প্রবৃদ্ধি
প্রবৃদ্ধি অর্জনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে না পারলে উন্নয়নশীল দেশগুলো পিছিয়ে পড়বে: এডিবি প্রেসিডেন্ট
অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার ও ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণের উপর জোর দিয়ে এর যর্থার্থ ও সতর্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলেছেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া।
ভবিষ্যৎ অগ্রাধিকারের বিষয়ে আলোকপাত করে তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য প্রচুর সম্ভাবনাময়।’
এডিবি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো এই প্রযুক্তি গ্রহণ করতে না পারলে পিছিয়ে পড়বে।
তিবিলিসির কনসার্ট হলে ৫৭তম বার্ষিক সভার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি বলেন, এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রে পক্ষপাত ও স্বচ্ছতার অভাবের মতো ঝুঁকিও রয়েছে।
এ সময় জর্জিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি কোবাখিদজে উপস্থিত ছিলেন। একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমৃদ্ধ জর্জিয়ান সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের
এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, সংস্থাটি নৈতিক কাঠামো অনুসরণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে কার্যকরী এআই সমাধান ব্যবহারে উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোর সক্ষমতা জোরদারে কঠোর পরিশ্রম করছে।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বিভাজন দূরীকণ এবং এআই এর সুযোগ উন্মুক্ত করণে আমরা বিশ্বাস করি। এটি আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের মূল চাবিকাঠি।’
এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা এমন এক সময়ে একত্রিত হয়েছেন, যখন এই অঞ্চলের জনগণ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এ সময় তাদের নিবিড় মনোযোগ ও সমন্বয়ের প্রয়োজন।
আসাকাওয়া বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের অবিরাম প্রভাবগুলো, সংঘাত ও সংকট দ্রুত তাদের জীবন-জীবিকাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।’
তিনি বলেন, 'আসুন আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাই, যাতে আমরা আরও সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল ও টেকসই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য সেতুবন্ধন গড়ে তুলি।’
শুরুতে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, এই হুমকিকে উপেক্ষা করা যায় না এবং তাদের প্রতিক্রিয়া বিলম্বিত করা যাবে না।
আসাকাওয়া বলেন, ‘২০২৩ সাল ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। আমরা মানুষের উপর এর প্রভাব এবং ভবিষ্যতের উন্নয়নের ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছি। শস্য ও খাদ্য ব্যবস্থা ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।’
তিনি বলেন, ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন অবশ্যই অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে। ‘অর্থায়নে প্রতিবন্ধকতার কারণে কেউ যেন উন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত না হয়।’
আরও পড়ুন: কার্যকরী-গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজে আগ্রহী এডিবি: ভাইস প্রেসিডেন্ট ভার্গব দাশগুপ্ত
সবুজ বিশ্বায়নের চালিকাশক্তি
এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই কক্ষে আমাদের উপস্থিতি প্রমাণ করে আমাদের বিশ্ব কতটা গভীরভাবে সংযুক্ত। আমাদের এটা কাজে লাগানো উচিত। আরও সবুজ ও উন্মুক্ত অর্থনীতি গড়ে তুলতে আমাদের এই সংযোগগুলো বাড়ানো উচিত।’
তিনি বলেন, মহামারি বা বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সংঘাতের দিকে ফিরে তাকানো সহজ হতে পারে এবং এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সহজ হতে পারে যে বিশ্বায়ন এখন মৃত। ‘আমি এটা বিশ্বাস করি না।’
তিনি বলেন, 'এটা সত্য যে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সরবরাহ শৃঙ্খল সংকটের ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে এর উত্তর সংরক্ষণবাদ এবং বিভাজন হতে পারে না।’
আসাকাওয়া বলেন, মুক্ত বাণিজ্য ও মূলধনের অবাধ চলাচল কয়েক দশক ধরে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে উপকৃত করেছে এবং এটিই অবশ্যই এগিয়ে যাওয়ার উপায় হতে হবে।
সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিশীল রাখতে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ জোরদার এবং আর্থিক ও কর সহযোগিতা জোরদারে আঞ্চলিক সহযোগিতা কীভাবে গভীর করা যায় তা অনুসন্ধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এডিবি প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রবীণদের জন্য আরও বেশি বরাদ্দ দিতে জোর দিয়েছে এডিবি
বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম
আসাকাওয়া বলেন, 'অস্বস্তিকর সত্য হলো এশিয়ার শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণে আমাদের অবদান বাড়ছে।’
তিনি বলেন, আরও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বৈশ্বিক মূল্য শৃঙ্খলসম্পর্কিত নির্গমন হ্রাস করার জন্য কাজ করার এখনই সময়।
সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন সদস্যদের সমর্থন করা
এডিবি প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতের জন্য সেতুবন্ধন যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের পেছনে ফেলে রাখতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোসহ দরিদ্রতম ও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক মন্দা ও সংঘাতের কারণে সবচেয়ে বেশি সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।’
