বাস্তুচ্যুত
ইসরায়েলি হামলায় গাজার অন্তত ৬০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
জাতিসংঘের একটি সংস্থা জানিয়েছে, চলমান ইসরায়েলি হামলার ফলে গাজা উপত্যকার জনসংখ্যার অন্তত ৬০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
শনিবার জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর (ওসিএইচএ) সিনহুয়াকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেছে, ‘১৫ দিন আগে বর্তমান হামাস-ইসরায়েল রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য হয়েছেন।’
সংস্থাটি আরও বলেছে, ফিলিস্তিন শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) সঙ্গে যুক্ত ১৪৭টি শিক্ষামূলক জেলা এবং স্কুলে ৫ লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি লোক বাস করে। যার মধ্যে মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ এবং ইউএনআরডব্লিউএ’র সঙ্গে অনুমোদিত নয় এমন ৬৭টি স্কুলে ৭০ হাজার জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: মিশরকে গাজায় সীমিত মানবিক সহায়তা সরবরাহের অনুমতি ইসরায়েলের
বিবৃতিটি অনুযায়ী, প্রায় ১ লাখ ১ হাজার মানুষ অর্থোডক্স সেন্টার, গাজা শহরের গির্জা, হাসপাতাল এবং অন্যান্য সরকারি ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন।
উপরন্তু, ফিলিস্তিনের সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় অনুমান করছে, আশ্রয়দাতা পরিবারসহ প্রায় ৭ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ রয়েছেন।
বিবৃতি অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে ইউএনআরডব্লিউএ এডুকেশনাল অপারেশনস ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এমন এক সময়ে ক্রমবর্ধমান জনবহুল হয়ে উঠেছে, যখন পানি, খাদ্য এবং ওষুধের মতো মৌলিক সম্পদের মারাত্মক ঘাটতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।
কিছু শিক্ষামূলক জেলায় ইউএনআরডাব্লিউএ পানির ব্যবহারে রেশন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছে। এতে প্রতিদিন মাথাপিছু মাত্র এক লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজায় 'মানবিক বিরতির' আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের ব্যর্থতায় ফ্রান্সের দুঃখ প্রকাশ
এতে বলা হয়, অতিরিক্ত ভিড় এবং মৌলিক সরবরাহের অভাব লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার প্রতিবেদনের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।
১৯ অক্টোবর ইউএনআরডাব্লিউএ খান ইউনিসে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের জন্য প্রথম শিবির স্থাপন করে। যেখানে ৬০টি তাঁবু রয়েছে এবং শত শত অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনি ছিটমহলের দক্ষিণ অংশে চলমান বোমা হামলা এবং যুক্তিসঙ্গত বাসস্থান খুঁজে পেতে ব্যর্থতার কারণে কিছু বাস্তুচ্যুত মানুষ উত্তর গাজা উপত্যকায় ফিরে আসছে বলে উপাখ্যানমূলক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বেসামরিক নাগরিকদের বাস্তুচ্যুতি এবং মৌলিক পরিষেবাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্বল প্রবেশাধিকারপ্রাপ্ত শিশু, বয়স্ক, চিকিৎসা যত্নের প্রয়োজন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং গর্ভবতী নারীসহ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ইহুদি বিরোধী ছবি না আঁকার অভিযোগে দীর্ঘদিনের কার্টুনিস্টকে বরখাস্ত করল গার্ডিয়ান
তারা মানসিক ও সামাজিক দুর্দশা, অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা, তথ্যে প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত এবং অপব্যবহার বা শোষণের সম্ভাবনার মুখোমুখি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী অধিকৃত গাজা উপত্যকায় তাদের হামলা জোরদার করতে থাকে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ১৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৩ হাজারের বেশি আহত হয়েছে। ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: মানবিক সহায়তা নিয়ে ট্রাক রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে
১ বছর আগে
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতদের স্থায়ী সমাধানে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব চায় ইউএনএইচসিআর-এনজিও
