মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ চার সপ্তাহের এ রুল জারি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। অন্যদিকে, দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
আরও পড়ুন: রূপপুরের বালিশকাণ্ড: প্রকৌশলী মোস্তফাকে জামিন দেয়নি হাইকোর্ট
এর আগে, ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি ভবনে অস্বাভাবিক মূল্যে আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে এসব মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনা বালিশকাণ্ড নামে পরিচিতি পেয়েছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আবাসিক ভবনের জন্য ১৬৯ কোটি টাকার কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে। এসব মামলায় পাবনা গণপূর্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলামসহ ১৩ জনকে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: অর্থপাচার তদারকিতে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের তালিকা চায় হাইকোর্ট
মামলায় উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ছাড়াও আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন- আহমেদ সাজ্জাদ খান, মোহাম্মদ তাহাজ্জুদ হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী মো. তারেক খান, আমিনুল ইসলাম, ঠিকাদার আসিফ হোসেন ও শাহাদাত হোসেন।
রূপপুর প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্মাণাধীন গ্রিনসিটি আবাসন প্রকল্পের ২০ ও ১৬ তলা ভবনের আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় মালামাল কেনা ও ভবনে উত্তোলন কাজে অস্বাভাবিক ব্যয় নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ২০১৯ সালের ১৯ মে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
আরও পড়ুন: রূপপুর আবাসিক প্রকল্পে বালিশকাণ্ডের ঘটনায় হাইকোর্টের রুল
দুর্নীতির নমুনা তুলে ধরে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি বালিশের পেছনে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৬ হাজার ৭১৭ টাকা। এর মধ্যে, বালিশের দাম ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা, আর সেই বালিশ ফ্ল্যাটে ওঠানোর খরচ ৭৬০ টাকা। একইভাবে টেলিভিশন, খাট, রেফ্রিজারেটর, বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদ্যুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়। এ ঘটনা পরে বালিশকাণ্ড হিসেবে পরিচিতি পায়।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুই কমিটির তদন্তেই ৬২ কোটি ২০ লাখ ৮৯ হাজার টাকার অনিয়মের কথা উঠে আসে। যেখানে চুক্তিমূল্যের চেয়ে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার বেশি সরকারি কোষাগারে ফেরত আনতে সুপারিশসহ বিষয়টি দুদকে পাঠানো হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে গত জুলাইয়ে আদালতে জমা দেয়া ওই তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্নীতির জন্য ৩৪ প্রকৌশলীকে দায়ী করা হয়।
আরও পড়ুন: বালিশকাণ্ড: প্রকৌশলী শফিকুলের জামিন নিয়ে হাইকোর্টের রুল