পর্যটন
সুন্দরবনে মাছ ধরা ও পর্যটনে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা ১ জুন থেকে
মাছ ও বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধি, বিচরণ এবং প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় আগামী ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবন। এ সময় পর্যটক প্রবেশ ও সাধারণ মানুষের চলাচলসহ নদী-খালে মাছ শিকারও বন্ধ থাকবে।
এছাড়া এবারের মওসুমে সরকারি সাপ্তাহিক ছুটির শনিবার শেষ দিন, তাই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বনের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করমজলে ভিড় করছে দেশ-বিদেশি দর্শনার্থীরা।
সুন্দরবন মৎস্য সম্পদের ভান্ডার নামে পরিচিত। তাই মাছের প্রজনন ও বন্যপ্রাণী বংশবৃদ্ধি নির্বিঘ্ন করতে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব ধরনের নৌযান, পর্যটকবাহী লঞ্চ-জালীবোটসহ সকল প্রকারের জেলে বাওয়ালি বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে গত ২০ মে থেকে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ নির্দেশনা থাকবে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত।
এছাড়া আগামী ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মাছ ধরতে পারবেনা জেলেরা। পাশাপাশি ঢুকতে পারবে না কোনো পর্যটকও।
এ সময়ের মধ্যে কোন নৌযানও চলাচল করতে পারবে না সুন্দরবনসহ কোনো পর্যটক স্পটে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ১০০ দিন ও বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ
বন বিভাগ এ মৎস্য অফিসের তথ্যানুযায়ী, এখন সুন্দরবনে ২৫১ প্রজাতির মাছের প্রজনন মওসুম তাই বনবিভাগ থেকে জেলেদের জন্য সকল প্রকারের পাস পারমিট বন্ধ রাখা হবে।
বনের নদী ও খালে নৌযান চলাচল করলে মাছের ডিম ছাড়তে সমস্যা হবে তাই সকল ধরনের নৌযান চলাচলও বন্ধ থাকবে।
বনে ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৩৫ প্রকারের সরীসৃপ, ৪২ প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। এখন তাদের প্রজনন মওসুম চলছে, এ জন্যই এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার।
এদের মধ্যে প্রধান বন্যপ্রাণী হলো- বাঘ, হরিণ, শুকর, বানর, কুমির, ডলফিন, ভোদড়, বন বিড়াল ও মেছ বাঘ।
এছাড়া অন্যান্য বন্যপ্রাণীর প্রজননের ওপর গুরুত্ব বেশি দেয়া হয়েছে বলে জানায় বন বিভাগ।
এই সময় নদী ও খালে নৌযান বা পর্যটকরা বনের অভ্যন্তরে চলাচলের সময় শব্দ করলে প্রজনন বিঘ্নিত হবে। তাই নৌকা বা ট্রলার নিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ।
আর পর্যটকদের জন্য দেশের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র করমজল, পর্যটক স্পট হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, জিরোন পযেন্ট, নিল কমল, দুবলা, আলোর কোল, টাইগার পয়েন্ট কলাগাছিয়াসহ ১১টি স্পটে বন্ধ হচ্ছে পর্যটক প্রবেশ।
সব মিলিয়ে পর্যটক ও জেলেদের মাছ আহরণ এই তিন মাস বন্ধ ঘোষণা করছে সরকারের পক্ষ থেকে।
সে জন্য মওসুমের শেষ সময় দেশের দূর দূরন্ত থেকে পর্যটকরা করমজলে ভিড় করছে, আসছে দেশ-বিদেশি দর্শনার্থীরা।
এ ব্যাপারে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, সরকার তার রাজস্বের দিকে না তাকিয়ে সুন্দরবনের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এবং বনের গহীন মাছের ও বন্য প্রাণীর বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং পশু পাখির প্রজনন নির্বিঘ্ন রাখতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বন বিভাগের পক্ষ থেকে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বন্ধের এই তিন মাস হরিণসহ সকল প্রকারের বন্যপ্রাণী শিকার ও সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ বন্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে অবৈধ ৫টি ট্রলার ও ৪টি নৌকাসহ ১০ জেলে আটক
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সম্পর্কের জন্য পর্যটন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে
বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম বলেছেন, পর্যটন খাত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জনগণকে কাছাকাছি আনার জন্য একটি সেতু হিসেবে কাজ করছে এবং প্রতিটি জাতির অফার করা অনন্য সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য আমাদেরকে অনুভব করার সুযোগ করে দিচ্ছে।’
রবিবার ঢাকার একটি হোটেলে বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) নেটওয়ার্কিং ডিনারে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বাংলাদেশে রোডশো’র কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, ২০২২ সালে এক কোটিরও বেশি পর্যটক মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছে।
