বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বরিশালে পৃথক বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বর গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বরিশালে বিক্ষোভ করছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকাল থেকে বরিশাল নগরীর সদর রোডে বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ ও স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন তারা। পরে পৃথক পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষুব্ধরা।
এ সময় ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা বন্ধ ও আবাসভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ: সেনাদের বরখাস্তের ঘোষণা ইসরায়েলের
বক্তারা বলেন, এটি মুসলমান বনাম ইহুদির যুদ্ধ নয়, এটি ইসরায়েলি জায়নবাদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতার লড়াই। গণহত্যাকারী নেতানিয়াহু ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে খোদ ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক শক্তি ও ব্যক্তি ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ করছে।’
এ সময় পৃথক পৃথক সমাবেশ থেকে বক্তারা দ্রুত গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘ যাতে ব্যবস্থা নেয়, সেই দাবি জানান এবং পাশাপাশি ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়।
৫ দিন আগে
গাজায় গণহত্যা: বিক্ষোভের সময় হামলা-ভাঙচুর, গ্রেফতার ৭২
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৭২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে খুলনায় ৩৩ জন, সিলেটে ১৯ জন, চট্টগ্রামে ৫ জন, গাজীপুরে ৪ জন, নারায়ণগঞ্জে ৪ জন, কুমিল্লায় ৩ জন এবং কক্সবাজারে ৪ জন। এসব ঘটনা সংক্রান্তে এখন পর্যন্ত মোট ১০টি মামলা রুজু হয়েছে।
এরআগে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভাঙচুর ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রধান উপদেষ্টার ভ্যারিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছে এবং এই নিন্দনীয় কাজের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আরও মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ছাত্রদলের মানববন্ধন
এতে আরও বলা হয়, দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে পুলিশ গত রাতে অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালিয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে বিক্ষোভের সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করছে। এই সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী সবাইকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। পরবর্তীতে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আইডিএফের নির্বিচার হামলায় অর্ধলাখের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
৮ দিন আগে
গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ প্রতিবাদ হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাপকভাবে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার বাইরের বিভাগ ও জেলাগুলোতে মানববন্ধন এবং সমাবেশ করা হয়েছে। এসব সমাবেশ থেকে ইসরাইলি পণ্য বর্জন ও ইহুদিবাদী দেশটিকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এছাড়াও বিক্ষোভ থেকে ‘ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘বয়কট ইসরাইল’, ‘ইসরাইলের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ইসরায়েল উইল বি সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘নিউইয়র্ক উইল বি সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়।
নিচে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভের চিত্র তুলে ধরা হলো:
গোপালগঞ্জ—
সারাদিন ইসরাইল ও ট্রাম্পবিরোধী স্লোগানে উত্তাল ছিল এই জেলা। গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেরও কর্মসূচি ছিল।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন ডাক্তারদের আয়োজনে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরচিত হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষার্থীরা স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন। এছাড়া বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ওলামা পরিষদের আয়োজনে গোপালগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র লঞ্চঘাট এলাকায় মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে।
খুলনা—
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘ইসরাইলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের গাজায় প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ হত্যার শিকার হচ্ছেন। তাদের বর্বরতা থেকে নারী-শিশু কেউ রেহাই পাচ্ছেন না। অনবরত বোমার আঘাতের মসজিদ-মাদরাসা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ বিশ্ব মানবতা তার দিকে কোনো নজর দিচ্ছে না।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান।
কিশোরগঞ্জ—
কিশোরগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন সাধারণ মানুষ। জোহরের নামাজের পর কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের শহীদী মসজিদ এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শহীদী মসজিদ চত্বরে এসে একত্রিত হয়।
