উন্নত ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ভাবনার বিষয় থাকে স্বল্প খরচে দেশের বাইরে পড়াশোনা। বিশ্ব মানের শিক্ষাব্যবস্থা ও উন্নত জীবন ব্যবস্থার সাথে বাজেটের দিকটা মিলে গেলেই উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে দেশটিতে পাড়ি জমানো যায়। ইউরোপ, মধ্য-এশিয়া এমনকি অ্যামেরিকার বিভিন্ন দেশগুলো এমন শিক্ষার্থীদের আশাকে সাধুবাদ জানিয়েই তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কম খরচে অধ্যয়নের সুযোগ দিয়ে থাকে। বেশ ভালো শতাংশ ছাড়ের পরও আর্থিক সংকুলান না হলে আছে স্কলারশিপের ব্যবস্থা। এতে টিউশন ফি সহ থাকা-খাওয়ার খরচ অনেকটাই পুষিয়ে নেয়া যায়। আজকের নিবন্ধে এমন কিছু দেশের কথা বলা হয়েছে, যেগুলোর টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার খরচের সাথে মানিয়ে নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী সেখানে পড়াশোনা করছে। স্বল্প খরচে দেশের বাইরে পড়ার জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সেরা ১০টি গন্তব্য।
যে ১০টি দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা কম খরচে উচ্চশিক্ষা নিতে পারেন
জার্মানি
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য এখন শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ জার্মানি। এখানকার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত। এগুলোর ব্যাচেলর কোর্স এবং বেশিরভাগ মাস্টার্স কোর্সের জন্য সাধারণত কোন ফি নেই। কিছু মাস্টার্স প্রোগ্রামে টিউশন ফি থাকলেও তা অন্যান্য দেশের তুলনায় তেমন বেশি নয়।
পড়ুন: জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খরচ বলতে আছে সেমিস্টার কন্ট্রিবিউশন ফি, যার সাথে টিউশন ফি-এর কোন সম্পর্ক নেই। এটি শিক্ষার্থীদের কল্যাণেই পাবলিক পরিবহণ, ক্রীড়া, অনুষদ/বিভাগীয় ছাত্র সংগঠন এবং প্রশাসনিক ফি ব্যায়-ভার বহন করে। এই ফি প্রতিষ্ঠান ভেদে পরিবর্তিত হয় এবং সাধারণত ১০০ থেকে ৩৫০ ইউরোর (প্রায় ৯,৬৫০ থেকে ৩৩,৭৩০ টাকা) মধ্যে থাকে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার খরচ সাধারণত প্রতি মাসে ৭২৫ ইউরোর (প্রায় ৬৯,৯০০টাকা) মত হয়ে থাকে, যেখানে বাসস্থান, খাবার, পোশাক এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রম; সবই অন্তর্ভুক্ত।
নরওয়ে
এখানেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সমস্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি মুক্ত রেখেছে। প্রতি সেমিস্টারে শুধুমাত্র একটি শিক্ষার্থী ইউনিয়ন ফি দিতে হবে, যা ৩০ থেকে ৬০ ইউরো (প্রায় ২,৮৯০ থেকে ৫,৭৮০ টাকা)-এর মধ্যে। এর মাধ্যমে পাবলিক পরিবহণ, জাদুঘর এবং সাংস্কৃতিক ইভেন্ট, স্বাস্থ্যসেবাতে বিশেষ ছাড় এবং ক্রীড়া সুবিধাগুলো সহ বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে।
পড়ুন: নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
নরওয়েতে জীবনযাত্রার জন্য প্রতি মাসে গড়ে ৮০০ থেকে ১,৪০০ ইউরো (প্রায় ৭৭,০০০ থেকে ১,৩৪,৯০০ টাকা) এর মত খরচের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বড় শহরগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই খরচ অনেক বেশি কিন্তু ছোট শহরগুলোতে গড়পড়তায় ৮০০ থেকে ১,০০০ ইউরোর (প্রায় ৭৭,০০০ থেকে ৯৬,৫০০ টাকা) মধ্যেই থাকা-খাওয়া, চলাফেরার যাবতীয় খরচ হয়ে যায়।
ফ্রান্স