এডিবি প্রধান বলেন, তাদের অর্থায়নে অবশ্যই অনুদানসহ রেয়াতি শর্তে সম্পদ অন্তর্ভুক্ত করা অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, এশীয় উন্নয়ন তহবিল (এডিএফ) এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন। বৃহস্পতিবার পুনঃপূরণ সম্পন্ন হওয়ার পর আমরা এসব চাহিদা মেটাতে ৫০০ কোটি ডলার পর্যন্ত সরবরাহ করতে সক্ষম হব।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রচেষ্টা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন জোরদারের আহ্বান এডিবি প্রেসিডেন্টের
৬ মাস আগে
বার্ষিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২৬ অর্থবছরে কৃষিতে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে কৃষি খাতের গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তিন বছরে কৃষি উন্নয়নে ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে বাংলাদেশ সরকার।
'মধ্যমেয়াদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬)' অনুসারে, এই বিনিয়োগ খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন এবং ন্যায়সঙ্গত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে কৃষির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দেয়।
জিডিপিতে একটি হ্রাস প্রবণতা থাকা সত্ত্বেও এটি বিশেষত গ্রামীণ অঞ্চলে কৃষিনির্ভর সংখ্যাগরিষ্ঠদের জীবিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য উৎপাদন ও প্রতিকূলতা মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের গৃহীত কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে- উচ্চফলনশীল ও প্রতিকূলতা সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবন, যান্ত্রিকীকরণ-সেচ সম্প্রসারণ এবং বীজ ও সারের মতো সাশ্রয়ী মূল্যের উপকরণের প্রাপ্যতা বাড়ানো।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
নীতি নথিতে প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষির আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সম্পদ সংরক্ষণের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির উপর সেচের জন্য ভূপৃষ্ঠের পানির ব্যবহার বাড়ানো, নবায়ণযোগ্য জ্বালানি সমাধানগুলো অন্তর্ভুক্ত করা এবং ফসল পরিচর্যার জন্য রিমোট সেন্সিং নিয়োগ করা।
সরকার একটি টেকসই ও স্বনির্ভর কৃষি কাঠামো গড়ে তুলতে ভর্তুকি, আর্থিক প্রণোদনা এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে এই খাতকে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের উপখাত থেকেও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। এটি কেবল জিডিপি যথাক্রমে ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৯১ শতাংশই বৃদ্ধি করে না, বরং জনসংখ্যার ১২ শতাংশেরও বেশি মানুষের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের উৎস হিসেবে কাজ করে এবং জীবিকার সংস্থান করে। এই ক্ষেত্রগুলোর অর্জনসমূহের মধ্যে রয়েছে মাছ, মাংস এবং ডিম ও দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের আশা করা হচ্ছে। তাছাড়া রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য এসব খাত অত্যাবশ্যক।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় জিরা চাষে সফলতা, জহুরুল ইসলামের দৃষ্টান্ত
ভবিষ্যতে এসব খাতের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি, উন্নত ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি গ্রহণ এবং সংরক্ষণ প্রক্রিয়া উন্নত করার জন্য বিশেষ করে ছোট ইলিশ মাছের ('জাটকা') জন্য উন্নয়ন প্রকল্প চালু করতে প্রস্তুত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
টেকসই কৃষির গুরুত্ব বিবেচনায় পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা আরেকটি মৌলিক ক্ষেত্র। আন্তঃসীমান্ত নদী থেকে ন্যায়সঙ্গত পানির হিস্যা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জলাশয় খনন ও উপকূলীয় বনায়ন বৃদ্ধির মাধ্যমে ভূ-উপরিস্থ পানির প্রাপ্যতা উন্নয়নের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির হুমকির মধ্যে - ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপিতে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সরকার এই প্রভাবগুলো হ্রাস করার বিস্তৃত কৌশলগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনাটি জলবায়ু সম্পর্কিত বাধাগুলোর বিরুদ্ধে সহনশীলতা এবং স্থিতিশীলতা বাড়ানোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ খাত এবং সম্প্রদায়গুলোকে সরঞ্জাম দিয়ে প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এই বহুমুখী প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের কৃষি ঐতিহ্যকে কেবল সুরক্ষাই নয়, বরং এগিয়ে নিতেও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে প্রায় ১৪ কোটি টাকার প্রণোদনা
৭ মাস আগে
২০২৩ সালে গ্রামীণফোনের প্রবৃদ্ধি ৫.৫ শতাংশ
প্রতিকূল সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতেও নেটওয়ার্কে বিনিয়োগ ও কৌশলগত পদক্ষেপের মাধ্যমে ২০২৩ সালে সাড়ে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে গ্রামীণফোন।
মঙ্গলবার(৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এতে বলা হয়, গেল বছর গ্রামীণফোন লিমিটেড ১৫ হাজার ৮৭১ দশমিক ৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: খাঁচায় বন্দী পাখি: গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে মামলা
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে মোট ৮ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে। গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ৫৬ দশমিক ৯ শতাংশ অথবা ৪ কোটি ৬৬ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছেন।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, ‘সেবার মানোন্নয়ন এবং পরিপার্শ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে রাজস্ব ও ইবিআইটিডিএ উভয় ক্ষেত্রে আমাদের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। আমরা ডিজিটাল সক্ষমতার উপর গুরুত্বরোপ বৃদ্ধি করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এবং টেকসই ভবিষ্যত গড়তে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আমাদের গ্রাহকদের সহজ, নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর এবং সুখী জীবনে অবদান রাখতে নতুন আইওটি প্রোডাক্টস নিয়ে এসেছি।’
