ভুটান
ভুটানের রাজার সফর বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সাক্ষ্য: যৌথ বিবৃতি
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় পুষ্পস্তবক অর্পণ, পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর এবং একটি গাছের চারা রোপণ করবেন।
ভুটানের রানী জেটসুন পেমা ওয়াংচুকও রাজার সঙ্গে থাকবেন।
ভুটানের রাজা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের আমন্ত্রণে ২৫ থেকে ২৮ মার্চ বাংলাদেশ সফর করছেন।
সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ভুটানের রাজার বাংলাদেশ সফর দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বড় সাক্ষ্য।
এতে বলা হয়, রাজা ও রানীর বাংলাদেশ সফর দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও সুসম্পর্কের ঐতিহাসিক বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করেছে।
রাজা ও রানী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। রাষ্ট্রপতি রাজার সম্মানে মঙ্গলবার একটি ভোজের আয়োজন করবেন।
সোমবার রাজা ও রানী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সফরকালে থিম্পুতে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপনে সহযোগিতা এবং স্বাস্থ্য সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওএমএস) স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতার জন্য, বাংলাদেশের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং ভুটানের প্রতিযোগিতা ও ভোক্তাবিষয়ক কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই
এছাড়াও বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতামূলক চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে এমবিবিএস কোর্সে ভুটানের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ভর্তির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় উভয় পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সহযোগিতার বিদ্যমান গতি আরও সুসংহত করার জন্য, ভুটানের শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক এমবিবিএস আসন সংখ্যা ২২ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
আনুষ্ঠানিক বৈঠকে উভয় পক্ষ বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে, যা অভিন্ন ইতিহাস, ভৌগোলিক নৈকট্য এবং সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার উপর ভিত্তি করে একটি বিশেষ বিষয়।
রাজা জিগমে তাকে এবং তার প্রতিনিধিদলের সদস্যদের আন্তরিক অভ্যর্থনা ও উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য গভীর প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক এবং সেদেশের জনগণের অমূল্য সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ হিসেবে ভুটানের কথা স্মরণ করেন।
বাংলাদেশ ও ভুটান ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট চলাচল চুক্তি এবং এর প্রটোকল স্বাক্ষর করেছে, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও যোগাযোগের জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। এ নিয়ে দুই পক্ষই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য-যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত ঢাকা-থিম্পু
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, এই চুক্তি এবং এর প্রটোকল কেবল দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের জন্যই অভূতপূর্ব হবে না বরং আন্তঃসংযুক্ত দক্ষিণ এশিয়ার পথ প্রশস্ত করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করবে।
আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ অর্থনৈতিক সংহতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বলে উভয় পক্ষই সম্মতি প্রকাশ করেছে।
সড়ক, রেল ও জলপথের মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি আঞ্চলিক সংহতি এবং দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে বলে আশা করছে দুটি দেশই।
উন্মোচিত হলো নতুন এক দিগন্ত
ভুটানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জিলেফু থেকে ১৯০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের 'কুড়িগ্রামে' 'বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল' আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়ায় ভুটান বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানায়।
এই অর্থনৈতিক অঞ্চল দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বৃহত্তর সমৃদ্ধি অর্জনে নতুন দিগন্ত যোগ করবে।
দুই পক্ষই ভুটান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জ্বালানি খাতে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
এই অঞ্চলের অভিন্ন শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উভয় পক্ষই বৈঠকে জানিয়েছে।
রাজা ২৬ মার্চ ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করবেন এবং সেখানকার কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন।
বাংলাদেশ থিম্পুতে একটি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন করতে যাচ্ছে, যা স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার আরেকটি মাইলফলক হবে।
আরও পড়ুন: ভুটানের রাজাকে ঢাকায় লাল গালিচা সংবর্ধনা
কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক যোগাযোগ থাকায় উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
তারা ভুটানের হিমালয়কে বাংলাদেশের কক্সবাজারের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের সঙ্গে যুক্ত করে বাংলাদেশ ও ভুটানের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও জোরদার করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ সফরে রাজা জিগমে পদ্মা সেতু পরিদর্শন করবেন, যা সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সরকারের স্ব-অর্থায়ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে নির্মিত একটি স্মরণীয় অবকাঠামোগত সাফল্য।
অসাধারণ এই অবকাঠামো প্রকল্পটি যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদারে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের সাক্ষ্য বহন করে।
রাজা জিগমে আড়াইহাজারের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন এবং সেখানকার অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা প্রত্যক্ষ করবেন।
ঢাকায় অবস্থানকালে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতা এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মত বিনিময় করবেন রাজা।
ভুটানের রাজা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ভুটান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ভারত: হাছান মাহমুদ
ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ভারত: হাছান মাহমুদ
নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে ভারত যেভাবে সহযোগিতা করেছে, সেভাবে ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতেও সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ।
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এ বৈঠক হয়।
বাংলাদেশ ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায় এবং ভারতের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ আনতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
জলবিদ্যুৎ আমদানি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে এই সফরে চুক্তি হচ্ছে না। ভারত যেভাবে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে সহায়তা করেছে, ভুটান থেকে আমদানির ক্ষেত্রেও ভারত সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের আগেই ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী দেশ ভুটানের রাজার সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে ভুটানকে আবার বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল ইনিশিয়েটিভ) -এ যোগদানের জন্য এবং এয়ার-কানেক্টিভিটি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা-থিম্পু পথে এখন সপ্তাহে মাত্র দুটি ফ্লাইট আছে। এটি বাড়ানো প্রয়োজন, কারণ ভুটান অত্যন্ত সুন্দর দেশ। আমি কয়েকবার গেছি, বর্তমান রাজার বিয়ে উৎসবেও যোগ দিয়েছি। গত বছর তিনি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার সময় যাত্রাবিরতিতে আমি তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছিলাম।’
মানুষ যাতে সড়ক পথে গাড়ি নিয়ে যেতে পারে, সে নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান হাছান মাহমুদ।
কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ভুটানকে জায়গা দেওয়া হবে সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ দিন ভুটানের রাজার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি পুনর্নবায়নের কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই
২৫-২৮ মার্চ সফরে সোমবার ঢাকায় আসেন ভুটানের রাজা। এ দিন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পাশাপাশি তিনি পদ্মা সেতু, শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
শেষদিন ২৮ মার্চ কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে রাজা বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। ভুটানের রানী, পরিবারের সদস্য, মন্ত্রী ও পদস্থ কর্মকর্তারা রাজার সফরসঙ্গী হিসেবে সফরে যোগ দিয়েছেন।
ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি দেবে বাংলাদেশ, আলোচনা চলছে জলবিদ্যুৎ আমদানির
ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায়। আর এ বিদ্যুৎ ভারতের মধ্য দিয়ে আনতে হবে। তাই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি প্রয়োজন।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করছি।’
তিনি বলেন, সেখানে ভুটানের ২৫ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নেপাল থেকেও জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে এবং এ বিষয়ে প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, শুভেচ্ছা স্বরুপ বাংলাদেশ থিম্পুতে একটি বার্ন ইউনিট নির্মাণ করবে, যা দেশের সক্ষমতারও বহিঃপ্রকাশ।
তিনি ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সফর সম্পর্কেও জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সময় বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে তিনটি নতুন সমঝোতা স্মারক সই হবে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক বিনিময় সংক্রান্ত আরও একটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হবে।
১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে যে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তার ই ধারাবাহিকতায় চার দিনের সফরে ভুটানের রাজার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্য, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ভুটানের রানী সোমবার সকালে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, 'ভুটানের সঙ্গে আমাদের বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে।’
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং ফার্স্ট লেডি গান স্যালুট ও গার্ড অব অনার দিয়ে বাদশাহকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
সোমবার সকাল ১০টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে রাজার।
বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যাবেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করবেন ভুটানের রাজা। তারা দুজনের মধ্যে বৈঠক হবে।
বৈঠকের পর দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে রাজার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার রাজা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটও পরিদর্শন করবেন রাজা।
তিনি বঙ্গভবনে যাবেন, সেখানে রাষ্ট্রপতি ও ফার্স্ট লেডি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজা।
রাষ্ট্রপতি সফররত রাজপরিবারের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
বুধবার সকালে রানী জেটসুন পেমা ওয়াংচুক ও ভুটানের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা একটি বিশেষ ফ্লাইটে ভুটানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে তাদের বিদায় জানাবেন।
ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
বৃহস্পতিবার রাজা কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
একই দিন বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে আসামের গোলকগঞ্জের উদ্দেশে বাংলাদেশ ভূখণ্ড ত্যাগ করবেন।
সেখানে তাকে বিদায় জানাবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে এক চিঠিতে বলেন, তার গতিশীল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা বিরাজের পাশাপাশি অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।
তিনি ভুটানকে 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' হিসেবে উল্লেখ করেন।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের তৃতীয় রাজা টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বীকৃতির বার্তা পাঠান। এর মধ্যে দিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ ভুটান।
সেই থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একটি বিশেষ বহুমাত্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই ভুটান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। এর ফলে ১৯৭৩ সালের ১২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়েছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভুটানের ‘কুইন মাদার’র ঢাকায় যাত্রাবিরতি
ভুটানের ‘কুইন মাদার’ দরজি ওয়ানমগমো ওয়াংচুকান্দ এবং তার রাজকীয় প্রতিনিধি দল শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকায় যাত্রাবিরতি করেছেন।
ট্রানজিটের সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দরজি ওয়ানমগমো ওয়াংচুকান্দ এবং ভুটানের রাজকীয় প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং এমপি নাহিদ এজাহের খান।
আরও পড়ুন: ট্রেনে অগ্নিসংযোগে মা-শিশুসহ ৪ জনের প্রাণহানির ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় জাতিসংঘ
ভুটানে বাংলাদেশ দূতাবাস ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু
হিমালয়ের লীলাভূমি ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে বাংলাদেশ দূতাবাস ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) থিম্পুর নতুন কূটনৈতিক এলাকা হেজো-সামতেলিংয়ে ভুটান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত জমিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
থিম্পুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভুটান ও বাংলাদেশ নিজ নিজ রাজধানীতে দু’দেশের পরস্পরের দূতাবাস ভবন নির্মাণের জন্য জমি প্রদান করেছে। এর ধারাবাহিকতায় ভুটান সরকার থিম্পুর সুপ্রিম কোর্টের পাশে নির্ধারিত কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশের জন্য ১ দশমিক ৫ একর জমি প্রদান করে। উক্ত জমিতে দূতাবাস ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এতে আরও বলা হয়, ভুটান সরকার প্রদত্ত জমিতে ভবন নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে দেশটির ‘বজ্র বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভুটান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক: থিম্পুতে স্থাপিত হবে বিশেষ বার্ন ইউনিট
তিন দিনব্যাপী ভুটান বাণিজ্য মেলা রবিবার শেষ হচ্ছে
তিন দিনব্যাপী ভুটান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা রবিবার শেষ হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভুটান দূতাবাস বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করে।
শুক্রবার রাজধানীর গুলশান শুটিং ক্লাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এর উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে ভুটানের মিশন প্রধান, বিজনেস চেয়ারপার্সন, শীর্ষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী প্রথম ভুটান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা
ভুটানের প্রায় ২৫টি কোম্পানি এই মেলায় অংশ নিয়েছে। এমনকি মেলায় তারা ভুটানে তৈরি এবং ভুটানে উৎপাদিত প্রিমিয়াম মানের পণ্য প্রদর্শন করে।
টিপু মুনশি বলেন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে। ভুটানেরও আসার সুযোগ আছে।
মন্ত্রী বলেন, আমি ভুটানকে অনুরোধ করব, বাংলাদেশে আসুন, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করুন।
আরও পড়ুন: প্রান্তিক তরুণদের ক্ষমতায়নে ‘তরুণ উদ্যোক্তা মেলা’
কুড়িগ্রামে গঙ্গাপূজা ও দশহরা মেলা অনুষ্ঠিত
অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ও ট্রানজিট চুক্তির সুবিধা কাজে লাগাতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ এবং ভুটানের মধ্যকার স্বাক্ষরিত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ও ট্রানজিট চুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে অগ্রণী পালনের জন্য ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে শুটিং কমপ্লেক্সে ভুটান অ্যাম্বাসি আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটান ২০২০ সালে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি-পিটিএ এবং চলতি বছরের ২২ মার্চ 'ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এসব চুক্তি উভয় দেশের মধ্য বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে সহায়তা করবে। ব্যবসায়ীরা পিটিএ এবং ট্রানজিট চুক্তির সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশ ঘতাতে পারে।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষা-স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও অবকাঠামোসহ আর্থ-সামাজিক খাতে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতি দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
আমরা এখন ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক যাত্রা শুরু করেছি উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড; বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক একীকরণের ওপর জোর দিতে হবে। এজন্য নিকটতম প্রতিবেশিসমূহের মধ্যে আঞ্চলিক একীকরণ, আঞ্চলিক সংযোগ এবং আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পারস্পারিক আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে।
আরও পড়ুন: ব্যবসা-বাণিজ্যে এশিয়া অঞ্চলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক আঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছেন। যার মধ্যে অনেকগুলো চালু হয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রদান করা হয়েছে। ভুটান সীমান্তের খুব কাছে কুড়িগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এসময় ব্যবসাবান্ধব এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার জন্য ভুটান সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি জানান, বাংলাদেশ এই অঞ্চলে কানেক্টিভিটি হাব হিসেবে বিবেচিত। সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে দুটি বন্দরসহ রেল যোগাযোগ এবং ট্রানজিট সুবিধা ভুটানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখতে পারে।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা দুই দেশের ব্যবসা, উদ্যোক্তা এবং পরিষেবা প্রদানকারীদের নেটওয়ার্ক তৈরি এবং ব্যবসা ও বিনিয়গের সুযোগ অন্বেষণের জন্য একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা ছাড়াও বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিলসহ আবাসিক মিশন/দূতাবাসের প্রধান, ব্যবসায়িক চেয়ারপারসন এবং অন্যান্য ব্যবাসায়ী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলে।
উল্লেখ্য, ভুটানের প্রায় ২৫টি কোম্পানি মেলায় অংশগ্রহণ করেছে যেখানে দেশটির তৈরি ও উৎপাদিত প্রিমিয়াম মানের পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। মেলা ২৩-২৫ জুন পর্যন্ত চলবে।
মেলার পাশাপাশি ভুটানে বিনিয়োগের সুযোগ, বিশেষ করে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার ওপর একই ভেন্যুতে সেমিনারও অনুষ্ঠিত হবে।
ভুটান অ্যাম্বাসি আয়োজিত অনুষ্ঠানটির ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সহযোগিতায় ছিলো টিকে ইভেন্ট বাই ট্রাভেলার কি।
আরও পড়ুন: ইরান-বাংলাদেশ বাণিজ্য প্রসারে একত্রে কাজ করার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি শিগগিরই: বাণিজ্যমন্ত্রী
শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী প্রথম ভুটান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা
বাংলাদেশের ভুটানি দূতাবাস প্রথমবারের মতো ঢাকায় ভুটান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা ২০২৩ এর আয়োজন করছে। আগামী ২৩ থেকে ২৫ জুন তিনদিনব্যাপী রাজধানীর গুলশানের শুটিং ক্লাবে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বাণিজ্য, শিল্প ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং ভুটান সরকারের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং ভুটান কান্ট্রি অফিস অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের সহায়তায় এ মেলা আয়োজিত হচ্ছে।
ভুটান ও বাংলাদেশ ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষর করেছে।
তবে, মহামারির ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের কারণে দুই দেশ চুক্তির মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি। এই লক্ষ্যে, দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য এই ঐতিহাসিক চুক্তির বিধানগুলোকে আরও সহজতর করার প্রাথমিক উদ্দেশ্য নিয়ে ভুটান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা ২০২৩-এর আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রান্তিক তরুণদের ক্ষমতায়নে ‘তরুণ উদ্যোক্তা মেলা’
‘ভুটানে বেড়ে ওঠার জন্য বিনিয়োগকারী, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের মধ্যে মেলবন্ধন’- থিম নিয়ে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফেয়ার দুই দেশের ব্যবসা, উদ্যোক্তা ও পরিষেবা প্রদানকারীদের নেটওয়ার্ক তৈরি করার সুযোগগুলো অন্বেষণ করার জন্য একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে এবং বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করবে।
এ আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে বিভিন্ন মিশন/দূতাবাসের প্রধান, ব্যবসায়ী, শীর্ষ ব্যবসায়িক সংস্থার নির্বাহী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়া ভুটান সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ভুটান কান্ট্রি অফিসের বিশেষজ্ঞরাও এই মেলায় অংশ নেবেন
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলার পাশাপাশি ভুটানের বিশেষজ্ঞরা দেশটিতে বিনিয়োগের সুযোগ এবং বিশেষ করে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে সেমিনারও আয়োজন করবেন। সেমিনারগুলো ২৩-২৫ জুন পর্যন্ত মেলার স্থানে অনুষ্ঠিত হবে।
ভুটানের প্রায় ২৫টি কোম্পানি মেলায় অংশগ্রহণ করবে এবং ভুটানে তৈরি ও উৎপাদিত প্রিমিয়াম মানের পণ্যের বিস্তৃত পরিসর প্রদর্শন করবে।
বিস্তারিত জানতে এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন- www.bhutantradeshow.com।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত মি. রিনচেন কুয়েনসিল, কাউন্সেলর (বাণিজ্য) মি. কেনচো থিনলে, কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মি. জিগড্রেল ওয়াই শেরিং, ভুটান কাউন্সেলর (অর্থ) মিসেস শেরিং চোকি (অর্থ) এবং ভুটান দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব মিসেস পেমা সেলডন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে গঙ্গাপূজা ও দশহরা মেলা অনুষ্ঠিত
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘে শিশু-কিশোর আনন্দমেলা
ভুটানকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই প্রতিবেশি দেশের পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য ভুটানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। আপনি আমাদের দেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করতে পারেন যা ভুটান অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত হবে।’
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ও রানি জেটসুন পেমা শনিবার ক্লারিজ হোটেলে যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার যুক্তরাজ্য সফরের সময় অবস্থান করছেন, সেখানে তার সঙ্গে দেখা করার সময় তিনি এই প্রস্তাব দেন।
শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা ভুটানের রাজা ও রানি হোটেলে পৌঁছালে তাদের অভ্যর্থনা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ৫০ মিনিট ব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
আরও পড়ুন: রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা ভুটানের রাজাকে অবহিত করেন যে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে অর্থনৈতিক অঞ্চল দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আপনি চাইলে কুড়িগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দিতে পারেন।’
ভুটানের রাজা পরিবেশের ক্ষতি না করে তার দেশে একটি প্রশাসনিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে চান বলে শেখ হাসিনা এই প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলপথসহ সব ক্ষেত্রে প্রতিবেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ উন্নয়ন করছে। বাংলাদেশ একটি কানেক্টিভিটি হাব। ভুটান বাংলাদেশের দুটি বন্দর এবং সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে।’
মোমেন বলেন, ভুটানের রাজপরিবার শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
রাজা তার হিমালয় দেশের সরাসরি ট্রানজিট বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে এবং আরেকটি ভারতের মধ্য দিয়ে পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রীকে বড় অনুপ্রেরণা বললেন ঋষি সুনাক
ভুটানের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজন হলে আমরা এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলব।’
ভুটানের রাজা বলেন, তার দেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে বিশেষ ভাবে সম্পৃক্ত, কারণ তারা দুজনেই বাংলাদেশে পড়াশোনা করেছেন।
তিনি বলেন, ভুটানের দুই নেতাই ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ সফর করতে চান।
স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'আপনাদের জন্য আমাদের দরজা খোলা আছে।
মোমেন বলেন, ভুটানের রাজা ও রানি প্রধানমন্ত্রীকে তাদের ‘খালা’ মনে করায় তারা বিভিন্ন পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর উন্মুক্ততার প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের
আব্দুল মোমেনকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
ভুটান সরকারের পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়কমন্ত্রী ড. তান্ডি দর্জি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং বাংলাদেশের জনগণকে উষ্ণ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ড. তান্ডি দর্জি সম্প্রতি ড. মোমেনকে প্রেরিত একটি অভিনন্দন বার্তায় বলেন, ‘আমাদের উভয় দেশের মধ্যে অব্যাহত পারস্পরিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ থাকায় একটি চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অটুট রয়েছে।’
তিনি অভিনন্দন বার্তায় উল্লেখ করেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বন্ধুত্বের এই বন্ধন আগামী বছরগুলোতে আরও দৃঢ় হবে।’
ড. তান্ডি দর্জি বাংলাদেশের জন্য শুভকামনা জানিয়ে বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবস বাংলাদেশের মানুষের জন্য সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক।’
আরও পড়ুন: ভুটান-বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তি সই: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশের সড়ক ও বন্দর ব্যবহারে ভুটানকে অনুমোদন