ওয়েবিনার
বাংলাদেশে গণহত্যা প্রত্যাখ্যান ন্যায়বিচার ও প্রতিকারের দাবিকে দুর্বল করে: ওয়েবিনারে বক্তা
কানাডার রাজধানী অটোয়াতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ এবং কনফ্লিক্ট অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট কানাডার (সিআরআরআইসি) সহযোগিতায় শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ ইন কানাডা (বিসিবিএস) ‘ডিনায়াল অ্যান্ড রেকগনিশন: দ্য কেস অব বাংলাদেশ জেনোসাইড’ শিরোনামে একটি আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার আয়োজন করে।
কানাডিয়ান মিউজিয়াম ফর হিউম্যান রাইটস (সিএমএইচআর) কর্তৃক ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতি ও প্রদর্শনের বিষয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে এই সেমিনার আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, কানাডায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং বিসিবিএস’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক ড. খলিলুর রহমান, কানাডার ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজের অধ্যাপক ও পরিচালক অধ্যাপক ড. অ্যাডাম মূলার, কানাডিয়ান মিউজিয়াম ফর হিউম্যান রাইটসের কিউরেশন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ড. জেরেমি ম্যারন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), রোটারি পিস ডে’র প্রতিনিধি গ্যারি সেনফ্ট, বিংহামটনের স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্কের ভিজিটিং স্কলার ড. তাওহীদ রেজা নূর এবং সিআরআরআইসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. হেলাল মহিউদ্দিনসহ কয়েকজন গণহত্যার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন এজেন্ডা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেমিনার
মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্যে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এবং একটি জাতিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে সংগঠিত এই সহিংসতার ব্যাপকতার কারণে এর বৃহত্তর স্বীকৃতির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, একাত্তরের ভয়াবয় অভিজ্ঞতা এখনো আমাদের জাতির সম্মিলিত স্মৃতিতে প্রোথিত এবং এর প্রভাব একটি প্রজন্মকে আঘাত করেছে।
তিনি বঙ্গবন্ধু সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ ইন কানাডা (বিসিবিএস), বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোসাইড স্টাডিজ সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ইতিহাসের এই অন্ধকার অধ্যায়টি তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং গণহত্যার প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিকতা চূড়ান্ত করার জন্য সিএমএইচআরকে অনুরোধ করেন।
কি-নোট বক্তব্যে অধ্যাপক ডক্টর অ্যাডাম মুলার গণহত্যার যারা শিকার হয়েছেন তাদের পরিচিতি গঠনে ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে স্বীকৃতির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে তার প্রত্যাখ্যান যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এর শিকার হয়েছেন তাদের ন্যায়বিচার ও প্রতিকারের দাবিকে দুর্বল করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি অপরাধীদের দায়মুক্তির ধারণাটিকে চ্যালেঞ্জ করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, শাস্তি ও জবাবদিহি ভবিষ্যতের গণহত্যা প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি এবং এক্ষেত্রে দায়মুক্তি ভবিষ্যৎ গণহত্যার ক্ষেত্রে অনুঘটক।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ঢাকায় এসডিজি সেমিনারে বক্তব্য রাখবেন আজ
কানাডিয়ান মিউজিয়াম ফর হিউম্যান রাইটসের প্রতিনিধি জেরেমি ম্যারন গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অস্বীকার এবং বিকৃতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
তিনি তাদের ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ গ্যালারিতে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ গণহত্যা সম্পর্কিত নতুন বিষয়বস্তু তৈরির জন্য জাদুঘরের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়ার তাগিদ পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, অতীতের গণহত্যাকে অস্বীকার করলে তা ভবিষ্যতে তাদের পুনরাবৃত্তিতে ইন্ধন যোগায়।
৭১’ এর গণহত্যার বিশ্বব্যাপী প্রচার ও স্বীকৃতির জন্য তিনি কানাডিয়ান মিউজিয়াম ফর হিউম্যান রাইটসসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রাপ্ত সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি কানাডিয়ান মিউজিয়াম ফর হিউম্যান রাইটসকে অতি দ্রুত ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ গ্যালারি উন্মুক্ত করতে অনুরোধ করেন এবং এই উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সহযোগী সকল সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন বলে উল্লেখ করেন।
