জাপান
বিশ্বের শীর্ষ ১০ ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ
পৃথিবীর ভূত্বকের নিচে আধা-তরল আবরণে ভেসে থাকা ভূত্বকের বৃহৎ অংশগুলো টেকটোনিক প্লেট নামে পরিচিত। এই প্লেটগুলোর নড়াচড়ার সময় প্রতি দুই প্লেটের মাঝের জায়গায় ঘর্ষণের সৃষ্টি হয়। এই ঘর্ষণের আশেপাশের এলাকায় চাপ সৃষ্টি করে। এর চূড়ান্ত অবস্থায় একটি সিসমিক তরঙ্গ প্রবাহিত হয়, যা প্লেটগুলোর সংঘর্ষ সংলগ্ন এলাকাজুড়ে ভূমিকম্পের সৃষ্টি করে। এর প্রচণ্ডতায় ঘনবসতিপূর্ণ বিশেষ করে বড় বড় স্থাপনা সম্বলিত জায়গাগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আজকের নিবন্ধে অধিক ঝুঁকিতে থাকা ১০টি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি দেশ
জাপান
ভূমিকম্পন এলাকা হিসেবে ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ একটি দেশ জাপান। ভূমিকম্প ছাড়াও আগ্নেয়গিরি এবং উষ্ণ প্রস্রবণের জন্য রীতিমত প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বলা যেতে পারে জাপানকে। এটি ভৌগলিক ভাবে প্রশান্ত মহাসাগরীয়, ফিলিপাইন, ওখটস্ক এবং ইউরেশীয় প্লেট; এই চারটি টেকটোনিক প্লেটের সীমানায় অবস্থিত।
এই সীমান্তগুলোকে ঢেকে রাখা সামুদ্রিক পরিখা ও খাদের বিশাল জলাশয় ঘিরে রয়েছে জাপানী দ্বীপপুঞ্জকে। প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ার হিসেবে পরিচিত প্রশস্ত এই এলাকায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পের শিকার হওয়া দেশটি জাপান।
১৯৯০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে জাপানে মোট ৯৪টি ভূমিকম্প হয়েছে। এগুলোর মধ্যে একুশ শতকের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পের মধ্যে রয়েছে ২০১১-এর তোহোকু ভূমিকম্প ও সুনামি। ৯ থেকে ৯.১ মাত্রার এই ভূ-কম্পনে প্রাণহানি ঘটেছিল ১৯ হাজার ৭৫৯ জন মানুষের।
২০১৬-এর কুমামোটো ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃত্যু সংখ্যা ছিলো ২৭৩ জন।
আরও পড়ুন: মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত, মারাকেচে ঐতিহাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত
বিমানের ঢাকা-নারিতা সরাসরি ফ্লাইট বাংলাদেশ-জাপান বাণিজ্য ও সম্পর্ক জোরদার করবে: বিসিসিআইজে সভাপতি
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন জাপান (বিসিসিআইজে)- এর সভাপতি বাদল চাকলাদার জানিয়েছেন, জাপানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চালুর ফলে দু’দেশের বাণিজ্য ও সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে।
রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে টোকিওর একটি রেস্টুরেন্টে বিসিসিআইজে-এর আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
এছাড়াও বিমানবন্দরে হয়রানি, লাগেজ নষ্ট না হওয়ার, লাগেজ হারিয়ে যাওয়া, সময়মত লাগেজ পাওয়া ও বিমানের সেবার মান বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন বিসিসিআইজে সভাপতি।
এসময় বিসিসিআইজে সভাপতি সরাসরি ফ্লাইট চালু করায় বাংলাদেশ সরকার ও বিমানকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ১৭ বছরে আগের মত যেন ফ্লাইট আবারও বন্ধ না হয়। আমরা সব সময় চাই জাপানিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুক। কিন্তু সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় বাংলাদেশে একবার গেলে দ্বিতীয়বার যেতে অনেক বিনিয়োগকারী আগ্রহী হতেন না। মালামাল পরিবহনেও খরচ বেশি হয়। আমরা এখন চাইবো এই ফ্লাইট আর যেন বন্ধ না হয়।
তিনি আরও বলেন, জাপানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি করতে পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করার উদ্যোগ নিতে হবে। বিমানের সেবার মানও আরও বাড়াতে হবে। তাহলে দেশি- বিদেশি যাত্রীরা বিমানকেই পছন্দ করে নিবে।
আরও পড়ুন: নারিতার পর বিশ্বের আরও কয়েকটি রুটে ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ বিমানের
উপস্থিত জাপানে বসবাসকারী ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, সরাসরি ফ্লাইট না থাকার কারণে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে যেতে আগ্রহী হন না। বাংলাদেশিদেরও জাপান থেকে দেশে যেতে দীর্ঘ সময় লাগতো। এখন সরাসরি চালু হওয়ায় দু’দেশের জন্য সম্পর্ক ও ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ হবে। বাংলাদেশি প্রবাসীদের লাশ বিনা খরচে দেশে নিতেও আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়াও, বিমানবন্দরে হয়রানি, লাগেজ নষ্ট না হওয়ার, লাগেজ হারিয়ে যাওয়া, সময়মত লাগেজ পাওয়া ও বিমানের সেবার মান বৃদ্ধির দাবি জানান ব্যবসীয়া।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাপানে ফ্লাইট চালু হওয়ায় ফলে আমাদের দু’দেশের সম্পর্ক আরও অনেক বৃদ্ধি পাবে। জাপানের সঙ্গে আমাদের ৫০ বছরের সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ক আরও অনেক বাড়বে। ১৭ বছরে জাপানের টোকিওতে ফ্লাইট চালু করল বিমান। এতে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনও সহজ হবে। জাপানে ফ্লাইট চালু রাখা বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা লাগবে।
