সংকট
সংকট নিরসনে পরোক্ষ আলোচনায় সিরিয়া-ইসরায়েল; মধ্যস্থতায় আরব আমিরাত
সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যকার দীর্ঘদিনের উত্তেজনা নিরসনে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় এ বিষয়ে দুদেশের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা।
বুধবার (৭ মে) প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।
আল-শারা বলেন, ‘সিরিয়া ও ইসরায়েল এখন মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় পরোক্ষভাবে আলোচনা করছে। এ আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো উভয় দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা, যাতে করে এটি আবারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না সিরিয়া আবারও সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হোক। আমাদের লক্ষ্য হলো, দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।’
এ সময় সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইসরায়েলের অযাচিত হস্তক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। তারা ১৯৭৪ সালের অস্ত্রবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করছে। আমরা দামেস্কের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জানিয়েছি যে, সিরিয়া ১৯৭৪ সালের চুক্তির শর্ত রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন: সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলছে ইসরায়েল: এরদোগান
সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে, এমনকি প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের কাছেও বিমান হামলা চালিয়েছে। আল-শারার অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার অজুহাত দেখিয়ে গত এক সপ্তাহেই ইসরায়েল সিরিয়ায় ২০ বারের বেশি বোমাবর্ষণ করেছে।
এ বিষয়ে ইসরায়েলের দাবি, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দ্রুজ মিলিশিয়াদের সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে বসবাসরত দ্রুজ সংখ্যালঘুদের রক্ষায় এসব হামলা চালাচ্ছে তারা।
চলতি বছরের মার্চ মাসে সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত আলাউই অধ্যুষিত অঞ্চলে গণহত্যার ঘটনার পর দ্রুজ এলাকায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপরই এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে ইসরায়েল।
গত ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে সিরিয়ায় শতাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তারা বলছে, সিরিয়ার নতুন শাসকদের তারা জিহাদপন্থি মনে করে এবং তাদের হাতে উন্নত অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকাতেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে।
ইসরায়েলি সেনারা গোলান মালভূমির ১৯৭৪ সালের অস্ত্রবিরতির সীমারেখা অতিক্রম করে মালভূমির জাতিসংঘ নিয়ন্ত্রিত নিরপেক্ষ অঞ্চলেও প্রবেশ করেছে এবং দক্ষিণ সিরিয়ায় আরও গভীরে অভিযান চালিয়েছে।
তবে ইসরায়েলি বাহিনীসহ জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক বাহিনীকেও নিরপেক্ষ অঞ্চল ছেড়ে ব্লু-লাইন বা বিচ্ছিন্ন রেখায় ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আল-শারা।
এদিকে, সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলার সমালোচনা করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বলেন, ‘এসব হামলা দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না। বোমাবর্ষণ ও আগ্রাসন বাজে একটি দৃষ্টান্ত। প্রতিবেশীর ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে কোনো দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না।’
উল্লেখ্য, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটসের হুমকির পর গত শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল দামেস্কের প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের কাছে হামলা চালায়। সে সময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, সিরিয়ার নতুন শাসকরা যদি দ্রুজ সম্প্রদায়ের জনগণকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ইসরায়েল এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও এ হামলাকে সিরিয়ার নতুন শাসকদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেন।
৬৫ দিন আগে
সংকট মেটাতে শিল্পে বাড়তি ২৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত: উপদেষ্টা
সংকট মেটাতে শিল্পে বাড়তি ২৫ কোটি ঘনফুট (২৫০ মিলিয়ন ঘন ফুট-এমএমসিএফডি) গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেন, ‘পত্র-পত্রিকায় লেখা হয়েছে গ্যাস সরবরাহের অপ্রতুলতার কারণে শিল্পে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটছে। এই পরিস্থিতিটা সম্পর্কে আমরা জানি।’
তিনি বলেন, ‘বড় বড় শিল্প উদ্যোক্তা যারা রয়েছেন, আজকে তারা এখানে ছিলেন। আমরা সবাই মিলে এটা নিয়ে আলাপ করেছি। নতুন নতুন শিল্প হয়ে গেছে। আমরা কিন্তু গ্যাসের সরবরাহ কমাইনি। এখন যে ওনাদের (ব্যবসায়ী) আমেরিকার রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফের কারণে সমস্যা হচ্ছে, এজন্য আমরা এটা সম্পর্কে খুব সংবেদনশীল। এজন্য আমরা কতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
বুধবার (৭ মে) সচিবালয়ে শিল্পে গ্যাস সংকট নিয়ে শিল্প উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে যে গ্যাস দেওয়া হত, সেখান থেকে আমরা ১৫ কোটি ঘনফুট (১৫০ এমএমসিএফডি) গ্যাস আমরা বিদ্যুতের পরিবর্তে শিল্পে দেব। এটা হচ্ছে আমাদের প্রথম সিদ্ধান্ত। দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে, মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত অতিরিক্ত চারটি এলএনজি কার্গো আনব।’
