অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
'স্মার্ট বাংলাদেশের' পথ প্রশস্ত করেছে গত দেড় দশকের প্রবৃদ্ধি
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ব্যাপক উন্নয়ন 'স্মার্ট বাংলাদেশ' গড়তে শক্ত ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক এক বাজেট নথিতে এই তথ্য উল্লেখ করে দেশের সামাজিক, আর্থিক ও ভৌত অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মানবসম্পদ, স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞানের অগ্রগতির কথা তুলে ধরা হয়েছে।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের কাছে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।’
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচন
গত দেড় দশকে বাংলাদেশ একটি গতিশীল ও দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। মোট জাতীয় আয়ের গড় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে এবং ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে মাথাপিছু আয় ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকায় পৌঁছেছে। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, জিডিপির ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির তালিকায় ৩৩তম অবস্থানে আছে।
এসময়কালে দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে, চরম দারিদ্র্যের হার কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানীয় জলের সুবিধা পাচ্ছে এবং ৯৭ দশমিক ৩২ শতাংশ স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করছে।
দেশের গড় আয়ু এখন ৭২.৮ বছর। এছাড়া শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২১ জন এবং মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৬১ জনে নেমে এসেছে।
বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো সম্প্রসারণ
গত দেড় দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছয়গুণ বেড়ে ৩০ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে, যার ফলে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে শতভাগ জনসংখ্যা। এই সময়ের মধ্যে বিদ্যুতের গ্রাহকও বেড়েছে চারগুণ।
অন্যদিকে বাংলাদেশের পরিবহন অবকাঠামোতেও উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ দেখা গেছে। জেলা, আঞ্চলিক ও জাতীয় মহাসড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় তিনগুণ বেড়ে ১২ হাজার কিলোমিটার থেকে ৩২ হাজার ৬৭৮ কিলোমিটার হয়েছে। গ্রামের সড়কগুলো ৭৬ গুণ বেড়ে ৩ হাজার ১৩৩ কিলোমিটার থেকে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৬ কিলোমিটারে প্রসারিত হয়েছে।
পাশাপাশি রেলপথ ৫০ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৩৫৬ কিলোমিটার থেকে ৩ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় অগ্রগতি
গত দেড় দশকে অভূতপূর্ব অগ্রগতি দেখা গেছে স্বাস্থ্য খাতে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে শয্যার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে ৭১ হাজার। সরকারি ডাক্তার ও নার্সের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে যথাক্রমে ৩০ হাজার ১৭৩ জন এবং ৪৪ হাজার ৩৫৭ জন।
অন্যদিকে নার্সিং কলেজের সংখ্যা ৩১টি থেকে বেড়ে ৯৯টি হয়েছে আর ১৪ হাজার ৩১১টি কমিউনিটি ক্লিনিকে এখন ২৭ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে।
বাজেট নথিতে শিক্ষায়ও আকর্ষণীয় অর্জনের হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। সাক্ষরতার হার ২০০৬ সালে ছিল ৪৫ শতাংশ যা বেড়ে ২০২৩ সালে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ ৫৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯৮ দশমিক ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ১৭ দশমিক ৮৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
কৃষি ও ডিজিটাল খাতে রূপান্তর
গত দেড় দশকে কৃষিখাতে উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। শস্য উৎপাদন ১ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন থেকে ৪ কোটি ৯২ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে মাছচাষ ২১ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন থেকে ৫৩ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি উৎপাদনও যথাক্রমে প্রায় দ্বিগুণ ও তিনগুণ হয়েছে।
এছাড়াও এসময়ের মধ্যে বাংলাদেশে ঘটেছে ডিজিটাল বিপ্লব। ২০০৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইন্টারনেটের ব্যবহার শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৮ দশমিক ৫৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সক্রিয় মোবাইল ফোনের সিম প্রায় দশগুণ বেড়ে ১ কোটি ৯০ লাখ থেকে ১৮ কোটি ৮৬ লাখ হয়েছে। সরকারি ডিজিটাল সেবার সংখ্যা ৮ থেকে ৩ হাজার ২০০টিতে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে সরকারি ওয়েবসাইট ৯৮টি থেকে বেড়ে বর্তমানে ৫২ হাজার ২০০টি।
আইসিটি পণ্য ও সেবার রপ্তানি মূল্য ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে আইটি ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ২০০ থেকে বেড়ে ৬ লাখ ৮০ হাজারে দাঁড়িয়েছে, যার সুবাদে বিশ্বে ফ্রিল্যান্সারদের দ্বিতীয় বৃহত্তম আবাসস্থল বাংলাদেশ।
৩ মাস আগে
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের অবদান প্রশংসনীয়
বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের পথচলা শুরু ১৯৮৩ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির হাত ধরে। দীর্ঘ ৪১ বছরে ব্যাংকিংয়ের শরিয়াহ ভিত্তিক ধারাটি বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। শরিয়াহ ভিত্তিক সেবামুখী ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কল্যাণ ধারার এ ব্যাংকিং সেবার পরিধি সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে দেশের অর্থনীতি ও উদ্যোক্তা সমাজকে জড়িয়ে রাখতে বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে ইসলামিক ধারার ব্যাংকিং ব্যবস্থা।
পরিসংখ্যান বিবেচনায় দেশের ব্যাংক খাতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই এখন ইসলামি ধারার ব্যাংকিংয়ের আওতাধীন। এ জনপ্রিয়তার কারণে বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ ধারার ১০টি ইসলামি ব্যাংকের পাশাপাশি প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোও যুক্ত হচ্ছে শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং কার্যক্রমে। অনেক ব্যাংক তো বিশেষায়িত শাখা ও উইন্ডোর মাধ্যমে চালাচ্ছে ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রম।
আরও পড়ুন: ভোটার উপস্থিতি কতটা জরুরি?
