নরওয়ে
নরওয়েতে আন্তর্জাতিক সংগীত বিষয়ক সম্মেলনে যাচ্ছেন চিরকুট ব্যান্ডের সুমি
নরওয়ের ক্রিস্টিয়ানস্যান্ড শহরের ইউনিভার্সিটি অভ অ্যাডগার- এর আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সংগীত বিষয়ক সম্মেলনে যাচ্ছেন চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমি।
গানে গানে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে নিয়মিতই বিশ্বমঞ্চে উপস্থিত হচ্ছেন তিনি। তবে এবারের যাওয়াটা কিছুটা অন্যরকম।
আরও পড়ুন: আইয়ুব বাচ্চুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
এবার নরওয়ের একটি ইন্টারন্যাশনাল মিউজিক কনফারেন্স- এ আমন্ত্রিত হয়েছেন দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড চিরকুট-এর গীতিকার, সুরকার, সংগীতশিল্পী, কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট ও উদ্যোক্তা শারমিন সুলতানা সুমি।
জানা যায়, তিনি ছাড়াও এ কনফারেন্স এ যোগ দিতে উপস্থিত হবেন বিশ্বের নানা প্রান্তের মিউজিক এক্সপার্টরা।
দশ দিনব্যাপী এ আয়োজনে তিনটি সেশনে তাঁর প্রেজেন্টেশন দেবেন, বক্তব্য রাখবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন সুমি।
সংগীত সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ের পাশাপাশি একজন নারী হিসেবে তার সংগীতযাত্রার অভিজ্ঞতা নিয়েও কথা বলবেন তিনি।
সুমি গণমাধ্যমে বলেন, ‘বাংলা গানের সাথে নিজেদের ব্যান্ড নিয়ে গত ২১ বছর ধরে দেশ; ও গত ১১ বছর ধরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিয়মিত কাজ করার পর পৃথিবীর মানুষ যে এখন বাংলাদেশের গানের বিস্তৃত কথা আমাদের কাছে এত ডিটেইলে শুনতে চায় বা আমার জানানোর সৌভাগ্য হচ্ছে এটি এক ধরনের বড় সুযোগ এবং পরিবর্তন বলে আমার মনে হয়। পৃথিবী আমাদের ভাবনার চেয়ে অনেক বড় এবং সেখানে আমাদের সকলের জায়গা থেকে বিস্তৃত কাজের সুযোগ রয়েছে।’
সুমি আরও বলেন, ‘সেই সুযোগের সদ্ব্যবহারে নিজের দেশের হয়ে বিশ্বমঞ্চে কথা বলাটা শান্তির, সম্মানের ও গর্বের।’
সব ঠিক থাকলে ৩০ অক্টেবর থেকে শুরু হওয়া এ যাত্রায় ডেনমার্ক হয়ে নরওয়ের কনফারেন্স শেষে জলবায়ু ইস্যুতে ফিনল্যান্ডে কয়েকটি মিটিং এ অংশগ্রহণ করবেন সুমি।
১৬ নভেম্বর দেশে ফিরে যোগ দেবেন নতুন কনসার্টে। যাওয়ার আগে ২৫ অক্টোবর রাজশাহীতে এবং ২৬ অক্টোবর আর্মি স্টেডিয়ামে চিরকুট নিয়ে দুটি কনসার্ট করে যাবেন তিনি।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় সপ্তাহব্যাপী বিনামূল্যে বঙ্গন্ধুর বায়োপিকের প্রদর্শনী
শাহরুখের ‘ডানকি’ বনাম প্রভাসের ‘সালার’: মুক্তি পাচ্ছে বড়দিনে
১ বছর আগে
নরওয়ের একদিনের রাষ্ট্রদূত হলেন বৈশাখী
মেয়েদের অধিকার ও সমান সুযোগের পক্ষে কথা বলতে একদিনের জন্য বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা পালন করেছেন ঢাকার তরুণ কর্মী বৈশাখী।
মঙ্গলবার বাংলাদেশে নরওয়ের দূতাবাসে তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।
এটি ছিল বিশ্বব্যাপী ‘মেয়েদের নেতৃত্ব গ্রহন’ ক্যাম্পেইনের অংশ, যেটি প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতীকী কার্যক্রম।
মেয়েদের সক্রিয়তা এবং নেতৃত্বে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রতি বছর প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল তার 'গার্লস গেট ইকুয়াল' ক্যাম্পেইনের অধীনে ১১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক কন্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এই প্রচারণা চালায়।
এই বছর আন্তর্জাতিক দিবস পালনের ১০ বছর পূর্তি হয়েছে এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল সারা দেশে এই ধরনের বেশ কিছু দায়িত্ব গ্রহনে সমন্বয় করেছে।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের শিকার হলে নারীর মর্যাদা কমে না: দীপু মনি
২ বছর আগে
যে ১০টি দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অল্প খরচে পড়তে পারবেন
