যৌন নিপীড়ন
খুলনায় ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
খুলনার তেরোখাদা উপজেলার আজগড়া ইউনিয়নের খড়বাড়িয়া গ্রামের খাদিজাতুল কোবরা (রা) মহিলা দাখিল মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন শিকদারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে মাদরাসার শিক্ষক আলাউদ্দিন শিকদার ক্লাস নেওয়ার সময় বিভিন্ন অযুহাতে ছাত্রীর শরীরে স্পর্শ করে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় ব্যবসায়ী সুমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাদরাসা থেকে বাড়িতে ফিরে কান্নাকাটি করলে তার মা কারণ জিজ্ঞেস করলে সে ওই ঘটনার কথা খুলে বলে।
প্রতিবেশীরা আলাউদ্দিন শিকদার সম্পর্কে জানান, পূর্বেও ওই শিক্ষক একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছেন। মাদরাসার এক ছাত্রীকে বিয়ে করে তিন বছর পর তালাক দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান জানান, ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বৃহস্পতিবার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষককে আজ সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নেতানিয়াহু ও হামাসের নিহত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
৪ সপ্তাহ আগে
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মাদরাসা সুপার গ্রেপ্তার
খুলনায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মো. হাসিবুর রহমান হাসিব নামে এক মাদরাসার সুপারকে (মাদরাসা প্রধান) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার নগরীর সোনাডাঙ্গা সৈয়দ আলী হোসেন সড়কের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নিপিড়নের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার মো. হাসিবুর রহমান হাসিব শহীদ শেখ আবু নাসের দাখিল মাদরাসার সুপার (মাদরাসা প্রধান)।
এর আগে শুক্রবার শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মাদরাসা সুপার মো. হাসিবুর রহমান হাসিবের বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। শিশুটি বর্তমানে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই শিশু ও তার ভাই প্রতি রাতে হুজুরের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে পড়তে গেলে হুজুর ভুক্তভোগীর ভাইকে ওজু করতে পাঠান। একা পেয়ে শিশুটির যৌন নিপীড়ন করে। বাড়ি ফিরে শিশুটি কাঁদতে থাকে এবং একপর্যায়ে মাকে সব বলে দেয়। এ ঘটনায় রাতেই এলাকাবাসী ওই শিক্ষকের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন।
সোনাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) উত্তম কুমার মিত্র বলেন, মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া আজ রবিবার আদালতে তার রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে বলেও জানান উত্তম কুমার মিত্র।
আরও পড়ুন: জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলায় শিক্ষার্থীর নামে জিডি
যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জবি শিক্ষক শাহেদ ইমনকে বরখাস্ত ও চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিমকে অব্যাহতি
৭ মাস আগে
যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জবি শিক্ষক শাহেদ ইমনকে বরখাস্ত ও চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিমকে অব্যাহতি
শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এরই সঙ্গে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতার অভিযোগে অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে সিদ্ধান্তের কথা জানান জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
উপাচার্য বলেন, 'যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের দেওয়া প্রতিবেদনে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেট এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীর দায়ের করা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ফাইরুজের আত্মহত্যার ঘটনায় জবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী সাময়িক বরখাস্ত
এ বিষয়ে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘আমি উপাচার্য হিসেবে এখানে আসার পর আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।’
তিনি আরও বলেন, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ নিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: বিচারের দাবিতে জবি আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে গঠিত কমিটি সম্পর্কেও সিন্ডিকেট সদস্যদের জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
৯ মাস আগে
কুষ্টিয়ায় ২ মাদরাসাছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন: বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দুই মাদরাসা ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযুক্ত বাড়িয়ালার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় এই মামলাটি করে।
অভিযুক্ত হাজী মো. শহিদুল ইসলাম পৌরসভার দুর্গাপুর এলাকার মৃত নুরুল হক বিশ্বাসের ছেলে। তিনি উপজেলা সাব রেজিট্রার’র কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ট্যাক্স কালেক্টর ও দুই সন্তানের জনক।
আরও পড়ুন: যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন: স্ত্রীর মামলায় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
