এম এ মান্নান
অক্টোবরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি খানিকটা কমে ৮.৯১%
বাংলাদেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি অক্টোবরে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে ৮ দশমিক ৯১ শতাংশে নেমে এসেছে, যা সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ ছিল।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, টাকার অবমূল্যায়নকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা উচিত। কারণ এটি বাজারে মার্কিন ডলারের সরবরাহ বাড়াতে সাহায্য করে।
এক প্রশ্নের জবাবে মান্নান বলেন, আইএমএফ যাই বলুক না কেন বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি: আগস্টে ৯.৫% শতাংশ, ১২ বছরে সর্বোচ্চ
চলতি বছরের আগস্টে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫ শতাংশে। অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল সূচকটি গত ১২ বছরের মধ্যে আগস্টে সর্বোচ্চ ছিল।
২০১০-১১ অর্থবছরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ। এরপর এই সূচক ৯ শতাংশের ওপরে ওঠেনি।
আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে কয়েক মাস ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রবণতা ছিল।
৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা, অকটেনের দাম ৪৬ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বেড়েছে।
জ্বালানির দাম বৃদ্ধির এই রেকর্ড মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলেছে।
আরও পড়ুন: সহিংসতায় দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী
জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কমে ৭.৪৮ শতাংশ: বিবিএস
সামাজিক স্থিতিশীলতা এখন অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ: পরিকল্পনামন্ত্রী
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়েছে এবং অর্থনীতির জন্য এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
মঙ্গলবার ঢাকার এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত ‘উন্নয়ন সংলাপে’ মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রাস্তা নয়, হাওরাঞ্চলে ফ্লাইওভার নির্মাণ হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমাজে দুর্নীতি দৃশ্যমান। সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি কমাতে অনেক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যে কোনও প্রকল্প অনুমোদিত হলেই বাস্তবায়নের দায়িত্ব চলে যায় নির্বাহী বিভাগের কাছে। তাই আমি চাইলেও অনেক কিছু করতে পারি না।’
তবে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে দুর্নীতি কিছুটা কমেছে বলেও জানান মন্ত্রী।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘ডলারের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে না গেলে খুশি হব।’
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার ছাঁচে বাংলাদেশকে মূল্যায়ন করবেন না: পরিকল্পনামন্ত্রী
সবাই মিলে জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
রাস্তা নয়, হাওরাঞ্চলে ফ্লাইওভার নির্মাণ হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
হাওরাঞ্চলে আর কোনো সড়ক নির্মাণ করবে না সরকার, তবে প্রয়োজনে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, সরকার হাওরে আর সড়ক নির্মাণ করবে না। যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানে উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে।
রবিবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নে বন্যাদুর্গত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী এ সময় বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের মহাপরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বড় প্রকল্প আসছে৷ প্রথমে ত্রাণ, এরপর নির্মাণ। যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে তাদেরকে সহায়তা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, যা সহায়তা আসছে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেও এ মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে। ধৈর্যের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার উজ জামান এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নূর হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত রাজনৈতিক সচিব হাসনাত হোসেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দোলন রানী তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হাজী তহুর আলী, মাওলানা আবদুল কাইয়ূম, শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালেদ চৌধুরীসহ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: নৌকাডুবি: হাওরে নিখোঁজ তিনজনের লাশ উদ্ধার
ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না কিশোরগঞ্জের হাওরের ধানচাষিরা
জনশুমারি শুরুর প্রাক্কালে ১৪ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী জনশুমারি ও গৃহগণনা শুরুর প্রাক্কালে ১৪ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। সোমবার সংসদে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের সব মানুষের আর্থ-সামাজিক তথ্য সংগ্রহের জন্য ১৫ থেকে ২১ জুন সাত দিন একযোগে জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি পরিচালনা করবে।
জনগণ যাতে জনশুমারি ও গৃহগণনাতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য মন্ত্রী সংসদের সকল সদস্যের সহায়তা কামনা করেন।
সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ৩০০ ধারায় বক্তৃতাকালে জ্যেষ্ঠ এ মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ, হুইপ, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেতা ও সংসদ সদস্যদের কাছে একটি ডেমি অফিসিয়াল (ডিও) চিঠি পাঠিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আবার সংসদে আমার আবেদন পুনর্ব্যক্ত করছি।’
আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে অনলাইনে বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা পাবেন গ্রামবাসী: প্রধানমন্ত্রী
দেশবাসীর জন্য দোয়া করুন, হজযাত্রীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
এম এ মান্নানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা বিএনপির
দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে প্রথম মেয়র এম এ মান্নানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মান্নানের কফিন বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে আসা হলে সেটি দলীয় পতাকায় মুড়িয়ে দেয়া হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা দলের পক্ষ থেকে গাজীপুরের সাবেক মেয়রের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারাও মান্নানের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মান্নান আর নেই
সেখানে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি ও দেশে মান্নানের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, মান্নানের মৃত্যুতে দলের যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।
এসময় ফখরুল মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান মান্নান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। এশার নামাজের পর বারিধারা ডিওএইচএস মসজিদ প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার বাদ আসর গাজীপুরের সালনা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
আরও পড়ুন: সাবেক এমপি আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
এম এ মান্নান ১৯৭৮ সালে বিএনপিতে যোগ দেন, ১৯৯১ সালে গাজীপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯১ সালে ধর্ম বিষয়ক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন। গাজীপুর সিটি করপোরেশন হলে প্রথম নির্বাচনে ২০১৩ সালে মেয়র নির্বাচিত হন মান্নান।
মৌলিক ক্ষেত্রে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে মৌলিক ক্ষেত্রে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।’ তরুণ কৃষিবিদদের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণায় অধিকতর মনযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমরা জাগো, ওঠো, বেড়িয়ে পড়ো।’
মঙ্গলবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বন্দুক-কামানের চেয়ে কলমকে বেশি শক্তিশালী বলে আখ্যায়িত করেছেন।
হাওরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকার ঘোষিত কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: আ. লীগ একটি রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক আন্দোলন: পরিকল্পনামন্ত্রী
ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তৃতায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার বলেন, ‘এইচএসসিতে শিক্ষার্থীরা যে পড়াশোনা করে তার ৪ ভাগের ১ ভাগ পড়াশোনা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্লাস রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব।’
তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী প্রায় বিনামূল্যে পড়াশোনা করেন। শিক্ষার্থীদের তিনি পড়াশোনা ও জ্ঞান চর্চায় মনযোগী হতে বলেন।
আরও পড়ুন: দেশে বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে: পরিকল্পনামন্ত্রী
নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসার আহ্বান পরিকল্পনামন্ত্রীর
আ. লীগ একটি রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক আন্দোলন: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক আন্দোলন। আওয়ামী লীগ সরকারকে ২০ বছর গায়ের জোরে ক্ষমতায় আসতে দেয়া হয়নি। কিন্তু এখন আর আমাদের সাথে লড়াই করা সহজ হবে না। কারণ আমাদের শিকড় অনেক গভীরে রয়েছে।
সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের মসৃণ এবং টেকসই উত্তরণের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনার রূপরেখা তৈরির সুবিধার্থে সরকার, উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি খাত, এনজিও, নাগরিক সমাজ ও শিক্ষাবিদদের সাথে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত একটি জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সিজিএস এর চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী, গবেষণা পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন এবং নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
