জলদস্যু
জিম্মি জাহাজ আব্দুল্লাহর মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জলদস্যুরা
সোমালিয়ার উপকূলে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ জিম্মি করার ৯ দিনের মাথায় জাহাজ মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জলদস্যুরা।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে বলে জানায় এমভি আব্দুল্লাহ’র মালিকপক্ষ এসআর শিপিং (কবির গ্রুপ)- এর গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ার হাবিয়ো বন্দরে নোঙর করেছে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ
তিনি ইউএনবিকে বলেন, বুধবার দুপুরে জলদস্যুরা ফোন করেছে। তবে এখনও কোন কিছু তারা দাবি করেননি। নাবিকদের বিষয়ে এবং জাহাজের সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে মাত্র। এখন আলোচনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আমরা আশা করছি একটি সমাধানের পথ বেরিয়েছে। দস্যুরা জানিয়েছে নাবিকরা সবাই ভালো আছে। তাদের উপর কোনো নির্যাতন করা হবে না। তারা আবারও যোগাযোগ করবে।
নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, যোগাযোগ শুরুর দিকটি ইতিবাচক। মালিকপক্ষ ও বিমাকারী প্রতিষ্ঠান জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমঝোতায় পৌঁছাবে।
উল্লেখ্য, মোজাম্বিক থেকে ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ এমভি আবদুল্লাহ নামে বাংলাদেশি একটি জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। পরে জাহাজটি তারা সোমালিয়ার একটি উপকূলে নোঙ্গর করে। জিম্মি করার ৯ দিনের দস্যুদের পক্ষ থেকে বুধবার প্রথম যোগাযোগ করা হয় বলে মালিক পক্ষ জানায়। এর মধ্য দিয়ে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত হওয়ার আশার আলো দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: কয়লাভর্তি জিম্মি জাহাজ আব্দুল্লাহতে বিস্ফোরণের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি সব ক্রু সদস্যকে মুক্ত করতে জরুরি পদক্ষেপ চায় নাবিক জয়ের পরিবার
সোমালিয়ান জলদস্যদের হাতে জিম্মি হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহতে কর্মরত নাটোরের জয় মাহমুদের পরিবারের প্রতিটা মুহূর্ত কাটছে উৎকন্ঠায়। অর্ডিনারি নাবিক হিসাবে কর্মরত জয় মাহমুদের বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সালাইনগর গ্রামে।
মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) দুপুরে ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটিকে জিম্মি করে জলদস্যুরা। জিম্মি করা হয় জয়সহ জাহাজের ২৩ জনকে। জলদস্যুদের কবলে পড়ার মুহূর্তে জয় তার চাচাতো ভাই মারুফকে জানিয়েছিলে পরিস্থিতির ভয়াবহতার কথা। তবে বাবা-মাকে জানাতে নিষেধ করেছিল। কিন্তু চাপা থাকেনি সে কথা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের মাধ্যমে খবর পায় পরিবার। একমাত্র ছেলের বন্দিদশার কথা শোনার পর থেকে বাবা জিয়াউর রহমান ও মা আবিদা বেগমের চোখে ঘুম নেই। তারা চান তাদের সন্তানসহ জাহাজের সবাইকে উদ্ধারে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার ও জাহাজ কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, নাটোরের জয় মাহমুদ গত বছরের ২৯ নভেম্বর জাহাজটিতে যোগদান করে। জাহাজে জিম্মি ২৩ জনের মধ্যে চট্টগ্রামের ১১ জন, নোয়াখালীর ২ জন। এছাড়া নাটোর, নওগাঁ, ফরিদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, নেত্রকোণা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও খুলনার নাবিক রয়েছেন।
জলদস্যুর কবলে জাহাজ: ২৩ নাবিকের ১১ জনই চট্টগ্রামের
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর জিম্মি ২৩ নাবিকের ১১ জনই চট্টগ্রামের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে জাহাজটির মালিকের প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ।
কেএসআরএমের কর্মকর্তারা জানান, জাহাজটি আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশে যাচ্ছিল। যাত্রাপথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুরা জাহাজের দখল নেয়।
জিম্মি নাবিকরা সুস্থ আছেন জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জলদস্যুর কবল থেকে জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। জাহাজটির ২৩ নাবিকের মধ্যে ১১ জনই চট্টগ্রামের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ার দস্যুদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশি জাহাজ