ওয়েবিনারে উপস্থিত সকল বক্তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক সংগঠিত ১৯৭১ সালের ভয়াবহতাকে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা বলে চিহ্নিত করেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের নৃশংসতা যাতে আর না ঘটে সেলক্ষ্যে কানাডিয়ান মিউজিয়াম ফর হিউম্যান রাইটস এই ইতিহাস দ্রুত প্রদর্শনের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক নিয়ে কসমস ফাউন্ডেশনের ওয়েবিনার বৃহস্পতিবার
১ বছর আগে
ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে ফিনটেক ও শরী‘আহ বিষয়ক ওয়েবিনার
ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে শনিবার ‘ফিনটেক: শরী‘আহ পরিপ্র্রেক্ষিত’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রবিবার এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এছাড়া ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন, ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. নাজমুল হাসান, ব্যাংকের ডাইরেক্টর ডা. তানভীর আহমেদ, শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ কায়সার আলী ও মো. ওমর ফারুক খান ও ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর তাহের আহমেদ চৌধুরী।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ইসলামী ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন
ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মতিন, ডাইরেক্টর মো. জয়নাল আবেদীন, প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল আলম, সৈয়দ আবু আসাদ, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সালেহ জহুর, প্রফেসর ড. মো. ফসিউল আলম, খুরশীদ-উল-আলম ও মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মুফতী ছাঈদ আহমদ, সদস্য অতিরিক্ত সচিব ড. মুহাম্মদ রুহুল আমিন রব্বানী ও কমিটির সদস্য ড. হাসান মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন, প্রফেসর মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, মুফতি মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহিল বাকী ও মোহাম্মদ হারুনার রশিদ।
ওয়েবিনারে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও আইবিটিআরএর সকল নির্বাহী, সকল জোনপ্রধান, সকল করপোরেট ও এডি শাখার প্রধানরা ও ব্যাংকের শরী‘আহ মুরাকিরা অংশগ্রহণ করেন।
৩ বছর আগে
বাংলাদেশকে এক কোটি ডোজ টিকা দেবে ইইউ
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের প্রধান রাষ্ট্রদূত রেনসে তিরিঙ্ক জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশের জন্য এক কোটি ডোজ করোনা টিকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, টিকা ভাগ করে নেয়ার ব্যাপারে ইইউ যথেষ্ট উদার নয়- এই কথা যুক্তিযুক্ত নয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিরিঙ্ক বলেন, ‘আমরা বলতে পারি যে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী যে কর্মতৎপরতার চলছে তার নেপথ্য চালিকা শক্তি হচ্ছে ইইউ। কীভাবে আমরা উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে পৌঁছাতে চাই, আসুন আমরা সে বিষয়টিকে অবমূল্যায়ন না করি।’
ইইউ দূত অবশ্য বলেছেন, তারা জানেন যে এই এক কোটি ডোজ টিকা যথেষ্ট নয় এবং আশা করা যাচ্ছে তারা আরও টিকা সরবরাহ করতে পারবে।
বৃহস্পতিবার জনহিতকর প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্ক: ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় (ওয়েবিনার) মূল বক্তা হিসেবে ইইউ দূত এসব কথা বলেন।
আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান এবং সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
এছাড়া সভায় আলোচক প্যানেলে ছিলেন সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিজিএমইএ'র সাবেক প্রধান ড. রুবানা হক, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. জিয়াদি সাত্তার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ এবং কসমস ফাউন্ডেশনের ইমেরিটাস উপদেষ্টা সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।
আরও পড়ুন: নতুন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ‘রোহিঙ্গা ইস্যু’ এজেন্ডায় থাকবে: ইইউ
রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা আরও টিকার ডোজের জন্য চাপ দিতে থাকবেন। যদিও বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একার হাতে নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন, তারা টিকা ভাগ করে নেয়ার ক্ষেত্রে ইইউর আরও উদারতা প্রত্যাশা করেন। ইইউ মানবাধিকার নিয়ে অনেক কথা বলে। কিন্তু টিকা ভাগাভাগির বিষয়ে তারা খুব কমই উদার।