‘এতে আরও ১০ কোটি ঘনফুট (১০০ এমএমসিএফডি) গ্যাস। সুতরাং সর্বমোট শিল্পে গ্যাসের বরাদ্দ ২৫০ কোটি ঘনফুট বাড়বে। বরাদ্দের ক্ষেত্রে আমরা শিল্প এলাকায় দেব। আমরা একমত হয়েছি যে, কাজগুলো আমরা একসঙ্গে করব। শিল্প এলাকাগুলো ওনারা (ব্যবসায়ী) চিহ্নিত করে দেবেন। সেইগুলোতে আমরা সরবরাহ বাড়াব ও এগুলো ক্রমাগত তদারকি করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিল্পদ্যোক্তারা আমাদেরকে আর একটা কথা জানিয়েছেন যে, অবৈধ সংযোগের কারণে ওনারা অনেক ক্ষেত্রে গ্যাস পান না। এ বিষয়ে একটা জয়েন্ট টাস্কফোর্স হবে। সেই টাস্কফোর্সের সঙ্গে কাজ করে খুব দ্রুত এই অবৈধ সংযোগগুলো বিছিন্ন করব। আমরা আরেকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিশেষ করে তিতাস গ্যাস একটা অনলাইন সেটআপ করবে। শিল্প কারখানায় ফিল্ড ভিজিটের মাধ্যমে আমরা যে বাড়তি গ্যাস দিলাম, এর ফলে যে তাদের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এটি নিশ্চিত করব। এছাড়া আগামী বছর ১০০টি কূপ খনন করা হবে।’
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় নতুন কুপের অনুসন্ধান করব। আমরা ইতোমধ্যে ওনাদেরকে (ব্যবসায়ী) জানিয়েছি তিনটি গ্যাসক্ষেত্রে কাজ করে আমরা ২৭ এমএমসিএফডি নতুন গ্যাস পেয়েছি। এগুলো কিন্তু পাইপলাইনে এসে গেছে। আমরা গ্যাস অনুসন্ধানে নজর দিচ্ছি। আমরা ৫০টা যে কূপ খনন করছি, এটা যদি সফল হয় তবে সেখান থেকে আরও ৫০০ এমএমসিএফডি গ্যাস আমরা আনতে পারব।
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, সংযমের আহ্বান তারেক রহমানের
তিনি বলেন, ভোলাতে নতুন করে সিসমিক সার্ভে ও ড্রিলিং করা হচ্ছে। আমরা রিগ (গ্যাস অনুসন্ধান যন্ত্র) কিনতেছি। এখন যে রিগগুলো আছে সেগুলো গভীরে যায় না। এজন্য আমরা একটি ডিপ রিগ কিনতেছি। আমরা বিবিয়ানার পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন।
তিনি আরও বলেন, ‘বাপেক্স ছাড়াও আমরা উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এই খননের কাজ করব। ইতোমধ্যে ভোলায় পাঁচটি কূপের টেন্ডার দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘সাতজন ভিড়ার দরপত্র কিনেছিলেন। আমরা তাদের বলেছি, দরপত্র তো কিনলেন, কিন্তু জমা কেন দিলেন না। তাদের ফিডব্যাক আমরা পেয়েছি। একটি কমিটি সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। ডকুমেন্টটা মোডিফিকেশন করা হচ্ছে, টেন্ডারটা আবার আহ্বান করা হবে।’
'আমরা যে নতুন মূল্যে গ্যাস আনি সেই তুলনায় গ্যাসের দাম অনেক কম। তবুও আমরা আপাতত গ্যাসের দাম বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। বিদ্যুতের কোনো মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না।’
বিদ্যুৎ থেকে গ্যাস নিয়ে শিল্পে দিলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়ে লোডশেডিং বাড়বে কিনা- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিদ্যুৎ থেকে গ্যাস কাট করলে সেই ঘাটতিটা পূরণে তখন আমরা তরল জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালাব। এখন আমরা সেগুলো চালাচ্ছি, তবে সেই পরিমাণে চালাচ্ছি না। তখন হয়তো আমরা একটু বেশি পরিমাণে চালাব। আমরা রমজানের সময় বিদ্যুৎকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। সেচকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। এখন যে বাম্পার ফলনের কথা বলছেন নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এর অন্যতম কারণ। এখন আমরা সেই অগ্রাধিকারটা শিল্পকে দেব।’
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
৬৬ দিন আগে
বরাদ্দ সংকটে হুমকিতে পবিপ্রবির ঐতিহ্যবাহী দুটি লেক
অবহেলা আর অযত্নে ক্রমেই ঝুঁকিতে পড়ছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)-এর স্বপ্নিল সৌন্দর্যের অন্যতম প্রতীক, ঐতিহ্যবাহী লাল কমল ও নীল কমল লেক। লেকদুটির পার্শ্ববর্তী মাটি সরে গিয়ে এমব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় জলবায়ু ও দুর্যোগপ্রবণ আবহাওয়ায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের একাধিক শিক্ষক জানান, সম্প্রতি টানা বৃষ্টিপাত এবং কালবৈশাখী ঝড়ের প্রভাবে লেকদুটির পাড় ভেঙে পড়ছে। বিশেষ করে লাল কমল লেকের পাশে অবস্থিত প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো নারিকেল গাছ ও এক যুগেরও বেশি বয়সী মেহগুনি গাছগুলোর গোড়ার মাটি সরে গিয়ে গাছগুলো এখন যেকোনো সময় উপড়ে পড়ার আশঙ্কায় আছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনৈতিক সংকট বিরাজ করলেও পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনৈতিক সংকট প্রকট। তবুও আমরা পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি।’
আরও পড়ুন: বৈসাবিকে ঘিরে বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ফেরাতে মারমাদের উদ্যোগ
তিনি আরও বলেন, ‘লাল কমল ও নীল কমল নামের দুটি লেক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই দুটি লেক শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, বরং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও স্থানীয় জলবায়ু নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক। তাই লেক দুটির চারপাশে পাইলিংয়ের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমরা।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে এ বিষয়ে বিশেষ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে বলে জানান উপাচার্য। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা ইউজিসির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছি এবং বিশ্বাস করি, কমিশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে এ বছরের বাজেট থেকেই অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেবেন।’ তিনি গণমাধ্যমসহ সব মহলের সহায়তা কামনা করেন, যাতে এই উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ক্যাম্পাস গড়তে আমাদের প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের উপপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মুহাইমিনুল আলম ফাইয়াজ, কৃষি অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ড. সগিরুল ইসলাম মজুমদার ও ড. মুহাম্মাদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘লেকদুটির প্রাকৃতিক পরিবেশ শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, স্থানীয় বাসিন্দা ও লেকের পাড়ের মেহগনি গাছগুলোতে অতিথি পাখিদের আবাসস্থল হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই লেক ঘিরেই পবিপ্রবির জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে।’
