নিম্নাঞ্চল
বাঘাইছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, সাজেকে আটকা আড়াই শতাধিক পর্যটক
বাঘাইছড়ি উপজেলায় টানা ৪ দিনের বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার কাচাঁলং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঘাইছড়ির নিচু অঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। গত ৩ মাসের ব্যবধানে এটি তৃতীয় দফার বন্যা।
অপরদিকে খাগড়াছড়ি জেলাধীন দীঘিনালার কবাখালীতে সড়কের একাংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বাঘাইছড়ি থেকে দেশের অন্যান্য জেলা-উপজেলায় দূর পাল্লার যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। ফলে সাজেকে আটকা পড়েছেন প্রায় আড়াই শতাধিক পর্যটক।
আরও পড়ুন: আগামী ২৪ ঘণ্টা সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে: এফএফডব্লিউসি
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কের দীঘিনালা উপজেলার কবাখালি অংশের সড়ক ডুবে গিয়ে রাঙ্গামাটির সাজেকসহ বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা সঙ্গে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাজেক যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি ডুবে যাওয়ায় পানি না কমা পর্যন্ত আটকা থাকবেন সেখানে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা।
এদিকে, বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের করেঙ্গাতলী সড়ক ও পৌর এলাকার উগলছড়ি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের উগলছড়ি, বেপারী পাড়া, নিউলাইল্ল্যা ঘোনা এবং পৌরসভার বটতলী, মাদরাসা পাড়া, হাজী পাড়ার কিছু অংশ পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আখতার বলেন, ‘বাঘাইছড়িতে আবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ৫৫ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং বন্যা দূর্গতদের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল থেকে কিছু আশ্রয় কেন্দ্রে ক্ষতিগ্রস্তরা আশ্রয় নেওয়া শুরু করেছে। যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সাজেক সড়কের দীঘিনালার কবাখালি অংশের সড়ক ডুবে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে। এ কারণে গত সোমবার ও মঙ্গলবার সাজেকে যারা বেড়াতে এসেছেন তারা মূলত আটকে পড়েছেন। আনুমানিক পর্যটকের সংখ্যা প্রায় আড়াই শতাধিক হবে। সড়ক থেকে পানি নেমে গেলে তারা গন্তব্যে ফিরে যাবেন।’
এদিকে বাঘাইছড়ির মাটি ও মানুষকে বন্যার কবল থেকে রক্ষায় বাঘাইছড়ির বেশ কিছু স্থানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে বাঘাইছড়িবাসী।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বন্যার আশঙ্কা, ফেনী-চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত: এফএফডব্লিউসি
৪ মাস আগে
চেরাপুঞ্জিতে ঢল, ফের পানিবন্দি সুনামগঞ্জের বাসিন্দারা
প্রথম দফার ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই আবারও বন্যার কবলে পড়ছে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের বাড়ছে সুনামগঞ্জের সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটাসহ সকল নদনদীর পানি।
সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে ডুবেছে সুনামগঞ্জ শহরসহ জেলার নিম্নাঞ্চল। সেইসঙ্গে ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক। আর এতে আবারও বন্যা আতঙ্কে দিন পার করছেন ভাটির এ জেলার ২৫ লাখ মানুষ।
আরও পড়ুন: সিলেট-সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার আশঙ্কা
এদিন ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে পৌর শহরের উত্তর আরপিননগর, সাহেববাড়ি ঘাট ও পুরানপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকার রাস্তাঘাট।
এমনকি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দূর্গাপুর সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় জেলা শহরের সঙ্গে আবারও তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে ছাতক, দোয়ারাবাজার, মধ্যনগরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ সড়ক এখন পানির নিচে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওইসব অঞ্চলের পাঁচ লাখের বেশি মানুষকে।
তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, ‘সকল নদীর পানি আবারও বাড়ছে। সড়কে পানি ওঠায় জেলা শহরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন সুনামগঞ্জে যেতে হচ্ছে নৌকায়। বন্যা আমাদের অবস্থা একদম নাজেহাল করে দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: সিলেটে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা
সিলেট ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে ফের বন্যার আশঙ্কা
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ভোলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দি ২০ হাজার মানুষ
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সাগর মোহনার দুর্গম ঢাল চর ও চর কুকরি মুকরি ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
এতে করে জোয়ারের অন্তত ৫ ফুট পানিতে প্রায় ২০ হাজার লোক পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। অসংখ্য কাঁচাঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে। এতে করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ি বাধ হুমকির মুখে পড়েছে।
আরও পড়ুন: আজ সন্ধ্যায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় 'রিমাল'