গ্রামীণফোনের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) অটো রিসব্যাক বলেন, ‘চতুর্থ প্রান্তিকে গ্রামীণফোন তার উন্নত নেটওয়ার্ক এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সমাধানে বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে শক্তিশালী ফাইনান্সিয়াল পারফরমেন্স বজায় রেখেছে। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, নেটওয়ার্ক নেতৃত্ব প্রসারিত করার মাধ্যমে টানা ১১ প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের লক্ষ্যণীয় আর্থিক অগ্রগতি এবং ইবিআইটিডিএ-এর ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত আছে।’
আরও পড়ুন: গ্রামীণফোনে নতুন সিএফও ও সিআরও নিয়োগ
তিনি আরও বলেন, চতুর্থ প্রান্তিকে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সাবস্ক্রিপশন ও ট্রাফিক রেভিনিউ ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে , যা আগের প্রান্তিকে ছিল ৬ শতাংশ। মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৮ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে মোট মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৯০ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, ফোরজি নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং ফাইবার সংযোগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি ২ হাজার ৬০০ মেগাহার্জ স্পেকট্রাম প্রসারণে ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে গ্রামীণফোন (লাইসেন্স, ইজারা ও এআরও ছাড়া) ৩১৭ কোটি ৯০ লাখ টাকার মূলধনী বিনিয়োগ করেছে।
২০২৩ সালে গ্রামীণফোন রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ১২ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা গ্রামীণফোনের মোট রাজস্বের ৭৭ শতাংশ।
কর, মূসক, শুল্ক, লাইসেন্স ও স্পেকট্রাম বরাদ্দ ফি বাবদ এই অর্থ দিয়েছে অপারেটরটি।
আরও পড়ুন: গ্রামীণফোনের সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা
৯ মাস আগে
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি-স্থায়িত্বে শ্রম অধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: পিটার হাস
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, তার দেশ তৈরি পোশাক শিল্প ও এর বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে কাজ আরও গভীর করতে আগ্রহী।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ তুলা দিবস ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতের জন্য সাম্প্রতিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা একটি বস্তুনিষ্ঠ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রমাণ ভিত্তিক জাতীয় মজুরি নীতির সুস্পষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রদর্শন করেছে, যা গার্মেন্টস শ্রমিকদের মুখোমুখি গুরুতর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে।’
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে পরিচালিত মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য একটি স্থিতিশীল ও প্রত্যাশিত পরিচালনার পরিবেশের জন্য শক্তিশালী শ্রম আইন ও তাদের বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সমর্থন অব্যাহত রেখেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কিন এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা যখন তৈরি পোশাক খাতের দিকে তাকাই, বাংলাদেশে আমাদের মিশনের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো- উন্নত শ্রমমানের মাধ্যমে উপলব্ধ টেকসই এবং বিস্তৃতভাবে ভাগ করা সমৃদ্ধি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও স্থায়িত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি আমাকে শ্রম অধিকারের দিকে মনোনিবেশ করায়।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্মরণ করিয়ে দেন যে ১৬ নভেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ‘অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এম্পাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ শীর্ষক মার্কিন রাষ্ট্রপতির নতুন স্মারকলিপি ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচনের ফলাফল অনুমান করতে যাচ্ছি না: মার্কিন মুখপাত্র
তিনি বলেন, ‘এই নতুন বৈশ্বিক শ্রম কৌশলটি সমস্ত মার্কিন সরকারি সংস্থাগুলোকে সরকার, শ্রম সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে সংগঠন এবং সম্মিলিত দরকষাকষির স্বাধীনতার অধিকার প্রচার ও সুরক্ষার জন্য সম্পৃক্ততা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দুর্দান্ত অংশীদার এবং মার্কিন তুলার দুর্দান্ত গ্রাহক হওয়ার জন্য আমি আবারও আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমি আশা করি আজকের ইভেন্টটি আপনার জন্য উপকারি হবে এবং আপনাদের ব্যবসায় মার্কিন তুলা অন্তর্ভুক্ত করার সুবিধাগুলো সম্পর্কে আপনাদেরকে আরও বেশি শেখাবে।’
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে তৈরি পোশাক শিল্প ও শ্রমিকদের জন্য কী করছেন তা মার্কিন প্রশাসনকে জানাতে অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঢাকার জিরো টলারেন্স নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে ওয়াশিংটন
১১ মাস আগে
প্রথম প্রান্তিকে ২০২.০৭ কোটি টাকা মুনাফাসহ প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে ওয়ালটন