কেএসআরএম-এর মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের জাহাজটি ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়েছে বলে জানতে পেরেছি। জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তবে জিম্মি ২৩ ক্রুর সবাই জাহাজের কেবিনে নিরাপদে আছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
জিম্মি হওয়া ক্রুরা হলেন- ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ, চিফ অফিসার মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার মো. তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট মো. সাব্বির হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী এএসএম সাইদুজ্জামান, দ্বিতীয় প্রকৌশলী মো. তৌফিকুল ইসলাম, তৃতীয় প্রকৌশলী মো. রোকন উদ্দিন, চতুর্থ প্রকৌশলী তানভীর আহমদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেক্ট্রিশিয়ান ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ, এবি মো. আনোয়ারুল হক, এবি মো. আসিফুর রহমান, এবি সাজ্জাদ হোসেন, ওএস জয় মাহমুদ, ওএস মো. নাজমুল হক, ওএস আইনুল হক, অয়েলার মোহাম্মদ শামসউদ্দিন, মো. আলী হোসেন, ফায়ারম্যান মোশারফ হোসেন শাকিল, চিফ কুক মো. শফিকুল ইসলাম, জিএস মো. নূর উদ্দিন ও ফিটার মো. সালেহ আহমেদ। তাদের মধ্যে ১১ জন চট্টগ্রামের বলে জানা গেছে।
গোল্ডেন হক নামে পরিচিত এমভি আবদুল্লাহ গত বছর কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানায় আসে। জিম্মি জাহাজটিসহ কেএসআরএম গ্রুপের মোট ২৩টি জাহাজ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে একই মালিকের ‘এমভি জাহান মনি’ নামের আরেকটি জাহাজ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ান জলদস্যুরা। সে সময় মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি মুক্ত করা হয়।
বাগেরহাটে সুন্দরবনের ২ জলদস্যু গ্রেপ্তার
বাগেরহাটে সুন্দরবনের একটি জলদস্যু বাহিনীর দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার বিকালে বাগেরহাট পুলিশ অফিসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক এই তথ্য জানান।
এর আগে সোমবার গভীর রাতে বাগেরহাট ও খুলনা থেকে ডিবি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারেরা হলেন- বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার আশরাফ আলী মুন্সির ছেলে রেজাউল মুন্সি (৩২) এবং একই উপজেলার জয়নাল সরদারের ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩৫)। তারা সুন্দরবনের কথিত জলদস্যু ‘নয়ন বাহিনী’র সদস্য বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক জানান, সুন্দরবনের জলদস্যু বাহিনীর সদস্যদের আটকের ধারাবাহিকতায় বাগেরহাট ডিবি পুলিশ সোমবার গভীর রাতে প্রথমে খুলনার জেলাখানা ঘাট এলাকা থেকে এসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার স্বীকারোক্তি মতে শরণখোলা থেকে রেজাউল মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সুন্দরবনের মধ্যে অস্ত্র লুকানো রয়েছে বলে স্বীকার করে। এরপর তাদের দেখানো মতে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের পাথুরিয়া নদীর পূর্বপাড়ের গভীর নলবোনের মধ্যে থেকে তিনটি একনালা বন্দুক, ১০ রাউন্ড বন্দুকের কার্তুজ, দু’টি দা, একটি হাতুড়ি, একটি বাজিফুটানো যন্ত্র এবং জেলেদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় কাজে ব্যবহৃত একটি খাতা উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় শরণখোলা থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ১১ জলদস্যু গ্রেপ্তার, দেশীয় অস্ত্র জব্দ
প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক আরও জানান, এর আগে গত বছর ২১ ডিসেম্বর সুন্দরবনে দস্যুদের আস্থানা থেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত ১১ জেলেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় জলদস্যু বাহিনীর তিন সদস্যকে আটক করা হয়।
গত ৬ মাসে সুন্দরবনের জলদস্যু নয়ন বাহিনীর পাঁচ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এখনো বাহিনী প্রধান নয়নসহ চারজন পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে বাগেরহাট পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩১ মে সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু মাস্টার বাহিনীর প্রধানসহ ১০ দস্যুর আত্নসমর্পণের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় দস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রক্রিয়া।