বিশ্ব সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্গ বলা যেতে পারে ফ্রান্সকে। শুধু পড়াশোনার জন্যই নয়; বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং সমগ্র ইউরোপীয় বাজারে তাদের রয়েছে অভিজাত পদচারণা। স্নাতক করার পর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এখানে বিভিন্ন ব্যবসায়িক খাতে আকর্ষণীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়ার আশা করতে পারে। সুস্বাদু খাবার থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক, ফ্যাশন, শিল্প-সাহিত্য এবং জীবনধারা; জীবনের প্রায় সবকিছুর একটি আনন্দদায়ক মিশ্রণের নাম ফ্রান্স।
এখানে লাইসেন্স (স্নাতক) স্তরে প্রতি বছর খরচ হতে পারে ২,৭৭০ ইউরো (প্রায় ২,৬৭,০০০ টাকা)। মাস্টার লেভেলে খরচ আছে বছর প্রতি ৩,৭৭০ ইউরো যা প্রায় ৩,৬৩,৪০০ টাকার সমান।
পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
জীবনযাত্রার জন্য প্যারিস, নিস, লিয়ন, ন্যান্টেস, বোর্দো বা টুলুজের মত অভিজাত শহরগুলো বাদ দিয়ে বাকি অন্যান্য শহরগুলোকে বাছাই করলে, ৬৫০ ইউরো (প্রায় ৬২,৬৫০ টাকা)-এর নিচেই দিন যাপন করা যাবে।
অস্ট্রিয়া
ইউরোপের প্রাণকেন্দ্র অস্ট্রিয়া যে কোন উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের জন্য যথেষ্ট হতে পারে। ইউ(ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন)/ইইএ(ইউরোপিয়ান ইকোনোমিক এরিয়া) দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টিউশন ফি একদম ফ্রি।
কিন্তু নন-ইউ/ইইএ দেশগুলোর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতি সেমিস্টারে ২০ ইউরো (প্রায় ১,৯২৭ টাকা) ছাড়াও টিউশন ফি বাবদ গড়ে ৭২৬.৭২ ইউরো (প্রায় ৭০,০০০ টাকা) ধার্য করে। তবে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অস্ট্রিয়ার অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় টিউশন ফি মুক্ত শিক্ষা প্রদান করছে। এগুলোর মধ্যে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়, ভিয়েনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইনসব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়, জোহানেস কেপলার ইউনিভার্সিটি লিঞ্জ, গ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং লিওবেন বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম।
পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
অপরূপ দেশটিতে অতি প্রত্যাশিত জীবনযাত্রার খরচ ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশ কম। প্রতি মাসে ৯০০ থেকে ১,৩০০ ইউরো (প্রায় ৮৬,৭০০ থেকে ১,২৫,২৩০ টাকা)-এর বাজেট ভিয়েনা এবং সালজবার্গে আবাসন, খাবার, সামাজিক কার্যকলাপ এবং পাবলিক পরিবহণ সহ সমস্ত খরচ কভার করতে পারে। অন্যান্য জনপ্রিয় স্টুডেন্ট লোকেশনের মধ্যে লিনজ বা গ্রাজ ৯০০ থেকে ১,০০০ ইউরোর (প্রায় ৮৬,৭০০ থেকে ৯৬,৫০০ টাকা) মধ্যে মাসিক জীবনযাত্রার খরচ হয়ে যায়।
তাইওয়ান
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযুক্তিগত, ঐতিহাসিক, রন্ধনসম্পর্কীয়, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সহ যাবতীয় অভিজ্ঞতার সুযোগে ভরপুর এশিয়ার এই দেশটি। এখানে ইংরেজি-ভাষায় অধ্যায়নের জন্য প্রচুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছে। বহুসাংস্কৃতিক এবং সমৃদ্ধ পুরনো ইতিহাস পরিদর্শনে তাইওয়ান বিদেশী শিক্ষার্থীদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায়। ফলে খুব সহজেই সাবলীল হয়ে ওঠা যায় অপরিচিত এই দেশেও। বেশ কয়েক বছর ধরেই তাইওয়ানের উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং দারুণ স্বীকৃতিও পেয়েছে।
দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যায়ন খরচ প্রতি বছর ৬৭৫ থেকে ১২,৭০০ ইউরো (প্রায় ৬৫,০০০ টাকা থেকে ১২,২৪,০০০ টাকা)। এখানে নূন্যতম জীবনধারণের জন্য প্রতি মাসে প্রায় ৬৮০ থেকে ৮৮০ ইউরো (প্রায় ৬৫,৫৪০ থেকে ৮৪,৮২০ টাকা) খরচ করতে হবে।
পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
তুরস্ক
এশিয়া এবং ইউরোপ; দুই মহাদেশকে স্পর্শ করেই গড়ে ওঠা তুরস্ক স্থাপত্য বিস্ময় এবং হট-এয়ার বেলুন ট্রিপের জন্য বিখ্যাত। তবে এখানকার যে বিষয়টি বিশ্বে নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে, তা হলো দেশটির মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা। দেশটি ইউরোপীয় উচ্চশিক্ষা অঞ্চলের অংশ যা বোলোগনা প্রক্রিয়ার অন্তর্ভূক্ত। এতে করে তুর্কি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি সমস্ত ইউরোপে স্বীকৃতি পায়।
তুরস্কে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুব সাশ্রয়ী মূল্যের। সাধারণত প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০০ থেকে ৪,০০০ ইউরোর(প্রায় ৯,৬৪০ থেকে ৩,৮৫,৫২৬ টাকা) মত খরচ করতে হয় শিক্ষার্থীকে। বিশ্বের অন্যান্য অধ্যয়নের গন্তব্যের তুলনায় এটি অনেক বেশি সাশ্রয়ী। একজন বিদেশী শিক্ষার্থী প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৬৫০ ইউরো (৩৮,৫৬০ থেকে ৬২,৬৫০ টাকা) বাজেটের মধ্যে তুরস্কে থাকতে পারেন।
পোল্যান্ড
৪৫০ টিরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেশ পোল্যান্ড ইউরোপের দ্বিতীয় প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়কে বক্ষে ধারণ করে আছে। পোলিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাডমিশন পরীক্ষা না থাকার কারণে এই অধ্যয়নের গন্তব্য দেশের বাইরের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। আন্ডারগ্রাজুয়েশনের জন্য সর্বসাকূল্যে প্রয়োজন হবে শুধুমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষার একটি শংসাপত্র, একটি আর্থিক কার্যকারিতা শংসাপত্র এবং ইংরেজি বা পোলিশ ভাষার দক্ষতা।
পড়ুন: জাপানকে উচ্চশিক্ষার জেডিএস বৃত্তির পরিধি ও সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ
প্রথম, দ্বিতীয় এবং দীর্ঘ-চক্র অধ্যায়নের জন্য টিউশন ফি ২,৩৬৮ ইউরো (প্রায় ২,২৮,১১০ টাকা)। পোল্যান্ড বেশ স্থিতিশীল অর্থনীতির ইউরোপীয় দেশ। তাই বাইরের শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার খরচ এখানে প্রতি মাসে ৩৫০ থেকে ৫৫০ ইউরো (প্রায় ৩৩,৭৩৪ থেকে ৫৩,০০০ টাকা)-এর মধ্যে পরিবর্তিত হয়। শহরের সীমারেখা ও নগরায়নের অবস্থার উপর নির্ভর করে এই বাজেটের তারতম্য ঘটে থাকে।
মালয়েশিয়া
২০২১ সালে মালয়েশিয়ার সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডক্টর অফ ফিলোসফি (পিএইচডি) প্রোগ্রামের জন্য মোট ১১,১৬১ আন্তর্জাতিক আবেদনকারী অংশ নিয়েছিলেন। দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পাবলিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত ইউনিভার্সিটি মালায়া ২০২২ সালে এশিয়ার শীর্ষ ৫০টি সেরা গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রীতে খরচ পড়ে গড়ে প্রতি বছর ২,০০০ থেকে ৪,৫০০ ইউরো (১,৯২,৭৬০ থেকে ৪,৩৩,৭২০ টাকা)। স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে প্রতি বছর ৫০০ থেকে ৪,০০০ ইউরো (প্রায় ৪৮,১৯০ থেকে ৩,৮৫,৫২৬ টাকা) লেগে যায়।
পড়ুন: নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