তিনি আরও বলেন, জাপান ফ্লাইট চালুর ফলে ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে আসবেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবেন। বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ।
জাপানে বাংলাদেশি প্রবাসীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাপান একটি উন্নত দেশ। আপনারাও যদি তাদের মতো কাজ করেন, তাহলে অনেকদূর এগিয়ে যাবেন।
বাংলাদেশে জাপানি পর্যটকদের আসার জন্য প্রবাসীদের ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান পর্যটন প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ঢাকা-নারিতা রুটে ১ সেপ্টেম্বর ফ্লাইট চালু করবে বিমান
বিমান সেবার মান বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেন, দীর্ঘদিন পরে ফ্লাইট শুরু করতে পেরেছি। তাই জাপান রুট সফল করতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সেবা নিয়ে কোনো অভিযোগ পেলে কাউকে ছাড় দেবে না।
বিমানের এমডি বলেন, প্রবাসীদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা সহয়তা করুন, বিমানে ভ্রমণ করুন। বিমানের প্রমোট করুন। বিমান আপনাদেরই সম্পত্তি।
বিমান পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল বলেন, জাপানে ফ্লাইট জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। উনার ইচ্ছার ফলে ফ্লাইটটি আবার চালু করা গেছে। এর পিছনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং জাপানে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত অনেক পরিশ্রম করেছেন।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতা সংবর্ধনা আয়োজনের জন্য।
শুক্রবার রাতে ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা থেকে ২৪৩ যাত্রী নিয়ে ৬ ঘণ্টায় জাপানে আসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট।
পরদিন শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় ফ্লাইটটি জাপানের নারিতা বিমানবন্দরে অবতরণ করে। উদ্বোধনী এই ফ্লাইটে বাংলাদেশি ছাড়াও নেপাল থেকে আসা যাত্রীরা ঢাকা হয়ে জাপানে গেছেন।
নারিতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ফ্লাইটটিকে ‘ওয়াটার ক্যানন’ স্যালুট দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে। সেইসঙ্গে ফ্লাইটের যাত্রীদেরও উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
বিমানবন্দরে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: বিমান সিইও
জাপানের নিরাপত্তা সহায়তা প্রাপ্ত প্রথম ৪ দেশে থাকছে বাংলাদেশ
জাপান তাদের নতুন অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিসটেন্স (ওএসএ) কর্মসূচির সুবিধাভোগী চারটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে।
শনিবার দূতাবাসে এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, ‘এ থেকে বোঝা যায় জাপান বাংলাদেশকে কতটা গুরুত্ব দেয়।’
অন্য তিনটি দেশ হলো- ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও ফিজি।
এ লক্ষ্যে জাপান ও বাংলাদেশ তাদের নিজ নিজ দূতাবাসে প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে নিয়োগে সম্মত হয়েছে।
আরও পড়ুন: আইওএসএ সনদ পেল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
চলতি বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সময়ও এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে 'অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্স (ওডিএ)' ছাড়াও জাপান সশস্ত্র বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার সুবিধার্থে উপকরণ ও সরঞ্জাম সরবরাহের পাশাপাশি দেশগুলোর নিরাপত্তা চাহিদার ভিত্তিতে অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে একটি নতুন সহযোগিতা কাঠামো 'অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিসটেন্স (ওএসএ)' প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসারে, ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা কর্তৃক অনুমোদিত নতুন ‘জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে’ ওএসএ উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ও জাপান শিগগিরই প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে একটি চুক্তি সই করতে পারে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হস্তান্তর সম্পর্কিত একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছি। আমরা এই মুহূর্তে বিস্তারিত প্রকাশ করতে পারব না। তবে, আলোচনা ইতিবাচকভাবে চলছে।’
