ঘূর্ণিঝড়
উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’, বাংলাদেশে কমেছে প্রভাব
উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে উত্তর উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করেছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে উত্তর উড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। শুক্রবারের মধ্যে পুরী ও সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী ভারতের উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আরও পড়ুন: 'দানা'র প্রভাবে প্লাবিত হতে পারে উপকূলীয় জেলা
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়া যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে বরিশালে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ
৩ সপ্তাহ আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমালের পর স্বাভাবিক হচ্ছে সুন্দরবন
গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি নতুন করে অঙ্কুরিত হতে শুরু করায় বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন তার স্বাভাবিক রূপ ফিরে পেতে শুরু করেছে।
বর্ষার প্রভাবে বন ও এর আশপাশের সুন্দরী, গরান, গোলপাতাসহ নানা গাছে ভরে উঠেছে এ বন।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাসের কারণে লবণাক্ত হয়ে যাওয়া মিঠা পানির পুকুরগুলো সম্প্রতি মৌসুমি বৃষ্টির কারণে আবারও মিঠা পানিতে ভরে গেছে। ফলে সুন্দরবন পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মৌয়ালের মৃত্যু
পর্যটক, জেলে, কাঠুরে ও মধু সংগ্রহকারীদের প্রবেশ বিধিনিষেধের কারণে, সুন্দরবনে অনেকটা নীরবতা বিরাজ করছে। এতে মাছ ও বন্যপ্রাণী উৎপাদন বৃদ্ধি, তাদের অবাধ চলাচল, প্রজনন কার্যক্রম এবং নতুন উদ্ভিদের বৃদ্ধি সহজ হচ্ছে।
ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি বর্ণনা করে সুন্দরবনের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো ইউএনবিকে বলেন, ২৬ মে রিমালের ক্ষয়ক্ষতি আগের ঘূর্ণিঝড় আইলা ও সিডরকে ছাড়িয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় শতাধিক মিঠা পানির পুকুর লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যায়, যার ফলে শতাধিক হরিণ ও বিভিন্ন প্রাণী মারা যায়।
এছাড়া অসংখ্য সুন্দরী, গরান ও গোলপাতাসহ অন্যান্য উদ্ভিদ প্রজাতির গাছ ধ্বংস হয়ে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য কেড়ে নিয়েছে।
পূর্ববর্তী অনুষ্ঠানগুলোর মতো, বন বিভাগ এরই মধ্যে নতুন করে গাছপালা জন্মানো এবং মাছ ও বন্যপ্রাণীর প্রজননের জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণ এবং জেলে, কাঠুরে ও মধু সংগ্রহকারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
ফলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার এক মাসের মধ্যেই সুন্দরবন তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরে পেতে শুরু করেছে।
এই ম্যানগ্রোভ বনে ৩৫০ প্রজাতির পাখি, ২৯০ প্রজাতির প্রাণী, ৩০-৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৮-১০ প্রজাতির উভচর এবং ২০০ প্রজাতির মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী রয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন সংলগ্ন ৫২টি নদী ও খালের তীরে পুনরুদ্ধার করা হবে ম্যানগ্রোভ বন
`সুন্দরবনের মধু' বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে
৪ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৯৭ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ চালু
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবের পর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) ৯৭ শতাংশ গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হয়েছে।
আর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) গ্রাহকদের কাছে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) হালনাগাদ তথ্যের বরাত দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ এই তথ্য জানায়।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ২ কোটি ৯৩ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুতের সংযোগ পুনরায় চালু করেছে, যা মোট ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের ৯৭ শতাংশ।
গত রবিবার ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানার পর বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ৩ কোটি ৩ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১ কোটি ৭২ লাখ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎবিহীন
বিতরণ সংস্থাটির তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ২২ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি, যা মোট বিআরইবি গ্রাহকের ৩ শতাংশ।
তবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) আশা করছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তারা ৯৯ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সক্ষম হবে। আর ১ শতাংশ গ্রাহকের সরবরাহ বাকি থাকবে, যা গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেওয়া প্রয়োজন হবে।
একই সময়ে ওজোপাডিকো তার সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওজোপাডিকোর মোট ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ৪ লাখ ৫৩ হাজার, যারা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছিলেন।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ লাইন মেরামতে বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রায় ২১ হাজার জনবল কাজ করছে। একইভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করেছিলে ওজোপাডিকো।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: বিআরইবির ৯৩,ওয়েস্ট জোন পাওয়ারের ৮৭ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব: শরীয়তপুরে বিদ্যুৎহীন সাড়ে ৩ লাখ মানুষ
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছপালা ভেঙে পড়ে জেলার সাড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
এছাড়া গাছপালা ভেঙে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও কিছু কাঁচা ঘরের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে ফসল-ফসলি জমিরও।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বৃষ্টিতে কর্মজীবী-শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যাহত
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জেলার বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছন্ন হয়ে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
সখিপুর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, রবিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছি। সখিপুরের হাজী শরীয়তুল্লাহ কলেজ এলাকায় বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছ ভেঙে পড়েছে। এখনো পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কোনো লোক এসে গাছগুলো সরিয়ে দেয়নি।
গোসাইরহাটের কুচাইপট্টি ইউনিয়নের মাইজারি গ্রামের বাসিন্দা শামিম আহমেদ বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পড়ে আছে। এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে আমাদের কারও মোবাইলে চার্জ নেই। যার কারণে দূরে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজখবরও নিতে পারছি না।
শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (তথ্য ও প্রযুক্তি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, সকাল থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক ত্রুটিপূর্ণ। যার কারণে এখনো পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য আমরা হাতে পাইনি।
তিনি আরও বলেন, যে তথ্য পেয়েছি, তাতে সাড়ে ৩ লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। ৫০০ থেকে ৬০০ স্থানে বৈদ্যুতিক তার ও খুঁটির উপরে গাছ পড়ে রয়েছে। লোকবল সংকট থাকার কারণে দ্রুত এসব গাছ সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে আশা করছি দ্রুত লাইনগুলো ঠিক করে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে নিহত ৭
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ৬ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ৬ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে আংশিক এবং সম্পূর্ণ মিলে এক লাখ ৫০ হাজার ৪৭৫টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
সোমবার (২৭ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় রিমাল পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে উচ্চতর মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও চট্টগ্রামে মোট ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে দেশের ১৯টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো হলো- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চাদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর এবং যশোর। ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার সংখ্যা ১০৭টি এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভার সংখ্যা ৯১৪টি।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৪৮৩টি ঘরবাড়ি এবং আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সতর্কবার্তার প্রেক্ষিতে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ৯ হাজার ৪২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্র ও স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আট লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়াসহ আশ্রিত পশুর সংখ্যা ৫২ হাজার ১৪৬টি।
তিনি বলেন, দুর্গত লোকজনকে চিকিৎসা সেবা দিতে মোট এক হাজার ৪৭১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে চালু আছে এক হাজার ৪০০টি টিম।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১৫ জেলায় জিআর (ক্যাশ) তিন কোটি ৮৫ লাখ নগদ টাকা, ৫ হাজার ৫০০ টন চাল, ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য এক কোটি ৫০ লাখ টাকা, গোখাদ্য কেনার জন্য দেড় কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহকে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সুইডেনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে নিহত ৭
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো বাতাসে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং গাছপালা উপড়ে পড়েছে।