এরপর কয়েক দফায় ৩২টি দস্যু বাহিনী প্রধানসহ ৩২৮ জলদস্যু আত্নসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। ওই সব দস্যুদের আত্নসমর্পণের মধ্যে দিয়ে সুন্দরবনে জলদস্যু অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। স্বস্তি ফিরে আসে জনজীবনে।
তবে সুন্দরবনে আবারও দস্যুদের তৎপরতা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোলায় দেশীয় অস্ত্রসহ ৬ জলদস্যু গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে অপহৃত ৪ জেলে উদ্ধার, ৫ জলদস্যু গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে ১১ জলদস্যু গ্রেপ্তার, দেশীয় অস্ত্র জব্দ
বঙ্গোপসাগরে ১৬টি জেলে-নৌকায় ডাকাতির ঘটনায় ১১ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গভীর সমুদ্র ও চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও লুণ্ঠিত ৭০টি মোবাইল ফোন উদ্ধারের দাবি করেছে র্যাব চট্টগ্রাম।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধারশনিবার বিকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, গভীর সমুদ্র ও বাঁশখালীতে ৪৮ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালিয়ে সাম্প্রতিককালে ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি জড়িত ১১ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ সময় বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র, তিন হাজার পিসের বেশি ডাকাতি করা ইলিশ মাছ, বিপুল পরিমাণ মাছ ধরার জাল ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত নৌকা জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে অক্সিজেনের অভাবে ২ নবজাতকের মৃত্যু
চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা ৩৮৫ কনটেইনারের পণ্য ধ্বংস করবে কাস্টমস
ভোলায় দেশীয় অস্ত্রসহ ৬ জলদস্যু গ্রেপ্তার
ভোলার লালমোহন উপজেলায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ৬ জনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয়রা। সোমবার রাত ১০টার দিকে লালমোহন উপজেলার ধলীগৌর নগর ইউনিয়নের বাতির খাল এলাকা থেকে তাদের আটক করে পুলিশ।
তারা হলেন-শাকিল, ধলু মিয়া, সোহাগ, রাকিব, রাকিব মিয়া ও মানিক। তাদের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ ও হিজলায়।
আরও পড়ুন: মহেশখালীতে ৬ জলদস্যু আটক, অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাত ১০টার দিকে লালমোহন উপজেলার ধলীগৌর নগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাতির খালে ১২ সদস্যের জলদস্যু দল একটি দ্রুতগতি সম্পন্ন ট্রলার নিয়ে আসে। তারা বাতিরখাল ঘাট থেকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে ডাকাতি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় স্থানীয়রা জলদস্যুদের ঘেরাও করে পুলিশকে খবর দেয়।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, খবর পেয়ে অস্ত্রসহ ছয় জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তারা জলদস্যুতার সাথে যুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে লালমোহন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে অপহৃত ৪ জেলে উদ্ধার, ৫ জলদস্যু গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে অপহৃত ৪ জেলে উদ্ধার, ৫ জলদস্যু গ্রেপ্তার
বঙ্গোপসাগরের চট্টগ্রাম-হাতিয়া চ্যানেলের জেলেদের অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় জলদস্যূ কামাল বাহিনীর প্রধান কামালসহ ৫ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার এবং অপহৃত ৪ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। টানা তিনদিন অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে র্যাব-৭। এসময় কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধারসহ একটি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) র্যাব-৭, চট্টগ্রামের চাঁদগাঁও ক্যাম্প (বহদ্দারহাট) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে আছে-একটি একনালা বন্দুক, দুটি ওয়ান শুটারগান, তিনটি রামদা, তিনটি চাপাতি, একটি ধারালো চাকু এবং একটি ক্ষুর উদ্ধার।
গ্রেপ্তারকৃতরা হল-জলদস্যু নেতা মো. কামাল (৩৫), বাহিনী সদস্য মো. নূর নবী (২৬), মো. শামীম (২৪), মো. এ্যানি (৩১), মো. ফেরদৌস মাঝি (৩৫)। তাদের সকলের বাড়ি রামগতি ও সুবর্ণচর এলাকায়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি কোস্টগার্ড পূর্বজোনের মাধ্যমে জানা যায় কুখ্যাত জলদস্যু বাহিনীর সদস্যরা চট্টগ্রাম-হাতিয়া চ্যানেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা জেলেদের ব্যবহৃত কাঠের ট্রলারসহ জেলেদের অপহরণ করে। এরপর মারধর করে জেলেদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে তাদের আত্নীয় স্বজন এবং বোট মালিকের কাছে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে।
বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দাদের মাধ্যমে অবগত হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী রোডের একটি ভবনের ২য় তলায় অভিযান পরিচালনা করে। টানা ৭২ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে ৫ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী রোড সংলগ্ন সাগর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ থেকে ছিনতাই করা বোটের কেভিন থেকে অপহৃত চার জেলেকে উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলার ডুবি: নিহত জেলে পরিবারকে ২০ হাজার টাকা প্রদান
বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলার ডুবি: নিখোঁজ আরেক জেলের লাশ উদ্ধার
জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, জলদস্যু প্রধানসহ আটক ১৫
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা ও কক্সবাজারের পেকুয়া কুতুবদিয়া থেকে অভিযান চালিয়ে জলদস্যু বাহিনীর প্রধান নূরুল কবীর ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড মামুনসহ ১৩ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র জব্দের দাবি করেছে এলিট ফোর্স।
আটক ব্যক্তিরা হলেন-নুরুল আফসার, নূরুল কাদের, হাসান, মো. মামুন, নুরুল কবির, আব্দুল হামিদ, আবু বক্কর, মো. ইউসুফ, গিয়াস উদ্দিন, সফিউল আলম মানিক, আব্দুল খালেক, রুবেল উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম জিকু, মো. সুলতান এবং মনজুর আলম।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চান্দগাঁও র্যাব ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
র্যাব জানায়, জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করা এবং মুক্তিপণ না পেলে জেলেদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো এ বাহিনী।
আরও পড়ুন: ধামরাইয়ে ট্রাকচাপায় পোশাক শ্রমিক নিহত
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত শুক্রবার ও শনিবার চটগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জলদস্যূ নুরুল আফসার, নূরুল কাদের, হাসান, মো. মামুনকে আটক করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে চকরিয়া থানার ডান্ডিবাজার এলাকায় থেকে জলদস্যু বাহিনী প্রধান কবীরের আস্তানা অভিযান চালানো হয়। এসময় আরও ১১ জনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৬টি ওয়ানশুটার গান, ৪টি কার্তুজ, ৫টি কিরিচ, একটি ছুরি, একটি রামদা, দুটি হাসুয়া জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি ১৭ জন জেলে মাছ ধরার জন্য সাগরে গেলে জলদস্যু কবির বাহিনীর কবলে পড়ে। মাছ ধরার বোটসহ তাদেরকে অপহরণ করে কবির বাহিনী। এরপর জেলেদেরকে জিম্মি করে মারধর করে ও নির্যাতন চালায়। বোট মালিকের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। পরবর্তীতে মালিক ২ লাখ টাকা দিলে জেলেদের ধরা ২ হাজার ইলিশ মাছ লুট করে নিয়ে যায়। জেলেদের জিম্মি করার তথ্যটি র্যাব-৮ জানতে পারে। পরে আমরা সম্মিলিতভাবে সমুদ্রে অভিযান পরিচালনা করি। আমাদের অভিযানের কথা জানতে পেরে ১৭ জানুয়ারি জলদস্যুরা ১৬ জনকে ছেড়ে দেয়। তারা তীরে আসার পর আনোয়ার নিখোঁজের বিষয়টি জানতে পারি। তারাই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জলদস্যুদের আটক করা হয়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার বলেন, নিরীহ জেলেদের অপহরণ করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়েছে জলদস্যুরা। র্যাব এমন তথ্যের ভিত্তিতি ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং কবীর বাহিনীর প্রধান ও সেকেন্ড ইন কমান্ড মামুনসহ ১৫ জনকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: ঝিকরগাছায় পরোয়ানাভুক্ত ১২ আসামি গ্রেপ্তার
ট্র্যান্সজেন্ডার নারী বিউটি ব্লগারকে হত্যাচেষ্টা
সব দায় র্যাবের ঘাড়ে চাপানো অবিচার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সব দায় র্যাবের ঘাড়ে চাপানো অবিচার বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। তিনি বলেছেন, ‘র্যাব কখন তৈরি হয়েছিল? র্যাব যারা তৈরি করেছিলেন এখন তারাই র্যাবকে অপছন্দ করছেন। র্যাবের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছেন। র্যাব যে ভালো কাজগুলো করছে সেগুলো তারা তুলে ধরছেন না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘র্যাব যে মাদক নির্মূলে কাজ করছে, র্যাব যে ভেজাল খাদ্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, জলদস্যুমুক্ত করলো, চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে এ্যাকশনে যাচ্ছে। তারা যে সব সময় জঙ্গি দমন, সন্ত্রাস দমনের জন্য কাজ করছে সে কথাগুলো তারা কখনো তুলে ধরেন না।’
