নিরাপত্তা
সমু্দ্র অর্থনীতি ও নিরাপত্তা জোরদারে কোস্টগার্ড আরও শক্তিশালী হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রূপকল্প ২০৩০ ও রূপকল্প ২০৪১-এর আধুনিকীকরণ পরিকল্পনা অনুযায়ী সমুদ্রে নীল অর্থনীতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোস্টগার্ডের জন্য জাহাজ, সরঞ্জাম ও জনবল বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গভীর সমুদ্রে টহল দেয়ার জন্য আরও চারটি ওপিভি, ৯টি প্রতিস্থাপনকারী জাহাজ, দুটি মেরিটাইম সংস্করণ হেলিকপ্টার সংগ্রহের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুব শিগগিরই এই বাহিনীতে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ, মেরিটাইম সার্ভিলেন্স সিস্টেম, হোভারক্রাফট এবং হাইস্পিড বোট যুক্ত হতে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, গভীর সাগরে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কোস্টগার্ডকে দক্ষ ও শক্তিশালী করতে দেশের উপকূলীয় ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোস্টগার্ড স্টেশন ও ফাঁড়িতে কোস্টাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন আকারের জাহাজ তৈরি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কোস্টগার্ড এলাকায় আবাসন, ব্যারাক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
বিসিজি বেস অগ্রযাত্রা' নামে পটুয়াখালীতে নিজস্ব প্রশিক্ষণ ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে কোস্টগার্ডের জনবলের প্রশিক্ষণ সক্ষমতাও বাড়ানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য অভ্যন্তরীণ টহল জাহাজ, ভাসমান ক্রেন, টাগ বোট এবং বিভিন্ন ধরনের হাইস্পিড বোট তৈরি করা হয়েছে।
‘সম্প্রতি বাহিনীটির জন্য যুদ্ধের ইউনিফর্ম চালু করা হয়েছে, যা আমার বিশ্বাস সকল সদস্যদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবে।’
আরও পড়ুন: গ্রামের মানুষকে চাষাবাদের কাজে সাহায্য করুন: আনসার ও ভিডিপি’র সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, এই বাহিনীর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের সক্ষমতা বাড়াতে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ড নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জলসীমায় সামুদ্রিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কোস্টগার্ড বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এই বাহিনীর মূলমন্ত্র হলো ‘গার্ডিয়ানস অ্যাট দ্য সি’। এর অর্থ সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় জনগণের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ইতোমধ্যে দেশের উপকূলীয় এলাকার নিরীহ-নিপীড়িত মানুষের কাছে অন্যায় ও অপকর্ম প্রতিরোধ করে নিজেদেরকে প্রকৃত বন্ধু হিসেবে দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্য এখন দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলিষ্ঠ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ঝুঁকির মধ্যেই কোস্টগার্ড সদস্যরা দেশের স্বার্থে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, এই বাহিনী সমুদ্র বন্দরের নিরাপত্তা, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান, মানব পাচার, অবৈধ ও অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরা, সমুদ্র ও নদী দূষণ ও জলদস্যুতা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী কোস্টগার্ড সদস্যদের সাহসিকতা ও বিশেষ কৃতিত্বের জন্য পদক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে কোস্টগার্ডের কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
তিনি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন এবং একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
আরও পড়ুন: আরও বেশি সংখ্যক নারীকে বিজ্ঞানে উৎকর্ষতা লাভের সুযোগ দিন: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
অনির্বাচিত সরকারের দুঃস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
একুশে বইমেলায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ডিএমপি
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, একুশে বইমেলাকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বইমেলাকে কেন্দ্র করে কারও জন্য সুনির্দিষ্ট কোনও হুমকি নেই।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ফারাবীর ৭ বছরের কারাদণ্ড
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোন লেখক বা প্রকাশক নিরাপত্তাহীনতা বোধ করেন, আমরা তার ওপর কড়া নজর রাখব।’
মেলায় বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
এছাড়া মেলার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেড় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে।