তিনি বলেন, ‘এতে বোঝা যায় যে মালয়েশিয়া ২৬ মিলিয়ন পর্যটকের আগমন ফিরিয়ে আনার পথে রয়েছে। ২০২২ সালে ১০ মিলিয়ন পর্যটকের মধ্যে প্রায় ৫৯ হাজার বাংলাদেশ থেকে এসেছেন।’
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে হাইকমিশনের জরুরি নোটিশ
হাইকমিশনার বলেন, অনন্য ভ্রমণ অভিজ্ঞতা এবং পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে তাল মিলাতে মালয়েশিয়া বিভিন্ন ধরণের আকর্ষণীয় স্থান এবং সেবা পণ্যগুলিকে বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। মালয়েশিয়া বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে আরও বেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে চিকিৎসা, শিক্ষামূলক ও ইকোট্যুরিজমকেও প্রচার করতে সচেষ্ট।
তিনি বলেন, ট্যুরিজম মালয়েশিয়া রোডশো আমাদের অংশীদারিত্বের অপার সম্ভাবনা এবং সামনের সুযোগগুলো প্রদর্শনের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে অনেক সাংস্কৃতিক, ঐতিহ্যগত এবং রন্ধনসম্পর্কীয় মিল রয়েছে, যে কারণে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।
তিনি বলেন, ‘এবং মালয়েশিয়ায় হালাল খাবার পাওয়া কখনই কোনো সমস্যা না। এর পাশাপাশি আমরা আমাদের বাণিজ্য অংশীদারদেরকে মালয়েশিয়ায় আরও ছুটির প্যাকেজ বিকাশ ও বিক্রি করতে উৎসাহিত করছি, যাতে বিশেষ পণ্য যেমন মেডিকেল ট্যুরিজম, বিলাসবহুল ভ্রমণ, শিক্ষা পর্যটন এবং স্পা এর ওপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়।’
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ইরাব সদস্যদের সৌজন্য সাক্ষাৎ
মালয়েশিয়ার সেলানগর রাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহী
পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন ও অবস্থার পরিবর্তন
ভ্যানচালক সাইফুল এখন পদ্মা সেতুর কাছে ‘ফুচকা’ বিক্রি করেন। তিনি এখন আগের তুলনায় বেশি উপার্জন করেন। ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় পর্যটনে যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে, তা তার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আগে ভ্যান চালাতাম। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের তারিখ ধার্য হওয়ার পর থেকেই ভ্যান চালানো বাদ দিয়েছি। এখন ঘুরে ঘুরে ফুচকা বিক্রি করি। আগের চেয়ে রোজগারও ভালো হচ্ছে।’
সাইফুলের মতো অনেক দিনমজুর এই এলাকার ইতিবাচক পরিবর্তনের সুবিধা পাচ্ছেন।
উন্নত যোগাযোগের সুবিধার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি, শুধুমাত্র পদ্মা সেতু দেখতেও বিপুল সংখ্যক মানুষ এখানে ঘুরতে আসছেন।
সেতুর কাছে অনেক হোটেল, রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট ও পার্ক তৈরি করা হয়েছে। বেশি রোজগারের আশায় অনেকেই তাই নিজেদের আগের পেশা পরিবর্তন করেছেন।
পদ্মা সেতু সংলগ্ন নাওডোবা এলাকায় গড়ে উঠেছে ‘ফুড এক্সপ্রেস’ নামে একটি রেস্তোরাঁ।
রেস্তোরাঁর স্বত্বাধিকারী মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরাই প্রথম পদ্মা সেতু এলাকায় রেস্তোরাঁ দিয়েছি। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে পদ্মা সেতু দেখতে। পদ্মা সেতু দেখা শেষে ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা আমার রেস্টুরেন্টে আসছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দূর-দূরান্ত থেকে সেতু দেখতে আসা মানুষের রাতে থাকার জন্য এখানে আবাসিক হোটেল নির্মাণের কাজও চলমান রয়েছে।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর সুবাদে প্রথমবার গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির সাক্ষী হলো মোংলা বন্দর
ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সুন্দরবন ঘুরলেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছেন।
পুতুল তার ছেলে ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বনভিাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। সেখানে ঘণ্টাখানেক থেকে দুপুর ১টার দিকে করমজল ত্যাগ করেন তিনি। লঞ্চযোগে তিনি সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। তিনদিন ধরে তিনি বনের বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখেন।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে আলোচিত পুতুল হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল আসার আগাম কোনো খবর আমাদের কাছে ছিল না। এখানে আসার পর তার নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিষয়টি আমাকে জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকন্যা করমজলে একঘণ্টা অবস্থান করে দুপুর ১টায় চলে যান।
সুন্দরবনে অবস্থানকালে সায়মা ওয়াজেদ করমজলের বিভিন্ন স্পট এবং সেখানকার বন্যপ্রাণী ঘুরে দেখেন বলে ওসি।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম জানান, বুধবার বেলা পোনে ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিলাসবহুল পাগমার্কের লঞ্চ এমএল বাওয়ালি যোগে মোংলা থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। বনের কটকা, করমজল ও কচিখালীসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা তিনি ঘুরে দেখেন। এ সময় তার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে মেয়েসহ ছয় জন ছিলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে জয়-পুতুলের সঙ্গে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাইরাল
চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রঘুরে দেখলেন ৩৮ ভারতীয় ট্যুরিস্ট
বাংলাদেশে সফররত ভারতীয় ৩৮ জন পর্যটক দল চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যটন স্পট পরিদর্শন করেছেন। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে চট্টগ্রাম ট্যুরিস্ট পুলিশ।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) ভারতীয় পর্যটক দল চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সি বিচ, চট্টগ্রাম বন্দর এলাকা, ইসকন মন্দির, কৈবল্যধাম ও রামকৃষ্ণ মন্দির পরিদর্শন করেন।
চট্টগ্রাম ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে এডিশনাল এসপি হাসান ইকবাল এ তথ্য জানান।
বিকালে পতেঙ্গা সি-বিচে আগত ভারতীয় পর্যটক দলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান চট্টগ্রাম ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. আপেল মাহমুদ ও এডিশনাল এসপি হাসান ইকবাল।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ভারতীয় হাইকমিশনারের শ্রদ্ধা
এ সময় চট্টগ্রাম ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার ইফতেখার হাসান, পতেঙ্গা সি বিচ ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ মো. ইসরাফিল মজুমদার সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত২২ নভেম্বর সোমবার দুপুরে দলটি আগরতলা চেকপোস্ট হয়ে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে আসেন ভারতীয় পর্যটক দলটি। এ সময় দলটিকে সীমন্ত শূন্যরেখায় ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান ট্যুরিস্ট পুলিশ কুমিল্লা জোনের ইনচার্জ দীপক কুমার দাসসহ অন্যান্য ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।
জানা গেছে, আগরতলা নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার কার্যালয়ের উদ্যোগে ও আগরতা শ্যামলী এন আর ট্রাবেলসের আয়োজনে এই ট্যুরিস্ট দলটি বাংলাদেশর ঢাকা-চট্রগ্রাম-কক্সবাজারসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখবেন। এদিকে ট্যুরিস্ট দলটিকে নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ভারতীয় সেনাপ্রধান
ভারতীয় উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ ডিসিসিআইয়ের
পর্যটন শিল্পকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে: প্রতিমন্ত্রী
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী জানান, দেশের পর্যটন শিল্পকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে।
সোমবার দুপুরে গাজীপুরে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ‘সালনা পর্যটন রিসোর্ট এন্ড পিকনিক স্পট’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি জানান, পর্যটনকে নিয়ে আগে সেইভাবে চিন্তা করা হয়নি, আজকে যেভাবে চিন্তা করা হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে কেউ আজকে পিছিয়ে থাকতে চায় না। সবাই এগিয়ে যাচ্ছে পর্যটনে। তাহলে আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো? আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সেজন্য দরকার আমাদের পর্যটনকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা। দেশি-বিদেশি থেকে শুরু করে বেসরকারি খাতের সবাইকে পর্যটনের বিকাশে এগিয়ে আসতে হবে।
আরও পড়ুন: পর্যটন কেন্দ্রে সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী জানান, পর্যটন সম্পর্কে যেকোন কথা বলতে গেলেই এই খাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান সামনে আসবে। তিনি বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বেসরকারি খাতই সব দেশের পর্যটনকে এগিয়ে নিয়েছে। সরকার শুধু নীতিগত সাপোর্ট দেয়। আমরা আমাদের অংশীজনদের সকল প্রকার নীতিগত সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত। আগামী ডিসেম্বর মাসে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন সম্পূর্ণ হলে দেশের পর্যটন শিল্পের সামগ্রিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন হবে। পর্যটন শিল্প বিকশিত হলে দেশের জিডিপিও আরো বাড়বে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন বলেন, শিল্পের বিকাশে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। পর্যটন একটি ব্যাপক সম্ভাবনাময় শিল্প। দেশের পর্যটন এখন এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন সেটি এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারকে আকাশপথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যুক্ত করা হচ্ছে: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আলি কদরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বিমান পবিহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুকেশ কুমার সরকার, মো. ওলিউল্লাহ, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহির মো. জাবের ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানসহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সালনা রিসোর্ট এন্ড পিকনিক স্পটের নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে শেষ হয় চলতি বছরের ৩০ জুন। এখানে রয়েছে আধুনিক ছয়টি কটেজ, রেস্টুরেন্ট, পেস্ট্রি ও কফি কর্ণার, কনফারেন্স হল এবং ২ টি পিকনিক শেড। শিশুদের জন্যও রয়েছে বিনোদন সুবিধা ও রাইড। ৩.১২ একর জমির ওপর এই সালনা রিসোর্টটি গড়ে তোলা হয়েছে। ঢাকা থেকে ৩৩ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে গাজীপুর জেলার দক্ষিণ সালনাতে এই রিসোর্টটি অবস্থিত।
আরও পড়ুন: ১৫ বছরে এভিয়েশন খাতে প্রবৃদ্ধি হবে তিনগুণ: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
পদ্মা সেতুর কারণে বাগেরহাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীর ভিড়
ঈদের ছুটিতে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে ষাট গম্বুজ মসজিদসহ বাগেরহাট জেলার সব দর্শনীয় স্থান।
রবিবার বাংলাদেশে পালিত হয়েছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা।
সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এলাকার ঐতিহ্যবাহী স্থানে ভিড় করেছেন। তবে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করছে শিশুরা। বিনোদন পার্কগুলোর দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ ঈদ উপলক্ষে সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করেছে।
মঙ্গলবার ষাট গম্বুজ মসজিদ, হযরত পীর খানজাহান মাজার, বারাকপুর সুন্দরবন রিসোর্টে সাম্প্রতিক পরিদর্শনের সময় বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী দেখা গেছে। কেউ কেউ তাদের মোবাইল ফোন দিয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন স্মৃতি হিসেবে আনন্দের মুহূর্তগুলো ক্যাপচার করতে আবার কেউ কেউ করেছেন ভিডিও।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে তিন দিনে ১১ কোটি টাকা টোল আদায়
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে।
ষাট গম্বুজ মসজিদ ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষিত হয়েছে। ৬০০ বছরেরও বেশি আগে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
যদিও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যটি সারা বছরই দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে, তবে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের সংখ্যা থাকে বেশি। অনেকেই এখানে পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পর্যটকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এছাড়াও মাজার শরিফ, খাঞ্জেলি দিঘি, মোহাম্মদ তাহেরের মাজার, জিন্দাপীরের মাজার, একগম্বুজ মসজিদ, বিবি বেগনীর মসজিদ, পচা দিঘি, চুনখোলা মসজিদ ও সিংরা মসজিদেও পর্যটকদের ভিড় ছিল।
ঢাকা, খুলনা, সাতক্ষীরা, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শনার্থীরা জেলার ঐতিহাসিক স্থানগুলো দেখতে ভিড় জমায় এখানে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে টোল আদায়ে নতুন রেকর্ড
এছাড়া অযোধ্যা মঠ, বারাকপুর সুন্দরবন রিসোর্ট, বাগেরবাজার পৌরসভা পার্ক, চুলকাঠি, চন্দ্রমহল পার্কও ছিল দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত।
পদ্মা সেতু: বাগেরহাট হবে নতুন অর্থনৈতিক হাব
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণের জেলা বাগেরহাটের অর্থনৈতিক দৃশ্যপটে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জেলার সামগ্রিক অর্থনীতি কৃষি, মৎস্য, পর্যটন এবং মোলা বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। পদ্মা সেতু চালু হলে বাগেরহাটে অর্থনীতির চাকা ঘুরবে, কৃষি ও মৎস্য, পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে। সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি উৎপাদনের পাশাপাশি রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। আর সবজিসহ বাগেরহাটের চিংড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাতে সহজ হবে।