ইসলামি আর্থিক খাতকে এখন তার সম্পদের পরিপ্রেক্ষিতে যেমন বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক অর্থায়ন, ইসলামিক বন্ড (সুকুক), ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড এবং ইসলামিক বিমা (তাকাফুল) ইত্যাদির মতো স্থানে অবস্থানের কারণে একটি বৈশ্বিক আর্থিক খাত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ঝুঁকি ভাগাভাগি, অন্তর্ভুক্তি ও প্রকৃত সম্পদভিত্তিক লেনদেনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারিত হচ্ছে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিশ্ব পরিসরেও ইসলামি ব্যাংকিং এক অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। শুধু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে নয়; বরং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মনি, আর্জেন্টিনা, ডেনমার্ক, লুক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড ও ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়েকশ ইসলামি ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান শরিয়াহ সম্মত পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। দ্যা ব্যাংক অব উইটিয়ার-যুক্তরাষ্ট্র, আল রায়ান ব্যাংক পিএলসি-যুক্তরাজ্য, কেটি ব্যাংক-জার্মানি, দাউদ ইসলামিক ব্যাংক-আর্জেন্টিনা, ও ইসলামিক ব্যাংক ইন্টারন্যশনাল অব ডেনমার্ক উল্ল্যেখযোগ্য।
বিশ্বব্যাপী ইসলামি ব্যাংকগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বিশ্বব্যাপী ইসলামিক ফাইন্যান্সের মোট সম্পদের পরিমাণ চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, যা আগামী ২০২৬ সাল নাগাদ প্রায় ছয় ট্রিলিয়নে দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৈশ্বিক এ প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও এখন দিনে দিনে আরো শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলছে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত সহায়তাও খাতটির বিকাশে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিগত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে আমানত ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়ে দেশে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ হয়েছে।
শাখা ও কার্যক্রয় বিবেচনায় ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের সম্প্রসারণ হয়েছে ব্যাপক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য মতে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংক ছিল ১০টি। সারা দেশে ১ হাজার ৬৭১ টি শাখার মাধ্যমে কার্যক্রম চালাচ্ছে ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে একই সময়ে দেশের পুরো ব্যাংক খাতে শাখা ছিল ১১ হাজার ২১৯টি। শাখার শতাংশের বিবেচনায় দেশের পুরো ব্যাংকিং খাতের ১৫ শতাংশ শাখা ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে ১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকের পাশাপাশি প্রচলিত ধারার ১৫টি ব্যাংকের ৩০টি ইসলামি ব্যাংকিং শাখা কাজ করছে। এছাড়া ১৫টি প্রচলিত ধারার বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৬১৫টি ইসলামি ব্যাংকিং উইন্ডো এখন বাংলাদেশে ইসলামি আর্থিক সেবা দিচ্ছে।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে ইসলামিক ব্যাংকিং। ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রমের দ্রুত আমানত সংগ্রহ ও সফলতার কারণে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর কাছেও তা ধীরে ধীরে আকর্ষণীয় ও লাভজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ যে ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী তা ইসলামিক ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি দেখেই বুঝা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে মোট আমানত ছিল ৪৩১৯.৮৯ বিলিয়ন টাকা। ২০২২ সালের একই প্রান্তিকের আমানত থেকে প্রায় ৩৯.৮৯ বিলিয়ন টাকা বেড়েছে যার প্রবৃদ্ধি ০.৯৩ শতাংশ। প্রচলিত ব্যাংকের উইন্ডোতে আমানত স্থিতি ১৯৩.৮৩ বিলিয়ন টাকা ও প্রচলিত ব্যাংকের শাখায় আমানত স্থিতি ১৭৪.৬৪ বিলিয়ন টাকা। ১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার ৯১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সব ইসলামিক ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির (আইবিবিপিএলসি) আমানত ছিল ৩৪.৫৪%। তাছাড়া, ইসলামী ব্যাংকের বর্তমানে ৩৯৪ টি শাখা ও ২৪৯টি উপশাখায় মোট ২ কোটি ৩০ লাখ গ্রাহকের আমানত নিয়ে দেশে প্রথম সারির ব্যাংকে অবস্থান করছে।
বিনিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা জাতীয় উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বৃহৎ শিল্প, সিএমএসএমই তথা কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, ও মাঝারি বিনিয়োগে বৃহদাংশ অবদান যেমন রেখেছে তেমনি নির্মাণ খাত, সেবা শিল্প, ভোক্তা বিনিয়োগ, কৃষি খাত, মৎস্য খাতে বিশেষ অবদান রেখেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের সর্বশেষ তথ্য মতে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ৪২৯০.৭১ বিলিয়ন টাকা দেশে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ বিতরণ করা হয় যা বিগত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে ৭৫.৯৫ বিলিয়ন টাকা বেশি। দেশের সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতের বিনিয়োগের মধ্যে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিনিয়োগ ২৮ শতাংশ। দেশের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে যেখানে বিনিয়োগ বিতরণ করেছে প্রায় ৩৩.৬৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: স্বাধীন দেশের প্রথম শীতের স্মৃতি
ইসলামী ব্যাংক খাত বৈদেশিক রেমিট্যান্স সংগ্রহ এবং বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মোট রেমিট্যান্স সংগ্রহ হয়েছে ২৮০.৪৭ বিলিয়ন টাকা, যা পূর্ববর্তী প্রান্তিকের চেয়ে ৭৮.২৫ বিলিয়ন বা ২৬.৩৮ শতাংশ বেশি। ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যে রেমিট্যান্স সংগ্রহে তৃতীয় প্রান্তিকে শীর্ষস্থান (৪৮.১৪%) ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি।
ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা কৃষি ও গ্রামীণ বিনিয়োগ কর্মসূচির বিভিন্ন উপখাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষি খাতে ১৫.৯০ বিলিয়ন টাকা বিনিয়োগ করা হয়। দেশের সমগ্র ব্যাংকিং খাতের কৃষি বিনিয়োগ বিতরণের ১৬.৪৭ শতাংশ ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের লক্ষ্যই হলো ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে সামাজিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক মুক্তি আনা। ব্যবসায় সামাজিক দায়বদ্ধতা পরিপালনে ইসলমিক ব্যাংকগুলো সারা বিশ্বে যেমন উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে তেমনি বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম নয়। ইসলামিক ব্যাংকগুলো ব্যবসায় সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করে যাচ্ছে।
ইসলামি ব্যাংকগুলো যাকাত, খেলাপি বিনিয়োগ ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে শাস্তিমূলক চার্জ হিসেবে নেওয়া ক্ষতিপূরণ চার্জ এবং শরিয়াহ অনুমোদিত উপার্জনের অন্যান্য উৎস থেকে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে সিএসআর কার্যক্রম করে থাকে। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য ও দাতব্য সংস্থা সহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ যেমন বেওয়ারিশ লাশ দাফন, নবজাতককে উপহার, বনায়ন ও ফলবিথীতে ব্যয় করা হয়।
এ দিক দিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিএসআর নীতি পরিপালন করে সর্বোচ্চ পরিমাণ সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ব্যাংকের ২০২২ সালের তথ্যানুসারে ইসলামী ব্যাংক সরকারি ত্রাণ তহবিলসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রাকৃতিক দূর্যোগ, কর্মহীন, অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের মাঝে সর্বমোট ৩২৭.৩৬ কোটি টাকা বিতরণ করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সিএসআর বিতরণের হার ব্যাংকিং সেক্টরের মোট সিএসআর ব্যয়ের ২৯ শতাংশ। ২০২৩ সালের তথ্যানুসারে ব্যাংক সর্বমোট ১০০ কোটি টাকারও বেশি সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমে ব্যয় করেছে। এছাড়া, ইসলামী ব্যাংক এ পর্যন্ত সর্বমোট ১,৬৫৮ কোটি টাকা প্রায় ২ কোটি উপকারভোগীদের মাঝে সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমের আওতায় ব্যয় করেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে মামলা এবং ১৯৭১-এর ইতিহাসের ভবিষ্যৎ
৬ মাস আগে
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা: বিশ্বব্যাংক এমডি
২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য অর্জনে বিশ্বব্যাংকের দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) আন্না বিজার্ড।
রবিবার বাংলাদেশে তার প্রথম সফর শেষে তিনি বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে জরুরি ভিত্তিতে গভীর সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক খাতের সংস্কার প্রয়োজন।
বিজার্ড বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণামূলক।’
সফর শেষে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'মুদ্রা ও রাজস্ব নীতিতে দ্রুত ও সাহসী সংস্কার বাংলাদেশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে, আর্থিক খাতের ঝুঁকি হ্রাস করতে এবং বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম করবে।’
বিজেরদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী বিশ্বব্যাংক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বর্তমানে, প্রায় সব ছেলে ও মেয়ে শিশু স্কুলে যায় এবং প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ রয়েছে।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি এবং তাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত তাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন মেটাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দেন।
চট্টগ্রাম বিভাগে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী উভয়ের প্রয়োজন মেটাতে দুটি নতুন প্রকল্পে ৬৫ কোটি ডলারের বেশি অর্থায়ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছে বিশ্বব্যাংক ও সরকার।
অর্থায়নের প্রায় অর্ধেক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যয় করা হবে এবং অনুদানের শর্তেই তা ব্যয় করা হবে।
আরও পড়ুন: নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ তহবিল চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
বিজার্ড এলন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্ব নিয়ে আমি গর্বিত, দেশটি লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে সহায়তা করেছে। আমরা বাংলাদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, একটি শক্তিশালী বেসরকারি খাত গড়ে তুলতে, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং জলবায়ুর অভিঘাত ও ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলার সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা অব্যাহত রাখব এবং একই সঙ্গে কেউ যেন পেছনে পড়ে না থাকে তা নিশ্চিত করব।’
সফরকালে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনার জন্য অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের নেতাদের এবং নারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্বব্যাংক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) অর্থায়নে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ ও রেয়াতি ঋণ আকারে প্রায় ৪১ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিশ্বের বৃহত্তম চলমান আইডিএ কর্মসূচি এবং বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
৮ মাস আগে
বাজেটে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭.৫ ও মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশ নির্ধারণ
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সাড়ে ৭ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে ৫০ দশমিক ০৬ লাখ কোটি মূল্যের আনুমানিক গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্ট (জিডিপি) নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ যা এখন ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ।
বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা এবং অভ্যন্তরীণ অন্যান্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির অনুমানকে উচ্চাভিলাষী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থনৈতিক চাপ সত্ত্বেও কেন এবার উচ্চ প্রবৃদ্ধি আশা করছেন সে বিষয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ এবং উৎপাদনশীলতা ও অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে উদ্দীপিত করার মাধ্যমে আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধির গতিপথে ফিরে আসার এবং সাড়ে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের আশা করছি।’
আরও পড়ুন: সমস্ত নগদ-ভিত্তিক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ইএফটি’র আওতায় আসবে: অর্থমন্ত্রী
কামাল ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ এবং জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চলমান মেগা-প্রকল্পগুলো সম্পূর্ণ করার দিকে মনোনিবেশ করেন।
অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এরপর এলো মহামারি। অর্থমন্ত্রী ২০২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলেন, কিন্তু প্রকৃত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল তিন দশমকি ৪৫ শতাংশ, যা কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
মহামারি প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধার করার পর ২০২১ অর্থবছরে বৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও বেড়ে ৭ দশকি এক শতাংশ হয়েছে।
আরও পড়ুন: মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, চলতি হিসাবের ভারসাম্য বাড়ানো এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা প্রধান চ্যালেঞ্জ: অর্থমন্ত্রী
১ বছর আগে
বাংলাদেশে বড় আকারের বিনিয়োগ করতে চায় সৌদি আরব: প্রধানমন্ত্রীকে দেশটির দুই মন্ত্রী
স্থিতিশীল সরকার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভালো রেকর্ড থাকায় সৌদি আরব বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বড় আকারের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।
সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ. আল-ফালিয়াহ এবং অর্থনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ফয়সাল আলিব্রাহিম মঙ্গলবার দোহায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বাসভবনে যৌথভাবে সাক্ষাৎকালে এই প্রস্তাব দেন।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, সৌদি আরব বিনিয়োগকারী হিসেবে কয়েকটি বিষয় দেখে- স্থিতিশীলতা (উক্ত দেশের) ও বিনিয়োগের ভবিষ্যত।
বৈঠকে তারা বলেন যে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যত খুবই ভালো এবং এ কারণেই তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী কাতার: দেশটির প্রধানমন্ত্রী
সৌদি মন্ত্রীরা বলেন, বাংলাদেশে একটি স্থিতিশীল সরকার রয়েছে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুবই ভালো। বাংলাদেশের নেতৃত্ব, দৃষ্টিভঙ্গি ও অঙ্গীকার খুবই ভালো।
তারা জানান, সৌদি আরব এরই মধ্যে কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে তারা পতেঙ্গা বন্দর করতে চায় এবং এর পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চল নিতে চায়। সৌদি আরব দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যবর্তী হওয়ায় ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সৌদি যদি এটিকে একটি হাব করে তবে তারা ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং আরও অনেক দেশকে কভার করতে পারবে।
দুই মন্ত্রী বলেন, তাদের দেশ বাংলাদেশে সৌদি পেট্রোকেমিক্যাল, ডিজেল, জেট ফুয়েল, সার ও শিপিং লাইনের প্রধান বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করতে চায়। তারা পতেঙ্গাকে লোহিত সাগরের প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতোমধ্যে অনুমতি দিয়েছেন এবং অবিলম্বে এটি শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে সৌদি সরকারকে মাতারবাড়ী ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রস্তাব দেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ সহজ করার জন্য কোনো বাধা থাকলে তা দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ যেভাবে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে: দোহায় কাতারের শিক্ষার্থীদের জানালেন প্রধানমন্ত্রী
সৌদি আরব পারস্পরিক স্বার্থে কৃষির মতো বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায়।
এ ব্যাপারে তারা বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
সৌদি মন্ত্রীরা বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবে আবাসন ও হাসপাতাল নির্মাণে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেন।
দুই মন্ত্রী দু'দেশের জনগণের সুবিধার্থে সৌদি আরবে ফার্মাসিউটিক্যালস, বেভারেজ ও রিয়েল এস্টেট শিল্প স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান।
তারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ দেখিয়েছে যে এটি বিশ্বে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টসের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: তিন মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় কাতার সফর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের দৃশ্যমান উপস্থিতির চিহ্ন বহন করে: মোমেন
১ বছর আগে
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ অভাবনীয় অগ্রগতি করেছে: বিশ্বব্যাংকের ভিপি
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসার বলেন, উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ অভাবনীয় অগ্রগতি সাধন করেছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের এই অসাধারণ অগ্রযাত্রায় অংশীদার হতে পেরে বিশ্বব্যাংক গর্বিত।
আগামীকাল সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে প্রথমবার সফরে আসার আগে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাইসার।
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন ও ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে আমি মুখিয়ে আছি।’
বাংলাদেশে তার তিন দিনের সফরে রাইসার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলোর বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন।
রবিবার বিশ্বব্যাপী ঋণ প্রদানকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, তিনি (রাইসার) বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি খাতের নেতা, সুশীল সমাজ ও থিঙ্ক ট্যাংক সংস্থাগুলোর সঙ্গে দেখা করবেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা বিশ্বব্যাংকের
জার্মান নাগরিক রাইসার ২০২২ সালের ১ জুলাই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের জন্য বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এই দায়িত্ব নেয়ার আগে তিনি চীন, মঙ্গোলিয়া ও কোরিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। তুরস্ক ও ব্রাজিলেও তিনি একই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক অন্যতম।
এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে তিন হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি অনুদান,সুদমুক্ত ও রেয়াতি ঋণ সহায়তা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তায় ২৫৫ কোটি টাকা অনুদান দেবে বিশ্বব্যাংক
ঢাকা ও ময়মনসিংহে গ্রিড আধুনিকীকরণে ৫০০ মিলিয়নের বেশি ডলার ঋণ দিলো বিশ্বব্যাংক
২ বছর আগে
অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা জোরদারে গুরুত্বারোপ: সরকারি নথি
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ও গ্রামীণ উন্নয়ন জোরদারের প্রতি গুরুত্বারোপ করছে সরকার।
এক বাজেট নথি অনুসারে, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার জোরদারকরণ নিশ্চিত করতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ উন্নয়ন খাতে মোট ব্যয় গড়ে আট দশমিক সাত শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে ৪৭৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন কোটি।
২০২৩-২৪ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার ও গ্রামীণ উন্নয়নের প্রাক্কলন ব্যয় যথাক্রমে ৪৭৭ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ও ৪৩৫ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন টাকা।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতের জন্য বরাদ্দ ৪২১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন টাকা। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে তা ৪২৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা ৩২৩ দশমিক ৯০ বিলিয়ন টাকা ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা ছিল ৩১৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন টাকা।
আরও পড়ুন: প্রজন্মের উন্নয়নে চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত করা, শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা কমানো, শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিত করা এবং ভূগর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ ও এর পরিবর্তে মাটির ওপরের পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।
সরকারি নথি অনুযায়ী, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সরকার বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
এসব উদ্যোগের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ কর্মসূচি।
এই কর্মসূচির আওতায় ৫৭ লাখ উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে দুই হাজার ৯৯১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে; আয় উৎপাদন করতে পারে এমন ৩২ দশমিক ৪৯ লাখ পারিবারিক খামার স্থাপন করা হয়েছে এবং দুই লাখ ৬৪ হাজার উপকারভোগীকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী গৃহীত ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
২ বছর আগে
আঞ্চলিক প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ: ডেভিড ব্রুস্টার
অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কলেজের সিনিয়র গবেষণা ফেলো ডা. ডেভিড ব্রুস্টার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে বলেছেন আঞ্চলিকভাবে প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্য দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকাতে মনযোগী হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লাভবান হতে পারে।
‘উদীয়মান বাংলাদেশ আঞ্চলিক শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছে’ শিরোনামে তার একটি সাম্প্রতিক নিবন্ধে ব্রুস্টার বলেন, সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তামূলক ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ। একটি সাহায্যপ্রার্থী দেশ থেকে আঞ্চলিক প্রভাবশালী দেশ হওয়ার পথে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট।
তিনি মনে করেন বিগত বছরগুলোতে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলেই বাংলাদেশ বর্তমান অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছে। তার মতে, ঢাকা হয়ে উঠতে পারে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কেন্দ্রবিন্দু।
ব্রুস্টার বলেছেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা অর্জনের সময় বাংলাদেশ ছিল ‘আপাত সম্ভাবনাহীন’ পৃথিবীর দরিদ্রতম একটি দেশ। তখন বাংলাদেশকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দফায় জাতিসংঘের মহাসচিব হলেন গুতেরেস
ব্রুস্টারের মতে, আজকের বংলাদেশ ১৬ কোটি মানুষের আত্মবিশ্বাসী একটি জাতি। এদেশের রয়েছে রপ্তানিনির্ভর উদীয়মান এক অর্থনীতি, যা গত দুই দশক ধরে ৬ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর কারণে প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এলেও, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৮ এবং ২০২২ সালে এটা দাঁড়াবে ৭ দশমিক ২ শতাংশে। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২,২২৭ মার্কিন ডলার, যা প্রতিবেশী ভারত (১৯৪৭ ডলার) এবং পাকিস্তানের (১৫৪৩ ডলার) চেয়ে বেশি।
শ্রীলঙ্কাকে দিতে চলা অর্থনৈতিক ঋণ হতে চলেছে ঢাকার পক্ষ থকে অন্য কোনও দেশকে দেয়া প্রথম অর্থনৈতিক সহায়তা।
আরও পড়ুন: বাইডেন রাজত্বের ১৫০ দিনে ৩০ কোটি টিকার মাইলফলক
স্বাস্থ্য, গড় আয়ু, জন্মহার এবং নারীর ক্ষমতায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সুরক্ষা নির্দেশকগুলোর ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে এগিয়ে আছে।
তবে, বাংলাদেশ সরকারের প্রদত্ত তথ্য-উপাত্তের যথার্থতা নিয়ে কিছু দ্বিমত আছে। এছাড়া রপ্তানি খাতে অতিমাত্রায় গার্মেন্টস নির্ভরতা দেশটির অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে অন্যতম।
আরও পড়ুন: বিদ্রোহ রুখতে মিয়ানমারে গ্রাম পোড়ালো জান্তা বাহিনী
৩ বছর আগে
উন্নয়ন অব্যাহত রাখাই সরকারের মূল লক্ষ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখাই সরকারের মূল লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
৩ বছর আগে
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির শুভেচ্ছাদূত হলেন তামিম
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
৪ বছর আগে