আরও পড়ুন: সেনাবহরে যুক্ত হলো তুর্কিয়ের তৈরি টাইগার মিসাইল
মেট্রোরেল: বিশেষায়িত ইউনিট গঠন না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা দেবে ডিএমপি
বিশেষায়িত ইউনিট গঠন না হওয়া পর্যন্ত মেট্রোরেল পরিষেবার নিরাপত্তা দেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই মেট্রোরেল চালু হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন রাজধানী ঢাকার উত্তরা (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করবেন।
মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট পুলিশ’ বা ‘এমআরটি পুলিশ’ নামে একটি বিশেষায়িত নতুন পুলিশ ইউনিট গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও ডিএমপি অন্তর্বর্তী সময়ে কাজটি করবে।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলে চাকরি: ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের চাকরির বিজ্ঞপ্তি ২০২২
এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠনের প্রক্রিয়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে সচিব কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনসহ কিছু প্রক্রিয়ার জন্য বিলম্বিত হচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ওঅ্যান্ডএম) এসএম মোস্তাক আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, বিশেষায়িত এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠনের খসড়া প্রস্তাবটি এখন সচিবদের কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে রয়েছে। সোমবার সচিবদের কমিটিতে খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের ভাড়া ৫০% কমানোর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
‘কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর এমআরটি পুলিশ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে’, মোস্তাক যোগ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ডিএমপিকে চিঠি পাঠিয়ে এমআরটি পুলিশ ইউনিট কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তার অনুরোধ জানিয়েছে। ডিএমপি বিষয়টি দেখবে বলেও জানান তিনি।
যোগাযোগ করা হলে ডিএমপির মিডিয়া উইংয়ের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ডিএমপি নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকেই মেট্রোরেল প্রকল্পের নিরাপত্তা দিচ্ছে। যেহেতু মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ডিএমপিকে ২৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু থেকে নিরাপত্তার জন্য অনুরোধ করেছে, তাই রিজার্ভ ফোর্স সহ স্থানীয় থানা পুলিশ নিরাপত্তা দেবে।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ প্রায় তিন হাজার পুলিশ সদস্যদের অনুরোধ করেছে। তবে ডিএমপি স্টেশনগুলির নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সংখ্যক সরবরাহ করবে, ডিসি (মিডিয়া) যোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: টিকিট কাটা থেকে শুরু করে আসনব্যবস্থা: ঢাকা মেট্রোরেলে প্রথম ভ্রমণের আগে যা জানা দরকার
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে গণভবনে মেট্রোরেলের একটি উপস্থাপনাকালে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পৃথক পুলিশ ইউনিট গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
পরবর্তীতে সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) একই মাসে এমআরটি পুলিশ গঠনের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরে প্রস্তাব জমা দেয়।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার সাহস, আন্তরিকতা, দৃঢ় ইচ্ছা মেট্রোরেল বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশে কূটনৈতিক মহলের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ: শাহীনবাগের ঘটনায় খসরু
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বুধবারের ঘটনা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জড়িয়ে গুমের শিকারের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাংলাদেশে কূটনৈতিক মহলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খসরু সরকার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে বিদেশি কূটনীতিকদের ‘দেশের জনগণের মতো’ ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এটি গভীর উদ্বেগের বিষয়। একজন কূটনীতিক একটি বিশেষ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন এবং পরে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থিত একটি গ্রুপ তাদের (আ.লীগের) সহায়তায় অন্য সংগঠনের নামে সেখানে যায়। এটা বেআইনি।’
