নারী
ব্যালন দ’র: মেয়েদের ফুটবলে বার্সেলোনার জয়জয়কার
আর্থিক সংকটের কারণে পুরুষ দলটি নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে ভুগলেও বার্সেলোনার নারী দলটি যেন হাওয়ায় ভেসে চলেছে। ক্লাবটিকে দুহাত ভরে সাফল্য এনে দিচ্ছে বার্সার মেয়েরা। ব্যালন দ’র অনুষ্ঠানেও তাই একের পর এক স্বীকৃতি পেল তারা।
টানা দ্বিতীয় ব্যালন দ’র বনমাতির
মেয়েদের ফুটবলে টানা দ্বিতীয়বার ব্যালন দ’র জিতেছেন বার্সেলোনার স্প্যানিশ মিডফিল্ডার আইতানা বনমাতি। গত মৌসুমেও তার হাতেই উঠেছিল ফুটবলের ‘অস্কার’ খ্যাত এই পুরস্কারটি।
আরও পড়ুন: রদ্রির হাতেই উঠল ব্যালন দ’র
গত ১৮ মাসে বিশ্বকাপ ও দুবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পর বার্সেলোনার কোনো ফুটবলারই যে এবারও ব্যালন দ’র জিততে চলেছেন, তা অনেকটা নিশ্চিতই ছিল। তবে শেষ হাসিটা ফুটেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টুর্নামেন্ট সেরা বনমাতির মুখেই।
সোমবার দিবাগত রাতে প্রখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী নাটালি পোর্টম্যানের কাছ থেকে ব্যালন দ’র ট্রফিটি গ্রহণ করেন বনমাতি।
৩ সপ্তাহ আগে
স্ত্রী পরিচয়ে নারীকে জোরপূর্বক গর্ভপাতের চেষ্টা, নারী আটক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে দ্বিতীয় স্ত্রী পরিচয়ে নারীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর চেষ্টা ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা থেকে স্ত্রী পরিচয়ে বাড়িতে আনার ৪ দিন পর মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) শ্রীনগর পশ্চিম সিংপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত গর্ভপাত করাতে আসা আম্বিয়া নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতের অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ
স্থানীয়রা জানায়, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সূত্র ধরে দিপা ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় রিপনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বাড়িতে নিয়ে আসে।
আজ দিপার ইচ্ছার বিরুদ্ধে রিপন গর্ভপাত করানোর জন্য ঢাকা থেকে ৪ জনকে আনে। তারা এসে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করে।
এসময় দিপার চিৎকারে তাকে জলাতঙ্ক রোগের চারটি ভ্যাকসিন পুশ করা হয়। এরপর দিপাকে রিপনসহ বাড়ির লোকজন হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত ও পায়ের হাড় ভেঙ্গে দেওয়াসহ বর্বর নির্যাতন করে।
পরে স্থানীয়রা এসে দিপাকে উদ্ধার করে এবং গর্ভপাত করাতে আসা আম্বিয়া (৪২) নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ এসে দিপাকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় এবং আম্বিয়াকে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ আসার আগেই রিপন পালিয়ে যায়।
শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কাশফি বলেন, নির্যাতনের কারণে দিপা স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারছে না।
এছাড়া দিপার হাত পায়ের হাড় ভাঙা এবং তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন বলে জানান স্বাস্থ্য চিকিৎসক কাশফি।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসিন মুন্সী বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সেঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটক নারী আম্বিয়া থানায় আছে। পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকারের অবসান
১ মাস আগে
১৫ বছর ধরে দুর্গাপূজার আয়োজন করে আসছেন নারীরা
উলুধ্বনি, শঙ্খ, কাঁসর আর ঢাকের তালে সারাদেশের মতো মাগুরায়ও মহাসমারোহে আয়োজিত হচ্ছে দুর্গাপূজা। এর মধ্যে আঠারো খাদা ইউনিয়নের বাঁশকোঠা গ্রামে এক পূজা মণ্ডপের বিশেষত্ব নজর কেড়েছে সবার। তবে ওই মণ্ডপে দুর্গাপূজার এমন আয়োজন এ বছরই প্রথম নয়।
গত ১৫ বছর ধরে শুধুমাত্র নারীদের আয়োজনে শারদীয় দুর্গাপূজা হয়ে আসছে এই মণ্ডপে। ৩২ জন নারী মিলে এই পূজার আয়োজন করে আসছেন।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজার আনন্দে মেতেছে রাজধানী; মহাঅষ্টমীতে মণ্ডপগুলোতে ভিড়
পূজা কমিটির সভাপতি অঞ্জলি টিকাদার বলেন, বর্তমানে কমিটিতে ৩২ জন নারী রয়েছেন। প্রথম বছর পূজা করে ২২ হাজার টাকা বেঁচে যায়। তা দিয়ে কালি মন্দিরের পাশে নতুন একটি শিব মন্দিরও তৈরি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এবছর সরকারিভাবে ৫০০ কেজি চাল পেয়েছি যা দিয়ে পূজার ব্যয়ভার মেটানো সম্ভব নয়। এলাকার নারীরা আমাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছেন বলে পূজাটা সফলভাবে উদযাপন করা সম্ভব হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী তরুণ বিশ্বাস বলেন, বাঁশকোঠা গ্রামে আরও দুর্গাপূজা হলেও এ পূজাটি অন্যগুলোর থেকে ব্যতিক্রম। সারাবছর নারীরা বিভিন্নভাবে একটু একটু অর্থ জমিয়ে এই পূজার কাজে ব্যয় করেন।
তবে এবছর সব জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় খরচ মেটাতে পূজা কমিটিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: এবারের দুর্গাপূজায় প্রায় দ্বিগুণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মাগুরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি বাসুদেব কুন্ডু বলেন, সব জায়গায় পুরুষরা পূজা পার্বণের আয়োজন বা কাজ করে থাকে। শুধুমাত্র বাশঁকোঠা গ্রামে নারীদের মাধ্যমে ১৫ বছর ধরে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে নারীরা পূজার সব দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করে থাকেন।
১ মাস আগে
চট্টগ্রামে বন্য হাতির আক্রমণে নারীসহ ২ জনের মৃত্যু