সোমবার দুপুর পর্যন্ত ইউএনবির জেলা সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, রবিবার রাতে ও সোমবার পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা ও সাতক্ষীরায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
ঝড়ে উপকূলীয় জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় রবিবার রাত থেকে দুই কোটির বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) ৩ কোটি ৫৮ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ২ কোটি ২২ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআরইবির এক কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বৃষ্টিতে কর্মজীবী-শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যাহত
তিনি বলেন, মূলত ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রাখা হয়েছে।
বাগেরহাট থেকে পাওয়া প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া গাছ উপড়ে গেছে, বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে এবং বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রবিবার রাত থেকে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে প্রায় পাঁচ লাখ বাসিন্দা।
রবিবার রাতে বেশ কিছু এলাকার বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে গ্রামগুলো প্লাবিত হয়।
প্রাথমিকভাবে জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন জানান, ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ৪৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
খুলনার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় শতাধিক চিংড়ি ঘের জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে।
এছাড়া এসব উপজেলার ৯টি স্থানে বাঁধ ভেঙে অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ভোলায় ঢালচর, চর কুকরি মুকরি ও মনপুরা ৪-৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ২৫ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। উপকূলীয় এলাকা থেকে আট লাখের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে বিজিবি
ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সাতক্ষীরার স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে বিজিবির নীলডুমুর ব্যাটালিয়ন জনসচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ৩ নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ
সোমবার (২৭ মে) নীলডুমুর ব্যাটালিয়নের (১৭ বিজিবি) অধিনায়ক মুহাম্মাদ সানবীর হাসান মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন।
অধিনায়ক মুহাম্মাদ সানবীর হাসান মজুমদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় বিজিবির নীলডুমুর ব্যাটালিয়ন বিওপিসমূহের সামনে বেড়িবাঁধের উপর বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছে।
তিনি বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও বিপৎসংকেত অনুযায়ী জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। নদীতে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার চলাচল না করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
অধিনায়ক সানবীর হাসান আরও বলেন, নীলডুমুর বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশেপাশের দুর্গত এলাকার মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সেখানকার ১৫০ জনেরও বেশি জনসাধারণের মাঝে রান্না করা খাবার, সুপেয় পানি ও শুকনো খাবার সরবরাহসহ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নীলডুমুর বুড়িগোয়ালিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে এবং নীলডুমুর বাজারে আশ্রয়রত ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় আসা স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝেও খাবার দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় আপদকালীন বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য তিন প্লাটুন বিজিবি সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি
দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: খুলনার উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি-জলোচ্ছ্বাস
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনায় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হচ্ছে সন্ধ্যা থেকে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি ৪ ফুট বেড়েছে পুরো সুন্দরবন।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ হারুন অর রশিদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি আজ সন্ধ্যা অথবা রাত ৯টা নাগাদ সুন্দরবন ও মোংলা উপকূল অতিক্রম করে উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ও পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির রবিবার বিকালে জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে মোংলা বন্দর চ্যানেলে চার ফুট পানি বেড়ে সুন্দরবন প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে সুন্দরবনে অবস্থিত করমজলে একমাত্র সরকারি বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রটিও। ঝড়ের প্রভাব অব্যাহত থাকলে রাতে পানি আরও বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন: উপকূলীয় এলাকার কাছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল, জেলাগুলোতে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি
তবে বণ্যপ্রাণীর জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ায় এখানে কোনো ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আজাদ কবির আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পুরো সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বন বিভাগের ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্পগুলোতে থাকা বনরক্ষীদের এরই মধ্যে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে এরই মধ্যে মোংলা নদীতে যাত্রীবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না ও পৌর মেয়র শেখ আব্দুর রহমান।
তারা জানান, ঝুঁকি এড়াতে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি কাজ ও রোগীদের কথা চিন্তা করে মোংলা নদীতে ফেরি চালু রাখা হয়েছে। পৌর শহরের আশ্রয় কেন্দ্রে লোকজনকে আনার জন্য ব্যাপক তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আজ সন্ধ্যায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় 'রিমাল'
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কেন, কীভাবে, কারা করেন
সাগরে নিম্নচাপের সময় বাতাসের প্রচণ্ড ঘূর্ণায়মান গতির ফলে সংঘটিত বায়ুমণ্ডলীয় উত্তাল অবস্থাকে সংক্ষেপে ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। বাতাসের এই একটানা ঘূর্ণায়মান গতি যখন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় পৌঁছায়, তখনই এর নামকরণ করা হয়। আটলান্টিক মহাসাগর ও এর আশপাশের অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটারে উঠে গেলে নিম্নচাপ ঝড়ে পরিণত হয়। আর এ সময়ই ঘূর্ণিঝড়টিকে একটি নাম দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। চলুন, ঘূর্ণিঝড়ের এই নামকরণের কারণ ও পদ্ধতি জেনে নেয়া যাক।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয় যে কারণে
ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা, ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের জন্য আগাম প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করাটাই নামকরণের প্রধান উদ্দেশ্য। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জনসাধারণের কথা ভেবে তাদের সতর্কতার সুবিধার্থে নামটি নির্বাচন করা হয়। তারা যেন খুব সহজেই নামটি বুঝতে ও মনে রাখতে পারে সেদিকে যথেষ্ট খেয়াল রাখা হয়। এতে নির্দিষ্ট অঞ্চলে সতর্কতা জারি করার সময় সহজে দুর্যোগের তীব্রতা বোঝানো সম্ভব হয়।
নামকরণের আরও একটি কারণ হচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা। একই সময়ে একাধিক ঝড় সক্রিয় থাকলে বা আগে কোনো দুর্যোগের সঙ্গে পার্থক্য করার ক্ষেত্রে আলাদা নাম সুবিধাজনক। এ সময় তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণে অনাকাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তি এড়ানো সম্ভব হয়। এমনকি ট্র্যাকিং ও পদ্ধতিগত দিক থেকে উন্নয়নসাধনের জন্যও নামকরণের বিকল্প নেই।
আরো পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের পদ্ধতি
Q, U, X, Y ও Z- এই ৫টি অক্ষর বাদ দিয়ে ইংরেজি বর্ণমালার ২১টি অক্ষর ব্যবহার করে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়। এগুলো সাধারণত এক বছরের জন্য পর্যায়ক্রমিকভাবে ছেলে ও মেয়েদের নাম দিয়ে নির্ধারণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৬ সালের প্রথম ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল আলবার্টো, আর পরের ২টি ছিল ‘বেরিল’।
তবে কোনো বছর যদি ২১টির বেশি ঘূর্ণিঝড় দেখা দেয়, তবে নামগুলোর সঙ্গে গ্রিক বর্ণমালা যুক্ত করা হয়। যেমন: হারিকেন আলফা বা বিটা।
এভাবে ৬ বছরের জন্য একত্রে অনেকগুলো নাম নির্ধারণ করে রাখা হয়। এগুলোর প্রতি ৬ বছর পর পর পুনরাবৃত্তি ঘটে। যেমন ২০০৮ সালের নামগুলো ২০১৪ সালের জন্য পুনরায় ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়গুলো তালিকা থেকে বাদ যায়। যেমন: ২০০৫ সালের ‘ক্যাটরিনা’ ২০১১ সালে পুনরাবৃত্তির সময় বাদ দিয়ে নতুন নাম রাখা হয় ‘ক্যাটিয়া’।
বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর এই নামকরণ উত্তর ভারতীয় ঘূর্ণিঝড়ের বিধি অনুযায়ী হয়ে আসছে। এই বিধি অনুযায়ী বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করা হয়।
আরো পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’: মধ্যরাতে জারি হতে পারে মহাবিপদ সংকেত
২০২০ সালে এই অঞ্চলের মোট ১৩টি দেশ থেকে ১৩টি নামসহ মোট ১৬৯টি নাম সামনের বছরগুলোর জন্য প্রকাশ করা হয়।
নামকরণের পদ্ধতি অঞ্চলভেদে পরিবর্তিত হয়। ছেলে বা মেয়ের নামে হলেও এই নামগুলোর কোনোটিই নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির নামকে উদ্দেশ্য করে করা হয় না। এখানে নাম নির্ধারণের সময় যে বিষয়গুলো বিবেচনায় আনা হয়, সেগুলো হচ্ছে-
> দ্রুত যোগাযোগের সুবিধার্তে নামে অক্ষরের সংখ্যা কম হতে হবে> উচ্চারণে সহজ হওয়া আবশ্যক> নির্দিষ্ট অঞ্চলে সুপরিচিত হতে হবে> একই নাম একাধিক অঞ্চলে ব্যবহার করা যাবে না> ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেন যারা
আরো পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা আঞ্চলিক কমিটির অধীনে মোট ৫টি আঞ্চলিক সংস্থা তাদের স্ব স্ব অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে। এগুলো হলো-
