ঈদের ছুটি
ঈদের লম্বা ছুটিতে আম নিয়ে বিপাকে নওগাঁর চাষি-ব্যবসায়ীরা
ঈদ উপলক্ষে ১০ দিনের টানা ছুটিতে ক্রেতার অভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে আমের বেচাবিক্রি। এতে করে কোটি কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা। টানা ১০ দিন ব্যাংক, কুরিয়ার সার্ভিস ও পরিবহন বন্ধ থাকায় চলতি মৌসুমে আম নিয়ে বিপাকে পড়ার আশঙ্কায় দিন পার করছেন সেখানকার কারবারিরা।
সাপাহার উপজেলার আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের টানা ১০ দিনের ছুটির মধ্যে হঠাৎ করেই অতিরিক্ত গরম পড়ছে। এর ফলে আম্রপালি জাতের আম একযোগে পাকতে শুরু করেছে। অথচ এই সময়ে ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে মানুষজন কম। ঈদের ছুটিতে সবাই রয়েছেন গ্রামে। আবার কুরিয়ার সার্ভিস এবং পরিবহন ব্যবস্থাও এখন বন্ধ। ফলে সঠিক সময়ে ক্রেতার কাছে আম পৌঁছাতে না পারলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসন ও কৃষি অফিসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, আম্রপালি জাতের আম আগামী ১৮ জুন থেকে বাজারে আসার কথা। কিন্তু অতিরিক্ত গরম, বৈরী আবহাওয়া, গাছে আগাম মুকুল আসা-সহ নানা কারণে এ বছর আম্রপালি জাতের আম ৮-১০ দিন আগে পাকতে শুরু করেছে।
সাপাহার উপজেলার সিমু শিপলা বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে লাভের আশায় ৪০০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের আম গাছ লাগিয়েছিলাম। এ বছর গাছে আমও ধরেছে ভালো। কিন্তু সরকারি আমের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আম নামাতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।’
তিনি জানান, এ বছর সরকারি আমের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আম নামাতে গিয়ে আম ব্যবসায়ীরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন। ঈদের টানা ১০ দিন ছুটি থাকায় ব্যাংক বন্ধ, কুরিয়ার সার্ভিস ও পরিবহন বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাজারে আমের তেমন কোনো বেচাকেনা নেই। পচে যাওয়ার কারণে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ মণ আম ফেলে দিতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় আম সংগ্রহ শুরু, আসছে আঁটি, গুঁটি ও বোম্বাই
সাখাওয়াত হোসেনের অভিযোগ, আমের ক্যালেন্ডার প্রকাশের দিন বলা হয়েছিল, যদি কারো আম আগাম পেকে যায়, তাহলে উপজেলা কৃষি অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অনুমতি নিয়ে গাছ থেকে আম পাড়া এবং বিক্রয় করা যাবে। কিন্তু গত কয়েক দিন ঈদের ছুটিতে ইউএনও এবং উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে আবেদন করে আম পাড়ার অনুমতি পাননি। ফলে প্রতিদিনই লক্ষাধিক টাকার আম অবিক্রিত থাকছে এবং তা ফেলে দিতে হচ্ছে।
ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘কৃষি অফিসে গেলে তারা অনুমতির জন্য ইউএনও অফিসে যেতে বলে। আবার ইউএনও অফিসে গেলে তারা কৃষি অফিসে যেতে বলে। প্রতিদিন শত শত আমচাষি অনুমতির জন্য এই দুই অফিসে দৌড়াদৌড়ি করেও বুধবার বিকাল পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। এই সমস্যার কারণে আমচাষিরা গাছ থেকে আম পাড়তে পারছেন না। যার কারণে আমাদের লোকসান দিন দিন বেড়েই চলেছে।’
সাপাহার উপজেলার বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পার্কের স্বত্বাধিকারী সোহেল রানা জানান, জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি অফিসের বেঁধে দেওয়া আমের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এ বছর আম পাড়া সম্ভব হচ্ছে না। বৈরি আবহাওয়া আর অতিরিক্ত গরমের কারণে ক্যালেন্ডারে ঘোষিত তারিখের ১০-১২ দিন আগেই আম পেকে গেছে।
তিনি বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ পাকা আম নিয়ে আমরা পড়েছি ভীষণ বিপদে। প্রতিদিন প্রত্যেক আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে। ক্রেতার অভাবে আম বিক্রি না হওয়ায় অবিক্রিত আম ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছি আমরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আম একটি দ্রুত পচনশীল খাদ্যপণ্য। এটি সংরক্ষণ করার কোনো পদ্ধতি এখনো আমাদের কাছে আসেনি। তাই প্রতিদিনের আম প্রতিদিনই বিক্রি করতে হয়। কিন্তু ১০ দিন ঈদের ছুটি থাকার কারণে ব্যাংক বন্ধ, কুরিয়ার সার্ভিস পরিবহন বন্ধ, সর্বোপরি প্রকৃত ব্যবসায়ীদের হাতে নগদ টাকা না থাকায় তারা আম কেনাবেচা নিয়ে ভীষণ বিপদে পড়েছেন। আমচাষিদের কথা বিবেচনা করে আম চাষ হয়—এমন স্থানগুলোতে ব্যাংক খোলা এবং কুরিয়ার সার্ভিস ও পরিবহন ব্যবস্থা সচল রাখলে এ ক্ষতি উৎরে যাওয়া সম্ভব হতো।’
একই রকম অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন সাপাহার আম আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেনও।
তিনি বলেন, ‘এখন বাজারে আম্রপালি জাতের আম মণপ্রতি ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এই উচ্চ মূল্যের আম অবিক্রিত থেকে আড়তেই পচে যাওয়ায় আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়েছে। চোখের সামনে কোটি কোটি টাকার আম পচেগলে নষ্ট হওয়ায় ব্যবসায়ীরা দিশেহারা।’
আরও পড়ুন: নওগাঁয় এবার ৪ হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা
ইমাম হোসেন বলেন, ‘সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মানতে গিয়ে আজ আমরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি। আগামীতে ভাগ্যে কী আছে, তা সৃষ্টিকর্তাই জানেন!’
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, গত বছরের আমের ক্যালেন্ডারে আম পাড়ার যে তারিখ নির্ধারণ করা ছিল, চলতি বছর তা থেকে তিন দিন এগিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটির কারণে ব্যাংক বন্ধ থাকা এবং কুরিয়ার ও পরিবহন বন্ধ থাকার কারণে ব্যবসা কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ ক্ষতির কথা বলছেন, তার সম্ভাবনা নেই।’
‘জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি অফিস সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী আমের ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে। এটাও বলা হয়েছে যে, যদি কোনো আম অগ্রিম পাকা শুরু করে, তাহলে স্থানীয় ইউএনও অফিস অথবা কৃষি অফিসের অনুমতিসাপেক্ষে আম পাড়া যাবে। সেক্ষেত্রে কেউ আবেদন করলে তাকে আম পাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আকস্মিক অতিরিক্ত গরমে আমের কোনো ক্ষতি হবে না। নওগাঁয় চলতি বছরে আমের বাজার থেকে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকা আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে, তা পুরোপুরি সফল হবে।’
১৭৫ দিন আগে
ঢাকার বাতাস আজ শিকাগো-বার্সেলোনার চেয়েও ভালো
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
১৭৬ দিন আগে
করোনার চোখ রাঙানি: পর্যটকপ্রিয় রাঙ্গামাটিতে স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যাপক প্রস্তুতি
ভারতসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে করোনার নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে পার্বত্য পর্যটন-জেলা রাঙ্গামাটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
কাপ্তাই হ্রদ, পাহাড় ও বনঘেরা রাঙ্গামাটি প্রায় সারা বছরই পর্যটকের আনাগোনায় মুখর থাকে। তবে চলতি ঈদুল আজহার লম্বা ছুটিতে অন্যান্যবারের চেয়ে পর্যটকের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা, নৌযান চলাচল এবং স্থানীয় জনসমাগম মিলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ঈদের ছুটি ঘিরে বাড়তি ভিড় এবং ভারতের নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বিবেচনায় প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে আগাম প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, প্রয়োজনে আইসোলেশন, ঘাটগুলোতে স্বাস্থ্য ডেস্ক স্থাপন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পিপিই, মাস্ক ও গ্লাভস মজুত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে। জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে যেসব স্থানে ভিড় বেশি, সেসব জায়গায় স্থানীয়ভাবে সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
এ ব্যাপারে রাঙ্গামাটি সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা ইউএনবিকে বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় আমরা আগেই প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেছি। জেলার প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ঘাটগুলোতে পর্যটকদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার মতো প্রস্তুতি রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরা, বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা কাপড় ব্যবহার এবং আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা জারি
সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘কারও উপসর্গ দেখা দিলে তাকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। মারাত্মক অসুস্থ হলে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগের অনুরোধ করছি।’
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুসারে, করোনা মহামারিকালে রাঙ্গামাটিতে ৭৫৭ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়। তখনকার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আবারও একটি সম্ভাব্য সংক্রমণ ঢেউয়ের মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের এই ঢল নিয়ন্ত্রণে না আনা গেলে নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলার প্রতিটি স্তরে সমন্বিত নজরদারি চালানো হচ্ছে।
রাঙ্গামাটি যেন করোনার নতুন ঢেউয়ে তার স্বাভাবিক ছন্দ না হারায়, সেই লক্ষ্যে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কতা
এদিকে, কোভিডের নতুন ধরন মোকাবিলায় ইতোমধ্যে দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে নজরদারি বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়গুলো জোরদারে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নতুন ধরনের কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচার লক্ষ্যে বেশকিছু পরামর্শও দিয়েছে অধিদপ্তর। সেগুলো হলো—
সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয়
১. জনসমাগম এড়িয়ে চলা এবং উপস্থিত হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা
২. শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে বাঁচতে নিয়মিত মাস্ক পরা
৩. হাঁচি-কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা
৪. ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত ময়লা ঝুড়িতে ফেলা
৫. ঘনঘন সাবান-পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়া
৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ না করা
৭. আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা
সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়
১. জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকা
২. রোগীর মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া
৩. রোগীর সেবাদানকারীদেরও সতর্কতা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করা
৪. প্রয়োজনে নিকটস্থ হাসপাতালে, আইইডিসিআর (০১৪০১-১৯৬২৯৩) অথবা স্বাস্থ্য বাতায়নে (১৬২৬৩) যোগাযোগ করা।
১৭৬ দিন আগে
ঈদের ছুটিতে বেড়াতে গিয়ে মেঘনায় প্রাণ গেল তরুণের
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ঈদের ছুটিতে খালার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে মেঘনা নদীতে ডুবে অপু মিয়া নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে উপজেলার মোহনপুরে মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত অপু (১৯) ঢাকার আগারগাঁও এলাকার বাসিন্দা বকুল মিয়ার ছেলে। তিনি মিরপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে অপু ছিলেন সবার ছোট।
স্বজনরা জানান, ঈদ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে অপু তার বড় ভাই ও মায়ের সঙ্গে খালার বাড়ি মোহনপুরে বেড়াতে আসেন। পরে দুপুরে সে একা নদীতে গোসল করতে গিয়ে মোহনপুর ঘাটে একটি বলগেট (কার্গো নৌকা) থেকে নদীতে লাফ দেন। এ সময় প্রবল স্রোতে তিনি নিখোঁজ হন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে নদীতে ডুবে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু
স্থানীয়রা তল্লাশি চালিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হক ইউএনবিকে বলেন, এ ঘটনায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। লাশটি পরিবারের কাছেহন্তান্তর করা হয়েছে।
১৭৭ দিন আগে
ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল খাগড়াছড়িতে
ঈদুল আজহায় টানা ছুটিতে খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। বিভিন্ন বয়সী পর্যটকে ভরে উঠেছে প্রধান পর্যটন স্পটগুলো।
আলুটিলা, জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক, রহস্যময় গুহা, রিছাং ঝর্ণাসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। তবে বাইরের পর্যটকদের তুলনায় স্থানীয় পর্যটকের সংখ্যা বেশি।
এবারের ঈদে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো পর্যটক এসেছেন। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের ধারণা, পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এই সময়ে, খাগড়াছড়ির আলুটিলা এবং আলুটিলার ব্যতিক্রমী সেতু পর্যটকদের বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। রহস্যময় গুহা এবং রিছাং ঝর্ণা পর্যটকদের মন কেড়েছে। এছাড়া জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক, ঝুলন্ত সেতু, এবং নয়াভিরাম লেকও পর্যটকদের আকর্ষণ করছে।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে পাহার ধসের ঝুঁকি এড়াতে ১২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু
১৭৭ দিন আগে
ছুটিতে বন্ধ হাসপাতাল, দুর্ভোগ লাঘবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা
ঈদের ঠিক দুইদিন আগে, যখন উৎসবের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে রাজধানী, তখন অন্ধকার নেমে আসে জামাল আহমেদের জীবনে। রাজধানীর মাতুয়াইল এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী হিসেবে কর্মরত জামাল (ছদ্মনাম)। একাধিক আঘাত ও হাড় ভেঙে যাওয়ার পর তাকে তড়িঘড়ি করে কাছাকাছি একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি সামান্য প্রাথমিক চিকিৎসা পান এবং বিলম্ব না করে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য বলা হয় তাকে।
কিন্তু বাংলাদেশে ঈদের সময় একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে পাওয়া যেন সোনার হরিণের পিছনে ছোটার মতো। অবশ্য জামালের কপাল মন্দ নয়। তিনি দুর্ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে একজন অস্থি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পান। ঠিক সময়ে ক্লিনিকে পৌঁছেও জামাল পড়ে যান অসংখ্য রোগীর ভিড়ে। আহত বা অসুস্থ মানুষদের নীরবে যন্ত্রণায় অপেক্ষা করতে দেখেন তিনি। বিধ্বস্ত শরীর নিয়ে জামাল সেখানে দীর্ঘ দুই ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষা করেন, এই আশায় যে কখন তার ডাক পড়বে।
তবে এ ধরনের দুর্ভোগ বাংলাদেশর প্রেক্ষাপটে কোনো ব্যতিক্রম নয়। সাধারণ দিনেও একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া কঠিন; আর ঈদের সময় তো কথাই নেই।
ঈদের খুশিতে দেশ যখন উৎসবমুখর হয়ে ওঠে, তখন অনেক হাসপাতালই নিস্তব্ধতায় ডুবে যায়। চিকিৎসাসেবার ব্যস্ত গুঞ্জন চাপা পড়ে নিরব কান্না আর অবহেলিত রোগীর আহাজারিতে।
যে ক্লিনিকে জামাল অপেক্ষা করছিলেন, সেখানে প্রায় ৯০ শতাংশ চিকিৎসক অনুপস্থিত ছিলেন। তারা আনন্দে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন। কিন্তু রোগীদের জন্য কোনো ঈদ নেই, নেই কোনো আনন্দ, কেবল যন্ত্রণা আর অশ্রুর মধ্যেই সহ্যের এক কঠিন পরীক্ষা।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহ পর চক্ষু হাসপাতালে জরুরি সেবা চালু
চলতি বছর বাংলাদেশে ৫ জুন থেকে টানা ১০ দিনের ছুটি শুরু হয়, যা সারা দেশকে এক উৎসবমুখর শান্তির আবরণে ঢেকে দেয়।
কিন্তু ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মতো জায়গায় এই শান্তি যেন অবহেলার অন্য নাম। হাসপাতালে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে খুঁজে পাওয়া না গেলেও জরুরি সেবার চাহিদা জোয়ারের মতো বেড়েই চলেছে।
গোপনে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে ধরা পড়ে ফাঁকা করিডোর আর চিকিৎসকদের শূন্য চেয়ারের দৃশ্য।
প্রতিবারের মতো এবারও এই সংকটের গুরুত্ব অনুধাবন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এগিয়ে এসেছে এবং একটি বিস্তৃত নির্দেশনা জারি করেছে, যাতে ঈদের ছুটি রোগীদের জন্য অব্যাহত কষ্টে পরিণত না হয়।
ঈদ হোক বা না হোক — চিকিৎসাসেবা চলতেই হবে
ঢামেকের উপপরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসকদের ছুটি ভাগ করে দিয়েছি। জরুরি সেবা ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকবে।’
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ‘দীর্ঘ ছুটি ও ঢাকা মেডিকেলের চিরাচরিত রোগীর চাপ বিবেচনায় রেখে আমরা নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।’
কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমানও একই ধরনের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘বহির্বিভাগের সেবা ৬ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে আইসিইউ, লেবার রুম, অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য জরুরি সেবা চালু থাকবে। ঈদের দিন রোগীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। ৫ জুন নিয়মমাফিক সব সেবা চালু থাকবে এবং ৯ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত সব বিভাগ চালু থাকবে। ১৩ জুন হাসপাতাল বন্ধ থাকবে, তবে ১৪ জুন থেকে আবার খুলে যাবে, এমনকি অন্য অফিস বন্ধ থাকলেও শনিবারও খোলা থাকবে।’
আরও পড়ুন: চারদিন ধরে বন্ধ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট, বিপাকে রোগীরা
এ ছাড়া, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে সরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য এবং দুটি মূল নির্দেশনা দিয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য, যাতে সারা দেশে জরুরি চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত না হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান নির্দেশনাসমূহ সংক্ষেপে