তিনি বলেন, প্রত্যেকের নিজস্ব কর্মসূচি পালনের স্বাধীনতা রয়েছে। ‘কিন্তু অন্য কর্মসূচিতে যাওয়ার প্রক্রিয়া, সেই কর্মসূচিকে ব্যাহত করা এবং কর্মসূচিকে ভিন্ন দিকে মোড় নেয়া একটি অগণতান্ত্রিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এটাও এখন দেখা যাচ্ছে যে কূটনীতিকদেরও নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বুধবার নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন ও গুমের পরিবারের একটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ মায়ের ডাক (মায়ের কল) এর সমন্বয়ক সানজিদা ইসলামের শাহীনবাগের বাসায় যান।
তবে সেখানে তিনি অন্য একটি সংগঠনের সদস্যদের দ্বারা আটকা পড়েন এবং মুখোমুখি হন - মায়ের কান্না (মায়ের অশ্রু) - যেটি আরও সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছে। আশির দশক পূর্ববর্তী শাসনামল, বিশেষ করে সত্তর দশকের শেষ থেকে শুরুর দিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাসনামলে গুমের শিকারদের পক্ষে সমর্থন করে।
সাজেদুল ইসলাম সুমন ২০১৩ সালে নিখোঁজ হন বলে জানা গেছে। সানজিদা প্লাজা ডি মায়ো নামে একটি সংগঠনের অনুকরণে মায়ের ডাক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেটি আর্জেন্টিনার সর্বশেষ সামরিক স্বৈরশাসনের সময় বলপূর্বক নিখোঁজদের জন্য গঠিত হয়েছিল। অনুরূপ সংস্থাগুলো দক্ষিণ আমেরিকার আশেপাশের অন্যান্য দেশে বিদ্যমান যেখানে সত্তর দশক থেকে শুরু হওয়া সামরিক সরকারের অধীনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিখোঁজ হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু বলেন, সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের মদদে অতীতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটাই প্রথম নয়। ‘আমি মনে করি এই ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’
আরও পড়ুন:শুক্রবার রাজধানীতে ‘বিজয় দিবসের’ র্যালি করবে বিএনপি
তিনি উল্লেখ করেন যে একটি ডিনার পার্টিতে যোগ দিতে গিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাটের গাড়িতে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছিলেন।
খসরু বলেন, ‘বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার পর কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং কেউ শাস্তিও পায়নি। এই ঘটনার পেছনে কারা ছিল এবং সরকারের উদ্দেশ্য তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে।’
তিনি বলেন, সরকার চায় এ ধরনের ঘটনা যাতে দেশে একটা ভয়-আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
বিএনপি নেতা বলেন,‘তারা (সরকার) যেভাবে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের জনগণকে দমন করতে চায়, এখন একইভাবে তারা কূটনীতিকদের জন্য ভিন্ন ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতায় আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে। সর্বশেষ ঘটনা তা প্রমাণ করেছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, বুধবার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কর্মসূচিতে যে দলগুলো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল, তারা কয়েক মাস আগেও বিএনপির মানবাধিকার কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের মদদে বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার এ ধরনের অপচেষ্টা আওয়ামী লীগের চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারে, কিন্তু সরকারের সমর্থনে অন্যের কর্মসূচিতে ঝামেলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা বেআইনি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, এ দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো এবং তাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে খসরু বলেন, এটি সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি 'মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন' করবে।
আরও পড়ুন: সরকারকে হটিয়ে বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে: বিএনপি
মার্কিন কূটনীতিক সরকারকে কর্মসূচি সম্পর্কে অবহিত করেননি বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য সম্পর্কে খসরু বলেন, ‘এর মানে কি সরকারকে না জানিয়ে কোনো কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবে না কূটনীতিকরা? সরকার ঘটনা সম্পর্কে অবগত না থাকলে কর্মসূচির দুই দিন আগে কেন পুলিশ এলাকায় (শাহীনবাগ) ঘোরাফেরা করছিল? রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে পুলিশের একটি দলও রয়েছে। তাই সরকার এ বিষয়ে অবগত ছিল।
