ভিসা
থাইল্যান্ডের কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অংশের দ্বীপাঞ্চলগুলো ভ্রমণের আকর্ষণীয় গন্তব্যগুলোর মধ্যে অন্যতম থাইল্যান্ড। বিশেষ করে দেশটির বিচিত্র জনপদ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ভ্রমণপিপাসুদের এক অমোঘ আকর্ষণে কাছে টানে। এমন স্মরণীয় অভিজ্ঞতার হাতছানি দিয়ে যে দর্শনীয় স্থানগুলো দেশটির পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে রেখেছে, সেগুলোর মধ্যে কোহ সামুই অন্যতম। দ্বীপটির একাধিক সৈকতের প্রাকৃতিক নৈসর্গ ও সর্বত্র জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। চলুন, কোহ সামুই দ্বীপের প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলোর ব্যাপারে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
কোহ সামুই দ্বীপের অবস্থান ও বিশেষত্ব
স্থানীয়ভাবে সংক্ষেপে সামুই হিসেবে পরিচিত এই দ্বীপটি সুরত থানি শহরের প্রায় ৩৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে থাইল্যান্ডের উপসাগরে অবস্থিত। ভৌগলিকভাবে এটি সুরত থানি প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত চুমফোন দ্বীপপুঞ্জের অংশ। ফুকেটের পর এই ২২৮ দশমিক ৭ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপটি থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ।
কোহ সামুই নামকরণের ইতিহাস
দ্বীপটির নামের উৎপত্তি নিয়ে স্পষ্ট তেমন কিছু জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয়, ‘সামুই’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত-তামিল শব্দ থেকে, বাংলায় যার অর্থ ‘সমুদ্রের আবহাওয়া’। কেউ কেউ বলেন এটি আসলে একটি গাছের নাম, দক্ষিণ থাইল্যান্ডে যাকে ‘টন মুই’ (যার পুরো নাম টন সামুই) বলা হয়। স্থানীয়দের মধ্যে কারো কারো বিশ্বাস, ‘সামুই’ শব্দটি এসেছে মালয় শব্দ ‘সাবোয়ে’ থেকে, যার অর্থ ‘নিরাপদ আশ্রয়’। ‘কোহ’ বা ‘কো’ একটি থাই শব্দ এবং এর মাধ্যমে কোনও দ্বীপকে বোঝানো হয়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণে কি কি দেখবেন
ওয়াত ফ্রা ইয়াই
এটি মূলত একটি বৌদ্ধ মন্দির, যার অবস্থান কো সামুইয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট এক দ্বীপ কো ফানে। এখানে রয়েছে ১২-মিটার উচ্চতার এক বিশালাকৃতির বুদ্ধ মূর্তি। মন্দিরটির কাছাকাছি সমুদ্র সৈকতের নাম ব্যাং রাক হলেও এই মূর্তির জন্য বিগ বুদ্ধ বিচ নামে ডাকা হয়। মন্দির প্রাঙ্গণে একটি বাজারে পর্যটন এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নানা ধরণের সামগ্রী বিক্রি করা হয়।
সিক্রেট বুদ্ধ গার্ডেন
এই দর্শনীয় স্থানটি বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন ম্যাজিক গার্ডেন, হ্যাভেন্স গার্ডেন, খুন নিম পিক, এবং তার্নিম ম্যাজিক গার্ডেন। এটি মূলত পম পর্বতের চূড়ায় (সামুই দ্বীপের সর্বোচ্চ চূড়াগুলোর মধ্যে অন্যতম) নির্মিত একটি ব্যক্তিগত ভাস্কর্য পার্ক। স্থানটিতে বুদ্ধের অনেকগুলো মূর্তির পাশাপাশি দেখা যায় পাখি ও সাপসহ নানা ধরণের প্রাণী। বাগানে একটি ঝর্ণাও আছে। পবর্ত চূড়া পর্যন্ত উঠে যাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য হলেও জায়গাটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অনেক জনপ্রিয়।
মু কো আং থং জাতীয় উদ্যান
এই সামুদ্রিক উদ্যানটি থাইল্যান্ড উপসাগরের প্রায় ১০২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে প্রায় ৫০ বর্গ কিলোমিটার স্থলভাগে পড়েছে ৪২টি দ্বীপ এবং বাকি ৫২ বর্গ কিলোমিটারের সবটুকু পানি। দ্বীপগুলোর বিশেষত্ব হলো অত্যাশ্চর্য শিলা গঠন এবং নির্জন লেগুন। সাঁতার, ক্যানোয়িং এবং কায়াকিংয়ের জন্য এই স্থানগুলো সেরা।
দ্বীপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কো ফালুয়াই পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে একদম নতুন। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কো উয়া তালাপ। এর আও ফি সৈকতে একটি রেঞ্জার স্টেশন, বাংলো, দোকান এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
লিথুয়ানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: ভর্তি, ভিসা, অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ নানাবিধ সুবিধা
বিদেশে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জীবনযাত্রার মানোন্নয়নও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পড়াশোনার উদ্দেশ্যে এই দীর্ঘ যাত্রায় সঞ্চিত হয় অমূল্য অভিজ্ঞতা, যেখানে একজন শিক্ষার্থীর সার্বিকভাবেই উন্নয়ন সাধিত হয়। বিশেষত নতুন শিক্ষাব্যবস্থা এবং বহুজাতি সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা এক বিরাট অর্জন। সেই সঙ্গে স্থানীয় নীতিমালা ও আর্থিক দিকগুলো ভারসাম্য দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর স্বনির্ভরতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যায়। এই সমুদয় প্রচেষ্টাকে আরও সহজ করে তোলে সেই অর্থনৈতিক দিক থেকে দেশটির সাশ্রয়ী অবস্থান। এই বিবেচনায় ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অনেকটা এগিয়ে লিথুয়ানিয়া। জীবনধারণ ও শিক্ষাসেবা খরচ কম হলেও তাতে মানের কোনো ঘাটতি নেই। চলুন, লিথুয়ানিয়ায় উচ্চশিক্ষা লাভের প্রয়োজনীয় খরচ, ভর্তি, ভিসা, অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ নানা দিকগুলো সম্বন্ধে ধারণা নেওয়া যাক।
লিথুয়ানিয়ায় কেন পড়তে যাবেন
শিক্ষাক্ষেত্রে ইইউয়ের (ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন) সদস্য রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়ার মূল আকর্ষণ হলো দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিশ্বমানের শিক্ষাসেবা। এগুলোতে ইংরেজিতে পড়াশোনা করা প্রোগ্রামের সংখ্যা ৩৫০ টিরও বেশি, যার সবগুলোই ইউরোপসহ গোটা বিশ্বে স্বীকৃত।
সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিল্নিয়াস ইউনিভার্সিটি, কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং-এ যার অবস্থান ৪৭৩। এডি সায়েন্টিফিক ইন্ডেক্স বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গোটা ইউরোপে ৪৮৪ এবং বিশ্বব্যাপী ১ হাজার ২১৭-তম অবস্থানে রেখেছে।
এছাড়াও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অধ্যয়নের উদ্দেশ্যে লিথুয়ানিয়া গমনের হার ৭১ দশমিক ৯১ শতাংশ। পরিসংখ্যানটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিকট লিথুয়ানিয়ার ক্রমশ গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির প্রতি ইঙ্গিত দিচ্ছে।
উপরন্তু, দেশটির সমৃদ্ধ চাকরির বাজারের একটি বিরাট অংশ হচ্ছে তরুণ এবং সদ্য স্নাতক পাশ করা শিক্ষার্থী। এরা শিক্ষা, ক্যাটারিং, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক পরিষেবার মতো সেক্টরগুলোতে সৃজনশীল ভূমিকা রাখার সুযোগ পাচ্ছে। এতে করে দেশটি শুধুমাত্র অধ্যয়নের জন্যই নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মজীবন গড়ার জন্যও আদর্শ গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
লিথুয়ানিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং জনপ্রিয় কোর্সগুলো
ইউরোপ জুড়ে স্বনামধন্য লিথুয়ানিয়ার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:
• ভিলনিয়স ইউনিভার্সিটি
• কওনাস ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি
• ভিল্নিয়স গ্যাডিমিনাস টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি
• ভিতওতাস ম্যাগ্নাস ইউনিভার্সিটি
• মিকলাস রমেরিস ইউনিভার্সিটি
• লিথুয়ানিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ হেল্থ সায়েন্সেস
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নের জন্য জনপ্রিয় কয়েকটি বিষয়:
• মেডিসিন
• অ্যাকাউন্টিং এবং অডিট
• ফ্যাশন ইঞ্জিনিয়ারিং
• স্থাপত্য
• ব্যবসা এবং জনপ্রশাসন
• আইন
• পারফর্মিং আর্টস
• প্রকৌশল বিজ্ঞান
আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
লিথুয়ানিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন পদ্ধতি
বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা প্রধানত দুটি ইন্টেকে এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির আবেদন করতে পারে। প্রথম ও অ্যাডমিশন পিক টাইম হলো সেপ্টেম্বর মাস যেটি অটাম ইন্টেক হিসেবে পরিচিত। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মৌসুমে ভর্তি কম হলেও অনেক শিক্ষার্থীদের জন্যই সময়টি অটামের উপযুক্ত বিকল্প হিসেবে কাজ করে। আবেদনের সময়সীমা এবং প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো স্বতন্ত্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর নির্ভরশীল। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তির আবেদনগুলো যাচাই করে, যা সম্পন্ন করতে এক মাস বা তার বেশি সময় লেগে যেতে পারে।
আরো পড়ুন: সুইডেনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
• ইউনির্ভাসিটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে পূরণকৃত আবেদন
• শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (মার্কশীট সহ): লিথুয়ানিয়ান সেন্টার ফর কোয়ালিটি অ্যাসেস্মেন্ট ইন হায়ার এডুকেশন কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে
• কারিকুলাম ভিটা
• উচ্চশিক্ষার জন্য লিথুয়ানিয়াকে বেছে নেওয়ার কারণ উল্লেখপূর্বক কয়েক কপি মোটিভেশনাল লেটার
• বৈধ পাসপোর্ট
• সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
• আবেদন ও অধ্যয়ন ফি পরিশোধের রশিদ
• জীবনযাত্রার খরচ বহন করার জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের প্রমাণ স্বরূপ ব্যাংক স্টেটমেন্ট
• ইংরেজি দক্ষতার শংসাপত্র: ন্যূনতম আইইএলটিএস স্কোর ৬ দশমিক ৫ বা টোফেল স্কোর ৮১
আরো পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
লিথুয়ানিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
পড়াশোনার জন্য এই ইউরোপীয়ান দেশটিতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ন্যাশনাল ডি-টাইপ ভিসার আবেদন করতে হবে। সাধারণত ১৫ দিনের মধ্যে জারি করা এই ভিসায় কমপক্ষে ৯১ দিন থেকে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত লিথুয়ানিয়ায় থাকার অনুমতি পাওয়া যায়। এর জন্য লিথুয়ানিয়ান মাইগ্রেশন ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইজিআরআইএস) এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
১ বছরেরও দীর্ঘ সময় অধ্যয়নের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে দেশটিতে পৌঁছে অস্থায়ী বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করতে হয়। এই পারমিট দেশটির মাইগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে জারি করা হয়।