উন্নত ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ভাবনার বিষয় থাকে স্বল্প খরচে দেশের বাইরে পড়াশোনা। বিশ্ব মানের শিক্ষাব্যবস্থা ও উন্নত জীবন ব্যবস্থার সাথে বাজেটের দিকটা মিলে গেলেই উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে দেশটিতে পাড়ি জমানো যায়। ইউরোপ, মধ্য-এশিয়া এমনকি অ্যামেরিকার বিভিন্ন দেশগুলো এমন শিক্ষার্থীদের আশাকে সাধুবাদ জানিয়েই তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কম খরচে অধ্যয়নের সুযোগ দিয়ে থাকে। বেশ ভালো শতাংশ ছাড়ের পরও আর্থিক সংকুলান না হলে আছে স্কলারশিপের ব্যবস্থা। এতে টিউশন ফি সহ থাকা-খাওয়ার খরচ অনেকটাই পুষিয়ে নেয়া যায়। আজকের নিবন্ধে এমন কিছু দেশের কথা বলা হয়েছে, যেগুলোর টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার খরচের সাথে মানিয়ে নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী সেখানে পড়াশোনা করছে। স্বল্প খরচে দেশের বাইরে পড়ার জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সেরা ১০টি গন্তব্য।
যে ১০টি দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা কম খরচে উচ্চশিক্ষা নিতে পারেন
জার্মানি
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য এখন শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ জার্মানি। এখানকার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত। এগুলোর ব্যাচেলর কোর্স এবং বেশিরভাগ মাস্টার্স কোর্সের জন্য সাধারণত কোন ফি নেই। কিছু মাস্টার্স প্রোগ্রামে টিউশন ফি থাকলেও তা অন্যান্য দেশের তুলনায় তেমন বেশি নয়।
পড়ুন: জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খরচ বলতে আছে সেমিস্টার কন্ট্রিবিউশন ফি, যার সাথে টিউশন ফি-এর কোন সম্পর্ক নেই। এটি শিক্ষার্থীদের কল্যাণেই পাবলিক পরিবহণ, ক্রীড়া, অনুষদ/বিভাগীয় ছাত্র সংগঠন এবং প্রশাসনিক ফি ব্যায়-ভার বহন করে। এই ফি প্রতিষ্ঠান ভেদে পরিবর্তিত হয় এবং সাধারণত ১০০ থেকে ৩৫০ ইউরোর (প্রায় ৯,৬৫০ থেকে ৩৩,৭৩০ টাকা) মধ্যে থাকে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার খরচ সাধারণত প্রতি মাসে ৭২৫ ইউরোর (প্রায় ৬৯,৯০০টাকা) মত হয়ে থাকে, যেখানে বাসস্থান, খাবার, পোশাক এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রম; সবই অন্তর্ভুক্ত।
নরওয়ে
এখানেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সমস্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি মুক্ত রেখেছে। প্রতি সেমিস্টারে শুধুমাত্র একটি শিক্ষার্থী ইউনিয়ন ফি দিতে হবে, যা ৩০ থেকে ৬০ ইউরো (প্রায় ২,৮৯০ থেকে ৫,৭৮০ টাকা)-এর মধ্যে। এর মাধ্যমে পাবলিক পরিবহণ, জাদুঘর এবং সাংস্কৃতিক ইভেন্ট, স্বাস্থ্যসেবাতে বিশেষ ছাড় এবং ক্রীড়া সুবিধাগুলো সহ বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে।
পড়ুন: নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
নরওয়েতে জীবনযাত্রার জন্য প্রতি মাসে গড়ে ৮০০ থেকে ১,৪০০ ইউরো (প্রায় ৭৭,০০০ থেকে ১,৩৪,৯০০ টাকা) এর মত খরচের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বড় শহরগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই খরচ অনেক বেশি কিন্তু ছোট শহরগুলোতে গড়পড়তায় ৮০০ থেকে ১,০০০ ইউরোর (প্রায় ৭৭,০০০ থেকে ৯৬,৫০০ টাকা) মধ্যেই থাকা-খাওয়া, চলাফেরার যাবতীয় খরচ হয়ে যায়।
ফ্রান্স
বিশ্ব সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্গ বলা যেতে পারে ফ্রান্সকে। শুধু পড়াশোনার জন্যই নয়; বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং সমগ্র ইউরোপীয় বাজারে তাদের রয়েছে অভিজাত পদচারণা। স্নাতক করার পর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এখানে বিভিন্ন ব্যবসায়িক খাতে আকর্ষণীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়ার আশা করতে পারে। সুস্বাদু খাবার থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক, ফ্যাশন, শিল্প-সাহিত্য এবং জীবনধারা; জীবনের প্রায় সবকিছুর একটি আনন্দদায়ক মিশ্রণের নাম ফ্রান্স।
এখানে লাইসেন্স (স্নাতক) স্তরে প্রতি বছর খরচ হতে পারে ২,৭৭০ ইউরো (প্রায় ২,৬৭,০০০ টাকা)। মাস্টার লেভেলে খরচ আছে বছর প্রতি ৩,৭৭০ ইউরো যা প্রায় ৩,৬৩,৪০০ টাকার সমান।
পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