পরে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এ সময় জেলা শহরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়কের দুপাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে জেলা শহরের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
এদিকে সকালে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সামনে একই দাবিতে ‘নো ক্লাস, নো এক্সাম, নো স্কুল’ কর্মসূচি পালন করেন কিশোরগঞ্জ নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
এই কর্মসূচিতে ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলাতেও ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজার ৫০ শতাংশ ইসরায়েলের দখলে, নিজ ভূমিতে পরবাসী ফিলিস্তিনিরা
১০ দিন আগে
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ভিডিও এসএসসিতে ‘অটোপাশ’ আন্দোলন বলে প্রচার
অটোপাশ চেয়ে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন বলে একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে শিক্ষার্থীদের স্লোগান দিতে দেখা গেছে, ‘লেগেছে, লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’; ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’; ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’।
স্লোগানের কোথাও অটোপাশ দাবি করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের হাতে একটি ব্যানার আছে। ব্যানারের সামনে মানুষ থাকায় সেটি পড়তে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। তবে ব্যানারের উপরের অংশে ‘ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩৩ শতাংশ অবৈধ পদোন্নতি দেওয়ার প্রতিবাদে’ লেখা বোঝা যাচ্ছে। ব্যানারের মাঝের ‘পরীক্ষা বর্জন’ ও শেষে ‘রংপুর আইডিয়াল’ লেখা অংশটি বোঝা যাচ্ছে।
ফ্যাক্টচেক
এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অটোপাশ দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে বলে দাবি করে এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে। অসংখ্য ফেসবুক গ্রুপ, আইডি ও টিকটক থেকে গেল কয়েকদিন ধরেই ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে।
রবিবার (৬ এপ্রিল) ‘এসএসসি ব্যাচ ২০২৪ অ্যান্ড ২০২৫’ নামের একটি গ্রুপ থেকেও এটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘এবারের এসএসসি পরীক্ষায় আমরা অটোপাশ চাই, কারণ জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনসহ পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখা মিলিয়ে আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়নি, সবাই আমরা আন্দোলন গড়ে তুলবো নিজ নিজ জায়গা থেকে,
আমাদের দাবি একটাই অটোপাশ চাই, অটোপাশ চাই।’
‘ড্রিমস মেডিক্যালিয়ান ইনশাআল্লাহ’ নামের একটি গ্রুপ থেকেও এটি পোস্ট করা হয়েছে। কিন্তু বার্তা সংস্থা ইউএনবির ফ্যাক্টচেকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভিডিওটি রংপুর আইডিয়াল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের।
আরও পড়ুন: মোদির ভিডিও পোস্ট করে হাসিনাকে হিন্দোলে সরিয়ে নেওয়ার প্রচার
গেল ২১ মার্চ ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতির রায় বাতিলের দাবিতে পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন রংপুরের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। রংপুর আইডিয়াল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিরর শিক্ষার্থীরাও তাতে অংশ নেন।
সেদিন শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ নিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অফিসে যান। এ সময়ে তারা ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতির রায় বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেন।
প্রথমে ভিডিওটি ছড়ানো হয় টিকটকে ‘জেহাদ১৫৫কে’ নামের একটি আইডি থেকে। ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘ক্রাফট হটাও, পলিটেকনিক বাঁচা’। পরে এটি ‘অটোপাশ’ দাবিতে আন্দোলন বলে চাপিয়ে দিতে সামাজিকমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
১০ দিন আগে
গাজায় হামাসবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় হামাসবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে অবরুদ্ধ উপত্যকাটির শত শত মানুষ। এসময় বিক্ষোভকারীদের দমনে হামাসের সদস্যরা বল প্রয়োগ করেছেন। হামাস সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠসোঁটা ও অস্ত্রে সজ্জিত ছিল।
হামাসবিরোধী বিক্ষোভের বেশকিছু ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন হামাসের সমালোচক অ্যাক্টিভিস্টরা। এতে দেখা যায়, বুধবার (২৬ মার্চ) উপত্যকার বেইত লাহিয়ার রাস্তায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণরা স্লোগান দিয়ে বলছেন, হামাস তুমি চলে যাও, হামাস তুমি চলে যাও।
বিক্ষোভ নিয়ে হামাস সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বুধবার(২৬ মার্চ) এক বিবৃতিতে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দায়ী করেছে হামাস।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ‘বিশেষ উদ্বেগজনক’ দেশ ভারত, র’য়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্রকে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ
অন্যদিকে হামাসের সমর্থকরা বিক্ষোভটিকে গুরুত্বসহকারে দেখছে না এবং অংশগ্রহণকারীদের বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করেছে।
ইসলামিক জিহাদের সদস্যরা ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানোর একদিন বেইত লাহিয়ার বিশাল অংশ খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এর পরই মূলত বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং গাজার উত্তরাঞ্চলে এই বিক্ষোভ শুরু হয়।
প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর গাজায় আবারও সামরিক অভিযান শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েল৷ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখান করেছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের৷ অন্যদিকে হামাস অভিযোগ করেছে, জানুয়ারিতে সই করা মূল চুক্তি লঙ্ঘণ করেছে ইসরায়েল।
চলতি মাসের ১৮ তারিখ ইসরায়েলি সামরিক অভিযান পুনরায় শুরুর পর থেকে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বুধবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বেইত লাহিয়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ দিয়াব বলেন, এক বছর আগে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং তার ভাইকে তিনি হারিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা কারও জন্য, কোনো দলের কর্মসূচি বা বিদেশি রাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য মরতে রাজি নই।’
তিনি বলেন, ‘হামাসকে অবশ্যই ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে এবং শোকাহতদের দাবি মানতে হবে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উঠে আসা কণ্ঠস্বর- এটি সবচেয়ে বাস্তব কণ্ঠস্বর।’
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া শহরটির ভিডিওতে 'হামাসের শাসন নিপাত যাক, মুসলিম ব্রাদারহুডের শাসন নিপাত যাক' বলে বিক্ষোভকারীদের স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
ফিলিস্তিনি নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে ২০০৭ সাল থেকে গাজা এককভাবে শাসন করছে হাসাস। এর এক বছর আগে সহিংসভাবে প্রতিপক্ষকে উৎখাত করেছিল হামাস।
তবে ২০২৩ সালের শেষ দিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার সড়কে এবং অনলাইনে হামাসের প্রকাশ্য সমালোচনা বেড়েছে। যদিও এখনও এমন অনেকে আছেন যারা প্রচণ্ডভাবে হামাসকে সমর্থন করেন। যদি গোষ্ঠীটি কতটুকু সমর্থন হারিয়েছেন—তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা কঠিন।
গাজায় যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই হামাসের বিরোধিতা ছিল। প্রতিশোধের ভয়ে এর বেশিরভাগই প্রকাশ্যে নয়।
মোহাম্মদ আল-নাজ্জার নামে গাজার এক বাসিন্দা তার ফেসবুকে পোস্টে লিখেছেন, ‘মাফ করবেন, কিন্তু হামাস আসলে কিসের উপর বাজি ধরছে? তারা আমাদের রক্তের উপর বাজি ধরছে, রক্ত যাকে সারা বিশ্ব শুধু সংখ্যা হিসেবে দেখে।’
আরও পড়ুন: ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনকে ‘অপরাধ’ স্বীকৃতি দিচ্ছে আলজেরিয়া
তিনি লিখেছেন, ‘এমনকি হামাসও আমাদের সংখ্যা হিসেবে গণনা করে। পদত্যাগ করুন এবং আমাদের ক্ষতের নিরাময়ের সুযোগ দিন।’
হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালালে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। সেসময় হামাসের হামলা প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। আর ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
হামাসকে ধ্বংস করতে গাজায় সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল ওই হামলার জবাব দেয়। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার ২১ লাখ জনসংখ্যার অধিকাংশই এখন বাস্তুচ্যুত। বাস্তুচ্যুতদের অনেকেই বেশ কয়েকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গাজায় আনুমানিক ৭০ শতাংশ ভবন ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। ধসে পড়েছে জনপদটির স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের প্রবল সংকটের মুখোমুখি উপত্যকাটির বাসিন্দারা।
সূত্র: বিভিন্ন নিউজ এজেন্সি
২১ দিন আগে
তুরস্কে ধরপাকড় উপেক্ষা করে এরদোগানবিরোধী বিক্ষোভ চলছে
তুরস্কের সরকারবিরোধীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর ধরপাকড় ক্রমাগত বাড়ছে। গেল ১৯ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজার ১৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে। যাদের মধ্যে সাতজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গেল বুধবার (১৯ মার্চ) আটকের পর থেকে তুরস্কে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। যা দেশটিতে গেল এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। এতে সেখানকার গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) ও নিউ ইয়র্ক টাইমস এমন খবর দিয়েছে।
আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে ইস্তানবুলের মেয়রকে। কাজেই জনপ্রিয় একজন প্রার্থীকে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরিয়ে দিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমন একটি সময়ে এই ধরপাকড় শুরু হয়েছে, যখন একটি ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কেন্দ্রে রয়েছে তুরস্ক। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ‘এতে নিজের সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিশানা বানানোর মতো মুক্ত পরিবেশ পেয়েছেন এরদোগান।’
মেয়রের গ্রেপ্তারের ঘটনায় গুটিকয়েক ইউরোপীয় নেতা সমালোচনা করলেও বেশিরভাগই নিশ্চুপ রয়েছেন। শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারও এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না।
ফক্স নিউজের সাবেক সঞ্চালক টুকার কার্লসনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইস্তানবুলের মেয়রের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিফ উইটকফ। তিনি বলেন, সম্প্রতি এরদোগানের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্প। তখন এই ফোনাপের কথা প্রকাশ করেনি হোয়াইট হাউস।
বিস্তারিত তথ্য নিয়ে উইটকফ বলেন, ‘তাদের এই কথোপকথনের মধ্য দিয়ে তুরস্ক থেকে ভালো ও ইতিবাচক কিছু খবর আসছে।’
রবিবার (২৪ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে একরেম ইমামোগলুকে আটকের নির্দেশ দেন আদালত। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা ও দুর্নীতির অভিযোগের বিচার চলছে, এছাড়াও ঘুষ, জালিয়াতি ও অবৈধভাবে ব্যক্তিগত উপাত্ত রেকর্ড করার অভিযোগও রয়েছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হবে কিনা; এখন পর্যন্ত আদালদের পক্ষ থেকে এমন কোনো আদেশ আসেনি। তাকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে তুরস্কে গ্রেপ্তার ৩৪৩ জন
গেল দুই দশকের বেশি সময় ধরে তুরস্কের রাজনীতিতে একক আধিপত্য বিস্তার করে যাচ্ছেন এরদোগান। সমালোচকদের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বীদের দুর্বল করে দিতে তিনি রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করছেন। নির্বাচনী দৌড় থেকে একজন প্রার্থীকে সরিয়ে দিতে তাকে গ্রেপ্তার করার ঘটনা কর্তৃত্ববাদের এক নতুন অধ্যায়েরও সূচনা করেছে।
সাংবাদিকদের সংগঠন ডিস্ক-বেসিন-ইজ ইউনিয়ন জানিয়েছে, ‘অন্তত আট প্রতিবেদক ও ফটো সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে, যা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানুষের সত্য জানার অধিকারের ওপর বড় ধরনের আঘাত।’
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউনিয়ন লিখেছে, ‘সাংবাদিকদের নীরব করিয়ে দিয়ে কেউ সত্য গোপন করতে পারবে না।’
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইরলিকায়া বলেন, বিক্ষোভে ১২৩ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে এসিড, ছুরি ও অগ্নিবোমা জব্দ করা হয়েছে। জমায়েত ও বিক্ষোভ করার অধিকারের অপব্যবহার করছে কিছু চক্র। এরমধ্য দিয়ে তারা জনশৃঙ্খলা বিঘ্ন, রাস্তার অস্থিরতা ও পুলিশের ওপর হামলা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
‘আটকদের মধ্যে কিছু মানুষের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বাকিদেরও অপরাধের অতীত ইতিহাস রয়েছে।’
জনগণ যাতে এসব উসকানিতে পা না দেন, সেই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবরে বলা হয়েছে, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে একরেম ইমামোগলুকে সরিয়ে দিতে এই ধরপাকড় করা হচ্ছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সরকারি কর্মকর্তারা।
২৩ দিন আগে
বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে তুরস্কে গ্রেপ্তার ৩৪৩ জন
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের পদত্যাগে দাবিতে বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে ৩৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনদিন আগে দেশটির জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ও রাজধানী ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোগুলকে আটকের পর শুরু হয়েছে এই বিক্ষোভ।
সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা ও দুর্নীতির অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাকে যেদিন পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে, তার পরদিন আগামী ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণার কথা ছিল এই রাজনীতিবিদের।
শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে দেওয়া এক ভাষণে বিক্ষোভের নিন্দা জানিয়ে এরদোগান বলেন, ‘রাস্তার সন্ত্রাস কিংবা ধ্বংসোন্মদনার কাছে তার সরকার আত্মসমর্পণ করবে না। জনশৃঙ্খলা ব্যাহত হয়, এমন কিছু মেনে নেওয়া হবে না।’
স্থানীয় সময় শনিবার (২২ মার্চ) দিনের শেষভাগে ইমামোগলুকে আদালতে তোলার কথা রয়েছে। এরআগে গেল তিন ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দেশটির পুলিশ।
এরদোগানের সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীদের একজন একরেম ইমামোগলু ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা।
তিনি ছাড়া আরও শতাধিক রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুক্রবারও এরদোগানের পদত্যাগ দাবিতে ইস্তানবুলে হাজার মানুষকে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
