ড্রেজার
অবৈধ ড্রেজার দিয়ে রাতের আঁধারে লুট হচ্ছে সুরমার বালু
রাতের আঁধারে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে সুরমা নদীর বালু তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জ শহরের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
এভাবে বালু নিয়ে যাওয়ায় দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে শহরের সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সংযোগ সেতু আব্দুজ জহুর। এছাড়া এভাবে ড্রেজার চালানোয় এবং শব্দ দূষণের কারণে হুমকিতে পড়েছে নদীর দুই তীরের জনপদ।
সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতু এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সেতুসংলগ্ন সুরমা নদীর কয়েকশ মিটার এলাকাজুড়ে একাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে।
এদিকে প্রতি রাতে নদীর কয়েকটি স্থানে ড্রেজারের তাণ্ডব চললেও এসব বন্ধে প্রশাসনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন, আটক ২: নৌপুলিশ
স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে সুবিধা দিয়ে সুরমা নদীর বালু এভাবে লুটে নিচ্ছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।
ড্রেজারের তাণ্ডব বন্ধ না হলে আব্দুজ জহুর সেতুসহ দুই তীরের কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, কিছুদিন ধরে জলিলপুর, আব্দুজ জহুর সেতু এলাকা, অচিন্তপুর, বড়পাড়া এলাকাসহ একাধিক স্থানে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। রাত ১টার পর থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত বিরামহীনভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। পরে এসব বালু বাল্কহেড বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। প্রতি রাতে কয়েক লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন হয় বলে তাদের ধারণা।
সম্প্রতি এ বিষয়ে কথা হয় বালু উত্তোলনে কাজ করা এক শ্রমিকের সঙ্গে হয়।
আরও পড়ুন: কৃষি জমির স্বার্থে বালু উত্তোলন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ
মোংলা বন্দরে ড্রেজার থেকে নদীতে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে একটি ড্রেজারে কাজ করা সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নদীতে পড়ে একজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বন্দরের ৫ নম্বর জেটি–সংলগ্ন পশুর নদে শনিবার বিকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ড্রেজারের পাখায় জড়ানো অবস্থায় ওই লাশটি উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
নিহত নাঈম দেওয়ান (২৮) নামের ওই শ্রমিকের বাড়ি মুন্সিগঞ্জে।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দরে সারবোঝাই কার্গো জাহাজডুবি
মোংলা ইপিজেড ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. আরদেশ আলী বলেন, বন্দরের জেটিতে ভাড়ায় নিয়োজিত এ জেড কোম্পানির ‘সিএসডি বোখারি’ নামের একটি ড্রেজারে শ্রমিকের কাজ করতেন নাঈম। বিকালে ড্রেজারের পাখা পরিষ্কার করছিলেন তিনি। এ সময় হঠাৎ পাখা খুলে তাঁর শরীরের ওপর পড়ে। পাখার আঘাতে তিনি পানিতে পড়ে যান। এরপর অনেক খোঁজ চালিয়েও নাঈমকে না পাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ড্রেজারের পাখায় জড়ানো অবস্থায় নাঈমের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ড্রেজারের শ্রমিকের মৃত্যুর খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যপারে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দরে লাইটার জাহাজ ডুবি, নিখোঁজ ৩
মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে মেট্রোরেলের আরও ৪ ইঞ্জিন, ৮ কোচ
নদী দখলকারীদের খসড়া তালিকা প্রস্তুত: নৌপরিবহনমন্ত্রী