সম্প্রতি ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা র্যাব সদস্যদের জাতিসংঘ শান্তি মিশন থেকে প্রত্যাহারের যে দাবি করেছে সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনে অংশ নিয়ে এ সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
আরও পড়ুন: করোনায় জনগণের কল্যাণে সব করেছে পুলিশ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘নানা ধরনের মানবাধিকারের কথা বলে, আমরা তো চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, এমন কোনো দেশ নাই যেখানে এনকাউন্টারের ঘটনা না ঘটে। পুলিশের সঙ্গে যদি কেউ অস্ত্র তুলে কথা বলে, পুলিশ তো তখন চুপ করে বসে থাকে না। তখনই এইসব ফায়ারের ঘটনা ঘটে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো যদি সব এলিট ফোর্স র্যাবের ঘাড়ে দিয়ে দেয়া হয় তাহলে আমি মনে করি এটা তাদের প্রতি অবিচার হচ্ছে।’
র্যাব কি তবে রাজনৈতিক বিরোধের মুখে?- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আপনারাই বিচার করুন।’
ডিসিদের কি নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘যে গতিতে প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশ চালাচ্ছেন এটা ধরে রাখতে হলে আমাদের অবশ্যই সিকিউরিটি বা সুরক্ষা সাসটেইনেবল করতে হবে। আমরা চাচ্ছি বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বিশ্বমানের হবে। এটাই ছিল তাদের সাথে কথা।’
আরও পড়ুন: অভিজিৎ হত্যায় দণ্ডিত দু’জন বিদেশে পালিয়ে আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘তাদের ছোটখাট প্রশ্ন ছিল। যেগুলো আমরা এখনি করতে পারবো বলেছি করে ফেলবো। আর যেগুলো করতে একটু সময় লাগবে সেগুলোর কাজ করছি। আরেকটি কথা এসেছিল, জুয়া আইন সংশোধনের একটি প্রস্তাব তারা এনেছিল। তাদের প্রস্তাব ছিল এটার শাস্তি বাড়ানো যায় কিনা। এই আইনটি ব্রিটিশ আমলের আইন, যেটা আমরা এখন ফলো করছি। এই আইনটি কোথা থেকে হয়েছিল বা কিভাবে হয়েছিল আমাদের কাছে সেটার তথ্য ছিল না। আমরা এটা খুঁজে বের করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই আইনটিকে হাল নাগাদ করতে একটি ব্যবস্থা নেবো।’
সংসদ নির্বাচনের আগে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে ডিসিদের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের ডিসি এসপি যারা এই প্রশাসনের কাজে নিয়োজিত আছেন তারা মিলেমিশে একসঙ্গে কাজ করবে এটাই ছিলো আমাদের আজকের মূল কথা।
দণ্ডবিধির ২২৮ ধারা মোবাইল কোর্ট তফসিলে যুক্ত করা নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নিয়ে কোনো আলোচনা আজকে হয় নি। এটা হয়তো কেবিনেট সচিব আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলবেন। আমি শুনেছি এরকম একটা কথা হয়েছে। এটা কেবিনেট সচিব ও আইন সচিব মিলেমিশে কিছু একটা করবেন।
আরও পড়ুন: ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশে মাদক সমস্যা বিরাজমান: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মহেশখালীতে ৬ জলদস্যু আটক, অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ
বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার মহেশখালী চ্যানেলে অভিযান চালিয়ে ৬ জলদস্যুকে আটক করেছে র্যাব-১৫। এসময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দের দাবি করেছে র্যাব।
আটকরা হলেন মহেশখালী উপজেলার নেজাম উদ্দিন, মো. সাকিল, মো. সাজ্জাদ, মো. সুজন, মো. মানিক ও ওমর ফারুক।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী।
তিনি জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে সমুদ্রে জলস্যুদের তাণ্ডব চলছে এমন খবরে র্যাব তৎপর হয়ে কক্সবাজারের মহেশখালী চ্যানেলে অভিযান চালায়। অভিযানে র্যাব-১৫ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ চয় জলদস্যুকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও ১১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাথরঘাটায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে ‘জলদস্যু’ নিহত
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পাতার বিড়ি জব্দ, আটক ১