অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা: বিশ্বব্যাংক এমডি
২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য অর্জনে বিশ্বব্যাংকের দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) আন্না বিজার্ড।
রবিবার বাংলাদেশে তার প্রথম সফর শেষে তিনি বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে জরুরি ভিত্তিতে গভীর সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক খাতের সংস্কার প্রয়োজন।
বিজার্ড বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণামূলক।’
সফর শেষে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'মুদ্রা ও রাজস্ব নীতিতে দ্রুত ও সাহসী সংস্কার বাংলাদেশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে, আর্থিক খাতের ঝুঁকি হ্রাস করতে এবং বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম করবে।’
বিজেরদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী বিশ্বব্যাংক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বর্তমানে, প্রায় সব ছেলে ও মেয়ে শিশু স্কুলে যায় এবং প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ রয়েছে।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি এবং তাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত তাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন মেটাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দেন।
চট্টগ্রাম বিভাগে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী উভয়ের প্রয়োজন মেটাতে দুটি নতুন প্রকল্পে ৬৫ কোটি ডলারের বেশি অর্থায়ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছে বিশ্বব্যাংক ও সরকার।
অর্থায়নের প্রায় অর্ধেক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যয় করা হবে এবং অনুদানের শর্তেই তা ব্যয় করা হবে।
আরও পড়ুন: নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ তহবিল চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
বিজার্ড এলন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্ব নিয়ে আমি গর্বিত, দেশটি লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে সহায়তা করেছে। আমরা বাংলাদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, একটি শক্তিশালী বেসরকারি খাত গড়ে তুলতে, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং জলবায়ুর অভিঘাত ও ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলার সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা অব্যাহত রাখব এবং একই সঙ্গে কেউ যেন পেছনে পড়ে না থাকে তা নিশ্চিত করব।’
সফরকালে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনার জন্য অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের নেতাদের এবং নারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্বব্যাংক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) অর্থায়নে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ ও রেয়াতি ঋণ আকারে প্রায় ৪১ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিশ্বের বৃহত্তম চলমান আইডিএ কর্মসূচি এবং বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
বাজেটে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭.৫ ও মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশ নির্ধারণ
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সাড়ে ৭ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে ৫০ দশমিক ০৬ লাখ কোটি মূল্যের আনুমানিক গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্ট (জিডিপি) নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ যা এখন ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ।
বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা এবং অভ্যন্তরীণ অন্যান্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির অনুমানকে উচ্চাভিলাষী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থনৈতিক চাপ সত্ত্বেও কেন এবার উচ্চ প্রবৃদ্ধি আশা করছেন সে বিষয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ এবং উৎপাদনশীলতা ও অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে উদ্দীপিত করার মাধ্যমে আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধির গতিপথে ফিরে আসার এবং সাড়ে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের আশা করছি।’
আরও পড়ুন: সমস্ত নগদ-ভিত্তিক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ইএফটি’র আওতায় আসবে: অর্থমন্ত্রী
কামাল ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ এবং জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চলমান মেগা-প্রকল্পগুলো সম্পূর্ণ করার দিকে মনোনিবেশ করেন।
অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এরপর এলো মহামারি। অর্থমন্ত্রী ২০২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলেন, কিন্তু প্রকৃত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল তিন দশমকি ৪৫ শতাংশ, যা কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
মহামারি প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধার করার পর ২০২১ অর্থবছরে বৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও বেড়ে ৭ দশকি এক শতাংশ হয়েছে।
আরও পড়ুন: মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, চলতি হিসাবের ভারসাম্য বাড়ানো এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা প্রধান চ্যালেঞ্জ: অর্থমন্ত্রী
বাংলাদেশে বড় আকারের বিনিয়োগ করতে চায় সৌদি আরব: প্রধানমন্ত্রীকে দেশটির দুই মন্ত্রী
স্থিতিশীল সরকার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভালো রেকর্ড থাকায় সৌদি আরব বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বড় আকারের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।
সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ. আল-ফালিয়াহ এবং অর্থনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ফয়সাল আলিব্রাহিম মঙ্গলবার দোহায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বাসভবনে যৌথভাবে সাক্ষাৎকালে এই প্রস্তাব দেন।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, সৌদি আরব বিনিয়োগকারী হিসেবে কয়েকটি বিষয় দেখে- স্থিতিশীলতা (উক্ত দেশের) ও বিনিয়োগের ভবিষ্যত।
বৈঠকে তারা বলেন যে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যত খুবই ভালো এবং এ কারণেই তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী কাতার: দেশটির প্রধানমন্ত্রী
সৌদি মন্ত্রীরা বলেন, বাংলাদেশে একটি স্থিতিশীল সরকার রয়েছে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুবই ভালো। বাংলাদেশের নেতৃত্ব, দৃষ্টিভঙ্গি ও অঙ্গীকার খুবই ভালো।
তারা জানান, সৌদি আরব এরই মধ্যে কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে তারা পতেঙ্গা বন্দর করতে চায় এবং এর পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চল নিতে চায়। সৌদি আরব দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যবর্তী হওয়ায় ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সৌদি যদি এটিকে একটি হাব করে তবে তারা ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং আরও অনেক দেশকে কভার করতে পারবে।
দুই মন্ত্রী বলেন, তাদের দেশ বাংলাদেশে সৌদি পেট্রোকেমিক্যাল, ডিজেল, জেট ফুয়েল, সার ও শিপিং লাইনের প্রধান বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করতে চায়। তারা পতেঙ্গাকে লোহিত সাগরের প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতোমধ্যে অনুমতি দিয়েছেন এবং অবিলম্বে এটি শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে সৌদি সরকারকে মাতারবাড়ী ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রস্তাব দেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ সহজ করার জন্য কোনো বাধা থাকলে তা দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ যেভাবে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে: দোহায় কাতারের শিক্ষার্থীদের জানালেন প্রধানমন্ত্রী
সৌদি আরব পারস্পরিক স্বার্থে কৃষির মতো বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায়।
এ ব্যাপারে তারা বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
সৌদি মন্ত্রীরা বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবে আবাসন ও হাসপাতাল নির্মাণে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেন।
দুই মন্ত্রী দু'দেশের জনগণের সুবিধার্থে সৌদি আরবে ফার্মাসিউটিক্যালস, বেভারেজ ও রিয়েল এস্টেট শিল্প স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান।
তারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ দেখিয়েছে যে এটি বিশ্বে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টসের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: তিন মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় কাতার সফর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের দৃশ্যমান উপস্থিতির চিহ্ন বহন করে: মোমেন
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ অভাবনীয় অগ্রগতি করেছে: বিশ্বব্যাংকের ভিপি
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসার বলেন, উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ অভাবনীয় অগ্রগতি সাধন করেছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের এই অসাধারণ অগ্রযাত্রায় অংশীদার হতে পেরে বিশ্বব্যাংক গর্বিত।
আগামীকাল সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে প্রথমবার সফরে আসার আগে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাইসার।
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন ও ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে আমি মুখিয়ে আছি।’
বাংলাদেশে তার তিন দিনের সফরে রাইসার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলোর বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন।
রবিবার বিশ্বব্যাপী ঋণ প্রদানকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, তিনি (রাইসার) বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি খাতের নেতা, সুশীল সমাজ ও থিঙ্ক ট্যাংক সংস্থাগুলোর সঙ্গে দেখা করবেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা বিশ্বব্যাংকের
জার্মান নাগরিক রাইসার ২০২২ সালের ১ জুলাই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের জন্য বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এই দায়িত্ব নেয়ার আগে তিনি চীন, মঙ্গোলিয়া ও কোরিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। তুরস্ক ও ব্রাজিলেও তিনি একই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক অন্যতম।
এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে তিন হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি অনুদান,সুদমুক্ত ও রেয়াতি ঋণ সহায়তা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তায় ২৫৫ কোটি টাকা অনুদান দেবে বিশ্বব্যাংক
ঢাকা ও ময়মনসিংহে গ্রিড আধুনিকীকরণে ৫০০ মিলিয়নের বেশি ডলার ঋণ দিলো বিশ্বব্যাংক
অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা জোরদারে গুরুত্বারোপ: সরকারি নথি
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ও গ্রামীণ উন্নয়ন জোরদারের প্রতি গুরুত্বারোপ করছে সরকার।
এক বাজেট নথি অনুসারে, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার জোরদারকরণ নিশ্চিত করতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ উন্নয়ন খাতে মোট ব্যয় গড়ে আট দশমিক সাত শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে ৪৭৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন কোটি।
২০২৩-২৪ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার ও গ্রামীণ উন্নয়নের প্রাক্কলন ব্যয় যথাক্রমে ৪৭৭ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ও ৪৩৫ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন টাকা।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতের জন্য বরাদ্দ ৪২১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন টাকা। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে তা ৪২৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা ৩২৩ দশমিক ৯০ বিলিয়ন টাকা ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা ছিল ৩১৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন টাকা।
আরও পড়ুন: প্রজন্মের উন্নয়নে চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত করা, শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা কমানো, শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিত করা এবং ভূগর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ ও এর পরিবর্তে মাটির ওপরের পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।
সরকারি নথি অনুযায়ী, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সরকার বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
এসব উদ্যোগের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ কর্মসূচি।
এই কর্মসূচির আওতায় ৫৭ লাখ উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে দুই হাজার ৯৯১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে; আয় উৎপাদন করতে পারে এমন ৩২ দশমিক ৪৯ লাখ পারিবারিক খামার স্থাপন করা হয়েছে এবং দুই লাখ ৬৪ হাজার উপকারভোগীকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী গৃহীত ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
আঞ্চলিক প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ: ডেভিড ব্রুস্টার
অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কলেজের সিনিয়র গবেষণা ফেলো ডা. ডেভিড ব্রুস্টার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে বলেছেন আঞ্চলিকভাবে প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্য দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকাতে মনযোগী হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লাভবান হতে পারে।
‘উদীয়মান বাংলাদেশ আঞ্চলিক শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছে’ শিরোনামে তার একটি সাম্প্রতিক নিবন্ধে ব্রুস্টার বলেন, সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তামূলক ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ। একটি সাহায্যপ্রার্থী দেশ থেকে আঞ্চলিক প্রভাবশালী দেশ হওয়ার পথে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট।
তিনি মনে করেন বিগত বছরগুলোতে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলেই বাংলাদেশ বর্তমান অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছে। তার মতে, ঢাকা হয়ে উঠতে পারে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কেন্দ্রবিন্দু।
ব্রুস্টার বলেছেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা অর্জনের সময় বাংলাদেশ ছিল ‘আপাত সম্ভাবনাহীন’ পৃথিবীর দরিদ্রতম একটি দেশ। তখন বাংলাদেশকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দফায় জাতিসংঘের মহাসচিব হলেন গুতেরেস
ব্রুস্টারের মতে, আজকের বংলাদেশ ১৬ কোটি মানুষের আত্মবিশ্বাসী একটি জাতি। এদেশের রয়েছে রপ্তানিনির্ভর উদীয়মান এক অর্থনীতি, যা গত দুই দশক ধরে ৬ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর কারণে প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এলেও, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৮ এবং ২০২২ সালে এটা দাঁড়াবে ৭ দশমিক ২ শতাংশে। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২,২২৭ মার্কিন ডলার, যা প্রতিবেশী ভারত (১৯৪৭ ডলার) এবং পাকিস্তানের (১৫৪৩ ডলার) চেয়ে বেশি।
শ্রীলঙ্কাকে দিতে চলা অর্থনৈতিক ঋণ হতে চলেছে ঢাকার পক্ষ থকে অন্য কোনও দেশকে দেয়া প্রথম অর্থনৈতিক সহায়তা।
আরও পড়ুন: বাইডেন রাজত্বের ১৫০ দিনে ৩০ কোটি টিকার মাইলফলক
স্বাস্থ্য, গড় আয়ু, জন্মহার এবং নারীর ক্ষমতায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সুরক্ষা নির্দেশকগুলোর ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে এগিয়ে আছে।
তবে, বাংলাদেশ সরকারের প্রদত্ত তথ্য-উপাত্তের যথার্থতা নিয়ে কিছু দ্বিমত আছে। এছাড়া রপ্তানি খাতে অতিমাত্রায় গার্মেন্টস নির্ভরতা দেশটির অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে অন্যতম।
আরও পড়ুন: বিদ্রোহ রুখতে মিয়ানমারে গ্রাম পোড়ালো জান্তা বাহিনী
উন্নয়ন অব্যাহত রাখাই সরকারের মূল লক্ষ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখাই সরকারের মূল লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির শুভেচ্ছাদূত হলেন তামিম
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।