কালো টাকা
কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাতিল করল সরকার
১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) এনবিআর এ সংক্রান্ত একটি এসআরও (বিধি-বিধান) জারি করেছে।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার গত বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে নগদসহ জমি, ফ্ল্যাট ও প্লটসহ স্থাবর সম্পদ কিনে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়।
গত সপ্তাহে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এই সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সালমান, আকবর সোবহানসহ ৫ ব্যবসায়ীর হিসাব তলব করেছে এনবিআর
এরই ধারাবাহিকতায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করে এনবিআর।
চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এক বছরের জন্য বিগত সরকার এই সুযোগ দিয়েছিল। ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সাদা করার সুযোগ ছিল।
গত ২৫ আগস্ট অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, সরকার আর কাউকে কালো টাকা বানাতে দেবে না।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমাদের সিদ্ধান্ত পরিষ্কার, আর কালো টাকা তৈরির কোনো সুযোগ থাকবে না।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান কালো টাকা সাদা করার পদ্ধতির কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, এটি একটি অশালীন কাজ এবং ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’।
প্রায় সব সরকারই দেশে কালো টাকাকে বৈধতা দেওয়ার অনুমতি দিলেও তাতে সাড়া মেলেনি।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা বৈধ হয়েছে।
তবে বিএনপি সরকারের ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে কালো টাকা সাদা করার কোনো সুযোগ ছিল না।
সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়া হলেও কেউ এ সুযোগ নেয়নি। এর এক বছর পর কালো টাকা সাদা করার আরেকটি সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: এনবিআর পরিদর্শনে গিয়ে কাজের গুরুত্ব তুলে ধরলেন অর্থ উপদেষ্টা
বড় কর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা জোরদার করছে এনবিআর
২ মাস আগে
কালো টাকা সাদা করা বন্ধের সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের অংশ হিসেবে কালো টাকা সাদা করার বিধান বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টাদের নিয়মিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এসব বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতা ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ২৮ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক
কালো টাকা সাদা করার মাধ্যমে যেসব টাকা আসছে, সেটার পরিবর্তে সরকার নৈতিক বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়েছে।
এর আগে সম্প্রতি ঘোষিত বাজেটে অপ্রদর্শিত আয়ের ছদ্মবেশে কালো টাকা সাদা করার 'অনৈতিক' বিধান নিয়ে বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
দুর্নীতি বিরোধী এ প্রতিষ্ঠান আশঙ্কা করেছিল, মাত্র ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে কালো টাকা বৈধ করার সুবিধা সৎ ও বৈধ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে। কারণ এই বিধানের অধীনে ঘোষিত অর্থ ও সম্পদ নিয়ে কোনো কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।
আরও পড়ুন: আত্মসাতের টাকা ১ লাখ কোটি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাংকিং খাত সংস্কারের উদ্যোগ
২ মাস আগে
কালো টাকা সাদা করার বিধান পুনর্বিবেচনা করা উচিত: মোমেন
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিধান নিয়ে সংসদে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২০) সংসদে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার ঘোষণার কারণে সৎ করদাতারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় তিনি বলেন, আমি অবশ্যই মনে করি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: কালো টাকা সাদা করার বাজেট প্রণয়ন অসাংবিধানিক ও দুর্নীতিবান্ধব: টিআইবি
এসময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রাজস্ব বৃদ্ধি, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও হয়রানির চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন মোমেন।
দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ খাদ্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় উল্লেখ করে পেঁয়াজ ও আলু উৎপাদনে উদ্বৃত্তের ইঙ্গিত দিয়ে সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মোমেন।
তিনি বলেন,‘২৮ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে স্থানীয়ভাবে ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। একইভাবে আলুর উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১০৪ লাখ টন, যা চাহিদার তুলনায় ২৫ লাখ টন বেশি। যদি তাই হয়, তাহলে এসব পণ্যের দাম বাড়বে কেন? আমাদের পরিসংখ্যানে ভুল আছে।’
কর্মসংস্থান সংকট নিয়েও কথা বলেন তিনি। মোমেন বলেন, অপর্যাপ্ত স্থানীয় চাকরির কারণে অনেক নাগরিক বিদেশে সুযোগ খোঁজেন। ‘সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ বেকার। তবে আমার অফিসে আসা ১০ জনের মধ্যে ৬ জনই চাকরি খুঁজছেন।’
আরও পড়ুন: কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে: জমির উদ্দিন সরকার
মোমেন কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে বেসরকারি খাতের গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ গ্রহণের সম্ভাব্য প্রভাব তুলে ধরেন। তিনি সতর্ক করে বলেন,‘বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার এক লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিচ্ছে, যা বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের ঋণ থেকে বঞ্চিত করতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
রাজস্ব আদায়ের বিষয়টিকে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ১৭ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ৩০-৩২ লাখ মানুষ করদাতা, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় সর্বনিম্ন।
তিনি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর পরিধির প্রস্তাব করেন, যাতে জাতীয় পরিচয়পত্রধারী সকল ব্যক্তিকে বার্ষিক আর্থিক বিবরণী জমা দিতে হবে। এই পদক্ষেপের ফলে করদাতার সংখ্যা বর্তমানের ৩০-৩২ লাখের পরিবর্তে দুই-তিন কোটিতে উন্নীত হতে পারে।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, পারিবারিক মর্যাদা বৃদ্ধি ও হয়রানি হ্রাসে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানান সাবেক এই মন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, যা মানুষের হয়রানি তীব্রতর করছে। মুষ্টিমেয় কিছু দুর্নীতিবাজ আমলার কারণে গোটা আমলাতন্ত্রকে দোষারোপ করা হয়।’
আরও পড়ুন: বাজেটে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাবে সমর্থন প্রধানমন্ত্রীর
৫ মাস আগে
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে: জমির উদ্দিন সরকার
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকাকে বৈধ করার বিধান রাখা মানেই ‘দুর্নীতিকে উৎসাহিত’ করা।
তিনি বলেন, ‘যদি ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যায়, তাহলে আমাদের, সৎ করদাতা এবং তাদের (কালো টাকার ধারক) মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না।’
শুক্রবার (৭ জুন) এক আলোচনা সভায় জমির উদ্দিন এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কালো টাকা বৈধ করার কোনো সুযোগ না দিয়ে বাজেয়াপ্ত করা উচিত। ‘যদি করের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা যায়, তাহলে সেটি অসততায় লিপ্ত হতে উৎসাহিত হবে।’
এর আগে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার বিধান রেখে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
আরও পড়ুন: লুটপাটের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এই বাজেট: ফখরুল
তবে দুই বছর আগেও ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার বিধান ছিল। তবে পরে ভালো সাড়া না পাওয়ায় এ বিধান বাতিল করা হয়।
এক বছরের বিরতির পর অর্থমন্ত্রী কর ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করে বিধানটি আবারও ফিরিয়ে এনেছেন।
সংসদের প্রাক্তন স্পিকার সরকার কালো টাকা সাদা করার বিধানটি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। ‘দয়া করে সতর্ক থাকুন, যাতে একজনের উপার্জন করা অর্থ এবং অন্যজনের সহজেই পেয়ে যাওয়া অর্থের মধ্যে পার্থক্য বজায় থাকে। সহজে টাকা পাওয়ার সঙ্গে টাকা রোজগার করার মিল থাকে না... সরকারের কাছে এটাই আমার বিনীত অনুরোধ।’
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীর স্মরণে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপিপন্থী পেশাজীবী পরিষদ।
দেশের বিচার বিভাগে এ জে মোহাম্মদ আলীর অবদানের কথা স্মরণ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাবেক এই স্পিকার।
আরও পড়ুন: ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি নেতাদের আর সহ্য হচ্ছে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৫ মাস আগে
২০২১-২২ অর্থবছরে কালো টাকা সাদা করায় সাড়া কম: এনবিআর ডাটা
সাধারণ ক্ষমার আওতায় কালো টাকার মালিকদের কর প্রদানের হার ৮০ দশমিক ৮৩ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে দুই হাজার ৩০০ জন হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিল ১২ হাজার।
সোমবার বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সর্বশেষ তথ্য থেকে এসব জানা যায়।
গত অর্থবছরে শেয়ারবাজারে সমন্বয়, জমি-ফ্ল্যাট ক্রয়, ব্যাংকে টাকা রেখে সব ধরনের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ ছিল।
তবে বছর শেষে দেখা গেছে, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও মাত্র দুই হাজার ৩০০ করদাতা এগিয়ে এসেছেন।
আরও পড়ুন: এনবিআর ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডকে সহায়তা করে: চেয়ারম্যান
এত কম সাড়াদানের পেছনে গত বছর উচ্চ কর আরোপকে দায়ী করা হচ্ছে।
অর্থবছর ২২ এর ২৫ শতাংশের তুলনায় অর্থবছর ২১ এ করের হার ছিল ১০ শতাংশ।
এছাড়া কালো টাকা সাদা করতে ওই করের ওপর পাঁচ শতাংশ জরিমানাও দিতে হতো। এতে মোট করের হার দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, এ কারণে সাড়া কম ছিল।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ইউএনবিকে বলেন, এ ধরনের সুযোগ দেয়া অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থী।
আরও পড়ুন: ভ্যাট ফাঁকি রোধে ১০ হাজার ইএফডি বসাবে এনবিআর
তিনি বলেন, এতে প্রমাণিত হয় নৈতিকতার বিনিময়ে এই ধরনের সুযোগ থেকে খুব কমই লাভ হয়েছে।
এ ধরনের সুযোগ শুধু দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দেয় এবং দুর্নীতিকে উৎসাহিত করে বলেও জানান টিআইবি প্রধান।
২ বছর আগে
২০ দশমিক ৫০ ট্রিলিয়ন টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব বিইএ’র
কালো ও পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির (বিইএ) সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।
তিনি বলেন, ১৯৭২-৭৩ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত দেশে কালো টাকার পরিমাণ ৮৮ দশমিক ৬১ ট্রিলিয়ন টাকার বেশি। যার মধ্যে একই সময়ে বিদেশে পাচার হয়েছে আট লাখ কোটি টাকা।
রবিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের বিইএ’র বিকল্প জাতীয় বাজেট উপস্থাপন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
৩৩৮ সুপারিশসহ ২০২২-২৩ অর্থবছরের আসন্ন বাজেটের জন্য বিকল্প বাজেটের আকার ২০ দশমিক ৫০ ট্রিলিয়ন টাকা।
এই বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ৭০ ট্রিলিয়ন টাকা। এ ছাড়া বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রত্যক্ষ কর এবং কালো ও পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেটে বৈদেশিক ঋণ ও ব্যাংক ঋণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
সেশনটি সঞ্চালনা করেন বিইএ’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা ও পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ প্রধান চ্যালেঞ্জ হতে পারে
জাতীয় বাজেট উপস্থাপন ৯ জুন: মুস্তফা কামাল
২ বছর আগে
বাজেট: কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ না দেয়ায় টিআইবির সাধুবাদ
২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থের মোড়কে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দানের বিষয়ে নতুন করে ঘোষণা না দেয়াকে সতর্ক সাধুবাদ জানাচ্ছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
পাশাপাশি সৎ করদাতাদের প্রতি বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক এই সুবিধা যেন অন্য কোনো উপায়ে আয়কর অধ্যাদেশে রাখা না হয় সে বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষন করছে সংস্থাটি। একইভাবে কোভিড নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যখাতের মত অতিগুরুত্বপূর্ণ খাতসমূহে বরাদ্দ বৃদ্ধিই নয়, সার্বিকভাবে বাজেট বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট পথরেখা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব কথা জানায় সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেট মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “সব মহলের তীব্র আপত্তি ও প্রতিবাদ স্বত্ত্বেও চলতি বাজেটে অর্থমন্ত্রী কালো টাকা বৈধ করার যে ঢালাও সুবিধা দিয়েছিলেন সেটি আসন্ন বাজেটে নতুন করে না রাখার সিদ্ধান্ত সরকারের বোধোদয় হিসেবে ধরে নেয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে আমরা বিশ্বাস করতে যাই যে সরকারপ্রধানের ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুন্য সহনশীলতা’র বক্তব্যকে সম্মান করে শেষ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ এই অনৈতিক সুবিধাটি আয়কর অধ্যাদেশের আইনি মারপ্যাঁচে ফেলে বা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর চাপে পড়ে অব্যাহত রাখবে না।”