ন্যাশনাল ভিসা ফি ১৪০ ইউরো, যা প্রায় ১৮ হাজার ৪০ টাকার (১ ইউরো = ১২৮ দশমিক ৮৬ বাংলাদেশি টাকা) সমান।
বাংলাদেশের লিথুয়ানিয়া কনস্যুলেটে সাধারণত কোনো ধরণের ভিসা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় না। এর জন্য প্রার্থীদের সাধারণত ভারতে যেতে হয়। এছাড়াও বিকল্পভাবে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর থেকেও লিথুয়ানিয়ার ভিসা করা যায়।
আরো পড়ুন: জাপানে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
১ সপ্তাহ আগে
জার্মানির আউসবিল্ডুং: যোগ্যতা, সুযোগ-সুবিধা ও আবেদন পদ্ধতি
উদ্ভাবন এবং স্থায়িত্বের দিক থেকে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) প্রসিদ্ধ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম জার্মানি। পরিবেশবান্ধব, তথ্য-প্রযুক্তি এবং উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে শেনজেন ভুক্ত দেশটি। ফলে বিস্তৃত পরিসরে চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে দক্ষ জনগোষ্ঠীর। এখানে যোগ্যতার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে শাস্ত্রীয় জ্ঞান এবং হাতে-কলমে কাজের অভিজ্ঞতাকে। শুধু তাই নয়, এই কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা রয়েছে দেশটিতে। তেমনি একটি ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার নাম আউসবিল্ডুং। এই সুযোগ গ্রহণে আন্তর্জাতিক চাকরিপ্রার্থীদের সাদরে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ইউরোপীয় দেশটি। চলুন, আউসবিল্ডুং-এ আবেদনের যোগ্যতা, সুযোগ-সুবিধা, আবেদন ও ভিসা প্রক্রিয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
জার্মানির আউসবিল্ডুং কী
তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক জ্ঞান সমৃদ্ধ জার্মানির ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ কর্মসূচির নাম আউসবিল্ডুং। শিক্ষা ব্যবস্থায় তরুণ শিক্ষককেরা একই সঙ্গে স্কুলের ক্লাসরুম পাঠ্যক্রম এবং কর্পোরেট পরিবেশ দুই অভিজ্ঞতারই সম্মুখীন হন। এর নেপথ্যে যৌথভাবে কাজ করে দেশটির সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো।
হাতে-কলমে এই প্রশিক্ষণের সময়কাল সাধারণত কমপক্ষে ২ থেকে সর্বোচ্চ ৪ বছর পর্যন্ত। প্রার্থীরা নিজেদের দক্ষতা ও পছন্দ অনুযায়ী নির্দিষ্ট বিষয় নির্বাচন করতে পারেন। শুধুমাত্র জার্মান ভাষায় পাঠদান করা এই প্রোগ্রামে বিদেশি নাগরিকরা জার্মানদের মতো একই সুযোগ-সুবিধাসহ একটি নির্দিষ্ট জার্মান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। এই চুক্তির জন্য বিদেশি প্রার্থীরা জার্মানির বাইরে থেকে ট্রেনিং কোম্পানি ঠিক করে আসতে পারেন অথবা জার্মানিতে এসেও কোম্পানির খোঁজ করতে পারেন।
আরো পড়ুন: জার্মান অপরচুনিটি কার্ড: বাংলাদেশ থেকে আবেদন পদ্ধতি ও বিস্তারিত
জার্মানির আউসবিল্ডুং কাদের জন্য
বয়স, একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং দেশ নির্বিশেষে যেকোনো ব্যক্তি আউসবিল্ডুং-এ অংশ নিতে পারেন। তবে যারা জার্মানিতে গিয়ে ট্রেনিংয়ের জন্য কোম্পানি খুঁজতে চান তাদের অবশ্যই অনূর্ধ্ব ৩৫ বছর বয়সি হতে হবে। জার্মানির বাইরে থেকে যারা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আসবেন, তাদের ক্ষেত্রে বয়সের এই বাধ্যবাধকতা নেই।
তবে এই প্রোগ্রামে নিবন্ধিত হওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে জার্মান ভাষা দক্ষতা। সিইএফআর (কমন ইউরোপীয়ান ফ্রেমওয়ার্ক অব রেফারেন্স) অনুযায়ী ন্যূনতম যোগ্যতা লেভেল বি১।
দ্বিতীয়ত, যারা একাডেমিক শিক্ষাক্ষেত্রে কমপক্ষে ৯ বা ১০ বছর অতিবাহিত করেছে, তারা এই প্রোগ্রামে নিবন্ধিত হতে পারবে। এক্ষেত্রে তাদের সনদপত্র বা মার্কশিটগুলো অবশ্যই জার্মান একাডেমিক যোগ্যতার সমতূল্য হতে হবে। এর জন্য জেডএবি (সেন্ট্রাল অফিস ফর ফরেন এডুকেশন) (https://zab.kmk.org/en/app/zeugnisbewertung) থেকে শংসাপত্রগুলোর মূল্যায়ন বা তুলনামূলক বিবৃতি নিতে হবে।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
জার্মানির আউসবিল্ডুংয়ের সুবিধা
এই দ্বৈত শিক্ষাপদ্ধতিতে প্রশিক্ষণার্থীরা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান থেকে মাসিক ভাতা পান। এর পরিমাণ সাধারণত প্রতি মাসে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ ইউরো বা ১ লাখ ৫ হাজার ৪১৬ থেকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫ টাকার (১ ইউরো = ১৩১ দশমিক ৭৭ টাকা) মতো। এর কমবেশি হওয়াটা নির্ভর করে মূলত নিয়োগকর্তা, কোম্পানির শহর এবং প্রশিক্ষণের বিষয়ের ওপর। নিয়োগকর্তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বাসা ভাড়া বাবদ আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে।
জার্মানির বাইরে থেকে কোম্পানি ঠিক করা অথবা জার্মানিতে পৌঁছে ট্রেনিং কোম্পানি খোঁজা; উভয় ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত পৃথক খণ্ডকালীন চাকরি করার সুযোগ রয়েছে। এমনকি সর্বোচ্চ ২ সপ্তাহ পর্যন্ত ট্রায়াল জবও করা যাবে।
আর কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে আসার পর পুরো ট্রেনিং প্রোগ্রামের সময়কালের জন্য দেওয়া হবে রেসিডেন্ট পারমিট।
এর বাইরে অতিরিক্ত উপযোগিতা হিসেবে রয়েছে ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ শেষে চাকরির সম্ভাবনা। প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করার পর সংশ্লিষ্ট কোর্সের ওপর ভিত্তি প্রায় ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ ইউরোর (৩ লাখ ১৬ হাজার ২৪৯ থেকে ৪ লাখ ৬১ হাজার ১৯৭ টাকা) মাসিক বেতনের কাজ পাওয়া যেতে পারে। এগুলোর মধ্যে তালিকার শীর্ষে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষত নার্সিং পেশা। তথ্য ও প্রযুক্তির ক্রমশ অগ্রসর হওয়ায় উচ্চ চাহিদা রয়েছে দক্ষ আইটি (ইনফরমেশন টেকনোলজি) পেশাদারদের। সবচেয়ে আকর্ষণীয় পেশা হচ্ছে নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এবং সফ্টওয়্যার ডেভেলপার। এছাড়াও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল এবং অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জার্মানির নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ায় এর স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিকাশের জন্য শত শত দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়ছে। এই জনগোষ্ঠীর একটা বিরাট অংশের যোগান দাতা হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে এই আউসবিল্ডুং।
তাছাড়া প্রোগ্রামের পরীক্ষাগুলোতে সাফল্যের সঙ্গে কৃতকার্য হওয়ায় পর প্রশিক্ষণের কোম্পানিতেই থাকছে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ। এমনকি উচ্চশিক্ষায় আগ্রহীরা এই ফলাফল নিয়ে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হতে পারবেন।
সর্বসাকূল্যে, এই কার্যক্রমে অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদে একটি উচ্চ মান সম্পন্ন জীবনযাত্রার দেশে বৈধভাবে বসবাসের সম্ভাবনা।
আরো পড়ুন: তুলনামূলক কম দামে বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
জার্মানির আউসবিল্ডুং-এ আবেদন পদ্ধতি
এই ভোকেশনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকরা প্রধাণত দুই ভাবে আবেদন করতে পারেন।
এক, বাংলাদেশে থেকেই আউসবিল্ডুংয়ের জন্য জার্মান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া। অতঃপর ট্রেনিং-এ অংশগ্রহণের জন্য এন্ট্রি ভিসায় আবেদন করা।
দুই, জার্মানিতে পৌঁছে ভোকেশনাল ট্রেনিং কোম্পানি খোঁজার জন্য নির্ধারিত এন্ট্রি ভিসায় আবেদন করা।
বাংলাদেশ থেকে আউসবিল্ডুংয়ের জন্য জার্মান কোম্পানি খোঁজার উপায়
জার্মানিতে আন্তর্জাতিক চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের জব পোর্টাল রয়েছে। এগুলোতে প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করা যায়। এই সাইটগুলোর অধিকাংশই জার্মান ভাষার।
যেমন-
• সরকারি জব প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে-
• ফেডারেল এম্প্লয়মেন্ট এজেন্সির জব সাইট (https://www.arbeitsagentur.de/jobsuche/)
• সিভিল সার্ভিসের জন্য,
• https://www.service.bund.de/Content/DE/Stellen/Suche/Formular.html
• https://karriere.bund.de/
• সাধারণ জব সাইট:
(https://www.make-it-in-germany.com/en/working-in-germany/job-listings)
• আঞ্চলিক সরকারি পোর্টাল:
(https://www.thaff-thueringen.de/thueringer-stellenboerse/stellenboerse)
বেসরকারি জব পোর্টাল
স্টেপস্টোন (https://www.stepstone.de/en/)
• মনস্টার (Monster.de)
• এছাড়াও সরাসরি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেয়েও আবেদন করা যেতে পারে। যেমন-
• জার্মান রেলওয়ে কোম্পানি ডয়েচে বাহ্ন:
(https://jobs.deutschebahngroup.careers/en_US/jobsGlobal/SearchJobs)
• আলডি নর্থ অ্যান্ড সাউথ:
• https://www.aldi-nord.de/karriere/
• https://karriere.aldi-sued.de/
• রিটেইল টেইন কোম্পানি লিড্ল (https://jobs.lidl.de/)
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের মধ্যে রয়েছে-
• ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন:
(https://www.awo-mittelrhein.de/en/awo/careers-portal/vacancies-and-job-offers/)
• ডায়াকোনি: (https://www.diakonie.at/jobplattform/offene-stellen)
এছাড়াও এই সাইটগুলোর নিউজলেটারে সাবস্ক্রাইব করে রাখা যেতে পারে। এতে করে বিভিন্ন সময়ে স্বনামধন্য কোম্পানিগুলোর নতুন জব পোস্টগুলো সম্পর্কে জানা যাবে।
আরো পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
আউসবিল্ডুং-এর জন্য আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
• ইউরোপাস ফর্ম্যাট (https://europass.europa.eu/en/create-europass-cv) অনুযায়ী টেবিল আকারে সিভি (একাডেমিক শিক্ষাগ্রহণ বা চাকরি করার সময়গুলোতে মাঝে দীর্ঘকালীন কোনো বিরতি থাকা যাবে না। যদি এক মাসের বেশি সময় ধরে চাকরি না করা হয়, তাহলে তার স্বপক্ষে উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করতে হবে।)
• এক পৃষ্ঠার কভার লেটার বা মোটিভেশন লেটার: যোগাযোগ ও দক্ষতার তথ্যসহ প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে
• পূর্ববর্তী কর্মসংস্থান থেকে কাজের রেফারেন্স বা পূর্ববর্তী নিয়োগকর্তাদের নিকট থেকে সুপারিশের চিঠি কিংবা নিদেনপক্ষে পূর্ববর্তী নিয়োগকর্তাদের যোগাযোগের তথ্য (কোম্পানির নাম, ফোন নাম্বার, ই-মেইল ঠিকানা ও প্রার্থীর পদবি)
• মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট: সংযুক্তিতে থাকবে জেডএবি থেকে মূল্যায়ন বা তুলনামূলক বিবৃতি (এই নথিপত্র যদি বাংলা ভাষায় থাকে তবে সেগুলোর জার্মান বা ইংরেজি যেকোনো ভাষায় প্রত্যয়িত অনূদিত সংস্করণ জমা দিতে হবে)
• জার্মান ভাষা দক্ষতার প্রমাণ (সিইএফআর অনুযায়ী ন্যূনতম বি১)
• সম্পূর্ণ পূরণকৃত তথ্য সুরক্ষা ঘোষণা ফর্ম
আরো পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময়কাল
আবেদনসহ যাবতীয় নথি পাঠানোর পর অন্তত এক সপ্তাহের মধ্যে কোম্পানির পক্ষ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে অনলাইন সাক্ষাৎকারের দিনক্ষণ জানানো হবে।
আবেদনের কাগজপত্র যাচাই এবং সাক্ষাৎকারের পর চূড়ান্ত নিয়োগের সিদ্ধান্ত আসতে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। এর মাঝে ১ থেকে ২ সপ্তাহ অপেক্ষা করে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা বা পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে ই-মেইল ফলোআপ করা যেতে পারে।
আউসবিল্ডুং-এর জন্য ভিসার আবেদন
দীর্ঘকালীন এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের জন্য জার্মানির যে ভিসাটি পেতে হবে তা হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদী টাইপ-ডি বা ন্যাশনাল ভিসা। ট্রেনিংয়ের জন্য কোম্পানি ঠিক করা হোক বা না হোক; উভয় ক্ষেত্রেই এই ভিসায় আবেদন করতে হবে। এই এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ ৯০ দিন থেকে সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত থাকে। তাই জার্মানিতে পৌঁছে কোম্পানি খোঁজার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৯ মাস পাওয়া যাবে।
জার্মানির আবেদন পোর্টাল ভিআইডিইএক্সয়ের টাইপ-ডি ভিসার আবেদন ফর্মের লিঙ্ক: https://videx-national.diplo.de/videx। এটি পূরণের পর তা প্রিন্ট করে আবেদনকারী তা নিজে সই করবেন।
আরো পড়ুন: জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
আউসবিল্ডুং ভিসার আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
• আবেদনকারীর সইকৃত এবং সম্পূর্ণরূপে পূরণকৃত আবেদন ফর্ম
• জার্মানিতে পৌঁছার দিন থেকে পরবর্তী কমপক্ষে ১২ মাসের মেয়াদ সম্পন্ন বৈধ পাসপোর্ট: বিগত ১০ বছরের মধ্যে ইস্যুকৃত হতে হবে এবং তাতে ভিসার সীল যুক্ত করার জন্য কমপক্ষে ২টি খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে)
• সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (বিগত ৬ মাসের বেশি পুরাতন হওয়া যাবে না)
• প্রদানকৃত তথ্যের সুরক্ষার্থে সই করা সম্মতির ঘোষণাপত্র:
(https://dhaka.diplo.de/bd-en/service/visa-einreise/-/2669542)
• স্বাস্থ্য বিমা: (ভিসা সংগ্রহের সময় এই প্রমাণ দেখাতে হবে) প্রশিক্ষণের সম্পূর্ণ সময়কালের জন্য ন্যূনতম ৩০ হাজার ইউরো (৩৯ লাখ ৫৩ হাজার ১১৭ টাকা)
• অথবা, একটি সরকারি জার্মান স্বাস্থ্য বিমার প্রমাণ: জার্মান স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পক্ষ থেকে একটি চিঠি এবং সঙ্গে প্রথম ৩ সপ্তাহের একটি স্বাস্থ্য ও ভ্রমণ বিমা
• পূর্ণ ঠিকানাসহ জার্মানিতে বাসস্থানের প্রমাণ: (কোনো পরিবারের সঙ্গে থাকা হলে তাদের পক্ষ থেকে লিখিত আমন্ত্রণপত্র, অথবা হোটেল বুকিং)
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে থেকে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায়
ভোকেশনাল ট্রেনিং-এ যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যে কাগজগুলো প্রয়োজন হবে
• জার্মানিতে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অধীনে প্রশিক্ষণের চুক্তিপত্র
• আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ: প্রতি মাসে কমপক্ষে ৯০৩ ইউরো (১ লাখ ১৮ হাজার ৯৮৯ টাকা)। অন্তত প্রথম বছরের তহবিলের (১০ হাজার ৮৩৬ ইউরো বা ১৪ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৬ টাকা) ব্লক অ্যাকাউন্ট। কোম্পানিরে পক্ষ থেকে প্রাপ্ত ভাতা প্রমাণ হিসেবে দেখানো যাবে। তবে তা অপর্যাপ্ত হলে বাকি অর্থ ব্লক অ্যাকাউন্টে দেখাতে হবে।
ভোকেশনাল ট্রেনিং কোম্পানি খোঁজার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যে নথি সংযুক্ত করতে হবে
• মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট: শংসাপত্র জার্মানি মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা কর্তৃক স্বীকৃত কিনা তার জন্য জেডএবি থেকে তুলনামূলক বিবৃতি
• বয়সসীমা: সর্বোচ্চ ৩৫ বছর
• জার্মানিতে জীবনযাত্রার খরচ ও রিটার্ন ফ্লাইটের পর্যাপ্ত তহবিল: জীবনযাত্রার খরচ বাবদ মাসে কমপক্ষে ১ হাজার ২৭ ইউরো (১ লাখ ৩৫ হাজার ৩২৮ টাকা) করে অন্তত প্রথম বছরের জন্য ১২ হাজার ৩২৪ ইউরো (১৬ লাখ ২৩ হাজার ৯৪১ টাকা)
আরো পড়ুন: ইতালিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং এবং ইন্টারভিউ
জার্মান দূতাবাসের ওয়েবসাইটে (https://dhaka.diplo.de/bd-en/service/kontakt-formular) যোগাযোগের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
এখানে প্রথম ই-মেইলের ফিরতি ই-মেইল হিসেবে সব নথি জমা দিতে বলা হবে। অতঃপর পরবর্তীতে আরও একটি ই-মেইলের মাধ্যমে সাক্ষাৎকারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হবে। অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন ভিসার সবগুলো কাগজপত্রের হার্ড কপি সাথে নিয়ে যেতে হবে।
জার্মান দূতাবাসের ঠিকানা: ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানির দূতাবাস, ১১ মাদানী এভিনিউ, বারিধারা ডিপ্লোম্যাটিক ইনক্লেভ, ঢাকা-১২১২।
ভিসা ফি এবং ভিসাপ্রাপ্তির সময়
আউসবিল্ডুংয়ের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণ খরচ ৭৫ ইউরো (৯ হাজার ৮৮৩ টাকা)। মূলত দেশ থেকে জার্মান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে এই ধরণের এন্ট্রি ভিসার কাজ খুব দ্রুত হয়ে যায়। সাধারণত এক সপ্তাহ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ দিন লাগতে পারে।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
জার্মানিতে পৌঁছে চূড়ান্ত রেসিডেন্ট পারমিট সংগ্রহ
এন্ট্রি ভিসা নিয়ে জার্মানি পৌঁছে প্রথম কাজ হচ্ছে রেসিডেন্স রেজিস্ট্রেশন অফিসে যেয়ে জার্মানিতে প্রার্থীর বাড়ির ঠিকানা নিবন্ধন করা। তারপর স্থানীয় ভিসা অফিসে রেসিডেন্ট পারমিটের আবেদনের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এটিই সেই পারমিট, যার মাধ্যমে আউসবিল্ডুংয়ের পুরো সময়টাতে জার্মানিতে থাকার অনুমতি পাওয়া যাবে।
ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের সঙ্গে আগে থেকে চুক্তি না করে জার্মানি এলে বাড়ির ঠিকানা নিবন্ধনের পরপরই শুরু করে দিতে হবে কোম্পানি খোঁজা। কেননা রেসিডেন্ট পারমিট আবেদনের প্রথম শর্তই হচ্ছে আউসবিল্ডুংয়ের চুক্তিপত্র।
এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রেসিডেন্ট পারমিট নেওয়া অপরিহার্য। এই পারমিট সংগ্রহের জন্য খরচ হতে পারে ১০০ ইউরো (১৩ হাজার ১৭৭ টাকা)।
শেষাংশ
জার্মানির আউসবিল্ডুং বা ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা তত্ত্বীয় জ্ঞান ও হাতে-কলমে শিক্ষার এক কার্যকর সমন্বয়। বাংলাদেশের দক্ষ কর্মীদের মানোন্নয়নের জন্য তো বটেই, অদক্ষ নাগরিকদের জন্যও এটি এক যুগান্তকারি সম্ভাবনা। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পারিশ্রমিক লাভের এই সুযোগ অর্জন করার প্রথম শর্ত হলো জার্মান ভাষা শিক্ষা। বাকি থাকে জার্মান কোম্পানির কাছ থেকে প্রশিক্ষণের চুক্তিপত্র গ্রহণ। বাংলাদেশে থাকা অবস্থাতেই এটি সম্ভব হলে ভিসাসহ পুরো প্রক্রিয়া আরও সহজ হয়ে যায়। বিশেষ করে জার্মানিতে পৌঁছে কোম্পানি খোঁজার বিড়ম্বনা থাকে না।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
১ মাস আগে
সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
একটি দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দক্ষ জনশক্তি দিয়ে সেই দেশটির উন্নয়নে কতটা ভূমিকা রাখতে পারছে তার ওপর নির্ভর করে দেশটির শিক্ষার মান। সুষ্ঠু শিক্ষা চর্চা আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশসহ সার্বিকভাবে একটি দেশটিকে উন্নত করে। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বস্তরের নাগরিকরা উপভোগ করতে পারে কাঙ্ক্ষিত জীবনধারা। বিগত কয়েক দশক ধরে এমনি মান সম্পন্ন জীবনধারণের মূর্ত প্রতীক হয়ে আছে পশ্চিম ইউরোপের দেশ সুইজারল্যান্ড। শেনজেনভুক্ত দেশটির নানা অঙ্গন জুড়ে অসামান্য সমৃদ্ধি করবে ঘোষণা করে আসছে সর্বোচ্চ স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থার কথা। চলুন, সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় আবেদন প্রক্রিয়া, স্টুডেন্ট ভিসা ও অধ্যয়ন খরচ এবং স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কেন সুইজারল্যান্ড উচ্চশিক্ষার অন্যতম সেরা গন্তব্য
গ্লোবাল ইনোভেশন ইন্ডেক্স অনুসারে, একটানা ১৩ বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনী দেশের মর্যাদা পেয়ে আসছে সুইজারল্যান্ড। এর নৈপথ্যে রয়েছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তবধর্মী গবেষণা ও সৃজনশীলতা চর্চা। কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে শীর্ষ ১০০-এর মধ্যে থাকা বিদ্যাপীঠগুলো হলো- ইটিএইচ জুরিখ (৭), ইকোল পলিটেকনিক ফেডারেল ডি লোস্যান (৩৬), এবং ইউনিভার্সিটি অফ জুরিখ (৯১)।
জীবনযাত্রা যথেষ্ট ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের অষ্টম শিক্ষার্থীবান্ধব শহরটি হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের বৃহত্তম নগরী জুরিখ।
প্রতিবারের মতো ২০২৪-এ ও পৃথিবীর শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষ ১০-এ রয়েছে সুইজারল্যান্ড (৬)। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত জীবনযাত্রার দেশগুলোর মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড।
এছাড়া পরিবেশের দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে এই স্থলবেষ্টিত দেশটি। মাত্র ২৩ দশমিক ৩ পলিউশন ইন্ডেক্স নিয়ে নিরাপদ রাষ্ট্রগুলোর তালিকায় ১০ নম্বরে রয়েছে সুইজারল্যান্ড।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম সম্প্রতি কার্বন নিঃসরণের প্রচেষ্টার ওপর মূল্যায়ন করে ১২০টি দেশের নাম প্রকাশ করেছে। এনার্জি ট্রাঞ্জিশনের ভিত্তিতে এই তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে সুইসরা।
আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
সুইজারল্যান্ডের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধ্যয়নের সেরা বিষয়গুলো
বিশ্বজুড়ে বহুল সমাদৃত সুইজারল্যান্ডের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়:
• ইটিএইচ জুরিখ
• ইকোল পলিটেকনিক ফেডারেল ডি লোস্যান
• ইউনিভার্সিটি অব জুরিখ
• ইউনিভার্সিটি অব ব্যাসেল
• ইউনিভার্সিটি অব বার্ন
• ইউনিভার্সিটি অব জেনেভা
• ইউনিভার্সিটি অব লোস্যান
• ইউএসআই ইউনিভার্সিটি ডেলা স্ভিজ্জেরা ইটালিয়ানা
• ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট গ্যালেন
• ইউনিভার্সিটি অব ফ্রিবুর্গ
আরো পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
সুইস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যয়নের সেরা বিষয়গুলো:
• হস্পিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট
• বিজনেস অ্যান্ড ফাইন্যান্স
• বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
• ইঞ্জিনিয়ারিং
• মেডিসিন অ্যান্ড হেল্থকেয়ার
• আইন
• অ্যাপ্লাইড ম্যাথমেটিক্স
• সাংবাদিকতা
আরো পড়ুন: সুইডেনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
সুইজারল্যান্ডের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
এখানে প্রধানত দুটি মৌসুমে ভর্তির কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। একটি হচ্ছে ফল ও অপরটি স্প্রিং। ফলের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয় ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর এই আবেদনগুলো যাচাইয়ের ভিত্তিতে ভর্তি শুরু হয় সেপ্টেম্বর থেকে।
অপরদিকে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন নেওয়া হয় স্প্রিং-এ, যার প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ হয় ফেব্রুয়ারি থেকে ভর্তি শুরুর মাধ্যমে।
দুটো ভর্তি মৌসুমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে ফল। কেননা এ সময় অন্য সময়ের তুলনায় আবেদনের জন্য বেশি সংখ্যক বিষয় পাওয়া যায়।
এই আবেদনগুলো কোনো কেন্দ্রীয় সিস্টেমের মাধ্যমে নেওয়া হয় না। শিক্ষার্থীদের সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
আরো পড়ুন: ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
• প্রার্থীর স্বহস্তে সই সম্পূর্ণ পূরণকৃত আবেদনপত্র
• দুটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
• বৈধ পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি
• বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার সাপেক্ষে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
• ব্যাচেলরের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সনদ বা ডিপ্লোমা কিংবা তার সমতুল্য সনদ
• স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতক ডিগ্রি বা সমমানের সনদ
• পিএইচডি স্তরের জন্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা সমতুল্য সনদ
• ভাষার দক্ষতা প্রমাণ স্বরূপ:
• আইইএলটিএস (সাধারণত ন্যূনতম স্কোর ৬ দশমিক ৫)
• টোফেল (আইবিটি) (সর্বনিম্ন স্কোর ৮০)
• পিটিই একাডেমিক (ন্যূনতম স্কোর ৫৮)
• সিভি
• আবেদন ফি প্রদানের প্রমাণ: সাধারণত ১০০ থেকে ১৫০ সুইস ফ্রাঙ্ক, যা প্রায় ১৪ হাজার ১১৩ থেকে ২১ হাজার ১৭০ টাকার (১ সুইস ফ্রাঙ্ক = ১৪১ দশমিক ১৩ বাংলাদেশি টাকা) সমান
• প্রার্থীর নিজের সম্পর্কে বিস্তারিত পার্সনাল স্টেটমেন্ট
• ডক্টরাল গবেষণার ক্ষেত্রে যার অধীনে গবেষণা করা হচ্ছে তার নিকট থেকে একটি স্বীকারক্তি চিঠির
আরো পড়ুন: পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
১ মাস আগে
জাপানে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
সমাজ সংস্কার ও নগরায়নের নেপথ্যে মূল চালিকা শক্তি হলো উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রায়োগিক জ্ঞান। এই দক্ষতার বলে যে কোনো জাতি তাদের ধ্বংসপ্রায় অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে পূর্ব এশিয়ার দেশ জাপান। যুদ্ধাহত ও দুর্যোগপ্রবণ হওয়ার পরেও দেশটি এশিয়ার সর্বোচ্চ স্তরের শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে। সঙ্গত কারণেই দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনার জন্য প্রতি বছর জাপানমুখী হয় হাজার হাজার শিক্ষার্থী। চলুন, জাপানে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও অধ্যয়ন খরচ সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
জাপানে কেন পড়তে যাবেন
শিক্ষা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (এমইএসটি) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামগুলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। দেশটির প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক আগে থেকেই জায়গা দখল করে আছে কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং-এ শীর্ষ শতকে। তার মধ্যে ২৮তম অবস্থানে আছে ইউনিভার্সিটি অব টোকিও এবং ৪৬ নাম্বারে রয়েছে কিয়োটো ইউনিভার্সিটি। ওসাকা ইউনিভার্সিটি এবং টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির র্যাংকিং যথাক্রমে ৮০ ও ৯১।
সারা বিশ্বে ৩য় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপান প্রযুক্তি ও উৎপাদন খাতে বিখ্যাত সব বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের আবাসস্থল।
মাত্র ২২ দশমিক ৭ ক্রাইম ইনডেক্স নিয়ে বিশ্বের নিরাপদ দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষ ১০-এ রয়েছে জাপান। দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট অনুসারে টোকিও ও ওসাকা যথাক্রমে বিশ্বের ১ম ও তৃতীয় নিরাপদ শহর। সময়ে সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ায় দেশটির অবকাঠামোগুলো নির্মিত হয় সর্বোচ্চ স্তরের নিরাপত্তা মান বজায় রেখে। বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প-প্রতিরোধী প্রযুক্তিতে শতাব্দীর সেরা উদ্ভাবনগুলো এসেছে জাপানের মাধ্যমেই।
আরো পড়ুন: চীনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
এছাড়া ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মতে, পৃথিবীর সর্বাধিক আয়ুর অধিকারী জাতি হচ্ছে জাপানিরা। এর নেপথ্যে রয়েছে তাদের চমৎকার চিকিৎসা ব্যবস্থা, যেটি জাতীয় স্বাস্থ্য বীমার মাধ্যমে খুব সাশ্রয়ী মূল্যেই পাওয়া যায়।
জাপানে উচ্চশিক্ষার পূর্বশর্ত
এখানকার ইংরেজি ভাষার স্নাতক প্রোগ্রামগুলোতে ভর্তির জন্য টোফেল (আইবিটি) স্কোর ন্যূনতম ৭২ বা আইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোর ৫ দশমিক ৫ থাকতে হবে। তবে স্নাতকোত্তরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে আরও বেশি স্কোরের দরকার হতে পারে।
স্থানীয় ভাষা বাধ্যতামূলক না হলেও জাপানিরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দোকানপাট ও অফিস সর্বত্রে তাদের নিজস্ব ভাষাকেই অগ্রাধিকার দেয়। তাছাড়া সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধার স্কলারশিপ পেতে হলে জাপানি ভাষা শেখা অপরিহার্য।
ইজেইউ
জাপানের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির পূর্বশর্ত হিসেবে এই স্কোরটি দেখাতে হয়। ইজেইউ পূর্ণরূপ হলো এক্সামিনেশন ফর জাপানিজ ইউনিভার্সিটি ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস। এখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জাপানি ভাষা ও একাডেমিক দক্ষতা মূল্যায়ন করা হয়। এই পরীক্ষায় বেশি স্কোর পাওয়ার মাধ্যমে শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই পরীক্ষার বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে জাপানি ভাষা, বিজ্ঞান, গণিত ও সাধারণ বিষয়। বিজ্ঞান বিভাগটি পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানে বিভক্ত। এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য জুন বা নভেম্বরের মধ্যে জাপানে পৌঁছাতে হবে।
আরো পড়ুন: টোফেল পরীক্ষার নিবন্ধন করবেন যেভাবে
জেএলপিটি
এটি হচ্ছে জাপানি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা, যা অধিকাংশ জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়ে গৃহীত হয়। এতে রয়েছে পাঁচটি মেধা স্তর, যেখানে সর্বোচ্চ স্তর এন৫ এবং সর্বনিম্ন স্তর এন১ হিসেবে অভিহিত হয়। জাপানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য সাধারণত কমপক্ষে এন২ স্তর থাকতে হয়।
জাপানের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ও চাহিদা সম্পন্ন কোর্সের তালিকা
কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং-এর শীর্ষ ২০০-তে থাকা ৯টি জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়-
· ইউনিভার্সিটি অব টোকিও
· কিয়োটো ইউনিভার্সিটি
· ওসাকা ইউনিভার্সিটি
· টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি
· তোহোকু ইউনিভার্সিটি
· কিউশু ইউনিভার্সিটি
· নাগোয়া ইউনিভার্সিটি
· হোক্কাইডো ইউনিভার্সিটি
· ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটি
আরো পড়ুন: ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
জাপানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনার জন্য সর্বাধিক চাহিদা সম্পন্ন বিষয়গুলো-
· প্রকৌশল ও প্রযুক্তি
· ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা
· ডেটা সায়েন্স
· কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
· কম্পিউটার সায়েন্স
· স্থাপত্য
· অর্থনীতি
· হেল্থকেয়ার ও মেডিসিন
· পরিবেশ বিজ্ঞান
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
জাপানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত স্প্রিং, সামার, এবং ফল- এই তিনটি মৌসুমে ভর্তি নিয়ে থাকে। প্রথমে আবেদন, অতঃপর প্রবেশিকার পরীক্ষা- এই দুটি ধাপে পুরো ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
আবেদন
এই ধাপে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন গ্রহণ করা হয়। এখানে সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি আপলোড এবং আবেদন ফি পরিশোধ করে আবেদন সম্পন্ন করতে হয়। এ সময় শুধুমাত্র গৃহীত কাগজপত্রের ভিত্তিতে আবেদনকারীদের মূল্যায়ন করা হয়। এর মধ্যে যে বিষয়গুলোতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয় সেগুলো হলো-
· ইজেইউ স্কোর
· জেএলপিটি স্কোর
· আইইএলটিএস/টোফেল (আইবিটি) স্কোর
প্রবেশিকা পরীক্ষা
এই দ্বিতীয় ধাপে প্রথম ধাপে উত্তীর্ণ প্রার্থীকে সাক্ষাৎকারের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।
আরো পড়ুন: রোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· পূর্ববর্তী শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণস্বরূপ সনদপত্র এবং একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
· স্নাতক সনদ
· প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোর (ইজেইউ, জেএলপিটি)
· ইংরেজি প্রোগ্রামের জন্য আইইএলটিএস, টোফেল আইবিটি স্কোর