এই অঞ্চলে এরই মধ্যে ক্ষুদ্র-মাঝারি এবং বড় ধরণের শিল্প কল-কারখানা নির্মাণের আভাস মিলেছে। হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থান পাবেন এখানে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। সেই সাথে মানুষের ভাগ্যোর আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: ফরিদপুরের অর্থনৈতিক দ্বার উন্মোচিত
ইতিহাস-ঐতিহ্য আর পুরাকৃত্তির জেলা বাগেরহাট। ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ, দেশের দ্বিতীয় সমুন্দ্র বন্দর মোংলার অবস্থান এই জেলায়। পদ্মা সেতু নিয়ে উপকূলের এই জেলার মানুষ নতুন নতুন স্বপ্ন বুনছেন। কলা ও সবিজ বিক্রেতা থেকে শুরু করে সবপর্যায়ের ব্যসায়ীদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে এমন আশায় বুক বেঁধেছেন।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, পর্যটন বিভাগ, কৃষি,মৎস্য বিভাগ ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন পদ্মা সেতু চালু হলে এই অঞ্চল অর্থনীতির টানিং পয়েন্ট হবে। মোংলা বন্দরের কয়েক গুণ রাজস্ব আয় বাড়বে। একই সঙ্গে বাগেরহাটে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন বাড়বে। সেই সঙ্গে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। বাগেরহাটসহ এই অঞ্চলে মিল-কল-কারখানা তৈরি হলে এই অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন জানান, পদ্ম সেতু চালু হলে কৃষকরা মধ্যসত্ত্বভোগী ছাড়াই তাদের উৎপাদন করা কৃষিপণ্য সরাসরি ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। সেই সঙ্গে বিদেশে চিংড়ি রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। অর্থনৈতিক প্রবিদ্ধির হার এক দশমকি ২৫ ভাগ বৃদ্ধি পাবে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, পদ্মা সেতু বাগেরহাটসহ দক্ষিণাঞ্চলে অর্থনৈতির দার উন্মোচন করবে। এই অঞ্চলে বড় ধরনের কর্মযোগ্য হবে। মোংলা বন্দর, ইপিজেড, বিশ্বঐতিহ্যর অংশ সুন্দরবন এবং ষাটগম্বুজ মসজিদকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে। এরই মধ্যে পর্যাটন ভিত্তিক ৫০ জন গাইডকে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সড়ক ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা জানান, ঢাকা থেকে যে কোনো বন্দরের চেয়ে এখন মোংলা বন্দর কাছে। পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলা বন্দরের অগ্রগতি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মোংলা বন্দর থেকে শুরু হবে। সহজ যোগযোগ ব্যবস্থার কারণে বন্দর ব্যবহারকারীরা মোংলা বন্দরের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ভুক্তভোগী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করছে পুলিশের সাইবার টিম
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, পদ্মা সেতু চালু হলে বাগেরহাটে কৃষিক্ষেত্রে বিল্পব ঘটবে এবং কৃষিভিত্তিক প্রসেসিং জোন গড়ে উঠবে। কৃষি উদ্যাক্তা তৈরি হবে এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে উঠবে। বিভিন্ন সময়ে পদ্মা পাড়ি দিতে ফেরিঘাটে সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কৃষক নিজেই তার কৃষিপণ্য ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করে দিনে দিনে বাড়ি ফিরতে পারবেন।
উপপরিচালক মো. আজিজুর রহমানের তথ্য মতে, জেলায় বর্তমানে বছরে দুই লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন সবজি উৎপাদন হয়। যার ৭২ হাজার মেট্রিক টন জেলার বাইরে বিক্রি হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে এক লাখ মেট্রিক টন জেলার বাইরে বিক্রি হবে। কৃষি পণ্য উৎপাদনে আরও বেশি আগ্রহী হবেন।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল জানান, পদ্মা সেতু চালু হলে এই অঞ্চলে মাছ প্রসেসিং কারখানা তৈরি হবে। চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছ নষ্ট এবং অপচয় কম হবে। সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলে বাগেরহাটের চিংড়ি টেকনাফ থেকে তেতুলিয় সর্বত্রই হাট-বাজারে বিক্রি হবে। চিংড়ি রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে মুনাফা বাড়বে। আর চিংড়ি চাষিরা লাভবান হবেন। মুনাফা পেলে চিংড়ি চাষিরা চিংড়ি চাষের আয়াতন বাড়াবে।
তিনি জানান, গত বছর বাগেরহাটে চিংড়ি, সাদা মাছ, কাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছে। এই বছরে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ৯৭ হাজার মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামীতে উৎপাদন এক লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। গত অর্থ বছরে চিংড়ি রপ্তানি করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হলে আগামীতে ১০০ কোটি টাকা আয় বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।
বাগেরহাট ষাটগম্বুজ যাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. যায়েদ জানান, পদ্মা সেতু চালু হলে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন এবং ষাটগম্বুজ মসজিদ দর্শনে দেশ-বিদেশি পর্যটকদের আসা-যাওয়া বেড়ে যাবে। পর্যটকরা বাগেরহাটে এসে বিভিন্ন পর্যটন স্পর্ট দেখে দিনে দিনে আবার ফিরে যেতে পারবেন। গত বছর পাঁচ লাখ পর্যটক ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখতে আসেন। ওই বছর পর্যটকদের কাছ থেকে ৫৭ লাখ টাকা আয় হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হলে পর্যটক আসা-যাওয়া বাড়বে এবং সেই সঙ্গে রাজস্ব বাড়বে।
আরও পড়ুন: নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
বাগেরহাট চেম্বর অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি শেখ লিয়াকত হোসেন লিটন জানান, পদ্মা সেতুর কারণে বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এই অঞ্চলে শিল্প কল-কারখানা তৈরি করতে কৃষি জমি ক্রয় করছে। ব্যবসায়ীরা এই অঞ্চলের বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা থেকে মোংলা বন্দরের দুরত্ব অন্য বন্দরের চেয়ে কম হওয়ার কারণে বন্দর ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দরে ভিড়বে।
বাগেরহাট আন্তজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি শেখ নজরুল ইসলাম মন্টু জানান, তারা ইতোমধ্যে বাগেরহাট-ঢাকা রুটে বিলাসবহুল বাস চালানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (২৫ জুন) সেতুটি উদ্বোধন করবেন। ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হতে কয়েক লাখ মানুষ পদ্মার তীরে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
হজ ফ্লাইট ৩১ মে’র পরিবর্তে ৫ জুন শুরু
সৌদি কর্তৃপক্ষ শাহজালাল বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাজ শেষ করতে না পারায় আগামী ৩১ মে’র পরিবর্তে ৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট পরিচালনার অনুরোধ জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সোমবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, হজযাত্রীদের ঢাকায় প্রি-এরাইভেল ইমিগ্রেশন নিশ্চিত করতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট বিলম্বিত করা হয়েছে এবং এ বছর হজের জন্য ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের রোড টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের ৪০ সদস্যের দল প্রি-এরাইভেল ইমিগ্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইসসহ ২ জুনের আগে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবে না। যেহেতু বিমানবন্দরে ডিভাইসগুলো ইনস্টল করতেও কয়েক দিন সময় লাগবে সেহেতু মন্ত্রণালয় ৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্ত্রণালয় নতুন ঘোষিত তারিখে ফ্লাইট শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: হাবের হজ প্যাকেজ ঘোষণা
হজের সর্বনিম্ন প্যাকেজ ৪ লাখ ৬২ হাজার
বিক্ষোভের কারণে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে: মাহিন্দা রাজাপাকসে
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে দেশটিতে কয়েক সপ্তাহের গণবিক্ষোভের অবসান ঘটানোর জন্য বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীরা কয়েক দশকের মধ্য দেশের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য সরকারের পদত্যাগের দাবি করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।
বিদেশি রিজার্ভ তলানিতে এবং ২৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণে জর্জরিত দেশটি এখন দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।
আরও পড়ুন: গণবিক্ষোভের মুখে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের
জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে রাজাপাকসে বলেছেন, সরকার দেশকে পুনর্গঠনের জন্য একটি পরিকল্পনা করছে। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করে ‘প্রতি সেকেন্ড’ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়ার সুযোগ হারাচ্ছে।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা তার পদত্যাগের দাবিতে সোমবার তৃতীয় দিনের মতো প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রবেশপথ দখলে রেখেছে।
খাদ্য ও জ্বালানি কেনার জন্য জরুরি ঋণের জন্য চীন ও ভারতের সাহায্য চেয়েছে দেশটির সরকার।
মাহিন্দা রাজাপাকসে বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণ হিসেবে করোনা বিধিনিষেধ এবং গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন আয়ের ক্ষতিকে দায়ী করেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগের আহ্বান আইনপ্রণেতাদের