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বন্যহাতির আক্রমণে নারীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে বৈরাগ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় হাতির আক্রমণে এক নারীর মৃত্যু
নিহতরা হলেন- বৈরাগ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গুয়াপঞ্চক গ্রামের শাহ আহম্মদ বাড়ির আবুল কাশেম ওরফে মো. দুলাল এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খোশাল তালুকদারের বাড়ির মো. আক্তারের স্ত্রী রেহানা আক্তার (৩৮)।
স্থানীয় বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান মো. নোয়াব আলী বলেন, রাত ৯টার দিকে বন্য হাতিরা গুয়াপঞ্চক এলাকায় নেমে পড়ে। হাতিগুলো চলাচলের রাস্তা না পেয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে লোকজনকে তাড়া করে। ওই সময় একটি হাতি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাস করা এক কৃষককে আক্রমণ করে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে হাতির আক্রমণে যুবক নিহত
বৈরাগ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ৩টি হাতি পাহাড় থেকে নেমে এসেছিল। এর মধ্যে ২টি হাতিকে স্থানীয়রা তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। হাতি আসার খবরে স্থানীয় উৎসুক জনতা তাদের দেখতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসলে পেছন থেকে একটি হাতি আক্রমণ করে। এতে রেহেনা নামে এক নারীর মৃত্যু হয়।
এছাড়াও আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মিরপুর চিড়িয়াখানায় হাতির আক্রমণে কিশোরের মৃত্যু
১ মাস আগে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উপায়
মেধা ও মননের সঠিক বিকাশের জন্য শিক্ষা অর্জনের মঞ্চটি হওয়া উচিত বৈষম্য ও সহিংসতামুক্ত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে শিক্ষার অবকাঠামোগত পরিবর্তন দৃশ্যমান হলেও বাকি রয়ে গেছে সুস্থ পরিবেশের বিষয়টি। বিশেষত নারীদের জন্য এখনও পরিপূর্ণ নিরাপদ হয়ে ওঠেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষিকারাও শিকার হন নানা ধরনের হয়রানি ও সহিংসতার, যা তাদের জন্য অস্বস্তিকর করে তোলে শিক্ষাঙ্গনকে। এই নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ এবং প্রত্যেকের নিজ নিজ জায়গা থেকে সোচ্চার হওয়া। চলুন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের নিরাপত্তায় করণীয়গুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উপায়
সহিংসতা-বিরোধী কঠোর নীতি বাস্তবায়ন
জাতীয় পরিসরে নির্দিষ্ট আইন থাকলেও প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিজস্ব বিধিমালা থাকা জরুরি। মৌখিক, শারীরিক ও অনলাইন প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর জন্য মর্যাদাহানিকর আচরণগুলোর সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকবে। প্রত্যেকটি ছোট ছোট ঘটনার রিপোর্ট করা থেকে শুরু করে শাস্তি প্রদান পর্যন্ত একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া থাকবে। অবশ্যই প্রক্রিয়াটি হতে হবে সহজতর ও পক্ষপাতিত্বমুক্ত।
নীতি প্রণয়নে সর্বাত্মকভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। নীতিমালায় শিক্ষক, প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ও দায়িত্বের স্পষ্ট রূপরেখা থাকা বাঞ্ছনীয়। উপরন্তু, বিধানগুলোর এমনভাবে প্রসার ঘটাতে হবে, যেন প্রত্যেকে তা লঙ্ঘনের পরিণতি সম্পর্কে সজাগ থাকে।
নিবেদিত প্রশাসন টিম নিয়োগ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশাসন বিভাগের উপর দায়িত্ব না চাপিয়ে নির্ধারিত নীতিমালা পরিচালনার রাখার জন্য পৃথক দল গঠন করা দরকার। এই দলটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমস্ত নিরাপত্তা নীতি এবং পদ্ধতিগুলোর বিকাশ, বাস্তবায়ন ও তদারক করার জন্য দায়ী থাকবে।
আরো পড়ুন: চীনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
তাদের নিয়মিত কার্যাবলির মধ্যে থাকবে নিরাপত্তা অডিট পরিচালনা, প্রশিক্ষণ সেশনের আয়োজন, রিপোর্টিং সিস্টেম পরিচালনা করা এবং নিরাপত্তা কর্মী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করা। সর্বসাকূল্যে, ক্যাম্পাসে নারীর যেকোনো নিরাপত্তা-সম্পর্কিত বিষয়ের জন্য যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করবে দলটি। এতে করে বিধিমালা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যা রসদ যোগাবে নারীদের নির্ভরতার।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নেওয়া
স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীর নিরাপত্তামূলক কর্মকাণ্ডে অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক আইন প্রণয়নে বৈধতার জন্য আইনশৃঙ্খলা বিভাগের হস্তক্ষেপ থাকা দরকার। তাই প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচিত স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করা। প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালা সম্বন্ধে স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবশ্যই জানিয়ে রাখতে হবে।
এই যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হলে তা বহিরাগত আগ্রাসন থেকে সুরক্ষার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের মাঝে মধ্যে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া থাকলে তা অপরাধমূলক আচরণের প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করতে পারে। তাছাড়া এই সমন্বয় সাধন জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যও অপরিসীম ভূমিকা রাখবে।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার প্রশিক্ষণ