আরও পড়ুন: রূপসা নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ
আইন অনুষদের শিক্ষার্থী মীর মো. নুরুননবী, ইএসডিএম অনুষদের শিক্ষার্থী ও ইএসডিএম ক্লাবের সভাপতি আফিয়া তাহমিন জাহিন এবং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারদিন হাসান বলেন, ‘প্রতিদিন ক্লাস শেষে আমরা এখানের দৃষ্টিনন্দন কাঠের ব্রিজের ওপর ও লেকের পাড়ের বেঞ্চের ওপর বসে একটু স্বস্তি খুঁজি। কিন্তু এখন চারপাশের ভাঙা পাড় ও গাছের হেলে পড়ার ভয়ে আতঙ্ক নিয়ে হাঁটতে হয়। এটা শুধু সৌন্দর্যের নয়, নিরাপত্তার বিষয়ও।’
কর্মচারী সমিতির সদস্য মো. মোশারেফ হোসেন, মাসুম বিল্লাহ, রেদোয়ানুল ইসলাম রমজান ও কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে লেক পাইলিংয়ের দাবি জানিয়ে আসছি। এটা অল্প পয়সায় মেরামতের কাজ নয়, ইউজিসির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ তারা যেন এবছরের বিশেষ অর্থ বরাদ্ধ দিয়ে আমাদের এটার স্থায়ী সমাধান করে দেন।’
পর্যটক হিসেবে আগত জয়পুরহাট জেলার রোজিনা আক্তার বলেন, ‘এমন শান্ত পরিবেশ খুব কম জায়গায় পাওয়া যায়। কিন্তু ভাঙা পাড় আর ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো দেখে হতাশ হয়ে যেতে হয়। কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দুর্ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা মো. শহীদ সরদার, সাইদুর রহমান খান, রিয়াজ কাঞ্চন ও কামাল হোসেন বলেন, ‘এই লেক দেখতে অনেক মানুষ আসে, আমাদের দোকানপাটও চলে ভালো। কিন্তু যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের রুজি-রোজগারও বন্ধ হয়ে যাবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, শিক্ষার পরিবেশ, জননিরাপত্তা এবং স্থানীয় অর্থনীতিও হুমকির মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে জাবিতে চালু হলো ইলেকট্রনিক কার্ট গাড়ি
বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশ সচেতন মহল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)র প্রতি অনতিবিলম্বে এ বছরের বাজেট থেকে প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে লাল কমল ও নীল কমল লেকের চারপাশে টেকসই পাইলিং ও সংরক্ষণের ব্যবস্থার জোর দাবি জানিয়েছেন।
৭৭ দিন আগে
‘জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্বের নজরে আনবে’
বাংলাদেশে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের ১৩ থেকে ১৬ মার্চ নির্ধারিত সফর রোহিঙ্গা সংকটের আশু সমাধান খুঁজে বের করতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরের আগে বুধবার (১২ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ কথা জানায়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, 'বাংলাদেশের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সফর। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সফর এই সংকটকে বৈশ্বিক নজর কাড়তে সহায়তা করবে। 'আমরা আশা করি জাতিসংঘ মহাসচিব এ বিষয়ে একটি ভালো বার্তা দেবেন।’
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই অন্যান্য বৈশ্বিক সংকট সত্ত্বেও রোহিঙ্গা সংকট যাতে আবার বিশ্বের নজরে আসে—তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট তুলে ধরছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে, বৈশ্বিক নজর সেখানেই রয়েছে।’
প্রেস সচিব বলেন, সরকার রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান চায়, যাতে তারা নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে পারে। ‘এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
আলম বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব বৃহস্পতিবার(১৩ মার্চ) বিকাল ৫টায় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ একসঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য কক্সবাজারে যাওয়ার আগে শুক্রবার(১৫ মার্চ) সকালে ড. ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
আরও পড়ুন: ফ্রান্স-বাংলাদেশ সম্ভাব্য রাফাল চুক্তি নিয়ে প্রতিবেদনটি 'অসত্য': প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা ব্যাপকভাবে কমেছে। আশা প্রকাশ করা হচ্ছে, এই সফরটির মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের কিছু উপায় খুঁজে পেতে সহায়তা করবে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করা হবে।
তিনি বলেন, 'আমরা তহবিল সহায়তায় কোনো বিঘ্ন দেখতে চাই না। আমরা তাদের পুষ্টি চাহিদার ঘাটতি করতে চাই না।’
সম্প্রতি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, জরুরি ভিত্তিতে নতুন তহবিল ছাড়া, মাসিক রেশন মাথাপিছু ১২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে মাথাপিছু ৬ ডলারে নামিয়ে আনতে হবে।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশে তাদের জরুরি প্রতিক্রিয়া কার্যক্রমের জন্য তহবিলের গুরুতর ঘাটতির বিষয়ে সতর্ক করেছে, যা বাংলাদেশে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর খাদ্য সহায়তা ঝুঁকিতে ফেলেছে।
সকল রোহিঙ্গা সহায়তার রশিদ পায় যার মাধ্যমে ক্যাম্পে নির্ধারিত খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে তাদের পছন্দমতো খাবার নিতে পারে। পূর্ণ রেশন বজায় রাখতে ডব্লিউএফপির জরুরি ভিত্তিতে এপ্রিলের জন্য দেড় কোটি ডলার এবং ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
