছে। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গত আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পরিমাণ খাদ্য আমদানি হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রায় ৮০০ প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু দুই থেকে তিন লাখ টনও আসেনি। এই মুহূর্তে খাদ্যের দাম বাড়ার ট্রেন্ড নাই। খাদ্যের দাম কমেছে বলেই মূদ্রাস্ফীতি এ মাসে কমে এসেছে।
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ডলার সংকট হবে না। এখনও ২৭ বিলিয়ন রিজার্ভ তো আছেই। আমদানি ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ডলার দিতে পারবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ‘ফুড কর্নার’ ফের খুলেছে ডব্লিউএফপি
ডব্লিউএফপি’র নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি বাংলাদেশ
২ বছর আগে
বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে: খাদ্য দিবস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং অনাবাদি জমিকে কৃষিকাজে ব্যবহারের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই খাদ্যের অপচয় বন্ধ করতে হবে এবং নিজেদের খাদ্য তৈরি করতে হবে... আমরা যদি সবাই মিলে কাজ করি, তাহলে বাংলাদেশ (বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের) প্রভাবের সম্মুখীন হবে না। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
সোমবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা জনগণের দোরগোড়ায় নিতে সক্ষম হবে দেশ’
তিনি বলেন, ‘আমি সকলকে অনুরোধ করতে চাই কোনো খাবার নষ্ট না করতে এবং খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে। আপনার যে জমি আছে তা চাষ করুন। আমরা আসন্ন বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের লক্ষণ দেখছি। বাংলাদেশকে এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, তার সরকার বাংলাদেশে পুষ্টিকর, সুষম ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। যেহেতু বিশ্বে এ ধরনের খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে, তাই উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে।
এ বছর রবিবার (১৬ অক্টোবর) ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়। বিশ্বজুড়ে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্ব খাদ্য দিবস পালিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সঠিকভাবে এই সময়োপযোগী থিমটি বেছে নিয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী ও কৃষি সচিব সায়েদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: সামনের কঠিন দিনগুলো মোকাবিলা করার জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়ান: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ এড়াতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
২ বছর আগে
বৈশ্বিক খাদ্য সংকটে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মহামারি করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে আগামীতে বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের আশঙ্কা থাকলেও এতে বাংলাদেশের খুব ক্ষতি হবে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও খালি থাকবে না। সরকার খাদ্য নিশ্চয়তার চেষ্টা করছে। খাদ্যের ব্যবস্থা করতে পারলে অন্যকিছুও ব্যবস্থা করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি কর্মী নেবে মলদোভা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বিকালে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের আম্বরখানা-টুকেরবাজার অংশ চার লেনে উন্নীতকরণ কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক বলেছে আমাদের জিডিপি খুব ভালো। বিশ্বের অন্যান্য দেশের জিডিপি যেখানে ৩ শতাংশের মতো, সেখানে আমাদের ৬ এর ওপরে। বাংলাদেশ সবসময় বাস্তবতার নিরিখে কাজ করে, তাই দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটের আম্বরখানা-টুকেরবাজার সড়কের সংস্কার ও চার লেন কাজের উদ্বোধন করেন। সড়কটির ৬ কিলোমিটার অংশ সংস্কার ও পুনর্নির্মাণে প্রায় ৩৫ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভার্জিনিয়ায় বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শিনজো আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যোগদান
২ বছর আগে
এশিয়ায় খাদ্য সংকট মোকাবিলায় ১৪ বিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) মঙ্গলবার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান খাদ্য সংকট কমাতে এবং দীর্ঘমেয়াদী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০২০-২০২৫ সালের মধ্যে কমপক্ষে ১৪ বিলিয়ন ডলার দেয়ার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে।
