ঋণ
বাংলাদেশের অর্থনীতি সংস্কারে ভূমিকা রাখবে আইএমএফের ঋণ
গত ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ‘রেসিলিয়েন্ট সাসটেইনেবল ফান্ড’ এর আওতায় ঋণ সহায়তার প্রথম কিস্তি পেয়েছে বাংলাদেশ। ডলারের হিসেবে যার পরিমাণ ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
আইএমএফ থেকে সাড়ে তিন বছর ধরে সাত কিস্তিতে যে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ পাচ্ছে, তার মূল্যও কম নয়।
কারণ, এ ঋণের বিপরীতে মোটা দাগে ৩৮টি শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। আর এই অর্থনীতি সংস্কারের শর্ত পূরণের মূল্য দিতে হতে পারে দেশের খেটে খাওয়া মানুষদের।
আইএমএফের মূল শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- আন্তর্জাতিক নিয়মের সঙ্গে মিল রেখে এদেশের রিজার্ভ ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা, ব্যাংকঋণের সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া, ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়ে একটি নির্দিষ্ট দাম ঠিক করা, সব সময় জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিলিয়ে সমন্বয় করা, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহের হার বৃদ্ধি ইত্যাদি।
এছাড়াও বিভিন্ন খাত থেকে উল্লেখযোগ্য হারে ভর্তুকি কমানো, ব্যাংকঋণের সুদের হার বৃদ্ধি, ডলারের একদর করাসহ আইএমএফ যে সকল সুপারিশ বাংলাদেশ সরকারকে বাস্তবায়ন করতে বলেছে; সেগুলার একটি সরাসরি প্রভাব দেশের সাধারণ জনগণের ওপর পড়ছে।
বাংলাদেশ মূলত জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি দিয়ে থাকে; যার পরিমাণ জিডিপির ০.৪ শতাংশ।
বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ প্রতিবছর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার এবং গ্যাসে প্রায় ০.৪ বিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের আশা আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তি আগামী মাসের মধ্যে আসবে: মুখপাত্র
বাংলাদেশে বিগত বছরগুলোতে কয়েক দফায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। কারণ আইএম এফ এর শর্ত হলো অলাভজনক খাতগুলো থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়া।
মূলত গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি, বরং এসব পণ্যের মূল্যের বড় একটি অংশ আগে সরকার পরিশোধ করত, কিন্ত এখন সেটি ভোক্তা পর্যায়ে পরিশোধ করতে হচ্ছে।
ব্যাংকঋণের সুদহারের সীমা তুলে দিলে ব্যাংকগুলো ঋণের সুদ বাড়িয়ে দেবে। এতে পণ্য ও সেবা উৎপাদনের খরচ বেড়েছে, ফলে বেড়েছে পণ্যের দামও। যার ভুক্তভোগী হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
যদি ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে রাতারাতি এদেশে ডলারের দাম বেড়ে যাবে এবং ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হতে পারে।
তখন পণ্য আমদানিতে খরচ আরও বেড়ে যেতে পারে, যা মূল্যস্ফীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
এদিকে, ঋণপ্রাপ্তির প্রথম দুই বছরে কর-জিডিপি দশমিক ৫০ শতাংশ এবং তিন বছরে দশমিক ৭০ শতাংশ হারে বৃদ্ধির কথা বলেছে আইএমএফ।
দেশের রাজস্ব প্রশাসনের প্রবণতা হচ্ছে, যারা কর দেন তাদের ওপরই বাড়তি করের বোঝা চাপানো।
অর্থাৎ এদেশের কর-রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রটি বিস্তৃত হলেও আমাদের কর সংগ্রহ ব্যবস্থায় যথেষ্ট ফাঁক-ফোকর রয়েছে। এদেশের চাকরিজীবীরাই একমাত্র নিয়মিত কর দেয়।
যদি কর-রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য মাথাপিছু কর বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়, তবে সেটি হবে কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষের ওপর একটি বাড়তি বোঝা।
সরকার ইতোমধ্যে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে; যার প্রভাব জিনিসপত্রের দামের ওপর পড়েছে। এগুলোতে সরকার আর ভর্তুকি দিতে রাজি নয়। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে বর্তমানে যে জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাজারদরের কাছাকাছিই আছে।
আরও পড়ুন: সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি চূড়ান্ত করতে ঢাকায় আসছেন আইএমএফ’র ডিএমডি
২০২৬ সালের মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের মধ্যে ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনতে বলেছে আইএমএফ।
এদিকে আইএমএফকে বাংলাদেশ জানিয়েছে, ব্যাংকের পুনঃতফসিল করা ঋণকেও খেলাপি ঋণের হিসাবে আনা হচ্ছে, যা আগামী জুনের মধ্যে কার্যকর হবে।
এর বাইরে দ্রুততম সময়ে আয়কর আইন ও শুল্ক আইন প্রণয়ন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধন, ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের সংশোধন এবং দেউলিয়া আইন প্রণয়নের শর্তও রয়েছে আইএমএফের।
শুধু ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩৪৩.৯৬ বিলিয়ন টাকা এবং এই খেলাপী ঋণের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলছে।
আইএমেফের এই শর্তটি বাস্তবায়ন করা গেলে দেশে ঋণ খেলাপির পরিমাণ অনেকটা কমে যাবে বলে আশা করা যায়।
এছাড়াও, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে তিন মাস পরপর জিডিপির তথ্য প্রকাশ, প্রকৃত ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাবায়ন পদ্ধতি এবং আন্তর্জাতিক নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপ পদ্ধতির প্রণয়ন আগামী জুনের মধ্যেই বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আইএমএফের ঋণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির যে সংস্কার হবে বলে মনে করা হচ্ছে, সেই সংস্কারের ঢেউয়ের প্রভাব শুধু নির্দিষ্ট কোনো একটি শ্রেণির মানুষের ওপরে না পড়ে, দেশের সকল মানুষের ওপর ন্যায়সঙ্গতভাবে পড়ুক; তবেই দেশের উন্নয়ন টেকসই হবে।
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: আইএমএফ’র ঋণ একটি চারিত্রিক সনদের মতো: প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিউর
কিছুটা স্বস্তির জন্য আইএমএফের ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ: আইএমএফের এমডিকে প্রধানমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে কিছুটা স্বস্তির জন্য বাংলাদেশ ঋণ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দ্য রিজ-কার্লটন হোটেলের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য চার দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করে।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, আইএমএফের এমডি শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন, যা কোভিড-১৯ মহামারির পর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য আরও সমর্থন বাড়ান: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ প্রধান বলেন যে সব বাধা মোকাবিলা করে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ নিশ্চিতকরণ এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার কারণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আইএমএফ প্রধানকে তার দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন একদিনে হয়নি, বরং এটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ও কাজের ফল।’
তিনি বলেন, ২০০৭ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনে সামরিক সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে চান সে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেন।
শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে মধ্যস্থতা করতে পারে জাপান: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইএমএফ গত ১৪ বছর ধরে সবসময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে আইএমএফের সঙ্গে চার দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি প্রকল্পে নিয়োজিত রয়েছে, যা মাত্র দুই সপ্তাহের আলোচনার পরে দেশটি পেয়েছে। যদিও অনেক দেশ বছরের পর বছর ধরে আলোচনার পরেও ঋণ নিতে পারে না।
আইএমএফ প্রধানের উদ্ধৃতি দিয়ে রউফ বলেন, ‘আইএমএফ ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আইএমএফের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।
জানুয়ারিতে আইএমএফের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী ৪২ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ সাতটি কিস্তিতে এই ঋণ পাবে। ঋণের গড় সুদ হবে দুই দশমিক ২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনবে: জাপানি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী
বরিস জনসনের ঋণ নিয়ে ক্ষোভের মধ্যে বিবিসি প্রধানের পদত্যাগ
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের জন্য ২০২১ সালের ঋণের ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে নিজের ভূমিকার বিষয়ে স্বার্থের সম্ভাব্য দ্বন্দ্ব প্রকাশ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে পদত্যাগ করেছেন বিবিসির চেয়ারম্যান।
শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পাওয়ার পর তিনি পদত্যাগ করেন।
সরকারের সুপারিশে বিবিসি পদে নিযুক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে রিচার্ড শার্প ক্রেডিট লাইনের ব্যবস্থা করতে সাহায্য করেছিলেন বলে প্রকাশের পর সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত জাতীয় সম্প্রচারকারী সংস্থাটি রাজনৈতিক চাপের মধ্যে পড়েছে।
ধনী কানাডিয়ান ব্যবসায়ী স্যাম ব্লিথের কাছ থেকে আট লাখ পাউন্ড বা (দশ লাখ ডলার) লাইন অফ ক্রেডিট এসেছে। যিনি জনসনের সঙ্গে কনজারভেটিভ পার্টির দাতা শার্পের পরিচয় করিয়েছিলেন। জনসন দলের নেতার পাশাপাশি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন।
শার্প বলেছিলেন যে তিনি নিয়মগুলোর একটি ‘অজান্তে’ লঙ্ঘন করার পরে ‘বিবিসির স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে’ পদত্যাগ করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যে এই বিষয়টি কর্পোরেশনের ভাল কাজ থেকে একটি বিভ্রান্তি হতে পারে যদি আমি আমার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পদে থাকতাম।’।
আরও পড়ুন: ভারতে বিবিসি’র কার্যালয়ে তৃতীয় দিনের মতো অভিযান, কর ফাঁকির অভিযোগ
শার্প বলেছেন যে নতুন চেয়ারম্যান খোঁজ করা হচ্ছে। জুনের শেষ পর্যন্ত নতুন চেয়ারম্যান না পাওয়া পর্যন্ত তিনি বিবিসিতে তার পদে থাকবেন।
শুক্রবার প্রকাশিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডাম হেপিনস্টলের ঘটনার একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে শার্প ‘সম্ভাব্য স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তদন্তটি ১০০ বছর বয়সী বিবিসির জন্য সর্বশেষ অস্বস্তিকর পর্ব, যা একটি টেলিভিশন সহ সমস্ত পরিবারের দ্বারা প্রদত্ত লাইসেন্স ফি দ্বারা অর্থায়ন করা হয় এবং এর সংবাদ কভারেজের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ হওয়া কর্তব্য।
পাবলিক ব্রডকাস্টার প্রায়শই একটি রাজনৈতিক ফুটবল, রক্ষণশীল সরকারের কিছু সদস্য এর সংবাদ আউটপুটে বামপন্থী তীর্যক দেখেন এবং কিছু উদারপন্থী এটিকে রক্ষণশীল পক্ষপাতিত্বের জন্য অভিযুক্ত করে।
বিবিসি’র প্রধান ক্রীড়া উপস্থাপক ও সাবেক ইংল্যান্ড ফুটবল খেলোয়াড় গ্যারি লিনেকার সোশ্যাল মিডিয়াতে সরকারের অভিবাসন নীতির সমালোচনা করায় বিবিসি মার্চ মাসে বাকস্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক পক্ষপাত নিয়ে একটি সমালোচনার মধ্যে পড়েছিল।
ফলে লিনেকারকে স্থগিত করা হয়েছিল এবং তারপরে অন্যান্য ক্রীড়া উপস্থাপক, বিশ্লেষক এবং প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়রা সংহতিতে বিবিসি এয়ারওয়েভ বর্জন করার পর তার স্থগিতের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
আরও পড়ুন: বাংলাসহ ১০ ভাষায় রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করছে বিবিসি
৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের ২য় কিস্তি: আলোচনার জন্য ফের ঢাকায় আসছে আইএমএফ দল
বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের প্রথম কিস্তির ব্যবহার এবং দ্বিতীয় কিস্তি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি দল আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকায় আসছে।
সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: আইএমএফের পরামর্শে নতুন ভিত্তি বছরে মার্চ থেকে মুদ্রাস্ফীতি গণনা করবে বিবিএস
সূত্র জানায়, ২৫ এপ্রিল থেকে ২ মে সফরকালীন আইএমএফ দলটি মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আইএমএফ এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ তিন থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট দলের নেতৃত্ব দেবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেসবাউল হক জানান, সফরকালে সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইএমএফ টিমের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করবে।
গত ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ কর্তৃক অনুমোদিত ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের মধ্যে ৪৭৬ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রথম ধাপ পেয়েছে বাংলাদেশ।
২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো পরিমাণ পরিশোধ করা হবে। এইভাবে, আরও ছয়টি কিস্তি বাকি আছে।
আরও পড়ুন: ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিয়ে আলোচনা করতে ২৫ এপ্রিল ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল
মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আইএমএফ সাধারণত প্রতিটি ধাপ বিতরণের আগে সম্মতির বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে। এ অনুযায়ী, আইএমএফ’র একটি দল আগামী সেপ্টেম্বরে আসবে দ্বিতীয় ধাপ বিতরণের আগে ঋণের শর্ত পূরণের পর্যালোচনা করতে।
সাধারণত প্রতিটি বাজেট ঘোষণার আগে, একটি আইএমএফ মিশন বাজেট সহায়তা নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসে। এখন যেহেতু ঋণ কার্যক্রম চলছে, বাজেট সহায়তার পাশাপাশি ঋণের শর্ত পূরণের বিষয়গুলোও আলোচনায় আসবে বলে সূত্র জানায়।
বৈশ্বিক ঋণদাতা এই প্রতিষ্ঠানটি ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণের প্রথম কিস্তি দেওয়ার পর বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট হ্রাস পেয়েছে।
আইএমএফ এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) এর অধীনে প্রায় ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রেজিলেন্স এন্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি ফর বাংলাদেশ’র অধীনে প্রায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফ থেকে ৪৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রথম কিস্তি পায়।
আরও পড়ুন: আর্থিক খাত সংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসছে আইএমএফ দল
প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকগুলোকে কার্যকর ঋণ ব্যবস্থাপনার আহ্বান জানিয়েছেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব যে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তা মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রতিক্রিয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি ঝুঁকি-অবহিত পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে যা বহুমাত্রিক দুর্বলতাকে বিবেচনা করে, লিঙ্গ সমতাকে উন্নীত করে, সামাজিক সুরক্ষাকে শক্তিশালী করে এবং বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এমডিবি’স) মাধ্যমে রেয়াতি ঋণের প্রসার ঘটায়।’