এ ঘটনাকে ২০১৩ সালের পরে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন অনেকে। সে বছরের আন্দোলন চলাকালে অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে উত্তাল তুরস্কে এবার এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি
এবার অবশ্য বিক্ষোভ দমনে ইস্তানবুলের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। এছাড়া বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া শহরগুলোতে সব ধরনের জমায়েতের ওপর পাঁচ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটা সহিংসতার কারণে আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অবস্থিত একটি মেট্রো স্টেশনও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইস্তানবুলে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর পেপার স্প্রে, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। রাজধানী আঙ্কারা ও ইজমির শহরেও বলপ্রয়োগে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। আঙ্কারায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা একটি প্রধান সড়ক ধরে অগ্রসর হতে গেলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
দেশটির প্রশাসনের এমন বাধা ও প্রেসিডেন্টের হুমকির তোয়াক্কা না করেই আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। এমনকি, এরদোয়ানের শাসনকে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তুলনা করে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। সেইসঙ্গে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাকে সরে দাঁড়ানোর দাবি তোলেন অনেকে।
২৫ দিন আগে
বিক্ষোভে উত্তাল তুরস্কে এবার এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি
তুরস্কের জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ও রাজধানী ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোলুকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। আন্দোলনের একপর্যায়ে এবার শুরু হয়েছে এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি।
দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মাকাণ্ডের অভিযোগে স্থানীয় সময় বুধবার (১৯ মার্চ) ইমামোলুসহ বেশ কয়েকজন বিরোধী দলীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে তুরস্কের পুলিশ। এর পরপরই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী ইস্তানবুলসহ দেশটির নানা প্রান্তে।
এ ঘটনাকে ২০১৩ সালের পরে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন অনেকে। সে বছরের আন্দোলন চলাকালে অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছিলেন।
এবার অবশ্য বিক্ষোভ দমনে ইস্তানবুলের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। এছাড়া বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া শহরগুলোতে সব ধরনের জমায়েতের ওপর পাঁচ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটা সহিংসতার কারণে আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অবস্থিত একটি মেট্রো স্টেশনও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইস্তানবুলে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর পেপার স্প্রে, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। রাজধানী আঙ্কারা ও ইজমির শহরেও বলপ্রয়োগে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। আঙ্কারায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা একটি প্রধান সড়ক ধরে অগ্রসর হতে গেলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
দেশটির প্রশাসনের এমন বাধা ও প্রেসিডেন্টের হুমকির তোয়াক্কা না করেই আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। এমনকি, এরদোয়ানের শাসনকে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তুলনা করে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। সেইসঙ্গে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাকে সরে দাঁড়ানোর দাবি তোলেন অনেকে।
আরও পড়ুন: তুরস্কের ইস্তানবুলের মেয়র গ্রেপ্তার
সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কের অর্থনীতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। এতে দেশটির নাগরিকদের একটি বড় অংশ অভিবাসনে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লষকদের।
২০২৩ সালে পরিচালিত একটি জরিপের তথ্য দিয়ে মিডলইস্ট আইয়ের খবর বলছে, দেশটিতে মৌলিক অধিকারসহ দৈনন্দিন নানা প্রয়োজনে সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার কারণে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী নাগরিকদের দুই-তৃতীয়াংশ সুযোগ পেলেই দেশ ছাড়তে চায়।
এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পেছনে দেশটির সংসদীয় গণতন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আন্দোলনরতদের অভিযোগও তা-ই— দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র ঠিকভাবে কার্যকর নেই।
তবে ইমালোলুর বক্তব্যে তারা (বিক্ষোভকারীরা) আশার আলো দেখতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তারের পর দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এরই মধ্যে সারা দেশে অভিযান চালিয়ে আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট ৯৭ জনকে আটক করেছে তুরস্কের পুলিশ। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়ারলিকায়া।