এই অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এডিবি আগে থেকেই বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। কেননা এ অঞ্চলের প্রায় ১.১ বিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্য ও খাদ্যের দামের কারণে স্বাস্থ্যকর খাবারের অভাব রয়েছে, চলতি বছর যা রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এডিবি জানায়, খামার স্থাপন, খাদ্য উৎপাদন ও বন্টন, সামাজিক নিরাপত্তা, সেচ এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার মতো প্রকৃতি-ভিত্তিক বিভিন্ন খাতে চলমান ও নতুন প্রকল্পগুলোতে এ অর্থায়ন করা হবে।
সংস্থাটি আর জানায়, তারা এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখে এমন অন্যান্য কার্যক্রমেও বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। যেমন- জ্বালানি স্থানান্তর, পরিবহন, গ্রামভিত্তিক বাণিজ্যে প্রবেশাধিকার, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা।
আরও পড়ুন: আ.লীগের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যেও হাজারীবাগে বিএনপির সমাবেশ
এডিবি’র ৫৫তম বার্ষিক সভায় বক্তব্য দেয়ার সময় সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, ‘এই ধরনের সংকটের জন্য এটি একটি সময়োপযোগী ও জরুরি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।’
ইউক্রেনের পরিস্থিতির কারণে খাদ্যের প্রধান উপাদান এবং সারের সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও মহামারির প্রভাবে আগে থেকেই খাদ্য সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া টেকসই চাষের অনুশীলনের অভাবে ইতোমধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়া খাদ্য ব্যবস্থা আরও চাপে পড়েছে।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল খাদ্য সংকটের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এ অঞ্চলের কিছু দেশ খাদ্য আমদানি ও সারের ওপর নির্ভরশীল।
ইউক্রেন সংকটের আগেও এডিবির অনেক স্বল্প-আয়ের সদস্য দেশে জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশের জন্য পুষ্টিকর খাবার ছিল না।
নাজুক লোকেদের সহায়তার পাশাপাশি এডিবি’র খাদ্য নিরাপত্তা সহায়তা উন্মুক্ত বাণিজ্য, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের ফসল উৎপাদন ও জীবিকা উন্নত করবে এবং সারের ঘাটতি কমাবে। সেইসঙ্গে এর দক্ষ ব্যবহার বা জৈব বিকল্পগুলোকে উন্নত করবে, খাদ্য উৎপাদন ও বন্টনে বিনিয়োগে সহায়তা করবে, পুষ্টি বৃদ্ধি করবে এবং সমন্বিত ও প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি থেকে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশকে রক্ষা করা একটি মূল লক্ষ্য হবে। যার ফলে মাটি, মিঠা পানি ও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের অবনতি হয়েছে।
মি. আসাকাওয়া বলেছেন, ‘আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করা এবং কৃষক ও কৃষিব্যবসাকে সহায়তা করা। যারা এই অঞ্চলের বেশিরভাগ খাদ্য উৎপাদন ও বিতরণ করে। এবং তা নিশ্চিত করার জন্য মুক্ত বাণিজ্যকে উৎসাহিত করা, যাতে এটি সঠিকভাবে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছায়।’
এই প্রোগ্রামের অধীনে সহায়তা এই বছর শুরু হবে এবং ২০২৫ সাল পর্যন্ত চলবে।
এটি এডিবি-এর সার্বভৌম ও বেসরকারি খাতের কার্যক্রম থেকে নেয়া হবে এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বেসরকারি খাতের সহ-অর্থায়নে অতিরিক্ত পাঁচ বিলিয়ন ডলার লাভের চেষ্টা করবে।
এডিবি ২০০৭-২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের সময় এবং পরবর্তী বছর তার খাদ্য নিরাপত্তা অপারেশনাল পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে, তার সদস্যদের সমর্থন থেকে শেখা অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করবে।
তারপর থেকে এডিবি খাদ্য নিরাপত্তায় বার্ষিক বিনিয়োগে দুই বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে এবং ২০১৮ সালে এডিবি খাদ্য নিরাপত্তাকে একটি মূল অপারেশনাল অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আরও পড়ুন: পাটখাতের উন্নয়ন,আধুনিকায়ন ও রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে: পাটমন্ত্রী
পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাবে দেশের পর্যটন শিল্প: প্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে
তীব্র খরায় বাগেরহাটে আমন উৎপাদন ব্যাহত
আমন ধান উৎপাদনে বিপর্যয় বাগেরহাটে আসন্ন খাদ্য সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বাগেরহাটে ৪৮৯ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হয়েছে। ফলে আমন মৌসুম প্রায় শেষের দিকে খরার পরিস্থিতির কারণে জেলার প্রায় ৪০ শতাংশ কৃষি জমি অনাবাদি পড়ে আছে।
পানির অভাব কৃষকদের আমনের চারা রোপণ করা কঠিন হয়ে উঠেছে এবং যারা ইতোমধ্যে চারা রোপণ করেছেন তারা তাদের ফসল হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ধান চাষ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা এবং কৃত্রিমভাবে বৃষ্টিপাতের কথা ভাবছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাটে মোট দুই লাখ ৪৪ হাজার ৩২৮টি কৃষক পরিবার রয়েছে। ১ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমন ধান রোপনের মৌসুম। বাগেরহাট জেলায় এ বছর ৭৪ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে দুই লাখ ৬৬ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পর্যন্ত আবাদ হয়েছে প্রায় ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনায় বন্ধ হওয়া ৬ ট্রেন চালু হয়নি, দুর্ভোগে যাত্রীরা
এছাড়া বাগেরহাটে চলতি বছরের মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত দুই হাজার ৫৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে তিন হাজার ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সে হিসাবে জেলায় ৪৮৯ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হয়েছে।
বাগেরহাটের কচুয়া ও ফকিরহাট উপজেলায় সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানকার সব ধান খেতে ফাটল ও আগাছা দেখা দিয়েছে। খাদ্য সংকটে উদ্বিগ্ন কৃষকরা সেচের মাধ্যমে চারা বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। জেলার সদর, শরণখোলা ও মোল্লারহাট উপজেলায়ও একই অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয় কৃষক শেখ আসাদুর রহমান প্রতি বছর পাঁচ একর জমিতে ধান লাগান। জমিতে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে তিনি সংসার চালান। এ বছর মৌসুমের শুরুতে জমিতে প্রথমবার যে বীজপাতা তৈরি করেছিল তা বীজতলায় মারা গেছে। দ্বিতীয়বার চেষ্টা করে অল্প পরিমাণ জমিতে বীজপাতা তৈরি করেছে। দুইবারের চেষ্টার বীজপাতা এখন গরু-ছাগলে খাচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্কুলশিক্ষকের তৈরি ভাসমান সেতুতে দুর্ভোগের অবসান হলো গ্রামবাসীর
কৃষক আসাদ বলেন, শুকনো জমিতে চারা রোপণ করা যায় না। এ মৌসুমে পানির অভাবে কোনো চারা রোপন করতে পারিনি। আমন চাষের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে, মানে এ বছর আমি ধান চাষ করতে পারব না। আমি জানি না আমি কীভাবে বাঁচব।
বিভিন্ন দেশে কৃষি সেক্টর ঘুরে দেখা ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ জানান, নেদারল্যান্ডে শতকরা ৬০ শতাংশ পানি নদী-খালে বাষ্পীভূত হয়। কীভাবে ওই বাষ্পীভূতকে রোধ করে সেচের ব্যবস্থা করা যায় কি না তা নিয়ে তারা গবেষণা করছে। মাটি এবং পানি নিয়ে গবেষণা করলেও আমরা কিন্তু তা করছি না।
ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাস অনেক দেশের কৃষি পদ্ধতি দেখেছেন। ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তিনি জেলায় চলমান কৃষি সঙ্কট নিরসনে কিছু ধারণা দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ‘অপরিকল্পিত’ শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মরে যাচ্ছে শত শত গাছ
তিনি বলেন, পানি ও মাটি নিয়ে গবেষণা করে ধানের নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। সেচের মাধ্যমে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সৌরশক্তি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া বর্তমান সেচ পদ্ধতিতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে এবং বিদ্যুতের দাম কমাতে হবে।
বাগেরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজিজুর রহমান পানি সংকট মোকাবিলায় ধান চাষে পানির পাম্প ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
কৃষি কর্মকর্তা আজিজুর জানান, ক্ষতি কমানোর জন্য, আমরা কৃষকদের বিআর-২৩ জাতের ধান চাষ করতে এবং সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি সেচ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। বর্তমানে জেলায় চার হাজার ৫০০ সেচযন্ত্র চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জনবল সংকটে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ সেবা বন্ধ
তিনি জানান, চারা রোপণের সময়সীমা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
আজিজুর বলেন, সরকার এ বছর আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হারাবে কি না তা জানতে আমাদের ফসল কাটার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
২ বছর আগে
কৃত্রিম সংকট তৈরি করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে: বিএনপি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চাল ও বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সমস্যা হল তারা সবকিছুর মধ্যেই একটা অবৈধ মুনাফা চায়। জনগণের সবচেয়ে প্রয়োজন যে খাদ্য, সেই খাদ্যকেও জিম্মি করে তারা মুনাফা লুটতে চায়।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ যে দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়েছিল তা খাদ্য সংকট নয়, দুঃশাসন ও দুর্নীতির কারণে হয়েছিল। একইভাবে তারা এখন মানুষের অনেক প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য মজুদ করছে। তারা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: আ’লীগের লুটেরাদের কারসাজিতে চালের দাম বাড়ছে: বিএনপি
২৪ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া এবং ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার নেতা শাহাবুদ্দিন শিহাবকে দেখতে রাজধানীর বাসাবো এলাকার হেলথ এইড ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতালে যান ফখরুল।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, চালের পাশাপাশি গম, আটা, দুধ ও রুটির দাম বেড়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, আমাদের গরীব মানুষ কি করবে? রিকশাচালকদের অধিকাংশই ফুটপাতের দোকান থেকে একটি কলা ও রুটি খায়। সেই রুটির দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ভয়-ভীতি আমাদের দমন করতে পারবে না: ফখরুল
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় ও খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার নিজেই সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে। এর পিছনে রয়েছে তাদের অশুভ কৌশল।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভালোবাসায় নয়, সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়। এটাই তাদের মৌলিক চরিত্র।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাসীন দল এখন তাদের অধীনে আগামী নির্বাচন করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে, মানুষকে আতঙ্কিত ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ এবার তাদের সুযোগ দেবে না।
আরও পড়ুন: অর্থপাচারকারীদের জন্য সরকারের দায়মুক্তির পরিকল্পনার সমালোচনা বিএনপির
২ বছর আগে
কৃত্রিম সংকট তৈরি না হলে দেশে খাদ্য সংকট হবে না: মন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে সোনা ফলে। কৃষকের ঘরে ধারাবাহিকভাবে এখানে বোরো, আউশ ও আমন ধান ওঠে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করা না হলে এদেশে খাদ্য সংকট হবে না।
সোমবার সচিবালয়ে ‘বোরো ২০২২ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও বাজার মনিটরিং সংক্রান্ত অনলাইন মতবিনিময় সভায়’ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যা করণীয় তার সবই করা হবে। প্রয়োজনে ট্যাক্স কমিয়ে চাল আমদানি করে ভোক্তাকে স্বস্তিতে রাখা হবে। এসময় তিনি ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত প্রফিট না করে ভোক্তাদের প্রতি মানবিক হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বোরো সংগ্রহ সফল খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দুর্নীতিমুক্ত থেকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে। জুনের মধ্যে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ সম্পন্ন করতে হবে। যে সকল মিল মালিক চুক্তিবদ্ধ চাল আগে পরিশোধ করবে প্রয়োজনে তাদের আরো বরাদ্দ দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিভিন্ন কর্পোরেট হাউস বাজার থেকে ধান চাল কেনায় লিপ্ত হয়েছে। তারা কৃত্রিম কোন সংকট তৈরি করছে কি না তা খতিয়ে দেখতে বলেন মন্ত্রী। ভোক্তা যেন আতংকিত না হয় সে জন্য সচেতনতা তৈরি করার পাশাপাশি ধান চালের বাজারে নজরদারি বাড়াতে প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ধান ও চাল সংগ্রহকালে কোন কৃষক কিংবা মিল মালিক যেন কোনভাবে হয়রানি না হন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ময়েশ্চার মিটার দিয়ে কৃষকের ধানের ময়েশ্চার পরীক্ষা করে কৃষককে সহযোগিতা করতে পারেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কৃষকের বাড়িতে গিয়ে ময়েশ্চার পরীক্ষা করে ধানসহ কৃষককে গুদামে পাঠালে তাদের ভোগান্তি কমবে। বেশি ময়েশ্চার বা ভেজা ধান ফেরত নিয়ে গুদাম থেকে মন খারাপ করে ফিরতে হবে না।
মিল মালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোয়ালিটির মানদণ্ডে উত্তীর্ণ না হলে সে চাল গুদামে পাঠাবেন না। চালের কোয়ালিটির সাথে কোন আপস হবে না।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো: মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন, খুলনা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলা প্রশাসক, কৃষি বিভাগের উপপরিচালক খাদ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ও মিল মালিকরা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
পড়ুন: চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
২ বছর আগে
দেশে খাদ্য সংকটের বিএনপির আশা পূরণ হবে না: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘দেশে খাদ্য সংকট হোক’-বিএনপির এই আশা পূরণ হবে না।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও কিছু বুদ্ধিজীবী দেখতে চায় দেশে খাদ্য নিয়ে হাহাকার হোক, দুর্ভিক্ষ হোক। তারা মনে করে-দেশে দুর্ভিক্ষ হবে, রাস্তাঘাটে মানুষ না খেয়ে মরে পড়ে থাকবে, আর তা নিয়ে আন্দোলন করে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটাবে। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, শকুনের দোয়ায় গরু মরে না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে শুক্রবার রাজধানীর শ্যামপুর মডেল স্কুল মাঠে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দেশে খাদ্য সংকট নেই, বিএনপি কোরাস গেয়ে চলেছে: কৃষিমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি ও কর্মসূচি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে করোনাকালেও দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছেন। রেকর্ড পরিমাণ খাদ্য মজুত রয়েছে। তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রী খাদ্য সহযোগিতা নিয়ে মানুষের পাশে আছেন। কাজেই, শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন দেশে কখনও খাদ্য সংকট হবে না, কোন দুর্ভিক্ষও হবে না।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি জোট, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও কিছু বুদ্ধিজীবীরা করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রেও বাংলাদশের ব্যর্থতা দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সফলভাবে করোনা মোকাবিলা করে তাদের এই চাওয়াকে ব্যর্থ করে দিয়েছেন। এখন জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সারা বিশ্ব বলছে, বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় রোল মডেল। বাংলাদেশ আজ শুধু উন্নয়নের রোল মডেল নয়, করোনা মোকাবিলায়ও রোল মডেল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিরোধীদের সরকার হবে বিএনপির জাতীয় সরকার: কৃষিমন্ত্রী
দেশের মানুষের বিপদে আপদে আওয়ামী লীগ সব সময়ই পাঁশে থাকে, বিএনপি কখনও থাকে না উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া-তারেক রহমানরা ক্ষমতায় থাকাকালে দেশটাকে লুটপাট করে অর্থবিত্ত উপার্জন করেছেন, নিজেদের ভোগবিলাসে ব্যয় করেছেন আর বিদেশে পাচার করেছেন। প্রয়োজনের সময় মানুষের পাশে দাঁড়াননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাকর্মীরা সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, মানুষকে সহযোগিতা করেছে।
২ বছর আগে
দেশে খাদ্য সংকট নেই, বিএনপি কোরাস গেয়ে চলেছে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে খাদ্যের কোন সংকট নেই, একটি মানুষও না খেয়ে নেই। অথচ বিএনপির একদল নেতা সারাদিন শুধু টেলিভিশনে ও পত্রপত্রিকায় খাদ্য সংকটের কোরাস গেয়ে চলেছে, যা শুনলে মনে হয় দেশে দুর্ভিক্ষ চলছে, মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সকালে মানিকগঞ্জের সিংগাইর ও ঘিওর উপজেলায় ব্রিধান ৮৯ ও ৯২ এর বীজ উৎপাদন মাঠ পরিদর্শনকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কোরাস গাওয়ার আগে বিএনপি ও সুশীল সমাজকে ২০০১-০৬ সময়ের দিকে ফিরে তাকানোর আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া-তারেক রহমানরা যখন ক্ষমতায় ছিল, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রতিদিনই মানুষ না খেয়ে থেকেছে, প্রতিবছর মঙ্গায় শত শত মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। সেসময়ের পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই দেখা মিলে খাদ্যের জন্য হাহাকার আর অনাহারে মৃত্যুর খবর। অন্যদিকে গত ১৩ বছরে আওয়ামী লীগের আমলে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায় নি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিরোধীদের সরকার হবে বিএনপির জাতীয় সরকার: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী বলেন, চালের উৎপাদন বাড়াতে উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান ৮৯ ও ব্রি ৯২ দ্রুত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এ দুটি বোরো জাতের ধানের উৎপাদন প্রতি শতাংশে প্রায় এক মণ। এটিকে দ্রুত মাঠে নিয়ে যেতে চাই। সেজন্য এসব জাতের বীজ উৎপাদনের জন্য এবার কৃষকদেরকে বিনামূল্যে বীজ দেয়া হয়েছে। সারা দেশে জনপ্রিয় করতে প্রয়োজনে কৃষকদেরকে আরও প্রণোদনা দেয়া হবে।
কৃষিজমি রক্ষায় সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একদিকে করোনা মহামারি রয়েছে, অন্যদিকে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে গম আসছে না। ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশেই দুর্ভিক্ষের হাতছানি দেখা যাচ্ছে। সেজন্য, কৃষি উৎপাদনে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকতে হবে। কাজেই কৃষিজমি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের।
তিনি বলেন, কৃষিজমি রক্ষায় যে আইন হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সবাই মিলে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। শিল্পায়নও করতে হবে, আবার কৃষিজমিও রক্ষা করতে হবে। এ দুটির মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবছর ধানবীজ উৎপাদনের জন্য মানিকগঞ্জের ১৬টি স্পটে ১০৪৪ বিঘা জমিতে ব্রিধান ৮৯ ও ৯২ এর আবাদ হয়েছে। ৮১৪ জন কৃষক এ বীজ ধান চাষ করেছেন। কৃষকদেরকে নানাভাবে প্রণোদনা ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বিনামূল্যে ৫ হাজার কেজি বীজ দেয়া হয়েছে। সমলয়ের আদলে একসঙ্গে ধান রোপণ করা হয়েছে, হার্ভেস্টারের মাধ্যমে একই সময়ে ধান কাটাও হবে।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ে বিএনপিকে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না: কৃষিমন্ত্রী
এসময় কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান, কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২ বছর আগে