জীবনযাত্রার ব্যয়ভার বহন করার জন্য প্রতি মাসে ৪৫০ থেকে ৮০০ ইউরোর (প্রায় ৪৩,৩৭২ থেকে ৭৭,০০০ টাকা) মত বাজেটের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত থাকা উচিত।
গ্রিস
ঈশ্বরের দেশ নামে খ্যাত অধ্যায়নের এই গন্তব্যটি শুধুমাত্র তাদের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার নিয়েই গর্ব করে না, তারা তাদের শিক্ষার মাধ্যমে সে ঐতিহ্যকে উন্নতও করে। দেশ জুড়ে প্রচুর গ্রীক বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি ভাষায় অধ্যয়ন করে ডিগ্রি লাভের সুবিধা রেখেছে। ইইউ-দেশ হিসাবে গ্রীস বোলোগনা প্রক্রিয়ার সদস্য, তাই এখানকার শিক্ষার্থীরা ইউরোপের যে কোন বোলোগনা সদস্য দেশের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট স্থানান্তর করতে পারেন।
নন-ইউ/ইইএ শিক্ষার্থীদের জন্য বেশিরভাগ ব্যাচেলর এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১,৫০০ থেকে ২,০০০ ইউরোর (১,৪৪,৬০০ থেকে ১,৯২,৭৭০ টাকা) মত অর্থ খরচ করতে হয়। গ্রীসের সাশ্রয়ী পরিবেশে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বাজেট প্রতি মাসে ৪৫০ থেকে ৭৫০ ইউরো (প্রায় ৪৩,৩৭২ থেকে ৭২,২৮৭ টাকা) হয়ে থাকে। এটি স্পেন, জার্মানি, বা ইতালির মত প্রধান ইউরোপীয় দেশের তুলনায় অনেকটাই যুক্তিসঙ্গত।
পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
হাঙ্গেরি
বৈচিত্র্যতা ও বহুসংস্কৃতির এক চমৎকার মেলবন্ধন চোখের পড়বে হাঙ্গেরিতে ঘুরতে গেলে। পাশাপাশি এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশের বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। পাবলিক হাঙ্গেরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিউশন ফি-এর দিক থেকে তাদের পশ্চিমা সমকক্ষদের তুলনায় অনেক বেশি সাশ্রয়ী। একজন বিদেশী শিক্ষার্থীকে অধিকাংশ ডিগ্রির জন্য প্রতি বছর ১,২০০ থেকে ৫,০০০ ইউরো (প্রায় ১,১৫,৬৬০ থেকে ৪,৮১,৯০০ টাকা) মত খরচের প্রস্তুতি নিতে হয়। আর
বসবাসের জন্য বাজেট করতে হয় ৩৭৫ থেকে ৭০০ ইউরোর (প্রায় ৩৬,১৪০ থেকে ৬৭,৪৭০ টাকা) মধ্যে। তবে তা অবশ্যই শহরের ধরনের উপর নির্ভর করে। আবাসন, খাবার, পরিবহন সহ আনুষঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে রাজধানী বুদাপেস্টে প্রতি মাসে ৬০০ ইউরো (প্রায় ৫৭,৮৩০ টাকা) যথেষ্ট। আর ছোট শহরগুলোতে প্রতি মাসে ৬০০ ইউরো (প্রায় ৪৮,২০০ টাকা) নিচে জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
শেষ কথা
স্বল্প খরচে দেশের বাইরে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে সমস্ত উপলব্ধ তহবিল বিকল্পগুলো ভালো ভাবে যাচাই করে নেয়া উচিত। চাহিদা, সামর্থ এবং লক্ষ্যগুলোর সব কিছুর সাথে সামঞ্জস্য করে চুড়ান্ত ভাবে সেরা বৃত্তির জন্য চেষ্টা করা উচিত। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উপলব্ধ নির্দিষ্ট বৃত্তিমুলক ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ-খবর করা যেতে পারে। গন্তব্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট; এমনকি সেখানকার অধ্যায়ন উপদেষ্টার সাথে স্কলারশিপ বা স্টুডেন্ট লোনের ব্যাপারে কথা বলাটা উত্তম। বিদেশে স্নাতক অধ্যায়নের জন্য আর্থিক সহায়তার মধ্যে আছে ফেডারেল অনুদান, ফেডারেল এবং ব্যক্তিগত ঋণ। এর বাইরে আছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত বৃত্তি, যেগুলো এই দেশগুলোতে জীবনযাত্রার খরচের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করতে পারে।