জাপান-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং দেশটি ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশকে সর্বাধিক বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তা (২৪ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার পর এবং ২০২৬ সালের মধ্যে শুল্কমুক্ত সময়ে ঢাকা-টোকিও বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সইয়ের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।
ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, জাপান-বাংলাদেশ জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ ইতোমধ্যে ইপিএ নিয়ে দুটি বৈঠক করেছে এবং তৃতীয় বারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, জাপান বাংলাদেশের সব সময়ের বন্ধু এবং দু'দেশকেই একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।
জাপানের একটি বিশাল জনশক্তির প্রয়োজন হবে এবং বাংলাদেশ এই ধরনের জনশক্তি সরবরাহ করতে পারে।
তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির জন্য জাপান বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল বাজার এবং বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য একটি প্রধান গন্তব্য হতে পারে।
প্যান-এশিয়া রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পারি) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে জাপান দূতাবাসে আয়োজিত আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম কথা বলেন।
প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত জামিল মজিদ ও আশরাফ-উদ-দৌলা; এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. লাইলুফার ইয়াসমিন; পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় শাখার পরিচালক সায়েম আহমেদ; জাইকা বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি ইজি ইয়ামাদা; জাপানিজ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন ইন ঢাকা (জেসিআইএডি) এর সভাপতি তেতসুরো কানো; জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) মহাসচিব মো. আনোয়ার শহীদ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে ৪৪তম ওডিএ ইয়েন ঋণচুক্তি সই
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাপানের প্রচেষ্টা জোরদার হবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ: শাহরিয়ার
অবকাঠামোগত উন্নয়নে জাপানের অব্যাহত সহায়তার প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক থাকায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাপানের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কবিষয়ক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে আমরা আশা করি জাপান রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রচেষ্টা আরও জোরদার করবে।’
শনিবার (২৬ আগস্ট) প্যান-এশিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিএআরআই) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে জাপান দূতাবাসে আয়োজিত আলোচনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
জাপানে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত জামিল মজিদ ও আশরাফ-উদ-দৌলা, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. লাইলুফার ইয়াসমিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় শাখার পরিচালক সায়েম আহমেদ, জাইকা বাংলাদেশের সিনিয়র প্রতিনিধি ইজি ইয়ামাদা, ঢাকায় জাপানিজ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (জেসিআইএডি) সভাপতি তেতুরো কানো এবং প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) মহাসচিব মো. আনোয়ার শহীদ।
অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার আলম মাতারবাড়ী প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং ক্রমবর্ধমান জাপানি কোম্পানির উপস্থিতি ও সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা জাপানের সমর্থিত এই অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকে দেশ ও জনগণের অনেক সমস্যার সমাধান হিসেবে মনে করছি।’