তিনি বলেন, এটি একটি অজুহাত হতে পারে না যে সরকার মার্কিন কূটনীতিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি কারণ তিনি তার কর্মসূচি সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করেননি। ‘সরকারকে জানালে নিরাপত্তা পাবেন, না হলে নিজের নিরাপত্তা নিজে গ্রহণ করবে। সরকারের এ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেশের নিরাপত্তার চরিত্র ফুটে উঠেছে।
এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের জনগণের পাশাপাশি বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে বলে হুঁশিয়ারি দেন খসরু।তিনি বলেন, মায়ের কান্নার লোকজন বিএনপির কিছু কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার জন্য আগে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
বিএনপি নেতা আরও বলেছেন, ‘যারা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কর্মসূচিতে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থা নেয়ার কথা। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত এমন কোনো পদক্ষেপ দেখিনি... সরকার নিজেই তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রকাশ করছে যে তারা এর পেছনে রয়েছে।’
তিনি বলেন, মন্ত্রীদের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে, সরকারের মদদেই এমন ঘটনা ঘটেছে। ‘তারা পরোক্ষভাবে ঘটনাটিকে সমর্থন করছে কারণ এটি তাদের সাহায্য ছাড়া ঘটতে পারে না।’
খসরু বলেন, মার্কিন কূটনীতিকের কর্মসূচিতে যারা ঝামেলা সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
আরও পড়ুন: কারাগারে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে: বিএনপি
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘মায়ের ডাক’ -এর সমন্বয়কের বাসা থেকে ফেরার পর নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বুধবার তিনি জরুরি ভিত্তিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একথা বলেছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস জরুরি ভিত্তিতে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলেন, তিনি এক বাসায় গিয়েছিলেন সেখানে অনেক লোক ছিল, বাসার বাইরেও অনেক লোক ছিল। তারা ওনাকে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে। এসময় তার সিকিউরিটির লোকেরা ওনাকে বলেছে আপনি তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান। কারণ ওরা আপনার গাড়ি ব্লক করে দেবে। সেই নিরাপত্তা অনিশ্চয়তায় তিনি তাড়াতাড়ি চলে আসেন। এতে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই অবস্থা জেনে তাকে বলেছেন, আপনার নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব আমাদের।
পিটার হাস ও তার লোকদের ওপর কেউ আক্রমণ করেছে কি না পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা জানতে চাইলে জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেছেন, না হামলা হয়নি। তবে গাড়িতে হয়তো দাগ লেগেছে। তাও সেটি নিশ্চিত নয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে আবারও আশ্বস্থ করে বলেন, আমরা আপনাকে ও আপনার লোকদের নিরাপত্তা দেবো। আপনি অধিকতর নিরাপত্তা চাইলে আমরা দিবো। তবে আপনি ওখানে গেছেন এই খবরটা কে প্রচার করলেন? আমি তো জানি না। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাননি। আমরা কিছুই জানি না। আপনি যাবেন আপনি এই তথ্য উল্লেখ করলো কে? ওইটার উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে আরও বলেছেন যে আপনি ওখানে গেছেন এটা কেমন করে প্রচার হলো। আপনি এটা বের করেন। আপনার লোকেই তো প্রকাশ করতে পারে। তিনি একটু দুশ্চিন্তায় আছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
মোমেন বলেন, আমাদের দেশের মিডিয়াকে আটকাতে পারবেন না, তারা খুব সোচ্চার। আপনারা যদিও বলেন বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা নেই। আমাদের মিডিয়া খুব সোচ্চার। যখনি যা হয় তারা এইটার পিছনে লেগে থাকে।
নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে মন্ত্রী বলেন, আপনি যদি চান আমি তাদের ১০ ফুট বা ১৫ ফুট দূরে রাখতে পারি। কিন্তু আমি তাদের কোথাও বাধা দিতে পারবো না। আর ওখানে লোকজন গেছে সে লোকজনকেও বাধা দিতে পারবো না। আপনার নিরাপত্তার জন্য আমরা তাদের দূরে রাখবো। আপনি জানেন এটি বাকস্বাধীনতার দেশ। তারা তাদের বক্তব্য দিবে, কর্মসূচি করবে আমি তাদের গ্রেপ্তার করতে পারবো না। আর যদি আপনি বা আপনার লোকের ওপর কোনো আক্রমণ হয়ে থাকে, জনগণের জানমাল ধ্বংস করে থাকে আমি তাকে গ্রেপ্তার করতে পারবো। এছাড়া আমি তাদের কিছু করতে পারবো না। তবে আপনার নিরাপত্তা আমরা দিবো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিডিয়াতে অনেক বানানো বানোয়াট তথ্য বিভিন্ন মিডিয়াতে আসে, ইউটিউবে আসে, আর বিদেশিরাও ওইসব দেখে ওখান থেকে রিপোর্ট করে ফেলে।