আলম বলেন, এই সফর সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে সামনে রেখে বৈশ্বিক সমর্থন আদায়ের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ফিনল্যান্ড ও মালয়েশিয়াও এই আয়োজনের কো-স্পন্সর হিসেবে যোগ দিয়েছে।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় পৌঁছালেও প্রধানত শুক্র ও শনিবার দুটি কর্মদিবস থাকবে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজেদের ব্যস্ততার কথা তুলে ধরে আবুল কালাম আজাদ বলেন, তারা আশা করছেন এক লাখ রোহিঙ্গা জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে একসঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন।
মিয়ানমারে নিপীড়ন ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের উদারতার স্বীকৃতি হিসেবে গুতেরেস ও ড. ইউনূস শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের সঙ্গে ইফতারে অংশ নেবেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও গুতেরেস সকালে (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং একই দিন সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।
বার্ষিক রমজান সফরের অংশ হিসেবে গুতেরেস সুশীল সমাজের তরুণ প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার হিসেবে এক দশকের দীর্ঘ মেয়াদে জাতিসংঘ মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বাস্তুচ্যুত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে নিয়মিত রমজান পালন করার জন্য সংহতি সফরকে একটি বার্ষিক ঐতিহ্যে পরিণত করেছেন গুতেরস।
গুতেরেস এক বার্তায় বলেন, 'প্রতি রমজানে আমি বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংহতি সফর করি এবং রোজা রাখি। এই মিশন বিশ্বকে ইসলামের আসল চেহারা মনে করিয়ে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রমজান করুণা, সহানুভূতি এবং উদারতার মূল্যবোধকে তুলে ধরে। এটি পরিবার এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুনর্মিলনের একটি সুযোগ...। আমি সবসময় এই মৌসুমে অসাধারণ শান্তির অনুভূতিতে আরও অনুপ্রাণিত হই।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস সম্প্রতি ড. ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে আশা প্রকাশ করেন যে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন বৈশ্বিক অগ্রাধিকারকে নবায়ন করবে এবং তাদের দুর্দশার বৃহত্তর সমাধানকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।
গুতেরেস বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত করতে তার তৎপরতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি লিখেছেন, 'রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিসহ মিয়ানমারের সংকটের রাজনৈতিক সমাধানে আমি আমার সদিচ্ছা অব্যাহত রাখব। সেই লক্ষে আঞ্চলিক পক্ষ, অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব রাখাইনের জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা ও জীবিকার সহায়তা কীভাবে সর্বোচ্চ করা যায়—সে বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমগুলোকে দিকনির্দেশনা দিতে তার জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপকদের অনুরোধ করেছেন।
জাতিসংঘ মিয়ানমারের সমন্বয়কারী এবং আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারীর সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিখার দেবে। যার মাধ্যমে রাখাইন এবং পুরো মিয়ানমারে অভাবী লোকদের জন্য জরুরি ত্রাণ, নিরাপদ, দ্রুত, টেকসই এবং অবাধ মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা যায়।
আরও পড়ুন: মাহফুজ আলম হিযবুত তাহরীরের সদস্য নন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ ব্যবস্থা কীভাবে প্রক্রিয়াটিকে সর্বোত্তমভাবে সমর্থন করতে পারে—তা বোঝার জন্য আমরা সদস্য রাষ্ট্রের পরামর্শের পরে সম্মেলনের সম্মত ফলাফল এবং পরিকল্পনার জন্য অপেক্ষা করছি।’
তিনি চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসকে তার চিঠির জন্য ধন্যবাদ জানান। যেটি ৭ ফেব্রুয়ারি রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান তার কাছে পৌঁছে দেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় তাদের সমর্থনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলে রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব এবং রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন তিনি।
১২২ দিন আগে
রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট চরমে, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে গণপরিবহন সংকট, যা ধারণ করেছে তীব্র আকার। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
আবদুল্লাহপুর, কুড়িল, বসুন্ধরা, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, কাকরাইল এবং পল্টন এলাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন অপেক্ষমান শত শত যাত্রী, অথচ দেখা নেই বাসের। যে দু-চারটি বাস যাচ্ছে তারও গেট লাগানো এবং যাত্রীতে ঠাসা, ওঠার নেই কোনো উপায়।
সরেজমিনে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দেখা যায়, সড়কে বাস না চললেও রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এবং রামপুরা ব্রিজের শেষ প্রান্তে সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে আছে। কেন তারা রাস্তায় নামেনি জানতে চাইলে ভিক্টর বাসের হেলপার সুমন বলেন, নতুন নিয়মানুযায়ী বাস গোলাপি রঙ করতে অনেক বাসই নামেনি রাস্তায়। আর ই-টিকেটিং চালু হলে ড্রাইভার-হেলপার ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই বাকিরাও বাস নিয়ে রাস্তায় নামেনি।
গত সপ্তাহে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর হয়ে গাজীপুর রুটে রাজধানীতে চলাচল করা বাস গোলাপি রঙ করে ই-টিকেটিং এর আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
আরও পড়ুন: নওগাঁ থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
প্রাথমিকভাবে ২১ কোম্পানির ২ হাজার ৬১০ বাস গোলাপি রঙের ই-টিকেটিংয়ের আওতাভুক্ত করা হলেও আগামীতে এ সংখ্যা এবং রুটের পরিধি আরও বাড়বে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
রঙ করার এ কার্যক্রমে দুই দিন ধরে আব্দুল্লাহপুরের এই রুটে রীতিমতো বাস সংকট দেখা দিয়েছে। এর পাশাপাশি ট্রাফিক কার্যক্রম জোরদার করায় অনেকেই মামলার ভয়ে বাস নিয়ে বের হচ্ছেন না। অনেক ড্রাইভার-হেলপার দাবি করছেন ই-টিকেটিং ব্যবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।
অনাবিল বাসের চালক আলমগীর বলেন, ‘জায়গায় জায়গায় সার্জেন্ট আর চেকপোস্ট। রাস্তায় নামলেই শিওর মামলা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাস নিয়ে নামা যাবে তখন।’
এদিকে বাসের সংখ্যা কম থাকায় রাস্তায় বেড়েছে রিকশা আর বাইকের চলাচল। একদিকে অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, অন্যদিকে বেপরোয়া বাইক- সব মিলিয়ে এই রুটে একটু পর পর সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।
মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যেতে বের হয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন। নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, প্রায় আধাঘণ্টার ওপর দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাননি তিনি। রিকশা ভাড়া আকাশচুম্বী। সব মিলিয়ে হঠাৎ করেই রাস্তায় অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে পুরানা পল্টন যাবেন ব্যবসায়ী শফিকুর রহমান। রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত হেঁটে এসে ভিড় ঠেলে কোনো রকমে রমজান বসে উঠেছেন। ভেবেছেন, কাকরাইল নেমে সেখান থেকে আবার হেঁটে পুরানা পল্টন যাবেন। কিন্তু ভয়াবহ যানজটের কারণে বাসটিকে চলতে হচ্ছে ঢিমেতালে। পরে মালিবাগ-মৌচাক নেমে আবার হাঁটা শুরু করেন তিনি।
সড়কে দুর্দশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, রাস্তায় নেমে জানতে পারি ভিক্টর পরিবহনসহ কয়েকটি বাস চলছে না। যে কারণে যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। কেউ পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন। কিন্তু গাড়ি উঠেও দেখা যাচ্ছে সেটা চলছে না। এতে উভয়সংকটে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।
আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টিপাতে ঢাকায় জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
এদিকে বাস সংকটের মধ্যেই রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুনর্বাসন এবং আর্থিক সাহায্যের দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন দুবাই ফেরত প্রবাসীরা। এতে করে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, বাংলামোটর, কাকরাইল এবং কাওরানবাজার এলাকাতেও বড় রকমের যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কে যানজট এবং বাসের সংখ্যা কেন কম সে ব্যাপারে সদুত্তর দিতে পারেনি ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। ট্রাফিক বিভাগের উত্তরা জোনের সহকারী ডেপুটি কমিশনার (এডিসি) ফজলুল করিম বলেন, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে আমরাও বাসের সংখ্যা কম পেয়েছে। কিন্তু কী কারণে রাস্তায় বাস কম সে ব্যাপারে এখনো পরিষ্কার জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, অনেক বাস গোলাপি রঙের ই-টিকেটিং এর আওতায় আসতে চাওয়ায় রঙ করতে দেয়া হয়েছে। এতে করে স্বাভাবিকের তুলনায় কম বাস নেমেছে রাস্তায়।
বাড্ডা ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার শারমিন আক্তার বলেন, গোলাপি রঙের পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে অনেক বাসের হেলপার এবং ড্রাইভার ধর্মঘট করেছে। তাই তারা বাস নিয়ে রাস্তায় নামেনি। এতে করেও গণপরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীতে শুরু কাউন্টার থেকে যাত্রী তোলার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী তোলার দাবিতে রাজধানীর সায়দাবাদ এবং যাত্রাবাড়ি এলাকায় দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করেছে বাস ড্রাইভার-হেলপাররা। এতে করে এসব এলাকার যান চলাচল এক রকমের বন্ধ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, 'আমরা সাফ জানিয়ে দিয়েছে রাজধানীর সড়কে কোনো ভাঙাচূড়া আনফিট গাড়ি চলবে না। ধীরে ধীরে সব গাড়ি ই-টিকেটিং এর আওতায় আনা হবে। এর প্রতিবাদে তুরাগ এবং বলাকা বাসের শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছিল। তাদের বুঝিয়ে শুনিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।'
ই-টিকেটিং এর ডিভাইস সংক্রান্ত কাজের কারণে অনেক বাস সড়কে নামেনি। এছাড়া অনেকে বুঝে না বুঝে এ ব্যবস্থার বিরোধীতা করছে। যারা সড়কে বাস না নামিয়ে উল্টা রাস্তা অবরোধ করছে তাদেরকে কেউ খারাপ উদ্দেশ্য হাসিলে ইন্ধন দিচ্ছে বলে দাবি করেন সাইফুল।
আরও পড়ুন: তৃতীয় দিনের ধর্মঘটে বেনাপোলে বাস বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
ক্ষোভ জানিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এটা নতুন কিছু না। কোনো সিদ্ধান্ত বাস মালিকদের মন মতো না হলে তারা যাত্রী জিম্মির হাতিয়ার ব্যবহার করে। অন্যদিকে সরকার সিদ্ধান্ত দেয় ঠিকই কিন্তু মনিটরিং করে না। এতে করে সড়কে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। সরকারের উচিত মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করা।
দ্রুত সমস্যা সমাধান করে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি আনফিট গাড়ি, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা, বাড়তি ভাড়া রাখা বন্ধ করতে সরকারের শক্তিশালী মনিটরিং প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
১৫২ দিন আগে
জাতি সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট প্রত্যাশা করে না: বিএনপি
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবির মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট জাতি প্রত্যাশা করে না।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বুধবার (২৩ অক্টোবর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ফ্যাসিবাদের দোসররা যাতে বিভিন্ন চক্রান্তের মাধ্যমে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান সালাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রপতির পদ সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ এবং এটি একটি প্রতিষ্ঠানও। পদত্যাগ বা অপসারণের কারণে এই পদ শূন্য হলে তা সাংবিধানিক ও জাতীয় সংকট তৈরি করবে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় সংকটের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ যদি বিলম্বিত হয় বা বাধাগ্রস্ত হয়, তবে তা জাতির আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে যাবে।
ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট ও তাদের সহযোগীরা যাতে নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
জাতি ঐক্যবদ্ধ এবং সম্মিলিতভাবে এসব চ্যালেঞ্জ ও চক্রান্ত মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা।
বিএনপি রাষ্ট্রপতির অপসারণ বা পদত্যাগ চায় কিনা জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য থাকলে এই মুহূর্তে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে, যা জাতি আশা করে না।’
আরও পড়ুন: হাসিনার মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারে সরকারের বিরুদ্ধে'লুকোচুরি'র অভিযোগ রিজভীর
'জনতার চোখ' পত্রিকায় এক নিবন্ধে মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী দাবি করেছেন রাষ্ট্রপতি তাকে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার কাছ থেকে তিনি(রাষ্ট্রপতি) কোনো পদত্যাগপত্র পাননি।’মূলত এর পরই একদল ছাত্র-জনতা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা তাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছে।
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র না পাওয়া নিয়ে রাষ্ট্রপতি মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ করে বলেন, ‘তার বক্তব্য তার শপথ ভঙ্গের শামিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি বলে রাষ্ট্রপতির দাবি মিথ্যা ও শপথের লঙ্ঘন।’
এর আগে সালাহউদ্দিনসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির চেষ্টা নস্যাতে জাতীয় ঐক্য জোরদারের আহ্বান জানান।
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, তারা গণতন্ত্রপন্থী সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসরদের যেকোনো ষড়যন্ত্রকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করবেন।
সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ ও সালাহউদ্দিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে নজরুল ইসলাম খান প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সংস্কারের চলমান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তারা জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা তাদের কাছে কোনো মতামত চেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে নজরুল বিষয়টি এড়িয়ে যান।
তবে দেশে যাতে নতুন কোনো সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট তৈরি না হয় সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: সাংবিধানিক-রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির প্রচেষ্টা বানচালে ঐক্যের আহ্বান বিএনপির
২৬২ দিন আগে
সাংবিধানিক-রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির প্রচেষ্টা বানচালে ঐক্যের আহ্বান বিএনপির
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবির মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির যেকোনো প্রচেষ্টা বানচাল করতে জাতীয় ঐক্য জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসরদের যেকোনো ষড়যন্ত্র তারা গণতন্ত্রপন্থি সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী সরকারের সহযোগীরা দেশে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। আমরা মনে করি, বহু প্রাণের বিনিময়ে দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা যে পরিবর্তন করেছি তা পুনরুদ্ধার করতে জাতীয় ঐক্য আরও সুসংহত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
এর আগে সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ ও সালাহউদ্দিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন নজরুল ইসলাম।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সংস্কারের চলমান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তারা জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনদুর্ভোগের কথাও তারা বলেছেন। ‘এ সমস্যা সমাধানে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি আমরা।’
নজরুল ইসলাম বলেন, সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন এবং ছাত্র-যুব সংগঠনের সমন্বয়ে একটি ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। ‘দেশে যেন কেউ নতুন কোনো রাজনৈতিক বা সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, সরকারের উচিত সংস্কার প্রক্রিয়া জোরদার করা এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটি দ্রুত সম্পন্ন করা। এটিই সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের মূল আকাঙ্ক্ষা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণ যে অব্যাহত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে সরকারকে তা সমাধান করতে হবে এবং চূড়ান্তভাবে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে, যা সাম্প্রতিক গণআন্দোলনের মূল আকাঙ্ক্ষা।
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারের দোসররা সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির অশুভ প্রচেষ্টা চালালে আন্দোলনে থাকা সব গণতন্ত্রপন্থি রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে এই সংকট মোকাবিলা করবে বলেও আমরা জানিয়েছি।’
রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা তাদের কাছে কোনো মতামত চেয়েছেন কি না তা জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান নজরুল।
পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবন ঘিরে বিক্ষোভ, নিরাপত্তা জোরদার
২৬২ দিন আগে
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বেইজিংয়ের আরও সক্রিয় ভূমিকা চায় ঢাকা
বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের আরও সক্রিয় ভূমিকা চেয়েছে কারণ ঢাকা মনে করে মিয়ানমারের ওপর চীনের অনেক প্রভাব রয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমারের ওপর চীনের অনেক প্রভাব রয়েছে। এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা চীনের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করছি।’
রোহিঙ্গা সংকটকে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকায় এক সেমিনারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা জানি একটিই সমাধান আছে- আর তা হলো তাদের (রোহিঙ্গাদের) নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে- মিয়ানমার।’আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোই একমাত্র সমাধান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন কামনা করে হোসেন বলেন, অনেক সময় অন্য সমাধানের পরামর্শ দেওয়া হয়, কিন্তু সেসব সমাধানের কোনোটিই কার্যকর নয়।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের পুনরাবৃত্তি যেন না হয় এবং তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা দিয়ে তাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
হোসেন জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও চীন সবসময় একে অপরের সঙ্গে সমতার সঙ্গে আচরণ করে এবং একে অপরকে সমর্থন দিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান ও লাভজনক সহযোগিতার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করে।
চীনা দূতাবাস সেন্টার ফর চাইনিজ স্টাডিজ (এসআইআইএস-ডিইউ) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) -এর সহযোগিতায় 'বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক: একটি ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি' শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: জরুরি সংস্কারের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে ফিরতে পারে বাংলাদেশ: বিশ্ব ব্যাংক
এসআইআইএসের একাডেমিক অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইয়াং জিমিয়ান, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কিত শ্বেতপত্র কমিটির সভাপতি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিআইআইএসএস’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত ও আন্তর্জাতিক সমাধানের গুরুত্ব তুলে ধরে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ সমস্যার সমাধান বাংলাদেশের একার পক্ষে সম্ভব নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হাতেও রয়েছে।
ঢাকার একটি হোটেলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউএনবির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা বিষয়টি উত্থাপন অব্যাহত রাখব। মালয়েশিয়া আমাদের এ কাজে সহযোগিতা করবে। আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে পারি না। এটি এমন একটি বিষয় যযা আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধান করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এবং আমরা আসিয়ানের মাধ্যমে, মালয়েশিয়ার সরকারের মাধ্যমে এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করি।’
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আসিয়ানের পরবর্তী সভাপতি হতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া।
সাত বছর আগে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশ এখন কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে।
২০২৪ সালে মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশপাশের সম্প্রদায়ের বাংলাদেশিসহ ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে সহায়তার জন্য ৮৫ কোটি ২০ লাখ ডলারের আবেদন করে।
ইউএনএইচসিআর’র মতে, এই আবেদনটির পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত অর্থায়ন করা হয়নি।
আরও পড়ুন: সহযোগিতার গভীর সম্পর্কের 'ঐতিহাসিক সুযোগের' সম্মুখে ঢাকা-বেইজিং: রাষ্ট্রদূত
২৭০ দিন আগে
দেশে সারের কোনো সংকট নেই: কৃষি উপদেষ্টা
দেশে সারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, দেশে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যাপ্ত সারের মজুদ রয়েছে। তাই কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী সার কিনতে ও ব্যবহার করতে পারবে।
আরও পড়ুন: বন্যায় কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত নির্ধারণ করে পুনর্বাসনের আহ্বান কৃষি উপদেষ্টার
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, বন্যার্তদের পুনর্বাসনে গৃহীত পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) কার্যক্রম সম্পর্কে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, সার আমদানির প্রক্রিয়া স্বাভাবিক আছে।
তাই ভবিষ্যতে সংকট হতে পারে এ শঙ্কায় অতিরিক্ত সার কেনা বা মজুদ না করার জন্য কৃষি উপদেষ্টা আহ্বান জানান।
এসময় কৃষি উপদেষ্টা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন কার্যক্রম স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত সম্পন্ন করার জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানসহ মন্ত্রণলয়, দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও প্রধানরা।
উল্লেখ্য, পত ১৬ আগস্ট থেকে আকস্মিক বন্যায় দেশের ২৩টি জেলায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জেলাগুলোর মোট ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৮ হাজার ৫৭৩ হেক্টর। ফসল উৎপাদনে ক্ষতির পরিমাণ ৭ লাখ ১৪ হাজার ৫১৪ মেট্রিক টন, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৯ জন। বন্যায় ২৩টি জেলার মোট আবাদ করা ফসলের শতকরা ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ নষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ডাক বিভাগের সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