কিন্তু ইইউ রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ‘বেশ হতাশাজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই বছরের শেষের দিকে ইইউ এবং এর ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুত কোভ্যাক্সের আওতায় করোনার ২০ কোটিরও বেশি ডোজ টিকা বিভিন্ন দেশে পৌঁছাবে।
অধ্যাপক ইমতিয়াজ টিকা নিয়ে সরকার ও জনগণের মাঝে হতাশা দেখতে পেয়েছেন বলে জানান। এটা যৌক্তিক কারণ ইইউ -এর কাছ থেকে তাদের কথা মতো কিছুই পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি, বিষয়টি পাইপলাইনে আছে, কিন্তু এটি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।'
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের আরও সক্রিয় ভূমিকা আশা করে ইইউ
তিনি বলেন, ‘আমরা অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না, সিনোফার্ম এবং সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন সম্পর্কে শুনেছি, কিন্তু ইইউ থেকে কিছুই পাইনি।’
এই আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক বলেন, করোনা মহামারি এখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইস্যু। কারণ একটি দেশ যত দ্রুত তার জনগণকে টিকা দিতে পারবে, তত দ্রুত ওই দেশ সারা বিশ্বে একটি ভাবমূর্তি তৈরি করতে পারবে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারবে।এখানেই ইইউ’র কমতি রয়েছে।’
অধ্যাপক ইমতিয়াজ আরও বলেন, টিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসময় তিনি অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার শুধুমাত্র একটি উৎসের ওপর বাংলাদেশের নির্ভর করার বিষয়টি স্মরণ করে বলেন, এই একক উৎসের ওপর নির্ভর করার ক্ষেত্রে আমাদের আংশিক দোষ ছিল। যে কারণে পুরো ভারতে টিকা কূটনীতি যখন ভেংগে পড়লো, তখন টিকার এই একমাত্র উৎসও বন্ধ হয়ে গেল।
আরও পড়ুন: কসমস সংলাপ: ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
৩ বছর আগে
নতুন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ‘রোহিঙ্গা ইস্যু’ এজেন্ডায় থাকবে: ইইউ
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি রেনসে তিরিঙ্ক বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং আফগানিস্তান সঙ্কটের মতো নতুন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও রোহিঙ্গা ইস্যুর স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এটি এজেন্ডা থেকে হারিয়ে যাবে না।
বিদায়ী ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমার কাছে ম্যাজিক রেসিপি বা ক্রিস্টাল বল নেই যে কীভাবে এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে এটি (রোহিঙ্গা ইস্যু) এজেন্ডা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে না।’
বর্তমানে আফগানিস্তানের পরিস্থিতিও খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তিরিঙ্ক বলেন, ‘এর মানে এই নয় যে রোহিঙ্গা ইস্যু অদৃশ্য হয়ে যাবে। আমি এটি অনুসরণ করতে থাকব।’
‘বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্ক: ভবিষ্যত সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় (ওয়েবিনার) মূল বক্তা হিসেবে ইইউ দূত এসব কথা বলেন।
কসমস গ্রুপের জনহিতকর প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশন অ্যাম্বাসডর লেকচার সিরিজের অংশ হিসেবে এই ওয়েবিনার আয়োজন করে।
আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
এছাড়াও আলোচক প্যানেলে সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হক, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. জিয়াদি সাত্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ফাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ এবং কসমস ফাউন্ডেশনের ইমেরিটাস উপদেষ্টা সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: কসমস সংলাপ: ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
এনায়েতুল্লাহ খান ক্রমবর্ধমান মার্কিন-চীন দ্বন্দ্ব, কোভিড -১৯ মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আফগানিস্তানে সঙ্কটের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরে বলেন, মনে হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুটি মানুষের মন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুকে অত্যন্ত জটিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত, চীন ও জাপান এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের সহযোগিতা ছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করা যাবে বলে আমি মনে করি না।
খান ইইউ রাষ্ট্রদূতের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, মিয়ানমারের সৃষ্ট এই সমস্যা সমাধানে ইইউ বাংলাদেশকে কী সহায়তা করতে পারে।
জবাবে রাষ্ট্রদূত তিরিঙ্ক বলেন, ‘মিয়ানমারকে অবশ্যই প্রথমে একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে, কিন্তু এটা খুবই দুঃখজনক যে ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে একটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে যা সত্যিই এই অলোচনার ক্ষেত্রে এক বিরাট ধাক্কা।’
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তৎপরতা সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুর্ভাগ্যবশত তারা সেখানকার পরিস্থিতি দেখেছে এবং এটি খুব ইতিবাচক নয়।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ, ভারত, চীন এবং জাপানের সাথে অংশীদার হিসেবে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা যোগাযোগ করছি। এটি আমাদের সব সময় এজেন্ডায় থাকে।’
আন্তর্জাতিক এনজিও এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে ইইউ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকার সহায়তায় উল্লেখযোগ্য তহবিল প্রদান করে আসছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বড় ধরনের সহিংসতার পর দেশটি থেকে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বতর্মানে কক্সবাজার ও নোয়াখালীর ভাসানচরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এছাড়া এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশে ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুকে অর্থনৈতিক স্বার্থ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে
অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, মহামারি এবং রোহিঙ্গা- দুটি বিষয় এখন বাংলাদেশের জন্য বড় উদ্বেগ এবং এই দুটি বিষয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতির সাথে জড়িত।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ বলেন, বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গা ইস্যু এবং টিকা কূটনীতিতে ইইউ সক্রিয় ভূমিকা পালন করুক।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, ইউরোপের মূল্যবোধ-আইনের শাসন, সরকার পদ্ধতি এবং মানবাধিকারের প্রশ্নে মিয়ানমারের সাথে ইইউর সম্পর্কের বিষয়টি আসলে তা মিলানো যায় না।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের আরও সক্রিয় ভূমিকা আশা করে ইইউ
তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারছি না ইইউ পার্লামেন্ট কেন বর্তমান মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্ভট গণতন্ত্রকে সহায়তা করে। ইইউ মিয়ানমারের নির্বাচনেও সহায়তা করেছে। সামরিক কর্মকর্তারা যখন সংসদে বসেন তখন এটা গণতন্ত্র থাকে না। ইইউকে আরও কঠিন হওয়া উচিত ছিল এবং এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেত।
অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গা ইস্যু এবং টিকা কূটনীতিতে ইইউ সক্রিয় ভূমিকা পালন করুক।
তিনি বলেন, কিন্তু যখন মিয়ানমারের কথা আসে ৯০০ এর বেশি মানুষ হত্যার পরও ইইউ এখনও মিয়ানমারের সাথে প্রায় একই ধরনের সম্পর্কের মধ্যে রয়েছে। আপনারা কেবল কিছু সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন যারা কখনও ইইউ দেশগুলোতে যায় না এবং তাদের কোনও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। আপনারা খুব সম্প্রতি মিয়ানমারকে ঋণ পরিশোধেও সহায়তা করেছেন।
৩ বছর আগে
বঙ্গমাতার আদর্শ ও আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের আদর্শ ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত যুগে যুগে নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনের প্রচেষ্টায় বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ ও প্রেরণা প্রদানের সাথে সাথে নিজেও নির্যাতিত মা-বোনদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং তাদের সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেন।’
রবিবার (৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ওয়েবিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, প্রকাশ্য রাজনীতি না করলেও প্রয়োজনে বঙ্গমাতা নিজেই সক্রিয় হয়েছেন আন্দোলন-সংগ্রামে। তিনি প্রায় সকল আন্দোলন-সংগ্রামে বিভিন্নভাবে ভূমিকা রাখেন। স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ও স্বমহীমায় অনন্য বঙ্গমাতা চিরায়ত বাঙালি নারীর পরিচয়কে ছাপিয়ে গিয়েছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বঙ্গমাতা আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়ার কাজে বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করে এসেছেন।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী কিংবা কারাগারের রোজনামচা বইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নানান স্মৃতিচারণায় বঙ্গমাতার যে চারিত্রিক বিচক্ষণতা ও দৃঢতার কথা জানা যায় তা অনুকরণীয়।’
ড. মোমেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন-আদর্শকে বুঝতে হলে তার কর্ম সম্পর্কে জানার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী হয়ে পাশে থাকা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদানও জানা প্রয়োজন। অন্যথায় বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আমাদের জানা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। একই সাথে বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রামে এই মহীয়সী নারীর অবদানের কথাও অজানা রয়ে যাবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গমাতা কীভাবে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে তাকে প্রেরণা দিয়েছেন ও বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে কীভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম এগিয়ে নিয়েছেন সে বিষয়টি প্রাণবন্তভাবে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
এসময় আলোচনা সভার মুখ্য আলোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি ও ভূগোল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের নিকটতম প্রতিবেশী ড. নাসরিন আহমাদ বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নোছা মুজিব সম্পর্কে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন।
আরও পড়ুন: দেশে টিকার কোন সংকট নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সংকট মোকাবিলায় আসিয়ান নেতাদের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহবান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
সিনোফার্মেরর সাথে যৌথ টিকা উৎপাদনে সমঝোতা স্মারক প্রস্তুত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৩ বছর আগে
ইসলামী ব্যাংক সিলেট জোনের শরী‘আহ পরিপালন বিষয়ক ওয়েবিনার
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সিলেট জোনের ‘ব্যাংকিং কার্যক্রমে শরী‘আহ পরিপালন’ শীর্ষক ওয়েবিনার শনিবার (১০ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্যাংকের ডাইরেক্টর ড. মোহাম্মদ সালেহ জহুর এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বক্তব্য দেন। ওয়েবিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য অতিরিক্ত সচিব ড. মুহাম্মদ রুহুল আমিন রব্বানী।
আরও পড়ুন: ইসলামী ব্যাংক চট্টগ্রাম নর্থ জোনের ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন
ব্যাংকের সিলেট জোনপ্রধান শিকদার মো. শিহাবুদ্দীনের সভাপতিত্বে এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শামসুদ্দোহা এবং সিলেট জোনের শাখাপ্রধান ও কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: সাভারে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে আগুন
ইসলামী ব্যাংক ঢাকা নর্থ জোনের শরী‘আহ পরিপালন বিষয়ক ওয়েবিনার
৩ বছর আগে
ইসলামী ব্যাংক ঢাকা নর্থ জোনের শরী‘আহ পরিপালন বিষয়ক ওয়েবিনার
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ঢাকা নর্থ জোনের ‘ব্যাংকিং কার্যক্রমে শরী‘আহ পরিপালন’ শীর্ষক ওয়েবিনার শনিবার (১৯ জুন) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্যাংকের রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মতিন এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন।
আরও পড়ুন: ‘উপায়ে’ কর্মীদের বেতন দেবে ফ্যালকন গ্রুপ
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বক্তব্য দেন। সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য ড. হাসান মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন।
আরও পড়ুন: বড় মাইক্রোবাসেও সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার চায় বারভিডা
ব্যাংকের ঢাকা নর্থ জোনপ্রধান মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শামসুদ্দোহা এবং ঢাকা নর্থ জোনের শাখাপ্রধানরা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিনের স্বত্ত্ব মওকুফের কথা ভাবছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা
৩ বছর আগে
আপনজনদের হাতে ইন্টারনেটে যৌন নিপীড়নের শিকার ৬৯ শতাংশ
ইন্টারনেটে একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি-ভিডিও ছড়ানোর মাধ্যমে যৌন নিপীড়নে ভুক্তভোগীদের ৬৯ দশমিক ৪৮ শতাংশই আপনজনদের হাতে শিকার হন।
এর মধ্যে ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী ও অপরাধীর মধ্যে প্রেম ঘটিত সম্পর্কের তথ্য উঠে এসেছে এবং ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ ঘটনায় অপরাধী ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত।
প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বিষয়ে দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা না হলে এই সামাজিক ব্যাধি মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:ইন্টারনেটে নারীর নিরাপত্তায় পুলিশের নতুন শাখা
রবিবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন।
‘বাংলাদেশে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) চ্যাপ্টারের গবেষণা সেলের সদস্যরা।
দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকাগুলো থেকে সংগৃহীত ২০২০ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫৪টি অপরাধের ঘটনা বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন:অশ্লীল ছবি প্রকাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি, মাগুরায় যুবক গ্রেপ্তার
এ উপলক্ষে রবিবার সকাল ১১টায় আয়োজিত ওয়েবিনারে সংগঠনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ, ঢাবির অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ ইউনিটের সিনিয়র সহকারী কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম।
গবেষণা প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনের রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিরভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার মনিরা নাজমী জাহান।
অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে কিশোর বয়স থেকে সন্তানদের মধ্যে যথাযথ প্যারেন্টিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। পিতামাতা দুজনেই চাকরিজীবী হলে সন্তানদের মনিটরিং করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। তরুণ-তরুণীদের স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ধারাবাহিক যথাযথ সেক্স এডুকেশন খুব প্রয়োজন। একই সাথে ধর্মীয়-সামাজিক শিক্ষা ও সময়ের যথাযথ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত কাজ দিতে হবে তরুণদের।
খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, অপরাধের মাত্রায় বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে ভিন্নতা দেখা যায়। বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে অনলাইন কার্যক্রম বেড়েছে। ফলে এ ধরনের অপরাধ করার জন্য সময় বেশি পাচ্ছে। এজন্য অপরাধ প্রতিরোধে বেশি বেশি সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় কলেজছাত্রীর অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে প্রচারের হুমকি, যুবক গ্রেপ্তার
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, অপরাধের শিকার হওয়ার পর ভুক্তভোগীরা বেশিরভাগই সামাজিক কারণে আপনজনদের সঙ্গে আলোচনা করে না। এটি একদমই উচিত নয়। ঘটনার শুরুতেই কাউকে না জানালে পরবর্তীতে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে যায়। এটি সচেতনতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিজ নিজ জায়গা থেকে অপরাধ প্রতিরোধে আওয়াজ তুলতে হবে, তাহলে অপরাধের প্রবণতা কমবে।
সৈয়দ নাসিরুল্লাহ বলেন, আইন না জানার কারণে অনেকে অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে ব্যাপক সচেতনতামূলক কাজ করা প্রয়োজন। কারিগরী জ্ঞান যাদের রয়েছে তাদের অপরাধ করার প্রবণতা বেশি। সাধারণত মধ্যবয়সীরা এর মধ্যে পড়ে। প্রতি থানায় সাইবার ইউনিট করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এটি হলে অপরাধ আরও নিয়ন্ত্রণ হবে।
তানজিম আল ইসলাম বলেন, বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ, আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য সাইবার অপরাধ বিষয়ক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি খুব প্রয়োজন। এছাড়া সাইবার অপরাধের বিচার কার্যক্রম কেন দীর্ঘায়িত হচ্ছে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই নিয়ে গবেষণা হতে পারে।
গবেষণায় গত এক বছরে পুরো দেশব্যাপী এ ধরনের অপরাধপ্রবণতা, অপরাধীর আদ্যোপান্ত, ভুক্তভোগীর অবস্থান ও হয়রানির মাত্রা এবং সামগ্রিক অর্থে সাইবার স্পেসে ব্যক্তির নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে ৯২ দশমিক ২০ শতাংশ ভুক্তভোগীই নারী। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়স্ক ভুক্তভোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা প্রায় ৫৬.৪৯ শতাংশ এবং ৩২.৪৭ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের নিচে)। জেন্ডারভিত্তিক ভুক্তভোগীর বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে ১৮ থেকে ৩০ বছর এবং ১৮ বছরের নিচে পুরুষের তুলনায় নারী ভুক্তভোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক ভুক্তভোগীর ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা বেশি।
অঞ্চলভেদে ভুক্তভোগীর সংখ্যা:
সবচেয়ে বেশি যৌন নিপীড়নের সংবাদ পাওয়া গেছে ঢাকা বিভাগে, যার পরিমাণ ৩৩.১২ শতাংশ। এর পরেই ১৬.৮৮ শতাংশ নিয়েই অবস্থান করছে চট্টগ্রাম। এছাড়া জেলা অনুযায়ী যৌন নিপীড়নের অধিকাংশ ঘটনা বিভাগীয় শহরে ঘটছে।
যৌন নিপীড়নের ধরন ও পরিণতি:
ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও প্রচারের ভয় দেখিয়ে যৌন নিপীড়নমূলক অপরাধ প্রবণতার মধ্যে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, আত্মহত্যা, আত্মহত্যার চেষ্টা, যৌনপণ, হত্যা-চেষ্টার মতো ঘটনাগুলোকে পরিসংখ্যানমূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, হয়রানিমূলক যৌন নিপীড়নের সংখ্যা শতকরা ৬২ দশমিক ৯৯ শতাংশ, যা সর্বাপেক্ষা বেশি। অন্যদিকে ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীর সংখ্যা শতকরা ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ, যৌনপণ ১৩.৬৪ শতাংশ, আত্মহত্যা ৩.২৫ শতাংশ, আত্মহত্যার চেষ্টা ১.৯৫ শতাংশ, খুনের চেষ্টা ০.৬৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ১.৯৫ শতাংশ ।
সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যম:
সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড (ছবি ও ভিডিও) ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে এবং ভুক্তভোগীকে নিষ্ক্রিয় কিংবা হয়রানিমূলক পরিস্থিতিতে ফেলতে নিপীড়নকারী গোপনে, চাপ প্রয়োগ করে কিংবা প্রতারণা-প্রলোভনের আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর বিকৃত কন্টেন্ট সংগ্রহ করতে যে মাধ্যমগুলো হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করে তার বিশ্লেষণমূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরলে দেখা যায় যে ভিডিও এবং স্থির চিত্র আকারে ধারনকৃত কন্টেন্টের সংখ্যা যথাক্রমে ৫১.৯১ শতাংশ এবং ৩৫.৫২ শতাংশ, যা অন্যান্য মাধ্যমের বিবেচনায় তুলনামূলক সর্বাধিক।
যৌন নিপীড়নমূলক কন্টেন্টগুলোর মধ্যে ৩৫.৭১ শতাংশ প্রকাশ্যে সাইবার স্পেসে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে বিভিন্ন প্রকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । ৪০.৯১ শতাংশক্ষেত্রে যৌন নিপীড়নকারী কন্টেন্ট ব্যক্তিগতভাবে ভুক্তভোগীকে দেখিয়ে তার উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করেছে। এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে সর্বাধিক সংখ্যক কন্টেন্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর জন্য নিপীড়নকারী আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের কূট কৌশল ও প্রতারণার।
ভুক্তভোগী এবং অপরাধীর মধ্যে সম্পর্ক:
ভুক্তভোগী এবং অপরাধীর মধ্যেকার বিদ্যমান সম্পর্ক বিবেচনায় নিলে দেখা যাচ্ছে যে, ৩৫.৭১ শতাংশ ক্ষেত্রে অপরাধী ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত। এছাড়া প্রায় ৩৩.৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী এবং অপরাধীর মধ্যে প্রেম ঘটিত সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। অন্যদিকে অপরিচিত নিপীড়নকারীর দ্বারা আক্রান্ত ভুক্তভোগীর সংখ্যা শতকরা ১৪.২৯ শতাংশ।
যৌন নিপীড়নের কারণ:
যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্য হিসেবে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে অন্যতম মুখ্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে, যা ৬৩.০৭ শতাংশ ঘটনায় পাওয়া গেছে। পাশাপাশি কারণ হিসেবে প্রতিশোধমূলক প্রবৃত্তি ৬.২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে, অর্থ-সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার প্রবণতা ২৩.৮৬ শতাংশ ক্ষেত্রে।
এছাড়াও চাকরির বদলি সংক্রান্ত তদবির, খামখেয়ালিপনা এবং অন্যান্য বিবিধ কারণগুলো প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে যথাক্রমে ০.৫৭, ০.৫৭ এবং ৫.৬৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ।
প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ:
প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে উন্নত দেশগুলোর আদলে নারী ও শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ণ ও সচেতনতা তৈরিসহ ১১টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে। অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে গণমাধ্যমে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচার, প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, যথাযথ প্রক্রিয়ায় সেক্স-এডুকেশন বৃদ্ধি, ধর্মীয় অনুশাসন ও ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিত করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে প্রশিক্ষিত জনবল বৃদ্ধি, ভুক্তভোগী ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে যথাযথ সমন্বয় নিশ্চিত করা, বেকারত্ব দূরীকরণ ও অপরাধপ্রবণ বয়সসীমা নির্ধারণের মাধ্যমে তরুণদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা, পর্ণোগ্রাফিক আগ্রাসন ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসন বন্ধে দেশীয় সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ ও পৃষ্ঠপোষকতা, সন্তানদের সাইবার এক্টিভিটির ওপর পিতামাতার নজরদারি।
৩ বছর আগে
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ পরিপালন বিষয়ক ওয়েবিনার
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের উদ্যোগে শরিয়াহ পরিপালন বিষয়ক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৪ বছর আগে
বাংলাদেশে করোনার প্রভাব নিয়ে কসমস ফাউন্ডেশনের ওয়েবিনার
কসমস সংলাপের অংশ হিসেবে শুক্রবার দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে শুরু হয়েছে ‘ইমপেক্ট অব কোভিড-১৯ অন বাংলাদেশ: প্রগনোসিস ফর রিকভারি’ শীর্ষক ওয়েবিনার।
৪ বছর আগে