জীবনযাত্রার জন্য প্যারিস, নিস, লিয়ন, ন্যান্টেস, বোর্দো বা টুলুজের মত অভিজাত শহরগুলো বাদ দিয়ে বাকি অন্যান্য শহরগুলোকে বাছাই করলে, ৬৫০ ইউরো (প্রায় ৬২,৬৫০ টাকা)-এর নিচেই দিন যাপন করা যাবে।
অস্ট্রিয়া
ইউরোপের প্রাণকেন্দ্র অস্ট্রিয়া যে কোন উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের জন্য যথেষ্ট হতে পারে। ইউ(ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন)/ইইএ(ইউরোপিয়ান ইকোনোমিক এরিয়া) দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টিউশন ফি একদম ফ্রি।
কিন্তু নন-ইউ/ইইএ দেশগুলোর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতি সেমিস্টারে ২০ ইউরো (প্রায় ১,৯২৭ টাকা) ছাড়াও টিউশন ফি বাবদ গড়ে ৭২৬.৭২ ইউরো (প্রায় ৭০,০০০ টাকা) ধার্য করে। তবে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অস্ট্রিয়ার অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় টিউশন ফি মুক্ত শিক্ষা প্রদান করছে। এগুলোর মধ্যে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়, ভিয়েনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইনসব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়, জোহানেস কেপলার ইউনিভার্সিটি লিঞ্জ, গ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং লিওবেন বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম।
পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
অপরূপ দেশটিতে অতি প্রত্যাশিত জীবনযাত্রার খরচ ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশ কম। প্রতি মাসে ৯০০ থেকে ১,৩০০ ইউরো (প্রায় ৮৬,৭০০ থেকে ১,২৫,২৩০ টাকা)-এর বাজেট ভিয়েনা এবং সালজবার্গে আবাসন, খাবার, সামাজিক কার্যকলাপ এবং পাবলিক পরিবহণ সহ সমস্ত খরচ কভার করতে পারে। অন্যান্য জনপ্রিয় স্টুডেন্ট লোকেশনের মধ্যে লিনজ বা গ্রাজ ৯০০ থেকে ১,০০০ ইউরোর (প্রায় ৮৬,৭০০ থেকে ৯৬,৫০০ টাকা) মধ্যে মাসিক জীবনযাত্রার খরচ হয়ে যায়।
তাইওয়ান
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযুক্তিগত, ঐতিহাসিক, রন্ধনসম্পর্কীয়, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সহ যাবতীয় অভিজ্ঞতার সুযোগে ভরপুর এশিয়ার এই দেশটি। এখানে ইংরেজি-ভাষায় অধ্যায়নের জন্য প্রচুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছে। বহুসাংস্কৃতিক এবং সমৃদ্ধ পুরনো ইতিহাস পরিদর্শনে তাইওয়ান বিদেশী শিক্ষার্থীদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায়। ফলে খুব সহজেই সাবলীল হয়ে ওঠা যায় অপরিচিত এই দেশেও। বেশ কয়েক বছর ধরেই তাইওয়ানের উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং দারুণ স্বীকৃতিও পেয়েছে।
দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যায়ন খরচ প্রতি বছর ৬৭৫ থেকে ১২,৭০০ ইউরো (প্রায় ৬৫,০০০ টাকা থেকে ১২,২৪,০০০ টাকা)। এখানে নূন্যতম জীবনধারণের জন্য প্রতি মাসে প্রায় ৬৮০ থেকে ৮৮০ ইউরো (প্রায় ৬৫,৫৪০ থেকে ৮৪,৮২০ টাকা) খরচ করতে হবে।
পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
তুরস্ক
এশিয়া এবং ইউরোপ; দুই মহাদেশকে স্পর্শ করেই গড়ে ওঠা তুরস্ক স্থাপত্য বিস্ময় এবং হট-এয়ার বেলুন ট্রিপের জন্য বিখ্যাত। তবে এখানকার যে বিষয়টি বিশ্বে নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে, তা হলো দেশটির মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা। দেশটি ইউরোপীয় উচ্চশিক্ষা অঞ্চলের অংশ যা বোলোগনা প্রক্রিয়ার অন্তর্ভূক্ত। এতে করে তুর্কি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি সমস্ত ইউরোপে স্বীকৃতি পায়।
তুরস্কে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুব সাশ্রয়ী মূল্যের। সাধারণত প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০০ থেকে ৪,০০০ ইউরোর(প্রায় ৯,৬৪০ থেকে ৩,৮৫,৫২৬ টাকা) মত খরচ করতে হয় শিক্ষার্থীকে। বিশ্বের অন্যান্য অধ্যয়নের গন্তব্যের তুলনায় এটি অনেক বেশি সাশ্রয়ী। একজন বিদেশী শিক্ষার্থী প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৬৫০ ইউরো (৩৮,৫৬০ থেকে ৬২,৬৫০ টাকা) বাজেটের মধ্যে তুরস্কে থাকতে পারেন।