‘এলডিসি থেকে উত্তরণ এবং কার্যকর উন্নয়ন সহযোগিতা’ শিরোনামের এই অধিবেশনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট প্রতিনিধি ভ্যান গুয়েন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)- এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)- এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন ও নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. জোনায়েদ শফিক।
আরও পড়ুন: গণঅনশনে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বিএনপির সমালোচনা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
‘স্বল্পোন্নত দেশ বলার পরিবর্তে, আমাদের সবচেয়ে শোষিত দেশ বলা উচিত ছিল’ এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় সংলাপের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। তিনি স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন, কীভাবে জাতি বিদ্যুতের অভাব এবং অনাহারে কাটিয়ে উঠে এলডিসিতে পরিণত হয়েছে তা উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, বাংলাদেশে আয় বৈষম্য থাকলেও বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই যেখানে বৈষম্য নেই।
তিনি বলেন, কোনো সন্দেহ নেই যে দুর্নীতি ছিল, কিন্তু সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতিকে বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন। প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক দিকে যেতে দেখলেও বাংলাদেশ এখনও ইতিবাচক জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে।
প্রথমে কী আসে, উন্নয়ন বা সুশাসন- এ আলোচনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সুশাসনের গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন প্রয়োজন।
আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি বাংলাদেশের অর্জন। এশিয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশ সামাজিক সূচকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। এ যাত্রাপথে বাংলাদেশ যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে সেসব সমস্যা যেকোনো দেশেই হতে পারে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা নিতে হবে। ৫০ বছর আগে যেখানে দক্ষিণ কোরিয়া এবং বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল সমপরিমাণের, সেখানে ৫০ বছর পর এসে দক্ষিণ কোরিয়ার মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের চেয়ে কয়েকশ গুণ বেশি। তিনি গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের তুলনা করতে গিয়ে বলেন গণতন্ত্র এবং উন্নয়ন একে অপরের বিকল্প হতে পারে না, আমাদের উভয়েরই প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা আর নেই
জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, এলডিসি এর বিষয়টি এখনও শুধু নীতি-নির্ধারক পর্যায়েই রয়ে গিয়েছে। কিন্তু সফলতা পেতে হলে সরকারের জনগণকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, উন্নীত হওয়ার পর আমাদের কী করণীয় হবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়নটা কি টেকসই হবে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। একই সাথে উন্নত দেশগুলোর সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশ্বে তাদের অবস্থান সমুন্নত করতে পারে। এ জন্য প্রয়োজন উন্নত দেশগুলোর সাথে আলোচনা করা। বেসরকারি খাতের দিকেও নজর দেয়ার কথা বলেন তিনি।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এখন সময় এসেছে বাংলাদশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। যদিও বাংলাদেশ বাড়তি সময় চাচ্ছে, তবুও দেশের কথা চিন্তা করে, দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশের উচিৎ হবে না বাড়তি সুবিধাটুকু নেয়ার। যদি কোরিয়া, ভিয়েতনাম পারে, তবে বাংলাদেশও পারবে।
অধ্যাপক ডা. জোনায়েদ শফিক বলেন, আমাদের দেশের ওষুধ শিল্পের প্রযুক্তি আছে, লোকবল আছে এবং কোনো কিছু আমাদের থামাতে পারবে না। এলডিসির সাথে সাথে বাংলাদেশও এগিয়ে যাবে। এখন শুধু প্রয়োজন সরকারের সহযোগিতা।
ভ্যান গুয়েন বলেন, আমাদের সবাইকে একত্রে নিয়ে কাজ করতে হবে। পরিবর্তনের ধারা বজায় রাখতে হবে। ইউএনডিপি সব সময় বাংলাদেশের এই পথচলায় সাথে থাকবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক দল বাধার সম্মুখীন হবে না: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা একজন স্ট্রং ক্লাইমেট ফাইটার: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক কারণ আছে। কিন্তু আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন স্ট্রং ক্লাইমেট ফাইটার। বৈশ্বিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে তার অবদান আমরা অস্বীকার করতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু আমাদের মা। আমরা সন্তানরা মাকে আদর করতে হবে তাহলে মা তার সন্তানকে স্নেহ করবেন। আমাদের দৈনন্দিন নানা আচার আচরণের মাধ্যমে আমরা মায়ের ক্ষতি করছি জলবায়ু তার সুবিচার চায়। এজন্য আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।’