মাদরাসার পরিচালনা পরিষদ জানায়, প্রায় সাত মাস আগে মহিলা মাদরাসাটি দুর্গাপুর এলাকার হাজী মো.শহিদুল ইসলামের বাড়িতে স্থানান্তর করা হয়। মাদরাসার একটি কক্ষে বাড়ি মালিক ও তার স্ত্রী থাকেন। মোবাইল চার্জ দিতে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই ওই কক্ষে যায়। সেই সুযোগে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করেন বাড়ির মালিক মো.শহিদুল ইসলাম। এরপর থেকে হত্যার হুমকি দিয়ে ওই ছাত্রীকে নিয়মিত যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন তিনি।
গত বুধবার আরেক ছাত্রী মোবাইল চার্জ দিতে গিয়ে শহিদুলের অপকর্ম দেখে ফেলে। তাকেও হত্যার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক যৌন নিপীড়ন করে বাড়ির মালিক শহিদুল।
আরও পড়ুন: মীরসরাইয়ে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ৩ চালকের বিরুদ্ধে মামলা
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে প্রভাবশালী একটি মহল থানায় অভিযোগ না করে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। তবে শুক্রবার মাদরাসার দুই শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলন চলাকালে গণমাধ্যমকর্মীরা কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলমকে অবহিত করলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং মামলার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল আতিকুল ইসলামকে কুমারখালী থানায় পাঠান।
আরও পড়ুন: রংপুরে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ: ২ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা
অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ২০১৯ সালে হজ্জ করেছি। এমন কাজ আমি করতে পারি না আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
২ বছর আগে
যশোরে ৫ বছরের শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বৃদ্ধ আটক
যশোরে পাঁচ বছরের শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক বৃদ্ধকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক মোজাম্মেল হোসেন (৫৬) সদর উপজেলার ডহেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে মোজাম্মেল ওই শিশুকে টিভি দেখানোর কথা বলে বাড়ির পাশে তার ভাতিজার বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় ওই বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে জোর করে শিশুটিকে যৌন নিপীড়ন করেন মোজাম্মেল।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের সাথে বিএনপির সংঘর্ষ, আটক ৭
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, পাঁচ বছরের এক শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মোজাম্মেল হোসেন নামে এক বৃদ্ধকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে পলাতক আসামিসহ আটক ৫
৩ বছর আগে
মে মাসে ১০৪ শিশু, ১৩৬ নারী নির্যাতনের শিকার: মহিলা পরিষদ
মে মাসে মোট ২৪০ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এর মধ্যে ১০৪ জন কন্যাশিশু এবং ১৩৬ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এ তথ্য জানায়।
দেশের ১৩টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯৫ জন, তার মধ্যে ৪৫ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার, ৫ জন কন্যাশিশু সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ৩ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যার শিকার এবং ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছে ২ জন কন্যাশিশু।
এছাড়াও ৭ জন কন্যাশিশুসহ ১২ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। একজন শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে। ২ জন কন্যাশিশুসহ ৭ জন যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
আরও পড়ুন: এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে নড়াইলে পালিত পিতা কারাগারে
প্রতিবেদনে বলা হয়, অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছে একজন। উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছে ২ জন। ৭ জন কন্যাশিশু অপহরণের ঘটনার শিকার ও ৩ জন কন্যাশিশুকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে ১১ জন কন্যাশিশুসহ ৪১ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও ২ জন কন্যাশিশুসহ ৬ জনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
অঅরও পড়ুন: চাঁদপুরে হাত-পা বেঁধে ৯ বছরের শিশু ‘ধর্ষণ’, আটক ১
পিরোজপুরে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভেযোগে আটক ২
এছাড়াও, যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৯ জন, তার মধ্যে ৩ জনকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২ জন কন্যাশিশুসহ মোট ৬ জন। এছাড়াও আত্মহত্যায় প্ররোচনার শিকার একজন ও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে একজন। বিভিন্ন নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছে একজন কন্যাশিশুসহ ৫ জন। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখানের শিকার ২ জন। ৯ জন কন্যাশিশুসহ ৩৬ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেছে ৩টি। জোরপূর্বক বিয়ে ঘটনা ঘটেছে একটি। সাইবার অপরাধের শিকার ২ জন কন্যাশিশুসহ ৩ জন।
৩ বছর আগে
আপনজনদের হাতে ইন্টারনেটে যৌন নিপীড়নের শিকার ৬৯ শতাংশ
ইন্টারনেটে একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি-ভিডিও ছড়ানোর মাধ্যমে যৌন নিপীড়নে ভুক্তভোগীদের ৬৯ দশমিক ৪৮ শতাংশই আপনজনদের হাতে শিকার হন।
এর মধ্যে ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী ও অপরাধীর মধ্যে প্রেম ঘটিত সম্পর্কের তথ্য উঠে এসেছে এবং ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ ঘটনায় অপরাধী ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত।
প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বিষয়ে দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা না হলে এই সামাজিক ব্যাধি মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:ইন্টারনেটে নারীর নিরাপত্তায় পুলিশের নতুন শাখা
রবিবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন।
‘বাংলাদেশে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) চ্যাপ্টারের গবেষণা সেলের সদস্যরা।
দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকাগুলো থেকে সংগৃহীত ২০২০ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫৪টি অপরাধের ঘটনা বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন:অশ্লীল ছবি প্রকাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি, মাগুরায় যুবক গ্রেপ্তার
এ উপলক্ষে রবিবার সকাল ১১টায় আয়োজিত ওয়েবিনারে সংগঠনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ, ঢাবির অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ ইউনিটের সিনিয়র সহকারী কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম।
গবেষণা প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনের রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিরভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার মনিরা নাজমী জাহান।
অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে কিশোর বয়স থেকে সন্তানদের মধ্যে যথাযথ প্যারেন্টিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। পিতামাতা দুজনেই চাকরিজীবী হলে সন্তানদের মনিটরিং করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। তরুণ-তরুণীদের স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ধারাবাহিক যথাযথ সেক্স এডুকেশন খুব প্রয়োজন। একই সাথে ধর্মীয়-সামাজিক শিক্ষা ও সময়ের যথাযথ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত কাজ দিতে হবে তরুণদের।
খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, অপরাধের মাত্রায় বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে ভিন্নতা দেখা যায়। বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে অনলাইন কার্যক্রম বেড়েছে। ফলে এ ধরনের অপরাধ করার জন্য সময় বেশি পাচ্ছে। এজন্য অপরাধ প্রতিরোধে বেশি বেশি সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় কলেজছাত্রীর অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে প্রচারের হুমকি, যুবক গ্রেপ্তার
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, অপরাধের শিকার হওয়ার পর ভুক্তভোগীরা বেশিরভাগই সামাজিক কারণে আপনজনদের সঙ্গে আলোচনা করে না। এটি একদমই উচিত নয়। ঘটনার শুরুতেই কাউকে না জানালে পরবর্তীতে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে যায়। এটি সচেতনতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিজ নিজ জায়গা থেকে অপরাধ প্রতিরোধে আওয়াজ তুলতে হবে, তাহলে অপরাধের প্রবণতা কমবে।
সৈয়দ নাসিরুল্লাহ বলেন, আইন না জানার কারণে অনেকে অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে ব্যাপক সচেতনতামূলক কাজ করা প্রয়োজন। কারিগরী জ্ঞান যাদের রয়েছে তাদের অপরাধ করার প্রবণতা বেশি। সাধারণত মধ্যবয়সীরা এর মধ্যে পড়ে। প্রতি থানায় সাইবার ইউনিট করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এটি হলে অপরাধ আরও নিয়ন্ত্রণ হবে।
তানজিম আল ইসলাম বলেন, বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ, আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য সাইবার অপরাধ বিষয়ক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি খুব প্রয়োজন। এছাড়া সাইবার অপরাধের বিচার কার্যক্রম কেন দীর্ঘায়িত হচ্ছে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই নিয়ে গবেষণা হতে পারে।
গবেষণায় গত এক বছরে পুরো দেশব্যাপী এ ধরনের অপরাধপ্রবণতা, অপরাধীর আদ্যোপান্ত, ভুক্তভোগীর অবস্থান ও হয়রানির মাত্রা এবং সামগ্রিক অর্থে সাইবার স্পেসে ব্যক্তির নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে ৯২ দশমিক ২০ শতাংশ ভুক্তভোগীই নারী। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়স্ক ভুক্তভোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা প্রায় ৫৬.৪৯ শতাংশ এবং ৩২.৪৭ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের নিচে)। জেন্ডারভিত্তিক ভুক্তভোগীর বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে ১৮ থেকে ৩০ বছর এবং ১৮ বছরের নিচে পুরুষের তুলনায় নারী ভুক্তভোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক ভুক্তভোগীর ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা বেশি।
অঞ্চলভেদে ভুক্তভোগীর সংখ্যা:
সবচেয়ে বেশি যৌন নিপীড়নের সংবাদ পাওয়া গেছে ঢাকা বিভাগে, যার পরিমাণ ৩৩.১২ শতাংশ। এর পরেই ১৬.৮৮ শতাংশ নিয়েই অবস্থান করছে চট্টগ্রাম। এছাড়া জেলা অনুযায়ী যৌন নিপীড়নের অধিকাংশ ঘটনা বিভাগীয় শহরে ঘটছে।
যৌন নিপীড়নের ধরন ও পরিণতি:
ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও প্রচারের ভয় দেখিয়ে যৌন নিপীড়নমূলক অপরাধ প্রবণতার মধ্যে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, আত্মহত্যা, আত্মহত্যার চেষ্টা, যৌনপণ, হত্যা-চেষ্টার মতো ঘটনাগুলোকে পরিসংখ্যানমূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, হয়রানিমূলক যৌন নিপীড়নের সংখ্যা শতকরা ৬২ দশমিক ৯৯ শতাংশ, যা সর্বাপেক্ষা বেশি। অন্যদিকে ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীর সংখ্যা শতকরা ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ, যৌনপণ ১৩.৬৪ শতাংশ, আত্মহত্যা ৩.২৫ শতাংশ, আত্মহত্যার চেষ্টা ১.৯৫ শতাংশ, খুনের চেষ্টা ০.৬৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ১.৯৫ শতাংশ ।
সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যম:
সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড (ছবি ও ভিডিও) ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে এবং ভুক্তভোগীকে নিষ্ক্রিয় কিংবা হয়রানিমূলক পরিস্থিতিতে ফেলতে নিপীড়নকারী গোপনে, চাপ প্রয়োগ করে কিংবা প্রতারণা-প্রলোভনের আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর বিকৃত কন্টেন্ট সংগ্রহ করতে যে মাধ্যমগুলো হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করে তার বিশ্লেষণমূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরলে দেখা যায় যে ভিডিও এবং স্থির চিত্র আকারে ধারনকৃত কন্টেন্টের সংখ্যা যথাক্রমে ৫১.৯১ শতাংশ এবং ৩৫.৫২ শতাংশ, যা অন্যান্য মাধ্যমের বিবেচনায় তুলনামূলক সর্বাধিক।
যৌন নিপীড়নমূলক কন্টেন্টগুলোর মধ্যে ৩৫.৭১ শতাংশ প্রকাশ্যে সাইবার স্পেসে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে বিভিন্ন প্রকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । ৪০.৯১ শতাংশক্ষেত্রে যৌন নিপীড়নকারী কন্টেন্ট ব্যক্তিগতভাবে ভুক্তভোগীকে দেখিয়ে তার উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করেছে। এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে সর্বাধিক সংখ্যক কন্টেন্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর জন্য নিপীড়নকারী আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের কূট কৌশল ও প্রতারণার।
ভুক্তভোগী এবং অপরাধীর মধ্যে সম্পর্ক:
ভুক্তভোগী এবং অপরাধীর মধ্যেকার বিদ্যমান সম্পর্ক বিবেচনায় নিলে দেখা যাচ্ছে যে, ৩৫.৭১ শতাংশ ক্ষেত্রে অপরাধী ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত। এছাড়া প্রায় ৩৩.৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী এবং অপরাধীর মধ্যে প্রেম ঘটিত সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। অন্যদিকে অপরিচিত নিপীড়নকারীর দ্বারা আক্রান্ত ভুক্তভোগীর সংখ্যা শতকরা ১৪.২৯ শতাংশ।
যৌন নিপীড়নের কারণ:
যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্য হিসেবে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে অন্যতম মুখ্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে, যা ৬৩.০৭ শতাংশ ঘটনায় পাওয়া গেছে। পাশাপাশি কারণ হিসেবে প্রতিশোধমূলক প্রবৃত্তি ৬.২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে, অর্থ-সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার প্রবণতা ২৩.৮৬ শতাংশ ক্ষেত্রে।
এছাড়াও চাকরির বদলি সংক্রান্ত তদবির, খামখেয়ালিপনা এবং অন্যান্য বিবিধ কারণগুলো প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে যথাক্রমে ০.৫৭, ০.৫৭ এবং ৫.৬৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ।
প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ:
প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে উন্নত দেশগুলোর আদলে নারী ও শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ণ ও সচেতনতা তৈরিসহ ১১টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে। অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে গণমাধ্যমে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচার, প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, যথাযথ প্রক্রিয়ায় সেক্স-এডুকেশন বৃদ্ধি, ধর্মীয় অনুশাসন ও ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিত করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে প্রশিক্ষিত জনবল বৃদ্ধি, ভুক্তভোগী ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে যথাযথ সমন্বয় নিশ্চিত করা, বেকারত্ব দূরীকরণ ও অপরাধপ্রবণ বয়সসীমা নির্ধারণের মাধ্যমে তরুণদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা, পর্ণোগ্রাফিক আগ্রাসন ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসন বন্ধে দেশীয় সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ ও পৃষ্ঠপোষকতা, সন্তানদের সাইবার এক্টিভিটির ওপর পিতামাতার নজরদারি।
৩ বছর আগে
ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুকে পুনর্বাসনসহ ক্ষতিপূরণ দিতে রুল
সারা দেশে ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুদের প্রযোজ্য ক্ষেত্রে (প্রমাণিত হোক বা না হোক) পুনর্বাসনসহ ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরির নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
৩ বছর আগে
কোচিং সেন্টারে যৌন নিপীড়নের দায়ে শিক্ষক গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ুয়া ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে কোচিং সেন্টারের এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
৩ বছর আগে
নলছিটিতে যৌন নিপীড়নের দায়ে স্কুল শিক্ষকের নামে মামলা
ঝালকাঠির নলছিটিতে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
৪ বছর আগে