সিলেটে বন্যা
সিলেটে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা
ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢল ও রবিবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে সিলেটে আবারও বাড়ছে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। পানি বাড়তে থাকায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সিলেট অঞ্চলে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া তথ্যমতে, সুরমা ও কুশিয়ারা, সারি, সারি গোয়াইন, ডাউকিসহ সব নদ-নদীর পানি রবিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ছে।
পাউবোর সিলেট কার্যালয় জানায়, সোমবার (১ জুলাই) সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এসময় পানি ছিল বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে ছিল। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি রয়েছে বিপৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার উপরে।
আরও পড়ুন: সিলেট ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে ফের বন্যার আশঙ্কা
কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উজানে বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানি ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষ করে লোভা ও ডাউকি নদীতে ব্যাপক স্রোত বয়ে যাচ্ছে ও পানি বাড়ছে। নতুন করে সিলেটে ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হতে থাকলে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এতে আবারও দুর্ভোগে পড়তে হবে সিলেটবাসীকে।
গোয়াইনঘাটের জাফলং মামার বাজারের ব্যবসায়ী আকবুল মিয়া জানান, ‘গতকাল জাফলংয়ের ডাউকি নদীর পানি অনেক কম ছিল। উপর থেকে প্রবল বেগে পানি আসছে দেশে। আজ সকালে অনেক পানি দেখা যাচ্ছে।’
এদিকে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসাইন জানান, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩৯.৬ মিলিমিটার। সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৬৫ মিলিমিটার। এদিকে চেরাপুঞ্জিতেও গতকাল প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩১৩ মিলিমিটার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সিলেট ও ভারতে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ভারতের পাহাড়ি ঢলও আসছে। যে কারণে রবিবার সকাল থেকে বাড়তে শুরু করেছে জেলার সব নদ-নদীর পানি।
আরও পড়ুন: সিলেট-সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার আশঙ্কা
৪ মাস আগে
৭ দিন বন্ধ থাকার পর সিলেটের সব পর্যটন কেন্দ্র চালু
প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সাত দিন বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়া হলো সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
শুক্রবার (৭ জুন) থেকে শর্ত সাপেক্ষে পর্যটন কেন্দ্রগুলো দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক সুনজিত কুমার চন্দের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দিতে ঘোষণা দেওয়া হয়।
সিলেটের উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্রগুলো হচ্ছে- গোয়াইনঘাটের জাফলং, রাতারগুল, বিছানাকান্দি ও সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা, কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর এবং জৈন্তাপুরের লালাখাল ও ডিবির হাওর।
আরও পড়ুন: সিলেটের ৭ উপজেলায় বন্যা, সাড়ে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্দেশনামা না মানার কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
শর্তগুলো হলো-
১. সব নৌকাতে লাইফ জ্যাকেট থাকতে হবে এবং পর্যটকদের লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে ঘাট থেকে নৌকা ছাড়তে হবে।
২. পর্যটকরা পানিতে নামতে পারবেন না বা পানিতে নেমে সাঁতার কাটতে পারবেন না।
৩. ভরা বর্ষা মৌসুমে পর্যটকদের শিশু ও বাচ্চা নিয়ে আসার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
৪. পর্যটকরা নৌকায় উঠে হই-হুল্লোড় করবেন না, নৌকায় উঠে সুশৃঙ্খলভাবে বসে থাকবেন।
৫. মাঝিরা পর্যটকদের সঙ্গে সবসময় ভালো আচরণ করবেন।
৬. আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতি হলে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে বন্ধ করা পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নৌকায় পর্যটকদের লাইফ জ্যাকেট থাকতে হবে।
এর আগে গত ৩০ মে বৃহস্পতিবার প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পিয়াইন ও ধলাই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: এখনও পানিবন্দি ৬ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ
৫ মাস আগে
বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৭: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মৌলভীবাজার জেলায় আরও একজনের মৃত্যুতে দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুসারে, সর্বশেষ মৃত্যু বন্যার পানিতে ডুবে হয়েছে। ১৭ মে থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত মোট মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে প্রায় ২২ হাজার ৩৯৩ জন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মোট মৃতের মধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে ১০০ জন, বজ্রপাতে ১৫ জন, সাপের কামড়ে দুজন, ডায়রিয়ায় একজন এবং অন্যান্য কারণে নয়জন মারা গেছেন।
নিহতদের মধ্যে সিলেটে ৭৩ জন, ময়মনসিংহে ৪১ জন, রংপুরে ১২ জন এবং ঢাকা বিভাগে একজন মারা গেছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
বন্যা কবলিত ৪৫টি উপজেলার মধ্যে সিলেট বিভাগে ৩৩টি, রংপুর বিভাগে চারটি, ময়মনসিংহ বিভাগে সাতটি এবং চট্টগ্রাম বিভাগে একটি উপজেলা রয়েছে।
সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও মৌলভীবাজার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা, যেখানে যথাক্রমে ১৩, ১১, ৭ ও ৫ উপজেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এসএসসি পরীক্ষার্থীরা নতুন বই পাবে: শিক্ষামন্ত্রী
২ বছর আগে
বন্যা থেকে বাঁচতে নদীগুলো খনন করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বন্যা থেকে বাঁচতে নদী খননের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘বন্যা থেকে বাঁচতে নদীগুলো খনন করতে হবে। অন্যথায় পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই। প্রকৃতিকে অস্বীকার করে চলা যায় না। তাই বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্লানিং করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
শনিবার (৯ জুলাই) সকালে সদর উপজেলার নয়াবাজারে সিলেট জেলা যুবলীগের উদ্যোগে বন্যাদুর্গতদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ উপহার বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন সিলেটে কোন নদী সংস্কার হয়নি, পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই। এক সময় সিলেট শহর দীঘির শহর ছিল, চারপাশে পুকুর ছিল। আজ কিছুই নেই। শুধু বিল্ডিং আর বিল্ডিং। যত জলাশয় ছিল, দখল হয়ে গেছে। সাগরদিঘীতে এক ফুটা পানিও নেই। এসব কারণেই তো এতো বড় বন্যা দেখা দিয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, বন্যার সময় আমাদের সফলতা হলো- তড়িৎ গতিতে মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাদেরকে খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কমেছে।
তিনি বলেন, ১৬ জুন রাতে স্থানীয় একজন চেয়ারম্যান রাত ৩টার দিকে আমাকে বন্যার ছবি দিলেন। আমি দেখলাম, আমার সিলেট পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। তখনই দুর্যোগ মন্ত্রীকে ফোন দিলাম, বললাম- আমার সিলেট শেষ। তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মন্ত্রী বললেন- চিন্তার কোন কারণ নেই, প্রয়োজনীয় খাবার, টাকা-পয়সা আছে। যা লাগবে বলবেন।
মোমেন বলেন, বন্যার মানুষ থেকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাইলাম। প্রধানমন্ত্রী নৌকার ব্যবস্থা করে দিলেন। সেনাবাহিনী পাঠিয়ে মানুষকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করলেন। এবারের বন্যায় সিলেটে সরকারের পক্ষ থেকে যা সাহায্য এসেছে তা আর কখনও আসেনি।
আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বন্যায় সময় নেতাকর্মীরা যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তা প্রশংসার দাবি রাখে। তারা শুকনো খাবার দিয়েছেন, ত্রাণ দিয়েছেন। এজন্য বলি, আওয়ামী লীগ সরকার বারবার দরকার। আওয়ামী লীগ জনগণের সরকার। জনগণের মান উন্নয়নে এ সরকার কাজ করে।
জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামীম আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১৩: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
সিরাজগঞ্জে বন্যায় ১৪০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি
২ বছর আগে
সিলেটে কমছে সুরমা-কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদীর পানি
সিলেটেন সুরমা, কুশিয়ারা, লোভা, পিয়াইন, সারিসহ বিভিন্ন নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
৪ বছর আগে