প্রাকৃতিক দুর্যোগ
প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহজবোধ্য পূর্বাভাসের উন্নয়নে কাজ করছে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে জীবন ও জীবিকার ক্ষতি এড়াতে সহজবোধ্য পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থা উন্নয়নে সরকার কাজ করছে।
তিনি একটি কার্যকর হাইড্রোলজিক্যাল স্ট্যাটাস এবং আউটলুক সিস্টেম গড়ে তোলার জন্য সকল অংশীদারদের অবদান রাখার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট অফিসের দুর্নাম দূর করতে কর্মকর্তাদের প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
তিনি জোর দিয়ে বলেন, জলবায়ু ঝুঁকির কারণে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা সবসময় হুমকির মুখে রয়েছে। তাই একটি কার্যকরী পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থা থাকা অত্যন্ত জরুরি।
বুধবার (৯ অক্টোবর) পান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘সবার জন্য পূর্ব সতর্কীকরণ: হাইড্রোলজিকেল স্ট্যাটাস এবং আউটলুক সিস্টেম’ শীর্ষক পরামর্শক কর্মশালায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থা হচ্ছে দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একটি শক্তিশালী হাইড্রোলজিকেল সিস্টেম ভবিষ্যত দুর্যোগের সঠিক পূর্বাভাস দিতে সহায়ক হবে, যার মাধ্যমে জীবন, সম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, এক্ষেত্রে উজানের দেশগুলোর রিয়েলটাইম তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সরকারি সংস্থা, বৈজ্ঞানিক এবং স্থানীয় অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন, যাতে সবার জন্য, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে একটি সহজপ্রাপ্য এবং কার্যকর পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার আহ্বান জানান তিনি।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান; পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাজমুল আহসান এবং ডব্লিউএমও হাইড্রোলজি এবং পানি সম্পদ বিভাগের প্রধান ড. হুইরিন কিম। সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক অংশীদাররা কর্মশালায় অংশ নেন এবং হাইড্রোলজিকেল ঝুঁকি মোকাবিলার একটি শক্তিশালী পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
এর আগে, রিজওয়ানা হাসান গাজীপুরে গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি’র (জিইএফ) নীতিমালা এবং কার্যক্রমের উপর অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন অনলাইনে যোগ দিয়ে।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলার অবনতি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: রাঙ্গামাটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
১ মাস আগে
দুর্যোগকালীন সময়ে যেন দুর্নীতি না হয় সে বিষয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সতর্কতা
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, ‘দুর্যোগকালীন সময়ে একটি গোষ্ঠী খুশি হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এসব গোষ্ঠীর হয়তো দুর্নীতির নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়। কিন্তু এসবকে গুরুত্ব দেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কাজের গুণগতমানের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।’
সোমবার আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে এলজিইডির আওতায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও অগ্রগতি বিষয়ক পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন ও পলিপ্রপিলিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ: পরিবেশ উপদেষ্টা
বন্যাপরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলাই এখন বেশি জরুরি উল্লেখ করে হাসান আরিফ বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় রাস্তাঘাটের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ এরইমধ্যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করতে হবে।
বাংলাদেশে রাস্তাঘাট নির্মাণ ব্যয় অত্যধিক এ অভিযোগের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশের রাস্তাঘাট নির্মাণ ব্যয় অত্যধিক কিন্তু এর স্থায়িত্ব কম এমন অভিযোগ প্রায়ই আসে। সেজন্য এলজিইডির দুর্নীতির ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র, কৃষক-শ্রমিক জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে তার একমাত্র লক্ষ্য রাষ্ট্র সংস্কার। এই সংস্কার করতে দুর্নীতিকে নির্মূল করতে হবে।
আরও পড়ুন: সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টার সঙ্গে ফরাসি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