ঢাল চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, তার ইউনিয়নের কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই। সেখানে জোয়ারে পানিতে প্রায় ১২ হাজার লোক পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। নদী উত্তাল হওয়ায় সেখান থেকে মূল ভূখণ্ডে মানুষকে সরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে কিছু লোক পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছে। রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার এলাকার বহু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, চরে অতি জোয়ারের পানিতে মানুষের দুর্ভোগ চরমে।
পর্যটন এলাকা কুকরি মুকরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম বলেন, তার এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে চর পাতিলাসহ বিভিন্ন এলাক প্রায় সাত হাজার লোক পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। অনেক আশ্রয় কেন্দ্রে আসছে। উঁচু স্থানে গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছে। তাদের শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে কাচা ঘর বাড়ি ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মনপুরার হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসের হাটে নিম্ন অঞ্চল, কলাতলি, চর সামসুদ্দিন ও কাজির চর, চর নিজাম চার থেতদকে পাঁচ ফুট পানিতে প্লাবিত।
এদিকে ঘুর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সকাল থেকে হালকা বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে। পাশাপাশি উত্তাল হয়ে উঠে মেঘনা নদী।
নদী ও সাগর তীরবর্তী এলাকায় থাকা মাছ ধরা ট্রলারগুলো নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য স্বেচ্ছাসেবক কোস্টগার্ড সতর্ক বার্তা প্রচার করেছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: খুলনার উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি-জলোচ্ছ্বাস
৬ মাস আগে
ফের তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
উজানের পাহাড়ি ঢল ও মৌসুমি বর্ষার বৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকাল ৪টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৬ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে ১৪ আগস্ট বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও একদিন পরে তা নিচে নেমে আসে। বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার বন্যার শঙ্কায় চিন্তিত তিস্তাপাড়ের মানুষ।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে
এদিকে বৃহস্পতিবার রাত থেকে পানি বাড়তে থাকে। শুক্রবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা বরাবরে প্রবাহিত হয়। ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে ৩ ঘণ্টা পরে দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
উজানে ভারী বর্ষণ ও ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ।
ব্যারাজ ও নদী তীরের বাসিন্দারা জানান, পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের আবাদ করা ফসলের খেতে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। যার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
চর গোবর্দ্ধন এলাকার আজিজুল ইসলাম জানান, রাত থেকে পানি বাড়ছে তিস্তায়। নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত রাস্তাঘাট ও পুকুর। চরাঞ্চলে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যেতে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের শতশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
হলদিবাড়ি চরের আব্দুল মতিন বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। বর্ষাকালে বন্যা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। ক্রমেই বাড়ছে পানি। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। পরিবার-পরিজন নিয়ে মাচাংয়ের ওপর বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষদের। এসব এলাকার বাসিন্দারা শিশু-বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে চরম বিপদে রয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে
কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপরে
১ বছর আগে
বান্দরবানে ভারি বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, সতর্ক করতে মাইকিং
দুই দিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
ইতোমধ্যে শহরের হাফেজঘোনা, বাসষ্টেশন, আর্মি পাড়া ও ইসলাম পুর এলাকার নিচু স্থান ৫ থেকে ৭ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এদিকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পৌর সভা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
জেলা প্রশাসক মো. মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় বান্দরবানে ১৯২ টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এছাড়া লামা উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারী ৮টি পরিবারের ৩৬ জনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, দুপুর থেকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। এদিকে সাংগু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার কাছ দিয়ে বইছে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, বিপদ মোকাবিলায় প্রসাশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছেন। ত্রাণ সমগ্রীর কোন অভাব নেই। প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।
শহরের মৃত্তিকা ও পানি বিভাজিকা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় বান্দরবানে ১৬৫ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ক্যান্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের কেজি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