আরও পড়ুন: আত্মস্বীকৃত খুনিদের যেন কোন দেশ আশ্রয় না দেয় সে জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব তোলা হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এটি লজ্জার বিষয় যে জাতিসংঘের মতো একটা সংস্থা, যাদেরকে আমরা অত্যন্ত বিশ্বাস করি, তারাও আমাদের একটা খবর দিলো যে বাংলাদেশ থেকে ৭৬ জন লোক নিখোঁজ হয়ে গেছে। ওই ৭৬ জনের নামের তালিকা দেখে ১০জনকে পাওয়া যায়। তারা বেশ শান্তিতে আছে। আর ইন্ডিয়ানরা বললো তাদের দেশের দুই নাগরিক আমাদের লিস্টে ঢুকতে দেখেছে। ওরা খারাপ কাজ করেছিল তারা এখন দেশে আছে।
‘যারা অপকর্ম করে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাতিসংঘের মতো একটি সম্ভ্রান্ত সংস্থা আমাদের প্রশ্ন করে, তখন আমার দুঃখ লাগে এই জন্য যে জাতিসংঘকে পয়সা আমরা দেই, তারা যাচাই বাছাই না করেই কেমন করে এরকম অভিযোগ করে। যারা এ ধরনের কাজটা করেছে ওদের চাকরি চলে যাওয়া উচিৎ। কারণ অনেকে অনেক কিছু বলবে। তাদের দায়দায়িত্ব তারা তথ্যটা যাচাই বাছাই করে আমাদের কাছে পেশ করবে। আমাদের যদি কোনো অসুবিধা থাকে, আমরা তা গ্রহণ করবো। সংশোধনমূলক কিছু বললে আমরা সেটা চেষ্টা করবো।
গুমের বিষয়ে তিনি বলেন, দুনিয়ার সব দেশে কিছু লোক গুম হয়, কিছু লোক হারিয়ে যায়, তার চেয়ে বাংলাদেশ ভালো, আমেরিকায় তো অনেক বেশি লোক গুম হয়।
মোমেন বলেন, আমেরিকার তথ্যানুযায়ী প্রতিবছর কোনো আইনি প্রক্রিয়া না মেনেই আমেরিকান পুলিশ এক হাজার লোককে মেরে ফেলে। কত লোক মলে যায়, স্কুলে যায়, তাদের মেরে ফেলে। আমরা চাই না আমাদের দেশে একটা লোকও মারা যাক। বিনা বিচারে লোক মারা যাক। দুর্ঘটনা হলে আমরা তার বিচার করি। এবং যদি আমাদের সিকিউরিটির কেউ মারে অবশ্যই তার দায়ভার নিতে বাধ্য হবে। কোনো উপায় নেই। আমাদের দেশের মানুষ খুব সাবধান। ইউটিউবে অকামা বক্তব্য দিলে কেউ বিশ্বাস করবে না। দিন শেষে ওরাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত। আর মিথ্যাবাদী হিসেবে পরিচিত হবে।
আরও পড়ুন: মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে ডিক্যাব সদস্যদের সংবর্ধনা
পেপার স্প্রে দিয়ে জঙ্গি ছিনতাই: নাটোর আদালতে বিপুল নিরাপত্তায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আরিফ
ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে পেপার স্প্রে দিয়ে জঙ্গী ছিনিয়ের নেয়ার ঘটনার পর অতিরিক্ত নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) সদস্য আরিফকে নাটোর আদালতে হাজির করা হয়।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে অনারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য আরিফুর রহমান আরিফ ওরফে রাজুকে জেলা কারাগার থেকে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোছা. কামরুন্নাহারের আদালতে হাজির করা হয়।
আরও পড়ুন: পিপার স্প্রে করে জঙ্গি ছিনতাই: হিলি সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা
সেখানে পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দুপুর দেড়টার দিতে তাকে পুনরায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালতের এপিপি মাসুদ হাসান সেলিম জানান, ২০১৯ সালের ৩১ আক্টোবর নাটোর সদর উপজেলার কৈগাড়ি কৃঞ্চপুর এলাকার একটি মৎস্য খামাড়ের ঘরে অভিযান চালিয়ে আরিফুর রহমান আরিফ ওরফে রাজুকে আটক করেছিল র্যাব।
এসময় সেখান থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বই ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়েছিল। মামলার মোট ১৪ সাক্ষির মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলো।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে বাসচাপায় সহকারী প্রধান শিক্ষিকার মৃত্যু
কুষ্টিয়ায় ফুল ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
বান্দরবানে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আবারও বাড়ল
নিরাপত্তার কারণে জেলার দুইটি উপজেলা যথাক্রমে রুমা ও রোয়াংছড়িতে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ২০ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এনিয়ে সপ্তমবারের মতো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়ানো হলো। তবে এবার থানচি উপজেলা থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বুধবার বিকালে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি স্বাক্ষরিত এক গণ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বান্দরবান সেনানিবাস এর ১৬ নভেম্বর তারিখের পত্রের আলোকে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় এনে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় স্থানীয় এবং বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ১৬ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ৪ উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ৮ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি
তবে থানচি উপজেলা ভ্রমণের ওপর পূর্বের দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়।
পরে রুমা ও থানচিসহ চারটি উপজেলায় ২৩ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর, ৩১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর, ৫ নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর, ৯ নভেম্বর থেকে ১২ নভেম্বর এবং সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য ১০ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। এ পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ সাত জঙ্গি এবং তিনজন স্থানীয় সন্ত্রাসীকে ধরতে সক্ষম হয়েছে যৌথ বাহিনী।
অভিযানের অংশ হিসেবে সন্দেহভাজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে ভ্রমণের ওপর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে বান্দরবান। শহরের আবাসিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টগুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা।
পর্যটকবাহী গাড়িগুলো নির্ধারিত স্থানে পড়ে আছে। শ্রম নির্ভর শহরের পঞ্চাশ শতাংশ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ৩ উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি
বান্দরবানের ৩ উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ১২ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি
সৌদির সঙ্গে নিরপত্তা ইস্যুতে ২ চুক্তি সই করবে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ এবং কিংডম অব সৌদি আরব (কেএসএ) নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং ‘রুট টু মক্কা’ পরিষেবা সংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই করবে যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও সুসংহত করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, নারী পুলিশসহ পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতে বাংলাদেশ ও সৌদি আরব একসঙ্গে কাজ করবে।
শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা পদ্মায় সৌদি উপ-অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ড. নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল দাউদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম এটি নতুন চালু করা। আমাদের নারী পুলিশরা ভালো করছে। এটা (এ ধরনের সহযোগিতা) ভালো।’
উভয় পক্ষ শ্রমিক সমস্যা এবং কেএসএ থেকে কম দামে এলএনজি আমদানি নিয়েও আলোচনা করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সরকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন খাতে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
ঢাকা-রিয়াদ নিরাপত্তা সহযোগিতা ও রুট টু মক্কা উদ্যোগের দুটি চুক্তি সই করবে।
মোমেন বলেন, আমাদের মধ্যে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন:সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী হলেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান
সৌদি উপমন্ত্রী বাংলাদেশের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
উপমন্ত্রী অভিন্ন পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা সহযোগিতার জন্য সৌদি আরবের আগ্রহের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ শিগগিরই সৌদি আরবের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করছে।
সৌদি উপমন্ত্রী তার ব্যস্ততার মধ্যেও তাকে গ্রহণ করায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে সৌহার্দ্যপূর্ণ সমর্থনের জন্য সৌদি বাদশাহ, যুবরাজ ও সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশকে বাণিজ্যিকভাবে এলএনজি সরবরাহে সহায়তার আশ্বাস সৌদি আরবের
রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (এনপিপি) নির্মাণের কাজ চলছে পুরোদমে। কারণ ইউনিট-১ এর চুল্লি ভবনের বাইরের কনটেইনমেন্টের গম্বুজ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। বাইরের যে কোনও গুরুতর ধাক্কা থেকে রক্ষা করার জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলো উন্নত করা হয়েছে।
এটি দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করবে।
রূপপুর এনপিপির রাশিয়ান ঠিকাদার রোসাটম জানায়, কাজের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে গম্বুজের নিচের স্তর স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।
