ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে গুরুতর ভুল হিসেবে বর্ণনা করে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
মঙ্গলবার ইসরায়েলে ১৮০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। এর প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে এ অঙ্গীকার জানান।
ইরানের দাবি, লেবাননে হিজবুল্লাহর ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। গাজা সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়ে আসছে ইরান সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
এর আগে ওই দিন সকালে ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে।
ইসরায়েলজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়।
দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশকিছু ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বয়স করতে পারলেও ইসরায়েলের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এতে দুইজন আহত হয়েছে।
ইসরায়েলের চ্যানেল থার্টিন টিভি নিউজ জানিয়েছে, ইরান থেকে অন্তত ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। বিকট বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাখ লাখ বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
ইসরায়েলের উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো জানায়, শ্রাপনেলের আঘাতে তেল আবিবে দুইজন সামান্য আহত হয়েছে। শহরের উত্তরাঞ্চলে একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েলের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তাজনিত কারণে জর্ডান ও ইরাকের নিকটবর্তী দেশগুলোও তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় আইআরআইবি টিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) অর্ধশতক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে।
এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানায়, হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ও আইআরজিসির জ্যেষ্ঠ কমান্ডার আব্বাস নিলফোরুশানকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এবং মার্কিন সহায়তা নিয়ে লেবানন ও ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়াতে থাকায় এ হামলা চালানো হয়েছে।
আইআরজিসি আরও জানায়, সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমোদন এবং সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের নির্দেশনার পর এ অভিযান চালানো হয়।
আইআরজিসি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইসরায়েল যদি প্রতিশোধ নিতে ইরানে হামলা চালায় তাহলে দেশটিকে আরও ধ্বংসাত্মক হামলার মুখোমুখি হতে হবে।
অন্যদিকে পশ্চিম তীরে জেরিকোর কাছে এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তির মৃত্যুর খবর দেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। যদিও এই ক্ষেপণাস্ত্র ইরান থেকে ছোড়া না ইসরায়েলের তা স্পষ্ট নয়।
ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা দুই দেশ ও তাদের আঞ্চলিক মিত্রদের মধ্যে সংঘাত তীব্র করে দিলো যার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় আকারের যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে।