নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে ভারত যেভাবে সহযোগিতা করেছে, সেভাবে ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতেও সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ।
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এ বৈঠক হয়।
বাংলাদেশ ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায় এবং ভারতের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ আনতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
জলবিদ্যুৎ আমদানি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে এই সফরে চুক্তি হচ্ছে না। ভারত যেভাবে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে সহায়তা করেছে, ভুটান থেকে আমদানির ক্ষেত্রেও ভারত সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের আগেই ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী দেশ ভুটানের রাজার সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে ভুটানকে আবার বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল ইনিশিয়েটিভ) -এ যোগদানের জন্য এবং এয়ার-কানেক্টিভিটি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা-থিম্পু পথে এখন সপ্তাহে মাত্র দুটি ফ্লাইট আছে। এটি বাড়ানো প্রয়োজন, কারণ ভুটান অত্যন্ত সুন্দর দেশ। আমি কয়েকবার গেছি, বর্তমান রাজার বিয়ে উৎসবেও যোগ দিয়েছি। গত বছর তিনি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার সময় যাত্রাবিরতিতে আমি তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছিলাম।’
মানুষ যাতে সড়ক পথে গাড়ি নিয়ে যেতে পারে, সে নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান হাছান মাহমুদ।
কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ভুটানকে জায়গা দেওয়া হবে সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ দিন ভুটানের রাজার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি পুনর্নবায়নের কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই
২৫-২৮ মার্চ সফরে সোমবার ঢাকায় আসেন ভুটানের রাজা। এ দিন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পাশাপাশি তিনি পদ্মা সেতু, শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
শেষদিন ২৮ মার্চ কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে রাজা বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। ভুটানের রানী, পরিবারের সদস্য, মন্ত্রী ও পদস্থ কর্মকর্তারা রাজার সফরসঙ্গী হিসেবে সফরে যোগ দিয়েছেন।