পোল্যান্ড
৪৫০ টিরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেশ পোল্যান্ড ইউরোপের দ্বিতীয় প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়কে বক্ষে ধারণ করে আছে। পোলিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাডমিশন পরীক্ষা না থাকার কারণে এই অধ্যয়নের গন্তব্য দেশের বাইরের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। আন্ডারগ্রাজুয়েশনের জন্য সর্বসাকূল্যে প্রয়োজন হবে শুধুমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষার একটি শংসাপত্র, একটি আর্থিক কার্যকারিতা শংসাপত্র এবং ইংরেজি বা পোলিশ ভাষার দক্ষতা।
পড়ুন: জাপানকে উচ্চশিক্ষার জেডিএস বৃত্তির পরিধি ও সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ
প্রথম, দ্বিতীয় এবং দীর্ঘ-চক্র অধ্যায়নের জন্য টিউশন ফি ২,৩৬৮ ইউরো (প্রায় ২,২৮,১১০ টাকা)। পোল্যান্ড বেশ স্থিতিশীল অর্থনীতির ইউরোপীয় দেশ। তাই বাইরের শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার খরচ এখানে প্রতি মাসে ৩৫০ থেকে ৫৫০ ইউরো (প্রায় ৩৩,৭৩৪ থেকে ৫৩,০০০ টাকা)-এর মধ্যে পরিবর্তিত হয়। শহরের সীমারেখা ও নগরায়নের অবস্থার উপর নির্ভর করে এই বাজেটের তারতম্য ঘটে থাকে।
মালয়েশিয়া
২০২১ সালে মালয়েশিয়ার সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডক্টর অফ ফিলোসফি (পিএইচডি) প্রোগ্রামের জন্য মোট ১১,১৬১ আন্তর্জাতিক আবেদনকারী অংশ নিয়েছিলেন। দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পাবলিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত ইউনিভার্সিটি মালায়া ২০২২ সালে এশিয়ার শীর্ষ ৫০টি সেরা গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রীতে খরচ পড়ে গড়ে প্রতি বছর ২,০০০ থেকে ৪,৫০০ ইউরো (১,৯২,৭৬০ থেকে ৪,৩৩,৭২০ টাকা)। স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে প্রতি বছর ৫০০ থেকে ৪,০০০ ইউরো (প্রায় ৪৮,১৯০ থেকে ৩,৮৫,৫২৬ টাকা) লেগে যায়।
পড়ুন: নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
জীবনযাত্রার ব্যয়ভার বহন করার জন্য প্রতি মাসে ৪৫০ থেকে ৮০০ ইউরোর (প্রায় ৪৩,৩৭২ থেকে ৭৭,০০০ টাকা) মত বাজেটের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত থাকা উচিত।
গ্রিস
ঈশ্বরের দেশ নামে খ্যাত অধ্যায়নের এই গন্তব্যটি শুধুমাত্র তাদের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার নিয়েই গর্ব করে না, তারা তাদের শিক্ষার মাধ্যমে সে ঐতিহ্যকে উন্নতও করে। দেশ জুড়ে প্রচুর গ্রীক বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি ভাষায় অধ্যয়ন করে ডিগ্রি লাভের সুবিধা রেখেছে। ইইউ-দেশ হিসাবে গ্রীস বোলোগনা প্রক্রিয়ার সদস্য, তাই এখানকার শিক্ষার্থীরা ইউরোপের যে কোন বোলোগনা সদস্য দেশের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট স্থানান্তর করতে পারেন।
নন-ইউ/ইইএ শিক্ষার্থীদের জন্য বেশিরভাগ ব্যাচেলর এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১,৫০০ থেকে ২,০০০ ইউরোর (১,৪৪,৬০০ থেকে ১,৯২,৭৭০ টাকা) মত অর্থ খরচ করতে হয়। গ্রীসের সাশ্রয়ী পরিবেশে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বাজেট প্রতি মাসে ৪৫০ থেকে ৭৫০ ইউরো (প্রায় ৪৩,৩৭২ থেকে ৭২,২৮৭ টাকা) হয়ে থাকে। এটি স্পেন, জার্মানি, বা ইতালির মত প্রধান ইউরোপীয় দেশের তুলনায় অনেকটাই যুক্তিসঙ্গত।
পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
হাঙ্গেরি
বৈচিত্র্যতা ও বহুসংস্কৃতির এক চমৎকার মেলবন্ধন চোখের পড়বে হাঙ্গেরিতে ঘুরতে গেলে। পাশাপাশি এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশের বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। পাবলিক হাঙ্গেরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিউশন ফি-এর দিক থেকে তাদের পশ্চিমা সমকক্ষদের তুলনায় অনেক বেশি সাশ্রয়ী। একজন বিদেশী শিক্ষার্থীকে অধিকাংশ ডিগ্রির জন্য প্রতি বছর ১,২০০ থেকে ৫,০০০ ইউরো (প্রায় ১,১৫,৬৬০ থেকে ৪,৮১,৯০০ টাকা) মত খরচের প্রস্তুতি নিতে হয়। আর