২০২৮ সালে তুরস্কে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই নির্বাচনকে সামনে রেখেই বিরোধী দলীয় নেতাদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সমালোচকরা।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, ইস্তানবুলের মেয়রসহ আরও ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন সরকারি কৌঁসুলিরা। আটকদের মধ্যে মেয়র ইমামোলুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী মুরাত অনগুনও রয়েছেন।
এই নির্বাচনে এরদোয়ানের বড় প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে অন্যতম একরেম ইমামোলু। তিনি যাতে আগামীতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদও বাতিল করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে।
তুরস্কের আইন অনুসারে, কোনো ব্যক্তি যদি নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান, সেক্ষেত্রে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থাকা আবশ্যক।
২০১৯ সালে ইস্তানবুলের মেয়র নির্বাচিত হন ইমালোলু। সে সময় তার দলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে পুনরায় নিবার্চনের আহ্বান করে দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশন। তবে দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে আরও বেশি ভোটে জয়ী হন তিনি। তারপর থেকেই নানা রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে এই নেতাকে।
আন্দোলনে নেতৃত্ত্বদানকারী ইস্তানবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংহতি সংগঠনের এক মুখপাত্র বলেন, ইমালোলুর গ্রেপ্তার ও তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বাতিলের ঘটনা গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।
তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে তুরস্কের প্রশাসন বলছে, দেশটির আদালত সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন। কেউ কোনোভাবে একে প্রভাবিত করতে পারে না।
আরও পড়ুন: ত্রিদেশীয় সফরে এরদোয়ান
জুমহুরিয়েত পত্রিকাসহ দেশটির অন্যান্য গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইমামোলুকে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ সময় তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন বলেও খবরে বলা হয়। আজ (শনিবার) তাকে ফের আদালতে তোলার কথা।
এর আগে, শুক্রবার দেশের নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করার আহ্বান জানান দেশটির প্রধান বিরোধী দলের নেতা ওজগুর ওজেল। সে সময় সাংবিধানিকভাবে সঠিক উপায়ে নির্বাচনে ইমামোলুকে হারাতে না পারায় এরদোয়ান আদালতকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
২৬ দিন আগে
ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ, শিক্ষার্থীকে আত্মসমর্পণে মার্কিন পুলিশের চিঠি
যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ায় মোমোদু তাল নামের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে আত্মসমর্পণ করতে বলেছে মার্কিন অভিবাসন পুলিশ। শুক্রবার (২২ মার্চ) তার আইনজীবী দলকে এই চিঠি মেইল করা হয়েছে। দেশ থেকে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক কর্মকর্তারা এই চিঠি দেন।
আফ্রিকানা অধ্যয়নের ওপর পিএইচডি করছেন মোমোদু তাল। তিনি অবশ্য যুক্তরাজ্য ও গাম্বিয়ার দ্বৈত নাগরিক। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এরপর গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নেন এই শিক্ষার্থী।-খবর সিএনএনের
ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামাসকে সমর্থন ও ইহুদিবিদ্বেষী হওয়ার অভিযোগ তোলেন তাদের বিরুদ্ধে।
আত্মসমর্পণের এই চিঠিকে বাকস্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে আখ্যায়িত করেন মোমোদু তালের আইনজীবীরা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পর তাকে যাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া না হয়, তা আটকে দিতে আগেই একটি মামলা দায়ের করে রেখেছিলেন মোমোদু তাল।
কয়েকটি ইহুদি গোষ্ঠীসহ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তাদের ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ ও ইসরাইলের সমালোচনাকে ভুলভাবে ইহুদিবিদ্বেষের সঙ্গে মিশিয়ে তালগোল পাকানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় দুই সাংবাদিকসহ ৯ ফিলিস্তিনি নিহত
মোমোদু তালকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘নিউইয়র্কের সিরাকিউজে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনস অফিসে সরাসরি হাজির হতে মোমোদু তাল ও তার আইনজীবীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আইসিই হাজতখানায় তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।’
গেল বছরে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একটি ক্যারিয়ার মেলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তালসহ একদল শিক্ষার্থী। ওই মেলায় বোয়িং ও এল৩হ্যারিসের প্রতিরক্ষা ঠিকাদাররা অংশ নিয়েছিলেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা যেসব অস্ত্র উৎপাদন করছে, তা গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলিদের সহিংসতায় ব্যবহার করা হচ্ছে।
এরপর থেকে ক্যাম্পাসে না এসে তালকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লেখাপড়া করতে বলেছেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরআগে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে আটক করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তাকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
২৬ দিন আগে
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রত্যাহার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুর সোয়া ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক-সংলগ্ন মূল ফটকের (ডেইরি গেইট) সামনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব ও জাবি শিক্ষার্থী জিয়াউদ্দিন আয়ানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা তীব্র আন্দোলন করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের দাগ লেগে আছে খুনি হাসিনার হাতে। কেউ যদি তাকে পুনর্বাসনের ন্যূনতম প্রচেষ্টা চালায় তাহলে ছাত্র-জনতা তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে যে আওয়ামী লীগকে মাইনাস করা হয়েছে, তাদের যদি কেউ পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায় তাহলে তাদেরও মাইনাস করা হবে।
মিছিলে শিক্ষার্থীদের, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘হাসিনার দোসরেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কর, করতে হবে করতে হবে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুঁখে দাও দিতে হবে’, ‘ভারতীয় প্রেসক্রিপশন, এই বাংলায় চলবে না’—স্লোগান দিতে শোনা যায়।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে মিছিল
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আমরা দেখেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করতে পারে নাই। ৫ আগস্টের পর কোনো যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আবারও রাজপথে নামতে হবে—এটা আমরা কল্পনায়ও ভাবি নাই।’
‘আমরা দেখেছি, গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। এই বক্তব্যকে আমরা প্রত্যাখান করছি সেইসঙ্গে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার বা অন্য কেউ যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ন্যূনতম প্রচেষ্টা চালায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘স্বৈরাচারী পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি গত জুলাই বিপ্লবে হাজার হাজার ছাত্রজনতার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এখনও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে হাসপাতালের বেডে জীবন কাটাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি এসব দেখছে না? তাদের কি চোখে পড়ে না? এত কিছুর পরেও তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায় কার হুকুমে?’
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, পার্শ্ববর্তী দেশের কোনো প্রেসক্রিপশন যদি এদেশে বাস্তবায়নের কোনো অপচেষ্টা চালানো হয়, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব।’
বাগছাসের কেন্দ্রীয় সংসদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক ও জাবি শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘সংগ্রামী ছাত্র-জনতা আপনারা দেখেছেন, ৩৬ দিনের দীর্ঘ আন্দোলন শেষে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের রায় দিয়েছে। স্বৈরাচারী আওয়ামী শক্তি দীর্ঘ ১৭ বছর বাংলাদেশকে একটি আবদ্ধ কারাগারে পরিণত করেছিল, কিন্তু এদেশের জনগণ পরাধীনতার শিকল ভেঙে দিয়ে খুনি হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি দিল্লি থেকে বা অন্য কোথাও থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসে এদেশকে চালাতে চায় তাহলে তারা ভুল করবে। বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, তা ঠিক করবে এদেশের ছাত্র-জনতা। আমরা আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের যেকোনো অপচেষ্টা রুঁখে দিতে রাজপথে সর্বদা তৎপর থাকব।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাভার প্রতিনিধি জুলকারনাইন বলেন, ‘আমরা রক্ত দিতে শিখে গেছি। কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়, তাও শিখে গেছি আমরা। কেউ যদি আমাদের চোখ রাঙায়, তাদের পাল্টা জবার দেওয়ার ভাষা আমাদের জানা আছে।’
তিনি বলেন, ‘সামরিক-বেসামরিক কোনো শক্তি যদি খুনি হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায়, তাহলে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তিকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।’
গতকাল (বৃহস্পতিবার) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।
এরপর গভীর রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চালের মূখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ সংক্রান্ত একটি ফেসবুক স্টাটাস দিলে, সেটি কেন্দ্র করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
২৭ দিন আগে