বন্যায় অধিক আক্রান্ত ৭টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ-
ফেনী ৩৫ হাজার ৬৭৩ হেক্টর (৮০ শতাংশ), নোয়াখালী ৩৮ হাজার ৪৫৬ হেক্টর (৩৭ শতাংশ), কুমিল্লা ৪৯ হাজার ৬০৮ হেক্টর (৩৬ শতাংশ), লক্ষ্মীপুর ১৫ হাজার ৬২৬ হেক্টর (৩৩ শতাংশ), চট্টগ্রাম ২৩ হাজার ৯৯২ হেক্টর (১৬ শতাংশ), মৌলভীবাজার ১৫ হাজার ২২২ হেক্টর (১২ শতাংশ) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৮ দশমিক ৩২৬ হেক্টর (৩৫ শতাংশ)।
বন্যায় জেলাগুলোর রোপা আমন ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০৯ হেক্টর, আউশ ৩৮ হাজার ৬৮৯ হেক্টর, বোনাআমন ৭৬৪ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১৪ হাজার ৯০৮ হেক্টর ও শাকসবজি ১১ হাজার ২৯০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আদা, হলুদ, আখ, পান, মরিচ, তরমুজ, পেঁপে, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, টমেটো ইত্যাদি ফসল এবং ফলবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যা মোকাবিলায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে রোপণের জন্য আমন ধানের বীজ বিতরণ ও বীজতলা প্রস্তুত করা, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান এবং কমিটির মাধ্যমে সামগ্রিক কার্যক্রম সমন্বয় ও মনিটরিং করা হচ্ছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে পুনর্বাসন কর্মসূচি বাবদ ৯টি জেলায় (কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর ও খাগড়াছড়ি) রোপা আমন চাষের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়।
এর মাধ্যমে আমন ধানের ৪০০ টন বীজ কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করা হয়। উপকারভোগী কৃষক পরিবারকে ১০ কেজি ডিএপি সার, ১০ কেজি এমওপি সার ও নগদ ১০০০ টাকা (মোবাইল/অনলাইন ব্যাংকিং) দেওয়া হচ্ছে। এতে ১০ হাজার ৬৬৭ হেক্টর জমি রোপা আমন চাষের আওতায় আসবে এবং উপকারভোগী কৃষকের সংখ্যা ৮০ হাজার জন।
বন্যাকবলিত জেলাকে গুরুত্ব দিয়ে ৬৪ জেলায় ১২টি ফসলে (গম, ভুট্টা, সরিষা, সুর্যমুখী, চিনাবাদাম, সয়াবিন, পেঁয়াজ, মুগ, মসুর, খেসারি, ফেলন ও অড়হড়) রবি মৌসুমে প্রণোদনা/পুনর্বাসনের জন্য ১৬৪ দশমিক ৭৯ কোটি টাকা অর্থছাড় করা হয়েছে। যাতে ১৬ দশমিক ৪১ লাখ কৃষক উপকৃত হবে। পরবর্তীতে শীতকালীন শাকসবজি উৎপাদনে জন্য ২২ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা ১ দশমিক ৫ লাখ কৃষককে প্রণোদনা প্রদানের জন্য অর্থছাড় করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বিভিন্ন খামারে ২২ দশমিক ৫ একর জমিতে চারা উৎপাদনের জন্য ৪ হাজার ৫০০ কেজি আমন ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। উৎপন্ন চারা দিয়ে ৪৫০ একর (১ হাজার ৩৫০ বিঘা) জমিতে আমন ধান আবাদ করা সম্ভব হবে।
আগামী ২০-২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী ও খাগড়াছড়ি জেলায় মোট ২ হাজার ৫০০টি কৃষক পরিবারের কাছে রোপা আমন ধানের চারা পৌঁছাবে। যা দিয়ে ২ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করা হবে। এরমধ্যে বিএডিসির সরবরাহ করা বীজে ১ হাজার ৩২৫ বিঘা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরবরাহ করা বীজে ৩৭৫ বিঘা, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) সরবরাহ করা বীজে ৪৫০ বিঘা এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সরবরাহ করা বীজে ৩৫০ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হবে। বিএডিসির মধুপুরস্থ খামারের ১ দশমিক ৫০ একর উঁচু জমিতে আমন ধানের বীজ রোপন করা হয়েছে। যা দ্বারা ফেনী জেলার মহিপালে অবস্থিত খামারের ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ একর (৭৫ বিঘা) জমিতে আমন ধান আবাদ করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কুমিল্লা সেনানিবাসে ২ দশমিক ৫০ একর (৭ দশমিক ৫ বিঘা) জমিতে চারা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলার কৃষক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১ হাজার ২০০ কেজি বীজের চারা ২৪০টি কৃষক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করবে মর্মে আশ্বাস পাওয়া গেছে। বেসরকারি সংস্থা সিনজেন্টার ১৫ টন বীজ ৫ কেজি হারে ৩ হাজার কৃষক পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে হবে: কৃষি উপদেষ্টা
৩০১ দিন আগে
সংকটের সময় লাভ না করে বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান: ক্যাব
বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধার কাজে নিয়োজিত নৌকার ভাড়া, গণপরিবহন ও ট্রাক ভাড়া, মোমবাতি, শুকনো খাবার, খাবার পানি, সবজিসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করা সংস্থাটি বলেছে, বানভাসী মানুষদের কষ্টকে পুঁজি করে ব্যবসা করার পরিবর্তে নিত্যখাদ্য পণ্য ও সেবায় জনগণের পকেট কাটার উৎসব বন্ধ করুন। একই সঙ্গে লোক দেখানো সামাজিক দায়বদ্ধতার আওতায় ত্রাণ বিতরণের চেয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: ডিক্যাব সদস্যদের সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনের মতবিনিময়
শনিবার (২৪ আগষ্ট) চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী অঞ্চলে চলমান বন্যার কারণে খাদ্য ও নিত্যপণ্যের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানিয়েছে ক্যাবের চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটি।
বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ ও ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান এই আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ঢাকা-ময়মনসিংহ বিদ্যুৎ বিতরণ প্রকল্পে পোল ও ১৪০ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ ক্যাবল কিনবে বিআরইবি
৩২২ দিন আগে