পবিত্র রমজান মাস
রমজানে রোজা রাখার প্রস্তুতি: দেহ ও মনকে সুস্থ রাখতে করণীয়
পবিত্র রমজান মাস ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য সংযম ও শৃঙ্খলা অনুশীলনের এক পরম সুযোগ। ইবাদত-বন্দেগীর পাশাপাশি এই আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধি দৈহিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্র তৈরি করে। ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত একটানা পানাহার থেকে বিরত থাকা স্বাভাবিক জীবন ধারণে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে আসে। আর এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য শরীর ও মন দুটোকেই আগে থেকে প্রস্তুত করা উচিত। চলুন, রমজানে রোজা রাখার প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা কী এবং এর বাস্তবায়নের জন্য কী ধরণের কর্মপন্থা অবলম্বন করতে হবে- তা বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
রমজানে মাসব্যাপী রোজা রাখতে স্বাস্থ্যগত পূর্বপ্রস্তুতি কেন জরুরি
পুরো এক মাস টানা রোজা রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো স্বাস্থ্যগত জটিলতা। সব রকম পানাহার থেকে বিরত থাকার পরেও পর্যাপ্ত শক্তির মাত্রা বজায় রাখার জন্য শরীরকে প্রস্তুত করা দরকার। খাওয়া এবং ঘুমের ধরণে আকস্মিক পরিবর্তনের ফলে ক্লান্তি, পানিশূন্যতা এবং হজমের সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে মাসের প্রথম রোজাগুলোতে এরকম অবস্থা সৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক।
তাই রমজানের আগেই খাদ্যাভ্যাসে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনা হলে এই ধাক্কা সামলানো সহজ হয়ে ওঠে। এই প্রস্তুতি শরীরে শক্তির ভারসাম্য এবং মনোনিবেশে সহায়তা করে, যা রমজানের ধর্মীয় মাহাত্ম্য বজায় রাখার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম, পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে শরীর দীর্ঘ সময় আহার থেকে বিরত থাকার সময়কে মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় সহনশীলতা অর্জন করে। এই সঙ্গতিপূর্ণতা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যতীত রমজান পরবর্তী তিন বেলা আহারের জীবনে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়ক।
পবিত্র রমজানে এক মাস রোজা রাখার পূর্বে শারীরিক প্রস্তুতি
.
প্রতি বেলার আহারে সময়ানুবর্তিতা
প্রস্তুতিপর্বটা শুরু করতে হবে রমজানের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে ধীরে ধীরে খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে। আসন্ন রোজার সময়সূচির সঙ্গে শরীরকে মানিয়ে নিতে ভারী খাবারের পরিবর্তে নিয়মিত বিরতিতে হাল্কা খাবার গ্রহণ করা যায়। সারা দিনের জন্য ডিনারের উপর নির্ভরশীলতা কমানো উচিত। কেননা এই অভ্যাস হজমকে ব্যাহত করে এবং রোজার সময় অস্বস্তি সৃষ্টি করে।
আরও পড়ুন: ভিমরুলের কামড় কতটা ভয়ংকর? সাবধানতা ও করণীয়
পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের প্রতি অধিক মনোযোগী হতে হবে। বীজ জাতীয় খাবার, ফল এবং চর্বিহীন প্রোটিন দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে সাহায্য করে। অপরদিকে চিনি ও অস্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরের দুর্বলতার কারণ হয়। এই নতুন খাদ্যাভ্যাস ভোর রাতে খেয়ে সারা দিন রোজা রাখার জন্য শরীরকে ভারসাম্যপূর্ণভাবে তৈরি করে।