এর আগে বাংলাদেশ সরকার জানায়, প্রতি বছর রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ৩০ হাজার শিশুর জন্ম এবং রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অনেক কমে যাওয়ায় এই সংকট আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও স্থায়ী প্রত্যাবাসন শুরু করতে আরও দেরি এবং মানবিক সহায়তার ঘাটতি পুরো অঞ্চলকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, ১ দশমিক ২ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাকে এত দীর্ঘ সময় আশ্রয় দেওয়ার আর্থ-সামাজিক, জনসংখ্যাগত ও পরিবেশগত ব্যয় বাংলাদেশকে ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষদের নিরাপদ ও স্থায়ীভাবে তাদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা ও অধিকার রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জনগুলো অসাধারণ এবং এ ধরনের অর্জন কিছু চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে উচ্চ আয়ের দেশে রূপান্তরে সহযোগিতা করবে জাপান: নিশিমুরা ইয়াসুতোশি
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে জনগণের আকাঙ্ক্ষা সমুন্নত রাখতে হবে। আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। গত ৫০ বছরে আমরা যা অর্জন করেছি তা আরও বাড়ানোর জন্য আমাদের প্রতি জনগণের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এটা (লক্ষ্য অর্জন) সহজ হবে না। একমাত্র জাপানের মতো বন্ধুরা আমাদের সেই লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপান অবশ্যই সম্মিলিতভাবে কাজ করবে এবং উভয় দেশ ও তাদের জনগণের জন্য পারস্পরিক কল্যাণকর ভবিষ্যৎ অর্জনের যাত্রায় এক থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বর্তমানে শুধু একটি জিটুজি (সরকার-থেকে-সরকার) অংশীদারিত্ব রয়েছে।
ঢাকা-নারিতা রুটে ১ সেপ্টেম্বর ফ্লাইট চালু করবে বিমান
ঢাকা থেকে জাপানের নারিতায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম ইউএনবিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সিইও জানান, উদ্বোধনী ফ্লাইটটি ১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করবে। ২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে জাপানের নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।
আরও পড়ুন: ৭ অক্টোবর হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং: বেবিচক চেয়ারম্যান
তিনি আরও বলেন, ২ সেপ্টেম্বর নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ফ্লাইট বিজি-৩৭৭ যাত্রা করবে।
শফিউল আজিম বলেন, ঢাকা থেকে নারিতা বিমানের ফ্লাইট প্রতি শুক্রবার, সোমবার ও বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে এবং নারিতা থেকে ঢাকার উদ্দেশে প্রতি শনিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ছাড়বে।
এ ছাড়া গত ২৫ জুলাই থেকে ঢাকা-নারিতা (টোকিও) সরাসরি ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
এদিকে ঢাকা-নারিতা রুটে একমুখী সর্বনিম্ন ভাড়া ৭০ হাজার ৮২৮ টাকা এবং ফিরতি টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ১ লাখ ১১ হাজার ৬৫৬ টাকা।
তবে নতুন রুট উদ্বোধন উপলক্ষে ছাড় দিয়েছে বিমান। ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ মূল্য ছাড় দেওয়া হয়।
এ সময় ঢাকা-নারিতা রুটে একমুখী সর্বনিম্ন ভাড়া জনপ্রতি সর্বমোট ৪৯ হাজার ১০০ টাকা এবং রিটার্ন টিকিটের ভাড়া শুরুতে ছিল ৮৪ হাজার ৪৯৬ টাকা। এরই মধ্যে উদ্বোধনী ফ্লাইটের অধিকাংশ টিকিট বিক্রি হয়েছে।
বিমানের মতে, জাপানে অবস্থান করা বাংলাদেশির সংখ্যা খুবই কম। বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে নিযুক্ত থাকা জাপানি নাগরিকরাই এই রুটের যাত্রী হবেন বলে আশা করা করে হচ্ছে।
বিমানের সিইও আরও বলেন, খুহ শিগগিরই আমরা ইন্টারন্যাশনাল সিস্টেমে ২৪ ঘণ্টা কল সেন্টার চালু করতে যাচ্ছি। যাত্রীরা ২৪ ঘণ্টাই বিমানের সব আপডেট তথ্য জানতে পারবেন কল সেন্টারের মাধ্যমে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সিইও জানিয়েছেন, স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হিসেবে বিমানে ব্যাগেজ ব্যবস্থা অটো করা হবে। যার যত কেজি ব্যাগেজ অনুমোদন থাকবে তার থেকে ১ কেজিও বেশি নেওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, এটি সিস্টেমে আটকে যাবে। বেশি ওজন হলে বোর্ডিং আসবে না। ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই অটোমেটিক সিস্টেম চালু করা হবে।
আরও পড়ুন: অক্টোবরে ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে চালু হবে ১২ বোর্ডিং ব্রিজ: বেবিচক
ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: বিমান সিইও