• জরুরি বিভাগে ডিউটিতে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে — প্রয়োজনে অতিরিক্ত চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে।
• লেবার রুম, জরুরি অপারেশন থিয়েটার ও ডায়াগনস্টিক ল্যাব ২৪ ঘণ্টা চালু রাখতে হবে।
• ঈদের আগে-পরে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে পর্যাপ্ত জনবল বজায় থাকে।
• প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে জনস্বার্থ ও জরুরি সেবার ধারাবাহিকতা বিবেচনায় রেখে ছুটি অনুমোদন করতে হবে।
• জেলা পর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে এবং সিভিল সার্জন বা বিভাগীয় পরিচালকদের আগেই জানাতে হবে।
• বিভাগীয় প্রধানদের প্রতিদিনের কার্যক্রম তদারকি করতে হবে এবং এক্স-রে ও ল্যাবসহ গুরুত্বপূর্ণ ডায়াগনস্টিক
সেবাসমূহ সচল রাখতে হবে।
• জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, স্যালাইন, রিএজেন্ট ও সার্জিকাল সরঞ্জামের পর্যাপ্ত মজুত থাকতে হবে।
• অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সর্বদা সচল রাখতে হবে।
• হাসপাতালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় বাধ্যতামূলক।
• অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
• প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ডিউটিরত স্টাফদের সঙ্গে যোগাযোগে থাকতে হবে এবং ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হবে।
• যদি প্রধান কর্মকর্তা ছুটিতে থাকেন, তাহলে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে এবং তার যোগাযোগ তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
• ঈদের দিন ভর্তি রোগীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিজেরা উপস্থিত থেকে তা বিতরণ নিশ্চিত করবেন।
• বহির্বিভাগ (ওপিডি) ৭২ ঘণ্টার বেশি বন্ধ রাখা যাবে না — কিছুটা নমনীয়তা রাখা হলেও মূল নিয়মটি বজায় থাকবে।
বেসরকারি হাসপাতালের জন্য নির্দেশনা
ক. নিবন্ধিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ২৪ ঘণ্টা জরুরি ও মাতৃত্বসেবা নিশ্চিত করতে হবে।খ. প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে প্রয়োজনে রেফারকৃত রোগীর জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে।গ. কোনো জরুরি অবস্থা বা দুর্ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ডিজিএইচএসকে জানাতে হবে।
ডিজিএইচএসের পরিচালক ডা. মঈনুল আহসান ইউএনবিকে বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালে আমাদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় আমরা তাদের জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে নিবন্ধিত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ২৪ ঘণ্টার জরুরি ও মাতৃত্বসেবা নিশ্চিত করা।’
অন্ধকারের মাঝে আশার আলোএই ব্যবস্থা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হলে ঈদের ছুটিতে নিস্তব্ধ করিডোর, অশ্রুসজল অপেক্ষা, অবর্ণনীয় কষ্টের যে ভয়াবহ চিত্র দেখা যায় —— তা পরিবর্তিত হয়ে দায়িত্বশীল চিকিৎসাসেবার দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
আহমেদ ও তার মতো হাজারো মানুষের জন্য এক মুহূর্তের বিলম্বই সারাজীবনের কষ্টের কারণ হতে পারে। ছুটি যেন কখনোই সুস্থতার পথে বাধা না হয়। যখন জাতি ঈদ উদযাপন করছে, তখন হাসপাতালগুলোকে মনে রাখতে হবে — ব্যথা কখনো ছুটি নেয় না।
১৮০ দিন আগে
ঈদের ছুটিতে টানা ১১ দিন বন্ধ থাকবে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর
ঈদুল আজহা উপলক্ষে সিলেটের গোয়াইনঘাটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে টানা ১১ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) থেকে আগামী রবিবার ১৫ জুন পর্যন্ত পাথর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। ১৬ জুন থেকে তামাবিল স্থলবন্দরের কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে। তবে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলে দেওয়া হয়েছে সিলেটের সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র
তামাবিল স্থলবন্দর চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের নির্বাচন কমিশনার মো. ওমর ফারুক বলেন, তামাবিল স্থলবন্দর পাথর আমদানি গ্রুপের সংগঠনের পক্ষ থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। আগামী ১৬ জুন থেকে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হবে।