নারীর ক্ষমতায়নে এলজিইডিকে সহায়ক ভূমিকা পালন করার পরামর্শ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, দেশের গ্রাম-বাংলার রূপ পরিবর্তনের প্রধান কারিগর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এলজিইডি গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করে থাকে। গ্রামে গ্রামে চলমান কর্মযজ্ঞে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপদ কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আলী আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, অতিরিক্ত সচিব ড. শের আলী খান ও মো. নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন: বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ
২ মাস আগে
বাংলাদেশে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াল ১০টি ঘূর্ণিঝড়
অনন্য ভৌগলিক অবস্থানের কারণে ঘন ঘন বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের শিকার হয়ে এসেছে বাংলাদেশ। দেশের উপকূল স্পর্শ করে বিস্তৃত বঙ্গোপসাগরের উত্তরাংশ অনেকটা ফানেল-আকৃতির। ফলে স্থলভাগের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে রূপ নেয় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়গুলো। আর এই বিভীষিকার নির্মম শিকারে পরিণত হয় হাজার হাজার মানুষ। এই দুর্যোগপ্রবণতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কয়েক শতাব্দির ইতিহাস। চলুন, স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ১০ ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী ১০টি সাইক্লোন
বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন, ১৮৭৬
১৮৭৬ সালের ২৭ অক্টোবর বঙ্গোপসাগরের গভীরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ ২৯ অক্টোবর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। অতঃপর ৩০ অক্টোবর আরও প্রবল হয়ে তা উত্তর বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হয়। ঘূর্ণিঝড়ের আশপাশে সেসময় বাতাসের গতি উঠেছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২০ কিলোমিটার।
ওই ঘূর্ণিঝড় থেকে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পানির উচ্চতা ছিল ১২ দশমিক ২ মিটার। আর এই মাত্রা অব্যাহত রেখেই ৩১ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়ে বরিশালের ব্যাকেরগঞ্জ উপজেলার ওপর। পাশাপাশি আঘাত হানে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিসহ ব্রিটিশ ভারতের উপকূল বরাবর, যেটি বর্তমানে বরিশালে মেঘনা নদীর মোহনার কাছাকাছি একটি স্থান।
ঘূর্ণিঝড়টির আঘাতে সেবার হতাহতের সংখ্যা হয়েছিল প্রায় ২ লাখ, যাদের অর্ধেকই মারা গিয়েছিল জলোচ্ছ্বাসে। এ ছাড়াও ঘরবাড়িসহ সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে ১ নভেম্বর থামে ঘূর্ণিঝড়। কিন্তু এরপর আরও অনেক মানুষ মারা যায় ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী দুর্ভিক্ষ ও মহামারিতে।
আরও পড়ুন: কিভাবে নেবেন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি
চট্টগ্রাম সাইক্লোন, ১৮৯৭
কুতুবদিয়া দ্বীপের কাছাকাছি এলাকায় এই ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়ে ১৮৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস মিলে ওই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে হতাহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৪ হাজারে। ঝড়-পরবর্তী সময়ে কলেরা মহামারিতে আরও ১৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
খুলনার ঘূর্ণিঝড়, ১৯৬১
১৯৬১ সালের ৯ মে সংঘটিত হওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল বাগেরহাট ও খুলনার বেশকিছু অঞ্চল। ঝড়ো হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬১ কিলোমিটার, আর জলোচ্ছ্বাসে ঢেউয়ের উচ্চতা পৌঁছেছিল ২ দশমিক ৪৪ থেকে ৩ দশমিক ০৫ মিটারে।
ঝড়ে ১১ হাজার ৪৬৮ জন নিহতের অধিকাংশই ছিল চর আলেকজান্ডারের অধিবাসী। জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া গবাদি পশুর সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার। অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে বিশেষ করে নোয়াখালী ও হরিনারায়ণপুরের মধ্যকার রেলপথটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৫ মাস আগে
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধে নিহতদের লাশ সাধারণত স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে না: রেডক্রস ও ডব্লিউএইচও
দুর্যোগ ও যুদ্ধে নিহতদের লাশ সম্পর্কে প্রায়ই ভিত্তিহীন ভয় ও ভুল ধারণা থাকে। তাই এসব ঘটনায় নিহতদের লাশ নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে সমাহিত করার জন্য সমাজের মানুষের মাঝে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও তথ্য নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য রেডক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি), ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রস (আইসিআরসি) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) যুদ্ধ ও দুর্যোগে বেঁচে যাওয়া মানুষদের সাহায্য করার অংশ হিসেবে এ আহ্বান জানিয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সশস্ত্র সংঘর্ষে যখন অনেক মানুষ মারা যায়, তখন এই লাশের উপস্থিতি ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের জন্য কষ্টকর।