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে জাপানকে বিনিয়োগের আহ্বান পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে জাপানকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: 'হাওর ভিত্তিক পর্যটন' উন্নয়নে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পর্যটনের অপার সম্ভাবনার দেশ। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে কাঙ্ক্ষিত মানে বিকশিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প নতুন যুগে প্রবেশ করবে। বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী জাপান বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের মাধ্যমে এ শিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রতিমন্ত্রীর কথার জবাবে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, আগামী অক্টোবরে জাইকার অর্থায়নে নির্মিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং হতে যাচ্ছে জেনে জাপান আনন্দিত।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে চালু হতে যাওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সরাসরি ফ্লাইট দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে।
এছাড়াও, সাক্ষাৎকালে জাপানের রাস্ট্রদূত বাংলাদেশের পর্যটন মহাপরিকল্পনা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এভিয়েশন সেক্টরে চলমান উন্নয়ন সহায়তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নেও জাপান সহযোগিতা করবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারকে আকাশপথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যুক্ত করা হচ্ছে: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
১৫ বছরে এভিয়েশন খাতে প্রবৃদ্ধি হবে তিনগুণ: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
জাপানে জাতীয় শোক দিবস পালন
যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী পালন করেছে টোকিওতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
মঙ্গলবার সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এ সময় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়।
এরপর সকলের অংশগ্রহণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের সদস্য এবং ১৫ আগস্টের অন্যান্য সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত শেষে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন দূতাবাসের কর্মকর্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
আরও পড়ুন: জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
পরে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রাষ্ট্রদূত অন্যান্যদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী, নির্ভীক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার সংগ্রাম গড়ে তোলে এবং একটি স্বাধীন দেশ, বাংলাদেশ এবং বৈশ্বিক মঞ্চে বাঙালির জাতীয় পরিচয় অর্জনের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ করেছে।
আরও পড়ুন: শোক দিবসের বিশেষ নাটক ‘একজন কফিলুদ্দিন’
স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে, তার নেতৃত্বে, বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থায় যোগদান করে এবং জাপানসহ বহু সংখ্যক দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থাপনের মধ্যদিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের স্থান দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রদূত তার সংকল্প ব্যক্ত করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তার স্বপ্ন, আদর্শ ও নির্দেশনা আজও আমাদের বাংলাদেশের মুক্তির পথ দেখিয়ে চলেছে। তার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আধুনিক ও উন্নত দেশ, বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন করবে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের পর দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এই অনুষ্ঠানে জাপানে কর্মরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য এবং পেশাজীবীরা দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: ৩ নভেম্বরকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়: কাদের
হলি আর্টিজান দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি জাপানের মন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী (এমইটিআই) ইয়াসুতোশি নিশিমুরা সোমবার (২৪ জুলাই) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এইচএসআইএ) তৃতীয় টার্মিনালের মেট্রোরেল প্রকল্প ও নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ সফরে তার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
তারা উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে একসঙ্গে মেট্রোরেলে চড়ে পল্লবী পর্যন্ত কয়েকটি মেট্রোস্টেশন অতিক্রম করে একই স্টেশনে ফিরে আসে।
তারা মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং সেখানে স্মৃতিসৌধে হলি আর্টিজান ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
জাপানের মন্ত্রী মেট্রোরেলে চড়ে খুব খুশি হন এবং বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের চলমান নির্মাণ কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সফরে তার সঙ্গে থাকার জন্য তিনি প্রতিমন্ত্রী আলমকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে উচ্চ আয়ের দেশে রূপান্তরে সহযোগিতা করবে জাপান: নিশিমুরা ইয়াসুতোশি
দেশের বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান: বাণিজ্যমন্ত্রী
ঢাকায় জাপানের মন্ত্রী নিশিমুরা ইয়াসুতোশি
দেশের বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশের বড় বড় প্রকল্পে জাপান বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এ ছাড়া, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশ গড়ার যে লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, জাপান সরকার এ অগ্রযাত্রায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় করেছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
রবিবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সফররত জাপানের অর্থনীতি ও বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, জাপান দীর্ঘসময় ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে পাশে আছে। তারা আমাদের দেশের অনেক বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
বৈঠকে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মাঝে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাত অনুসন্ধানের উপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাপান-বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) কাজ চলমান। ইতোমধ্যে জাপানে এসংক্রান্ত প্রথম রাউন্ড আলোচনা হয়েছে এবং আগামী ২৫-২৬ জুলাই ঢাকায় দ্বিতীয় রাউন্ড আলোচনা হবে। খুব শিগগিরই এই চুক্তি সম্পাদিত করার বিষয়ে উভয় দেশ সম্মত হয়েছে।
এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) মাধ্যমে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের সমস্যা সমাধান করে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করা হবে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশে শিল্প খাতে উৎপাদন বাড়বে এবং আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় জাপানের মন্ত্রী নিশিমুরা ইয়াসুতোশি
ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করবে জাপান: বেবিচক চেয়ারম্যান
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডিংয়ের কাজ জাপান করবে, জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে জাপান। তাদেরই এ কাজ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাদের কাজ দেওয়ার জন্য কি ধরনের টার্মস দেওয়া হবে সেটি নির্ধারণে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে করা হবে।’
শনিবার (১৫ জুলাই) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘এটিজেএফবি ডায়ালগ’ এ এই তথ্য জানানো হয়। ডায়লগের আয়োজন করে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সভাপতি তানজিম আনোয়ার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সবুজ।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরে স্বর্ণের বার জব্দ, গ্রেপ্তার ২
বিমানের উড়োহাজার কেনা প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের বহর বৃদ্ধি করার নির্দেশনা দিয়েছেন ও কার্গো সক্ষমতা বাড়াতে বলেছেন। এ কারণেই এয়ারক্রাফট কেনা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে এয়ারবাস কেনা হবে, বোয়িং কেনা হবে না সেটা নয়। যে আমাদের ভালো অফার দেবে তাকেই বেছে নেবে বিমান। আমাদের সঙ্গে বোয়িং-এর আগে থেকেই সম্পর্ক আছে, এয়ারবাসের ইস্যুও এসেছে। এয়ারবাস বোয়িং থেকে ভালো অফার দিলে আমরা ওদিকেই যাব।’
সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক হাব করা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা ম্যাস্টার প্ল্যান করে কাজে নেমে গিয়েছিলাম। জায়গা অধিগ্রহণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এজন্য ৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সরকার প্রায়োরিটিতে রাখতে পারেনি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের সদস্য(পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সদস্য (এটিএম) শাহ কাউসার আহমেদ চৌধুরী, সদস্য (প্রশাসন) মো. মাহবুব আলম তালুকদার,সদস্য (নিরাপত্তা) গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী, প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরে ১৮০০ গ্রাম কোকেন জব্দ, ভারতীয় নারী আটক