তামাবিল ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মো. সামিম মিয়া বলেন, ঈদে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। এমনকি ঈদের দিনও কার্যক্রম চলবে। উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীরা চলাচল করতে পারবে।
১৮২ দিন আগে
ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশ
আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটিতে আর্থিক লেনদেন নির্বিঘ্ন রাখতে দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোকে তাদের এটিএম বুথে পর্যাপ্ত অর্থ মজুদ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ছাড়াও পয়েন্ট অব সেল (পিওএস), ই-পেমেন্ট গেটওয়ে ও মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে লেনদেন নির্বিঘ্ন রাখতেও বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের তফসিলি ব্যাংকগুলোর ঊর্ধ্বতন নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক নির্দেশনায় এসব বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি মামলা: প্রতিবেদন ফের পিছিয়ে ২ জুলাই
ঈদের ছুটির সময় গ্রাহকদের যেন কোনো ধরনের ভোগান্তি না হয়, সে জন্য ব্যাংকগুলোকে আগেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
আরও বলা হয়েছে, এটিএম বুথের ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা সেবা নিশ্চিত করতে হবে, এটিএম বুথে কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে তা দ্রুত সমাধান করতে হবে, পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং বুথে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তারক্ষীসহ অন্যান্য নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া, পিওএসের ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা সেবা নিশ্চিত করতে এবং জালিয়াতি রোধে বিক্রেতা ও গ্রাহকদের সচেতন করতেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
পাশাপাশি ই-পেমেন্ট গেটওয়ের ক্ষেত্রে ‘কার্ড নন-হিউম্যান টাচ’ ধরনের কার্ডভিত্তিক লেনদেনে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু রাখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই সঙ্গে সব ব্যাংক ও তাদের এমএফএস সেবা দানকারী সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বিঘ্নে লেনদেন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
ঈদের ছুটির সময় যেকোনো অঙ্কের লেনদেন সম্পর্কে গ্রাহকদের এসএমএস অ্যালার্ট সেবার মাধ্যমে জানাতেও নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
তাছাড়া সব ধরনের ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সেবার বিষয়ে গ্রাহকদের সতর্ক করতে প্রচার কার্যক্রম চালানোর জন্য বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রাহকদের ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন সেবা দিতে এবং এ সম্পর্কিত নির্দেশনাগুলো মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে।
১৮৮ দিন আগে
ঈদের দিন বাদে ছুটির দিনেও খোলা থাকবে কাস্টমস হাউস
ঈদুল আজহা সামনে রেখে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য নির্বিঘ্ন রাখতে ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত (ঈদের দিন ব্যতীত) সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেও সব কাস্টমস হাউস ও স্টেশন খোলা থাকবে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এর আগে, গত ১৪ মে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে সময়ের গুরুত্ব উল্লেখ করে এনবিআরে একটি চিঠি পাঠান বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন। রপ্তানিতে কোনো ধরনের বিলম্ব অর্থনৈতিক ক্ষতি ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় ব্যাহত করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বিজিএমইএর এই অুনরোধের পর ঈদের দিন ব্যতীত বাকি ছুটির সময়ে সব কাস্টমস হাউস ও স্টেশন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বর্তমানে দেশের পোশাক শিল্প একাধিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক, শ্রম অস্থিরতা, কাঁচামালের উচ্চমূল্য, ব্যাংক ঋণে উচ্চ সুদের হার, চলমান জ্বালানি সংকট ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি।
আরও পড়ুন: অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে এনবিআর কর্মীদের সংগঠনের বৈঠক 'ব্যর্থ'
এসব প্রতিকূলতার মধ্যেও রপ্তানিকারকরা সফলভাবে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছেন এবং নিরবচ্ছিন্ন রপ্তানি আদেশ পেয়ে চলেছেন। এই ধারা অব্যাহত রাখতে বন্দর, কাস্টমস, ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ধারাবাহিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে বিজিএমইএ।