বিধি-বিধান প্রণয়নের সর্বোত্তম উপায় হলো প্রশাসক দলের সদস্য, ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রয়োজনীয় করণীয় সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া। সংকটের সময় দ্রুত এবং কার্যকরভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে এর কোনো বিকল্প নেই। প্রতিটি সেশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট ও মানানসই হওয়া আবশ্যক।
আরো পড়ুন: টোফেল পরীক্ষার নিবন্ধন করবেন যেভাবে
কোন আচরণগুলো সহিংসতামূলক, কীভাবে অভিযোগ করতে হবে এবং হয়রানির তাৎক্ষণিক প্রতিকার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তুতে। বিশেষ করে অভিযোগের জন্য নিবেদিত প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের প্রোটোকল সহজভাবে শেখানোর উপর জোর দেওয়া উচিত। এর ফলে ভুক্তভোগীদের আতঙ্কটা অনেকাংশে কমে আসবে এবং তারা ন্যায়-বিচারের নিশ্চয়তা পাবে।
অত্যাধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপন
সিঁড়িঘর, প্রবেশপথ ও লম্বা করিডোর সহ যাবতীয় সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসাতে হবে উচ্চ মানের সিসিটিভি ক্যামেরা। কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে নিযুক্ত করতে হবে অভিজ্ঞ নিরাপত্তা কর্মী, যারা ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে অনায়াসেই শনাক্ত করতে পারবে সন্দেহজনক কার্যকলাপ।
সারা বছর ধরে এই ধারা অব্যাহত রাখতে রুটিন করে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি। সিসি ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত ডেটা নিরাপদে সংরক্ষণ করা উচিত, যেন কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেগুলো তদন্তের স্বার্থে ব্যবহার করা যায়।
নিরাপদ পরিবহনের ব্যবস্থা
বাসা থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার মাঝের সময়টি নারীর নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে খুব বেশি রাত হওয়ার আশঙ্কা না থাকলেও দিনের অন্যান্য সময়গুলোও ঝুঁকিমুক্ত নয়। বিশেষ করে পাবলিক পরিবহনগুলোতে প্রায়ই নারীরা হয়রানির শিকার হন। তাই স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন থাকলে সেখানে শিক্ষিকা বা ছাত্রীদের স্বস্তির জায়গা থাকে।
আরো পড়ুন: ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
এসব পরিবহনের চালক নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকা উচিত। অবশ্যই চূড়ান্ত নিয়োগের পূর্বে দক্ষতার পাশাপাশি আচরণগত বৈশিষ্ট্য যাচাইয়ের জন্য তার আগের কাজ ও জীবনযাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
যানবাহনগুলোতে জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম এবং জরুরি যোগাযোগ ডিভাইসের সংযোগ থাকা উচিত। এতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের অবস্থান সম্পর্কে জানা যাবে। সব মিলিয়ে এই প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার মাধ্যমে যাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে নিরাপদে বাসা পৌঁছানো নিশ্চিত করা যাবে।
পিয়ার সাপোর্ট ও বাডি সিস্টেম
পৃথক নিরাপত্তা কর্মী এবং অত্যাধুনিক অবকাঠামো স্থাপনের পরেও সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান নিতান্ত দুঃসাধ্য ব্যাপার। এর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সমাধান হচ্ছে সহকর্মী বা বন্ধুদের বলয়ের মধ্যে থাকা। শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি যে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেও কর্মকর্তারা মূলত নিজেরাই স্বপ্রণোদিত হয়ে এই কাজ করে নেন। একই পথে একাধিক লোকের বাড়ি থাকলে তারা একসঙ্গে যাতায়াত করে থাকেন। কাজ অথবা পড়াশোনা বা খেলাধুলার ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য।
এই একসঙ্গে চলাফেরার ব্যাপারটিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই উৎসাহিত করা যেতে পারে। এর ফলে ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষক-শিক্ষিকারা গ্রুপ করে তাদের প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। এই গ্রুপিং সুসম্পর্ক বজায়ের জন্যও উপযোগী, যার ধারাবাহিকতায় তারা সার্বক্ষণিক পরস্পরের খোঁজ-খবর রাখার তাগিদ অনুভব করেন। এমনকি এই একত্রিত থাকাটা যে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ র্ঘটনা মোকাবিলা করার জন্যও বেশ কার্যকর।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ
অনাকাঙ্ক্ষিত অনুপ্রবেশ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করার জন্য কঠোর প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে একদম প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেও এমন ব্যবস্থা কমবেশি থাকে। কিন্তু ভেতরের পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখতে স্থাপনার সীমানা এবং প্রবেশের স্থানগুলো কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
এক্ষেত্রে উপযুক্ত উপায় হতে পারে ইলেকট্রনিক কি-কার্ড বা বায়োমেট্রিক স্ক্যানার ব্যবহার। বাইরে থেকে আগতদের প্রত্যেককে ভেতরে প্রবেশের পূর্বে তাদের পরিচয় এবং উদ্দেশ্য যাচাই করতে হবে। এর জন্য প্রধান ফটকের দায়িত্বরত কর্মীদের সঙ্গে একাডেমিক প্রতিটি বিভাগের যোগাযোগ সংযোগ থাকতে হবে। ফলে তারা তাৎক্ষণিক ভাবে আগত ব্যক্তি কে ও তিনি কার কাছে কী উদ্দেশ্যে যাবেন সমুদয় বিষয় যাচাই করতে পারবেন। অতিরিক্তভাবে, ক্যাম্পাসের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত রাখাও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার পরিচায়ক।
বেনামী অভিযোগ গ্রহণের ব্যবস্থা