আরও পড়ুন: এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাজেট: বিজিএমইএ
করোনাকালীন এই সময়ে সার্বিকভাবে জনকল্যাণমুখী, অংশীদারিত্বমূলক এবং মানুষের জীবন রক্ষায় প্রয়োজনীয় বাজেট প্রদানের আহ্বান জানিয়ে ড. জামান আরও বলেন, “২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ৩৩ হাজার কোটি টাকা (যা মোট বাজেটের প্রায় ৭ শতাংশ) রাখা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় এখনো তা অনেক কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশে চিকিৎসা সেবায় সরকারের ২৬ শতাংশ খরচের বিপরীতে রোগীর খরচ হয় ৭৪ শতাংশ, যা জাতিসংঘের সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রস্তাবে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। আবার ক্রমাগত দুর্নীতি ও ন্যয়সঙ্গত ব্যয় সক্ষমতার অভাবে এই বরাদ্দও সঠিকভাবে ব্যয়িত না হওয়ার প্রবল ঝুঁকি আছে, যা থেকে উত্তরণে বাজেটে সুনির্দিষ্ট কোনো পথরেখা দেয়া হয়নি, যা হতাশাব্যঞ্জক; যখন কিনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বাস্থ্যখাতে প্রকাশিত অকল্পণীয় ও আকাশচুম্বি দুর্নীতির লাগাম টানতে এ খাতটি ঢেলে সাজানোর কোনো বিকল্প নেই।”
করোনা মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ এবং দেশে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে টিকা কার্যক্রমে সরকারের বিনিয়োগ ভাবনাকে সাধুবাদ জানালেও ড. জামান বলেন, “করোনা মোকাবিলায় বরাদ্দ দেয়াটাই যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে অর্থ ব্যয়প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছতার সাথে করা হয় এবং স্বাস্থ্যখাতে জেঁকে বসা দুর্নীতি যেন কোনোভাবেই এতে সুযোগ নিতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। একইভাবে করোনোর টিকা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও সরকার স্বচ্ছ ক্রয়প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে এবং জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে এমনটাই প্রত্যাশিত।”
আরও পড়ুন: বাজেট: স্বাস্থ্য খাতের জন্য ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ
শহরের বাইরে হাসপাতাল সেবার পরিধি বাড়াতে ১০ বছরের জন্য কর রেয়াত একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলেও মন্তব্য করেন ড. জামান, এর মাধ্যমে গ্রামীণ জনপদে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার সুযোগ তৈরি হবে।”
প্রস্তাবিত বাজেটে অনুন্নয়ন খাতে মোট বাজেটের প্রায় ৬০ শতাংশ বরাদ্দের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড. জামান বলেন, “করোনাকালীন বাস্তবতা বিবেচনায় সরকার অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে জরুরি সেবামুলক খাতসমূহে বাস্তবসম্মত বরাদ্দ রাখবে এমনটাই প্রত্যাশিত ছিলো। কিন্তু মোট বরাদ্দের দিক থেকে চতুর্থ সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে জনপ্রশাসন (৭.৬%) আর এর সাথে প্রতিরক্ষা ব্যয় যোগ করলে পরিমানটি প্রায় ১৪ ভাগ ছাড়িয়ে যায়। বছর বছর বরাদ্দ বাড়ানো হলেও জনপ্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে কার্যকর কৌশলের অনুপস্থিতি হতাশাজনক। একইসাথে প্রতিরক্ষা খাতে ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনয়নেও কোনো ঘোষণা না থাকা সুশাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শণ মাত্র।
সর্বোপরি, বাজেট বাস্তবায়ন, বিশেষ করে সরকারি ক্রয়খাতসহ সকল প্রকার ব্যয়ের ক্ষেত্রে নিরঙ্কুশ স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও কঠোর শুদ্ধাচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।”
৩ বছর আগে
বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ না রাখার আহ্বান টিআইবির
চলতি অর্থবছর অপ্রদর্শিত অর্থের মোড়কে কালো টাকা সাদা করার যে অনৈতিক সুযোগ সরকার ঢালাওভাবে দিয়েছে সেটি অনির্দিষ্ট মেয়াদে বাড়ানোর বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
শনিবার (২২ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার দুর্নীতি সহায়ক, বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক সুযোগ না রাখার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
এতে বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদে কালো টাকা সাদা করার এমন সুবিধা সৎ ও বৈধ আয়ের ব্যক্তি করদাতাকে নিরুৎসাহিত করার মাধ্যমে কর ব্যবস্থায় খেলাপির সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ঝুঁকি তৈরি করবে এবং এতে আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ না রাখায় দেশে দুর্নীতিসহায়ক একটি উদার পরিস্থিতি তৈরি হবে, যা সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানকে দুর্বল করার মাধ্যমে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে কোনো চেষ্টাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে।
এসব শঙ্কা বিবেচনায় রেখে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতার’ নীতির প্রতি সামঞ্জস্য রেখে নতুন বাজেটে (২০২১-২২ অর্থবছর) কালোটাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে টিআইবি।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনার মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে টিআইবি
‘দেশের অর্থনীতিতে যতোদিন অপ্রদর্শিত অর্থ থাকবে, ততোদিন তা ঘোষণার সুযোগ থাকবে...’ বলে অর্থমন্ত্রীর যে বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আজ এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘চলতি বাজেটে অর্থের উৎস নিয়ে যে কোনো ধরনের প্রশ্ন করার বিধান উঠিয়ে দিয়ে বৈধ উপায়ে অর্জিত ‘অপ্রদর্শিত অর্থ’ এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কালো টাকার মধ্যকার ফারাক একাকার করে দেয়া হয়েছে। এমন বাস্তবতায় কালোটাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ অনির্দিষ্ট মেয়াদে রাখার পরিকল্পনা দেশের কর ব্যবস্থায় ন্যায় ও ন্যায্যতার প্রশ্নকে প্রকট করে তুলবে এবং দুর্নীতিবাজদের জন্য করোনাকালীন সময়ে নতুন প্রণোদনা হিসেবে বিবেচিত হবে। তাই এমন অপরিণামদর্শী ও আত্মঘাতী পরিকল্পনা থেকে সরকার সরে আসবে সেটিই প্রত্যাশিত।’
মাত্র ১০ ভাগ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকলে সৎ করদাতারা কেন সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩০ ভাগ কর দেবেন? এমন প্রশ্ন রেখে ড. জামান বলেন, ‘সাময়িকভাবে এমন সুযোগ থেকে সরকার কিছুটা রাজস্ব পেলেও ধীরে ধীরে তা বড় সংখ্যক করদাতাদের খেলাপি হতে উৎসাহিত করবে, যা দীর্ঘমেয়াদে রাজস্ব ক্ষতির মাত্রাকে বাড়িয়ে দেবে এবং কর খেলাপির নতুন এক সংস্কৃতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করবে।
তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম নয়মাসে রেকর্ড ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ বৈধ হবার খবরে নীতনির্ধারক মহলে যে সন্তুষ্টির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, সেটি সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের প্রতি একরকম উপহাসই বলা চলে। কেননা অতিমারির মাঝেও বিপুল অর্থ সাদা করার প্রবণতাই বলে দেয়, দেশে একটি দুর্নীতিসহায়ক ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে এবং সেটি যে কোনো পরিস্থিতিকেই নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কাজে লাগাতে প্রস্তুত দুর্নীতিগ্রস্তরা।’
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রদানের দীর্ঘদিনের অসাংবিধানিক চর্চা বন্ধ করার এখনই উপযুক্ত সময় মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘বৈধ পথে অর্থ উপার্জনকারী করদাতা থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি ব্যবসায়ী সংগঠন বিভিন্ন সময়ে ঢালাও এ সুযোগের বিরোধিতা করলেও সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি বরং সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। এক্ষেত্রে দূরদৃষ্টি, সংবিধান ও আইনের শাসনের প্রতি সরকার আনুগত্য দেখিয়ে আসন্ন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করবে এমনটাই আশা। একইসাথে, কালো টাকার মালিকদের সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের মাধ্যমে কার্যকর জবাবদিহিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে দুর্নীতির মহোৎসবের হ্রাস টেনে ধরা যায়।’
৩ বছর আগে
কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াই থেমে যায় তদন্তের ফাঁকে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব কিছু দেখে মনে হয় ঠিকঠাক চলছে। তবে সমস্যা শুধু তদন্তে।
৪ বছর আগে
‘আত্মসাৎ’ করতেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি: বিএনপি
সরকার জনগণের টাকা ‘আত্মসাত করে সুইস ব্যাংকে আরও কালো টাকা পাঠাতে বছরে কয়েকবার বিদ্যুত-জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
৪ বছর আগে