এ ছাড়া চলমান রপ্তানি আদেশ সময়মতো পাঠাতে ব্যর্থ হলে তা বাতিলের সম্ভাবনা তৈরি হবে, যেটি রপ্তানিকারক ও দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে বলেও চিঠিতে সতর্ক করা হয়।
এসব কারণ বিবেচনা করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসসহ প্রধান কাস্টমস অফিসগুলো খোলা রাখার জন্য সরকারি নির্দেশনা জারি করেছে এনবিআর।
আরও পড়ুন: দুভাগই থাকবে এনবিআর, দূর হয়েছে ভুল ধারণা: অর্থ উপদেষ্টা
দেশের রপ্তানি খাতকে সচল রাখা এবং তৈরি পোশাক শিল্পকে আন্তর্জাতিক সময়সীমা পূরণে সহায়তা করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এনবিআর।
১৯৮ দিন আগে
আজ সরকারি অফিস খোলা
আজ শনিবার। সপ্তাহের এই দিনটি সরকারি অফিস সাধারণত ছুটি থাকলেও আজ অফিস খোলা রেখে কার্যক্রম চলবে।
মূলত আসন্ন ঈদুল আজহায় টানা ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে ঈদের আগে দুই শনিবার সরকারি অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সেই দুই শনিবারের একটি আজ।
গত ৬ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় দুই শনিবার অফিস খোলা রেখে ঈদের সময় টানা দশ দিন ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই হিসেবে আগামী শনিবারও (২৪ মে) খোলা থাকবে সরকারি অফিস।
ঈদুল আজহার ছুটি ছিল ৫ থেকে ১০ জুন ছয় দিন। সাপ্তাহিক ছুটির আগে ১১ ও ১২ জুন ছুটি ঘোষণা করে দুই শনিবার ১৭ ও ২৪ মে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত অফিস খোলা রাখা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিনিময়ে ১১ ও ১২ জুন ছুটি এবং পরের দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি মিলে মোট ১০ দিন ছুটি মিলেছে সরকারি চাকরিজীবীদের।
আদেশ অনুযায়ী, ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে আগামী ৫ জুন, শেষ হবে ১৪ জুন।
আরও পড়ুন:ঈদুল আজহায় ১০ দিন ছুটি: প্রেস সচিব
উপদেষ্টা পরিষদের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৭ মে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ১১ ও ১২ জুন নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে আগামী ১৭ ও ২৪ মে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অফিস খোলা থাকবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং দ্য ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশনস-এর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অংশের ৩৭ নম্বর ক্রমিকের অনুবলে সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১১ ও ১২ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি এবং দাপ্তরিক কাজের স্বার্থে ১৭ মে (শনিবার) ও ২৪ মে (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অফিস খোলা রাখার ঘোষণা করা হলো। ছুটিকালীন সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে এবং সাপ্তাহিক ছুটির ওই দুই দিন (১৭ ও ২৪ মে) সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস খোলা থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, জরুরি পরিষেবা যেমন বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।
এ ছাড়া হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন। চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসগুলো এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
খোলা থাকবে ব্যাংক ও শেয়ারবাজার
সরকারি অফিসের সঙ্গে মিলিয়ে শনিবার (১৭ মে) দেশের সব ব্যাংক ও শেয়ারবাজার খোলা থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পৃথকভাবে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
এর ফলে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলোতে স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম চলবে। একই সঙ্গে শেয়ার বাজারেও অন্যান্য কর্মদিবসের মতো লেনদেন চালু থাকবে।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকে ছুটি কমিয়ে পাঠদানের সময় বাড়ানোর পরিকল্পনা
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত শেয়ারবাজারে লেনদেন চলবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ২৪ মে (শনিবার) দিনটিতেও ব্যাংক ও শেয়ারবাজার খোলা থাকবে।
এ ছাড়াও সরকারের সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে গ্রাহকরা এই দুই শনিবারে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা নিতে পারবেন এবং পুঁজিবাজারে স্বাভাবিকভাবে লেনদেন করতে পারবেন।
২০২ দিন আগে