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৬ উপলক্ষে শনিবার সিলেটে জলবায়ু সুবিচার সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এই সংলাপ অনুষ্ঠান যৌথভাবে ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা এবং ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ গড়তে হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমাদের আওয়াজকে শক্তিশালী ও সোচ্চার করতে হবে এবং ন্যায় বিচারের চাওয়াকে অব্যাহত রাখতে হবে। সবার সচেতনতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠা সম্ভব।’
শনিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেটের হোটেল স্টার প্যাসিফিকে উক্ত অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলার তরুণ জলবায়ু আন্দোলন কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট-৩ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কমনওয়েলথ উন্নয়ন অফিস, বাংলাদেশের পরিচালক জুডিথ হার্বার্টসন, ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. আকমল শরীফ।
খাদেমুল রাশেদ ও হুমায়রার সঞ্চালনায় সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এর সমন্বয়ক সোহানুর রহমান। শুরুতে একটি উপস্থাপনার মাধ্যমে জলবায়ু সুবিচারের বিষয়ে বাংলাদেশের তরুণদের অভিপ্রায় তুলে ধরেন ইসলামিক রিলিফের প্রকল্প সমন্বয়কারী মঈন উদ্দিন আহমদ।
প্রশ্নোত্তর পর্বে অতিথিরা বিভিন্ন প্র্রশ্নের উত্তর দেন। আনন্দ নিকেতন স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মুনতাহা রেজা পরিকল্পনা মন্ত্রীর কাছে জানতে চায় এভাবে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন অব্যাহত থাকলে ৩০ বছর পর সে কি সুনামগঞ্জে তার গ্রামের বাড়িতে থাকতে পারবে, নাকি একটি উঁচুভুমির খুঁজে মাছের মতো সাঁতার কাটতে হবে? উপস্থিত তরুণরা হাওরের জন্য জলবায়ু সুবিচার নিশ্চিত করতে নীতিনির্ধারকদের কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হাওর এলাকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হাওরে বছর বছর ফসলহানীর দায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এড়িয়ে যেতে পারে না। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব রোধ করতে না পারলে হাওরের মানুষের জীবন মান উন্নয়ন সম্ভব নয়।' আরেক প্রশ্নে সাবিহা নামের আরেক ছাত্রী জানায়, গত ১৫ বছরে সিলেটে একশত টিলা কাটা হয়েছে। সিলেটে আর কোনো টিলা কাটা হবে না মর্মে অতিথিদের কাছে প্রতিশ্রুতি চায়।
আরও পড়ুন: গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি: পরিকল্পনামন্ত্রী
কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ গড়তে হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
শুধু স্বপ্ন দেখে নয়, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়তে হবে বলে তরুণদের পরামর্শ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি অডিটরিয়ামে ‘আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ইতিহাস কিংবা অতীতের সাথে লড়াই করা সম্ভব না। কিন্তু চাইলে নিজেই নিজের ভবিষ্যত তৈরি করা যায়। আর এই বিষয়টি তরুণদের হাতেই আছে। শুধু স্বপ্ন দেখেই নয়, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি চিন্তা, গবেষণা, বাইরে যাওয়া, অ্যাডভেঞ্চার, ঝুঁকি গ্রহণ, স্টার্টআপ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও নিজেকে নিযুক্ত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক কনটেস্ট বাংলাদেশে আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত ও সত্যিই আনন্দিত। বাংলাদেশ পর্বে ‘ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২১’ এর বিজয়ী ১২টি দল এই আয়োজনের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশ নিচ্ছে যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।’ আগামী বছর এ আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে আরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অংশ নেবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ‘আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১’ এর চেয়ারম্যান এবং টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেড এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হাবিবুল্লাহ এন করিম।
এছাড়া এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম, হংকং ব্লকচেইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. লরেন্স মা, গ্লোবাল ব্লকচেইন বিজনেস কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মিস. সান্দ্রা রো, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি: পরিকল্পনামন্ত্রী
সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াবে সরকার: পরিকল্পনামন্ত্রী
একনেকে ৫৩৪.৩৪ কোটি টাকায় ৪ প্রকল্পের অনুমোদন
দুইশত দুই কোটি টাকায় ‘দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পসহ চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।