নারী
নারীদের সামনে রেখেই নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠুক: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের নারীরা আমাদের দুনিয়ার সামনে অন্য স্তরে নিয়ে গেছে। তারা শুধু বাংলাদেশের নয়, তারা সারা পৃথিবীর নেতৃত্ব দেওয়ার মেয়ে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উদযাপন ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার এবং নারী জাগরণে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীকে বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়েছে।
এ বছর নারীশিক্ষায় (গবেষণা) রুভানা রাকিব, নারী অধিকারে (শ্রম অধিকার) কল্পনা আক্তার, নারী জাগরণে (ক্রীড়া) ঋতুপর্ণা চাকমা এবং মানবাধিকার ক্যাটাগরিতে নাবিলা ইদ্রিস বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যে আদর্শে বেগম রোকেয়া আমাদের নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন, অতি চমৎকারভাবে তুলে ধরেছিলেন তার বক্তব্যে, তার লেখায়, আজকে যে চারজন পুরষ্কার পেলেন তারা রোকেয়ার সেই পথে আমাদের জাতিকে এগিয়ে দিলেন। এটি আরও একটি পুরস্কার নয়, এটা যুগান্তকারী পুরস্কার। তারা আমাদেরকে দুনিয়ার সামনে অন্য স্তরে নিয়ে গেছে। তারা শুধু বাংলাদেশের নয়, তারা সারা পৃথিবীর নেতৃত্ব দেয়ার মেয়ে।’
এই দিনে শুধু বেগম রোকেয়াকে স্মরণ নয়, বরং ব্যর্থতা খুঁজে বের করা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ১০০ বছর পার হলেও আরেকজন রোকেয়া সৃষ্টি করতে পারিনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। তিনি যেসব দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, যেসব স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন, এ স্বপ্নকে আমরা আমলে আনতে পারিনি। কথা বলেছি, কিন্তু অগ্রসর হতে পারি নাই। কেন পারলাম না, এটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’
৯ দিন আগে
৪ নারীর হাতে উঠল বেগম রোকেয়া পদক
নারীশিক্ষা, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার ও ক্রীড়াঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর চারজন বিশিষ্ট নারীকে মর্যাদাপূর্ণ ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২৫’ প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিজয়ীদের হাতে এই পদক ও সম্মাননা তুলে দেন।
এবারের পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে বিশেষ চমক হিসেবে ছিলেন সাফজয়ী নারী ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা। ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের অগ্রযাত্রা ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখায় তাকে এই সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
এ বছর ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য যে চারজনকে নির্বাচিত করা হয়েছে, তারা হলেন— ক্রীড়াঙ্গনে নারীর বলিষ্ঠ অবস্থান তৈরি ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টিতে ঋতুপর্ণা চাকমা, নারীশিক্ষায় গবেষণাধর্মী ও মৌলিক অবদানের জন্য রুভানা রাকিব, দীর্ঘ সময় ধরে পোশাকশ্রমিক ও নারীদের শ্রম অধিকার আদায়ে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ (নারী অধিকার শ্রেণি) কল্পনা আক্তার এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সাহসী ভূমিকার জন্য নাবিলা ইদ্রিস।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নারী সমাজের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই পদক নারীদের আগামীর পথচলায় নতুন দিশা ও শক্তি জোগাবে।
৯ ডিসেম্বর, বেগম রোকেয়া দিবস। নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অধিকার ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার অবদান ও নারী জাগরণের অগ্রযাত্রায় অন্তহীন প্রেরণার উৎস হিসেবে প্রতিবছর এ দিবস পালন করা হয়।
বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের আদর্শ ছড়িয়ে দিতে এবং নারীর ক্ষমতায়ন তুলে ধরতে দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
৯ দিন আগে
বেগম রোকেয়া দিবস আজ
আজ ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী।
তার পুরো নাম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। তবে, তিনি সবার কাছে বেগম রোকেয়া নামেই বেশি পরিচিত।
১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেন। এর ঠিক ৫২ বছর পর, ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। ইতিহাসে একই দিন জন্ম ও মৃত্যুর ঘটনা বিরল। যে ঘটনা বেগম রোকেয়া ক্ষেত্রে ঘটেছিল।
বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস তার বাণীতে উল্লেখ করেন, ‘নারীমুক্তি ও মানবাধিকার নিয়ে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে নারীসমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। এই অঞ্চলের নারীসমাজকে যথাযোগ্য মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াসে তার অসামান্য অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।’
তিনি বলেছেন, ‘উনবিংশ শতাব্দীতে রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়া নারীদের ভাগ্যোন্নয়নের মূল চাবিকাঠি শিক্ষা। এ উপলব্ধি থেকে বেগম রোকেয়া নারীশিক্ষা বিস্তারে বিরাট সাহসী ভূমিকা পালন করেন। বেগম রোকেয়া নারী উন্নয়নের পথে যে যাত্রা শুরু করেছিলেন, তার ধারাবাহিকতায় নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।’
দিবসটি উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— গ্রামীণ অসচ্ছল নারীদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভালনারেবল উইমেন বেনেফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচি, গ্রামীণ এলাকায় দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের এবং শহর এলাকায় স্বল্প আয়ের কর্মজীবী মায়েদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান, দেশব্যাপী তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের আত্ম-কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা।
এ ছাড়া প্রান্তিক নারীদের উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা প্রদান করাসহ কর্মজীবী নারীদের নিরাপদ আবাসনের লক্ষ্যে কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম প্রকল্পের আওতায় ২৪ ঘণ্টার হটলাইন সেবা ১০৯ চালু আছে।
এ ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় এ বছর ‘বেগম রোকেয়া পদক ২০২৫’ পাচ্ছেন ৪ বিশিষ্ট নারী। নারীশিক্ষা শ্রেণিতে (গবেষণা) রুভানা রাকিব, নারী অধিকার শ্রেণিতে (শ্রম অধিকার) কল্পনা আক্তার, মানবাধিকার শ্রেণিতে নাবিলা ইদ্রিস ও নারী জাগরণ শ্রেণিতে (ক্রীড়া) ঋতুপর্ণা চাকমা এ বছরের বেগম রোকেয়া পদকের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আজ সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চারজনের হাতে রোকেয়া পদক তুলে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
রোকেয়া খাতুন, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, মিসেস আর এস হোসেন নামেও লিখতেন এবং পরিচিত ছিলেন তিনি। ঊনবিংশ শতকে নারীরা যখন অবরোধবাসিনী, সেই সময়ে নারীর পরাধীনতার বিরুদ্ধে তিনি আওয়াজ তুলেছিলেন বেগম রোকেয়া।
তার রচনাগুলোর মধ্যে পিপাসা (১৯০২), মতিচূর (১৯০৪), সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৮), সওগাত (১৯১৮), পদ্মরাগ (১৯২৪) ও অবরোধবাসিনী (১৯৩১) উল্লেখযোগ্য।
১০ দিন আগে
নারীর পর্দা নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, সমালোচনার মুখে জবি ছাত্রদল সদস্য সচিব
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সদস্যদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৯ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে তার এক মন্তব্যকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ফেসবুক পোস্টে তিনি ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার ঢাবি শাখার সদস্যদের সৌজন্য সাক্ষাতের ছবি যুক্ত করে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টের এক মন্তব্যের উত্তরে তিনি অশালীন ইঙ্গিতপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরেকটি মন্তব্যের উত্তরে তিনি লেখেন, ‘লুঙ্গির তলেও দারুণ পর্দা হয়। আমাদের পর্দায় সমস্যা না, সার্কাসে সমস্যা। বুজিপার পারিচো গেদা।’
আরেফিনের এসব মন্তব্যকে ঘিরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্টে তার মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন তারা।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত হাসান সাকিব নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘এই হলো রাজনীতি, ছিঃ মুখে থু!’
আরও পড়ুন: জবির আইইআর ইনস্টিটিউটে র্যাগিং, ১০ দিন পেরোলেও গুরুত্বে নেয়নি পরিচালক
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা লিখেছেন, ‘তথাকথিত প্রগতিশীল নারীবাদীরা এখন কই গেছে? এসব নিয়ে তো তাদের কোনো আওয়াজ দেখছি না। নাকি দাড়িওয়ালা পুরুষ আর হিজাব পরিহিত নারীকে নিয়ে যা খুশি বলা বৈধ? এই কমেন্টের মাধ্যমে পুরো নারী জাতিকে অপমান করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জবি ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব নিয়ে এমন কটূক্তিমূলক কথা বলা জাহেলিয়াতের চরমতম বহির্প্রকাশ। পর্দা করা মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোনো মুসলিম পরিবারের মানুষ এমন মন্তব্য করতে পারে না। নৈতিকতাবিবর্জিত মানুষের মতো আচরণ একজন গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রনেতার মুখে বেমানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘বামদের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে যারা নিজেকে নব্য ইসলামবিদ্বেষী প্রমাণ করতে চান, তাদের জানা উচিত, এদেশে ইসলামের শিকড় অনেক গভীরে।’
এদিকে, শামসুল আরেফিন এক মন্তব্যে সমালোচনার জবাব দিয়ে লিখেছেন, ‘পর্দার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। আমার বক্তব্য ভিসি মহোদয়ের হিপোক্রেসির উপর— একদিকে রাজনীতি প্রমোট করেন, অন্যদিকে নিষিদ্ধ। নারী ও তাঁর ধর্মীয় স্বাধীনতায় আমার আজন্ম শ্রদ্ধা।’
১৩১ দিন আগে
দেশে বেড়েই চলেছে নারীর প্রতি সহিংসতা
সামাজিক প্রেক্ষাপট, বিচারহীনতাসহ নানা কারণে নারীরা নিপীড়িত বহুকাল ধরেই। তবে ২০২৩-২০২৪ এবং ২০২৫ এর মার্চ পর্যন্ত এই সংখ্যা বিশ্লেষণ করে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ার নতুন পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। সেইসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মতামত থেকে উঠে এসেছে নানা তথ্য।
সায়মা ছদ্মনাম (৩৬) নিয়মিত নির্যাতিত হচ্ছেন স্বামীর হাতে। তিনি বলেন, আমার স্বামী প্রতিদিন বাসায় এসে কারণে-অকারণে আমার গায়ে হাত তোলেন। আমি জানি, তার বিয়ে-বহির্ভূত সম্পর্ক আছে। তিনি মাসে দু-তিনবার বাসায় আসেন। কোনো দায়িত্ব পালন করেন না। আমার একটি ছোট চার বছরের মেয়ে আছে, তার দায়িত্বও পালন করেন না। সেগুলো নিয়ে কথা বললেই আমাকে অমানুষিকভাবে মারে।
পুলিশে অভিযোগ দেননি কেন—প্রশ্নে তিনি বলেন, এসবে মান-সম্মান থাকবে না। আমার পরিবারের কেউ জানে না; জানলে তারাও কষ্ট পাবে। তাছাড়া আমি চাকরি করি না। তাকে ছেড়ে কোথায় যাব, কী করব? এ সময় নিজের শরীরের ক্ষতগুলো দেখান এই নারী।
ডালিয়া (ছদ্মনাম) নামের ৩৮ বছর বয়সী আরেক নারী জানান, তিনি তার স্বামীর কাছে নিয়মিত নির্যাতিত হতেন। নির্যাতন মানে তো শুধু গায়ে হাত তোলা নয়, তিনি তাকে অকথ্য ভাষায় প্রয়োগও করতেন।
এই নারী বলেন, ‘আমি চাকরি করতাম না তবুও এসব অসম্মান সহ্য করতে না পেরে ৫ বছরের ছেলেকে নিয়ে তাকে ছেড়ে চলে আসি। পরে অবশ্যই একটি চাকরি পাই। এখন একা থাকা ছাড়া তেমন কোনো কষ্ট নেই। সঙ্গে ছেলে আছে, তাকে নিয়ে ভালো আছি।’
বিগত কয়েক মাসে নারীর প্রতি এমন একাধিক সহিংসতার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এ সময়ে ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের অন্য ঘটনাও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় বিআরডিবি অফিসে তালাবদ্ধ নারী
পুলিশের অপরাধ পরিসংখ্যানের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের শেষ চার মাসে ৫ হাজার ৭৯৫টি নারী ও শিশু নির্যাতনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। সেখানে ২০২৫ সালের প্রথম চার মাসে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১৩টিতে।
২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হয়েছে ১ হাজার ২৬৫টি, ফেব্রুয়ারিতে হয়েছে ১ হাজার ২৯৫, মার্চে ১ হাজার ৬৫২টি, এপ্রিলে ১ হাজার ৪৪৮টি, মে মাসে ১ হাজার ৮৬৭টি, জুন মাসে ১ হাজার ৮৩৩টি, জুলাই মাসে ১ হাজার ৭৯৪টি, আগস্ট মাসে ১ হাজার ৮৫১টি, সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৬৯৯টি, অক্টোবরে ১ হাজার ৬২১টি, নভেম্বরে ১ হাজার ৪২৬টি এবং ডিসেম্বরে ১ হাজার ১৯৩টি।
২০২৪ সালে জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৩টি, ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৩৭১, মার্চ মাসে ১ হাজার ৫০৯, এপ্রিল মাসে ১ হাজার ৬২৩, জুন মাসে ১ হাজার ৬৮৯টি, জুলাই মাসে ১ হাজার ৭০২ আগস্ট মাসে ১ হাজার ৭২, সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ৫৭৮, অক্টোবর মাসে ১ হাজার ৫৬০, নভেম্বর মাসে ১ হাজার ৪৫২ এবং ডিসেম্বর মাসে ১ হাজার ২০৫টি।
২০২৫ সালের, অর্থাৎ চলতি বছর মার্চ মাস পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ১ হাজার ৪৪০টি, ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৪৩০টি এবং মার্চে তা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৫৪টি। অর্থাৎ, মার্চ মাসে উল্লিখিত যেকোনো মাসের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) তথ্য অনুসারে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে, বাংলাদেশে কমপক্ষে ১১ হাজার ৭৫৮ জন নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছে, যার মধ্যে ৬ হাজার ৩০৫ জনকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় অ্যাসিড নিক্ষেপ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৩
আরও আশঙ্কার বিষয় হলো, যাদের ধর্ষণ করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৩ হাজার ৪৭১ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে, যা মোট ঘটনার ৫৫ শতাংশেরও বেশি।
এর মধ্যে ১ হাজার ৮৯ জন নারী ও কন্যাশিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে এবং ২০৭ জনকে যৌন সহিংসতার পর হত্যা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১১৮ জনই শিশু।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, ‘হ্যারাসমেন্টের প্রতিবেদন থেকে দেখা যাচ্ছে যে প্রতি মাসে এক থেকে দেড় হাজারের বেশি নারী নির্যাতনের ঘটনা মিডিয়াতে আসে। কিন্তু এর পরিপ্রেক্ষিতে সাজা পাচ্ছেন কয়জন? আবার ভুক্তভোগীও যে সুরক্ষা পাচ্ছেন, সেই তথ্যও নেই।’
তিনি বলেন, নারী নির্যাতনকে রোধ করতে হলে আমাদের নারীর অধিকার সর্বস্তরে নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া নারী নির্যাতনকারী, বিদ্বেষী কর্মকাণ্ডকে সামাজিকভাবে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা নানা ধরনে, নানা আকারে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এগুলো যে আগেও ছিল না তা নয়। বছরের প্রথম তিন মাসে একরকম হলে শেষের তিন মাসে হয়তো কমত। তবে এখন সেটি বেড়েই চলেছে। এটি আতঙ্কিত হওয়ার মত বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘যে উপায়ে সহিংসতাগুলো হচ্ছে, তাতে নারী ও শিশুর সুরক্ষার প্রশ্নে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ছাড়া দ্রুত বিচার না হওয়ার একটা সংস্কৃতি, নারী ও শিশুর প্রতি আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে পুরুষের যে দৃষ্টিভঙ্গি, সেখানে বিপরীত লিঙ্গ হিসেবে নারীর প্রতি একটা বিরুদ্ধ মনোভাব আছে যে নারীকে দমিয়ে রাখতে হবে।’
‘আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমাদের নারী ও শিশুর প্রতি যে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলো সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে না। আবার আইনে যে সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে, সেখানে বিচারের দীর্ঘসূত্রতাও তো আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সহিংসতা-পরবর্তী যে ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন একজন নারীকে সেই সুরক্ষা দেওয়া, সামাজিকভাবে আশ্রয় দেওয়া এবং ভুক্তভোগীর ক্ষমতায়ন—এগুলো থাকা দরকার। সেগুলো আমাদের দেশে নেই। এটি আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা।’
এই অধ্যাপকের মতে, যে নারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তিনি যদি প্রান্তিক পর্যয়ের হন, তাহলে তাকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কিন্তু সমাজে প্রতিষ্ঠিত কেউ সহিংসতার শিকার হলে তাদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এসব বিষয়ে আমাদের মানসিকতা বদলাতে হবে, সমাজকে বদলাতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
১৫১ দিন আগে
ভারতীয় মানব পাচারকারী ও নারী-শিশুসহ আটক ৪
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত এলাকা থেকে এক ভারতীয় মানব পাচারকারীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এসময় তার সঙ্গে পাচার হওয়ার আগে উদ্ধার করা হয়েছে দুই নারী ও এক শিশু।
বুধবার (১ মে ) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর বাঘাডাংগা বিওপি'র একটি টহল দল কাঞ্চনপুর গ্রামের একটি ব্রিজের উপর থেকে তাদের আটক করে।
আটক পাচারকারীর নাম শংকর অধিকারী (৩৯)। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বাগদা থানার পূর্বহুদা গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম নুকুল অধিকারী ও মাতার নাম গৌরি অধিকারী।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, শংকর অধিকারী বাংলাদেশে ৬ মাসের ভিসা নিয়ে ৩ মাস আগে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বড়খোলা গ্রামে তার আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন এবং ১৩ বছর বয়সী জয় বালা নামের এক কিশোরীকে বিয়ে করেন। পরে তিনি আবার ভারতে ফিরে যান। গত ১৭ এপ্রিল তিনি পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
স্ত্রী জয়া বালা, প্রতিবেশী যুথিকা হালদার (২৯) এবং যুথিকার ১০ বছর বয়সী ছেলে বাধন বৈদাকে নিয়ে বেড়ানোর কথা বলে বাঘাডাংগা সীমান্ত এলাকায় নিয়ে আসেন।
তবে অভিযুক্ত শংকরের স্ত্রী ও যুথিকা জানান, তারা পাচারের বিষয়টি জানতেন না। তাদের ধারণা ছিল, তারা শুধুমাত্র ঘুরতে যাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যরাও একই দাবি করেছেন।
বিজিবি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শংকর স্বীকার করেছেন যে, বাংলাদেশি এক মানব পাচারকারী আনোয়ারের মাধ্যমে ৪৭ হাজার টাকার চুক্তিতে তিনজনকে ভারতে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল তার। সীমান্ত পার হওয়ার পর ওই টাকা আনোয়ারকে দেওয়ার কথা ছিল। শংকরের কাছ থেকে ৫০ হাজার ১১০ টাকা, ৮৫০ ভারতীয় রুপি এবং ৭ ওমানি রিয়াল উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পতেঙ্গায় নারী ও শিশুসহ ৩৫ রোহিঙ্গা আটক
ধারণা করা হচ্ছে, পাচারের পর ওই নারী ও শিশুকে বিক্রি করে খরচের টাকা তুলতে চেয়েছিল শংকর।
আটক শংকর অধিকারীকে মহেশপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়। আর উদ্ধারকৃত দুই নারী ও শিশুকে পুনর্বাসনের জন্য যশোরের ‘জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার’ নামক একটি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মহেশপুর ৫৮ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার ও সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিজিবি সব সময় মানবপাচার রোধে তৎপর রয়েছে। সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।
২২৯ দিন আগে
নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার, পলাতক স্বামী-সতীন
যশোরে ঘরের ভেতর থেকে স্বরুপজান ওরফে সাথী (৩৩) নামে এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৯টার দিকে মনিরামপুর থানার পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এদিকে এই ঘটনার পরপরই পলাতক রয়েছে স্বামী ও নিহতের সতীন।
নিহত সাথী উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রশিদ মিন্টুর দ্বিতীয় স্ত্রী। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, মিন্টুর ধানের চাতালে কাজ করতেন সাথী। তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠলে মিন্টুকে বিয়ে করেন সাথী। কিন্তু বিয়ে মেনে নিতে নারাজ ছিলেন মিন্টুর প্রথম স্ত্রী সুমা পারভীন। ফলে তাদের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি চলে আসছিল। এদিকে মিন্টুর চাতালের একটি ছোট ঘরে বসবাস করতেন দ্বিতীয় স্ত্রী সাথী। রবিবার রাতের কোনো এক সময় কে বা কারা তাকে গলা কেটে হত্যা করে বিবস্ত্র অবস্থায় লাশ ফেলে রেখেছে। সকালে সতীনের মেয়ে ফাতেমা রক্তাক্ত অবস্থায় সাথীকে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেয়। এ সময়ে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে ঘটনাটি স্থানীয় মেম্বরকে জানান। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী মিন্টু ও সতিন সুমা পারভীন মিলে সাথীকে হত্যার পর পালিয়ে গেছে বলে অনেকে জানান।
আরও পড়ুন: ২ কিশোরীকে কক্সবাজারে হোটেলে আটকে নির্যাতন, স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী মিন্টু ও তার অপর স্ত্রী পলাতক রয়েছেন। তাদের আটকে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
তাদের আটক করা গেলে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানা যাবে বরেও জানান তিনি।
২৩৪ দিন আগে
সাভারে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নারীসহ নিহত ৩
সাভারে গেন্ডা ও ব্যাংকটাউন এলাকায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভোরে মহাসড়কের ব্যাংক টাউনে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— নেত্রকোণা জেলার ধিরেনের ছেলে হৃদয় চন্দ্র দাশ (২০) ও একই এলাকার অর্চণা রানী (৩০)। অপরজন হলেন বাসের হেলপার আনোয়ারুল ইসলাম (২৬)।
স্থানীয়রা জানান, নওগাঁ থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে নাবিল পরিবহনের একটি বাস ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের গেন্ডা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকের ওপরে ওঠে। এ সময় হেলপার আনোয়ারুল বাসটি থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে বাসটি জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: মার্কিন বিমান হামলায় ইয়েমেনে কারাগারে ৬৮ অভিবাসী নিহত
এছাড়া রবিবার (২৭ এপ্রিল) দিবাগত রাতে হৃদয় ও অর্চণা সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুতগতির প্রাইভেটকার চাপায় হৃদয় চন্দ্র দাশ ও একই এলাকার অর্চণা রানী ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান। এ ঘটনায় চালক পালিয়ে গেলেও প্রাইভেটকারটি জব্দ করেছে পুলিশ।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, ‘দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহন দুটি জব্দ করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
২৩৪ দিন আগে
নারীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে দুই সন্তানকে হত্যা, আসামির মৃত্যুদণ্ড
বরগুনায় এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টাকালে দুই শিশুসন্তান বাধা দেওয়ায় তাদের হত্যা মামলায় ইলিয়াস পহলান নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মো. ইলিয়াস পহলান (৩৪) বরগুনা সদর উপজেলার পূর্ব কেওড়াবুনিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রঞ্জু আরা শিপু, আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আহসান হাবীব স্বপন। আইনজীবী রঞ্জু আরা শিপু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ওই নারী তার মেয়ে তাইফা (৩) ও ছেলে হাফিজুলকে (১০) নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় ইলিয়াস তাকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকে পড়েন। বিষয়টি টের পেয়ে বাধা দেন ওই নারী। এ সময় তাইফা ও হাফিজুলের ঘুম ভেঙে গেলে ইলিয়াস ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনজনকেই কুপিয়ে আহত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় হাফিজুল নিহত হয়, আর বরিশালে নেওয়ার পথে মারা যায় শিশু তাইফা।
তবে গুরুতর আহত ওই নারী দীর্ঘ চিকিৎসার পর প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পরই ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়।
আরও পড়ুন: মসজিদে শিশু বলাৎকার, যুবকের যাবজ্জীবন
তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনাল সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে ইলয়াস পহলানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দোষী তাকে সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেন। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।
এ ছাড়াও ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছর করে আরও ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২৩৫ দিন আগে
চাঁদপুরে সাপের কামড়ে নারীর মৃত্যু
চাঁদপুরে শিলপাটার (মশলা বাটার যন্ত্র) নিচে গর্তে লুকিয়ে থাকা বিষধর সাপের কামড়ে শিল্পী বেগম (৩৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) হাজীগঞ্জ হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের পাতানিশ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে
শিল্পী বেগম ওই বাড়ির আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। তিনি ২ সন্তানের জননী ছিলেন।
আরও পড়ুন: পোষা সাপের কামড়েই সাপুড়ের মৃত্যু
স্থানীয়রা জানান, শিল্পী রান্নাঘরে বিছানো শিলপাটাতে রসুন বাটাকালে শিলপাটার নিচের গর্তে লুকিয়ে থাকা বিষধর সাপ তাকে কামড় দেয়। এরপর তাকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে কুমিল্লায় রেফার করা হয়। কুমিল্লা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটু সাপের কামড়ে নারীর মৃত্যুর বিষয়টি ইউএনবিকে নিশ্চিত করেন।
২৩৭ দিন আগে