বসবাসের জন্য বাজেট করতে হয় ৩৭৫ থেকে ৭০০ ইউরোর (প্রায় ৩৬,১৪০ থেকে ৬৭,৪৭০ টাকা) মধ্যে। তবে তা অবশ্যই শহরের ধরনের উপর নির্ভর করে। আবাসন, খাবার, পরিবহন সহ আনুষঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে রাজধানী বুদাপেস্টে প্রতি মাসে ৬০০ ইউরো (প্রায় ৫৭,৮৩০ টাকা) যথেষ্ট। আর ছোট শহরগুলোতে প্রতি মাসে ৬০০ ইউরো (প্রায় ৪৮,২০০ টাকা) নিচে জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
শেষ কথা
স্বল্প খরচে দেশের বাইরে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে সমস্ত উপলব্ধ তহবিল বিকল্পগুলো ভালো ভাবে যাচাই করে নেয়া উচিত। চাহিদা, সামর্থ এবং লক্ষ্যগুলোর সব কিছুর সাথে সামঞ্জস্য করে চুড়ান্ত ভাবে সেরা বৃত্তির জন্য চেষ্টা করা উচিত। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উপলব্ধ নির্দিষ্ট বৃত্তিমুলক ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ-খবর করা যেতে পারে। গন্তব্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট; এমনকি সেখানকার অধ্যায়ন উপদেষ্টার সাথে স্কলারশিপ বা স্টুডেন্ট লোনের ব্যাপারে কথা বলাটা উত্তম। বিদেশে স্নাতক অধ্যায়নের জন্য আর্থিক সহায়তার মধ্যে আছে ফেডারেল অনুদান, ফেডারেল এবং ব্যক্তিগত ঋণ। এর বাইরে আছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত বৃত্তি, যেগুলো এই দেশগুলোতে জীবনযাত্রার খরচের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করতে পারে।
পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
২ বছর আগে
নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, পড়শোনার কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ এবং ক্যারিয়ারের সুব্যবস্থা থাকার কারণে বিদেশে পড়তে চাওয়া শিক্ষার্থীদের প্রিয় পছন্দ নিশীথ সূর্যের দেশ নরওয়ে। স্কলারশিপের কোটা প্রকল্প বর্তমানে না থাকলেও, বিদেশি মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে স্নাতকোত্তরের সুবিধা রেখেছে নরওয়েজিয়ান সরকার। অন্যান্য বহিরাগতদের ন্যায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও নিজেদের যোগ্যতায় অধ্যয়ন করছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) এই সদস্য দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। শুধুমাত্র নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে নিজেদের পছন্দমত ইংরেজি ভাষার মাস্টার্স কোর্সগুলো করতে পারছে। এবার নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর করার জন্য আবেদনের প্রতিটি পর্যায় জেনে নেয়া যাক।
নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর করার জন্য পর্যায়ক্রমিক আবেদন পদ্ধতি
প্রথম ধাপ: সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও পরিকল্পনা
যে কোনো কাজের জন্যই সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়টি হচ্ছে পূর্বপ্রস্তুতি, যাকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে সেই বিষয়ে যথাযথ জ্ঞানার্জন বা তথ্য সংগ্রহ। সেখানে সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি দেশে যখন পড়তে যাওয়া হচ্ছে, তখন অভিবাসনের যাবতীয় খুঁটিনাটি ভালো করে জেনে নেয়া আবশ্যক।
সবার প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে সেই দেশটিতে যাওয়ার পেছনে শিক্ষার্থীর আসল উদ্দেশ্য সম্পাদনের ব্যাপারে। তাই এই পর্যায়ে শিক্ষার্থী যে বিষয়ে মাস্টার্স করতে ইচ্ছুক সে বিষয়টি সেই দেশের নামকড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অফার করছে কিনা তা ভালোভাবে জানতে হবে। নরওয়ের বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশ্বের সবচেয়ে চাহিদাপূর্ণ বিষয়গুলোতে দুই বছর মেয়াদী মাস্টার্স করার সুযোগ আছে। এর জন্য নরওয়ের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
আরও যে বিষয়টি এই পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে- এই পুরো পদ্ধতিটিতে কত টাকা খরচ হবে তা সুষ্পষ্টভাবে জেনে এখন থেকেই তা যোগাড়ের ব্যবস্থা শুরু করা। গুটি কয়েক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বাদে নরওয়ের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা একদম ফ্রি। প্রতি সেমিস্টারের শুরুতে যে রেজিস্ট্রেশন ফিটা দেয়া লাগে তা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে তিন থেকে সাত হাজারের মত।