কেউ কেউ দ্রুত এসব লাশ দাফনের জন্য এগিয়ে আসে। দুর্দশা কমানোর জন্য অনেকে গণকবর দেয়। কারণ ধারণা করা হয়, এই লাশগুলো স্থানীয় জনসাধারণের স্বাস্থ্যগত হুমকির কারণ হতে পারে।
তবে এই সংস্থাগুলো বলেছে, এই ধরনের কাজ কিছু মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও জনগণ যদিও লাশগুলো দ্রুত কবর দেওয়ার জন্য প্রচুর চাপের মধ্যে থাকে, তবে লাশ অব্যবস্থাপনার ফলে নিহতের পরিবারের সদস্যেরা দীর্ঘস্থায়ী মানসিক কষ্টের পাশাপাশি সামাজিক ও আইনি সমস্যায় পড়ে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের হারের উর্ধ্বগতি, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান ডব্লিউএইচও’র
সু-পরিচালিত কবরস্থান বলতে যেখানে সহজে শনাক্তযোগ্য এবং সঠিকভাবে নথিভুক্ত কবরকে বোঝায়।
সংস্থাগুলোর তৈরি নির্দেশিকা অনুযায়ী, বিশেষ করে আইসিআরসি/আইএফআরসি/ডব্লিউএইচও ম্যানুয়াল ফর দ্য ডেড অব দ্য ডিজাস্টারস আফটার ম্যানেজমেন্ট অনুযায়ী প্রতিটি লাশের সঠিক অবস্থান এবং সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিশ্চিত করা উচিত।
লাশ সঠিকভাবে শনাক্ত করার আগে সমাহিত বা দাহ করা উচিত নয়।
লাশের আরও ভালো ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করার জন্য সংস্থাগুলো স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সরঞ্জাম সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দেয়, যাতে তারা প্রয়োজনে (যখন একসঙ্গে অনেক লাশ দাহ বা সমাহিত করতে হয়) লাশ কবর দেওয়ার মতো কাজ করতে সহায়তা করতে পারে।
লিবিয়ায় রেডক্রস ও ডব্লিইএইচও টিম সরাসরি কর্তৃপক্ষ, সম্প্রদায় ও লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গে কাজ করছে। তাদের নির্দেশিকা, উপকরণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করছে।
আইসিআরসি ও ডব্লিইএইচও উভয়ই লাশের মর্যাদাপূর্ণ ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করার জন্য লিবিয়ায় বডি ব্যাগ বিতরণ করছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সশস্ত্র সংঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে মারা যাওয়া মানুষদের লাশ প্রায় কখনোই স্থানীয় জনগণের জন্য স্বাস্থ্যগত বিপদ ডেকে আনে না।
এর কারণ হলো ট্রমা, ডুবে বা আগুনে মারা যাওয়া মানুষেরা সাধারণত এমন রোগ সৃষ্টিকারী কোনো জীবাণু বহন করে না।
ব্যতিক্রম হলো- যখন ইবোলা বা মারবার্গ রোগ বা কলেরার মতো সংক্রামক রোগ থেকে মৃত্যু ঘটে বা যখন এই সংক্রামক রোগগুলোর জন্য স্থানীয় অঞ্চলে বিপর্যয় ঘটে।
আরও পড়ুন: সাপের কামড়ের চিকিৎসা বিষয়ে ডব্লিউএইচও-এর প্রথম নির্দেশিকা প্রকাশ
তবে, যেকোনো পরিস্থিতিতে লাশ পানির উৎসের কাছাকাছি বা পাশে থাকলে স্বাস্থ্যগত উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
কারণ লাশ থেকে বের হওয়া মল পানির উৎসকে দূষিত করতে পারে। যা ডায়রিয়া বা অন্যান্য রোগের ঝুঁকি তৈরি করে।
তাই পানীয় জলের উৎসের সংস্পর্শে লাশ ফেলে রাখা উচিত নয়।
আইসিআরসির ফরেনসিক ইউনিটের প্রধান পিয়েরে গাইয়োমার্চ বলেন, ‘লাশ মহামারি সৃষ্টি করবে এই ধারণার কোনো প্রমাণ নেই। আমরা এমন অনেক ঘটনা দেখতে পাই যেখানে মিডিয়া রিপোর্ট এবং এমনকি কিছু চিকিৎসা পেশাজীবীরাও এই সমস্যাটি সমাধানের ক্ষেত্রে ভুল করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘যারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো ঘটনা থেকে বেঁচে থাকে, লাশের চেয়ে তাদের রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি।’
ডব্লিউএইচও-এর জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে জৈব নিরাপত্তা ও জৈব নিরাপত্তা বিষয়ক মেডিকেল অফিসার ডা. কাজুনোবু কোজিমা বলেছেন, ‘আমরা ট্র্যাজেডির মুখে পড়া এলাকার কর্তৃপক্ষকে গণদাফন বা গণদাহ করার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো না করার জন্য অনুরোধ করছি। লাশের মর্যাদাপূর্ণ ব্যবস্থাপনা পরিবার ও সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং যুদ্ধের ক্ষেত্রে প্রায়ই লড়াইয়ের দ্রুত সমাপ্তি আনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।’
আইএফআরসি-এর জরুরি পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং মরক্কো আর্থকোয়েক রেসপন্সের জরুরি অপারেশনের প্রধান গওয়েন ইমার বলেন, ‘দুর্যোগ বা যুদ্ধে নিহতদের লাশ সমাহিত করার জন্য অপ্রয়োজনীয় তাড়াহুড়ো করলে পরিবারগুলোকে তাদের প্রিয়জনদের শনাক্ত করার এবং শোক করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে। মর্যাদাপূর্ণ ব্যাবস্থাপনার জন্য লাশ শনাক্তকরণ এবং স্থানীয় সাংস্কৃতিক ও সামাজিক নিয়ম অনুসারে শোক ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য উপযুক্ত সময় প্রয়োজন।’
আইসিআরসি, আইএফআরসি ও ডব্লিউএইচও কর্তৃপক্ষ ও সম্প্রদায়কে নিম্নলিখিতগুলো মনে করিয়ে দিতে চায়:
লাশ দেখাটা দুঃখজনক হলেও, সম্প্রদায়ের নেতা বা কর্তৃপক্ষের তাড়াহুড়ো করে গণকবরে লাশ সমাহিত করা বা গণদাহ করা উচিত নয়। দাফন বা দাহ করার পদ্ধতি অবশ্যই সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও পারিবারিক উদ্বেগের কথা মাথায় রাখতে হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সশস্ত্র সংঘর্ষে যারা মারা যায়, তাদের লাশ সাধারণত রোগের উৎস নয়।
আরও পড়ুন: প্রতি ৭ সেকেন্ডে একজন গর্ভবতী নারী বা নবজাতক মারা যায়: ডব্লিউএইচও
মৃত ব্যক্তি একটি অত্যন্ত সংক্রামক রোগে মারা না গেলে, জনসাধারণের জন্য ঝুঁকি খুব কম থাকে। তবে লাশের মল মিশ্রিত হয়ে দূষিত হওয়া পানি পান করলে ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে। পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধের জন্য পানীয় জলের নিয়মিত জীবাণুমুক্তকরণ যথেষ্ট।
দ্রুত, অসম্মানজনক গণদাফন বা শ্মশান লাশ শনাক্তকরণ ও পরিবার শনাক্ত করা আরও কঠিন এবং কখনো কখনো অসম্ভব করে তোলে।
শুধুমাত্র লাশ তখনই মহামারির স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে, যখন নির্দিষ্ট কিছু সংক্রামক রোগে মৃত্যু ঘটে।
চুনের গুঁড়ায় দ্রুত পচন ধরে না। যেহেতু বিপর্যয় বা যুদ্ধে নিহতদের লাশে সাধারণত সংক্রামক ঝুঁকি নেই, তাই লাশগুলো জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন হয় না।
তবে, নিহত ব্যক্তির লাশ স্পর্শ করার পর সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। অথবা দৃশ্যমান ময়লা না থাকলে অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
আইসিআরসি, আইএফআরসি ও ডব্লিউএইচও সকল পক্ষকে যুদ্ধ ও দুর্যোগে নিহতদের লাশ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সমাজের সকলের মঙ্গলের জন্য প্রতিষ্ঠিত নীতি অনুসরণ করার আহ্বান জানায়।
১ বছর আগে
দোয়া করবেন যেন বাংলাদেশ মানবসৃষ্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিরাপদ থাকে: হজযাত্রীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও এর জনগণ যেন মানবসৃষ্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষিত থাকে সে জন্য প্রার্থনা করতে হজযাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার হজ কার্যক্রম-২০২৩ (১৪৪৪ হিজরি) উদ্বোধনকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: হজ কার্যক্রম-২০২৩ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘মানবসৃষ্ট বা প্রাকৃতিক যে কোনো দুর্যোগ বা সংকট যেন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণের ক্ষতি করতে না পারে, সেজন্য আপনাদেরকে দোয়া করার অনুরোধ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর আশকোনায় হজ ক্যাম্পে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এবং পরে হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট দুর্যোগও ঘটে, যেহেতু এখানে অগ্নি সহিংসতা ও যানবাহনে আগুন দেওয়ার মাধ্যমে মানুষ মারা যায়।
ভবিষ্যতে যাতে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও বর্তমান অগ্রগতি অব্যাহত থাকে সেজন্য তিনি হজযাত্রীদের দোয়া করতে বলেন।
প্রথম হজ ফ্লাইটটি শুক্রবার দিবাগত রাত (২০ মে) ২টা ৪৫ মিনিটে সৌদি আরবের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালন করতে যাচ্ছেন। তবে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে গত বছর বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন।
এদিকে কোভিড-১৯ মহামারির আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করেছিলেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৭ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলী, বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত এসা ইউসেফ এসা আল দুলাইহান, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাবিব হাসান (ঢাকা-১৮), ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান এবং হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম।
আরও পড়ুন: হজ প্যাকেজ ফি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য মুদ্রার বিনিময় হারকে দায়ী করছে সরকার
হজযাত্রীরা সঙ্গে নিতে পারবেন ১২০০ ডলার
১ বছর আগে
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে: রেলমন্ত্রী
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, মহামারি করোনার রেশ কাটিয়ে ওঠার আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক মহা সংকট সৃষ্টি করেছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে।
তিনি বলেন, কোনো বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বৈশ্বিক সংকট না ঘটলে নির্ধারিত সময়ের আগেও নির্মাণ শেষ হতে পারে।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে পশ্চিম পাড়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: চিলাহাটি-মঙ্গলা রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে জুনে: রেলমন্ত্রী
