মুস্তফা কামাল
পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনলে কোনো প্রশ্ন করা হবে না: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, যারা পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনবে তাদের কোনো প্রশ্ন করা হবে না, আইন করে তাদের সেই সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে তার পদক্ষেপের পক্ষে তিনি বলেন, ত্রুটিপূর্ণ সিস্টেমের কারণে এই জাতীয় বেশিরভাগ অর্থ অঘোষিত ও পাচার হয়ে গেছে।
শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এশিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপের অনেক দেশ অর্থ পাচারকারীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: বাজেট অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে: অর্থমন্ত্রী
সদ্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে ঘোষিত একটি বিধান অনুযায়ী, আয়কর কর্তৃপক্ষসহ কোনো কর্তৃপক্ষ বিদেশে অবস্থিত কোনো সম্পদের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না যদি কোনো করদাতা এই ধরনের সম্পদের ওপর কর দেন।
বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে ১৫ শতাংশ, বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে ১০ শতাংশ এবং বাংলাদেশে পাঠানো নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব করেন মন্ত্রী।
এই সুযোগটি ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
মুস্তফা কামাল বলেন, সরকার কিছু হাতিয়ার ব্যবহার করবে যাতে মানুষ পাচার হওয়া অবৈধ টাকা ফেরত আনতে উৎসাহিত হবে। তবে যারা যারা নিয়মিত কর প্রদান করে এটি তাদের নিরুৎসাহিত করবে না।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: সম্পূর্ণ অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা করেছেন অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রীর দাবি, প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সমাজের সকল অংশের জন্য বিশেষ করে দরিদ্রদের জন্য সুবিধা নিয়ে আসবে।
তিনি বলেন, ‘আমি একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি এবং দারিদ্র্য থেকে বেড়ে উঠেছি। তাই, আমি দরিদ্রদের কষ্ট অনুভব করি।’
তিনি বলেন, নতুন বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা-বেষ্টনী কর্মসূচির জন্য বরাদ্দসহ অনেক ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পাচারকৃত অর্থের কিছু অংশ দুর্নীতি ও ঘুষ দিয়ে অবৈধভাবে আয় করা হলেও নতুন বিধানের পর এ ধরনের বেশির ভাগ অর্থই ফেরত আসবে।
তিনি বলেন, জাতীয় বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাজারে চাহিদা নিয়ন্ত্রণে সংকোচনের নীতি অনুসরণ করা।
মূল্যস্ফীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করা পণ্য ও পণ্যের দামের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সে কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: রেমিটেন্সের সন্তোষজনক প্রবৃদ্ধি শিগগিরই ফিরবে, প্রত্যাশা অর্থমন্ত্রীর
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে যার প্রভাব স্থানীয় বাজারে পড়েছে। এটি একটি চ্যালেঞ্জিং সময় এবং সরকার তার অভিজ্ঞতা থেকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে।
তিনি বলেন, রেমিটেন্স প্রেরকদের জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনার কারণে বৈদেশিক রেমিটেন্স ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে এবং ৫০ বিলিয়ন বেঞ্চমার্ক অতিক্রম করবে।
তবে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকরা কী পরিমাণ রেমিটেন্স বাইরে চলে যাচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি বিরত থাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এএসএম শামসুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: মূল্যস্ফীতিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী
২ বছর আগে
ভর্তুকি বা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ভর্তুকি বা মূল্যস্ফীতি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছি।’
বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবির মতো আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো যখন নিম্নমুখী বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির আশঙ্কা করছে, তখন বাংলাদেশ কেন উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার চলতি অর্থবছর ২০২১-২২ এর জন্য সাত দশমিক দুই শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পরিবর্তন করেনি। এছাড়া আগামী অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধি সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ বিবেচনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হবে: অর্থমন্ত্রী
সরকার এখনও বিশ্বাস করে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে কোনো অনিশ্চয়তা সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত ঘাটতি বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বের সব দেশই মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির সমস্যায় পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা মুদ্রাস্ফীতি ব্যবস্থাপনায় বেশ ভালো অবস্থানে আছি।’
যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধে কমবেশি সব দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বাংলাদেশও এর প্রভাবের বাইরে নয়।
কামাল বলেন, ‘আজ পর্যন্ত যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হওয়ার কোনো দৃশ্যমান লক্ষণ নেই। তবে আমরা আশা করি যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে।’
আরও পড়ুন: বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তিতে নিরাপদ অবস্থানে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করবে সরকার: অর্থমন্ত্রী
২ বছর আগে
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করবে সরকার: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রবাসীসহ দেশের সব নাগরিকের জন্য প্রস্তাবিত পেনশন ব্যবস্থার রূপরেখা নিয়ে সরকার অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করবে।
তিনি বলেন, ‘বিষয়গুলো এখনও গবেষণা পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সবার সঙ্গে কথা বলব।’
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরপর দুই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
মন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে জনগণের মতামত চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ আইন ২০২২’ শিরোনামের একটি খসড়া আইন আপলোড করা হযেছে। আগ্রহীদের এ বছরের ১২ এপ্রিলের মধ্যে তাদের মতামত পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, সরকার প্রবাসীসহ দেশের সকল নাগরিকের জন্য একটি সর্বজনীন সাধারণ পেনশন ব্যবস্থা চালু করবে।
ঘোষণায় তিনি বলেছিলেন, শিগগিরই একটি সরকারি কমিটি গঠন করা হবে এবং এটি আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: দেশের সব নাগরিকের জন্য পেনশন ব্যবস্থা শিগগিরই: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, পেনশন কর্মসূচির অধীনে দেশের ১৮-৫০ বছর বয়সী প্রতিটি নাগরিক একই পরিমাণ সরকারি অনুদানের সঙ্গে তাদের মাসিক আমানত ফেরত পাবেন।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে স্কিমটি নাগরিকদের জন্য ঐচ্ছিক। তবে পরবর্তীতে এটি সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হবে।
পেনশন প্যাটার্নের বর্ণনা দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, নাগরিকরা প্রতি তিন মাস পর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দেবেন।
তিনি বলেন, একজন নাগরিককে ৬০ বছর বয়সের পরে এই পেনশন পাওয়ার জন্য কোনও বিরতি ছাড়া টানা ১০ বছরের জন্য অর্থ জমা করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, এছাড়া কেউ চাইলে এই প্রকল্প থেকে মোট জমার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারে।
আরও পড়ুন: সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রণয়নের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
সাংবাদিকরাও সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসবে: তথ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে
কর নিয়ে নতুন যুগে প্রবেশের প্রস্তুতি বাংলাদেশের
ভিশন-২০৪১ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনের লক্ষ্যে ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে করের নতুন যুগে প্রবেশের জন্য একাধিক কর্মসূচি নিয়েছে সরকার।
৪ বছর আগে