তবে সমস্যা হলো- অন্যান্য দেশগুলোর মত এখানে শুধু ব্যাংক সল্ভেন্সি দেখালেই হয় না। ভিসা হওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাবার পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়র একাউন্টে প্রায় ১২ লাখ টাকা পাঠাতে হয়। নরওয়েতে এক বছরের শিক্ষার্থীর থাকার খরচ বাবদ অগ্রিম এই টাকাটা নেয়া হয়। এটা আসলে কোনো ব্যাংক সলভেন্সি দেখানো না বা কোনো ব্লক্ড একাউন্ট না।
জার্মানির ক্ষেত্রে যেটা হয়- বিশ্ববিদ্যালয়র একাউন্টে টাকা পাঠানোর পর সেই টাকা ১২ মাসে ভেঙে ভেঙে ফেরত দেয়া হয়। আর নরওয়েজিয়ান ইউনির্ভাসিটিগুলো টাকাটা একবারেই দিয়ে দেয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নরওয়েতে যাওয়ার পর নিজের একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে সেই ১২ লাখ টাকা শিক্ষার্থীর ব্যাংক একাউন্টে ফেরত দিয়ে দেয়। এই বিষয়গুলো পরিকল্পনার সময় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
দ্বিতীয় ধাপ: আইইএলটিএস দেয়া
নরওয়েতে আন্ডারগ্রাজুয়েশন করার জন্য সাধারণত স্টুডেন্ট ভিসা দেয়া হয় না। এর পেছনে কারণ হলো ওদের অধিকাংশ আন্ডারগ্রাজুয়েশন কোর্স নরওয়েজিয়ান ভাষায় পড়ানো হয়। তবে স্নাতকোত্তর সব কোর্সই ইংরেজি ভাষায় করার সুযোগ রয়েছে। এই ক্ষেত্রে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ইংরেজি হওয়াতে আইইএলটিএস ছাড়া নরওয়েতে পড়তে যাওয়া সম্ভব নয়। নূন্যতম স্কোর ছয় পয়েন্ট পাঁচ হতে হয় তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ছয় স্কোরও গ্রহণ করে। সুতরাং পরিকল্পনার পর নরওয়েতে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতির জন্য করণীয় হিসেবে প্রথম কাজ হলো আইইএলটিএস দেয়া।
নরওয়েতে পরিবার নিয়েও আসা যায়। আবেদনকারী যদি স্বামী হন তাহলে তার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য আইইএলটিএস প্রয়োজন নেই। আবার স্ত্রীর ক্ষেত্রে স্বামী ও সন্তানের আইইএলটিএস স্কোর লাগবে না। তারা শুধুমাত্র অতিথি হিসেবে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে নরওয়ে আসতে পারবেন।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
তৃতীয় ধাপ: আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড়
→ এসএসসি, এইচএসসির ও নূন্যতম তিন বছরের স্নাতক ডিগ্রির সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট
(জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। স্টাডি গ্যাপ সর্বোচ্চ চার বছর গ্রহণযোগ্য)
→ পাসপোর্ট
→ আইইএলটিএস সনদ
→ স্টাডি প্ল্যানসহ মোটিভেশন লেটার
→ দুটি রিকমেন্ডেশন লেটার (যে বিষয়ে নরওয়েতে পড়তে যাওয়া হচ্ছে সে বিষয়ের ওপর অধ্যাপকের কাছ থেকে একটি, আর আরেকটি ব্যাচেলর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের ডিনের কাছ থেকে)
→ ব্যাংক সলভেন্সি পেপার
এগুলো ছাড়াও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আরও কিছু নথি চাইতে পারে। এর জন্য সর্বোত্তম কাজ হলো- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট ভালোভাবে অধ্যয়ন করে নেয়া।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
চতুর্থ ধাপ: আবেদন
প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র যোগাড় হয়ে গেলে এবার চূড়ান্ত আবেদনের পালা। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা স্টাডি ইন নরওয়ে ওয়েবসাইটে যেয়ে খুব সহজেই আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন। এই সাইটের মাধ্যমে আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়তে নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর আবেদনের ব্যবস্থা রয়েছে। নিজের কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির পাশে দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়র নামের ওপর ক্লিক করে বিশ্ববিদ্যালয়তে আবেদনের পেইজে প্রবেশ করা যাবে।
অতঃপর এই অনলাইন আবেদনে যা যা নথি চাওয়া হবে সেগুলো সব আপলোড করে সংযুক্তি হিসেবে দিতে হবে। তাই আগে থেকেই কাগজপত্রগুলোর স্ক্যান কপি প্রস্তুত করে রাখতে হবে। আর এই সামগ্রিক প্রক্রিয়াতে কোথাও কোনো ধরনের ফি প্রয়োজন হবে না।
এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে আবেদনের জন্য দরকারি কাগজপত্র সংগ্রহ করা এবং চূড়ান্ত আবেদনের ক্ষেত্রে সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। নরওয়েতে স্নাতকোত্তরে ভর্তির জন্য মূলত একটাই সেশন। প্রতি বছরের আগস্টে সেশন শুরু হয়। আর এই সেশন ধরার জন্য আবেদন করতে হয় ঠিক তার এক বছর আগে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে। তার মানে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের সেশন ধরতে হলে আবেদনের সময় শুরু হবে ২০২২ এর আগস্ট থেকে।
আরও পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্দিষ্ট প্রোগ্রামে আবেদন করে দরকারি সব কাগজপত্রের সফট কপি জমা দিয়ে ফেলতে হবে। আবেদনের পর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবেদনকারীকে একটা কনফারমেশন মেইল দেয়া হবে। এ সময় অতিরিক্ত কোনো কাগজ লাগলে সেটা মেইল করে জানানো হবে।
পঞ্চম ধাপ: ভিসার জন্য আবেদন
আবেদন প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর ফলাফল আসবে পরের বছরের মার্চের শেষ নাগাদ কিংবা এপ্রিলের শুরুর দিকে। ঠিক এই সময়েই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। অফার লেটার পাওয়ার পর আবেদনের সময় জমা দেয়া কাগজপত্রগুলো এবার অ্যাটাস্টেড করে গুলশানের ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিস) গ্লোবালে যেয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়র দেয়া একাউন্টে ১২ লাখ টাকা পাঠিয়ে দিতে হবে। এই টাকা পাঠানোর কনফারমেশন পেপারও সেই ভিএফএস গ্লোবালে অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়।
এখানে দরকারি কাগজপত্রগুলোর সঙ্গে পূর্ণ পূরনকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম, শেঞ্জেন ফরমেটের (৩৫ মিলিমিটার বাই ৪৫ মিলিমিটার) ছবি, স্টেটমেন্ট অব পার্পাস, কভার লেটার, অ্যাম্বেসির মনোনীত প্রতিষ্ঠান থেকে হেলথ ইনসুরেন্স সনদ এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ভিসার যাবতীয় প্রক্রিয়ার জন্য সর্বোচ্চ ৬২ হাজার টাকার মত খরচ হবে। সবকিছু পাওয়ার পর ভিএফএসের পক্ষ থেকে ছোট্ট একটা ইন্টারভিউ নেয়া হবে। ইন্টারভিউয়ের ১২ থেকে ১৪ কার্যদিবস পর কাঙ্ক্ষিত সেই নরওয়ে যাবার ভিসা হাতে পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: জাপানকে উচ্চশিক্ষার জেডিএস বৃত্তির পরিধি ও সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ
নরওয়ের নাগরিকত্ব নিয়ে কিছু কথা
নরওয়ের পিআর (পার্মানেন্ট রেসিডেন্স) ব্যবস্থা বেশ সহজ। দুবছর অধ্যয়নের পর যে বিষয়ে মাস্টার্স করা হয়েছে সে বিষয়ের ওপর কোনো চাকরি যোগাড় করতে পারলেই পিআর নিশ্চিত। তিন বছর মেয়াদী পিএইচডি করা অবস্থাতেও এই পিআর পাওয়া যায়। কারণ নরওয়েতে পিএইচডি কে চাকরি হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তার মানে পিআর-এ কোনো অনিশ্চয়তা নেই।
শেষাংশ
সবশেষে বলা যায় যে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দিচ্ছে। শুধু একটি সম্মানজনক ক্যারিয়ারই নয়; উচ্চশিক্ষার এই সুযোগটি কাঙ্ক্ষিত ও উন্নত জীবন ধারণের একটি কারুকার্যমণ্ডিত সোপান। নিজেদের জীবনকে সুন্দর করার পাশাপাশি এই তরুণরা বাংলাদেশের জন্য বিপুল সুনাম বয়ে নিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে সমৃদ্ধশালী জীবনের লক্ষ্যে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যও রেখে যাচ্ছে অনুসরণীয় পদচিহ্ন।
২ বছর আগে
নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
সৃজনশীল উদ্দীপনার নেপথ্যে পরিবেশের প্রভাব অনস্বীকার্য। সেই সূত্রে প্রাকৃতিক নৈসর্গের মাঝে জীবনযাপনের পাশাপাশি শিক্ষা জীবনের মানোন্নয়নের নিমিত্তে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভিড় করে নিশীথ সূর্যের দেশ নরওয়েতে। পূর্বে বাংলাদেশের জন্য নির্দিষ্ট কোটা থাকলেও এখন আর সে সুবিধা নেই। কিন্তু এরপরও বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করে রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য এই দেশটি। চলুন, নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়গুলো জেনে নিই।
নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষায় স্কলারশিপ
নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষায় স্কলারশিপের জন্য গত কয়েক শিক্ষাবর্ষ ধরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি যে স্কলারশিপ প্রোগ্রাম থেকে উপকৃত হয়েছে তা হলো- ইরাসমাস মুন্ডাস। এটি ছাত্র-ছাত্রীদের যৌথ প্রোগ্রামে মাস্টার্স বা ডক্টরেট প্রোগ্রামের সুবিধা দিয়ে থাকে।
গত বছর তারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ২ হাজার ৪৫০টি বৃত্তি বরাদ্দ করেছিলো। চলতি বছর তারা ২ হাজার ৭৫৬টি স্কলারশিপ প্রদান করবে। প্রায় প্রতিটি বিষয়েই পড়াশোনার সুযোগ দিয়ে থাকে ইউরোপের এই উচ্চ মর্যাদাপূর্ণ স্কলারশিপটি।
মাস্টার্স প্রোগ্রামের ২ বছর বা ডক্টরাল প্রোগ্রামের ৩ বছরের পুরো অধ্যায়নকালের সমস্ত ব্যয়ভার বহন করে থাকে ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ। সম্পূর্ণ খরচটি পরিচালিত হয় ইউরোপীয় কমিশন দ্বারা।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
স্কলারশিপের সুযোগ-সুবিধা
ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ দুই বছরের জন্য তিনটি ভিন্ন ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশে অধ্যয়ন করতে পারবে। অর্থাৎ প্রতিটি সেমিস্টার তারা কাটাতে পারবে আলাদা দেশে। প্রোগ্রাম শেষে তারা ইউরোপের দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দ্বৈত ডিগ্রি অর্জন করতে পারবে।
মাসিক উপবৃত্তি হিসেবে শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে প্রায় ১১০০ থেকে ১২০০ ইউরো, যার মূল্যমান ১২০০ থেকে ১৩০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি।
আন্তর্জাতিক বিমান ভাড়ার টিকিট ও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে টিউশন ফি’র পাশাপাশি আছে অধ্যয়নকালীন যাতায়াত ভাতা। সেমিস্টার শেষ হলে দেশ থেকে দেশে ভ্রমণ খরচ দেয়া হয়। পড়াশোনা শেষে দেশে ফেরার জন্য কোন সীমাবদ্ধতা নেই। মাস্টার্স/পিএইচডি করার পর জব ভিসা দেয়া হয়। ডিগ্রির পর থাকছে ইউরোপে চাকরির সুযোগ।
আরও পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
স্কলারশিপের জন্য যোগ্যতা
ব্যাচেলরে থাকা তৃতীয় বর্ষের বা ফলাফল প্রতীক্ষিত শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবে এই স্কলারশিপের জন্য। কোন প্রফেসরের সাথে বা অন্য কোন যোগাযোগের প্রয়োজন নেই। ফলে বাদ থেকে যাচ্ছে জিআরই’র প্রয়োজনীয়তা।
আবেদনের সময় ব্যাচলরসহ ন্যূনতম ১৬ বছরের অধ্যয়নকাল দেখাতে হয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ব্যাপার হলো, এখানে কাজের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই এবং সিজিপিএ’র ক্ষেত্রে বেশ শিথিলতা আছে। ২.৫ থেকে ৩ সিজিপিএ প্রাপ্তরাও এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারছে। এছাড়া থাকছে না বয়সের কোন সীমাবদ্ধতা।
তবে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতায় প্রতিটি প্রোগ্রামের জন্য গড়ে আইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোর ৬.৫ চাওয়া হয়। এক্ষেত্রে যে ইনস্টিটিউটে আবেদন করা হচ্ছে তার ওয়েবসাইটে ভালোভাবে খোঁজ করতে হবে ভাষাগত কোন বাধ্যবাধকতা আছে কি না। সম্প্রতি আইইএলটিএস-এর বিকল্প হিসেবে ডুয়োলিঙ্গো নামে একটি ইংরেজি দক্ষতা টেস্ট চালু করা হয়েছে। এটাও কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় চেয়ে থাকে। ডুয়োলিঙ্গো টেস্ট অনলাইনে ঘরে বসেই দেয়া যায়।
আরও পড়ুন: সুইডেনে স্কলারশিপ পাওয়ার কিছু উপায়
২ বছর আগে
বাংলাদেশের আইসিটি খাতে নরওয়েকে বিনিয়োগের আহ্বান
নরওয়েকে বাংলাদেশের আইসিটি খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
৪ বছর আগে