সারাদেশে যারা স্থানীয়ভাবে নদ-নদী দখল করেছে সরকার তাদের তালিকা করেছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর নাব্যতা ও নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, সুপারিশ ও বাস্তবায়নে গঠিত টাস্কফোর্সের সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদ-নদী রক্ষায় আমরা মানুষকে সচেতন করতে পেরেছি, যা আমাদের একটি সফলতা। এক সময় একটা কথা ছিল, যা কিছু নষ্ট, সবকিছু পানিতে ফেলে দাও। কিন্তু এখন আর তা নেই। সবাই পানি পবিত্র রাখেন। এখন সবাই সচেতনভাবে পানির পবিত্রতা রক্ষা করছেন।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিশ্বাসীদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না: খালিদ মাহমুদ
নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী রক্ষায় আমরা কাজ করছি। এখানে ওয়াকওয়ে থেকে শুরু করে ইকোপার্ক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এর বাইরেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে প্রধান করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকার চারপাশ ও কর্ণফুলী নদী রক্ষায় এই টাস্কফোর্স কাজ করবে। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে যারা নদী দখল করেছে, তাদের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। নদী রক্ষা কমিশনও এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। যেহেতু এটা দীর্ঘদিনের একটি বোঝা, কাজেই আমরা এর সমাধান করতে চাই। আমরা নাব্যতা বাড়াতে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, নদীর নাব্যতা বাড়াতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাতটি ড্রেজার সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত সাতটি ড্রেজার আটটিতে পৌঁছায়নি।
বর্তমান সরকার ৮০টি ড্রেজার সংগ্রহের চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে ৫০টির মতো ড্রেজার আমাদের সংগ্রহে চলে এসেছে। কাজেই বোঝা যায়, নদীর গতিপথ বাড়াতে আমরা কতটা সচেষ্ট, তা এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায়। আমরা অনেকগুলো চ্যানেল উদ্ধার করছি, তাতে নৌচলাচল করছে। অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল নতুন এক উচ্চতায় চলে গেছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবস্থাপনায় মার্কিন সহযোগিতাকে স্বাগত জানালেন খালিদ মাহমুদ
সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাগরে ড্রেজারডুবি: ৮ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চট্টগ্রামে মিরসরাই সমুদ্র উপকূলে থাকা ড্রেজার ডুবে নিখোঁজ আট শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হেয়েছে। মঙ্গলবার সারাদিন অভিযান চালিয়ে শ্রমিকদের লাশ উদ্ধার করে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এর আগে গতকাল সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ড্রেজারটি ডুবে যায় বলে স্থানীয়রা জানায়।
নিহত শ্রমিকরা হলেন- মাহমুদ মোল্লা, আলামিন, ইমাম মোল্লা, আবুল বশর, তারেকসহ আটজন নিখোঁজ হন। তাদের সবার বাড়ি পটুয়াখালীর জৈনকাঠি ও মোল্লাবাড়ি থানায়।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সাগরে বালি তোলার কাজে নিয়োজিত একটি ড্রেজার ডুবে গতকাল রাতে নিখোঁজ হওয়া ৮ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের একটি টিম রাত ১২টা থেকে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দরে ট্রলার ডুবে জেলে নিখোঁজ, উদ্ধার ২১
ওসি আরও জানান, আজ দুপুর ২টার দিকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, উপজেলার ১৬ নম্বর সাহেরখালি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বসুন্ধরা এলাকায় বেড়িবাঁধ থেকে ১০০০ ফুট দূরত্বে সাগরের মাঝে রাখা বালু উত্তোলনের ড্রেজারটি (সৈকত-২) রাখা ছিলো। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাগরে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঝড়ো হাওয়ায় ড্রেজারটি ডুবে যায়। এ সময় ড্রেজারে থাকা আট শ্রমিক নিখোঁজ হন।
ড্রেজারে থাকা শ্রমিক আব্দুস সালাম বলেন, ড্রেজারে আমিসহ নয়জন ছিলাম। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কথা শুনে সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমি ড্রেজার থেকে নেমে আসি। এ সময় বাকিরা সেখানেই ছিল।
মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারি বলেন, মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি।
আরও পড়ুন: নিখোঁজের ৭ দিন পর ভ্যানচালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
সরকারি বনায়ন ধ্বংসের অপচেষ্টা, পদক্ষেপ নিচ্ছে না বনবিভাগ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের চরাঞ্চলে সরকারি খালে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এর ফলে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে সরকারি বনায়নের গাছগুলো।
এদিকে সরকারি বনায়ন রক্ষায় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
জানা যায়, উপজেলা পদ্মা নদীর চর হরিরামপুর ইউনিয়নের চর শালেপুর চরাঞ্চলে ১০৮ একর জমির ওপর সরকারি বনায়ন করেছে বন বিভাগ। বনায়ন সংলগ্ন একটি খালের মধ্যে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে গত একমাস যাবৎ দিনরাত বালু উত্তোলন করছেন ওই চরের বাসিন্দা প্রভাবশালী ফেরদৌস খান (৪৮)।
বনায়ন সংলগ্ন এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারণে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর কড়াল স্রোতে উপজেলার বৃহৎ সরকারি বনায়নটি বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন যাবৎ ওই প্রভাবশালী সরকারি বনায়ন ঘেষে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে রমরমা বাণিজ্য করলেও স্থানীয়রা তার ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না।
উপজেলা বন বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে উপজেলার চরশালেপুর মৌজায় ১০৮ একর খাস জমির উপর বৃহৎ সামাজিক বনায়নটি গড়ে ওঠে। উক্ত বাগানে মোট ৯০ হাজার বনজ বৃক্ষ রোপন করা হয়। এসব বৃক্ষের মধ্যে আকাশ মনি, শিশু গাছ, রেন্ডি কড়াই ও বাবলা বৃক্ষ রয়েছে।
গত ১৫ বছরে চরাঞ্চলের উর্বর ভূমিতে বেশিরভাগ বনজ বৃক্ষগুলো ভারী হয়ে ওঠেছে। কিন্তু পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে বনায়নটি গড়ার ফলে প্রতি বছর স্থানীয় জেলেরা এবং গৃহস্থ্যরা উক্ত বনায়নের ডালপালা কেটে উজার করলেও কেউ তদারকি করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি ওই চরের প্রভাবশালী ফেরদৌস খান বনায়ন ঘেষে খালের মধ্যে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বনায়নটি ধ্বংসের পাঁয়তারায় মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ করে এলাকাবাসী।
চরের বাসিন্দা আসলাম শেখ বলেন, 'চরাঞ্চলের বেশিরভাগ জায়গা জমি ওই ড্রেজার মালিকের দখলে। ফেরদৌস খানের এসকল অবৈধ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে আমরা আর এই চরে বসবাস করতে পারব না। তাই সকলেই মুখ বুঝে মেনে নিয়েছি।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরাঞ্চলের এক বাসিন্দা বলেন, ওই প্রভাবশালী চরের সরকারি জমি দখল করে রেখেছে। আমরা ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করি না। এর আগে এক ব্যাক্তি প্রতিবাদ করায় তাকে মারপিট করেছিল প্রভাবশালী ফেরদৌস খান। এ কারণে এখন আর কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলে না।
তিনি বলেন, যেভাবে সরকারি বনায়নের পাশে খালের মধ্যে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, তাতে বর্ষা মৌসুমে বনায়নের অনেকাংশই ভেঙ্গে বিলীন হয়ে যাবে। বন বিভাগের লোকজন এখানে না আসায় আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ফেরদৌস খান।
এ ব্যাপারে ড্রেজার মালিক ফেরদৌস খান বলেন, ‘সরকারি বনায়ন ঘেষে খালের মধ্যে আমাদের নিজস্ব জায়গায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু মাটির ব্যবসা করছি, তাতে কারো কোনো আপত্তি থাকার কথা না।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ বনায়নটি পদ্মা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ ভূমিতে গড়ে উঠার কারণে উপজেলার সামাজিক বনায়ন বিভাগের কেউ সেটি তদারকি করতে যান না। ফলে ওই এলাকার প্রভাবশালীরা উন্মুক্ত সামাজিক বনায়নটি নিজেদের প্রয়োজনে উজার করে চলেছেন।
উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, সরকারি বনায়ন ঘেষে খালের মধ্যে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে সেখানে আমি কি করব?
তিনি বলেন, 'ওই সরকারি বনায়নে আমি একবার গিয়েছিলাম। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় আর যাওয়া হয়নি।'
পঞ্চগড়ে ড্রেজারের বালিতে চাপা পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম এলাকায় ড্রেজার মেশিনের বালি চাপায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার রাতে জেলার বোদা উপজেলাধীন বেংহাড়ি বনগ্রাম ইউনিয়নের মানিকপীর শিকারপুর করতোয়া নদীতে এ ঘটনাটি ঘটে।
মৃত দুই শিশু হলো বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের মানিকপীর এলাকার হাসান আলী ওরফে কেরকেরুর ছেলে আল আমিন (৮) ও একই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে হৃদয় (৭)। তারা দুজনেই বন্ধু।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে, দুই সপ্তাহে ৩ শিশুর মৃত্যু
বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: ভাড়াটিয়াকে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ, শিশুর মৃত্যু
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার বিকালে হৃদয় ও আল-আমিন দুজন বাড়ির পাশে করতোয়া নদীর পাড়ে খেলতে যায়। এ সময় ড্রেজার মেশিন দিয়ে করতোয়া নদী খননকালে অসাবধানতায় মেশিনের পাইপ থেকে উত্তোলন হওয়া বালির নিচে তারা চাপা পড়ে। ইফতারের সময় দুজনের পরিবার তাদের দেখতে না পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করে। পরে করতোয়া নদী খনন করা বালিতে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নদীর কিনার থেকে তাদের দুজনের মৃত দেহ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জে নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আককাছ আহম্মেদ বালি চাপা পড়ে দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় সক্রিয় বালু সিন্ডিকেট
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ও আখেরআলী এলাকায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একাধিক সিন্ডিকেট। সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে ড্রেজার দিয়ে প্রকাশ্যে চলছে বালু উত্তোলন।
বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের আশঙ্কার পাশাপাশি বালুবোঝাই ভারি ট্রাক্টর চলাচলের কারণে গ্রামীণ রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও বালুদস্যুদের দৌরাত্ম থামছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: পিয়াইন নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন, অর্ধ শতাধিক বসত নদীগর্ভে বিলীন
স্থানীয়দের জানায়, ২০১০ সালে বালু উত্তোলন নীতিমালায় যন্ত্রচালিত মেশিন দিয়ে ড্রেজিং পদ্ধতিতে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও মূল্যবান স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন করা বেআইনি। অথচ সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ও বাখেরআলী এলাকায় পদ্মা নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের পাশাপশি নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। হুমকির মুখে পড়বে পদ্মা নদীর তীররক্ষা বাঁধ ও নদী তীরবর্তী স্থাপনাগুলো।
স্থানীয়রা জানান, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনে তাদের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এছাড়াও পদ্মার ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য সরকারের চরবাগডাঙ্গার ও শাজাহানপুর এলাকা রক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন হুমকির মুখে পড়তে পারে। আর বালুবোঝাই ভারি ট্রাক্টর চলাচলের কারণে বেড়ি বাঁধ সড়কসহ গ্রামীণ রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে এলাকার মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছেন ইউপি চেয়ারম্যান!
স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু বাণিজ্যকে ঘিরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের কিছু নেতার ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে একাধিক সিন্ডিকেট। তারা সবকিছু ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কাজ।
আরও পড়ুন:নগরকান্দায় বালুভর্তি ট্রাকের ভারে ভেঙে পড়ল বেইলি ব্রিজ
স্থানীয়রা জানান, অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে, তারপরও বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম সরকার জানান, পদ্মা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা-বরিশাল নৌপথ স্বস্তিদায়ক হবে: প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা-বরিশাল নৌপথ বাংলাদেশের প্রাণ উল্লেখ করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শনিবার বলেছেন, এ পথের লঞ্চে যাত্রীদের যাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করতে কাজ করছে সরকার।