প্রাথমিক পর্যায়ে ভয় থাকে অসম্মান ও হীনমন্যতার, যা পরবর্তীতে বিস্তৃতি পায় প্রতিশোধপরায়নতার শিকার হওয়া পর্যন্ত। আর এই কারণগুলোই বিকৃত মানসিকতা চরিতার্থের শিকার হওয়ার পরেও অনেক নারীদের বিরত রাখে প্রতিরোধ করা থেকে। এ অবস্থায় নাম গোপন রেখে অভিযোগের সুযোগ হতে পারে প্রতিরোধের মোক্ষম উপায়।
গোপন হটলাইন নম্বর এবং সামাজিক মাধ্যমের গ্রুপগুলো হতে পারে পৃথক প্রশাসন ব্যবস্থার সহায়ক সংযোজন। তদন্ত ও অপরাধীকে ধরার আগ পর্যন্ত গোপন রাখতে হবে অভিযোগকারীর নাম। ফলে, অনেক ভুক্তভোগী নিজেদের প্রকাশ করতে সাহস পাবে। পাশাপাশি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পথে।
আরো পড়ুন: রোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
অভিভাবক ও স্থানীয়দের সম্পৃক্ততা
স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপ্রশস্ত ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষায় বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে স্থানীয়রা। আশেপাশের এলাকার ছোট ছোট দোকানগুলো অপরাধের বিরুদ্ধে সম্মিলিত থাকলে প্রশাসনের কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে স্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা উচিত।
এই কর্মকাণ্ডে অভিভাবকরাও এগিয়ে এলে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা যায়। প্রত্যেক অভিভাবক তার নিজের এলাকার স্থানীয়দের সঙ্গে একত্রিত হয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে করণীয়গুলোর ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিবেদিত প্রশাসন। এভাবে ঘর ও শিক্ষাঙ্গন উভয় ঠিকানাকে সুরক্ষিত করে সর্বত্রে নারীর অবাধ বিচরণে নিশ্চয়তা প্রদান করা যায়।
শেষাংশ
এসব পদক্ষেপের প্রতি গুরুত্বারোপ করার মধ্য দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষিকাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেতে পারে। তন্মধ্যে সক্রিয় ভূমিকা নেয়া উচিত নীতি নির্ধারণ ও প্রণয়নে। এর সূত্র ধরেই আসবে নিরাপদ পরিবহন, শক্তিশালী নজরদারি ব্যবস্থা এবং পৃথক প্রাতিষ্ঠানিক প্রশাসন নিয়োগ। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং পিয়ার সাপোর্ট ও বাডি সিস্টেম ফলপ্রসূ করে তুলতে পারে বেনামী অভিযোগ ব্যবস্থাকে। সর্বপরি, অভিভাবক ও স্থানীয়দের সম্পৃক্ততা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অংশগ্রহণে সার্বিক ভাবে গড়ে উঠতে পারে একটি সুস্থ শিক্ষাঙ্গন।
আরো পড়ুন: কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপায়
২ মাস আগে
কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপায়
যেকোনো কর্মক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মীর সক্রিয় অংশগ্রহণ। আর এই অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে কর্মের সহায়ক পরিবেশ। সর্বাঙ্গীনভাবে ব্যক্তি মর্যাদা ও নিরাপত্তার সমন্বয়ে গড়ে ওঠে কাজের উপযোগী পরিবেশ। কিন্তু শিক্ষা ও সভ্যতার মেলবন্ধনে গঠিত কর্মযজ্ঞে বারবার আশঙ্কার সম্মুখীন হয়েছে নারীর নিরাপত্তা। অথচ নারীরা তাদের যোগ্যতা ও শ্রম দিয়ে যেকোনো গঠনমূলক কাজে অবদান রাখতে পারে। কিন্তু সেজন্য প্রয়োজন আত্মমর্যাদা নিয়ে দক্ষতা প্রয়োগের সহায়ক পরিবেশ থাকা। এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন, নারীদের নিরাপদ কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলার উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
যে ১০টি উপায়ে নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলা যায়
হয়রানি ও বৈষম্যবিরোধী নীতি প্রয়োগ
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ৩৩২ ধারা অনুযায়ী যেকোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত নারীর সঙ্গে তার সম্মানের পরিপন্থী, অশালীন বা অশ্লীল হিসেবে গণ্য হতে পারে এমন আচরণ করা যাবে না।
এই আইনের রূপরেখায় নারীদের প্রতি হয়রানি ও বৈষম্য প্রতিরোধের জন্য কোম্পানি নীতিমালায় সুস্পষ্ট নীতি ও নির্দেশিকা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। এখানে নারীর আত্মমর্যাদা হানিকর প্রতিটি অনুপযুক্ত আচরণের স্বচ্ছ বিবৃতি থাকবে। একই সঙ্গে বিধি লঙ্ঘনের পরিণতিগুলোও বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে। অতঃপর নির্ধারিত বিধিমালা স্তর ও পদ নির্বিশেষে সব কর্মচারীদের জানানো এবং সঠিকভাবে প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: স্মার্টফোনে ভূমিকম্প সতর্কতা চালু করবেন যেভাবে
পৃথক নারী নিরাপত্তা সেল গঠন
নারী কর্মচারীদের সুরক্ষায় হুমকিজনক বিষয়গুলো বহুমুখী হয়। তাই তার তদারক প্রক্রিয়া এবং নিরসন পদ্ধতিও ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই পরিপ্রেক্ষিতে সর্বোত্তম হচ্ছে একটি নিবেদিত নারী সুরক্ষা সেল তৈরি করা। এই পরিষদের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রোটোকল থাকা উচিত। এর আওতায় নানা ধরনের অভিযোগ নিষ্পত্তি, আইনি পরামর্শ, তদন্ত ও শাস্তি প্রদান এবং মানসিক সহায়তা বা কাউন্সিলিং অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এর ফলে নারী কর্মচারীরা নিঃসঙ্কোচে, সহজভাবে এবং নির্ভরতার সঙ্গে অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।
মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্ম-সংস্কৃতি বাস্তবায়ন
একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি পরিষদে নারী ও পুরুষের সংখ্যার মধ্যে সমতা বিধান করা জরুরি। বিশেষ করে উচ্চপদস্থ জায়গাগুলোতে নারীদের উপস্থিতি নারী চাকরিপ্রার্থীদের মাঝে আত্মবিশ্বাস এবং স্বীকৃতিপ্রাপ্তির অনুভূতি সৃষ্টি করবে। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো প্রভাবশালী পদে থাকায় নারী কর্মকর্তা পুরো প্রতিষ্ঠানের নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় প্রধান ভূমিকা রাখতে পারেন। এই বিষয় কর্মক্ষেত্রে আচরণবিধি প্রতিষ্ঠার জন্যও জরুরি। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত কর্মসংস্কৃতির দৌলতে প্রতিটি নবনিযুক্ত কর্মচারী বুঝতে পারে যে, তাদের কাছ থেকে কী আচরণ প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তারা এও বুঝে যায় যে, কোন আচরণের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে।
পূর্ব প্রতিষ্ঠিত আচরণবিধি পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এখানে স্বতঃস্ফূর্ততা আনতে ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের উন্মুক্ত এবং উদার হওয়া অপরিহার্য। নিয়োগকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে স্বচ্ছ যোগাযোগ ব্যবস্থা কাজের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায়ে সহায়ক হয়।
আরও পড়ুন: নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি যে কারণে
বেনামী অভিযোগের ব্যবস্থা গ্রহণ
প্রায় ক্ষেত্রে নারী কর্মচারীরা সহকর্মী বা বসদের অসংযত আচরণে লজ্জা ও আরও বেশি সম্মান হানির আশঙ্কায় আত্মপ্রকাশে অনীহা পোষণ করে। এমনকি ভুক্তভোগীদের চাকরি হারানোর ভয় থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলো অগোচরেই থেকে যায়। তাই এমন একটি সিস্টেম তৈরি করা উচিত যেখানে পরিচয় গোপন রেখেই অভিযোগের সুযোগ থাকবে। প্রথমেই জনসমক্ষে না এনে গোপনে চালিয়ে যেতে হবে প্রাথমিক তদন্ত। এতে নারী কর্মীরা অকপটে নিজেদের প্রকাশ করতে পারবে। অধিকন্তু, এ বিষয়ে স্বয়ং নারী কর্মচারীরা কী ভাবছে তা বোঝার জন্য একটা সমীক্ষা চালানো যেতে পারে। এর মধ্য দিয়েও বেরিয়ে আসতে পারে নানা ধরনের প্রতিকূলতা।
নিরাপত্তা লঙ্ঘনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণ
এ ধরনের হয়রানিগুলোর জন্য কোনো বিচারই পাওয়া যাবে না; এরকম চিন্তা থেকেও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো আর প্রকাশ করা হয় না। এছাড়া দীর্ঘ প্রোটোকলের কারণে অনর্থক সময়ক্ষেপণের ফলে আস্থা হারিয়ে ফেলে ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে অপরাধী ব্যক্তি তার বিকৃত মানসিকতা অব্যাহত রাখতে সাহস ও প্রশ্রয় পেয়ে যায়।
তাই কালক্ষেপণ না করে নিয়োগকর্তাদের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অবশ্যই অভিযুক্তের নিকট স্বচ্ছ হতে হবে। নিছক কোনো ক্ষতিপূরণ দিয়ে দায় এড়ানো অথবা প্রতিষ্ঠানে সুনামের কথা ভেবে ভিন্ন দিকে পরিচালিত করা অন্যায়েরই নামান্তর। বরং দুষ্কৃতিকারীকে প্রতিষ্ঠানের আভ্যন্তরীণ আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরও পড়ুন: মোবাইল ফোন হ্যাকিং প্রতিরোধে করণীয়
এতে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠানের প্রতি নারী কর্মীদের নির্ভরতা বাড়বে, অন্যদিকে শাস্তি দেখে অন্যান্যরাও সাবধান হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রকাশ্য শাস্তির বিধান ভবিষ্যতে একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
নিরাপদ পরিবহন বিকল্প
৯টা থেকে ৫টার অফিস প্রথায় স্বাভাবিকভাবে কাজ শেষে বের হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে কাজের প্রয়োজনে অতিরিক্ত সময় অফিসে থাকতে হয়। তাই নিদেনপক্ষে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে নারী কর্মচারীদের জন্য কোম্পানির নিজস্ব পরিবহন দেওয়া উচিত। প্রতিদিন কাজ শেষে ভয় নিয়ে বাসায় ফেরাটা মানসিক অসুস্থতার দিকে পরিচালিত করে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পরের দিন কাজের ওপর। তাই প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই নারী কর্মীদের যাতায়াতের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া আবশ্যক।
এখানে একদম সুস্থভাবে বাসায় ফেরাটা নিশ্চিত করা উচিত। গণপরিবহন নির্দিষ্ট স্থানে নামিয়ে দেওয়ার পর সেখান থেকে বাসায় ফেরার রাস্তাটি অনেক ক্ষেত্রে নিরাপদ থাকে না। তাছাড়া মহাসড়কগুলো জনাকীর্ণ এবং প্রচুর আলোকিত থাকলেও আবাসিক এলাকার গলিগুলো কখনো কখনো অন্ধকার থাকে। কর্মচারীদের জন্য কমন পরিবহন দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর এই বিষয়ও বিবেচনায় রাখতে হবে।
আরো পড়ুন: ইসরো চন্দ্রযান-৩: ভারতের চন্দ্র বিজয়ে নারী বিজ্ঞানীদের সাফল্য
শক্তিশালী নিরাপত্তামূলক অবকাঠামো গঠন
নিয়োগকর্তাদের সিসিটিভি ক্যামেরা, অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের দিকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই অবকাঠামো নির্জন সময়গুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি অপরাধ তদন্তের জন্যও প্রয়োজন। তাছাড়া এই সতর্কতার মাধ্যমে বাইরের সহিংসতা থেকেও প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সুরক্ষিত করা যায়।
নারী কর্মচারীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুম ও কমন রুমের ব্যবস্থা
দিনের একটা বিরাট সময় অতিবাহিত করা হয় অফিসে। এই দীর্ঘ সময়ে প্রাইভেসি রক্ষার্থে অফিসে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্যও পৃথক কমন রুম ও ওয়াশরুম থাকা দরকার। এই স্বাচ্ছন্দ্যটুকু না থাকলে কর্মক্ষেত্রটি অনায়াসে অস্বস্তির জায়গায় পরিণত হয়। তবে এটি শুধু নারীর স্বাচ্ছন্দ্যের দিকটিই পরিপূর্ণ করে না, বরং এটি তাকে সম্মানিত করার শামিল। এর ফলে তারা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নিজের বাড়ির কাজ করার অনুভূতি পায়। অন্যদিকে, এই সুবিধা না থাকা নিতান্ত লিঙ্গ-বৈষম্যের নামান্তর।
সতর্কতা ও নিয়ম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান
মানবসম্পদ বিভাগ বা প্রশাসনিক কর্মকর্তারা প্রধান দায়িত্বে থাকলেও নারী কর্মীদের সুরক্ষার দিকে সার্বক্ষণিক নজর রাখা তাদের পক্ষে বেশ জটিল। এখানে দরকার দায়িত্বের বিকেন্দ্রিকরণ। এর মাধ্যমে মুখ্য দায়িত্বশীলদের পাশাপাশি অন্যান্য কর্মচারীরাও নিরাপত্তা তদারকের ব্যাপারে সতর্ক হয়। এই কৌশল অবলম্বনের সর্বোত্তম পন্থা হলো কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে কাজের ফাঁকে পৃথক সেশনের মাধ্যমেও গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম-নীতি প্রণয়নের বিষয়গুলো কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া যায়।
আরও পড়ুন: লবিং-রেফারেন্স ছাড়াই চাকরি পেতে প্রয়োজনীয় কিছু দক্ষতা
এভাবে প্রতিটি নারী কর্মী পরস্পরের দিকে খেয়াল রাখতে পারবেন। এছাড়া পুরুষ কর্মীরাও কাজের পরিবেশ বজায় রাখাতে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে পারবেন। এভাবে বিধিমালার ব্যাপারে সতর্ক কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে রাখার প্রয়োজন পড়ে না। পরবর্তীতে তারাই নবনিযুক্তদের কোম্পানি সংস্কৃতি ও নিয়ম-নীতি শিখিয়ে দিতে পারেন।
পিয়ার সাপোর্ট এবং বাডি সিস্টেম
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে সময়োপযোগী কর্মসংস্কৃতি হচ্ছে এই বাডি সিস্টেম বা পিয়ার সাপোর্ট। এই গ্রুপভিত্তিক কাজের পদ্ধতিটি সবার জন্য প্রযোজ্য হলেও নারীদের জন্য এটি বেশ উপযোগী। এর মাধ্যমে অফিস অ্যাডমিনের পক্ষ থেকেই নির্দিষ্ট প্রোজেক্টের জন্য একাধিক কর্মচারীকে নিয়ে একটি গ্রুপ করে দেওয়া হয়। প্রোজেক্টটির কাজগুলো তারা নিজেদের যোগ্যতাগুলো পরিপূরকভাবে শেয়ার করার মাধ্যমে সম্পন্ন করে।
এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করা যেতে পারে নারী কর্মচারীদের নিরাপত্তা রক্ষায়। ওভার-টাইম এবং কাজের সূত্রে দূরবর্তী কোনো স্থানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কয়েকজনের একটি গ্রুপ করে দেওয়া যেতে পারে। তারা শুধু কাজের ক্ষেত্রেই নয়, নিরাপত্তাগত দিক থেকেও পরস্পরের প্রতি খেয়াল রাখবে। এই ব্যবস্থা কেবল তাৎক্ষণিক নিরাপত্তাই প্রদান করে না, বরং সহকর্মীদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বিশ্বাসের অনুভূতিও তৈরি করে। ফলশ্রুতিতে, যেকোনো বিপদে তারা একত্রিত থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
পরিশিষ্ট
সর্বসাকূল্যে, কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জিরো টলারেন্স নীতি প্রণয়ন করা জরুরি। এই লক্ষ্যে নির্ভয়ে এবং নিঃসঙ্কোচে অভিযোগ করার সুযোগের পাশাপাশি যুগপৎভাবে পৃথক নিরাপত্তা সেল গঠন করা অপরিহার্য। এগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী অবকাঠামো কর্মক্ষেত্রের অভ্যন্তরীণ পরিবেশকে নিরাপদ করে তুলতে পারে। অপরদিকে, পরিবহন সুবিধা, পিয়ার ও বাডি সিস্টেম সহায়ক হতে পারে কর্মক্ষেত্রের বাইরে নারীর অবাধ বিচরণে। উপরন্তু, প্রাসঙ্গিক প্রশিক্ষণ সর্বাত্মকভাবে এই ব্যবস্থাকে পরিণত করতে পারে নিয়মিত চর্চায়।
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
৩ মাস আগে
নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
তথ্য ও প্রযুক্তির বদৌলতে জীবনযাত্রার মান উন্নত হলেও এই একুশ শতকে এখনও প্রশ্ন রয়েই গেছে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে। অন্ধকার নির্জন রাস্তা থেকে শুরু করে জনাকীর্ণ এলাকা সর্বত্র হুমকিতে থাকে নারীর ব্যক্তিগত সুরক্ষা। সময়ের এই চিরন্তন সমস্যার নিরসণকল্পে সারা বিশ্ব জুড়ে চলছে প্রযুক্তি ভিত্তিক গবেষণা। সার্বক্ষণিক সঙ্গে থাকা ছোট্ট স্মার্টফোনটিকে রক্ষাকবজ হিসেবে প্রতীয়মান করতে নেয়া হচ্ছে নানা প্রকল্প। তারই ফলশ্রুতিতে বিগত দশক জুড়ে তৈরি করা হয়েছে নিত্য নতুন মোবাইল অ্যাপ। চলুন, সেগুলোর মধ্য থেকে বহুল ব্যবহৃত সেরা ১০টি মোবাইল অ্যাপস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
নারীর নিরাপত্তায় সেরা ১০টি ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোন অ্যাপস
লাইফ৩৬০ (Life360)
নারীর নিরাপত্তার স্বার্থে নির্মিত পুরাতন অ্যাপগুলোর মধ্যে অন্যতম এই লাইফ৩৬০ (https://www.life360.com/intl/)। ২০১০ সালের ৭ এপ্রিল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিজেদের নামেই অ্যাপটি চালু করে। এটি ব্যবহারের জন্য অ্যান্ড্রয়েড ৯ ও তার পরের সংস্করণ অথবা আইওএস ১৫ ও এর ঊর্ধ্ব সংস্করণগুলো থাকতে হবে।
বর্তমানে ৪ পয়েন্ট ৭ (আইওএস) ইউজার রেটিং সমৃদ্ধ অ্যাপের সাইজ ১৬৯ এমবি। অপরদিকে ১৭ দশমিক ৮ এমবি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের রেটিং ৪ দশমিক ৫।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাসরুট খুঁজে পেতে দরকারি কিছু মোবাইল অ্যাপ
লোকেশন শেয়ারিংয়ের পাশাপাশি লাইফ৩৬০ ২ দিন পর্যন্ত অবস্থানের ইতিহাস সংরক্ষণ রাখতে পারে।
তবে যে বিষয়টি এই অ্যাপকে সবার থেকে আলাদা করেছে তা হচ্ছে, এতে একসঙ্গে একাধিক জন পরস্পরের রিয়েল-টাইম অবস্থান দেখতে পারেন। তাছাড়া গাড়িতে ভ্রমণকালে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে অ্যাপটি তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি পরিষেবাকে জানাতে পারে।
বিসেইফ (bsafe)
এটি এমন একটি অ্যাপ যার মাধ্যমে খুব দ্রুততার সঙ্গে ব্যক্তির অবস্থান তার বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করা যায়। এর বিশেষ ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে জরুরি মুহূর্তে এসওএস সিগন্যাল পাঠানো এবং স্বয়ংক্রিয় ভিডিও রেকর্ড করা। এছাড়া এতে রয়েছে ফোন স্পর্শ ছাড়াই সাহায্য আবেদনের জন্য বার্তা পাঠানোর সুবিধা।
আরও পড়ুন: দামি ফ্ল্যাগশিপ ফোন কেনার সুবিধা-অসুবিধা
২০১১ সালের ২০ মে প্রকাশিত অ্যাপটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মোবাইল সফটওয়্যার এএস। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটির জন্য ডিভাইসে জায়গা রাখতে হবে ১০ দশমিক ৫ এমবি, আর আইওএস অ্যাপের জন্য ৮৭ দশমিক ১ এমবি। বিসেইফ অ্যান্ড্রয়েড ৯ (https://www.getbsafe.com/bsafe-app) ও তার ওপরের সংস্করণ এবং আইওএস ১৩ এবং তার পরবর্তী সংস্করণগুলোর জন্য প্রযোজ্য। ব্যবহারকারীদের বিবেচনায় অ্যাপটির রেটিং ৩ দশমিক ৭ (আইওএস) এবং ৩ দশমিক ১ (অ্যান্ড্রয়েড)।
আইশেয়ারিং (iSharing)
২০১২ সালের ১৬ জুন এই অ্যাপটিকে ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করে নির্মাতা আইশেয়ারিং সফট ইন করপোরেশন। আইশেয়ারিং অ্যাপটির (https://isharingsoft.com/) মাধ্যমে দূরবর্তী কোনও অঞ্চলে ভ্রমণকালে পরিবারের সদস্যের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা যায়। জিপিএসের এই রিয়েল-টাইম সুবিধাটি ব্যবহারকারী এবং তার পরিবার দু’জনেই একই সঙ্গে উপভোগ করতে পারে। এছাড়া এটি ব্যক্তির অবস্থানের ইতিহাস সংরক্ষণ করে রাখে এবং তা পর্যালোচনা করে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানের জন্য আগাম সতর্কবার্তা দেয়। এমনকি জরুরি পরিস্থিতিতে ডায়াল ছাড়াই দ্রুত কন্টাক্ট করতে সহায়তা করে।
অ্যান্ড্রয়েডের ৬৩ এমবির জন্য প্রয়োজন হবে অ্যান্ড্রয়েড ৭ এবং তার ওপরের সংস্করণগুলো। অপরদিকে, ২১৫ দশমিক ৮ এমবি আইওএসের অ্যাপটি চলবে আইওএস ১৩ পয়েন্ট ৪ বা তার পরবর্তী সংস্করণগুলোতে। আইশেয়ারিংয়ের আইওএস অ্যাপটির ইউজার রেটিং ৪ দশমিক ৮ এবং অ্যান্ড্রয়েডটির রেটিং ৪ দশমিক ৬।
আরও পড়ুন: মোবাইল ফোন হ্যাকিং প্রতিরোধে করণীয়
নুনলাইট (Noonlight)
দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল এবং সহজ ইন্টারফেসের কারণে বেশ আগের হলেও নারী গ্রাহকদের জন্য জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে নুনলাইট। পর্যায়ক্রমিক বাগ ফিক্সিং-এর মাধ্যমে নিয়মিত আপডেটগুলোর কারণে অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েডে ৪ দশমিক ৫ ও আইওএসে ৪ দশমিক ৭ রেটিং অর্জন করেছে।
২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারিতে প্রকাশ করা অ্যাপটি ধীরে ধীরে উন্নত করার মাধ্যমে বর্তমান অবস্থায় এনেছে নির্মাতা নুনলাইট ইন করপোরেশন। ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য নিরাপত্তামূলক অ্যাপগুলোর মতো এটিও জিপিএস প্রযুক্তিতে সজ্জিত।
নুনলাইট (https://www.noonlight.com/noonlight-app) অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটির সাইজ ২৪ দশমিক ০৪ এমবি এবং আইওএস অ্যাপটি ১৭০ দশমিক ৩ এমবি। অ্যাপটি নিরবচ্ছিন্নভাবে চালাতে হলে প্রয়োজন হবে অ্যান্ড্রয়েড ৫ এবং তার অধিক ওএস কিংবা আইওএস ১২ ও তার পরের ওএসগুলো।
আরও পড়ুন: ডিপ ফ্রিজ খুঁজছেন? যেসব বিষয় জানা প্রয়োজন
লেটসট্র্যাক (Letstrack)
জিপিএস প্রযুক্তির আরও একটি মূল্যবান প্রয়োগ হচ্ছে এই লোকেশন শেয়ারিং অ্যাপটি। লেটসট্র্যাক লিমিটেড নির্মিত অ্যাপটির অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণের সাইজ ২৫ দশমিক ৫ এমবি এবং আইওএস সংস্করণের সাইজ ১৬৫ দশমিক ৭ এমবি। ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করা অ্যাপটি (https://india.letstrack.com/) শুধুমাত্র নারীদের জন্যই নয়, শিশুদের জন্যও প্রযোজ্য। এর দুর্দান্ত ট্র্যাকিং ক্ষমতার শতভাগ উপভোগ করতে হলে আইওএস ১৫ এবং তার পরের ওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড ৯ ও এর ঊর্ধ্ব ওএসগুলো ব্যবহার করতে হবে।
এছাড়াও এতে রয়েছে বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাটের সুবিধা। সামগ্রিক বিবেচনায় এ পর্যন্ত অ্যাপটির রেটিং ৩ দশমিক ৬ (আইওএস) এবং ৪ দশমিক ১ (অ্যান্ড্রয়েড)।
মাই সেফটিপিন (My SafetiPin)
যেকোনো এলাকার স্বাভাবিক নিরাপত্তা অবস্থা যাচাই করে আগে থেকেই নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে সতর্ক করতে পারা। মূলত এই বিশেষত্ব দিয়েই ডেভেলপার সেফটিপিন ২০১৬ সালের ৯ মার্চ প্রকাশ করে এই অ্যাপটি। এটি জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ব্যবহার করে তুলনামূলক নিরাপদ রুটের খোঁজ দিতে পারে। একই সাথে ব্যবহারকারীর বন্ধু বা পরিবারও তার অবস্থান দেখে নিতে পারে। এ সময় ব্যবহারকারী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকলে অ্যাপটি পরিবারের সদস্য বা বন্ধুকে সতর্ক বার্তা পাঠায়।
আরও পড়ুন: স্মার্ট টিভি খুঁজছেন? জেনে নিন ফিচার ও দাম
মাই সেফটিপিন (https://safetipin.com/my-safetipin-app/) অ্যাপটি চালানোর জন্য প্রয়োজন হবে অ্যান্ড্রয়েড ৪ দশমিক ৪ ও তার পরের সংস্করণ এবং আইওএস ১৩ বা তার পরবর্তী সংস্করণ। অ্যান্ড্রয়েডে অ্যাপটির সাইজ ২৩ দশমিক ৫ এমবি (মেগাবাইট) এবং আইফোনে ১৩৪ দশমিক ৩ এমবি। মাই সেফটিপিনের বর্তমান ইউজার রেটিং আইওএস (আইফোন অপারেটিং সিস্টেম)-এ ৩ দশমিক ৪ এবং অ্যান্ড্রয়েড-এ ৩ দশমিক ৯।
ইউআরসেইফ (UrSafe)
ইউআরসেইফ (https://ursafe.com/) অ্যাপটি সরাসরি মেট্রোপলিটান পুলিশের নাগরিক পরিষেবার সঙ্গে সংযুক্ত। এখানে শুধুমাত্র একটি ট্যাপ অথবা ভয়েস নির্দেশনার মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন বার্তা পাঠানো যায়। জরুরি অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ কল করার জন্য ফোন স্পর্শ বা নাম্বার ডায়ালেরও প্রয়োজন হয় না। এমনকি পরিস্থিতি বিশেষে প্রয়োজনে এটি লাইভ ভিডিও ও অডিও স্ট্রীমিং চালু করে দিতে পারে।
অত্যাধুনিক এই অ্যাপটি নির্মাণ করে ইউআরসেইফ টেকনোলজিস। ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত হয় ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর। ৭২ এমবি সাইজের অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণটির বর্তমান রেটিং ৪ দশমিক ৪। অপরদিকে ১৫০ দশমিক ৪ এমবির আইওএস সংস্করণের রেটিং এখন পর্যন্ত ৩ দশমিক ৮। অ্যাপটি চালানোর জন্য অ্যান্ড্রয়েড ৭ ও তার অধিক অথবা আইওএস ১১ বা তার পরের ওএস সমর্থিত ডিভাইস থাকা দরকার।
আরো পড়ুন: ২০২৪ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ১০ মুদ্রা
৩ মাস আগে
মাগুরায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নারীর মৃত্যু
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় কৃষি জমিতে সেচ দিতে গিয়ে সীমা খাতুন (২৫) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর দিকে চালিমিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: পাবনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ভাই-বোনের মৃত্যু
নিহত সীমা খাতুন ওই গ্রামের সাবু মোল্যার স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানায়, বাড়ির পাশে একটি কৃষি জমিতে সেচ দিতে যান সীমা। সেচপাম্প প্রস্তুত করে বৈদ্যুতিক সুইচ অন করতে যান সিমা। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে ভিজে থাকা সুইচে হাত দিতেই সীমা বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সীমা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উল ইসলাম বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সিরাজদিখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু
পাবনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আপন ভাইবোন নিহত
৩ মাস আগে
শ্যালো মেশিনের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে নারীর মৃত্যু
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চিনারচর পূর্বপাড়ায় শ্যালো মেশিনের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে রাশেদা বেগম (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলন: ঢাকা কলেজের পাশ থেকে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার
রাশেদা বেগম চিনারচর পূর্বপাড়া গ্রামে মৃত শক্কুর আলীর স্ত্রী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাশেদা বেগম বাড়ির পাশে ফসলের মাঠে কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত শ্যালো মেশিনে গলার ওড়না পেঁচিয়ে যায়। এতে দুর্ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন তালুকদার বলেন, ‘এ ঘটনায় ইসলামপুর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে আবাসিক হোটেল থেকে লাশ উদ্ধার
মানিকগঞ্জে পিকনিকের ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ ২ জনের লাশ উদ্ধার
৩ মাস আগে
সালিশে নারী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, ২ ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
চুরির অপবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে শারমীন আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতনের অভিযোগে দুই ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় শারমীন শনিবার রাতেই চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই বিষ্ণুপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং রবিবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইসহাক মোল্লা ও একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য হোসেন মিয়া।
আরও পড়ুন: যশোরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা, অস্ত্রসহ যুবক গ্রেপ্তার
মামলার সূত্রে জানা যায়, মোবাইল চুরির অপবাদে বৃহস্পতিবার অভিযুক্তরা শারমীন আক্তারকে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামের হুমায়ুনের বাড়িতে ডেকে নেন। সেখানে উপস্থিত হওয়ার পরই শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। এসময় ইসহাক মোল্লা তার নাক, মুখ ও চোখে গামছা বেঁধে শরীরের বিভিন্ন অংশে গরম পানি ঢেলে দেন। লাঠি দিয়ে হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে পিটিয়ে জখম করেন।
শারমীন আক্তার বলেন, ‘ইউপি সদস্য ইসহাক মোল্লা ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হোসেন প্রায় সময়ই কুপ্রস্তাব দিতেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করার জন্য বলতেন। তাদের সঙ্গে দেখা না করায় চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। মামলা করার পর হুমকি দিচ্ছেন তারা। আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।’
বিজয়নগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হাসান জামিল খান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে বিষ্ণুপুরের এক চৌকিদারের স্ত্রীকে চুরির অপবাদ দেওয়া হয়। পরে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূইয়ার নির্দেশে বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন ওই নারীকে ব্যাপক মারধর করে। চৌকিদারের স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভিডিও ফুটেজ দেখে সাবেক ও বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।’
অভিযুক্ত বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইসহাক মোল্লা বলেন, ‘একটি বাড়িতে স্বর্ণালংকার চুরি হয়। এই ঘটনায় সালিসি সভা হয়। সালিসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই নারীকে মারধর করা হয়েছে।’
অভিযুক্ত বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূইয়ার ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি এই বিষয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন।
আরও পড়ুন: ভোলায় ৯ হাজার ৮০০ ইয়াবা জব্দ, গ্রেপ্তার ১
সিলেটে পৃথক অভিযানে ৭৯৫ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ, গ্রেপ্তার ৪
৪ মাস আগে