· রিকমেন্ডেশন লেটার
· স্টেটমেন্ট অব পার্পাস বা পার্সনাল স্টেটমেন্ট
· কমপক্ষে ১ বছরের মেয়াদ সম্পন্ন বৈধ পাসপোর্ট
· ৪ থেকে ৬টি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
· টিউশন এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ভার বহন করার প্রমাণস্বরূপ আর্থিক নথিপত্র
· পেশাগত যোগ্যতার সনদ (এমবিএর ক্ষেত্রে)
আরো পড়ুন: আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
জাপানে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করবেন যেভাবে
ভিসা আবেদনে যাওয়ার পূর্বে উপরোক্ত নথিগুলো দিয়ে সার্টিফিকেট অব ইলিজিবিলিটি বা সিওইর জন্য আবেদন করতে হবে। এই নথিটি মূলত জাপানের আঞ্চলিক ইমিগ্রেশন ব্যুরো থেকে শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়।
সার্টিফিকেট অব ইলিজিবিলিটি
এই সনদটি হলো এক প্রকার যোগ্যতার শংসাপত্র। এটি জাপানে প্রার্থীর অভিবাসনের উদ্দেশ্যকে সুনিশ্চিত করার মাধ্যমে আবেদনকে আরও যৌক্তিক করে তোলে।
ইমিগ্রেশন ব্যুরো থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে প্রার্থীকে এই সিওই পাঠানো হয়। এই সিওই ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করে তা ভিসার আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
জাপানের স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনের জন্য https://www.mofa.go.jp/files/000124525.pdf-এই লিংকের ফর্মটি ডাউনলোড করে তা পূরণ করতে হবে। তারপর প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র নিয়ে সশরীরে কনসুলেটর অফিসে যেয়ে আবেদন জমা দিতে হবে। এছাড়া জাপানের ভিসা আবেদনের জন্য সরাসরি কোনো অনলাইন পদ্ধতি নেই।
আরো পড়ুন: অস্ট্রিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
ভিসার আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· সম্পূর্ণ পূরণকৃত স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনপত্র
· অনুলিপিসহ বৈধ পাসপোর্ট
· ২টি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (২ ইঞ্চি X ১ দশমিক ৪ ইঞ্চি), যেটি অবশ্যই বিগত সর্বোচ্চ ৩ মাসের মধ্যে সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে তোলা হতে হবে
· সিওই (জাপানি সরকারি স্কলারশিপপ্রাপ্তদের জন্য প্রয়োজন নেই)
· জাপানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ভর্তির চিঠি
· বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
· আর্থিক সক্ষমতার প্রত্যয়িত নথি: এক বছরের জন্য সর্বনিম্ন ২০ লাখ ইয়েনের (১ জাপানিজ ইয়েন = ০ দশমিক ৮৫ বাংলাদেশি টাকা হিসাবে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৬৩ টাকা) ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে
· স্কলারশিপ বা স্পন্সরশিপ থাকলে তার প্রমাণপত্র
· স্বাস্থ্য বীমা: প্রতি বছরের জন্য সর্বনিম্ন ২০ হাজার ইয়েন (১৬ হাজার ৯০৫ টাকা)
· সিভি বা পোর্টফোলিও
· অধ্যয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত অর্থপ্রদানের রশিদ
· এয়ারলাইন বুকিং স্লিপ
সিওই প্রাপ্তির পর তা আবেদনপত্র ও উপরোক্ত কাগজপত্রের সাথে একত্রে ভিসা আবেদন কেন্দ্রে জমা দিতে হবে। তবে যাওয়ার পূর্বে প্রথম কাজ হলো ভিসা কেন্দ্রের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া।
আরো পড়ুন: চেক প্রজাতন্ত্রে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
সাক্ষাৎকারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং ও আবেদন জমা
আবেদনের যাবতীয় কাগজপত্র জমা এবং সাক্ষাৎকারের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হলে [email protected]এই ঠিকানায় ই-মেইল করতে হবে। ই-মেইলের সংযুক্তি হিসেবে (https://www.bd.emb-japan.go.jp/files/100472248.xlsx)-এই ফর্মটি পূরণ করে দিতে হবে।
জাপানি ভিসা আবেদন কেন্দ্রের ঠিকানা: জাপান দূতাবাস, বাংলাদেশ, প্লট নং ৫ ও ৭, দূতাবাস রোড, বারিধারা, ঢাকা।
ভিসা কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার সময় রবি থেকে বৃহস্পতিবার যে কোনো দিন সকাল ৯টা থেকে ১০টা ৫০-এর মধ্যে। প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার চলে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। আবেদনের যাবতীয় নথিপত্র জমা দেওয়ার পর ভিসা অফিস থেকে একটি রশিদ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ভিসা সংগ্রহের সময় এই রশিদটি সঙ্গে নিয়ে আসতে হয়।
আরো পড়ুন: হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের উপায়, পড়াশোনার খরচ, স্কলারশিপ, ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
ভিসা প্রক্রিয়াকরণের মেয়াদ, ফি ও ভিসা সংগ্রহ
সাক্ষাৎকারের দিন থেকে থেকে সাধারণত ৫ কর্মদিবস পরে ভিসা সরবরাহের নিয়ম। তবে সিওইসহ ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিতে ১ থেকে ৩ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসার জন্য ফি ৩ হাজার ইয়েন (২ হাজার ৫৩৬ টাকা) ও ডাবল-এন্ট্রির জন্য ৬ হাজার ইয়েন (৫ হাজার ৭২ টাকা)।
ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট বিতরণের সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে ৩টা ৩০ মিনিটের মধ্যে। এ সময় পাসপোর্টসহ জমাকৃত সব মূল কাগজ ফেরত দেওয়া হয়।
প্রার্থী ভিসা কেন্দ্রে সশরীরে উপস্থিত হতে অপারগ হলে তার মনোনীত ব্যক্তিকে পাঠাতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির সঙ্গে আসল প্রার্থীর বৈধ স্বাক্ষরসহ পাওয়ার অব অ্যাটর্নি চিঠি ও আবেদনের রশিদ থাকা আবশ্যক।
আরো পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
জাপানে পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার সম্ভাব্য খরচ
এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্নাতক প্রোগ্রামগুলোতে অধ্যয়ন ফি সাধারণত গড়ে ১২ লাখ ৪০ হাজার ইয়েন থেকে ২৮ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন। এই মূল্য প্রায় ১০ লাখ ৪৮ হাজার ১৪৮ থেকে ২৩ লাখ ৯২ হাজার ১৪৬ টাকার সমতূল্য। মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য ব্যয় হতে পারে প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৪৪ লাখ ইয়েন, যা ১০ লাখ ৫৬ হাজার ৬০১ থেকে ৩৭ লাখ ১৯ হাজার ২৩৮ টাকার সমান। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য খরচ হতে পারে ১৯ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়েন (১৬ হাজার ৬০ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৪৩৪ টাকা)।
জাপানের জীবনযাত্রায় আবাসনের খরচ শহরভেদে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। টোকিও শহরে মাসিক বাসা ভাড়া গড়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ইয়েন (১ লাখ ৩৮ হাজার ৬২৬ টাকা) এবং ওসাকাতে ১ লাখ ৩৫ হাজার ইয়েন (১ লাখ ১৪ হাজার ১১৩ টাকা)। কিয়োটোতে থাকার জন্য বাজেট রাখতে হবে ১ লাখ ১৮ হাজার ইয়েন বা ৯৯ হাজার ৭৪৩ টাকা এবং ফুকুওকার জন্য ১ লাখ ৫ হাজার ইয়েন তথা ৮৮ হাজার ৭৫৫ টাকা।
টোকিওর মতো ব্যস্ততম শহরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে থাকাটা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরিগুলোতে এক রুমের জন্য প্রতি মাসে দিতে হয় প্রায় ১২ হাজার ইয়েন (১০ হাজার ১৪৩ টাকা)।
এছাড়া বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের মুদি ও খাবারের জন্য মাসিক বাজেট রাখতে হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার ইয়েন। এই মূল্য প্রায় ২৫ হাজার ৩৫৮ থেকে ৩৩ হাজার ৮১১ টাকার সমতুল্য। স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলো মাসে ২ থেকে ৩ হাজার ইয়েনের (১ হাজার ৬৯১ থেকে ২ হাজার ৫৩৬ টাকা) মধ্যে পাওয়া যায়। ইউটিলিটির জন্য খরচ সাধারণত প্রায় ১০ হাজার ইয়েন অথবা ৮ হাজার ৪৫৩ টাকা। পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ছাত্রদের জন্য মাসিক পাস ফি প্রায় ৫ হাজার ইয়েন (৪ হাজার ২২৬ টাকা)।
আরো পড়ুন: ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
জাপানে পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার খরচ
জাপানে স্কলারশিপের সুযোগ
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে যারা ন্যূনতম ৬৫ শতাংশের অধিক ফলাফল নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাদের জন্য জাপানে রয়েছে স্কলারশিপের ব্যবস্থা। পিএইচডি ছাড়াও অন্যান্য পর্যায়গুলোতে বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যয়নের ওপর এই স্কলারশিপগুলো দেওয়া হয়।
এর মধ্যে জাপানের সরকারি স্কলারশিপে টিউশন ফি ও রাউন্ড ট্রিপের বিমান ভাড়ার পাশাপাশি ১ লাখ ৪৪ হাজার ইয়েনের মাসিক উপবৃত্তি পাওয়া যায়। বাংলাদেশি টাকায় এটি ১ লাখ ২১ হাজার ৭২১ টাকার সমান।
জাপান স্টুডেন্ট সার্ভিসেস অর্গানাইজেশন স্কলারশিপের আওতায় রয়েছে ২৭ থেকে ৪২ হাজার ইয়েন (২২ হাজার ৮২৩ থেকে ৩৫ হাজার ৫০২ টাকা) মাসিক উপবৃত্তি।
জেটি এশিয়া স্কলারশিপ শুধুমাত্র মাস্টার এবং ডক্টরাল শিক্ষার্থীদের ২ বছরের জন্য প্রতি মাসে পরিমাণ ১৫ লাখ ইয়েন (১২ লাখ ৬৭ হাজার ৯২২ টাকা) উপবৃত্তি দেয়।
সাতো ইয়ো ইন্টার্ন্যাশনাল স্কলারশিপ পাওয়ার পূর্বশর্ত হলো জাপানি ভাষায় দক্ষ হওয়া। এখানে স্নাতক স্তরের প্রার্থীদের জন্য প্রতি মাসে বরাদ্দ থাকে ১৫ লাখ ইয়েন (১২ লাখ ৬৭ হাজার ৯২২ টাকা)। স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা পান ১৮ লাখ ইয়েন, যা প্রায় ১৫ লাখ ২১ হাজার ৫০৬ টাকা।
আইচি স্কলারশিপ প্রোগ্রামে অধ্যয়ন ফি ও ভ্রমণ খরচের সঙ্গে থাকে ১৫ লাখ ইয়েনের (১২ লাখ ৬৭ হাজার ৯২২ টাকা) মাসিক উপবৃত্তি।
আরো পড়ুন: পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
জাপানের স্টুডেন্ট ভিসার আওতায় খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ থাকে না। এর জন্য ইমিগ্রেশন অফিসে পৃথকভাবে পার্ট-টাইম ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হয়। অবশ্য এর আগের কাজ হচ্ছে ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি রেসিডেন্ট কার্ড সংগ্রহ করা। এই কার্ডটি পরবর্তীতে খণ্ডকালীন কাজের অনুমতি পাওয়াসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার জন্য প্রয়োজন হয়। পার্ট-টাইম ওয়ার্ক পারমিটে সেমিস্টার চলাকালীন সপ্তাহভিত্তিতে ২৮ ঘণ্টা এবং ছুটির সময়ে ৪০ ঘণ্টা কাজ করা যায়।
এই চাকরিগুলোর মধ্যে কনভেনিয়েন্স স্টোর স্টাফদের মজুরি ঘণ্টাপ্রতি ১ হাজার ২০০ ইয়েন (১ হাজার ১৪ টাকা) এবং রেস্তোরাঁ বা ক্যাফে স্টাফদের ১ হাজার ইয়েন (৮৪৫ টাকা)। আইটি সাপোর্ট কর্মীদের পারিশ্রমিক ২ হাজার ৪০০ ইয়েন (২ হাজার ২৯ টাকা) এবং ফুড ডেলিভারিতে পাওয়া যায় ১ হাজার ৫০০ ইয়েন (১ হাজার ২৬৮ টাকা)। গবেষণা সহকারীদের মজুরী ২ হাজার ২০০ ইয়েন (১ হাজার ৮৬০ টাকা) এবং লাইব্রেরি সহকারীদের ১ হাজার ৮০০ ইয়েন (১ হাজার ৫২২ টাকা)।