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলে (ইকোসক) ‘উন্নয়ন সহযোগিতা: দীর্ঘমেয়াদী সহনশীলতা এবং বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকের ভূমিকা’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তার পূর্ব-রেকর্ড করা মূল বক্তব্যে একথা বলেন।
তিনি বলেন যে একত্রে কাজ করে এবং এমডিবি-এর সম্পদ ও দক্ষতার ব্যবহার করে, আগামী প্রজন্মের জন্য আরও সহনশীল এবং সমৃদ্ধ বিশ্ব তৈরির দিকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা এমডিবি-এর মাধ্যমে দরিদ্র জনগণকে সহায়তা করে একটি সমৃদ্ধ এবং দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়তে একসঙ্গে কাজ করি।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি এখন একাধিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে - প্রথমে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এবং পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিস্ময়কর প্রভাবের কারণে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা করা উচিৎ: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এই জটিল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, বিশ্ব সম্প্রদায়ের দুর্বল অংশের সহনশীলতা তৈরি করতে এবং বহুমাত্রিক সংকট মোকাবিলায় উন্নয়ন সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’
তিনি উল্লেখ করেন যে এটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা হয় যে বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি’র) গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন যে এমডিবি’র থেকে অর্থায়ন বৈশ্বিক সমস্যাগুলো এবং অগ্রিম নীতিগুলো মোকাবিলা করার জন্য বহু-দলীয় সংলাপকে উৎসাহিত করবে যা ২০১৫ এর আদ্দিস আবাবা অ্যাকশন এজেন্ডায় নির্দিষ্ট করা ম্যান্ডেট অনুসারে এসডিজি অর্জনে আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করবে৷
তিনি বলেন, ‘এমডিবিগুলোকে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের পণ্য, যেমন স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং প্রযুক্তির প্রচারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এগুলো টেকসই উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও জ্ঞান প্রদানের জন্য এবং তাদের সক্ষমতা তৈরিতে এবং টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য এমডিবিগুলো অনন্যভাবে অবস্থান করছে।
‘উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সহনশীলতা তৈরির দিকে কাজ করার সময়, আমাদের অবশ্যই তাদের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা অন্বেষণ করার ক্ষমতা স্বীকার করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে আর্থিক বৈষম্য, ডিজিটাল বিভাজন এবং উন্নয়ন বিভাজন। টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত উন্নয়নের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী সহনশীলতা তৈরিতে ফোকাস করা উচিত।’
তিনি বলেন, দেখা যাচ্ছে এমডিবি’র সুদের হার ও সার্ভিস চার্জ বাড়ছে। এ ধরনের পদক্ষেপ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও শক্ত অবস্থানে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি এমডিবি’কে একটি ঋণ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ঠিক করার আহ্বান জানান যা আর্থিকভাবে কার্যকর এবং দুর্বল দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০১৫ সালে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতাও রয়েছে।
‘আমাদের লক্ষ্য ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করা। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ, উন্নত ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চূড়ান্ত রূপকল্প নিয়ে ।’
কিন্তু, তিনি বলেন, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আমাদের উন্নয়ন যাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মতো দেশগুলোকে সংকট কাটিয়ে উঠতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের মধ্যে জলবায়ু অর্থায়ন দ্বিগুণ চায় বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো
৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিয়ে আলোচনা করতে ২৫ এপ্রিল ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল
বাংলাদেশের জন্য চার দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ কর্মসূচির প্রথম কিস্তির ব্যবহার এবং দ্বিতীয় কিস্তি বিতরণের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি দল ২৫ এপ্রিল ঢাকায় আসছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বুধবার ইউএনবিকে জানায়, ২৫ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত মিশনটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ তিন থেকে চার সদস্যের এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
আরও পড়ুন: আর্থিক খাত সংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসছে আইএমএফ দল
গত ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ কর্তৃক অনুমোদিত চার দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণের মধ্যে ৪৭৬ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রথম কিস্তি পেয়েছে বাংলাদেশ।
২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ পরিশোধ করা হবে। সে হিসাবে আরও ছয়টি কিস্তি বাকি রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আইএমএফ সাধারণত প্রতিটি কিস্তি বিতরণের আগে সম্মতির বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে। সে অনুযায়ী দ্বিতীয় কিস্তি বিতরণের আগে ঋণের শর্ত পূরণ পর্যালোচনা করতে আগামী সেপ্টেম্বরে আইএমএফের একটি দল আসবে।
সাধারণত প্রতিটি বাজেট ঘোষণার আগে আইএমএফের একটি মিশন ঢাকায় আসে বাজেট সহায়তা নিয়ে আলোচনা করতে। সূত্র থেকে আরও জানা যায়, এখন যেহেতু তাদের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি চলছে, তাই বাজেট সহায়তার পাশাপাশি ঋণের শর্ত পূরণের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসবে।
আরও পড়ুন: ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ: আইএমএফ অনুমোদন করতে পারে সোমবার
কোম্পানীগঞ্জে ঋণের চাপে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যার অভিযোগ
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ঋণের চাপ নিতে না পেরে এক ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলার ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের ভোলাগঞ্জ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
নিহত ব্যবসায়ী কামাল মিয়া (৪০) সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার নিজগাঁও গ্রামের মন্নান মিয়ার ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে ভালাগঞ্জ উত্তর পাড়া গ্রামে বসবাস করতেন।
নিহতের স্ত্রী জানান, সকালে স্বামীকে বাড়িতে রেখে তিনি তার বাবার বাড়ি যান। আসরের নামাজের পর বাড়িতে ফিরে ঘরের দরজা বন্ধ পান। দরজা খুলে তিনি দেখেন তার স্বামী ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলে আছে। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশিরা এসে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে নার্সের আত্মহত্যা!
পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কামাল মিয়া ভোলাগঞ্জে এলসি কমিশন ব্যবসা করে আসছেন। তিনি তার এক নিকট আত্মীয়কে এলসির ভারতীয় চুনা পাথরের জন্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা দেন। প্রায় দুই বছর আগে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঋণ করে কামাল এই টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা আটকা পড়ায় দীর্ঘদিন ধরে পাওনাদাররা তাকে টাকার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। তাদের চাপের কারণে নিকট আত্মীয়ের ওপর অভিমান থেকে তিনি আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিতে পারে।
লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায়।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবারের সদস্যরা ও উপস্থিত লোকজন কামাল মিয়া আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে।’
আরও পড়ুন: শাহরাস্তিতে চুরির অপবাদ সইতে না পেরে যুবকের আত্মহত্যা
জাতীয় বাজেটে বৈদেশিক সহায়তা কমেছে: অর্থমন্ত্রী
জাতীয় বাজেটের জন্য বৈদেশিক সহায়তা কমে এসেছে। গত অর্থবছরে (২০২১-২২) ছিল তিন দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা চলতি অর্থবছরে এক দশমিক ০৩ কমে দুই দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।
মঙ্গলবার সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের (নোয়াখালী-২) এক প্রশ্নের জবাবে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
লিখিত উত্তরে মন্ত্রী বলেন, সরকার গত অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রায় তিন দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ সহায়তা পেয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরে দুই দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সংসদে শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপির তালিকা দিলেন অর্থমন্ত্রী
ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহমেদের (ময়মনসিংহ-১১) প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। কিন্তু বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার সংশোধন করা হতে পারে।
মামুনুর রশীদ কিরনের (নোয়াখালী-৩) প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা কামাল বলেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ পূরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাজ করছে।
তিনি বলেন, এনবিআর আশা করছে অর্থবছরের শেষ নাগাদ লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জিত হবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল অংশীদার: অর্থমন্ত্রী
আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি পেল বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার বৃহস্পতিবার পেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আইএমএফের ঋণ অনুমোদনের তিন দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংক এই অর্থ পেয়েছে।
তিনি ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন যে আইএমএফ থেকে প্রথম কিস্তি দেয়ার ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার যা তিন হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) ও এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) এর আওতায় বাংলাদেশ প্রায় ৩৩০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় প্রায় ১৪০ কোটি ডলার পাবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জন্য ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন দিল আইএমএফ
রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য তৈরি তহবিল থেকে ঋণ গ্রহণকারী বাংলাদেশ এশিয়ায় প্রথম।
বাংলাদেশ সাতটি কিস্তির মাধ্যমে ঋণ পাবে এবং দুই শতাংশ সুদে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
বাংলাদেশ ২০২২ সালের জুলাই মাসে আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছিল। তখন আইএমএফ আশ্বস্ত করে যে বৈশ্বিক ঋণদাতা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে গত বছরের জুলাইয়ে বোর্ড সভার সময় এক ফাঁকে আইএমএফ আলোচনা করে।
আলোচনা অনুযায়ী, রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে আইএমএফের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকা সফর করেন।
পরে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আন্তোয়নেট মনসিও সায়েহ চলতি বছরের ১৪ থেকে ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফর করেন এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ: আইএমএফ অনুমোদন করতে পারে সোমবার
বাংলাদেশকে ঋণ দিতে আইএমএফ’র কোনো শর্ত নেই: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ: আইএমএফ অনুমোদন করতে পারে সোমবার
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত পেয়েছেন যে, বহুপক্ষীয় ঋণদাতার বোর্ড দেশটির ঋণের অনুরোধ অনুমোদন করতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার (৩০ জানুয়ারি) আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ঋণ অনুমোদন করবে।
রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে একটি আইএমএফ দল প্রোগ্রামের বিশদ বিবরণ বের করতে গত ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর ঢাকা সফর করেছেন।
এরপর আইএমএফ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট আন্তোয়েনেট মনসিও সায়েহ ১৪-১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফর করেন এবং তার সফরের সময় তিনি যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক অগ্রগতির প্রত্যক্ষ করেছেন তার প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার আকাঙ্খাকে সমর্থন দেবে আইএমএফ: ডিএমডি
তিনি বলেন, এটি সারা বিশ্বে একটি প্রভাব ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন সায়েহ।
আইএমএফ এর সাবেক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর ইউএনবিকে বলেছেন, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং অন্যদের সঙ্গে যে পরিদর্শন ও আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়।
এছাড়া বৈশ্বিক ঋণদাতা দেশটিকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তি শুধু আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষায় রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এর আগে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম ঠিক সেভাবে ঋণ পাচ্ছি। বাংলাদেশের জন্য মোট ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়া হবে।’
২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে এই পরিমাণ অর্থ বিতরণ করা হবে।
এছাড়া ৪৪৭.৭৮ মিলিয়ন ডলারের প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে দেয়া হবে। অবশিষ্ট পরিমাণ ৬৫৯.১৮ মিলিয়ন ডলার ছয়টি সমান কিস্তিতে দেয়া হবে।
সূত্র জানিয়েছে, ঋণের সুদের হার ম্যাচুরিটির সময় বাজারের হারের ওপর নির্ভর করবে। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয় হিসাব করেছে যে এই হার প্রায় ২.২ শতাংশ হবে।
আইএমএফ এর আগে বলেছিল যে, রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে তার প্রতিনিধিদল এবং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বর্ধিত ক্রেডিট সুবিধা (ইসিএফ) এবং বর্ধিত তহবিল সুবিধা (ইএফএফ) এর অধীনে প্রায় ৩.২ বিলিয়ন ডলারের ৪২ মাসের ব্যবস্থা সহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নীতিগুলিকে সমর্থন করার একটি কর্মসূচিতে সম্মত হয়েছে। পাশাপাশি স্থিতিস্থাপকতা এবং টেকসই সুবিধা আরএসএফ এর অধীনে প্রায় ১.৩ বিলিয়ন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ঋণ দিতে আইএমএফ’র কোনো শর্ত নেই: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
আইএমএফের ‘রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফান্ড’ থেকে ঋণ নেয়ায় এশিয়ায় প্রথম বাংলাদেশ