সব সময় হাইড্রেটেড থাকা
সমগ্র মাসব্যাপী রোজা মানে প্রতিদিন এক বিপুল পরিসরের সময় শরীরের অভ্যন্তর ভাগ শুষ্ক থাকা। এ অবস্থায় শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তির যোগানের জন্য আগে থেকেই নিয়মিত পানি খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। শরীরের পর্যাপ্ত হাইড্রেশনের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করার প্রয়োজন। নারকেলের পানি, তাজা ফলের রস এবং তরমুজের মতো পানিসমৃদ্ধ ফলগুলো হাইড্রেশনের জন্য সহায়ক। এভাবে শরীরের প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা পূরণ করলে রোজার সময় ক্লান্তি, মাথাব্যথা এবং অন্যান্য ডিহাইড্রেশন-সংক্রান্ত লক্ষণগুলো থেকে মুক্ত থাকা যাবে।
স্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস
দীর্ঘ মেয়াদে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে স্বাস্থ্যকর ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। সেহরি ও ইফতারের সময়গুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য করার জন্য আগে থেকেই ঘুমের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনতে হবে। যারা রাতে খুব তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েন, তাদের জন্য এই পরিবর্তন আনা অনেকটাই সহজ ব্যাপার।
ঘুমের অনিয়ম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে এবং হজমে ব্যাঘাত ঘটায়। এতে করে দেহের সামগ্রিক শক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলশ্রুতিতে রোজা রাখার মুহূর্তগুলো ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হয়ে ওঠে।
অন্যদিকে, রাতে দ্রুত ঘুমাতে যাওয়া এবং ভোরের কিছুক্ষণ আগে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা হলে রমজানের রুটিনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ হয়। ঘুমের এই অনুশীলন কেবল শরীরের জন্যই নয়, মনের স্বাস্থ্যের জন্যও উপযোগী।
আহারে ধীরে ধীরে ক্যাফেইন এবং চিনির পরিমাণ কমানো
রোজার প্রথম দিনগুলোতে আকস্মিকভাবে ক্যাফেইন ও চিনি গ্রহণ থেকে বিরত থাকা মাথাব্যথা, বিরক্তি এবং ক্লান্তির কারণ হতে পারে। এই উপসর্গগুলো এড়াতে রমজান মাসের আগে থেকে ধীরে ধীরে এ ধরণের খাদ্য উপাদানগুলো পরিহার করা উচিত।
কফি, এনার্জি ড্রিংক্স এবং চিনিযুক্ত স্ন্যাকসের বদলে ভেষজ চা এবং তাজা ফল খাওয়া শুরু করা যেতে পারে। চিনি ও ক্যাফেইনের এই ক্রমান্বয়ে হ্রাস শরীরকে আকস্মিক ধাক্কা থেকে রক্ষা করবে। এছাড়া পরিশোধিত চিনি গ্রহণ কমিয়ে দেওয়া রক্তে শর্করার মাত্রাকে স্থিতিশীল করে ও ক্ষুধা হ্রাস করে। এটি সারা দিন ধরে শক্তি ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট কার্যকর।
এক মাস রোজা পালনের পূর্বে মানসিক প্রস্তুতি
.
প্রাত্যহিক জীবনকে একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা
পুরো রমজান মাস জুড়ে রোজা রাখা সম্পূর্ণ একটি নতুন জীবন ধারণের সমতূল্য। তাই নতুন নিয়মের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য যথাযথ মানসিক প্রস্তুতি অপরিহার্য। রমজানের প্রথম দিন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সবকিছু বদলে ফেলার পরিবর্তে আগে থেকে ধীরে ধীরে পবির্তন আনা উচিত।
আরও পড়ুন: ক্যান্সারের নতুন অ্যান্টিবডি চিকিৎসা টিউমার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: গবেষণা
ইবাদত-বন্দেগী থেকে শুরু করে ঘুম ও খাওয়া-দাওয়া প্রতিটি কাজের জন্য নতুন রুটিনে অভ্যস্ত হওয়া শুরু করতে হবে। ধৈর্য্য ধারণের উপর অধিক মনোনিবেশ করা জরুরি। এর সঙ্গে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি যুক্ত করা হলে তা মানসিক চাপ কমানোর জন্য সহায়ক হবে।
অপ্রয়োজনীয় কাজ এবং বিভ্রান্তি থেকে দূরে থাকতে হবে। এর পরিবর্তে ইবাদতের পাশাপাশি সৃজনশীল কাজের প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে।
সহনশীলতার অনুশীলন
রোজার দিনগুলোতে মানসিক উন্নতির পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দক্ষতা হলো সহনশীলতা বা ধৈর্য্য। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও রোজা পালনে ধৈর্য্যের অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। এর সঙ্গে মানসিক নিয়ন্ত্রণের অনুশীলন ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা হাল্কা ধ্যান দিয়ে এই অনুশীলন শুরু করা যেতে পারে। এই ক্রিয়াকলাপ কঠিন মুহূর্তগুলো অতিক্রম করতে সাহায্য করবে। একজন সহনশীল ব্যক্তি তার চিন্তাগুলোকে সুসংগঠিত করতে পারেন, যা তার উদ্বেগ কমাতে এবং মনকে শান্ত করতে কাজে লাগে।
একই সঙ্গে নিজের সময়টাও কাটাতে হবে সমমনা লোকদের সঙ্গে। ধর্মীয় বিষয়ে সৃজনশীল আলোচনা পরস্পরের মধ্যে রোজা রাখার উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। মসজিদে গিয়ে সবার সঙ্গে একত্রে নামাজ পড়া এবং গরীব-মিসকিনদের সাহায্য করা মানসিক জীর্ণতা দূর করার মোক্ষম উপায়। এতে মানসিক শক্তির বিকাশ ঘটে, যা ক্ষুধা বা ক্লান্তির মতো কঠিন মুহূর্তগুলো মোকাবিলা করার উৎকৃষ্ট হাতিয়ার।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: প্রাণে বাঁচলেও নীরবে শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন নারীরা
কুরআন তেলাওয়াতের প্রয়োজনীয় অ্যাপস ব্যবহার
বর্তমান সময়ের সমগ্র জীবন যখন প্রযুক্তিতে নিমজ্জিত, তখন সেই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা যেতে পারে ইবাদতের কাজে। এখন কুরআন পড়া ও শিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মোবাইল অ্যাপ্স রয়েছে। এগুলো ঘরে ও বাইরে যেকোনো স্থানে চলতে ফিরতে কুরআন পাঠ বা দোয়ার মধ্যে থাকার জন্য যথেষ্ট উপযোগী।
‘তার্তিল’, ‘দ্বীন’, ‘মুসলিম বাংলা’, এবং আল কুরআন (তাফসির অ্যান্ড বাই ওয়ার্ড)-এর মতো অ্যাপগুলোতে সাবলীলভাবে কুরআন পড়া এবং শোনা যায়। এগুলোতে রয়েছে ভয়েস-কমান্ড, বুকমার্ক, এবং সঠিক উচ্চারণ যাচাইয়ের ফিচার। এছাড়াও এগুলোর শাব্দিক অনুবাদ ও তাফসিরের সুবিধাগুলো কুরআন গভীরভাবে বোঝার জন্যও উপযোগী।
স্মার্টফোনে অতিক্রান্ত সময় নিয়ন্ত্রণ
ইবাদতের প্রতি মনোনিবেশ এবং সহনশীলতা বিনষ্টকরণের একটি প্রধান কারণ হচ্ছে স্মার্টফোনে অতিরিক্ত সময় দেওয়া। প্রয়োজনীয় কাজের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিনোদনমূলক অ্যাপগুলোতে দিনের একটা বিরাট অংশ অতিবাহিত হয়। এতে উৎপাদন ও সৃজনশীল কাজের প্রতি নিরুৎসাহ সৃষ্টি হয়। সেখানে রমজান মাসে এই কার্যকলাপ ধর্মীয় কার্যক্রমের প্রতি উদাসিন করে তোলে। ফলশ্রুতিতে নষ্ট হয় রোজা পালনের ভাবমূর্তি। তাই স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করে গরীব-মিসকিনদের সাহায্য, কুরআন পড়া ও তাফসির আলোচনা এবং নামাজ পড়ার প্রতি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। উপরন্তু, স্মার্টফোনের নীল আলো ঘুমের জন্যও ক্ষতিকর, যা গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকার দিকে ধাবিত করে। ফলে সেহরি ও ফজরের নামাজ বাদ পড়ে যায় এবং পরবর্তীতে সারাদিন পানাহার থেকে বিরতি থাকার অভিজ্ঞতা অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।
পরিশিষ্ট
কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়া সঠিক ভাবগাম্ভীর্য মেনে রমজানের রোজা পালনের জন্য শারীরিক ও মানসিক পূর্বপ্রস্তুতি অপরিহার্য। নিত্যদিনের আহার ও ঘুমে রুটিন মেনে চলা এবং সার্বক্ষণিক হাইড্রেটেড থাকা শরীরকে যেকোনো দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে। অপরদিকে, নিয়মতান্ত্রিক জীবনধারণ এবং সহনশীলতার চর্চা মননশীলতা বিকাশে সহায়ক হবে। এই পদ্ধতিতে ত্বরান্বিত করতে পারে কুরআন তেলাওয়াতের অ্যাপ ব্যবহার এবং স্মার্টফোন ব্যবহারে পরিমিতিবোধ। সার্বিকভাবে এই পদক্ষেপগুলোর যথাযথ অনুসরণের সম্ভব সুস্থ দেহ ও মন নিয়ে পুরো রোজার মাসটি অতিবাহিত করা।
আরও পড়ুন: শীতে ওজন বেড়ে যাচ্ছে? জেনে নিন কারণ ও সমাধান
৬১ দিন আগে
পবিত্র রমজান মাসে প্রয়োজনীয় ১০টি মোবাইল অ্যাপস
প্রতিটি মুসলমানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময় হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। আল্লাহর একজন খাঁটি বান্দায় পরিণত হওয়ার সর্বোচ্চ প্রশিক্ষণ চলে এই মাসে। সেই সঙ্গে থাকে পুরোনো সব ভুল-ত্রুটি শুধরে এক নিষ্পাপ মানুষে পরিণত হওয়ার অফুরন্ত সুযোগ। তাই মাসের প্রত্যেকটি দিনের কার্যকলাপের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত। এই ধর্মীয় জীবনধারণকে সাবলীল করতে সহায়ক হতে পারে উন্নত প্রযুক্তি। কেননা রোজার মাসটিকে সঠিকভাবে ইবাদতপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু মোবাইল অ্যাপ। চলুন, সেগুলোর মধ্য থেকে সেরা ১০টি রমজান মোবাইল অ্যাপ্সের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
রমজানে সুশৃঙ্খলভাবে ইবাদত বন্দেগীর জন্য সহায়তাকারী মোবাইল অ্যাপ্স
আল কুরআন (তাফসির এ্যান্ড বাই ওয়ার্ড)
রমজানে সুশৃঙ্খলভাবে ইবাদত বন্দেগীর জন্য সহায়তাকারী মোবাইল অ্যাপ্স আল কুরআন (তাফসির অ্যান্ড বাই ওয়ার্ড) কুরআন বোঝা এবং মুখস্থের জন্য একটি নিবেদিত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ২০১৬-এর ২৬ অগাস্ট এই অ্যাপটি তৈরি করে গ্রিনটেক অ্যাপ্স ফাউন্ডেশন। এতে রয়েছে বাংলাসহ ৩৫টিরও বেশি ভাষায় প্রতিটি শব্দের অনুবাদ এবং ৭০টিরও বেশি তাফসির। কুরআন তেলাওয়াত শোনার জন্য রয়েছে ৩০ টিরও বেশি তেলাওয়াতকারীর অডিও।
রোজার মাসে কুরআন খতমের জন্য এটি হতে পারে সর্বোৎকৃষ্ট অ্যাপ। কেননা এখানে প্রতিবার তেলাওয়াতের সময় আগে শেষ করা আয়াতগুলোর একটা পরিসংখ্যান পাওয়া যায়। আয়াত বুকমার্কের সুযোগটির কারণে এর স্বয়ংসম্পূর্ণ লাইব্রেরিটি কার্যকর ভাবে ব্যবহার করা যায়।
আরও পড়ুন: যেসব কারণে রোজা রাখা ডায়েট করা থেকে বেশি উপকারী
বিভিন্ন ধরনের কাস্টমাইজেশনের উপায়সহ এই যাবতীয় সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে একদম ফ্রিতে। এমনকি অ্যাপ চালানোর সময় কোনও বিজ্ঞাপন দেখার বিড়ম্বনাও নেই।
২০২৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ আপডেটকৃত এই অ্যাপের বর্তমান সংস্করণ ১ দশমিক ২৬ দশমিক ১। অ্যাপ চালানোর জন্য স্মার্টফোনের ওএস (অপারেটিং সিস্টেম) হতে হবে নূন্যতম অ্যান্ড্রয়েড ৫। ২১ এমবি (মেগাবাইট)-এর অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়েছে ৫০ লক্ষাধিকবার।
