হাইকোর্ট বেঞ্চ
স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট
চিকিৎসকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দেয়ার পরও নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
সারা দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না করায় তলবাদেশে তিনি হাজির হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
ডিজির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
আরও পড়ুন: কারাগারে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ না দেয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে হাইকোর্টের তলব
এর আগে তলবাদেশে হাজির হওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, এই বিষয়টি অনেকবার এসেছে। কারাগারে থাকা মানুষদেরও স্বাস্থ্যসেবার অধিকার আছে। সেবাটা দেয়া দরকার। আমাদের তো কাউকে ডাকতে (তলব) লজ্জা লাগে। এটা শোভনীয় না। আমরা বাধ্য হয়ে ডাকি।
এ সময় ডিজির পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এটা কনসিডার (বিবেচনা) করেন। স্বাস্থ্যের সমস্যা কোভিডের জন্য হয়েছে।’
তখন আদালত বলেন, সরকার তো কোনও খাতেই টাকা কম দেয় না।
আদালত ফরিদপুর মেডিকেলের দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ৪০০ গুণ একটি জিনিসের দাম হতে পারে না। বিদেশিরা দেশ চালায় না?
এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সব জায়গায় ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’
আদালত বলেন, গরিব দেশ হিসেবে যথেষ্ট টাকা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয় সরকার। ডিজিকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে কোনও কিছু (আদেশ) গেলে রেসপন্স করবেন।
পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম আদালতে বলেন, ‘কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে যে বিলম্ব হয়েছে, এটা অনিচ্ছাকৃত। আমার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমি খুবই দুঃখিত। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এমন হবে না।’
আরও পড়ুন: সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি দিলেন হাইকোর্ট
পরে আদালত এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২ মে দিন ঠিক করে দেন এবং ডিজিকে তার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।
রিটকারী আইনজীবী জে আর খান রবিন পরে সাংবাদিকদের বলেন, ডিজি আদালতে হাজির হয়ে জানিয়েছেন তিনি সব শূন্য পদে ইতোমধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ করেছেন। ১৪১ জন নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৬ জন যোগদান করেছেন। বাকি পাঁচজন শিগগিরিই যোগদান করবেন।
এছাড়া আদেশ বাস্তবায়নে বিলম্বের জন্য ডিজি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন।
এছাড়া আদালত ডিজিকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যহতি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এতদিন কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ সরাসরি হয় না। প্রেষণে নিয়োগ হত। এখন সরাসরি নিয়োগের জন্য একটি কসড়া নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই খসড়া নীতিমালার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়ে ২ মে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর দেশের সব কারাগারে শূন্যপদে ডাক্তার নিয়োগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে গত ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলা হয়।
অন্যথায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও সে আদেশ বাস্তবায়ন না করায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে তলব করেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, কারা চিকিৎসক সংকট নিয়ে দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে রিট দায়ের করেছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খাঁন (রবিন)।
পরে ২০১৯ সালের ২৩ জুন জারি করা রুলে কারাগারে আইনগত অধিকার নিশ্চিত, মানসম্মত থাকার জায়গা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং বন্দিদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কারা চিকিৎসকের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের খুঁজে বের করতে স্বাধীন কমিশন কেন নয়: হাইকোর্ট
আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সুরক্ষা বিভাগ), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও কারা মহাপরিদর্শককে এসব রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এছাড়াও অপর এক আদেশে আদালত সারা দেশের সব কারাগারে বন্দিদের ধারণক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের শূন্যপদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
১ বছর আগে
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের মন্ত্রী পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া রিট খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২১ নভেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত বলেছেন, এ রিটের কোনো সারবত্তা (মেরিট) নেই।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ ও অ্যাডভোকেট এরশাদ হোসেন রাশেদ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন ও সামসুন নাহার লাইজু।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
এর আগে রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের মন্ত্রী পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের শুনানি শেষ হয়।
এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মো. এরশাদ হোসেন রাশেদ।
রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিবাদী করা হয়।
একই অভিযোগে ২১ আগস্ট ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন ওই আইনজীবী। নোটিশের পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিট করেন তিনি।
নোটিশে আইনজীবী রাশেদ বলেন, ১৯ আগস্ট বিকালে গণমাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারতবিষয়ক বক্তব্যের তথ্য পান।
১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার সেটি করতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছি। আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’
নোটিশে বলা হয়, এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) তার শপথ ভঙ্গ এবং সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তার এ বক্তব্য সার্বভৌমত্বকে আঘাত করেছে। তাই নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদত্যাগে অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
এই নোটিশের পরও পদত্যাগে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় হাইকোর্টে রিট করেন ওই আইনজীবী।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকার বৈধতা নিয়ে রিটের আদেশ সোমবার
নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহযোগিতা জোরদারে সম্মত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্কটিশমন্ত্রী
২ বছর আগে
রূপপুর বালিশকাণ্ড: চার মামলায় প্রকৌশলী আমিনুলের জামিন প্রশ্নে রুল
পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির চার মামলায় সহকারী প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলামকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তবে তাকে কেন জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
৩ বছর আগে
ডিআইজি মিজানের ভাগ্নে মাহমুদুলকে কেন জামিন নয়: হাইকোর্ট
পুলিশের সাবেক উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের ভাগ্নে উপপরিদর্শক মাহমুদুল হাসানকে কেন জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে সোমবার রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
৪ বছর আগে
সিনহা হত্যা: তদন্তের তথ্য প্রকাশ না করার রিট কার্যতালিকা থেকে বাদ
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার বিষয়ে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ না করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট কার্যতালিকা থেকে বাদ (আউট অব লিস্ট) দিয়েছেন হাইকোর্ট।
৪ বছর আগে
জি কে শামীমের কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল
যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে রাজধানীর আজিমপুরে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণে করা চুক্তি বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
৪ বছর আগে