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক অস্থিরতা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক মন্দা, ভূ-রাজনৈতিক সংকটসহ নানা প্রতিকূল ব্যবসায়িক পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রেখেছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় কোম্পানিটি।
এতে বলা হয়, ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২৩) ২০২ দশমিক শূন্য ৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত দেশের শীর্ষ ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স কোম্পানিটি।
আজ কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৩৬তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর এই তথ্য প্রকাশ করে ওয়ালটন।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ হিসাব বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে অর্থাৎ প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০২ দশমিক শূন্য ৭ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয়েছিল ৪৬ দশমিক ১০ কোটি টাকা।
ওয়ালটন হাই-টেক প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক সূচকেও ব্যাপক উন্নতি করেছে। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির রিসিভেবলস্ কালেকশন বা দেনাদারদের থেকে টাকা প্রাপ্তির পরিমাণ বৃদ্ধিসহ অপারেটিং প্রফিট মার্জিন ব্যাপকহারে বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস), শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস)।
অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ব্যাংক ঋণ কমার পাশাপাশি মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণও উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন: জাপানি স্ট্যান্ডার্ডে ব্যাটারি উৎপাদন করছে ওয়ালটন
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে ওয়ালটনের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬ দশমিক ৬৭ টাকা যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিল মাইনাস ১ দশমিক ৫২ টাকা। প্রথম প্রান্তিক শেষে কোম্পানির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত ২৪৮ দশমিক ৮৮ টাকা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৩৫০ দশমিক ৪০ টাকা।
একই সময়ে কোম্পানির পরিচালন মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৫৮ শতাংশ, যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিল ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৬৮ টাকা।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে কোম্পানির আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ ও শতকরা হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক হ্রাস পেয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে বিক্রয় এবং ঋণের বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের শতকরা হার দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৫ দশমিক ২২ এবং ২ দশমিক ৩০ শতাংশ। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল যথাক্রমে ২১ দশমিক ৮১ এবং ৮ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ডে ওয়ালটন স্মার্ট টিভিতে ব্যাপক সাড়া
এ ছাড়াও মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি ২৬২ দশমিক ৪৬ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। সেই ক্ষতি চলতি বছরের আলোচ্য সময়ে প্রায় ৯৯ দশমিক ২৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১ দশমিক ৮৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এদিকে প্রথম প্রান্তিক শেষে কোম্পানির মোট আর্থিক ব্যয় হয়েছে ৬২ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা, যা পূর্বের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিল ৩২২ দশমিক ৪২ কোটি টাকা। ফলে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির কর পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। পূর্বের বছর একই সময়ে কোম্পানির লোকসান হয়েছিল ৩ দশমিক ১২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ওয়ালটন-ডিআরইউ মিডিয়া ফুটবল-২০২৩ শুরু
১ বছর আগে
বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
বিশ্বব্যাংক তার সর্বশেষ হালনাগাদে আগামী জুনে শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে।
এপ্রিলে দেওয়া তার আগের পূর্বাভাসে চলতি অর্থবছরের জন্য ৬ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির কথা বলেছিল বৈশ্বিক ঋণদাতা বিশ্বব্যাংক।
মঙ্গলবার প্রকাশিত সর্বশেষ 'সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট- টুওয়ার্ডস ফাস্টার, ক্লিনার গ্রোথ' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যা বিশ্বের অন্য যেকোনো উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অঞ্চলের চেয়ে বেশি। কিন্তু এটি করোনা মহামারি পূর্বের গতির চেয়ে ধীর এবং এর উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণের জন্য যথেষ্ট গতির নয়।
বিশ্বব্যাংক তার হালনাগাদে আরও বলেছে, বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারি থেকে একটি শক্তিশালী পুনরুদ্ধার করেছে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, আর্থিক খাতে দুর্বলতা, বাহ্যিক চাপ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে মহামারি পরবর্তী ২০২৩ অর্থবছরে পুনরুদ্ধার বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দারিদ্র্য বিমোচনে নতুন ফ্রন্টিয়ারস বলছে, মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় আর্থিক ও রাজস্ব নীতির পাশাপাশি আর্থিক খাতের দুর্বলতার মাধ্যমে সংস্কার দেশের প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচন বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
এতে আরও বলা হয়, একটি একক বাজার-ভিত্তিক বিনিময় হার আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহকে আকর্ষণ করতে এবং অর্থপ্রদানের ভারসাম্য এবং রিজার্ভ জমাতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে দেশে ৪০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিটেন্স এসেছে
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সহায়তায় বাংলাদেশ জীবনযাত্রার অবস্থার উন্নতি করেছে এবং ২০১৬ সালের চরম দারিদ্র্য ৯ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। যা লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে তুলনীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ার গড়ের চেয়ে ভালো।
বিশ্বব্যাংক বলছে, আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা ২ দশমিক ১৫ ডলার (২০১৭ ক্রয় ক্ষমতা সমতা ব্যবহার করে) এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গৃহস্থালি আয় ব্যয় জরিপ ২০২২ এবং ২০১৬ সালের পুনঃনিরীক্ষণের উপর ভিত্তি করে নতুন দারিদ্র্যের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেছেন, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অগ্রগতি বহুমাত্রিক- এটি শিশু মৃত্যুহার ও অপুষ্টি হ্রাস এবং বিদ্যুৎ, স্যানিটারি টয়লেট ও শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধিসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে উন্নতি সাধন করেছে। শহর ও নগরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে দ্রুত দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এসব অর্জন সত্ত্বেও, অসমতা গ্রামীণ এলাকায় কিছুটা সংকুচিত হয়েছে এবং শহরাঞ্চলে প্রশস্ত হয়েছে। বিশ্বব্যাংক অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে জরুরি সংস্কারের জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।’
আরও পড়ুন: অর্থনীতিকে করোনা পূর্ববর্তী অবস্থায় ফেরাতে চায় সরকার
আঞ্চলিক প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, কারণ মহামারি পরবর্তী পুনরুদ্ধার হ্রাস পেয়েছে এবং আর্থিক কঠোরতা, আর্থিক একত্রীকরণ এবং বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাসের সমন্বয়ে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের উপর প্রভাব পড়ে।
ভঙ্গুর আর্থিক অবস্থানের কারণে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাগুলো নেতিবাচক ঝুঁকিসাপেক্ষ। ২০২২ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সরকারি ঋণ জিডিপির গড় ৮৬ শতাংশ, যা খেলাপির ঝুঁকি ও ঋণের খরচ বাড়ায় এবং বেসরকারি খাত থেকে ঋণ সরিয়ে নেয়। এই অঞ্চলটি চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে আরও মন্দা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আরও ঘন ঘন এবং তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে পড়তে পারে।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসার বলেন, 'দক্ষিণ এশিয়া যখন ধারাবাহিকভাবে অগ্রগতি করছে, তখন এই অঞ্চলের বেশিরভাগ দেশই এক প্রজন্মের মধ্যে উচ্চ আয়ের সীমায় পৌঁছানোর মতো দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে না।
তিনি আরও বলেন,‘দেশগুলোকে জরুরিভিত্তিতে আর্থিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করতে হবে এবং বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক জ্বালানি রূপান্তরের ফলে সৃষ্ট সুযোগগুলো কাজে লাগানোসহ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: শিগগিরই এসক্রো বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
১ বছর আগে
এডিবি'র সর্বশেষ প্রতিবেদন: ২০২৪ অর্থবছরকে বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো বছর হিসেবে পূর্বাভাস
২০২৩ অর্থবছরে আনুমানিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় ২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
এডিবির সর্বশেষ প্রতিবেদন 'এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর ২০২৩'-এ এ তথ্য জানানো হয়েছে, যা বুধবার প্রকাশিত হয়েছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এডিবি বলেছে, ইউরোজোনে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদার উন্নতি এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধির উন্নতির প্রতিফলন ঘটেছে।
এডিবি আরও উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি ২০২৩ অর্থবছরে ৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক আর্থিক ঘাটতি ২.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত: এডিবি
রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি বাড়লে চলতি হিসাব ঘাটতি ২০২৩ অর্থবছরে জিডিপির শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কিছুটা কমে ২০২৪ অর্থবছরে জিডিপির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের প্রধান ঝুঁকি হলো বৈশ্বিক চাহিদা প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল হলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির আরও অবনতি।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং বলেন, সরকার বৈদেশিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে তুলনামূলক ভালোভাবে পরিচালনা করছে এবং বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই মূল কাঠামোগত সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা, অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বৃদ্ধি করা, লজিস্টিক উন্নত করা এবং আর্থিক খাতকে গভীর করা, যা বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং মাঝারি মেয়াদে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: দক্ষ জনশক্তি গড়তে বাংলাদেশকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
তিনি উল্লেখ করেন, তেলের অব্যাহত উচ্চ মূল্য অভ্যন্তরীণ পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ সম্প্রসারণ এবং দেশের জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সংস্কারকে ত্বরান্বিত করার জন্য একটি ভালো প্রণোদনা সরবরাহ করে।