২০০ টন ওজনের এবং ৪৮ দশমিক আট মিটার উচ্চতায় ডিজাইনের অবস্থানে ৪৬ দশমিক তিন মিটার ব্যাসসহ ভারী কাঠামোটি বসাতে সময় লেগেছে পাঁচ ঘন্টা। ওপরের স্তরের বসানো এবং কংক্রিটিং আগামী দিনে সম্পন্ন হবে।
আরও পড়ুন: ঘোড়াশালে ৩৬৫ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্টের কার্যক্রম বন্ধ
এএসই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং রূপপুর এনপিপি নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আলেক্সি ডেরি বলেছেন, ‘বাইরের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হলো একটি স্থানীয়ভাবে প্রধান নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এটি একটি শক্তিশালী কংক্রিট কাঠামো যা ভূমিকম্প, সুনামি বা হারিকেনসহ গুরুতর বাহ্যিক প্রভাব থেকে চুল্লিকে রক্ষা করে।’
বাইরের কন্টেনমেন্ট ছাড়াও, রিঅ্যাক্টর বিল্ডিংটি ২০২১ সালে ভিতরের বসানো কন্টেনমেন্ট দিয়ে সুরক্ষিত। ডবল কনটেইনমেন্ট হলো ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টরসহ রাশিয়ান ডিজাইনের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, যা সর্বোচ্চ স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
রোসাটম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একটি অংশ, ট্রেস্ট রোসেম-এর বিশেষজ্ঞরা গম্বুজ আনয়ন এবং স্থাপনের কাজ করে।
মোট দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি দিয়ে সজ্জিত রূপপুর এনপিপি সাধারণ ঠিকাদার হিসেবে রোসাটম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ বাস্তবায়ন করছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়: মঙ্গলবার থেকে দেশে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং
জেনারেশন ৩+ রাশিয়ান ভিভিইআর রিঅ্যাক্টরগুলো সমস্ত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মানদণ্ডগুলো সম্পূর্ণরূপে মেনে চলে।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বিএইসি) অনুসারে ২০২১ সালে দুটি ইউনিটের দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট রূপপুর এনপিপি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল।
সরকার ২০২২ সালে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৩ সালে দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল।
কিন্তু পরবর্তীতে লক্ষ্য পুনঃনির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ী প্রথম ইউনিটটি ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এবং দ্বিতীয় ইউনিটটি ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা
বান্দরবানের ৩ উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি
নিরাপত্তার কারণে বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এনিয়ে ৬ষ্ঠ বারের মতো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলো। শনিবার বিকালে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বান্দরবান সেনানিবাসসের ১২ নভেম্বর তারিখের পত্রের আলোকে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় এনে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় স্থানীয় ৩টি উপজেলায় বিদেশি ও পর্যটকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ১২ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ৪ উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ৮ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি
এর আগে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। পরে রুমা ও থানচিসহ ৪টি উপজেলায় গত ২৩ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর, ৩১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর, ৫ নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর এবং সর্বশেষ ৯ নভেম্বর থেকে ১২ পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য গত ১০ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। এ পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ ৭ জঙ্গি এবং ৩জন স্থানীয় সন্ত্রাসীকে ধরতে সক্ষম হয়েছে যৌথ বাহিনী। অভিযানের অংশ হিসেবে সন্দেহভাজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে ভ্রমণের ওপর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে বান্দরবান। শহরের আবাসিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্ট গুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা। পর্যটকবাহী গাড়ি গুলো নির্ধারিত স্থানে পড়ে আছে। শ্রমনির্ভর শহরের পঞ্চাশ শতাংশ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ৩ উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি
বান্দরবানের ৩ উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ১২ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি