আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে এনজিও থেকে ঋণ এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে ওমানে যান হোসেন মিয়াজী। আগুন নিভিয়ে দিল সব স্বপ্ন। চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
হোসেন মিয়াজী ওমানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর বুরাইমির একটি সোফা কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সোমবার (১১ মার্চ) ভোরে ওমানের ওই কারখানায় হঠাৎ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে লাগা আগুনে তার মৃত্যু হয়।
চাঁদপুরের শাহরাস্তি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিজমেহার গ্রামের যুগী বাড়ির আব্দুস সালামের একমাত্র ছেলে তিনি।
আরও পড়ুন: যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসচালক নিহত
একমাত্র পুত্রসন্তান ও পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎসকে হারিয়ে নির্বাক বাবা আব্দুস সালাম এবং মা নুরজাহানের কান্না থামছেই না। তারা কেবলই বিলাপ করছেন ও র্মূছা যাচ্ছেন।
স্বজনরা জানান, পরিবারের স্বচ্ছলতার আশায় আত্মীয়-স্বজন ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ২০১৯ সালে বিদেশ পাঠানো হয় তাকে। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ঋণের দায় কাটিয়ে এখনো উঠতে পারেনি পরিবারটি। এমন পরিস্থিতিতে পুত্রের মৃত্যু!
হোসেনের ছোট বোন মরিয়ম আক্তার জানান, নিজের ভাইয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার শ্বশুর বাড়ি এলাকার এনজিও থেকে ঋণ এনে দিয়েছেন। একটি দুর্ঘটনা তাদের সবাইকে পথে বসিয়ে দিল।
হোসেনের মা নুরজাহান বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, একটু ভালো থাকার আশায় ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি। আজ আমার সব শেষ।
হোসেনের মৃতদেহ দেশে আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মা বাবা ও পরিবারের সদস্যরা। শেষবারের মতো সন্তানকে একনজর দেখতে তারা আকুতি জানান।
পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মিজানুর রহমান ইউএনবিকে জানান, তার লাশ দেশে আনতে পরিবারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
তিনি আরও জানান, তার অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হোসেন অত্যন্ত বিনয়ী ও কর্মঠ ছিল।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় ভটভটির ধাক্কায় কৃষক নিহত