এডিও সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ বলা হয়েছে, মাঝারি মুদ্রাস্ফীতি এবং রেমিট্যান্স বৃদ্ধি বেসরকারি খরচ পুনরুজ্জীবিত করতে অবদান রাখবে, যখন বেশ কয়েকটি বড় সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প সম্পন্ন হলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
তবে দেশের আর্থিক নীতি কাঠামো বৃদ্ধির পরে প্রাথমিক উচ্চ সুদের হারের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ হ্রাস পেতে পারে।
বৈশ্বিক নন-ফুয়েল পণ্যের দাম কিছুটা হ্রাস, প্রত্যাশিত উচ্চতর কৃষি উৎপাদন এবং নতুন কাঠামোর অধীনে আর্থিক নীতির প্রাথমিক কঠোরতার সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি ২০২৪ অর্থবছরে হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ২ প্রকল্পে ৪৯০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ দেবে এডিবি
১ বছর আগে
২০২৩ অর্থবছরের পূর্বাভাসের চেয়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেশি: এডিবি
২০২৩ অর্থবছরের (জুনের ৩০ তারিখ শেষ হয়েছে) জন্য ৬ শতাংশের উচ্চতর বরাদ্দ শক্তিশালী নিট রপ্তানিকে প্রতিফলিত করে, কারণ আমদানি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত হ্রাস পেয়েছে এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে কম হ্রাস পেয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
সরবরাহের দিক থেকে সমস্ত আকারের উৎপাদনকারী সংস্থাগুলো প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য সহায়ক সরকারি নীতিগুলো ব্যবহার করেছে। বন্যা, সাইক্লোন এবং খরার কারণে ফসলের ক্ষতি আংশিকভাবে ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে পূরণ করা হয়েছিল।
সেবা খাত উচ্চতর গুদাম ও সহায়তা কার্যক্রম এবং স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবার মাধ্যমে বজায় ছিল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন এডিবি’র
চাহিদার দিক থেকে জনসাধারণের ভোগের বৃদ্ধি প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে, যেহেতু জনসাধারণের বিনিয়োগও বেড়েছে।
এডিও এপ্রিল ২০২৩ এর পূর্বাভাস ২০২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির জন্য ৬ দশমিক ৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রয়েছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এ বছর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য তার প্রবৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বজায় রেখেছে, কারণ শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা এই অঞ্চলের পুনরুদ্ধারকে সমর্থন করে চলেছে।
বুধবার প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) জুলাই ২০২৩ অনুযায়ী, জ্বালানি ও খাদ্যদ্রব্যের দাম কমে যাওয়ায় মুদ্রাস্ফীতি কমতে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এপ্রিলে ৪ দশমিক ২ শতাংশের তুলনায় পূর্বাভাসে উন্নয়নশীল এশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি এই বছর ৩ দশমিক ৬ শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
এদিকে, ২০২৪ সালের জন্য মুদ্রাস্ফীতির দৃষ্টিভঙ্গি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ করা হয়েছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন (পিআরসি) পুনরায় চালু হওয়ার ফলে এই অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি জোরদার হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
সেবা খাতে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদার মধ্যে পিআরসির অর্থনীতি এই বছর ৫ শতাংশ প্রসারিত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, এপ্রিলের পূর্বাভাস থেকে অপরিবর্তিত। যাইহোক, উন্নয়নশীল এশিয়ার ইলেকট্রনিক্স এবং অন্যান্য উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির চাহিদা ধীর গতিতে চলছে, কারণ আর্থিক কঠোরতা প্রধান উন্নত অর্থনীতির অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপকে টেনে আনছে। আগামী বছরের জন্য এই অঞ্চলের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এপ্রিলের ৪ দশমিক ৮ শতাংশ অনুমান থেকে সামান্য সংশোধন করে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যালবার্ট পার্ক বলেন, ‘এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল স্থিতিশীল গতিতে মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার অব্যাহত রেখেছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং পরিষেবা ক্রিয়াকলাপ প্রবৃদ্ধিকে চালিত করছে, যখন অনেক অর্থনীতি পর্যটনে শক্তিশালী পুনরুদ্ধার থেকে উপকৃত হচ্ছে। যাইহোক, শিল্প ক্রিয়াকলাপ ও রপ্তানি দুর্বল রয়ে গেছে এবং আগামী বছরের জন্য বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ও চাহিদার দৃষ্টিভঙ্গি আরও খারাপ হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ফাতিমা ইয়াসমিনকে সেক্টর ও থিমের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে এডিবি
১ বছর আগে
শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছাড়া ৭.৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন অসম্ভব: বিজিএমইএ সভাপতি
বর্তমান সংকটকালীন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স এবং বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের নিম্নমুখী ধারায় সরকার আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ঘোষণা দিয়েছে, তা শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছাড়া জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান
শুক্রবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাজেটের ইতিবাচক দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, উচ্চতর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা ও রাজস্ব বাড়ানো।
