যানজট
অসহনীয় যানজট থেকে মুক্তি মিলছে না ঢাকাবাসীর
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে রাজধানীতে অসহনীয় রূপ নিয়েছে যানজট। আগেও যানজটের সমস্যা ছিল তবে এখন যতই সময় যাচ্ছে তা আরও প্রকট হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যত্রতত্র পার্কিং, যেখানে-সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করানো, ফুটপাত দখল, গাড়ির তুলনায় রাস্তার সংকট, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপকদের অদক্ষতা, দুর্নীতি ও অনিয়ম, পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার অভাব, আইনের বাস্তবায়ন না হওয়া, রাজধানীকেন্দ্রিক শিল্পকারখানা স্থাপন এবং অফিস-আদালত ঢাকায় কেন্দ্রিকরণ বাড়তে থাকায় যানজটও ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভেঙে পড়ে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা। বেশ কিছুদিন কর্মবিরতির পর সড়কে দায়িত্ব পালন শুরু করে ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু তাদের মধ্যে আগের মতো কাজে গতি দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন নগরবাসী।
তারা মনে করে, পুলিশ যদি আগের মতো সড়কে কাজ না করে তবে এই যানজট দিনকে দিন বেড়েই চলবে।
এদিকে রাজধানীতে বাড়ছে বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি অটোরিকশা, অ্যাম্বুলেন্স, রিকশা, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, মালবাহী ভ্যান, কাভার্ডভ্যান, ঠেলাগাড়ি ও ট্রাকের সংখ্যা। সড়কের তুলনায় যানবাহনের মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যাধিক্য এবং অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত চলাচলই যানজট বাড়ার অন্যতম কারণ, যার ধকল পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
গণঅভ্যুত্থানের পর জনরোষের শিকার হয় পুলিশ। থানা ও সড়ক ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান পুলিশ সদস্যরা। এই অবস্থায় ছাত্র-জনতা সড়কে ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্ব নেয়। সেসময় অনিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক অবস্থার সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে উঠে আসে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ হাজারো অবৈধ যানবাহন।
অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাফিক পুলিশ সড়কে আসলেও সড়ক আইন মানতে চাননি এসব যানবাহনের চালকরা। এমন কি ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তাচ্ছিল্য করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন তারা।
আগে শহরের অলিগলিতে চললেও ৫ আগস্টের পর থেকে প্রধান সড়কে ব্যাপক হারে বেড়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা। এতে সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে বিশৃঙ্খলা।
যানজট নিয়ে গণপরিবহন যাত্রীদের যেসব অভিযোগ—
প্রেস ক্লাব, পল্টন মোড়, মৌচাক ও নতুন বাজার মোড়ে অপেক্ষমাণ বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকায় যানজট প্রতিদিনের চিত্র হলেও আগের থেকে এখন প্রকট আকার দেখা দিয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসে বসে থাকতে হয়। পুলিশ থাকলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যায় না।
পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আগেই যানজট নিরসনে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি জানান যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: ১৫টি খাল খনন করলেই দূর হবে ঢাকার ৮০ শতাংশ জলাবদ্ধতা
ব্যাংক কর্মকর্তা রুহুল আনিসুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, ‘সড়কে দিনকে দিন যানজট বেড়েই চলেছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাস্তায় আগের চেয়ে বেড়েছে যানজট। ট্রাফিক পুলিশ সড়কে যেন থেকেও নেই। কারণ আগের মতো ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে না। আগে যেভাবে তারা সড়কে দায়িত্ব পালন করতেন এখন অনেকটা তারা নীরব দর্শকের মতো দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ যদি আগের মতো সড়কে কাজ না করে তবে এই যানজট দিন দিন বেড়েই চলবে।’
কুড়িল-নতুনবাজার থেকে প্রতিদিন গণপরিবহন গ্রীন ঢাকায় যাতায়াতকারী ফেরদৌস বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকে ঢাকায় অসহনীয় যানজট বাড়ছেই। আগের থেকে এখন বেশি যানজট, কেউ কাউকে মানছে না ফলে রাস্তায় একটা অরাজকতা চলছে। ট্রাফিক পুলিশ আরও কঠোর থাকলে এসব কমে যেত। কিন্তু আগের মতো সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে যানজট ব্যাপক বেড়ে গিয়েছে। পল্টন থেকে বাসে উঠলে আগে কুড়িল আসতে সময় লাগত ১ ঘণ্টা। এখন দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লেগে যায়।’
এছাড়াও মূল সড়কগুলোতে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকগুলো চলে আসায় যানজট ও দুর্ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এলোমেলোভাবে গাড়ি চালানো, প্রায়ই উল্টো দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া-এসব কারণে দুর্ঘটনা ঘটছেই। সড়ক আইন মানছেন না কেউই। ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে তারা চলছেন নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো।
যানজট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা—
ঢাকার যানজট নিরসনে দ্রুত ও কার্যকর সমাধান খুঁজতে পুলিশ ও দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আরও পড়ুন: একাধিক মাস্টারপ্ল্যান, ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরও ডুবছে ঢাকা
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বৈঠকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুই সিটি ট্রাফিক সিস্টেম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশ দেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের যানজট নিরসন হবে। আমাদের অবিলম্বে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।’
যানজট নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ কি বলছেন—
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নাজমুল হাসান ইউএনবিকে বলেন, সড়কে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। যানজটের জন্য পুলিশ কখনোই দায়ী না। এখানে বেশ কিছু বিষয় কাজ করছে। পুলিশ আগের চেয়েও অনেক বেশি কর্মস্পৃহা নিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া সড়কে এখন প্রায় দেখা যায় দাবি আদায়ের জন্য বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জমায়েত হচ্ছেন। এতে করে সড়কের ট্রাফিক সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে ৫ আগস্টের পর কাভার্ড ভ্যানগুলো সড়কে নেমে যাচ্ছে আর এসবে কারণেও ট্রাফিক জ্যাম বেড়েছে। এই বিষয়টি নিয়েও আমরা সর্বোচ্চ কাজ করছি।’
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা এখন সড়কে উঠে যাচ্ছে, তবে আমরা তাদের প্রতিহতের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমরা শুরুতে কয়েক দফা তাদের বুঝিয়েছি, কয়েক দফা তাদের ওয়ার্নিং দিয়েছি, এখন আমরা মামলা দিতে বাধ্য হচ্ছি।’
ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন শত শত ব্যাটারির রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কারও রিকশার তার ছিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে, কারও সিট খুলে নেওয়া হচ্ছে। এ রকম লঘুশাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে জনবল ও যানবাহন স্বল্পতার কারণে রেকারিং কিংবা ডাম্পিং করা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দিন দিন কঠোর হচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সড়কে এ ধরনের একটি যানবাহনও চলতে দেওয়া হবে না।’
আরও পড়ুন: যানজটে বিপর্যস্ত রাজধানী: মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় বেড়েছে দুর্ভোগ
নাজমুল হাসান বলেন, রাজধানীর ১২৮টি রুটের বাস চালকদের সচেতন করতে কাজ করা হচ্ছে। ব্যাটারিচালিত রিকশার পাশাপাশি বেশ কিছু লাইসেন্সবিহীন বাস সড়কে উঠে যাচ্ছে, আর এতে যানজট বাড়ছে। আমরা এই লাইসেন্সবিহীন বাসগুলোকে সড়কে উঠা বন্ধ করতে কাজ করছি।
নগর পরিকল্পনাবিদ যা বলছেন—
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নগর ও অঞ্চল বিভাগের অধ্যাপক নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান ইউএনবিকে বলেন, ‘ঢাকা শহরে গাড়ির সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, সে অনুযায়ী রাস্তা বাড়ছে না। গত কয়েকবছর বছরে ঢাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। যেখানে প্রাইভেট গাড়ি কমানোর কথা, সেখানে প্রতিনিয়তই গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। এক্সিসটিং রোড এত গাড়ির ভার নিতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেগা সিটি মানেই প্রচুর গণপরিবহন; কিন্তু সেই গণপরিবহনের মাত্রা কিন্তু বাড়ছে না। গণপরিবহন যত ভালো করা যায়, ততই প্রাইভেট গাড়ির প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হবে এবং তারা গণপরিবহনে যাতায়াত করবে।’
নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, ঢাকার যানজট নিরসনে ২০০৫ সালে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (এসটিপি) প্রণয়ন করে সরকার। ২০০৫ সালের সেই প্ল্যানটাকে যদি বাস্তবায়ন করা যেত তাহলে ২০২৪ সালে এসে অনেক উন্নতি করার কথা ছিল। অর্থাৎ যানজট বাড়ার কথা ছিল না। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
ড. আদিল আরও বলেন, বিশ্বের অনেক বড় বড় শহরেই যানজট দেখা যায়। কিন্তু সেটা পরিমিত লেভেলের। কিন্তু ঢাকার যানজট বড় সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে করা যায়, তবে যানজট নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। ঢাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বড় অভাব রয়েছে। বর্তমানে ঢাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে খারাপ। এটিকে আরও আধুনিক করতে হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৮ কিলোমিটার যানজট
২ মাস আগে
যানজটে বিপর্যস্ত রাজধানী: মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় বেড়েছে দুর্ভোগ
রাজধানীর ফার্মগেট, বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, সিদ্ধেশ্বরী, মতিঝিলসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সোমবার তীব্র যানজট দেখা গেছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম শুরু হওয়ায় এবং বিক্ষোভ চলমান থাকায় ট্রাফিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠেছে।
বিভিন্ন দাবিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। বিশেষ করে শাহবাগে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করায় যানজট অধিক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে আশেপাশের এলাকাগুলোতে।
রমনা ও মতিঝিলের আশপাশেও যানজট দেখা গেছে, যা পুরো শহরের যান চলাচলকে প্রায় অচল করে দিয়েছে।
এছাড়াও যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়কের উভয় দিকে যানজট দেখা যায়। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রবেশমুখেও যানবাহনের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। যার প্রভাব পড়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, প্রগতি সরণি ও কুড়িলের কাছাকাছি সড়কগুলোতেও।
উল্লেখ্য, রবিবার থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষের চাপ বেড়েছে। এদিকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকায় সড়কপথে যানজট আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
ব্যাপক যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় যাত্রীদের একই জায়গায় আটকে থাকতে হচ্ছে। যান চলাচল প্রবাহে অচল অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে ঢাকাবাসী।
৪ মাস আগে
কুড়িগ্রাম শহর পরিষ্কার ও যানজট নিরসনে রাস্তায় শিক্ষার্থীরা
কুড়িগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও যানজট নিরসনে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) দাদামোড়, ঘোষপাড়া, পৌরবাজার, কলেজমোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় তাদের।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশে হাজারো মানুষের ঢল
পাশাপাশি পৌরসভার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলমান না থাকায় শিক্ষার্থীরা কোমর বেঁধে ঝাড়ু হাতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেছে।
অটোচালক খয়বর বলেন, ‘বাচ্চাগুলো গরমের মধ্যে খুব কষ্ট করে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। দেখে ভালো লাগছে।’
অটোযাত্রী নাজমা বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের জন্য গর্ব হচ্ছে। তারা ঘরে ঠিকমতো কাজ করে কি না জানি না। কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কার ও শহর পরিচ্ছন্নতায় তারা অনন্য অবদান রাখছে।’
সড়কে দায়িত্ব পালন করা ও পরিচ্ছন্নতা কাজে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থী নাহিদ, মিলন, রিয়া, রুহি ও রাকিব জানায়, তারা পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। পাশাপাশি সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন। যারা হেলমেট না পরে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন তাদেরও সচেতন করছেন।’
এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীসহ জামায়াত-বিএনপির ৭০০ নেতা-কর্মী জামিনে মুক্ত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনে শিক্ষার্থীরা
৪ মাস আগে
কবে চালু হবে ঢাকা মেট্রোরেল, এ নিয়ে ভাবনায় নগরবাসী, কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞরা
সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হওয়া সহিংসতায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন। এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এদিকে মেট্রোরেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকাবাসীর জীবনে ফিরে এসেছে পুরনো সেই যানজটের ভোগান্তি।
মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএন সিদ্দিক বলেন, ‘মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণটা অনেক বেশি। তবে কত টাকা ক্ষতি হয়েছে, এটি নিরূপণ করা যায়নি। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।’
এছাড়া হামলায় মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ এবং কবে নাগাদ এটি আবার চালু করা যায়, তা নির্ধারণে ২২ জুলাই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ডিএমটিসিএল।
মেট্রোরেল লাইন-৬-এর অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়ার নেতৃত্বে এ কমিটি গঠন করা হয়। সদস্যসচিব করা হয় ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) ইফতেখার হোসেনকে। কমিটিকে পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় সড়কে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। বেড়েছে যানজটও। রাজধানীবাসীকে ফিরতে হয়েছে আগের সেই ভোগান্তি আর দুর্ভোগের জীবনে। গন্তব্যে পৌঁছাতে এখন উত্তরা ও মিরপুরবাসীকে এখন দুই ঘণ্টার বেশি সময় হাতে নিয়ে বের হতে হচ্ছে।
নিয়মিত মেট্রোরেল ব্যবহারকারী বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় ইউএনবির এই প্রতিবেদকের। তারা বলছেন, মেট্রোরেল চালুর পর থেকে এই স্বস্তির যাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। পুরনো অভ্যাসে ফিরতে কেউই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না। তার সঙ্গে অর্থ ও সময় দুইই বেশি লাগছে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল ও স্টেশনগুলো সংস্কার করে দ্রুতই চালু করার দাবি জানান তারা।
কবে নাগাদ মেট্রোরেল চালু করা যাবে জানতে চাইলে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘কবে নাগাদ চালু করতে পারব, তা এখনই বলতে পারছি না। ক্ষতিগ্রস্ত দুটি স্টেশন চালু করতে অনেক সময় লাগবে। তবে বাকি স্টেশনগুলো যাতে দ্রুত চালু করা যায় সে বিষয়টি দেখছি আমরা।’
এদিকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মেট্রো স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে মেট্রোরেলের কারিগরি ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হতে সময় লাগতে পারে অন্তত আরও ১/২মাস। সেটিও নির্ভর করছে জাপানের কারিগরি কমিটির পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রেলস্টেশনগুলো পরিদর্শনের ওপর। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সবকিছু সংস্কার করে ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব মো. জাকারিয়া বলেন, ‘ কীভাবে সংস্কার কাজগুলো এগিয়ে নেওয়া যায়, তার একটা রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা যার যার অংশে পরামর্শক, ঠিকাদার ও ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে তালিকা তৈরি করবে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করতে আরও সময় লাগবে।’
কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা স্টেশনের সব পরিকাঠামো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বোঝা যাবে বলে জানান তদন্ত কমিটির প্রধান।
যদিও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং ডিএমটিসিএলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বলছেন, মেট্রোরেলের ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি পুনরায় চালু করতে এক বছরের বেশি সময় লাগতে পারে।
অন্যদিকে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকার বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করলে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনগুলো চালু করা সম্ভব।
ডিএমটিসিএল থেকে জানা যায়, কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন মেরামতে এক বছর বা তার থেকে বেশি সময় লেগে যাবে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত অনেক যন্ত্রপাতিই মেরামতযোগ্য অবস্থায় নেই। এগুলো নতুন করে আমদানি করতে হবে। যন্ত্রগুলো অর্ডার দেওয়া হলে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করবে। তারপর বাংলাদেশে এনে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘মেট্রোরেলের টিকিট কাটার মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে বানানো। কমলাপুরে নতুন একটা স্টেশন হবে। সেখানে যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। নিশ্চয়ই যে কোম্পানি মেট্রোরেলের যন্ত্রপাতি তৈরি করেছে, তাদের কাছে সব নকশা করা আছে। সরকার বা প্রকল্প কর্তৃপক্ষ চাইলে সহজেই যন্ত্রপাতিগুলো দেশে এনে স্টেশন দুটির মেরামতকাজ শুরু করতে পারে। আমার মনে হয়, ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি মেরামতে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ কম।’
সরকার দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করলে ছয় মাসের বেশি লাগার কথা না বলে মনে করছেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল হক।