২ লাখ ৮৪ হাজার রিভিউ দাতাদের কাছ থেকে এটি গড়পড়তায় ৪ দশমিক ৮ তারকা রেটিং পেয়েছে।
অন্যদিকে, ২৬ দশমিক ২ এমবির আইওএসের অ্যাপটি ৩৪৮ জনের কাছ থেকে পেয়েছে ৪ দশমিক ৯ তারকা। আইওএস ১৪ দশমিক ২ বা তার পরবর্তী সংস্করণগুলোতে অ্যাপটি চালানো যাবে।
আরও পড়ুন: দামি ফ্ল্যাগশিপ ফোন কেনার সুবিধা-অসুবিধা
তার্তীলঃ কুরআন মেমোরাইজেশন
সরাসরি কুরআন শরীফ দেখে তেলাওয়াতের থেকেও দারুণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে তার্তীল। অ্যাপটি এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তেলাওয়াতকারির ভয়েস ট্র্যাক করে। প্রতিবার তেলাওয়াত শোনার সময় স্ক্রিনে প্রদর্শিত হয় সংশ্লিষ্ট আয়াতটি। এটি বিনামূল্যে কোনও বিজ্ঞাপন ছাড়াই ব্যবহার করা যায়। তবে এর প্রিমিয়াম সংস্করণ আছে, যেখানে তেলাওয়াতে ত্রুটি সংশোধনের মতো নানা ধরনের অ্যাডভান্সড ফিচার আছে।
২০১৬-এর ৩১ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়া তার্তীল অ্যাপের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তার্তীল ইনকরপোরেশন। অ্যান্ড্রয়েডের বিভিন্ন ফোন ভেদে এর জন্য স্টোরেজ প্রয়োজন ১০৮ থেকে ১২০ এমবি। ওএস থাকতে হবে অ্যান্ড্রয়েড ৫ বা তার বেশি। ২০২৪-এর ৬ মার্চ আপডেটের পর এর সর্বশেষ সংস্করণ ৫ দশমিক ৩৮ দশমিক ১। এখন পর্যন্ত ১০ লক্ষাধিকবার ডাউনলোডকৃত অ্যাপটির ৩৮ হাজার রিভিউ থেকে প্রাপ্ত রেটিং ৪ দশমিক ৭ তারকা।
আর আইওএসের জন্য বানানো অ্যাপটির সাইজ ১৯৮ দশমিক ৭ এমবি। ওএস হিসেবে কমপক্ষে আইওএস ১৩ দশমিক ৪ থাকা প্রয়োজন। আড়াই হাজারেরও বেশি রেটিং দাতা অ্যাপটিকে ৪ দশমিক ৭ তারকা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সেহরি ও ইফতারে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যকর দেশি ফল
কুরআন মাজিদ - রমজান ২০২৪
পাকডাটা নির্মিত এই অ্যাপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হচ্ছে এর ইউজার-ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস। এখানে কুরআন পড়া বা মুখস্ত করার সময় বিনামূল্যে আয়াতের পুনরাবৃত্তি, বিরতি এবং গতি কমবেশি করা যায়। অ্যাপটির আরও একটি বিশেষ দিক হচ্ছে এর কিবলার দিক নির্ণয়ের কম্পাস। এছাড়া মক্কা ও মদিনা থেকে লাইভ স্ট্রিমিং, হিজরি ক্যালেন্ডার, এবং কুরআনিক এনগেজমেন্ট মিটার অ্যাপটিকে পরিপূর্ণতা দান করেছে।
২০১৪-এর ১৮ আগস্ট নির্মিত অ্যাপটি সর্বশেষ হালনাগাদ হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ মার্চ। সংস্করণ ৭ দশমিক ৩ দশমিক ২ সংস্করণটি চালাতে ওএস প্রয়োজন অ্যান্ড্রয়েড ৫ কিংবা তার বেশি। ৫৪ এমবি থেকে ১২০ এমবি স্টোরেজ ক্ষমতার অ্যাপটি ডাউনলোড হয়েছে ১ কোটিরও বেশিবার। ৭ লাখ ৯৩ হাজার রিভিউ থেকে রেটিং এসেছে ৪ দশমিক ৭ তারকা।
অন্যদিকে আইওসের অ্যাপে ২ লাখেরও বেশি রেটিং থেকে এসেছে ৪ দশমিক ৮ তারকা। ১৩৭ দশমিক ৫ এমবি সাইজের অ্যাপটি আইওএস ১২ বা তার পরবর্তী সংস্করণগুলোতে চলবে।
আরও পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
৪০৩ দিন আগে
অপোর রমজান ক্যাম্পেইনে আরিফিন শুভ
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু করেছে শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড অপো।
১৮১৮ দিন আগে
সালাম দিয়ে রমজানের শুভেচ্ছা জানালেন ট্রুডো
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে বিশ্বের সব মুসলমানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
১৮২০ দিন আগে