> ইএসসিএপি (ইকনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক) বা ডব্লিউএমও (বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা) টাইফুন কমিটি> ডব্লিউএমও বা ইএসসিএপি প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোন> আরএ (রেজিওনাল অ্যাসোসিয়েশন) ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি> আরএ-৪ হারিকেন কমিটি> আরএ-৫ ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি
ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে ১৩টি দেশ। সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ওমান, ইরান, সৌদি আরব, ইয়েমেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার।
ডব্লিউএমওর অংশ হিসেবে উত্তর ভারতীয় ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে থাকে- আরএসএমসি (আঞ্চলিক বিশেষায়িত আবহাওয়া দপ্তর), ট্রপিক্যাল সাইক্লোন ওয়ার্নিং সিস্টেমস (টিসিডব্লিউএস) ও ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)।
এই অঞ্চলটি ভারত মহাসাগরের উত্তরে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
আরো পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দুপুর থেকে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ
বাংলাদেশে আসন্ন কিছু ঘূর্ণিঝড়
বর্তমানে বাংলাদেশ ও এর নিকটবর্তী পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়ের নাম রিমাল। নামটির প্রস্তাব করে ওমান, আরবিতে যার অর্থ ‘বালি’। এটি ২০২০ সালে ওই ১৩ দেশের প্রস্তাবিত ১৬৯টি নামের একটি।
‘রিমাল’ ছাড়াও অদূর ভবিষ্যতে আসন্ন উত্তর ভারতীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামগুলো হলো- আসনা (পাকিস্তান), ডানা (কাতার), ফেঙ্গাল (সৌদি আরব), শক্তি (শ্রীলঙ্কা), মন্থ (থাইল্যান্ড), সেনিয়ার (সংযুক্ত আরব আমিরাত) ও দিত্ত্ব (ইয়েমেন)।
পরিশেষ
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের পেছনে মূল কারণ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে জনসাধারণের সতর্কতা। এই উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে বাতাসের গতিবিধি ও আসন্ন দুর্যোগ নিয়ে গবেষণা করা হয়ে থাকে। এই গবেষণায় ঝড়ের তীব্রতা এবং একাধিক ঝড়ের মধ্যে তুলনামুলক বিশ্লেষণে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে এগুলোর নামকরণ।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটির এই কার্যক্রম ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপারে আগাম সচেতনতারই নামান্তর। এর ধারাবাহিকতায় স্থানীয় নিরাপত্তা জোরদারের মাধ্যমে দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।
আরো পড়ুন: কিভাবে নেবেন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রেমাল: সাতক্ষীরায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সাতক্ষীরা উপকূলবর্তী শ্যামনগরে বৃষ্টি ও দমকা বাতাস শুরু হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র।
এছাড়া সুন্দরবনসংলগ্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে সরিয়ে নিতে ১৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়া স্থানীয় বনবিভাগের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি জেলেদের নিরাপদ স্থানে ফিরে আসতে অনুরোধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’: আতঙ্কে বাগেরহাটের উপকূলবাসী
বুড়িগোয়ালীনি গ্রামের সাহেব আলী বলেন, শনিবার জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত বেশি হয়েছে। পূর্ব সতর্কতা থাকায় পাশ্ববর্তী খোলপেটুয়া, মালঞ্চ, আড়পাঙ্গাশিয়া নদীসমুহের জেলেরা শনিবার মাছ ধরতে নামেনি। এছাড়া সাগর ও সুন্দরবনে অবস্থানরত জেলেরা এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি স্টেশনসহ সব টহলফাঁড়িতে অবস্থানরত বনকর্মীদের সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবন ও সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া জেলেদের লোকালয়ে ফিরতে পরামর্শ দিয়ে তাদের উদ্ধারে বনকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাতক্ষীরা ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী এম সালাউদ্দীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সুন্দরবনসংলগ্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্যামনগরকে ঘিরে থাকা উপকূল রক্ষা বাঁধের প্রায় ১২৯ কিলোমিটারের মধ্যে ৭ থেকে ৮টি পয়েন্টের প্রায় দুই কিলোমটিার ঝুঁকিপূর্ণ। ইতোমধ্যে মাটি ফেলে উচ্চতা বৃদ্ধিসহ জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে বাঁধের ভাঙন ও ধস ঠেকানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিবুল আলম বলেন, উপজেলার ১৬৯ আশ্রয়কেন্দ্রকে প্রস্তুত করা হয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ৬০০ স্বেচ্ছাসেবীকে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় তৈরি থাকার জন্য বলা হয়েছে। শুকনা খাবারসহ নগদ অর্থ মজুদ রাখা হয়েছে। প্রতিটি এলাকার জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রেমাল: কক্সবাজারে প্রস্তুত ৬৩৮ আশ্রয়কেন্দ্র
ঘূর্ণিঝড় রেমাল: খুলনায় প্রস্তুত ৬০৪ আশ্রয়কেন্দ্র
৫ মাস আগে