বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি
ভাঙচুর বন্ধ না হলে জীবন ও সম্পদের সুরক্ষায় মালিকেরা কারখানা বন্ধ রাখতে পারবে: বিজিএমইএ
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, যদি কোনো কারখানায় শ্রমিক ভাই-বোনেরা কাজ না করেন, কাজ না করে কারখানা থেকে বের হয়ে যান এবং কারখানা ভাঙচুর করেন; তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিক ভাই-বোন ও সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষায় শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন।
রবিবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় সংগঠনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় বিজিএমইএ সভাপতি বলেছেন, যতদিন না শ্রমিক ভাঙচুর বন্ধ হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারছে, ততদিন পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ শিল্প ও সম্পদ রক্ষায় ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন। প্রতিটি উদ্যোক্তার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে বহিরাগতদের হাত থেকে তার নিজস্ব শিল্প ও সম্পদ রক্ষার।’
তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমানে পোশাকখাতে অনেক কারখানায় কাজ কম, ক্রেতারা নতুন করে অর্ডার দেওয়া বন্ধ রেখেছেন, তাই আমরা নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখতে বলেছি। পরিস্থিতি অনূকূলে এলে আবার নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে।’
ফারুক হাসান বলেন, সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ, এ শিল্পকে নিয়ে যারা চক্রান্ত করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন। সেইসঙ্গে শিল্প-কারখানা চালানোর জন্য আমাদেরকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিন। রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক। এ মূহুর্তে প্রবাসী আয়খাতে মন্থর ধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থায় রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প বিশেষ মনোযোগের দাবি রাখে।
সময়ের পরিক্রমায় নূন্যতম মজুরি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেলেও শিল্পের সক্ষমতা সে অর্থে খুব বেশি বাড়েনি জানিয়ে ফারুক হাসান বলেন, চলতি ২০২৩ (পঞ্জিকা বছর) এর প্রথম ৯ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি ভ্যাল্যুতে কমেছে ২২ দশমিক ৮১ শতাংশ, যেখানে বাংলাদেশ থেকে তাদের আমদানি কমেছে প্রায় ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নে প্রস্তুত বিজিএমইএ: ফারুক হাসান
একই সময়ে সারা পৃথিবী থেকে পরিমাণে আমদানি কমেছে ২৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, আর বাংলাদেশ থেকে কমেছে ২৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। শুধুমাত্র আগস্টেই বাংলাদেশ থেকে ভ্যালুতে কমেছে ৩৩ দশমিক ৭১ শতাংশও সেপ্টেম্বরে ৩৪ দশমিক ৭২ শতাংশ।
চলতি ২০২৩ (পঞ্জিকা বছর)- এর প্রথম আট মাসে ইউরোপের বৈশ্বিক আমদানি কমেছে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে কমেছে ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ, শুধুমাত্র আগষ্ট মাসেই কমেছে ২৬ দশমিক ০৬ শতাংশ।
২০২৩ সালের অক্টোবরে দেশের সামগ্রিক রপ্তানি অক্টোবর ২০২২ এর তুলনায় ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে পোশাক রপ্তানির কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রকৃত রপ্তানি পারফরমেন্স ২৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ নিচে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের অন্যতম প্রধান বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পোশাকের দরপতন শুরু হয়েছে, যেটা শিল্পের জন্য নতুন শঙ্কা তৈরি করছে। সার্বিকভাবে বিশ্ববাজার থেকে গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পোশাকের দর ৮ দশমিক ০৩ শতাংশ কমেছে।
তিনি আরও বলেন, একই মাসে (আগস্ট ২০২৩) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যের দর কমেছে ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক কারণের জের ধরে পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। বিগত ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সময়ে গ্যাসের মূল্য বেড়েছে ২৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে ২১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত ৫ বছরে পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয়; উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাংক সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে আমাদের ক্রেতাদেরও কস্ট অব ফান্ড বেড়ে গেছে, যার চাপ বহন করতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের।
তিনি আর জানান, ২০১৩ সাল থেকে প্রতিবছরই নিয়মিতভাবে ন্যূনতম ৫ শতাংশ হারে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে কেন্দ্রীয় তহবিল কার্যকর করা হচ্ছে, যা শ্রমিকদের নানামূখী কল্যাণে ব্যয় করা হয়। এই তহবিলের অর্থ শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা পোশাক রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে না: বিজিএমইএ
বাংলাদেশ জুলাইয়ে আরএমজি রপ্তানি করে ৩.৯৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে: বিজিএমইএ
১ বছর আগে
ন্যায্য মূল্য ছাড়া ক্রয়াদেশ না নেয়ার আহ্বান বিজিএমইএ’র
ন্যায্য মূল্যের চেয়ে কম দামে ক্রয়াদেশ চুক্তি না করতে পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এ বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই আমরা যেন স্বাভাবিক উৎপাদন মূল্যের চেয়ে কম দামে অর্ডার নেগোশিয়েট না করি।’
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম ও স্কটল্যান্ড সফরের ফলাফল জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে সংগঠনটি।
এ সময় তুলা, সুতাসহ অন্যান্য কাঁচামাল ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের পোশাকের মূল্যের ব্যাপারে আরও সংবেদনশীল হওয়ার অনুরোধ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি এস.এম. মান্নান (কচি), সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মিরান আলী, রকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক ব্যারিস্টার শেহরিন সালাম ঐশী, আসিফ আশরাফ, মো. মহিউদ্দিন রুবেল ও ব্যারিস্টার বিদ্যা অমৃত খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএ এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফাউন্ডেশনের (আইএএফ) যৌথ আয়োজনে আগামী বছরের নভেম্বরে ঢাকায় ৩৭তম আইএএফ ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ইইউতে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাধা নেই: বিজিএমইএ
কানাডায় পোশাক রপ্তানি বাড়াতে চায় বিজিএমইএ
এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাজেট: বিজিএমইএ
৩ বছর আগে
যত শিগগির সম্ভব শ্রমিকদের বেতন দেয়া হবে: বিজিএমইএ সভাপতি
বেশিরভাগ শ্রমিকের মার্চ মাসের বেতন আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে নিশ্চিতে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি রুবানা হক।
৪ বছর আগে