সুনামগঞ্জে বন্যায় ১০ গ্রাম প্লাবিত, বৃষ্টি অব্যাহত
১ বছর আগে
সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
টানা চার দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ি ঢল নেমেছে। এছাড়া উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হাওড় এলাকার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল, ব্যাহত হচ্ছে গ্রামীণ যোগাযোগ।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে অসময়ে যমুনায় পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুল হাওলাদার বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে কোনও কোনও নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, তবে বৃষ্টিপাত কমে গেলে পানি দ্রুত নেমে যাবে।
এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা পাউবো। এসময়ে যাদুকাটা, চলতি খাসিয়ামারা, চেলা, মনাই, সোমেশ্বরীসহ সব পাহাড়ি নদীর পানি বেড়েছে। ফলে প্লাবিত হচ্ছে জেলার নিম্নাঞ্চল।
এদিকে সুনামগঞ্জ শহরেরে সাহেববাড়ি ঘাট, কাজির পয়েন্ট, নবীনগর, হাছননগর, নতুনপাড়ায় পানি ঢুকে পড়েছে। সাধারণ জনগণের চলাচলের সড়ক ডুবে হু-হু করে ঢলের পানি ডুকছে হাওর ও নদ-নদীতে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মাকসুদ চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জে বন্যা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে হবে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল
১ বছর আগে
ফের বন্যায় ভাসতে পারে সিলেট-সুনামগঞ্জ
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হওয়ায় বাড়ছে নদ-নদীর পানি।
আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উজানে ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
এর ফলে আশপাশের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে এবং বিপদসীমা অতিক্রম করে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুন: সিলেটে নদ-নদীতে বাড়ছে পানি, আবারও বন্যার আশঙ্কা
সোমবার (১৯ জুন) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদী বিভিন্ন স্থানে জলস্তর বৃদ্ধির প্রবণতা বজায় রয়েছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এ অঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থার মতে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এফএফডব্লিউসি-এর সকালের বুলেটিনে বলা হয়েছে- আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার অববাহিকা এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কারণে এই নদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়তে পারে।
ফলে সুরমা, কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, ঝালুখালী, ভূগাই-কংশা, সোমেশ্বরী, ও জাদুকাটাসহ এ অঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভারতের সীমান্তবর্তী আসাম রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কারণ অবিরাম বর্ষণে রাজ্যের নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে অবিরাম বর্ষণে আবারও বন্যার শঙ্কা
ইউএনবি সুনামগঞ্জ প্রতিনিধির প্রতিবেদন:
সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপরে এবং সুনামগঞ্জ জেলার ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণে জেলার সব বড় নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন্যায় বিষম্ভরপুর উপজেলার শক্তিরখোলা প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদী সুনামগঞ্জে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
জেলা প্রশাসক দিদার আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জানান, বন্যা মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুতি নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা দুর্গত এলাকায় কি ধরনের খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠাবেন
১ বছর আগে
সিরাজগঞ্জে টানা বর্ষণে যমুনার পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
সিরাজগঞ্জে উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা প্রবল বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অসময়ে যমুনা ও তার শাখা নদীসহ খাল বিলের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
এতে বিশেষ করে সিরাজগঞ্জে যমুনার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ফসল পানিতে ডুবে গেছে। টানা এ বর্ষণে জনজীবন এখন স্থবির হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোয়াটার) রনজিত কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: নিম্নচাপের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণের ৫ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
তিনি বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে যমুনায় পানি বৃদ্ধি পেলেও সোমবার পানি সামান্য হ্রাস পেয়ে ওইদিন মধ্যেরাত থেকে আবারও টানা বর্ষণে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীতে ৩৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেও যমুনার পানি এখনও বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
চতুর্থ দফায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনা তীরবর্তী শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচি, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এতে মৌসুমী রোপা আমন, মাসকলাই ও সবজির খেতসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে। তবে এখন বড় ধরনের বন্যার কোন আশংকা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দিনভর ভারী বর্ষণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। শহরের বড় বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন সড়কে হাঁটু পানি জমে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মকর্তা বলেছেন, টানা বর্ষণে শহরের প্রধান সড়কসহ কয়েকটি সড়কে পানি নিষ্কাশনের অধিকাংশ ড্রেন ময়লা আবর্জনা জমে যাওয়ার কারণে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।
আরও পড়ুন:জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
শহররক্ষা বাঁধে ভাঙন: পাইকগাছা পৌরসদরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
২ বছর আগে
নিম্নচাপের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণের ৫ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে বাগেরহাট, ঝালকাঠি, ভোলা, সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বাগেরহাটে গত তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা।
সোমবার বিকালে ভৈরব, বলেশ্বর, পানগুছি ও পশুর নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ফুট বেড়েছে এবং সুন্দরবনে পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।
এমতাবস্থায় বন্যপ্রাণীদের নিরাপদ স্থানের সন্ধানে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
সুন্দরবনের সব পুকুর উপচে উঠেছে এবং এ অবস্থা আরও কয়েক দিন চলতে থাকলে বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকার মাছের ঘেরগুলো যে কোনো সময় ভেসে যেতে পারে।
এদিকে সাগর উত্তাল থাকায় জেলেসহ বেশ কিছু মাছ ধরার ট্রলার সুন্দরবনের দুবলারচর, নারিকেলবাড়িয়া ও কটকায় আশ্রয় নিয়েছে।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমরেশ চন্দ্র ঢালী জানান, স্থল নিম্নচাপটি বর্তমানে ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশে ও এর পাশ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। এটি স্থলভাগের ওপর দিয়ে আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পূর্ণিমা ও স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সমূহের নিম্নাঞ্চল এক থেকে দুই ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
নিম্নচাপের প্রভাবে মেঘনা নদীর জোয়ারে ভোলার নিম্নাঞ্চল দুই থেকে তিন ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে করে ভোলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলসহ বেড়িবাঁধের বাইরের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ছে।
এছাড়াও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইলিশা ফেরিঘাটের গ্যাঙওয়ে ডুবে গিয়ে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অতি জোয়ারে ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাইরে প্রায় ১০ হাজার মানুষ সকাল ও বিকাল পানিবন্দী হয়ে পড়ে।
এছাড়াও ভোলা দৌলতখানের মদনপুরা, তজুমদ্দিনের চরজহিরউদ্দিন, চরফ্যাশনের ঢালচর, চর কুকরিমুকরি, মনপুরার কলাতলির চরসহ প্রায় ১০ থেকে ১২টি চরের বাসিন্দারা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
জোয়ারেরর পানিতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিনফুট প্লাবিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: চার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন ঢালচরের চেয়ারম্যান মো. আবদুস ছালাম জানান, তার চরে প্রায় ১২ হাজার লোকের বসবাস। বেড়িবাঁধ না থাকায় এ চরের মানুষ জোয়ারের পানিতে ভাসতে হয়। জোয়ারে তার ইউনিয়নে প্রায় তিন ফুট পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে। তবে ভাটার সময় পানি নেমে যাওয়ায় মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে আছে।
ভোলা আবাহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, রবিবার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোলায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বাধেঁর বাইরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সাতক্ষীরার আশাশুনির খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাধঁ ভেঙে ২০০ বিঘা মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে গেছে। সোমবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুরে নদীর ৬-৭ হাত বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এ প্লাবনের ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে সেটি সংস্কার করা হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম জানান, তার ইউনিয়নের গদাইপুর এলাকার আব্দুল মান্নান মাস্টারের মাছের ঘের সংলগ্ন এলাকায় ৭/২ নং পোল্ডারে সোমবার খোলপেটুয়া নদীর ৬-৭ হাত জরাজীর্ণ বেড়িবাধঁ ভেঙে যায়। এতে প্রায় ২০০ বিঘা মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। পরে দুপুরের মধ্যে তিনি স্থানীয়দের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে তা সংস্কার করতে সক্ষম হয়েছেন।
তবে পরবর্তী জোয়ারে কি হবে তা বলা যাচ্ছেনা বলে জানান তিনি।
শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, রবিবার থেকেই থেমে থেমে হালকা, মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভারি বর্ষণের কারণে শতাধিক ঘের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া গাবুরা, নাপিতখালি, জেলেখালি, তিন নম্বর পোল্ডারসহ বিভিন্ন এলাকায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগের আওতায় মোট ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাধেঁর মধ্যে জরাজীর্ণ ৩৫ টি পয়েন্টে প্রায় ৬২ উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবে, অনেক জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার চলমান।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গপোসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আগামী ২-১ দিন আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকবে তারপর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেও জানান তিনি
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় ৫৯ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আরও পড়ুন: জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ঝালকাঠির বিষখালী ও হলতা নদীর পানি ৩-৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার কাঠালিয়া উপজেলার অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৭টি গ্রাম ও শতাধিক আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর প্লাবিত হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে কাঠালিয়া গ্রামের বিষখালী নদীর তীরবর্তী রাস্তা ও চিংড়াখালী খালের বাঁধ।
গ্রামীণ কাঁচা পাকা ১০টি রাস্তা ডেবে গর্ত হয়ে সংযোগ বিচিছন্ন রয়েছে এ সকল গ্রামের। ফলে হাজার হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগ ও আতংকের মধ্যে দিন কাটছে।
রবিবার থেকে মুশলধারে বৃষ্টি, বৈরি আবহাওয়া, বিষখালী ও হলতা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ২৭টি গ্রাম।
জোয়ারের পানিতে উপজেলার আউড়া, শৌলজালিয়া ও আওরাবুনিয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের শতাধিক ঘর পানিতে ভাসছে। ২/৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে এ সব ঘর।
উপজেলা পরিষদের সবগুলো অফিস ভবন, নির্বাহী অফিসারের বাস ভবন, কাঠালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, কাঠালিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিকল্যাণ কেন্দ্র, ছৈলার চর পর্যটন কেন্দ্র, কাঠালিয়া লঞ্চ ঘাট, সিকদার পাড়া, পশ্চিম আউরা জেলে পাড়া, আমুয়া হাসপাতাল ও আমুয়া বন্দরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থান ৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, দুই/এক দিনের ভিতর পানি না কমলে রোপা আমন ধান পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, তাদের ৪০ শতাংশ মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে। ফলে এ সকল খামারিদে অর্ধকোটি টাকা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান জানান, কাঠালিয়া উপজেলাকে সরকারের পক্ষ থেকে কোস্টাল এরিয়া ঘোষণা করা এবং বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে এলাকার মানুষের দুর্ভোগের সমাধান সম্ভব নয়।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান, বিষখালী ও হলতা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অঞ্চলের সব কয়টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
খুলনার পাইকগাছা উপজেলা সদরের নিচু এলাকা রবিবার জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ধসে প্লাবিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু চত্বর, কাঁচাবাজার এলাকাসহ কয়েকটি নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে নবনির্মিত শহর রক্ষা বাঁধের সামনের অংশটি ধসে পড়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ,পাইকগাছা পৌর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পৌরসভাকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে অপরিকল্পিতভাবে শিবসা নদীর চরভারতী এলাকায় বাঁধটি নির্মাণ করা হয় যা চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল উদ্বোধন করা হয়।
মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই বাঁধের ভেতরে শুরু হয়েছে মাছ চাষ।
চরভারতীর বিস্তীর্ণ এলাকার আশেপাশে বাস্তবায়িত বনায়ন প্রকল্পের বেশ কিছু গাছ মরতে শুরু করেছে, কারণ বেড়িবাঁধ নির্মাণের কারণে পানি নামতে পারছে না।
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম স্থানীয় পৌরসভাকে বাঁধটি অপসারণের নির্দেশ দেন। বাঁধটি অপসারণ না করায় শেষ পর্যন্ত শিবশারে জলোচ্ছ্বাসের অতিরিক্ত চাপ সহ্য করতে পারেনি।
তবে পাইকগাছা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো. রাজু হাওলাদার জানান, তারা শিবশারে এমন কোন বাঁধ নির্মাণ করেননি যা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত নয়।
আরও পড়ুন: শহররক্ষা বাঁধে ভাঙন: পাইকগাছা পৌরসদরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
২ বছর আগে
জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
টানা বৃষ্টি, নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে।
সোমবার দুপুরে ভৈরব, বলেশ্বর, পানগুছি, পশুরসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলার রামপাল ও মোংলায় জোয়ারে আর এক ফুট পানি বৃদ্ধি পেলে প্রায় দুই হাজার চিংড়িঘের ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে ওঠায় কয়েকশ’ ট্রলার নিয়ে জেলেরা বাগেরহাটের সুন্দরবনের দুবলারচর, নারিকেলবাড়িয়া ও কটকাসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমরেশ চন্দ্র ঢালী জানান, স্থল নিম্নচাপটি বর্তমানে ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশে ও এর পাশ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। এটি স্থলভাগের ওপর দিয়ে আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পূর্ণিমা ও স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সমূহের নিম্নাঞ্চল এক থেকে দুই ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:সারাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস
২ বছর আগে