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের বৃহত্তম এই রেলওয়ে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হলে উত্তরবঙ্গসহ দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে রেল যোগাযোগের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে।
সেইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ রেল যোগাযোগ বিস্তারে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেললাইনসহ আরও যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেসব প্রকল্পের কাজও সঠিক সময়ে শেষ করা হবে বলে দাবি করেন তিনি।
মন্ত্রীর এ পরিদর্শনের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মোহাম্মাদ মাসুদুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কে এম হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল সামাদ তালুকদার, সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট আবু ইউসুফ সূর্যসহ বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন এ বছরই চালু হবে: রেলমন্ত্রী
সব যানবাহনে ভাড়া বাড়লেও ট্রেনের ভাড়া বাড়েনি: রেলমন্ত্রী
১ বছর আগে
যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুন: নৌবাহিনীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সততা, নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের গুণাবলীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আপনাদেরকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ।’
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির (বিএনএ) মিডশিপম্যান-২০২০ আলফা ব্যাচ ও ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসার-২০২২ ব্রাভো ব্যাচের উত্তীর্ণ ক্যাডেটদের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সকল ধর্মীয় বিশ্বাস সমান অধিকার ভোগ করে: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রাকৃতিক দুর্যোগে সর্বদা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং দক্ষতার সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি চাই আমাদের অফিসাররা সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবে।’
স্নাতক অফিসারদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় আপনারা আমাদের নৌবাহিনীর ভবিষ্যত কাণ্ডারি।’
তিনি তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং শৃঙ্খলা ও সততা বজায় রেখে দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে বলেন।
আরও পড়ুন: মাগুরার ৩ মহাসড়ক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বৈশ্বিক সংকটে মানুষ যাতে কষ্ট না পায় তা নিশ্চিত করুন: স্থানীয় প্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
১ বছর আগে
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও খাদ্য সঙ্কট মোকাবিলায় চট্টগ্রামে গমের অত্যাধুনিক স্টিলের গুদাম
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও খাদ্য সঙ্কট মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদে খাদ্যশস্যের সঠিক সংরক্ষণে অত্যাধুনিক সাইলো বা গুদাম নির্মাণ একটি কার্যকরী পদক্ষেপ। আর এ উদ্দেশ্যেই, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত কংক্রিট গমের সাইলো ক্যাম্পাসে নির্মাণ করা হচ্ছে স্টিলের তৈরি গমের সাইলো।
রবিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ গমের স্টিল সাইলো নির্মাণ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন।
সাইলো নির্মাণের প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশের কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও যুক্তরাস্ট্রের জিএসআই গ্রুপ এলএলসি। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে নির্মিতব্য এই সাইলোটির নির্মাণকাজের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকবে খাদ্য অধিদপ্তর।
সাইলোটিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত গম সংরক্ষণ করা যাবে। সংরক্ষিত গমের গুণগত মান নিশ্চিতে রাসায় না, যা প্রচলিত নিক দ্রব্য ও কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হবে খাদ্য গুদাম বা সাইলোতে সম্ভব নয়। দেশের স্থানীয় সরবরাহ কেন্দ্রগুলোতে শস্যের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের সুযোগ না থাকায় গুদামগুলোতে সব মৌসুমে ও দীর্ঘ সময়ব্যাপী শস্য মজুদ করা সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে, দীর্ঘদিন গম সংরক্ষণে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে এ সাইলো।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব নয় – তাই, আমাদের সরকার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় আমরা আমাদের কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়নে কাজ করে যাচ্ছি। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই দেশব্যাপী আধুনিক খাদ্যশস্য সংরক্ষণাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে; যাতে যেকোন সময় ও যেকোন অবস্থায় আমাদের দেশের মানুষের জন্য খাবারের যথেষ্ট মজুদ থাকে। সামনের দিনগুলোতেও আমরা আমাদের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আরও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’
বিশেষ অতিথি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন এ সময়োপযোগী পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এমন সব উদ্যোগের ফলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে; বিশেষ করে, দুর্যোগের মুহূর্তে খাদ্য নিরাপত্তা আরও জোরদার করা সম্ভব হবে, সে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ৩৫ লাখ মেট্টিক টন খাদ্য মজুদের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রসঙ্গে কনফিডেন্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান করিম বলেন, ‘উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের অদম্য যাত্রা যেন কোনভাবেই কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। দেশের মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা এ দায়িত্বেরই একটি অংশ। গুরুত্বপূর্ণ এই সাইলোর নির্মাণে আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। সাইলো নির্মাণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবার লক্ষ্যে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাবো।’
প্রধান এবং বিশেষ অতিথিরা ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাখাওয়াত হোসেন, কনফিডেন্স গ্রুপের বোর্ড সদস্য রুপম কিশোর বড়ুয়া, ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার’ প্রকল্পের পরিচালক মো. রেজাউল করিম শেখসহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে কনফিডেন্স গ্রুপের বোর্ড সদস্য রুপম কিশোর বড়ুয়া বলেন, ‘প্রকৌশল ও নির্মাণখাতে আমাদের বিশেষ দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার ওপর আস্থা রাখার জন্য আমরা সরকারকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই। খাদ্যশস্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে আধুনিক সাইলো নির্মাণের এ উদ্যোগ আমাদের জন্য বিশেষ কিছু। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে আমরা আরেক ধাপ এগিয়ে যাবো। সবসময়ের মতো এবারও আমরা আমাদের মেধা এবং অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবো।’
চট্টগ্রামের এ সাইলোটি সহ ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার’ প্রকল্পের আওতায় দেশে ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আটটি স্থানে একটি করে মোট আটটি অত্যাধুনিক সাইলো নির্মাণ করা হবে, যার মধ্যে দু’টিতে গম এবং ছয়টিতে চাল সংরক্ষণ করা হবে। মোট আটটি স্থানের মধ্যে কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড (বাংলাদেশ) ও জিএসআই গ্রুপ এলএলসি (ইউএসএ) যৌথভাবে তিনটি স্থান যথা-বরিশাল এ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন এর চালের সাইলো, নারায়ণগঞ্জ এ ৪৮হাজার মেট্রিক টন এর চালের সাইলো ও চট্টগ্রাম এ এক লাখ ১৪হাজার ৩০০ মেট্রিক টন এর গমের সাইলো নির্মাণ করছে। প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য দুর্যোগোত্তর জরুরি প্রয়োজনে সরকারি এবং পারিবারিক পর্যায়ে কার্যকর খাদ্য মজুদ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের এ সাইলো ক্যাম্পাসে ৫ একর অব্যবহৃত নিচু জায়গা উন্নয়ন করে সাইলো নির্মাণ উপযোগী করা হয়েছে। সমগ্র সাইলো নির্মাণাধীন এলাকায় সীমানা প্রাচীর এবং একটি তিনতলা সাইলো সাইট অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে, প্যাকেজ ডব্লিউ-২৪ এর আওতায় এক লাখ ১৪ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার এ গমের স্টিল সাইলো নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে।
চট্টগ্রামে নির্মিতব্য এ গম সংরক্ষণের সাইলোটি নির্মাণের উদ্দেশ্যে কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এবং জিএসআই গ্রুপ এলএলসির সাথে খাদ্য অধিদপ্তরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এ বছরের এপ্রিল মাসে। চুক্তি মোতাবেক নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের জুন নাগাদ।
আরও পড়ুন: খাদ্যের অপচয় রোধে সতর্ক হওয়ার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পশু-পাখির সুরক্ষা: বন্যা, খরা ও শৈত্য প্রবাহে করণীয়
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে আশঙ্কাজনক হারে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা বেড়ে চলেছে। এ সময় মানুষের পাশাপাশি প্রাণহানির শিকার হচ্ছে পশু-পাখিও। বাংলাদেশের কৃষি নির্ভর অর্থনীতির এক বিরাট যোগান আসে গৃহপালিত পশু-পাখি জাত দ্রব্যাদি থেকে। তাছাড়া ঘরে পশু-পাখি লালণ-পালন করে অনেকেই বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা স্বাবলম্বি হচ্ছে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এই মহামূল্যবান সম্পদকে রক্ষা করার প্রতি সতর্ক হওয়ার কোন অবকাশ নেই। এক্ষেত্রে অবলা প্রাণীগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে পূর্ব প্রস্তুতি নেয়া বাঞ্ছনীয়। চলুন, ঝড় এবং বন্যায় কিভাবে গৃহস্থালি পশু-পাখির ব্যবস্থা করবেন তা জেনে নেয়া যাক।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পশু-পাখির সুরক্ষায় করণীয়
ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার সময় করণীয়
এ সময় সর্বত ভাবে নিশ্চিত করতে হবে যে ঝড় বৃষ্টিতে গবাদিপশু যেন ভিজে না যায়। বন্যা, ঝড় অথবা জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাসের সঙ্গে সঙ্গেই গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগিকে অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে নিতে হবে। বন্যার সময় পশু-পাখিকে নৌকা বা মাচার উপরে নিতে হবে। এক্ষেত্রে নিজস্বভাবে অপারগ হলে সরকারি প্রতিষ্ঠান, সড়ক বা আশ্রয় কেন্দ্রগুলো উপযুক্ত জায়গা হতে পারে। কোন ভাবেই পশু-পাখিকে ভেজা জায়গায় রাখা যাবে না।
অতিবৃষ্টির মৌসুমের আগ থেকেই কিছু খড় ও দানাদার খাদ্য সংরক্ষণ করতে হবে। এ সময় সাইলেজ তৈরি করা অথবা ইউরিয়ার মাধ্যমে খড় প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ অনেক কাজে লাগতে পারে। সবসময় চেষ্টা করতে হবে আর্দ্রতামুক্ত পরিবেশে খাদ্য সংরক্ষণ করা। যতটা সম্ভব ঘরের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে। লিটার কোন ভাবেই ভিজতে দেয়া যাবে না।
এমন আপদকালীন সময়ের জন্য আগে থেকে খাদ্য মজুদ করে রাখতে হবে। এর জন্য উঁচু স্থানে খাদ্য সংরক্ষণের জন্য উঁচু করে গুদাম ঘর নির্মাণ করা যেতে পারে। বিকল্প খাদ্য হিসাবে কলা, তুঁত, কাঁঠাল, ডুমুর, ইপিল-ইপিল, ডেউয়া, পাকুড়, আম, বাঁশ, জিগা, ও বট গাছের পাতা বন্যার ও শুষ্ক উভয় মৌসুমেই উপযুক্ত।
পড়ুন: কুড়িগ্রামে বানভাসিদের দুর্ভোগ বেড়েছে, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট
ঝড়-বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষার জন্য আগে থেকেই ঘরে শক্ত খুঁটি দিয়ে রাখতে হবে। নিয়মিত জীবাণু মুক্ত রাখার জন্য আগে থেকেই শেডের মেঝেতে চুন দেয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে ছাই, কাঠের গুঁড়া বা বালু, তুষ ছড়িয়ে দেয়া এবং নিয়মিতভাবে তা বদলে দেয়া যেতে পারে। ঝড়-বৃষ্টির পানি যাতে ঘরের ভেতরে না যায় সেজন্য ঘরের চারদিকে চটের বস্তা বা রেকসিনের পর্দা দিয়ে ঘেরাও করে দিতে হবে।
পশু-পাখি কোন ভাবেই যেন বন্যার দূষিত পানি কিংবা পচা খাবার না খায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বন্যার পানির নিচে ডুবে যাওয়া ঘাস; এমনকি বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নতুন করে গজানো ঘাস পশুকে খাওয়ানো ঠিক নয়। নিজেদের আহারের উদ্বৃত্ত অংশ নষ্ট না করে গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির জন্য রাখা যেতে পারে।
ঝড়-বৃষ্টির শুরুর আগেই হাস-মুরগি ও এগুলোর ডিম বাজারজাত করা জরুরি। প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এগুলো বাজারজাত করে ফেলা ভালো।
বন্যাতে পশুর ডায়রিয়া, তড়কা, বাদলা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, ক্ষুরারোগ প্রভৃতি রোগের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। হাস-মুরগির ক্ষেত্রে রানীক্ষেত, কলেরা, ডাকপ্লেগ, বসন্ত, ছত্রাক ও অন্যান্য পরজীবীজনিত রোগের সংক্রমণের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। আগে ভাগেই প্রতিটি রোগের জন্য প্রতিষেধক টিকা দিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সংক্রমণ এড়াতে মৃত পশু-পাখি পুড়িয়ে বা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। সর্বপরি, পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ও বন্যা পরবর্তী সময়ে যে কোনো সমস্যায় নিকটস্থ পশুসম্পদ দপ্তরের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে।
পড়ুন: পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, ভাঙন ঝুঁকিতে ৩৫০ পরিবার
খরার সময় করণীয়
এ সময় অতিরিক্ত গরম থাকে বিধায় গবাদিপশুকে যে কোন শেড বা গাছের নিচে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখা উচিত। তাপমাত্রা কমানোর জন্য শেডের চালের ওপর পানি ছিটিয়ে দেয়া যেতে পারে। হাঁস-মুরগির ঘরের চালার ওপর চট বিছিয়ে তার ওপরেও একই ভাবে ঠাণ্ডা পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
পানি যে কোন পাত্রে দীর্ঘক্ষণ রেখে দিলেই তা গরম হয়ে যায়, তাই পানি বেশিক্ষণ একই পাত্রে রাখা যাবে না। এ ক্ষেত্রে অল্প অল্প করে পাত্রে রেখে মাঝে মাঝে তা বদলে দেয়া যেতে পারে। এজন্য পানির পাত্রের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ট্যাংক থেকে সরাসরি পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে ট্যাংকটিকে কোনো কিছু দিয়ে আবৃত করে রাখতে হবে, যেন ট্যাংকের পানি গরম হয়ে না যায়।
পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে পশু-পাখির ঘরে। কমপক্ষে রাত ২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত আলোর ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে। সিলিং ফ্যানের পাশাপাশি এক্সজস্ট ফ্যান স্থাপন করা একটা ভালো উপায়। আর গরম খুব বেশি বাড়লে ঘরে ফ্যানের সংখ্যা দুয়েকটা বাড়িয়ে পশু-পাখির সংখ্যা কমিয়ে দেয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে রুমের তাপমাত্রা বোঝার জন্য থার্মোমিটার ব্যবহার জরুরি। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে গেলে মুরগির ওপর ও ঘরের মেঝেতে ঠাণ্ডা পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
গরমকালে পশুর খাদ্য গ্রহণের হার কম, তাই খাদ্যে যত বেশি সম্ভব প্রোটিন রাখতে হবে। গরম বাড়ার সাথে সাথে ভোর, সন্ধ্যা ও রাতে খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করা যায়। এ সময় দুপুরের খাবারটা বন্ধ রাখা আবশ্যক। যথেষ্ট পরিমাণে বিশুদ্ধ ঠাণ্ডা পানির যোগান দিতে হবে। রাত ঠিক ২টার পর থেকে খাবার ও পানি খাওয়ানো যেতে পারে। পাত্রের খাবার পানি গরম হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রেখে পুনরায় বদলে দিতে হবে। ঠাণ্ডা পানির সাথে ইলেকট্রোলাইট্স এবং ভিটামিন-সি দেয়া উত্তম।
প্রচন্ড গরমে গবাদি পশু হিটস্ট্রোক, ম্যাসটাইটিস, ধকল, অ্যানাপ্লাজমোসিস, থাইলেরিওসিস, বেবিসিসিস, গলাফুলা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া মশা-মাছির প্রকোপ তো আছেই। এ ব্যাপারে পশুর সম্ভাব্য উপসর্গগুলোর প্রতি কড়া দৃষ্টি রাখতে হবে। রাতে বা খুব ভোরে হাস-মুরগীর জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দেয়া হয়। অত্যাধিক গরমের এই পথ্যটি অন্যান্য সময়ে প্রদানের দুই থেকে তিন দিন পর দেয়া যেতে পারে।
পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
শৈত্য প্রবাহের সময় করণীয়
শেডে বেড়া এবং চারদিকে চট বা প্লাস্টিকের পর্দা ঝুলিয়ে দিলে অতিরিক্ত ঠান্ডার সময় বেশ কাজে দেয়। টিনের শেডে সিলিং থাকা জরুরি আর শেডের ওপর চট বা খড় বিছিয়ে দিলে ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে। প্রচন্ড ঠান্ডা থেকে বাঁচানোর জন্য গবাদিপশুর গায়েও চট দিয়ে ঢেকে দেয়া যায়। শেডের ভেতরে বা ব্রুডারে ১০০ থেকে ২০০ ওয়াটের বাল্ব, আগুন জ্বালিয়ে রাখা বা বৈদ্যুতিক হিটার সংযোজন ঘরে প্রয়োজনীয় তাপ সরবরাহ করবে।
লোডশেডিং-এর সময় ঘরের ভেতর হ্যাজাক বা হারিকেন দিতে হবে। শেডের মেঝেতে লিটার দেয়ার সময় তার পুরুত্ব চার ইঞ্চি রাখতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন বেশি স্যাঁতসেঁতে হয়ে না যায়। শেডের চালের নিচ দিয়ে যথেষ্ট আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা দরকার।
পশু-পাখি যেন সুষম খাদ্য পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। খাবারে প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকতে হবে এবং অধিক ক্যালরিযুক্ত হতে হবে। কুসুম গরম পানির সাথে খাবার সরবরাহ করতে হবে। পানিতে ভিটামিন-সি, এ, ডি ও ই মিশিয়ে দেয়া উত্তম। এ সময় বিশেষ করে গর্ভবতী গাভী ও বাছুরের প্রতি আলাদা ভাবে বেশি যত্ন নেয়া দরকার।
ঠান্ডায় গবাদিপশুর রোগগুলোর মধ্যে আছে সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়া। হাস-মুরগির সর্দি-কাশি, সিআরডি, ব্রুডার নিউমোনিয়া ও আমাশয়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ বিষয়গুলোতে আগে থেকেই নিকটস্থ পশুসম্পদ দপ্তরে যোগাযোগ করে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
পড়ুন: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
শেষাংশ
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পশু-পাখির সুরক্ষার্থে উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো বেশ কার্যকরি ভূমিকা পালন করবে। নিদেনপক্ষে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও দুর্যোগের পরে ক্ষতিপূরণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা যাবে। দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের আবার নতুন করে শুরু করতে বেশ বেগ পেতে হয়। সে সময় গৃহপালিত পশু-পাখিগুলোই শেষ অবলম্বন হিসেবে দেখা দেয়। তাই নিজেদের বেঁচে থাকার স্বার্থেই এই বহু কষ্টে লালিত সম্পদগুলোর যথাযথ যত্ন নেয়া উচিত।
২ বছর আগে
পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে দ্রুত সহায়তা করার ক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য স্বর্গীয় আশীর্বাদ হিসাবে আসবে।
তিনি বলেন,আগামী ২৫ জুন আমরা পদ্মা সেতু খুলে দেব। আমি মনে করি, উদ্বোধনটি আল্লাহর রহমত হিসাবে আসবে। আমরা দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, পণ্য পরিবহন, বন্যা মোকাবিলা এবং বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হব। আমরা তাদের সাহায্য করার জন্য একটি বড় সুযোগ পাব।
রবিবার নিজ কার্যালয়ে ২০২১ সালের সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা জাতীয় ফুটবল দলের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কখা বলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বানচালের ষড়যন্ত্র নস্যাতে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে