মৃত্যুদণ্ডাদেশ
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্তের আগে বন্দীকে কনডেম সেলে না রাখার রায় স্থগিত
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে সাজাপ্রাপ্ত বন্দীকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ২৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত।
বুধবার (১৫ মে) হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
আরও পড়ুন: কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে ১০ মাস বয়সী শিশু: প্রতিবেদন চেয়েছে হাইকোর্ট
আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নাসিম ইসলাম রাজু।
শিশির মনির বলেন, এটা একটা ঐতিহাসিক রায়। রায়ে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার পূর্বে তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি বলা যাবে না এবং তাকে কারাগারের নির্জন ডেথ সেলে বন্দী রাখা যাবে না। মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত বলতে এখানে যত বিচারিক ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া আছে সেগুলো শেষ হওয়াকে বোঝানো হয়েছে। বিচার বিভাগীয় পদক্ষেপে যেমন- হাইকোর্ট বিভাগ, আপিল বিভাগ এবং রিভিউয়ের শুনানিকে বোঝানো হয়েছে। প্রশাসনিক পদক্ষেপ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগকে বোঝানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন খারিজের পরই একজন মানুষের মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হয়েছে বলা যাবে এবং শুধু তখনই একজন বন্দীকে নির্জন কক্ষে বন্দী রাখা যাবে।
শিশির মনির আরও বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলার শুনানিতে বলেছেন, নতুন জেল কোড তৈরি করতে যাচ্ছে, নতুন প্রিজন অ্যাক্ট হচ্ছে। হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন, এই রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ দেওয়া হচ্ছে সেগুলো যেন নতুন আইনে প্রতিফলিত হয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে শিশির মনির বলেন, আমাদের দেশে হাইকোর্ট বিভাগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জামিনের দরখাস্তের শুনানি হয় না। অন্যান্য আসামিদের জামিন শুনানি হয়। তারা জামিন পেয়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু মুত্যদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত একবার হলেই তাদের জামিনের আর শুনানি হয়না। এক্ষেত্রে হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত যাদের আপিল বিচারাধীন থাকে, তাদের জামিন আবেদনও যেন অন্যান্য আসামিদের মতো শুনানি করা হয় এবং জামিনও যেন মঞ্জুর করা হয়।
এ আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, হাইকোর্ট যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছেন, সেগুলো চূড়ান্ত হবে আপিল বিভাগের রায়ের পর। সেজন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। হাইকোর্টের রায়ের কপি পাওয়ার পর আপিল বিভাগে একটি নিয়মিত লিভ টু আপিল ফাইল করতে হবে। সেটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সেজন্য হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা আপাতত স্থগিত রাখা প্রয়োজন। সেজন্য আবেদন করেছিলাম। চেম্বার বিচারপতি শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্তের আগে কনডেম সেলে নয়: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল
এর আগে সোমবার (১৩ মে) হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি রাখা অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করেন।
জনস্বার্থে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে এমন রায় দেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের বেঞ্চ।
রায়ে আদালত বলেছেন, কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগ এবং রিভিউয়ের পরও বহাল থাকলে এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদনও নাকচ হয়ে গেলে তখনই তার ‘মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত’ হয়েছে বলে ধরতে হবে।
একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ‘চূড়ান্ত হওয়ার আগেই’ যাদের কনডেম সেল রাখা হয়েছে, তাদের পর্যায়ক্রমে সাধারণ সেলে স্থানান্তর করতে জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এ কাজের জন্য দুই বছর সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তবে বিশেষ ক্ষেত্রে, কোনো দণ্ডিত আসামি যদি তেমন কোনো সংক্রামক ব্যধিতে আক্রান্ত হন যে তাকে অন্যদের সঙ্গে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ, তখন তাকে কনডেম সেলে রাখা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন আদালত।
তবে এক্ষেত্রেও আলাদাভাবে দণ্ডিতের বক্তব্য শোনার শর্ত দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট জেল কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, মৃত্যু সেলে যারা বন্দী থাকেন, তাদের ব্যাপারে কোন সাংবাদিক বা কোন গবেষক বা অন্য কেউ তথ্য অধিকার আইনে দরখাস্ত দিয়ে জানতে চাইলে, যেন বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়।
এছাড়াও সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, কতজনের মৃত্যুদণ্ড কমছে, কতজনের বহাল থাকছে- এসব ব্যাপারে কোন ব্যক্তি তথ্য অধিকার আইনে বা সাংবাদিকরা তথ্য চাইলে তা যেন দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের এসব তথ্য পরিসংখ্যানসহ সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে এবং বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশও করতে বলা হয়েছে।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এই রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন। আবেদনের ওপর বুধবার শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করেন।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে রাখা অবৈধ ও বেআইনি: হাইকোর্ট
৬ মাস আগে
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্তের আগে কনডেম সেলে নয়: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে ফাঁসির আসামিদের কনডেম সেলে রাখা যাবে না বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
মঙ্গলবার (১৪ মে) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
তিনি বলেন, রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে আমরা আপিল করব। এখন রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এটি বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হবে।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কারাগারের কনডেম সেলে রাখা অবৈধ ও বেআইনি বলে এর আগে সোমবার রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে রাখা অবৈধ ও বেআইনি: হাইকোর্ট
জনস্বার্থে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে এমন রায় দেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের বেঞ্চ।
রায়ে আদালত বলেছেন, কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগ এবং রিভিউয়ের পরও বহাল থাকলে এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদনও নাকচ হয়ে গেলে তখনই তার ‘মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত’ হয়েছে বলে ধরতে হবে।
একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ‘চূড়ান্ত হওয়ার আগেই’ যাদের কনডেম সেল রাখা হয়েছে, তাদের পর্যায়ক্রমে সাধারণ সেলে স্থানান্তর করতে জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এ কাজের জন্য দুই বছর সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে, কোনো দণ্ডিত আসামি যদি তেমন কোনো সংক্রামক ব্যধিতে আক্রান্ত হন যে তাকে অন্যদের সঙ্গে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ, তখন তাকে কনডেম সেলে রাখা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন আদালত। তবে এক্ষেত্রেও আলাদাভাবে দণ্ডিতের বক্তব্য শোনার শর্ত দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন- আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন- অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নাসিম ইসলাম রাজু।
জানা যায়, কারাবিধির ৯৮০ ধারা অনুযায়ী, বিচারিক আদালতে কারো মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হওয়ার পর পরই আসামিকে কনডেমড সেলে নেওয়া হয়। এরপর তার বিচার চূড়ান্ত হতে লেগে যাচ্ছে এক থেকে দেড় যুগ। চূড়ান্ত বিচারে অনেকে খালাস পাচ্ছেন। অনেকের সাজা কমে যাচ্ছে। কিন্তু প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ওই আসামিকে কারাগারের একটি ছোট নির্জন কক্ষে বাস করতে হচ্ছে।
এসব বিষয় লক্ষ্য করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে দণ্ডিত বা দণ্ডিতদের কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা কারাগারের কনডেম সেলের তিন কয়েদি।
আরও পড়ুন: শ্রম আইন সংশোধনে ৪১টি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে: আইনমন্ত্রী
তারা হলেন- সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির ও খাগড়াছড়ির শাহ আলম। ওই রিট শুনানি করে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে দণ্ডিতদের কনডেম সেলে রাখা কেন আইনত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা সংক্রান্ত কারাবিধির ৯৮০ বিধিটি কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেইসঙ্গে কনডেম সেলে রাখা বন্দিদের কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, সে বিষয়ে প্রতিবেদন চান আদালত।
রিটে বলা হয়, বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক সাজা কার্যকর করার আইনগত কোনো বিধান নেই। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুসারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) নিতে হয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪১০ ধারা অনুসারে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি হাইকোর্টে আপিল করতে পারেন। হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করার সুযোগ আছে দণ্ডিত ব্যক্তির। সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করার সুযোগ আছে। এ ছাড়া সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। ক্ষমার এ আবেদন রাষ্ট্রপতি যদি নামঞ্জুর করেন, তাহলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে সরকার আইনগত বৈধতা পায়। অথচ বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশের পরপরই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কনডেমড সেলে বন্দি রাখা হচ্ছে। হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আগে দণ্ডিত ব্যক্তিকে কনডেমড সেলে রাখা তার মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। রুল শুনানিতে আদালত এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও এস এম শাহজাহান বিশেষজ্ঞ মত নেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন শুনানি করেন। আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন মোহাম্মদ শিশির মনির। রুলের ওপর শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়। সে অনুযায়ী হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: জবির সাবেক শিক্ষার্থীর ৫ বছরের কারাদণ্ড
৬ মাস আগে
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেমড সেলে রাখার বিষয়ে রায় যেকোনো দিন
বিচারিক ও প্রশাসনিক ফোরামে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে দণ্ডিত ব্যক্তিকে কনডেমড সেলে রাখা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের উপর চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়েছে।
শুনানি গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও মো. বজলুর রহমান মামলাটি রায়ের জন্য সিএভি (আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ) রেখেছেন।
রিটের পক্ষে শুনানিকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির জানিয়েছেন, রুলের উপর চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়েছে। আদালত মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যেকোনো দিন আদালত রায় ঘোষণা করবেন।
আরও পড়ুন: ভোটার উপস্থিতি কতটা জরুরি?
এর আগে গত বছরের ৬ এপ্রিল এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বিচারিক ও প্রশাসনিক ফোরামে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে দণ্ডিত ব্যক্তিকে কনডেমড সেলে রাখা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, আইজি প্রিজন্স, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপারকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
বিচারিক ও প্রশাসনিক ফোরামের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে দণ্ডিত ব্যক্তিকে কনডেমড সেলে রাখার বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হয়ে কনডেমড সেলে থাকা তিন আসামি ২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বরে ওই রিট করেন।
তিন রিট আবেদনকারী হলেন- চট্টগ্রাম কারাগারের কনডেম সেলে থাকা সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির ও কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলম।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি সে সময় সাংবাদিকদের বলেন, জেল কোডের ৯৮০ বিধি অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের পৃথকভাবে কনডেমড সেলে রাখার কথা বলা আছে। জেল কোডের ৯৮০ বিধি চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। ৯৮০ বিধি কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
রিটে বলা হয়, বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক সাজা কার্যকর করার আইনগত কোনো বিধান নেই। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুসারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) নিতে হয়।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪১০ ধারা অনুসারে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি হাইকোর্টে আপিল করতে পারেন।
হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করার সুযোগ আছে দণ্ডিত ব্যক্তির। সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করার সুযোগ আছে।
এ ছাড়া সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। ক্ষমার এ আবেদন রাষ্ট্রপতি যদি নামঞ্জুর করেন, তাহলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আইনগত বৈধতা পায়।
অথচ বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশের পরপরই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কনডেমড সেলে বন্দী রাখা হচ্ছে। হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আগে দণ্ডিত ব্যক্তিকে কনডেমড সেলে রাখা তার মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
আরও পড়ুন: জনসেবক হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে পুলিশ এগিয়ে যাচ্ছে: আইজিপি
১১ মাস আগে
জয়পুরহাটে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে তার স্বামী- জুয়েল হোসেনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক- আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন।
মৃত লাইলী বেগম মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েল হোসেনের স্ত্রী এবং ওই উপজেলার রসুলপুর দাহাড়পুকুর এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ২ উপজাতি তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: একজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জুয়েলের বাবা- জলিল হোসেন ও মা লিলি বেগমকে এ মামলা থেকে খালাস দিয়েছে আদালত।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েল সংসারকালীন লাইলী বেগমকে যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই নির্যাতন করতো। সে সময় লাইলী বেগম ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০০৭ সালের ২৩ জুলাই রাতে জুয়েল তার স্ত্রীকে মারধর করে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরের দিন বাদী হয়ে নিহতের বোন রাবেয়া খাতুন তিনজনের নামে ক্ষেতলাল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী ও গর্ভে থাকা সাত মাসের সন্তানকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত মঙ্গলবার (আজ) এ রায় দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামির বাবা ও মাকে মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেমড সেলে রাখা কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
১ বছর আগে
সিনহা হত্যা: সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টে যাবে প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
আগামী সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদন্ডাদেশ হাইকোর্টে যাবে। কক্সবাজারের সিনিয়র আইনজীবী ও সিনহা হত্যা মামলার বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, কোন ব্যক্তি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত হলে আদালতের নিয়ম অনুযায়ী মামলার রায় হওয়ার সাত দিনের মধ্যে সমস্ত নথি, কেস ডায়েরি, সাক্ষীপ্রমাণাধীসহ কাগজপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এ সময় ‘লালসালু’ দিয়ে বিশেষ ধরনের প্যাকেট করে এসব কাগজ পত্র হাইকোর্টে পাঠাতে হয়। একারণে নিয়মানুযায়ী সিনহা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দন্ডিত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মামলার রায়ের কপিও সেভাবে হাইকোর্টে যেতে পারে বলে।
এডভোকেট জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির আদেশ হাইকোর্টকে অবহিত করতে হয়। হাইকোর্টকে অবহিত না করা পর্যন্ত কার্যকর হবে না। এছাড়াও আসামি পক্ষ তো আপিল করতে পারে। মামলায় সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার এখতিয়ার সবার রয়েছে।’
৩১ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে কনডেম সেলে রাখা হচ্ছে। খাবার থেকে শুরু করে সকল সুযোগ-সুবিধা জেল কোড অনুযায়ী হবে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার নেছার আলম।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: সাবেক ওসি প্রদীপ, লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বিকালে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক (বরখাস্ত) লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় আদালত। এছাড়াও ছয় আসামি এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এর মধ্যে চারজন কনস্টেবল সাগর দেব, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা দেয়া হয়। অনাদায়ে ছয় মাসের জেল দেয়া হয়। এছাড়াও এপিবিএন’র এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আব্দুল্লাহ, পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেন আদালত। সন্ধ্যায় পুলিশ ভ্যানে করে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয় তাদের।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্যচিত্র নির্মাণের শুটিং শেষে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে রিসোর্টে ফেরার পথে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানা। ঘটনার পাঁচদিন পর ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে হত্যা মামলা করেন নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আসামি করা হয় প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ পুলিশের ৯ সদস্যকে। টানা চার মাস তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে র্যাব। দেড় বছরে এ মামলার রায় দেয়া হলো।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলার রায় পড়া শুরু
২ বছর আগে
কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
কুষ্টিয়া, ২৪ সেপ্টেম্বর (ইউএনবি)- কুষ্টিয়ায় আব্দুল্লাহ হোসেন হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
৫ বছর আগে