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ও রাষ্ট্রহীনদের জন্য টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও সুশীল সমাজের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে সহযোগিতা বাড়ানোর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ইউএনএইচসিআরের ২০২৩ সালের আঞ্চলিক এনজিও কনসালটেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক রিফিউজি রাইটস নেটওয়ার্ক (এপিআরআরএন), ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব ভলান্টারি এজেন্সিস (আইসিভিএ) এবং এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক অব রিফিউজিসের (এপিএনওআর) সহযোগিতায় এ কনসালটেশন অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনে ৭১ লাখ বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
"টেকসই সমাধানের জন্য অন্তর্ভুক্তিমুলক প্রচার" প্র্রতিপাদ্য সামনে রেখে বেশ কিছু নিয়ে আলোচনা হয়েছে এতে। এ অনুষ্ঠানে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৯ টি দেশের ১৬১ টি সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী ১৮০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী একত্রিত হয়েছিলেন।
২০২২ সালের শেষে রেকর্ড করা তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এই অঞ্চলে ৭০ লাখেরও বেশি শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থী এবং ৫০ লাখ সংঘাত-প্রভাবিত অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষ (আইডিপি) রয়েছে।
বাস্তুচ্যুতদের বেশিরভাগই আশ্রয় পাওয়া দেশগুলোতে দীর্ঘস্থায়ীভাবে বাস করছে।
ইউএনএইচসিআর’র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক ইন্দ্রিকা রাতওয়াতে বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তি একটি জটিল বিষয়, যা প্রায়শই ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। তবে যখন আমরা শরণার্থীদের জন্য স্থানীয়ভাবে সমাধান খুঁজে বের করার জন্য শিক্ষা, জীবিকা, দক্ষতা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো বিষয়গুলো নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করি।’
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানবিক অংশীদারদের জীবনের সব ক্ষেত্রে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী ও রাষ্ট্রহীন লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা কীভাবে সমগ্র সমাজের উপকারের জন্য স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে সে বিষয়ে আলোচনা হয় এ কনসালটেশনে। এ ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের বিষয়ে সর্বোত্তম অনুশীলন ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ দেয় এটি।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আইসিভিএ'র আঞ্চলিক প্রতিনিধি কেয়া সাহা চৌধুরী বলেন, ‘ফলপ্রসু অন্তর্ভুক্তির জন্য বাস্তুচূতদের প্রতি ধারণার পরিবর্তন প্রয়োজন। মনে করতে হবে- জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা শুধু সহায়তার সুবিধাভোগী নয় বরং সম্পদ, তারা যে সব সম্প্রদায়ের অংশ, তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। একই সঙ্গে সম্প্রসারণের মাধ্যমে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার জন্য সহায়ক নীতি ও সুরক্ষা প্রয়োজন।‘
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধ ও দুর্যোগে ২০২২ সালে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭১ মিলিয়ন: প্রতিবেদন
ইউএনএইচসিআর, এনজিও ও কমিউনিটি-ভিত্তিক সংস্থাগুলো কীভাবে জাতীয় ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তির প্রচারের জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা এবং সমর্থন করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল।
এপিএনওআর-এর নির্বাহী পরিচালক নাজিবা ওয়াজেফাদোস্ট বলেন।
এপিএনওআর’র নির্বাহী পরিচালক নাজিবা ওয়াজেফাদোস্ট বলেন, শরণার্থী নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলোর ক্ষমতায়ন অপরিহার্য। এই সংস্থাগুলো তাদের প্রতিনিধিত্বকারী সম্প্রদায়গুলোকে বুঝতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে পারে। যোগাযোগের ঘাটতিগুলো পূরণ করতে পারে এবং সম্প্রদায়ের মাধ্যমে সমাধানগুলো সহজতর করতে পারে। দ্বিতীয়ত, লিঙ্গ ভারসাম্য বজায় রাখা অপরিহার্য। সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে শরণার্থী সম্প্রদায়ের মধ্যে এবং সরকারি সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে সব স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের ন্যায়সঙ্গত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করা উচিত।’
শরণার্থী নেতৃত্বাধীন সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও স্বীকার করেছেন আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা। কীভাবে এই অঞ্চলের দেশগুলোকে পুনর্বাসন ও পরিপূরক পথগুলোতে জড়িত হতে আরও উৎসাহিত করা যায় এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি অনুমানযোগ্য ও ন্যায়সঙ্গত দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়।
এশিয়া প্যাসিফিক রিফিউজি রাইটস নেটওয়ার্কের এপিআরআরএন-এর কো-সেক্রেটারি জেনারেল হাফসার তামিসুদ্দিন বলেন, ‘শরণার্থীরা স্থানীয়দের সঙ্গে যেন নিজেদের দক্ষতা যোগ করতে পারে তার জন্য আমাদের উদ্ভাবনী উপায়গুলো ভাবতে হবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে শরণার্থীদের সেই দক্ষতাগুলো কাজে লাগানোর এবং সমাজে অবদান রাখার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যাতে তারা ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী থেকে সক্ষম সম্প্রদায়গুলোতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।’
আরও পড়ুন: ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৬০, কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত
আলোচনার সুপারিশগুলো ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইউএনএইচসিআর নির্বাহী কমিটিতে উপস্থাপন করা হবে এবং ২০২৪ সালের জুনে জেনেভায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বব্যাপী এনজিও কনসালটেশনে এগুলো জানানো ও সমর্থন করা হবে।
প্রথম ইউএনএইচসিআর-এনজিও আঞ্চলিক পরামর্শ জুলাই ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং কোভিড -১৯ এর প্রেক্ষাপটে শরণার্থীদের সামাজিক-অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির দিকে মনোনিবেশ করেছিল।
১ বছর আগে
পুনর্বাসন কর্মসূচি: সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টা চলছে
যুক্তরাষ্ট্র একটি পুনর্বাসন কর্মসূচি দাঁড় করানোর পরিকল্পনা করেছে, যা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশটিতে স্থানান্তরের জন্য সক্ষম করে তুলবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘পুনর্বাসন কর্মসূচি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) সঙ্গে সমন্বয় করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
তিনি বলেন, অন্যান্য দেশও একই ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের সঙ্গে কাজ করছে।
মার্কিন এই রাষ্ট্রদূত বলেন, বিষয়টি নজিরবিহীন বাস্তুচ্যুত সংকটের মুখে শরণার্থী পুনর্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের নেতৃত্বকে প্রতিফলিত করে।
রাষ্ট্রদূত হাস সম্প্রতি ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব নিয়ে কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের জন্য ৩ মিলিয়ন ডলার মানবিক সহায়তা দেবে দ.কোরিয়া
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম লক্ষ্য হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করা এবং মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন সম্ভব না হওয়া পর্যন্ত তাদের আশ্রয় অব্যাহত রাখা।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং বার্মা (মিয়ানমার) থেকে বাংলাদেশে তাদের প্রত্যাবাসনের ৬ বছর পূর্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, এ সময়ে (৬ বছরে) তাদের দেশে স্বাগত জানানো ও আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবিশ্বাস্য উদারতা ও সহানুভূতি দেখিয়েছে।
এই অবিশ্বাস্য আতিথেয়তার সমর্থনে রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও এ অঞ্চলের রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মানবিক সহায়তা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, রোহিঙ্গারা শিগগিরই নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে নিজ ভূমিতে ফিরে যেতে পারবে।’
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখনও নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের অনুমতি দেয় না।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে সংকট সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের ভুলে যায়নি ইইউ: ইউএনবিকে গিলমোর
বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিতে ইচ্ছুক, কিন্তু কিছু বিদেশি সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এই মুহূর্তে তাদের প্রত্যাবাসনের সমর্থন করছে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তারা (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) মনে করে, মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের সেখানে ফেরত পাঠানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।’
মোমেন বলেন, প্রত্যাবাসন শুরু করতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যারা কাজ করছেন তাদের সবার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন রয়েছে বলে তারা মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘বিদেশি সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আমাদের প্রত্যাবাসনের জন্য না যাওয়ার পরামর্শ দেয়।’
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে ইচ্ছুক এবং মিয়ানমার সরকারও তাদের ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক।
মোমেন বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রত্যাবাসন। আমি সবসময় আশাবাদী যে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পর তারা আরও উন্নত জীবন পাবে।’
আরও পড়ুন: অনেক বৈশ্বিক নেতৃত্ব এই মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন চান না: মোমেন
১ বছর আগে
মালয়েশিয়ার বন্যায় নিহত ৫, বাস্তুচ্যুত ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে
মালয়েশিয়ায় বন্যায এখন পর্যন্ত নিহত পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। সর্বশেষ এক তরুণীর মৃতদেহ একটি প্রাইভেটকারের ভিতর থেকে উদ্ধার করেছে,যেটি বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছিল। এটি মৌসুমি বন্যার পঞ্চম মৃত্যু। বন্যায় এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে।
সোমবার দেশটির পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে যে ২৩ বছর বয়সী একজন মহিলা নিখোঁজ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছিল। দিনের শুরুতে দক্ষিণ জোহর রাজ্যের একটি প্লাবিত রাস্তায় কাজ করার জন্য গাড়ি চালাচ্ছিল।তখন তার গাড়িটি ভেসে যায়।
এরপর উদ্ধারকারীরা কয়েক ঘন্টা পরে গাড়িটি উদ্ধার করে এবং তার লাশ খুঁজে পায়।
এর আগে বন্যার পানি থেকে উদ্ধারকারীরা একইভাবে জোহরের একটি পাম তেলের বাগানে কাজ করার জন্য গাড়ি চালানো একজন ব্যক্তির গাড়ি উদ্ধার করে তার লাশ পাওয়া যায়। এছাড়া তিন বৃদ্ধও বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪, নিখোঁজ ৯
সিঙ্গাপুরের সীমান্তবর্তী রাজ্য জোহরে ৪০ লাখ মানুষ বাস করে যা মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য। স্কুল এবং কমিউনিটি সেন্টারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে সরিয়ে নেয়া মানুষের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি থেকে কমে এসেছে।
বোর্নিও দ্বীপের প্রত্যন্ত অঞ্চল সহ আরও বেশ কয়েকটি রাজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জোহরে বন্যা দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং রাজ্যে বন্যা প্রশমন প্রকল্পগুলোকে গতিশীল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় পাঠানো কনটেইনার থেকে লাশ উদ্ধার: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ
তিনি এক টুইট পোস্টে বলেছেন, ‘এই বিষয়টিকে বিলম্বিত করা যাবে না এবং আরও গুরুত্ব সহকারে মোকাবিলা করা উচিত যাতে (বন্যা) আবার না ঘটে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে যে নভেম্বরে শুরু হওয়া বার্ষিক বর্ষা মৌসুমে দেশটি অবিরাম ভারী বৃষ্টির ষষ্ঠ পর্বের মুখোমুখি হয়েছে। এরআগে ডিসেম্বরে, বন্যার কারণে কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
জোহরে পুলিশের পোস্ট করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে রাস্তা ও বাড়িঘর কর্দমাক্ত পানির নিচে অদৃশ্য হয়ে গেছে, যেখানে কেবল ছাদ দেখা যাচ্ছে।
জোহরের কিছু অংশ এবং বোর্নিওতে মালয়েশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে মঙ্গলবার আরও বৃষ্টি ও ঝড়ের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, যা আরও আকস্মিক বন্যার কারণ হতে
পারে। দেশব্যাপী এক ডজনেরও বেশি নদীর পানি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেও সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় ক্যাম্প এলাকায় ভূমিধসে নিহত ২১
১ বছর আগে
জলবায়ু পরিবর্তনে ৭১ লাখ বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে শরণার্থী এবং অভিবাসী স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোকে যথেষ্টভাবে মোকাবিলা করার জন্য পেশাদার দক্ষতা এবং সক্ষমতা তৈরিতে দেশ এবং অঞ্চলগুলোকে সমর্থনের লক্ষ্যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ঢাকায় শরণার্থী এবং অভিবাসী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বার্ষিক গ্লোবাল স্কুল তৃতীয় বারের মতো আয়োজন করছে।
২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিনের মধ্যে, নীতিনির্ধারক, জাতিসংঘের অংশীদার সংস্থা, একাডেমিয়া, সুশীল সমাজের সদস্যরা এবং গ্লোবাল স্কুলের স্টেকহোল্ডাররা সক্ষমতা-নির্মাণের মূল উপাদানগুলোকে তুলে ধরার জন্য জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে৷
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ই-লার্নিং হাইব্রিড ইভেন্টটি বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে মহামারিতে মৃতের সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের প্রায় ৫ গুণ বেশি: ডব্লিউএইচও
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বব্যাপী, বর্তমানে আট বা এক বিলিয়নের মধ্যে একজন অভিবাসী এবং ২৮ কোটি ১০ লাখ আন্তর্জাতিক অভিবাসী এবং কয়েক মিলিয়ন ব্যক্তি রাষ্ট্রহীন।
জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, দ্বন্দ্ব, বাণিজ্য এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি এই প্রবণতাকে ত্বরান্বিত করছে।
শরণার্থী ও অভিবাসীদের স্বাস্থ্য অধিকার এবং চাহিদা পূরণে স্বাস্থ্যকর্মীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ড. টেড্রস অ্যাডহানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, ‘অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুতি শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার ওপর গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য, আর্থিক প্রতিবন্ধকতা, কলঙ্ক এবং বৈষম্য সবই উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।’
‘স্বাস্থ্য কর্মীদের এই বাধাগুলো অতিক্রম করতে সহায়তা করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্র্যান্ট হেলথ হলো শরণার্থী ও অভিবাসীদের আরও ভালোভাবে সেবা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা তৈরির জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ।
যদিও সমস্ত শরণার্থী এবং অভিবাসীরা ক্ষতিগ্রস্ত নয়, প্রায়শই তারা নির্ধারকদের একটি বিন্যাসের কারণে, জেনোফোবিয়া এবং বৈষম্য থেকে দরিদ্র জীবনযাপন, আবাসন এবং কাজের পরিস্থিতি এবং মানুষ কেন্দ্রিক স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলোতে অপর্যাপ্ত সুযোগ পায়। যা উদ্বাস্তু অভিবাসী স্বাস্থ্য চাহিদার জন্য সংবেদনশীল।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বক্তব্য দেন ডব্লিউএইচও’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যের জন্য মানবাধিকার এমন একটি অধিকার যা সর্বত্র সকল মানুষের, বিশেষ করে উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের জন্য প্রসারিত। কারণ সত্যিকার অর্থে সম্মানিত, সুরক্ষিত এবং পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য একটি অধিকার অবশ্যই সর্বাধিক প্রান্তিক এবং দুর্বলদের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে উপভোগ করতে হবে- যারা ঝুঁকিতে রয়েছে বা যারা ইতোমধ্যেই পিছনে পড়ে আছে, যার মধ্যে প্রায়শই চলাফেরা করা লোকদের অন্তর্ভুক্ত থাকে।’
প্রতি বছর ভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল স্কুলের লক্ষ্য ডব্লিউএইচও এবং সরকারগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় দেশগুলোর শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগানো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, এ বছর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ৭১ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যা ২০৫০ সালের মধ্যে এক কোটি ৩৩ লাখে পৌঁছাতে পারে।
আরও পড়ুন: গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যু, ভারতের তৈরি সিরাপ নিয়ে ডব্লিউএইচও’র সতর্কবার্তা
১৯৭৮ সাল থেকে দেশটি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের তিনটি বড় জনস্রোত প্রত্যক্ষ করেছে। যাদের প্রত্যেকের অনন্য চিকিৎসা চাহিদা রয়েছে এবং কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শিবিরে রাখা হয়েছে।
আঞ্চলিক পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশ শুধুমাত্র তাদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার সুযোগই দেয়নি বরং সম্প্রতি কোভিড-১৯ টিকা রয়েছে। তবে এটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং আইনি দুর্বলতাগুলো মোকাবিলার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টাও করেছে।’
স্বাস্থ্য ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক ডা. সান্তিনো সেভেরোনি বলেছেন, ‘বার্ষিক গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ হলো ডব্লিউএইচও হেলথ অ্যান্ড মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের একটি ফ্ল্যাগশিপ এবং প্রচারের জন্য গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নের দিকে উদ্বাস্তু ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আঞ্চলিক এবং দেশীয় অফিসগুলোর সঙ্গে ২০১৯ থেকে ২০২৩ (জিএপি) উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের স্বাস্থ্য কৌশলগত এবং অপারেশনাল সহযোগিতা জোরদার করার একটি সুযোগ।
সকল দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত গ্লোবাল স্কুলের লক্ষ্য হলো নীতি নির্ধারক, স্বাস্থ্য সেক্টর ম্যানেজার এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে কর্মরত কর্মকর্তাদের বিভিন্ন শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানো।
গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বেসরকারি সংস্থা, যুব প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরাও অংশগ্রহণ করেন।
ডা. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেছেন, ‘প্রতিটি প্রেক্ষাপট থেকে পরবর্তী পর্যন্ত, কোনো চ্যালেঞ্জ একই নয়, সমাধানও হবে না। তবে সকল দেশ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য গুরুতর প্রয়োজন হল এমন একটি স্বাস্থ্যকর্মী যা সুপ্রশিক্ষিত, সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল এবং যোগ্য, যা উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের চাহিদা, তাদের ভাষা এবং অনন্য স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতি সংবেদনশীল।’
আরও পড়ুন: অসংক্রামক রোগে প্রতি দুই সেকেন্ডে ৭০ বছরের কম বয়সী ১ জনের মৃত্যু: ডব্লিউএইচও
১ বছর আগে
স্বাভাবিক জীবনের অপেক্ষায় বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা
আসছে ২৫ আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক সীমানা পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পাঁচ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস এন্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস এর উদ্যোগে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী (রোহিঙ্গা) সমস্যা নিয়ে একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের জুন ২০২২ এর হিসাবে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৩ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে।
বিশ্বের বৃহত্তম এই শরণার্থী ক্যাম্পের মানুষগুলো দৈনন্দিন ও দীর্ঘমেয়াদি সকল প্রয়োজন মেটাতে মানবিক সাহায্যের ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল।
এই মানবিক সংকট নিরসনে বাংলাদেশ সরকার শুরুতেই বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে তাদের নীতিমালা অনুযায়ী সরকারের সহায়ক হয়ে এই সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানায়। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি)’র সহায়তায় এবং তার সহযোগী সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে কক্সবাজারে পপুলেশন মুভমেন্ট অপারেশন (পিএমও) নামে একটি আন্তর্জাতিক অপারেশন যাত্রা শুরু করে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব, কাজী শফিকুল আজম বলেন:‘সংকটটি ইতোমধ্যেই একটি জটিল ও দীর্ঘায়িত বাস্তুচ্যুতি সংকটে পরিণত হয়েছে। এজন্য, শরণার্থী ক্যাম্প ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে বর্তমানে চলমান কার্যক্রম সমন্বয় করে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ। আমরা এই সঙ্কট নিরসনের জন্য প্রতিশ্রুতি ও সহায়তার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সহায়তা চায় ইউএনএইচসিআর
ক্যাম্পের মোট জনগণের ৫১ শতাংশই শিশু এবং প্রায় ৫২ শতাংশ নারী ও কিশোরী। প্রতি তিনটি পরিবারের মধ্যে একটির সদস্যরা সহজেই মানব পাচার, বাল্যবিয়ে, যৌন শোষণ ও নিপীড়ন ইত্যাদির শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ক্যাম্পে বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচি যেমন-স্বল্পমেয়াদী আশ্রয়কেন্দ্র, টেকসই আবাসন, সৌরচালিত পানি সঞ্চালন নেটওয়ার্ক, দুর্যোগ নিরসনসহ গৃহীত স্থায়িত্বশীল উদ্যোগ অনেক মানুষের জীবন রক্ষা করেছে।
আইএফআরসি-র এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক পরিচালক, আলেকজান্ডার ম্যাথিউ বলেন, ‘ক্যাম্পে বাইরে থেকে যা দৃশ্যমান, তা গত পাঁচ বছরের অনেক উদ্যোগের ফলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমরা বাংলাদেশ সরকারসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থাকে তাদের এই অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু যা দৃশ্যমান নয় অথচ ক্যাম্পে বসবাসরত মানুষের জীবনে ঘটে চলেছে, তা হচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, তাদের কোনো কাজ বা চলাফেরার স্বাধীনতা নেই, বরং কম হলেও অনিবার্যভাবে আছে বিষন্নতা, পাচার, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতাসহ অন্যান্য সহিংসতার শিকার হবার ঝুঁকি। যেহেতু কোন স্থায়ী সমাধান এখনও নিশ্চিত নয়, মানবিক সহায়তা হিসেবে জীবন রক্ষাকারী উদ্যোগের পাশাপাশি বিনোদন এবং সুরক্ষা ব্যবস্থার উপরও জোর দেওয়া দরকার।’
পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে কক্সবাজারের ভৌগলিক অবস্থানের জন্য, যা অতিমাত্রায় ঘূর্ণিঝড় প্রবণ। এই এলাকা হরহামেশাই জলোচ্ছ্বাস, বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়সহ ভারি বর্ষণের শিকার হয় যার ফলে ভূমিধ্বস, জলাবদ্ধতা, ঘরবাড়ির ক্ষতি, ঘনঘন আগুন, মহামারি যেমন কলেরা, ডেঙ্গু, এবং ডিপথেরিয়াসহ বিভিন্ন দুর্যোগ এই এলাকার নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে উঠেছে। তার উপর ক্যাম্পের ঘনবসতির কারণে কলেরা ও কোভিড মাঝে মাঝেই অতিমারির আকার ধারণ করে।
আইএফআরসি, বাংলাদেশ ডেলিগেশনের প্রধান সঞ্জিব কাফলে বলেন, ‘এই সংকট আইএফআরসি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং দুরূহ মানবিক সহায়তা কার্যক্রম। গত পাঁচ বছর ধরে ক্যাম্পে সুরক্ষাসহ যাবতীয় মানবিক সহায়তা প্রদানে, আইএফআরসি ও তার সহযোগী ন্যাশনাল সোসাইটিগুলো বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টকে সহায়তা করে আসছে। কোভিড-১৯ এর অভিজ্ঞতার আলোকে, আইএফআরসি এখন প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতির উপর কাজ করছে। তাই কক্সবাজারের বাস্তুচ্যুত এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে সাহায্য প্রদানের ক্ষেত্রে আইএফআরসি'র বর্তমান কৌশল হচ্ছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত কম্যুনিটিতে সমন্বিত কম্যুনিটি সহনশীলতা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকরন এবং কার্যকর দুর্যোগ সাড়াদান ইত্যাদিতে মনোযোগ বৃদ্ধি।’
আইএফআরসি এবং অন্যান্য সহযোগী ন্যাশনাল সোসাইটির যৌথ সহযোগিতায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এই জরুরি মানবিক প্রয়োজন মেটাতে ও তা বৃদ্ধিতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আশ্রয়, স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তা, ওয়াশ, জীবিকায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে লক্ষ মানুষের জীবন রক্ষার মানবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে। সেই সাথে সুরক্ষা, জেন্ডার ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অন্তর্ভুক্তিকরণ, জনগোষ্ঠীকে যুক্ত করা এবং জবাবদিহিতা ইত্যাদিকে মূলধারায় নিয়ে আসার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সহায়তা চায় ইউএনএইচসিআর
দিল্লিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে ভারত
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইইউর সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
২ বছর আগে
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় সমর্থন চান প্রধানমন্ত্রী
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া ১০ লাখ রোহিঙ্গার নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসক্যাপ) ৭৮তম অধিবেশনে সম্প্রচারিত একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ১১ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছে। এই মানবিক সঙ্কট নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মরাত্মক হুমকির সৃষ্টি করেছে।’
তিনি বলেন,‘আমরা এই বাস্তুচ্যুত মানুষের নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো আগ্রহ এবং সক্রিয় সমর্থন আশা করি।’
তিনি বলেন, বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব পুনরুদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন রাশিয়ান-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হিসাবে দেখা দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো যুদ্ধের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় যৌথ পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।’
তিনি উল্লেখ করেন যে, মহামারীটি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে যেখানে দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
পড়ুন: করোনার টিকাকে ‘বৈশ্বিক পাবলিক পণ্য’ ঘোষণার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
২ বছর আগে
ইউক্রেন সংকট: সহিংসতায় এক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত
ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ কারণে সৃষ্ট সহিংসতায় কমপক্ষে এক লাখের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানায়, ইতিমধ্যে জোরপূর্বক গণবাস্তুচ্যুতিও শুরু হয়েছে।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র শাবিয়া মান্টু বলেছেন, ‘এক লাখের মতো মানুষ গৃহ হারা ও দেশটির ভেতরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে আমরা ধারণা করছি। এ অঞ্চলে আরও কয়েক হাজার মানুষ আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করেছেন এই বিষয়েও আমরা জ্ঞাত আছি। আর এটা আমরা লক্ষ করছি এই পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে।’
আরও পড়ুন: রুশ আক্রমণে হুমকির মুখে ইউক্রেনের রাজধানী
তিনি বলেন, ‘গতকাল আমরা দেখেছি মোল্দোভায় পাঁচ হাজার শরণার্থীর আগমন ঘটেছে। এছাড়া অন্যরা পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া ও রাশিয়ার দিকে যাচ্ছে।’
২ বছর আগে
মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার আশ্বাস জাপানের
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে জাপান কাজ করে যাবে।
সম্প্রতি জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে হায়াশি ইয়োশিমাসার নিযুক্তিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ.কে.আব্দুল মোমেন তাকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি প্রেরণ করেন। এ প্রেক্ষিতে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন দেবে: মিয়া সেপ্পো
চিঠিতে তিনি জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের নিরাপদে,স্বেচ্ছায় এবং সম্মানজনকভাবে প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে জাপান কাজ করে যাবে। বাংলাদেশের পদক্ষেপে সহযোগিতার পাশাপাশি দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর লক্ষ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতি উন্নতির জন্য জাপান মিয়ানমারকে উৎসাহিত করবে বলেও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠিতে উল্লেখ করেন।
চিঠিতে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, জাপান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আস্থা, সহযোগিতা ও পারস্পরিক কল্যাণের দৃঢ় নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি ২০২২ সালে দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে এই ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে একসাথে কাজ করার প্রত্যাশার কথাও জানান।
আরও পড়ুন: সব দেশ স্বীকার করেছে রোহিঙ্গারা যেন দেশে ফেরত যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা রেজুলেশন গৃহীত
২ বছর আগে
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে সু চির প্রতি আহ্বান
রোহিঙ্গা, অন্যান্য শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবসনের জন্য মিয়ানমার সরকারকে প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র্র।
৪ বছর আগে