ফারুক বলেন, যেহেতু জিডিপি’র প্রায় ৩৫ দশমকি ৬ শতাংশ আসে শিল্প খাত থেকে, যা ২০৪১ সাল নাগাদ ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। শিল্পের সকল সুযোগ ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ তার।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা মনেকরি অর্থনীতিকে প্রানবন্ত রাখতে, প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে অর্থনৈতিক সুরক্ষা দিয়ে একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতি তৈরি করার জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে যা বর্তমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত যৌক্তিক। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় পোশাক শ্রমিকদের অন্তভর্‚ক্ত করার বিষয়টির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানিমুখী শিল্পখাতের জন্য ইতিবাচক প্রস্তাবগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, আমদানি ও রপ্তানিতে ব্যবহৃত কন্টেইনার আমদানিতে করভার কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা। কৃত্রিম আঁশের তৈরি কাটা ফেব্রিক্স এবং নষ্ট টুকরা (এক মিটারের বেশি দীর্ঘ নয়); বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেষ্টিং ইনস্টিটিউশনের নিকট নমুনা হিসেবে বিনামূল্যে সরবরাহকৃত ফেব্রিক্স (তিন বর্গমিটারের নীচের আকৃতির) এবং ট্যাপস অ্যান্ড ব্রেইডসের উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদান।
ফারুক প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩টি পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের উপর ১৫ শতাংশ মূসক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে সবধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানো ও এলএনজি ও এলপিজি’র আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি করেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেলেও নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের জায়গাটিতে আমরা এখনও পিছিয়ে আছি। আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সব ধরনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
ফারুক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণায় আমরা রপ্তানিমূখী বস্ত্র ও তৈরি পোশাকখাতের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দিক নির্দেশনা খুঁজে পাইনি। বিশেষ করে আমরা উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব না করে ২০২১-২২ অর্থবছরের যেটি ছিল, অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করার জন্য প্রস্তাব করেছিলাম। কারণ এমনিতেই কোভিডের কারণে আমাদের শিল্পে যে ক্ষতি হয়েছে, সেটি পুষিয়ে নিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। বাজেট বক্তব্যে অন্যান্য বছরের মতো রপ্তানিখাতগুলোর জন্য প্রণোদনা বাবদ অর্থ বরাদ্দের কোনো ঘোষণা আসেনি বলেও জানান তিনি।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০২১ সালের আগষ্ট মাসে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে বর্তমানে ৩০ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে এসেছে। সে সময়টিতে কিন্তু আমাদের রপ্তানি বেড়েছে, রপ্তানি ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩১ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ ঐ এক বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, আর চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। যদিও শেষের ২মাসে রপ্তানি কমে এসেছে।
বর্তমান সংকট তুলে ধরে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের ফলে আমাদের পণ্যের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। অনেক কারখানা সক্ষমতার বাইরে চলছে, আগামি মাসগুলোতে আমরা এই অবস্থা উত্তরণের কোন লক্ষণ দেখছি না। এর উপর ১ জুলাই থেকে ব্যাংক সুদের যে ক্যাপ নির্ধারিত ছিল তা তুলে দেয়া হচ্ছে। এর ফলে আমাদের ব্যয় আরও বাড়বে এবং আমরা প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাব।
তিনি বলেন, আমাদের পোশাকের প্রধান দুই বাজার আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে ঋণের সুদের হার অনেক বেড়েছে; মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমেছে। পোশাক রপ্তানির জন্য ইউরোপের জার্মানি অফিসিয়ালি জানিয়েছে, দেশটি মন্দার কবলে পড়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর অবস্থাও ক্রমশ সঙ্গীন হচ্ছে। আশঙ্কার বিষয় হলো- ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের জানুয়ারি-মার্চ মাসের আমদানি তথ্য নেগেটিভ প্রবৃদ্ধি দেখাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পোশাক আমদানি নভেম্বরে কমেছে ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ, এবং ডিসেম্বরে কমেছে ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
নভেম্বর-মার্চ সময়ে ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি ভ্যালুতে বেড়েছে ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ভলিউমে কমেছে ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। অবশ্যই পণ্যের রপ্তানি মূল্য বেড়েছে বলে এমনটি ঘটেছে।
চলমান সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে উৎসে কর ২০২১-২২ অর্থবছরের ন্যায় শূন্য দশমকি ৫০ শতাংশ ধার্য করে আগামী ৫ বছর পর্যন্ত তা কার্যকর করার জন্য পুনরায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ফারুক।
এছাড়া নগদ সহায়তার উপর আরোপকৃত ১০ শতাংশ কর প্রতাহারের অনুরোধও জানান তিনি। যেহেতু নগদ সহায়তা কোন ব্যবসায়িক আয় নয়, তাই নগদ সহায়তার অর্থকে করের আওতার বাইরে রাখাই যুক্তিসংগত বলে দাবি তার।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হাইকমিশনের সহায়তা চায় বিজিএমইএ
করারোপ করা সংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাবনাও তুলে ধরে তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের মূল্যায়নের সময় স্বাভাবিক হারে ৩০ শতাংশ কর আরোপ না করে কর্পোরেট কর হার ১২ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। তৈরি পোশাক শিল্পের সাব-কন্ট্রাক্ট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চুক্তির মূল্য পরিশোধের সময় প্রস্তাবিত ধাপ অনুযায়ী উৎসে কর ধার্য করা, উক্ত করকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করা, অন্যথায় মূল্যায়নের সময় কর আরোপকালে কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২ শতাংশ হারে কর ধার্য করা। রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য পরিশোধিত ফি হতে উৎসে আয়কর কর্তনের হার ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা।
তিনি বলেন, বিগত চার দশকে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছলেও আমাদের পণ্যের উপাদান পরিবর্তন তুলনামুলকভাবে কম হয়েছে। বিশ্বে মোট টেক্সটাইল চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই নন-কটন এবং বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যের ৫২ শতাংশ পণ্য নন-কটনের। আর আমাদের নন-কটন পোশাকের রপ্তানির হার মাত্র ২৬ শতাংশ। সরকারকে নন-কটন খাতে বিনিয়োগ ও রপ্তানি উৎসাহিত করতে এবং প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে নন-কটন পোশাক রপ্তানির উপর ১০ শতাংশ (রপ্তানি মূল্যের) হারে বিশেষ প্রনোদনা প্রদানের অনুরোধ করেন তিনি।
ফারুক বলেন, টেক্সটাইল ও পোশাকখাত থেকে বছরে প্রায় ৫ লাখ টনের মতো ঝুট তৈরি হয়। এগুলো রিসাইকেল করে পুনরায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব, যা প্রকারান্তরে আমাদের দেশজ প্রবৃদ্ধি আনবে। তাই, এ খাতে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে রিসাইকেলিং শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রক্রিয়া, পণ্য ও সেবাকে শুল্ক ও ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি করেন তিনি।
বন্ড লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ দুই বছরের পরিবর্তে ৩ বছর করার দাবি করেন ফারুক। এছাড়া কাঁচামাল আমদানিতে এইচ. এস. কোড সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের বিষয়টি বিবেচনার জন্যও পুনরায় অনুরোধ করেন ফারুক।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিশ্বে ব্যবসা সহজীকরণে বাংলাদেশের অবস্থান আরও উন্নত করার জন্য সেবা প্রদানকারী সংস্থা, যেমন কাষ্টমস, বন্দর এর সেবা প্রাপ্তি আরও গতিশীল ও সহজ করা গেলে তা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশকে আরও উন্নত করবে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি দিতে প্রয়োজন নীতি সহায়তা ও নীতি স্থিতিশীলতা। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক ও রাজস্ব সংক্রান্ত নীতি স্থির করা হলে বিনিয়োগকারীরা স্বস্তির সঙ্গে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
বিশ্ব পোশাক বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার মাত্র ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এই শেয়ারটি ১২ শতাংশে এ উন্নীত করা এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিরিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তারা কাজ করছেন বলেও জানান ফারুক হাসান।
আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তোরণে বাংলাদেশকে সহায়তায় ইইউ’র প্রতি বিজিএমইএ প্রধানের আহ্বান
১ বছর আগে
ইউরোপে পোশাক রপ্তানিতে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানিকারক শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা, ইউরোস্ট্যাট ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রকাশিত পোশাক আমদানির সর্বশেষ পরিসংখ্যানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানিতে সরবরাহকারী সকল শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের। উল্লেখিত সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ থেকে ১৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। যেখানে বিশ্ব থেকে তাদের মোট আমদানির পরিমাণ ছিল ৬৭ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট পোশাক আমদানিতে ২২ দশমিক ৮৯ শতাংশ অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ইউরোপের পোশাক আমদানির দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে।
আরও পড়ুন:রপ্তানিতে সামগ্রিক পতন সত্ত্বেও অক্টোবরে তৈরি পোশাকে আয় বেড়েছে
২০২২ সালের প্রথম আট মাসে ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানি ৪৫ দশমিক ২৬ শতাংশ বেড়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানির প্রধান শীর্ষস্থানীয় উৎস চীন। দেশটি ২৮ দশমিক ০৬ শতাংশ শেয়ার নিয়ে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
২০২২ সালের জানুয়ারি-আগস্টে চীন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানি ১৮ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌছেঁছে। একই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানির তৃতীয় বৃহত্তম উৎস তুরস্কের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
তুরস্ক থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯৭ ভাগ। একই সময়ে, ইইউ ভারত থেকে তিন দশমিক ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। ভারত থেকে ইইউ এর আমদানি আগের বছরের তুলনায় ২৮ দশমিক ৮৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ অন্যান্য শীর্ষ দেশগুলো হলো কম্বোডিয়া ৪২ দশমিক ২১ ভাগ, পাকিস্তান ৩১ দশমিক ৩৪ ভাগ এবং ইন্দোনেশিয়া ৩৫ দশমিক ৪১ ভাগ।
আরও পড়ুন: ইতালির সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ আছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
১ বছর আগে