এই চাকরিগুলো থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ইয়েন (১ লাখ ৫ হাজার ৬৬০ টাকা) আয় হয়। এগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ আয়ের চাকরি হলো ইংরেজি টিউটর বা ভাষা প্রশিক্ষক, যেখানে ঘণ্টা প্রতি ৩ হাজার ৫০০ ইয়েন (২ হাজার ৯৫৮ টাকা) পর্যন্ত উপার্জন করা সম্ভব।
আরো পড়ুন: ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
পরিমিত জীবনযাত্রার খরচ
জাপানের ব্যয়বহুল শহরগুলোতে থাকার সেরা উপায় হলো পরিকল্পিত ও নিয়ন্ত্রিত জীবনধারণে অভ্যস্ত হওয়া। এর মধ্যে রয়েছে ছাত্রাবাস বা শিক্ষার্থী বা স্থানীয় পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করা থাকা। এতে করে বড় শহরগুলোতে চলাফেরার ক্ষেত্রে মাসিক বাজেট উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।
নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি ও খাবার কেনার জন্য ডিসকাউন্ট স্টোরগুলোতে কেনাকাটা করা উচিত। যেমন ডন কুইজোট (ডনকি) ও ডাইসোর মতো স্টোরগুলোর পণ্য যথেষ্ট সাশ্রয়ী। অনেক রেস্তোরাঁ ও দোকান শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ছাড়ের ব্যবস্থা রাখে।
যাতায়াতের ক্ষেত্রে গণপরিবহন ব্যবহার করা উত্তম। পাবলিক বাস বা ট্রেনে চলাচলের ক্ষেত্রে মাসিক পাসগুলো বাজেট বাঁচানোর ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক। এছাড়াও বিভিন্ন উপলক্ষগুলোতে জেআর পাসের মতো ডিসকাউন্ট ভ্রমণ পাস ব্যবহার করা যেতে পারে। দৈনন্দিন অল্প দূরত্বের জায়গাগুলোতে যাতায়াতের জন্য সাইকেল ব্যবহার করাটা দীর্ঘ মেয়াদে লাভজনক হতে পারে।
শেষাংশ
জাপানে উচ্চশিক্ষার জন্য জাপানি ভাষার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। পড়াশোনায় স্কলারশিপপ্রাপ্তি এবং পার্ট-টাইম চাকরির জন্য এর কোনো বিকল্প নেই। শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ভর্তির অফার পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে পারে ইজেইউ পরীক্ষার উচ্চ স্কোর। এই অর্জন সিওই পাওয়াটাকেও সহজ করে তুলতে পারে, যা কম সময়ে ভিসাপ্রাপ্তির জন্য অতীব জরুরি। সর্বসাকুল্যে, এই পদক্ষেপগুলো অধ্যয়নের পাশাপাশি এশিয়ার উন্নত জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা পেতে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে।
আরো পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
২ মাস আগে
ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
অনন্য সংস্কৃতি এবং রাফটিং ও হাইকিংয়ের মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে খুব বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেই এমন ভ্রমণের সুযোগ মিলবে যথেষ্ট সাশ্রয়ী খরচে। স্বতন্ত্র স্থাপত্য শিল্পকর্মের সাক্ষী হতে পৃথিবীর নানা প্রান্তের বিশ্বপরিব্রাজকরা ভীড় করেন এই দেশগুলোতে। বিশেষ করে বাংলাদেশি পর্যটকদের কাছে বাজেট ভ্রমণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পছন্দের দেশ ভুটান। সার্কভুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য এই বৌদ্ধ রাজ্য ভ্রমণ বেশ সুবিধাজনক। চোখ ধাঁধানো প্রাকৃতিক নৈসর্গের মাঝে তাদের ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর দর্শন এক অভূতপূর্ব অনুভূতির সঞ্চার করে। চলুন, দেশটির সেরা পর্যটন স্থানগুলো ঘুরে দেখার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি জেনে নেওয়া যাক।
ভুটানের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো
থিম্পু
রাজধানী শহর থিম্পুতে হাঁটা দূরত্বেই দেখা যাবে থিম্পু নদী, মেমোরিয়াল চর্টেন, সিটি ভিউ পয়েন্ট, ক্লক টাওয়ার, থিম্পু জং, পার্লামেন্ট হাউস, লাইব্রেরি ও থিম্পু ডিজং। শহর থেকে একটু দূরেই রয়েছে বুদ্ধ দর্দেন্মা স্ট্যাচু, থিম্পু ন্যাশনাল মেমোরিয়াল চর্টেন ও চিড়িয়াখানা, যেখানে সংরক্ষিত আছে ভুটানের জাতীয় পশু তাকিন।
পুনাখা
এখানে কম সময়ে অনেকগুলো পর্যটন এলাকা ঘোরার উপায় হচ্ছে সর্বপ্রথম দোচুলা পাস যাওয়া। অবশ্য পুরো দোচুলা পাস ঘুরতে প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে। তবে ফেরার পথে একে একে পড়বে পুনাখা জং, আর্ট স্কুল, ন্যাশনাল লাইব্রেরি ও ফোক হেরিটেজ যাদুঘর।
ভুটানের যে স্থানটি রাফটিংয়ের জন্য জগদ্বিখ্যাত, সেটি হচ্ছে এই পুনাখা। রাফটিংয়ের জন্য এই শহরে একটা দিন থাকা উচিত।
আরো পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
লাখাং মন্দির, তালো মনস্ট্রি ও পেলিরি মন্দির ঘুরে চলে যাওয়া যেতে পারে ফু ছু নদীতে। এখানে রাফটিংয়ের সময় চোখে পড়বে সাস্পেন্শন ব্রিজ। এছাড়া পুনাখার নান্দনিক ঐশ্বর্যের পরশ পেতে ঘুরে আসা যেতে পারে টর্সা ন্যাচারাল রিজার্ভার ও ন্যাশনাল পার্ক।
পারো
ভুটানের সর্বোচ্চ রাস্তা চেলে লা পাস অবস্থিত এই শহরে। মেঘমুক্ত দিনে এই রাস্তা থেকে চোখে পড়ে দূরের জলমহরি পর্বত। পারোর জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে টাইগারস নেস্ট, রিনপুং জং, ন্যাশনাল মিউজিয়াম, পারো মনস্ট্রি, পারো চু ও কিচু মনস্ট্রি। শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের খাঁজে রয়েছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান তাং সাং। হিমালয়ের এই দর্শনীয় জায়গাটি দেখার জন্য পারোতে ন্যূনতম একটি দিন অবশ্যই থাকতে হবে।
ভুটান ভ্রমণের সেরা সময়
সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এই তিন মাস ভুটান ভ্রমণের সর্বোত্তম সময়। বিশেষ করে অক্টোবর থেকে নভেম্বরের সময়টা পারোতে ভুটানিদের নানান ধরনের উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পরিষ্কার আকাশসহ এ সময়ের অনুকূল আবহাওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি রাফটিং ও হাকিংয়ের জন্যও উপযোগী। এছাড়া মার্চ থেকে মে মাসে পুনাখাতে পর্যটকদের বেশি ভীড় থাকে।
আরো পড়ুন: ভিয়েতনাম ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
২ মাস আগে
চীনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
সাশ্রয়ী অথচ উন্নত মানের শিক্ষায় শুধু ইউরোপই নয়; এগিয়ে রয়েছে এশিয়ার দেশগুলোও। পৃথিবীর বৃহত্তম এই মহাদেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরও স্থান রয়েছে বিশ্বের প্রথম সারির বিদ্যাপীঠগুলোর তালিকায়। এগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা এগিয়ে চীনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। যুগ যুগ ধরে স্বতন্ত্র শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ নিয়ে দেশটি স্বাগত জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের। চলুন, চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
কেন চীন উচ্চশিক্ষার অন্যতম সেরা গন্তব্য
সভ্যতা, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ চীন। আর্থ-সামাজিক দিক থেকেও দেশটিতে জীবনধারণের মান এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে অনেকটা উন্নত। দেশটির অপরাধ সূচক ২৪ দশমিক ৪ এবং শান্তি সূচক ২ দশমিক ১০১।
গোটা এশিয়ায় স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ পিকিং ইউনিভার্সিটি ওয়ার্ল্ড কিউএস র্যাংকিং-এ ১৭ নাম্বারে রয়েছে। সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির অবস্থান ২৫ এবং ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটি রয়েছে ৪৪ নাম্বারে। ৫০তম স্থানে আছে ফুডান ইউনিভার্সিটি আর তার পরেরটি সাংহাই জিয়াও টং ইউনিভার্সিটি।
আরো পড়ুন: টোফেল পরীক্ষার নিবন্ধন করবেন যেভাবে
চীনে উচ্চশিক্ষায় আবেদনের পূর্বশর্ত
স্নাতকে ভর্তির জন্য ডিপ্লোমা, উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের সনদধারী হতে হবে। স্নাতকোত্তরের জন্য লাগবে ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি। অপরদিকে স্নাতকোত্তর শেষ করে আবেদন করা যাবে পিএইচডির জন্য।
এমবিএর জন্য স্নাতকের পাশাপাশি দরকার হবে দুই বছর বা তার বেশি কাজের অভিজ্ঞতা।
অতিরিক্ত সংযুক্তি হিসেবে জিম্যাট বা জিআরই স্কোরের প্রয়োজন হতে পারে। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রবেশিকা পরীক্ষা বা অনলাইন সাক্ষাৎকার নিতে পারে।
ইংরেজি ভাষা যোগ্যতার জন্য আইইএলটিএস একাডেমিক বা টোফেল আইবিটি আবশ্যক।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
চীনের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাহিদাসম্পন্ন কোর্সের তালিকা
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে চীনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বাধিক বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে, সেগুলো হলো-
· পিকিং ইউনিভার্সিটি
· সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়
· ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটি
· ফুডান ইউনিভার্সিটি
· সাংহাই জিয়াও টং ইউনিভার্সিটি
· সিংহুয়া ইউনিভার্সিটি
· ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়না
· নানজিং ইউনিভার্সিটি
· সিচুয়ান ইউনিভার্সিটি
· হুয়াজং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি
আরো পড়ুন: কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপায়
৩ মাস আগে
শেখ হাসিনা ভারতে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে অস্পষ্টতা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যদের ভিসা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, মার্কিন আইন অনুযায়ী ভিসার তথ্যগুলো গোপন রাখা হয়।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) মার্কিন ভিসানীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র।
তিনি বলেন, ‘মার্কিন আইন অনুসারে ভিসার তথ্য গোপনীয়। আমরা কারও ভিসার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি না।’
যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনা, তার বোন, সাবেক সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাদের মার্কিন ভিসা বাতিল করেছে- এমন তথ্য জানার জন্য অনেক সাংবাদিক মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
গত ৫ আগস্ট কারফিউ উপেক্ষা করে ঢাকায় জড়ো হয়ে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ ও দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন বিক্ষোভকারীরা। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: ‘রাজনৈতিক শূন্যতা’ পূরণে অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান ড. দেবপ্রিয়র
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মঙ্গলবার রাজ্যসভায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে 'স্বতঃপ্রণোদিত বিবৃতি'য় বলেন, 'আমাদের বুঝতে পেরেছি যে, নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃশ্যত পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খুব অল্প সময়ের নোটিশে তিনি এই মুহূর্তে ভারতে আসার অনুমতি চেয়েছেন। আমরা একই সঙ্গে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ফ্লাইট ক্লিয়ারেন্সের জন্য একটি অনুরোধ পেয়েছি। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি দিল্লিতে পৌঁছেছেন।’
এদিকে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনার মধ্যে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার সকালে এনডিটিভিকে জানিয়েছে, ব্রিটিশ অভিবাসন আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি আশ্রয় বা অস্থায়ী আশ্রয়ের জন্য সে দেশে যেতে পারেন না।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার আশ্রয় নিয়ে জল্পনা-কল্পনা, নিয়ম স্পষ্ট করল যুক্তরাজ্য
৩ মাস আগে
রোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে উন্নত ক্যারিয়ার ও জীবনধারণের সমূহ সম্ভাবনা। এ ক্ষেত্রে গন্তব্যটি এমন হতে হয় যেখানে সন্নিবেশ ঘটবে নিরাপদ পরিবেশ, মেধাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা এবং কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ততা। সেই সঙ্গে সামগ্রিক খরচটাও হতে হবে সাধ্যের মধ্যে। ঠিক এমনি সুযোগের প্রসঙ্গ যখন আসে, তখন অধিকাংশ ইউরোপীয়ান দেশগুলোর মতো নিমেষেই চলে আসে রোমানিয়ার কথা। বিশ্বমানের সব বিদ্যাপীঠ নিয়ে শেনজেনভুক্ত দেশটি প্রতি বছর সাদরে আমন্ত্রণ জানায় হাজার হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের। চলুন, রোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
রোমানিয়ায় কেন পড়তে যাবেন
বিগত দশক জুড়ে ব্যবসায়িক, শিক্ষা এবং আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের কারণে উচ্চশিক্ষার জন্য সেরা গন্তব্য হতে পারে রোমানিয়া। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের এই সদস্য দেশটি বর্তমানে ৩২ দশমিক ৩ ক্রাইম ইনডেক্স নিয়ে শীর্ষ নিরাপদ দেশগুলোর তালিকায় ৩৫ নম্বরে অবস্থান করছে। এ ছাড়া ১ দশমিক ৭৫৫ গ্লোবাল পিস ইনডেক্স নিয়ে দেশটি বিশ্বের শীর্ষ শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে ৩৬ নম্বরে রয়েছে।
রোমানিয়ায় পড়াশোনার ও জীবনযাত্রার খরচ পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে কম। অথচ মানের দিক থেকে শিক্ষা ব্যবস্থা একদমই আপোসহীন। শুধু তাই নয়, ইউরোপের অন্যান্য সেরা বিদ্যাপীঠগুলোর সঙ্গে এক সারিতে রয়েছে দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।
ওয়ার্ল্ড কিউএস র্যাংকিংয়ে শীর্ষ রোমানিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় হলো বাবেস-বলিয়াই ইউনিভার্সিটি, যেটি রয়েছে ৮০১ নম্বরে। এ ছাড়া বুখারেস্ট ইউনিভার্সিটির র্যাংকিং ৮৫১।
এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের একটি সুবিধা হলো এখানে অর্জন করা ক্রেডিটগুলো সহজেই অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা যায়। এই পরিবর্তনে অধ্যয়নের গুণমানের কোনো ঘাটতি হয় না। এমনকি অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে ছাত্রছাত্রীদের কোনো শর্ত পূরণ করতে হয় না।
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
এই স্থানান্তরকে নিরবচ্ছিন্ন করার জন্য সারা বিশ্ব জুড়ে স্বীকৃত কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-
· ইউরোপীয় ক্রেডিট ট্রান্সফার অ্যান্ড অ্যাক্যুমুলেশন সিস্টেম
· ডিপ্লোমা সাপ্লিমেন্ট
· ইউরোপিয়ান কোয়ালিটি চার্টার ফর মোবিলিটি
· ইউরোপিয়ান কোয়ালিফিকেশন্স ফ্রেমওয়ার্ক ফর লাইফ লং লার্নিং
· ইউরোপিয়ান নেটওয়ার্ক অব ইনফরমেশন সেন্টার্স অন একাডেমিক রিকগনিশন অ্যান্ড মোবিলিটি
· ন্যাশনাল একাডেমিক রিকগনিশন ইনফরমেশন সেন্টার্স
আরও পড়ুন: চেক প্রজাতন্ত্রে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
রোমানিয়াতে উচ্চশিক্ষায় আবেদনের পূর্বশর্ত
আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের রোমানিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রবেশ করতে হলে ন্যূনতম ১২ বছরের শিক্ষাগত জীবন অতিবাহিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আন্ডারগ্রাজুয়েশনের জন্য হাইস্কুল ডিপ্লোমা বা তার সমতুল্য একাডেমিক ডিগ্রির প্রয়োজন হয়।
মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীকে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে গবেষণার অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি। পিএইচডির জন্য প্রধান শর্ত হলো প্রাসঙ্গিক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হওয়া।
পড়াশোনা ও চাকরিসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার অগ্রাধিকার থাকায় রোমানিয়ান ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক নয়। ইংরেজি ভাষা দক্ষতার জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫ এর কিংবা টিওইএফএল-এ ৮০ থেকে ৯০ থাকতে হবে।
রোমানিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাহিদা সম্পন্ন কোর্সের তালিকা
যে স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রোমানিয়াসহ গোটা ইউরোপে বহুল সমাদৃত, সেগুলো হলো-
· বাবেস-বলিয়াই ইউনিভার্সিটি
· বুখারেস্ট ইউনিভার্সিটি
· আলেকজান্দ্রু ইওয়ান কুজা ইউনিভার্সিটি অব ইয়াসি
· টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ক্লুজ-নাপোকা
· গিওর্গে আসাকি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ইয়াসি
· ট্রান্সিলভানিয়া ইউনিভার্সিটি অব ব্রাসভ
· ইউনিভার্সিটি পলিটেকনিকা অব বুখারেস্ট
· ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি অব টিমিসোয়ারা
· বুখারেস্ট ইউনিভার্সিটি অব ইকোনমিক স্টাডিজ
· গ্রিগোরে টি. পোপা ইউনিভার্সিটি অব মেডিসিন অ্যান্ড ফার্মেসি, ইয়াসি
আরো পড়ুন: মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
রোমানিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রথম সারির কোর্সগুলো-
· জেনারেল মেডিসিন
· ডেন্টিস্ট্রি
· ফার্মেসি
· মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
· সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
· ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
· সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং
· আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
· সাইবার সিকিউরিটি
· ফাইন্যান্স
· মার্কেটিং
· হিউম্যান রিসোর্স
আরও পড়ুন: অস্ট্রিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
রোমানিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
ফল এবং স্প্রিং; এই দুই সেমিস্টারে সাধারণত রোমানিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি নিয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফলের সময়সীমা থাকে পরের বছরের জুলাই বা আগস্ট পর্যন্ত। আর স্প্রিং শেষ হয় ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে।
ভর্তির জন্য প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করতে হয়। এ সময় সরবরাহ করা তথ্যের সাপেক্ষে আপলোডের জন্য প্রাসঙ্গিক কাগজপত্রের স্ক্যান কপি প্রস্তুত রাখতে হবে।
অনলাইন আবেদনের যাবতীয় কাজ শেষে পূরণ করা ফর্মটি ডাউনলোড করে নির্দিষ্ট স্থানে স্বহস্তে সাইন করতে হবে। এরপর প্রয়োজনীয় প্রাসঙ্গিক নথিপত্র সহকারে ডাকযোগে পাঠিয়ে দিতে হবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর।
আরও পড়ুন: ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· নির্ভুলভাবে পূরণ করা ভর্তির আবেদনপত্র
· উচ্চ মাধ্যমিক সনদ, স্নাতক ডিপ্লোমা বা সমমানের সনদের প্রত্যয়িত অনুলিপি (স্নাতকের জন্য)
· স্নাতক শংসাপত্রের প্রত্যয়িত অনুলিপি (স্নাতকোত্তরের জন্য)
· জন্ম শংসাপত্রের প্রত্যয়িত অনুলিপি
· মেডিকেল সার্টিফিকেট
· পাসপোর্টের প্রত্যয়িত কপি
· ভাষা দক্ষতা শংসাপত্র (আইইএলটিএস বা টিওইএফএল স্কোর)
· দুটি সাম্প্রতিক ছবি (পাসপোর্ট সাইজের)
· গবেষণার প্রস্তাবনা (পিএইচডির ক্ষেত্রে)
· প্রাসঙ্গিক বিষয়ে প্রকাশনা (পিএইচডির ক্ষেত্রে)
· সিভি বা পোর্টফোলিও (স্নাতকোত্তর বা পিএইচডির ক্ষেত্রে)
· লেটার অব রিকমেন্ডেশন
· আবেদনের ফি পরিশোধের রশিদ: ৫০ থেকে ১০০ ইউরো বা ৬ হাজার ৩৫৬ থেকে ১২ হাজার ৭১২ টাকা (১ ইউরো = ১২৭ দশমিক ১১ বাংলাদেশি টাকা)
মাস্টার্সের বিষয়ের ওপর নির্ভর করে জিআরই, জিম্যাট বা এলস্যাটের মতো অতিরিক্ত পরীক্ষার স্কোর প্রদর্শন করতে হতে পারে। তাছাড়া এর বাইরেও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথি চাওয়া হতে পারে। প্রতিটি নথি রোমানিয়ান, ইংরেজি ও ফরাসি যেকোনো একটি ভাষায় অনূদিত হতে হবে।
আরও পড়ুন: হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের উপায়, পড়াশোনার খরচ, স্কলারশিপ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
৩ মাস আগে
চেক প্রজাতন্ত্রে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
উন্নত মানের শিক্ষার ভিত্তিতে যুগ যুগ ধরে মেধার সুষ্ঠু বিকাশের মঞ্চ হয়ে আসছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠগুলো। বছরের পর বছর ধরে দেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতির ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন এই মহান মঞ্চগুলোরই রূপকল্পের ফসল। শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সগর্বে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলো। প্রতিটির মতো ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও প্রতি বছর পরিণত হয় জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বজোড়া শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায়। তেমনই একটি দেশ চেক প্রজাতন্ত্র, যেটি ৯৯ শতাংশ শিক্ষার হার এবং মেধাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে পরিণত হয়েছে শিক্ষার স্বর্গভূমিতে। চলুন, চেক প্রজাতন্ত্রে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
উচ্চশিক্ষায় চেক প্রজাতন্ত্রের জনপ্রিয়তার কারণ
বিগত দশকে বিশ্বজুড়ে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান মধ্য ইউরোপের দেশটিকে উচ্চশিক্ষার জন্য একটি আকর্ষণীয় বিকল্পে পরিণত করেছে। সব থেকে মোক্ষম কারণটি হচ্ছে দেশটির নিরাপদ পরিবেশ। বিশ্বব্যাপী ১৬৩টি দেশের মধ্যে ১ দশমিক ৪৫৯ গ্লোবাল পিস ইনডেক্স স্কোর নিয়ে ১২তম অবস্থানে রয়েছে চেক প্রজাতন্ত্র। অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ নিরাপদ দেশগুলোর মধ্যে ৬ষ্ঠ তম এই দেশটির ক্রাইম ইনডেক্স স্কোর ২৬ দশমিক ৮।
শেনজেনভুক্ত রাষ্ট্র হওয়ায় অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে ভ্রমণের আকর্ষণে অধিকাংশ বিদেশি শিক্ষার্থীর গন্তব্য থাকে এই দেশটি।
এখানে পড়াশোনার জন্য স্থানীয় ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক নয়। এমনকি চাকরি ক্ষেত্রে অধিকাংশ চাহিদাসম্পন্ন কোর্সগুলো ইংরেজিতেই পড়ানো হয়ে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষা দক্ষতা হিসেবে আইইএলটিএস স্কোরের পূর্বশর্তটিও শিথিল করা হয়। সেক্ষেত্রে পূর্ববর্তী একাডেমিক ডিগ্রি ইংরেজি মাধ্যমে করা হয়েছে কিনা তার জন্য এমওআই ( মিডিয়াম অব ইন্স্ট্রাক্শন ) চাওয়া হয়।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সহজে ভর্তি হওয়ার জন্য ভাষার জন্য সিইএফআর বা কমন ইউরোপীয় ফ্রেমওয়ার্ক অব রেফারেন্স পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের এই দেশ নির্বাচনের আরও একটি কারণ হচ্ছে চেক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সহজ ভর্তি প্রক্রিয়া। এখানে প্রবেশিকা পরীক্ষা বা ইন্টারভিউয়ের যথেষ্ট বিকল্প রয়েছে, যেখানে শুধু সঠিক কাগজপত্র এবং ফি প্রদানের মাধ্যমেই ভর্তির কাজ সম্পন্ন করা যায়।
চেক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একদিকে যেমন প্রাচীন, অন্যদিকে তেমনি বিশ্বনন্দিত এবং নানা শিল্পের সর্বোচ্চ পর্যায়গুলোতে সমাদৃত।
কিউএস র্যাংকিং-এ ২৪৮ নম্বরে রয়েছে সুপরিচিত চেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া মাসারিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৪০০ নম্বরে, চেক টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির অবস্থান ৪৫৪, এবং কেমিস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজি, প্রাগ ৫৫৬-তে। ব্রনো ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি রয়েছে ৬১১, প্যালাস্কি ইউনিভার্সিটি অলোমৌচ ৬৩১-এ এবং চেক ইউনিভার্সিটি অব লাইফ সায়েন্সেস প্রাগ ৭০১ নম্বরে।
আরো পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
উচ্চশিক্ষার জন্য চেক প্রজাতন্ত্র গমনের পূর্বশর্ত
এখানকার কোর্সগুলোতে পড়ার জন্য প্রাথমিক শর্ত হলো পূর্ববর্তী প্রাসঙ্গিক একাডেমিক ডিগ্রিগুলোতে উত্তীর্ণ হওয়া। যেমন আন্ডারগ্রাজুয়েশনের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক, ডিপ্লোমা বা সমমানের একাডেমিক পরীক্ষার সনদ থাকা প্রয়োজন। মাস্টার্সের জন্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরাল স্টাডি প্রোগ্রামের জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দরকার হয়।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চেক ভাষায় পড়ানো কোর্সগুলোতে কোনো খরচ নেই। বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অনেক সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চেক ভাষায় পড়ার জন্য এক বছরের একটি ফাউন্ডেশন কোর্স করায়। অতঃপর প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ভাষা দক্ষতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে ভর্তি নেওয়া হয়। এখানে ভাষা টেস্ট পরীক্ষায় ন্যূনতম স্কোর বি-২, কিছু প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে সি-১ থাকতে হয়।
আর ইংরেজিতে পড়ানো কোর্সের ক্ষেত্রে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভাষা দক্ষতা সনদ চায়, তারা সচরাচর আইইএলটিস বা টিওইএফএল স্কোরকে গুরুত্ব দেয়।
আরো পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য চেক প্রজাতন্ত্র সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সগুলো
বিগত বছরগুলোতে দেশটির যে বিশ্ব মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বাধিক বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ ছিল, সেগুলো হলো-
· চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়
· মাসারিক বিশ্ববিদ্যালয়
· চেক টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি
· ইউনিভার্সিটি অব কেমিস্ট্রি এ্যান্ড টেকনোলজি, প্রাগ
· ব্রনো ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি
· প্যালাস্কি ইউনিভার্সিটি অলোমৌচ
· চেক ইউনিভার্সিটি অব লাইফ সায়েন্সেস প্রাগ
· মেন্ডেল বিশ্ববিদ্যালয় ইন ব্রনো
· অস্ট্রাভা টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি
· সাউথ বোহেমিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইন চেক বুডিজোভিচ
আরো পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
বিশ্ববিদ্যালয় এবং একাডেমি ডিগ্রির স্তর নির্বিশেষে সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন বিষয়গুলো হলো-
· মেডিসিন ও হেল্থকেয়ার
· ব্যবসা ও অর্থনীতি
· মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান
· তথ্য প্রযুক্তি
· প্রকৌশলী
চেক প্রজাতন্ত্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
ভর্তির জন্য আবেদনের মৌসুম শুরু হয় সাধারণত ফেব্রুয়ারি এবং এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে। অনলাইনে ভর্তির আবেদনের জন্য প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে নিজস্ব পোর্টাল। সেখানে কাঙ্ক্ষিত কোর্স খুঁজে বের করার জন্য রয়েছে যাবতীয় তথ্য।
অনলাইনে আবেদন সম্পন্নের সময় কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হতে পারে। ইলেক্ট্রনিক আবেদন সফলভাবে সম্পন্ন করার পর তা প্রিন্ট করতে হবে। অতঃপর তা সই করে সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকযোগে পাঠাতে হবে।
আরো পড়ুন: জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
ভর্তির আবেদনের সঙ্গে যে কাগজপত্রগুলো সংযুক্তি হিসেবে দিতে হয়, তা হলঃ
· ডিপ্লোমা বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণের সত্যায়িত অনুলিপি
· সনদপত্র এবং একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ইংরেজির পরিবর্তে বাংলায় হলে সেগুলো চেক বা ইংরেজিতে অনুবাদ করে নিতে হবে
· প্রশাসনিক ফি প্রদানের প্রমাণ: ৩ হাজার চেক কোরুনা বা ১৪ হাজার ৯৯১ টাকা ( ১ চেক কোরুনা = ৫ বাংলাদেশি টাকা )
· ভর্তি প্রক্রিয়াকরণ ফি প্রদানের প্রমাণ:
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভেদে এর পরিমাণ ভিন্ন হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২০ ইউরো থেকে শুরু হয়ে ৫০ ইউরোর অধিক হতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় এটি ২ হাজার ৫৪১ টাকা ( ১ ইউরো = ১২৭ দশমিক ০৩ বাংলাদেশি টাকা ) থেকে ৬ হাজার ৩৫২ টাকার সমান।
· মোটিভেশন লেটার
· ২ থেকে ৩টি রেফারেন্স লেটার
· সিভি বা পোর্টফোলিও
· বৃত্তি পেলে বা অন্য কেউ পড়াশোনার খরচ বহন করলে তার প্রমাণ
· ইংরেজি দক্ষতা পরীক্ষা ( সাধারণত পিটিই একাডেমিক, টিওইএফএল ও আইইএলটিএস স্কোর দেখা হয়)|
আরো পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
আবেদন পরবর্তী প্রক্রিয়া
পরবর্তী পদক্ষেপগুলো সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালের মাধ্যমে এবং চিঠি বা ইমেলের মাধ্যমে জানানো হয়। এখানে প্রার্থীর আবেদন ও কাগজপত্রগুলো যাচাইকরণে ৩০ সর্বোচ্চ ৬০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
আবেদনের প্রাথমিক ধাপে উতড়ে গেলে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় জুম বা স্কাইপের মাধ্যমে মৌখিক সাক্ষাৎকার নিতে পারে। যাবতীয় যাচাই-বাছাই শেষে সাধারণত জুনের শেষের দিকে চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়া যায়।
ফলাফল ইতিবাচক হলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রথম সেমিস্টারের জন্য টিউশন ফি দিতে বলা হয়। আর এই ফি প্রাপ্তির পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীকে তার কাঙ্ক্ষিত অফার লেটারটি পাঠানো হয়। এটি পরবর্তীতে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে।
চেক প্রজাতন্ত্রের স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
অফার লেটার পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভিসার কাজ শুরু করে দিতে হবে। চেক প্রজাতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী ডি-টাইপ ক্যাটাগরিই হচ্ছে স্টুডেন্ট ভিসা, যেখানে ৯০ দিনেরও বেশি সময় থাকার অনুমতি দেয়া হয়। ভিসার মেয়াদ থাকে সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত; এরপর ভিসা আবার রিনিউ করতে হয়।
আবেদনের জন্য https://frs.gov.cz/en/forms-and-documents/-এই লিঙ্কে যেয়ে অনলাইন আবেদন করা যাবে। এ ছাড়া ফর্ম ডাউনলোড করে কম্পিউটারের মাধ্যমে অথবা প্রিন্ট করে হাতে লিখেও পূরণ করা যেতে পারে। ফর্মের সব তথ্য নির্ভুলভাবে প্রদানের পর সব শেষে সই করতে হবে। ইলেক্ট্রনিকভাবে এই আবেদনের সময় ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো সঙ্গে থাকা দরকার।
আরো পড়ুন: যে ১০টি দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অল্প খরচে পড়তে পারবেন
দরকারি কাগজপত্র
চেক প্রজাতন্ত্রের স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করার জন্য যে নথিগুলো প্রস্তুত রাখতে হয়, সেগুলো হলো-
· চেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে ভর্তির অফার লেটার
· দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা সহ একটি বৈধ পাসপোর্ট, যার মেয়াদ থাকতে হবে চেক প্রজাতন্ত্রে উপস্থিত হওয়ার দিন থেকে ন্যূনতম ৩ মাস পর্যন্ত।
· সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
· দেশটিতে থাকার জন্য আর্থিক তহবিলের প্রমাণপত্র ( কমপক্ষে ৭৮ হাজার ২৫০ কোরুনা বা প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৭ টাকার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট )
· মেডিকেল রিপোর্ট
· আবাসন নিশ্চিতকরণের প্রমাণ
· পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ( অফিসিয়াল রাবার স্ট্যাম্পসহ চেক ভাষায় অনুবাদ করা হতে হবে )
· চেক প্রজাতন্ত্রে পৌছার দিন থেকে কমপক্ষে ৯০ দিনের জন্য ভ্রমণ চিকিৎসা বীমার প্রমাণপত্র
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও পাসপোর্ট ছাড়া আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত সমস্ত নথি চেক ভাষায় হতে হবে। পাসপোর্ট ও ছবি ছাড়া ব্যতিত কোনো নথি ১৮০ দিনের বেশি পুরনো হতে পারবে না।
আরো পড়ুন: মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
৩ মাস আগে