ডিএমটিসিএল থেকে জানা যায়, দুর্বৃত্তদের হামলায় মিরপুর-১০ স্টেশনের সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রায় শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজীপাড়া স্টেশনে বিভিন্ন সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হামলায় দুটি স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোয় প্রবেশ ও বহির্গমন গেট, অগ্নিরোধক দরজা-জানালা, বিভিন্ন ধরনের সাইনেজ, এসএস ফেন্সিং, বিশেষ ধরনের কাঁচের দরজা ও জানালা, স্টেশনের আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে অগ্নিনির্বাপক ও শনাক্তকরণ সিস্টেম, ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম, বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, চলন্ত সিঁড়ি, বিশেষ ধরনের সুইচ।
এক মাসের মধ্যে আংশিক (মিরপুরের ক্ষতিগ্রস্ত দুটি স্টেশন ছাড়া) মেট্রোরেল চলাচল শুরু করা যাবে কিনা জানতে চাইলে মেট্রোরেলের কোম্পানি সচিব মো. আব্দুর রউফ বলেন, জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আমরা এক মাসের মধ্যে মেট্রোরেল চলাচল শুরু করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
৪ মাস আগে
টানা ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট যানজট নিয়ে ডিএমপির সতর্কতা
শুক্রবার সকাল থেকে টানা ভারী বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্ট যানজটের বিষয়ে রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
শুক্রবার (১২ জুলাই) ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে সড়কের মাঝখানে অনেক যানবাহন বিকল হতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাসের মানে কিছুটা উন্নতি
ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জলাবদ্ধতার কারণে অনেক যানবাহন বিকল হয়ে যাওয়ায় নগরীর সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে- ফকিরাপুল, নয়াপল্টন, বায়তুল মোকাররম, শান্তিনগর, মালিবাগ, আরামবাগ, প্রগতি সরণি, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি রাপা প্লাজা, বংশাল, মিরপুর রোকেয়া সরণি, দয়াগঞ্জ ক্রসিং, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, নিমতলী, টয়েনবি সার্কেল রোড, ধানমন্ডি ২৭, এলিফ্যান্ট রোড, মৎস্য ভবন, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি, ঢাকা গেট ভিআইপি রোড ও মিরপুর মাজার রোড।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টিপাতে ঢাকায় জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
৫ মাস আগে
মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও কোনো যানজট নেই: ওবায়দুল কাদের
মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও কোনো যানজট নেই বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ঘরমুখো মানুষের জন্য আমরা আজ উন্মুক্ত করে দিচ্ছি।
শনিবার (৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় সচিবালয়ের মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২(এলেঙ্গা-হাটিকমরুল-রংপুর মহাসড়ক) এর আওতায় নির্মিত ৫টি ফ্লাইওভার চলাচলের জন্য উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা প্রান্তে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: উগ্রবাদের মূল উৎস বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
অনুষ্ঠানে মেঘনা টোল প্লাজায় ১২টি বুথে ই টি সি কার্যক্রম, এলেঙ্গা-হাটিকমরুল-রংপুর মহাসড়কে নির্মিত একটি রেল ওভারপাস, ৭টি ওভারপাস ও ২টি সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
১২টি টোল বুথের সবকটিতেই ক্যাশ ও ক্যাশলেস (ইটিসি) ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টোল দেওয়া যাবে।
ঈদযাত্রায় সহজ করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সেটা আপনারা জানেন। এখন আমরা ঘরের ভেতর করছি, কিন্তু সাংবাদিকদের জন্য পুরো সেশনটিই উন্মুক্ত ছিল। যে যা বলেছেন, সবই আপনারা পেয়েছেন। যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআরটিএ, তাও আপনাদের জানানো হয়েছে পরিষ্কারভাবে।
তবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ঈদের পরে প্রশ্ন করতে সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রী বলেন, এটা আপনারা ঈদের পরে প্রশ্ন করতে পারেন। গাড়ির চাপ আছে, কিন্তু যানজট নেই, এটা আমি বলতে পারব।
ঢাকায় অস্বাভাবিক যানজট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রাজধানীতে এখন কোনো যানজট নেই, থাকবে না। রাজধানী খালি হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে শনিবার দেশে ফিরবেন ওবায়দুল কাদের
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরেছে: ওবায়দুল কাদের
৮ মাস আগে
ঠাকুরগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল দুই দশক ধরে বন্ধ
ঠাকুরগাঁও জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি উদ্বোধনের পর থেকেই পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে, তখন থেকেই ঝুলছে তালা।
ঠাকুরগাঁও জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল শহরে যানজট কমানোসহ যাত্রীদের সুবিধার্থে ২০০৩ সালে নির্মাণ করা। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর ঘটা করে উদ্বোধনও হয়। এরপর ২০ বছর পার হলেও যাত্রীদের কোনো কাজেই আসেনি দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত টার্মিনালটি।
দীর্ঘদিন পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় এখন তা হয়ে পড়েছে ব্যবহার অনুপযোগী। কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাকেই এর জন্য দায়ী করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে ৫ বিঘা জমির উপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয় বাস টার্মিনালটি। তৎকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া এ টার্মিনালের উদ্বোধন করেন। এরপর আর ব্যবহার করা হয়নি এটি।
আরও পড়ুন: সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল সার্ভিস কাঁচপুরে স্থানান্তর করা হবে: মেয়র তাপস
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা মহাসড়কের পাশেই অস্থায়ী কাউন্টার বসিয়ে বিক্রি করছেন বিভিন্ন রুটের বাসের টিকিট। অথচ টার্মিনালটিতে টিকিট কাউন্টার, ওয়াশ রুম, শপিংস্টোর ও বসার ব্যবস্থাসহ সাধারণ যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রয়েছে। এত সুবিধা থাকার পরও রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে বাসে ওঠানামা করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় যানজটের পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে টার্মিনালটি ব্যবহার না হওয়ায় ভবনের ভেতর নেশাখোর ও ভবঘুরেদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় শিগগিরই টার্মিনাল সংস্কার করে তা চালুর দাবি যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে এই প্রতিবেদক দেখতে পান, ঠাকুরগাঁও জেলার একমাত্র বাস টার্মিনালটি জনশূন্য। দুটি বিশ্রামাগার ও একটি টিকিট কাউন্টার থাকলেও তা তালাবদ্ধ। পরিষ্কার না করায় ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে ভবনের চারপাশ। ভেঙে পড়েছে দরজা-জানালা। ভেতরে বেশ কয়েকটি বিকল বাস ফেলে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে: মেয়র তাপস
দিনাজপুর-পঞ্চগড়ের যাত্রীরা বাসে ওঠানামা করছেন ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কে। স্থানীয়রা জানান, টার্মিনাল থাকার পরও ঝুঁকি নিয়ে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বাস থামিয়ে যাত্রীরা ওঠানামা করছেন। এতে দুর্ঘটনা যেমন ঘটছে, তেমনই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। অথচ টার্মিনাল নির্মাণের পর দুই দশক পার হলেও তা চালু হয়নি এখনো। এর পেছনে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা বিভিন্ন কাজে নিয়মিত ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করেন। টার্মিনালে বাস না থাকায় বাসের জন্য দীর্ঘ সময় সড়কের পাশে চায়ের দোকানে অপেক্ষা করতে হয় তাদের। এ সময় বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও সে উপায় নেই।
টার্মিনাল বিষয়ে বাস মালিক সমিতির নেতারা কথা বলতে রাজি না হলেও উপজেলা প্রশাসন জানালেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি দ্রুত চালু করতে বাস মালিক ও পৌরসভার সঙ্গে আলোচনা করব। আমরা চাই যেন এর যথাযথ ব্যবহার হয়। সাধারণ মানুষ যেন সেবা পায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করব।’
আরও পড়ুন: সিলেটে আধুনিক বাস টার্মিনালের উদ্বোধন এ মাসেই
১০ মাস আগে
যানজট কমাতে মঙ্গোলিয়ায় বিকল্প দিনে গাড়ি চলাচলের নির্দেশ
মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলান বাটোর শহরের যানজট কমাতে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাস্তায় অর্ধেক যানবাহন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পৌর সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, উপরে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে বিজোড় বা জোড় লাইসেন্স প্লেট নম্বরের উপর ভিত্তি করে বিকল্প দিনে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।
সাম্প্রতিক ভারী তুষারপাতের কারণে রাজধানীর রাস্তাগুলো পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া এবং এর ফলে কয়েক ঘণ্টা ধরে রাস্তায় গাড়ি আটকে থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বহু বছর ধরে যানজট উলান বাটোরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার পানি থেকে ৩০০ জনকে উদ্ধার
উলান বাটোর মূলত পাঁচ লাখ বাসিন্দা থাকার জন্য নির্মিত হয়েছিল।
তবে, শহরটিতে এখন দেশের ৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক বাস করে।
বর্তমানে, উলান বাটোরে ৭ লাখ ২০ হাজার যানবাহন নিবন্ধিত রয়েছে।
পৌরসভা সরকারের মতে, রাজধানী শহরে যানবাহনের সংখ্যা বছরে গড়ে ৫০ হাজার করে বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২২ পুলিশ সদস্য নিহত, আহত ৩২
ফিলিপাইনে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ২৯
১ বছর আগে
যানজট সৃষ্টির প্রতিবাদ করায় সিএনজিচালককে পিটিয়ে হত্যা
নোয়াখালীর চাটখিলে রাস্তায় যানজট সৃষ্টির প্রতিবাদ করায় সাখাওয়াত উল্ল্যাহ (৫৫) নামে একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার চাটখিল-সোনাইমুড়ী সড়কের পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মোস্তান নগর এলাকার মহুরী মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. সাখাওয়াত উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাইক বাড়ির মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ‘চোর’ সন্দেহে শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
আটককৃতরা হলো- উপজেলার হালিমা দিঘীর পাড় এলাকার ল্যাংটা বাড়ির মৃত মো. নবীর ছেলে মো. রাজু (২২) ও একই এলাকার সুইপার আকবরের ছেলে জাহাঙ্গীর (২৪)।
স্থানীয়রা জানায়, সাখাওয়াত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার চাটখিল বাজার থেকে নিজের সিএনজি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। যাত্রাপথে তিনি চাটখিল-সোনাইমুড়ী সড়কের মোস্তান নগর এলাকার মহুরী মার্কেট এলাকায় পৌঁছলে দেখেন কয়েকটা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা রাস্তায় এলোমেলোভাবে রাখা হয়েছে। এ কারণে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তাৎক্ষণিক সিএনজি থামিয়ে তিনি এলোমেলোভাবে রাস্তায় গাড়ি রাখার প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে অটোরিকশাচালক রাজুর সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাজু ও তার বন্ধু সিএনজিচালক জাহাঙ্গীর, মুন্না একসঙ্গে সিএনজিচালক সাখাওয়াতকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষিসহ বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চাটখিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু জাফর বলেন, আটক আসামিরা রাস্তার মধ্যে এলোমেলোভাবে গাড়ি রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। নিহত সাখাওয়াত সিএনজি নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে গাড়ি পার করতে না পেরে, সিএনজি থেকে নেমে এভাবে গাড়ি রাখার কারণ জিজ্ঞেস করেন।
তিনি আরও বলেন, এ কথা জিজ্ঞেস করায় আসামিরা তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করলে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় এনে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ২ আসামিকে আটক করা হয়েছে। ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় স্ত্রীকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
নড়াইলে কৃষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
১ বছর আগে
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ার পর ল্যান্ডিং পয়েন্টগুলোতে যানজট
রবিবার সকাল ৬টায় যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ল্যান্ডিং পয়েন্টগুলোয় যানজটের সম্মুখীন হন যাত্রীরা।
এ সময় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর-ফার্মগেটের ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার অংশে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে কাওলা থেকে ফার্মগেট পৌঁছাতে প্রায় ১০ মিনিট সময় লাগে।
২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার গাড়িবহরের ২৫টি গাড়ির জন্য ২ হাজার টাকা টোল পরিশোধ করে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম ট্রাফিক কমিশনার (উত্তর) আবু সালেহ মো. রায়হান বলেন, ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারকারী যানবাহনের তীব্র চাপের কারণে ফার্মগেট, মহাখালী, কাকলী, কাওলা এলাকার ল্যান্ডিং পয়েন্টে যানজট দেখা গেছে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে রাজধানীর কাওলা থেকে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকা পর্যন্ত চলবে।
এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করার জন্য যানবাহনগুলোকে টোল দিতে হবে। চারটি ক্যাটাগরিতে টোল আদায় করা হবে।
প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের কম) এবং মিনি-ট্রাক (৩ টনের কম) ৮০ টাকা, মাঝারি আকারের ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত) এবং ৬ চাকার বেশি বড় ট্রাক যথাক্রমে ৩২০ টাকা এবং ৪০০ টাকা দিতে হবে।
এদিকে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা-ফার্মগেট অংশে ১৬বা তার বেশি আসন বিশিষ্ট সব বাস ও মিনিবাসকে দিতে হবে ১৬০ টাকা।
এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল, সাইকেল ও থ্রি-হুইলার চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন: আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো: দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে