অর্থনীতি
নদীর পানি কেবলমাত্র রাজনীতি নয়, এটা কূটনীতি ও অর্থনীতিও: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আমাদের একটি কথা মাথায় রাখতে হবে। সেটা হলো নদীর পানি কেবলমাত্র রাজনীতি নয়, এটা কূটনীতি ও অর্থনীতিও।
তিনি বলেন, যদি সরকারি পর্যায়ে কোনো নীরবতা বা নিষ্ক্রিয়তা থেকে থাকে সে দিনটি শেষ হয়ে গেছে। এজন্য আমাদের মানুষের দুর্ভোগ ও প্রত্যাশা বুঝতে, সেই অনুযায়ী উজানের দেশের সঙ্গে কথা বলতেই এখানে এসেছি।
আরও পড়ুন: নদী রক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেনীর পরশুরামের নিজ কালিকাপুর এলাকায় বন্যায় ভাঙনকবলিত বল্লামুখা বাঁধ পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, মানবিক কারণে দুইটা দেশকে এক জায়গায় মিশে নদীর পানি ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আজ ৫৩ বছর হয়ে গেল, আমরা তিস্তার চুক্তি সই করতে পারিনি।
আরও পড়ুন: অভিন্ন নদীর পানি ছাড়ার আগে আগাম বার্তা দেয়নি ভারত: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
তিনি আরও বলেন, আমার দেশের মানুষকে তো বাঁচাতে হবে। সে দাবি প্রতিবেশী রাষ্ট্র অস্বীকার করতে পারবে না। সে জায়গা থেকে আমরা তথ্যগুলো চাইব, আলোচনা শুরু করব। এই বিষয়গুলোর একটা রূপরেখা প্রস্তুত করেছি। আপনাদের সঙ্গে কথা বলে চুড়ান্ত করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- পানিসম্পদ সচিব নাজমুল আহসান, ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার, পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান।
আরও পড়ুন: মন্ত্রণালয় পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে পলিসি সহায়তা দেবে: রিজওয়ানা হাসান
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
১ মাস আগে
অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়নে ১০ সদস্যের প্যানেল অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কে শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি প্যানেল গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্যানেলের নির্দিষ্ট সদস্যদের নাম প্রকাশ না করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সচিবালয়ের একটি সূত্র।
এসডিজি বিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন এই প্যানেলকে ৯০ দিনের মধ্যে শ্বেতপত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: চীনের সঙ্গে সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: উপদেষ্টা
এই নথিটিতে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের সময় বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে তা মোকাবিলার লক্ষ্যে কৌশলগত সুপারিশগুলোর রূপরেখা তুলে ধরা হবে।
শ্বেতপত্রটি বেশ কয়েকটি মূল ক্ষেত্রগুলোতে গুরুত্ব দেবে
সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনা: অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ, বিনিয়োগ এবং ভর্তুকিসহ সরকারি ব্যয় এবং বাজেট ঘাটতি অর্থায়ন পরীক্ষা করা।
মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা: উৎপাদন, সরকারি সংগ্রহ এবং খাদ্য বিতরণ প্রক্রিয়া মূল্যায়ন।
বাহ্যিক ভারসাম্য: রপ্তানি ও আমদানি গতিশীলতা, রেমিট্যান্স প্রবাহ, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং বৈদেশিক ঋণের মতো বিষয়গুলোর মূল্যায়ন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: জ্বালানি খাতে চাহিদা, সরবরাহ, মূল্য, ব্যয় এবং ক্রয় চুক্তি বিশ্লেষণ।
বেসরকারি খাত: ঋণ, বিদ্যুৎ, সংযোগ এবং সরবরাহের সুযোগ পর্যালোচনা করা।
কর্মসংস্থান: আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক মজুরি কাঠামো এবং যুব কর্মসংস্থান সমস্যাসহ দেশীয় এবং বিদেশে উভয় কর্মসংস্থানের শর্তগুলোর বিষয়ে তদন্ত করা।
কমিটি সাধারণ অর্থনৈতিক বিভাগের সাচিবিক সহায়তা নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন থেকে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: বানভাসিদের সহায়তার আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখরা এগিয়ে এসেছেন: ধর্ম উপদেষ্টা
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে যে কোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
২ মাস আগে
অর্থনীতির অবস্থা খারাপ নয়, ধীর হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা
চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। এসময় দেশের অর্থনীতি এবং এর জনগণের প্রতি তাদের সংকটকালীন ভূমিকার ওপর জোর দেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ও এর বাস্তবায়ন নিয়ে কথা বলেছি। দেশের জনগণ ও অর্থনীতির জন্য চলমান প্রকল্পগুলো বিবেচনায় নিয়ে আমরা চলমান প্রকল্পগুলো শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছি।’
চলমান মেগা প্রকল্পগুলোতে অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়গুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক বা অন্য খরচই হোক অপচয় কমাতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা এগুলো পর্যালোচনা করব।’
ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদেরকে অবশ্যই তহবিলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সেটি অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসুক, অথবা ঋণ বা অনুদান থেকেই আসুক না কেন।’
এডিপি বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে ড. সালেহউদ্দিন দুর্বলতার কথা স্বীকার করে দ্রুত উদ্যোগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের এডিপি বাস্তবায়ন পিছিয়ে আছে। প্রক্রিয়াটি দ্রুত করার জন্য আমরা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি।’
তিনি একজন প্রকল্প পরিচালকের অধীনে একাধিক প্রকল্প অর্পণকে নিরুৎসাহিত করেন এবং কর্মকর্তাদের আরও দক্ষ এবং গুরুত্বসহকারে কর্মনীতি গ্রহণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'আমরা কর্মকর্তাদের তাদের ওরিয়েন্টেশন, দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে এবং তাদের দক্ষতা বাড়াতে বলেছি।’
বিলম্ব ও আর্থিক অপচয় রোধে প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও ভালো সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. সালেহউদ্দিন। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে সরবরাহ শৃঙ্খলের সমস্যাগুলো সমাধান করার পরিকল্পনার কথা জানান।আরও পড়ুন: জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১১.৭ শতাংশে পৌঁছেছে: বিবিএস
ডাটা ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে তিনি কর্মকর্তাদের সঠিক ও দ্রুত তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের নির্দেশ দেন।
আর্থিক খাতের সম্ভাব্য সংস্কারের কথা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা অনতিবিলম্বে ব্যাংকিং খাতসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নেব।’
এগিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম উপায় নির্ধারণের জন্য তিনি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্ব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, শিগগিরই নতুন গভর্নর নিয়োগ দেওয়া হবে।
তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, অর্থনীতির অবস্থা খারাপ নয়, সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জের কারণে এটি কেবল ধীর হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর বলেন,‘অর্থনীতিকে বেগবান করতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে কোনো শূন্যতা নেই।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার বিদ্যমান নিয়ম-নীতি অনুযায়ী পরিচালিত হয়।
তিনি স্বীকার করেছেন যে দেশ একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি পার করছে। অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হয়েছে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলেও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থনীতি ইতিমধ্যে গতিশীল হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গভর্নরের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকুক বা না থাকুক বাংলাদেশ ব্যাংক সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আমি নির্দেশনা দিয়েছি এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আরটিজিএস ও এলসি পেমেন্টের মতো কার্যক্রমে গভর্নরের সিদ্ধান্তের প্রয়োজন নেই।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হতে চলেছেন আহসান এইচ মনসুর
৩ মাস আগে
দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করাই ছিল বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংসতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার ধারণা ছিল, দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করতে এবং সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশব্যাপী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাতে পারে।
বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এডিটরস গিল্ডের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, বার্তা প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি জানতাম, (৭ জানুয়ারি) ইলেকশন করতে দেবে না। তারপরও আমরা ইলেকশন করে ফেলেছি। (তারা বলেছিল) ইলেকশন করার পর ইলেকশন গ্রহণযোগ্য হবে না, সেটাও গ্রহণযোগ্য আমরা করতে পেরেছি। সরকার গঠন করতে পেরেছি। আমার ধারণা ছিল, এ ধরনের একটা আঘাত আবার আসবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩-১৪ সালের নির্বাচনের আগে-পরেও বিএনপি-জামায়াত জোট অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা এবং হাজার হাজার মানুষকে আহত করে।
কোটা আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতার পেছনে অনেক বড় ষড়যন্ত্র ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা যে একটা বিরাট চক্রান্ত, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল।... এই যে লোক চলে আসা, এবার আমরা কিন্তু আগে থেকে খবর পেয়েছি- লোক ঢুকবে। গোয়েন্দা দিয়ে সব হোটেল, কোথায় থাকতে পারে, সেগুলো নজরদারিতে আনা হয়েছে। কিন্তু ওরা সেখানে ছিল না; এরা চলে এসেছে ঢাকার ঠিক বাইরের পেরিফেরিতে (সংলগ্ন এলাকায়)।’
আরও পড়ুন: ক্রমবর্ধমান সামুদ্রিক খাবারের চাহিদা মেটাতে সমুদ্র সম্পদে বিনিয়োগ করুন: প্রধানমন্ত্রী
‘সারা বাংলাদেশ থেকে শিবির-জামায়াত এরা কিন্তু এসেছে। সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু ছাত্রদলের ক্যাডাররাও সক্রিয় ছিল। যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, এতে এরাও (বিএনপি) সক্রিয় ছিল।’
আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা জিনিস খেয়াল করবেন, তখনও কিন্তু লাশ পড়েনি। অথচ স্টেট ডিপার্টমেন্টের (যুক্তরাষ্ট্রের) বক্তব্যে এসে গেল- লাশ পড়েছে। লাশের খবর তাদের কে দিল? তাহলে লাশ ফেলার নির্দেশটা কে দিয়েছে, এটারও খবর নেওয়া দরকার। তারপর কিন্তু লাশ পড়তে শুরু করল।’
তিনি বলেন, ‘আমি এমন কোনো ঘটনা দেখতে চাই না, যাতে দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়ে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হয়। তারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার টার্গেট করেছিল।’
দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিকে পঙ্গু করার উদ্দেশ্যে এই পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের প্রতি যারা সমর্থন দিয়েছিলেন, তাদের বোঝার সক্ষমতা নিয়ে এসময় প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, স্বার্থান্বেষী মহলের একমাত্র লক্ষ্য দেশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা এবং গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ যে গণতন্ত্র ভোগ করে আসছে তা বন্ধ করা।
সাম্প্রতিক সহিংস পরিস্থিতিতে কারফিউ দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি তো চাইনি আমাদের গণতান্ত্রিক ধারায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটুক, আমাদের কারফিউ দিতে হোক।... একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে এটা আমাদের কাম্য ছিল না। কিন্তু আজ না দিয়ে কোনো উপায় ছিল না; না দিলে আরও যে কত লাশ পড়ত, তার হিসাব নেই।’
তিনি বলেন, ‘যখন তারা (শিক্ষার্থীরা) ঘোষণা দিল যে, চলমান নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তারা জড়িত নয়, তখনই আমরা সেনাবাহিনী নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
দেশবাসীকে সব ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকে অনুরোধ করব, যারা এভাবে দেশের সর্বনাশটা করল- গণমানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতির জন্য, তাদের আয় বৃদ্ধি, তাদের চলাচলের সুবিধার জন্য, তাদের জীবনমান উন্নত করার জন্য যতগুলো স্থাপনা তৈরি করেছি, সবগুলোতেই তারা আঘাত করেছে, সবগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে। (এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে) ক্ষতিটা কার? নিশ্চয়ই জনগণের। এখানে তো জনগণকেই রুখে দাঁড়াতে হবে; এ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, জনগণকেই সোচ্চার হতে হবে। কারণ এরা তো কোনোদিনই কোনো দেশে ভালো কিছু করতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক এই তাণ্ডবের টার্গেট ছিল আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দাবি তারা করেছিল কোটা সংস্কারের, যতটুকু চেয়েছিল, তার থেকে অনেক বেশি দিয়েছি। যখন তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলো, তারপরও তারা এ জঙ্গিদের সুযোগ করে দিল কেন? কোটা আন্দোলনকারীদের কিন্তু জাতির কাছে একদিন এ জবাব দিতে হবে। কেন মানুষের এত বড় সর্বনাশ করার সুযোগ করে দিল?’
‘আমরা সবসময় তাদের সহানুভূতি দেখিয়েছি। তাদের সবসময় নিরাপদ রাখার চেষ্টা করেছি; কিন্তু যেসব ঘটনা ঘটেছে, তাতে কখনো ক্ষমা করা যায় না।’
মত বিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য দেন এডিটরস গিল্ডের প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল বাবু।
সভায় আরও বক্তব্য দেন- জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ডিবিসি টেলিভিশনের এডিটর ইন চিফ মঞ্জুরুল ইসলাম, ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা জার্নালের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, নাগরিক টেলিভিশনের হেড অব নিউজ ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ, আরটিভির হেড অব নিউজ মামুনুর রহমান খান, দৈনিক আমাদের সময় ও বিজনেস পোস্টের নির্বাহী সম্পাদক মাইনুল আলম, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাজাহান সর্দার, ডিবিসি টেলিভিশনের নিউজ এডিটর জায়েদুল আহসান পিন্টু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের হেড অব নিউজ আশিষ সৈকত, বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, ৭১ টিভির হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ, কিংস নিউজের হেড অব নিউজ নাজমুল হক সৈকত প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে আ. লীগের নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
বাংলাদেশে পেরোদুয়া গাড়ি উৎপাদন করতে মালয়েশিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
৩ মাস আগে
দুই দেশের অর্থনীতিতেই অবদান রাখছেন ওমানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওমানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রশংসা করে বলেছেন, তারা দু'দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের অর্থনীতিতে যেমন বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদান রয়েছে, তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও অবদান রয়েছে। উভয় অর্থনীতিই শ্রমশক্তির সুফল পাচ্ছে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার বিন আবদুল করিম আল-বুলুশি বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
পশ্চিম এশিয়ার দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের পারফরম্যান্সের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করেন ওমানের রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, ‘এটা সত্য এবং তারা উভয় অর্থনীতির জন্য কাজ করছে।’
আরও পড়ুন: আমরা আমাদের দরজা বন্ধ রাখতে পারি না: ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ওমান দীর্ঘদিন ধরে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে এবং বর্তমানে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছে।
তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণ হতে পারে।’
এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের সময় ওমানের সহায়তার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত জানান, ওমানে প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন।
তিনি বলেন, 'এটা (বিধিনিষেধ) সুনির্দিষ্ট করে বাংলাদেশের জন্য নির্ধারণ করা হয়নি। চাহিদা নির্ধারণের জন্য আমরা পর্যায়ক্রমে শ্রমবাজার পর্যালোচনা করি। সেই পর্যালোচনার ভিত্তিতে আমরা অনেক সময় যেসব দেশে জনবল বেশি, সেসব দেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া স্থগিত করি। স্থগিতাদেশ শিথিল করার জন্য আপনাকে পরবর্তী পর্যালোচনা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
বাংলাদেশের ওপর কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে- বিষয়টি যে এমন নয় তা স্পষ্ট করেন তিনি।
'কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটা এমন ছিল না। জনশক্তি ভিসা ছাড়া ফ্যামিলি ভিসা ও ট্যুরিস্ট ভিসাসহ অন্য সব ভিসা দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশিদের জন্য বর্তমানে ১০টি ক্যাটাগরিতে ওমানের ভিসার দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তার সরকারের কাছে চিঠি পাঠানোর পরামর্শ দেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষে আলোচনা করতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, 'আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি, যাতে শিগগিরই ওয়ার্কিং ভিসা চালু করা যায়।’
সার আমদানি ইস্যুতে রাষ্ট্রদূত বলেন, তার সরকার এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সরকারের আলোচনা করার প্রস্তাব করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং জানুয়ারিতে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি আরও বলেন, হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ করলে ভালো হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আপনাকে নিয়ে গর্ব করতেন।’
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে একটি ওমানি নৌকার রেপ্লিকা উপহার দেন।
সেখানে লেখা ছিল, 'দৃঢ়তা ও সাহসিকতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মশাল বহনকারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ওমানের রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফফার আলবুলুশির পিক্ষ থেকে অভিনন্দন।’
বৈঠকে অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ২০৩৫ সালের মধ্যে হাইড্রোজেন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় বাংলাদেশ: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
৪ মাস আগে
‘সুনীল অর্থনীতিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা পিছিয়ে’
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সুনীল অর্থনীতিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি।
তিনি বলেন, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা ‘শূন্য’ ছিল। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদির অভাবের মধ্যেও বঙ্গবন্ধু ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট’ প্রণয়ন করেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সে অ্যাক্ট বা অন্যসব ক্ষেত্রে দেশ এগোতে পারেনি। শেখ হাসিনা মায়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সেটেলড করেন।
আরও পড়ুন: ৯ প্রকল্পে জাইকার সহায়তা ১১৩৪৪ কোটি টাকা, শুরু হচ্ছে আরও ৪ প্রকল্প: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
বুধবার (৩ জুলাই) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব মহাসাগর দিবস’ উপলক্ষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ‘বায়োডাইভারসিটি এন্ড মেরিন রিসোর্সেস’ শিরোনামে ব্রেকআউট সেশনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুনীল অর্থনীতির খসড়া অনুমোদন করে দিয়েছেন। আমরা সুনীল অর্থনীতি নিয়ে কাজ করব। সুনীল অর্থনীতিকে বাংলাদেশের মূল অর্থনীতিতে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে গবেষণায় সাপোর্ট দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গবেষকদের জন্য দেশ এগিয়ে যেতে পারছে। আমরা ইকোসিস্টেম, পরিবেশ সম্পর্কে কথা বলছি। কিন্তু পরিবেশবান্ধব সোনালি আঁশ পাটকে রক্ষা করতে পারিনি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নৌসংস্থায় 'সি' ক্যাটাগরিতে আমরা সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। এর মূল কাজ সমুদ্র পরিবহন পরিবেশ সম্মত এবং ফ্রেন্ডলি হওয়া। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি মানবিক দেশ। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সমুদ্রে অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটাকে কাজে লাগিয়ে সুনীল অর্থনীতিতে এগিয়ে নিতে পারি- তাহলে সার্থকতা খুঁজে পাব।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) ড. মো. এমদাদ উল্লাহ মিয়া, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ফিলিপাইনের সহকারী অধ্যাপক জন ভার্ডিন, চীনের অধ্যাপক উইডং ইউ, থাইল্যান্ডের অধ্যাপক সুরিয়ান টুংকিজিয়ানুকিজ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুর রহমান।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি নিয়ে বিএনপির বক্তৃতাই বড় কৌতুক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পরিবেশমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ, জলবায়ু সহযোগিতা জোরদারের আশা
৪ মাস আগে
অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখা সরকারের লক্ষ্য: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখা সরকারের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান।
তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সরবারহ ব্যবস্থা শক্তিশালী রাখা ও বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ রাখা সরকারের লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
রবিবার ঢাকায় ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরাম আয়োজিত ইআরএফ সম্মেলন কক্ষে ম্যাক্রো ইকোনমিক স্ট্যাবিলিটি অ্যান্ড নেক্সট বাজেট শীর্ষক প্রাক বাজেট সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ, নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপশি কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও কৃষিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা, ফাস্ট ট্রাক অবকাঠামো প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সম্পদের যোগান দেওয়ার জন্য সরকার সচেষ্ট।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজেটে সরকারের মৌলিক নীতি নির্ধারণী দলিলসমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দারিদ্র্য নিরসন, নারী ও শিশুর উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সেবার মান বৃদ্ধির প্রচেষ্টা থাকবে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং বাজেট বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। রাজস্ব আহরণ কার্যক্রম ডিজিটাইজেশন করা হচ্ছে এবং ১ জুলাই থেকে মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য দপ্তর বা সংস্থা বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় করতে পারছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের সেমিনার থেকে উত্থাপিত প্রস্তাবনাগুলো আগামী জাতীয় বাজেটে সরকার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে, যা চলমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জনমুখী, শিল্প ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেট প্রণয়নে সাহায্য করবে এবং সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।
সেমিনারে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি, মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ, সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ চেম্বারস অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট, আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ, বিজিএমইয়ের ডিরেক্টর শামস মাহমুদসহ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: টেলিকম খাতের বৃদ্ধির জন্য স্মার্ট ট্যাক্সেশন পলিসি জরুরি: প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী
সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যা-খরার জন্য হাওর ও বরেন্দ্র অঞ্চলে বড় আকারে ‘সিমুলেশন’ অপরিহার্য: প্রতিমন্ত্রী
৭ মাস আগে
রাজনীতি যার যার, অর্থনীতি সবার: এফবিসিসিআই সভাপতি
রাজনীতি যার যার, অর্থনীতি সবার- স্লোগান নিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতির প্রাণ। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে, দেশকে সমৃদ্ধ করতে সব ভেদাভেদ ভুলে ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পোদ্যোক্তা থেকে শুরু করে দেশের সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত এফবিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভায় (২০২২-২০২৩) দেওয়া বক্তৃতায় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এসময় রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভেদাভেদ ভুলে দেশের অর্থনীতিকে সামনের এগিয়ে নিতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসার কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন মাহবুবুল আলম।
আরও পড়ুন: অবরোধ অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভয় পায়: এফবিসিসিআই সভাপতি
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের ব্যবসায়ীরা সুষ্ঠুভাবে নিজ নিজ ব্যবসা পরিচালনা করতে চান। দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ খুবই জরুরি।
দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অসহিষ্ণু কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের ফলে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে আমাদের ব্যবসায়ীরা।
মাহবুবুল আলম বলেন, ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্যসংক্রান্ত পরিস্থিতি ও নীতিমালা ক্রমশ আধুনিকায়ন করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ইস্যু যেমন: ক্রস বর্ডার ট্রেড ও কানেক্টিভিটি, বিনিয়োগ, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেসরকারি খাতের সুপারিশ প্রণয়ন, শুল্ক ও কর ব্যবস্থা, অবকাঠামো, সাপ্লাই চেইন ও লজিস্টিক সাপোর্ট, এনার্জি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, টেকনিক্যাল এবং ভোকেশনাল ও কারিগরি শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে বেসরকারি খাতের অবস্থান মতামত ও সুপারিশমালা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তুলে ধরা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে একাত্ম হয়ে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণমূলক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে একটি স্মার্ট এফবিসিসিআই গড়ার ম্যানিফেস্টো নিয়ে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় এফবিসিসিআই নিয়মিত কার্যক্রম সম্পর্কে সাধারণ পরিষদের সদস্যদের জানানোর জন্য প্রতি মাসে ই-বুলেটিন প্রকাশ করা হচ্ছে। একটি গতিশীল, ব্যবহারবান্ধব ও ইন্টার্যাক্টিভ এফবিসিসিআই গঠনে ডিজিটাল ওয়েবসাইট প্রবর্তন করা হয়েছে।
এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এফবিসিসিআইয়ের কার্যক্রমকে আধুনিক ও গতিশীল করার জন্য স্মার্ট অফিস তৈরির লক্ষ্যে গুলশানে এফবিসিসিআইর অফিস সম্প্রসারিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: এনবিআরকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর আহ্বান এফবিসিসিআই’র
দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ব্যবসায়ীদের কল্যাণে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এসময় পুরান ঢাকায় নতুন শাখা অফিস খোলা ও উত্তরায় একটি ভকেশনাল সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা, গুলশানে এফবিসিসিআইয়ের এক্সটেন্ডেড অফিস চালু, এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন, পুরুষ জামানতকারী ছাড়াই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা কিস্তি প্রাপ্তি, আয়কর জমা দেওয়ার সময়সীমা দুই মাস বাড়ানোসহ পলিসি অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে দেশের বেসরকারি খাতের সুরক্ষায় বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকার কথা সাধারণ পরিষদ সদস্যদের সামনে তুলে ধরেন মাহবুবুল আলম।।
গত বার্ষিক সাধারণ সভার কার্য বিবরণী, এফবিসিসিআইয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২২-২৩, এফবিসিসিআইয়ের আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং নতুন একটি প্রতিষ্ঠানকে নিরীক্ষক দেওয়ার বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন দেওয়া হয়।
বার্ষিক সাধারণ সভায় আগত সাধারণ পরিষদের সদস্যরা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সুচিন্তিত মতামত দেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি গভীর মনোযোগ দিয়ে তাদের বক্তব্য শোনেন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদের উদ্যোগ ও পরিকল্পনা তাদের সামনে তুলে ধরেন তিনি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহসভাপতি খায়রুল হুদা চপল, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, শমী কায়সার, রাশেদুল হোসেন চৌধুরী (রনি), মো. মুনির হোসেন, পরিচালক এবং এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অর্থনীতির স্বার্থে সহিংসতা পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি এফবিসিসিআই'র আহ্বান
১১ মাস আগে
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেশের অর্থনীতি জিম্মি: ব্যবসায়ী নেতারা
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা।
রাজধানীর নয়াপল্টনে তাদের মহাসমাবেশ বানচাল হওয়ার একদিন পর গত ২৯ অক্টোবর থেকে বিরোধী দল বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো দফায় দফায় অবরোধ ও হরতাল দেওয়া শুরু করেছে।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম। প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক খাতে ২০ দিনের হরতাল ও অবরোধের (২৯ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর) আর্থিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা (প্রতিদিন ৬৫০০ কোটি টাকা)।
তিনি বলেন, ‘হরতাল-অবরোধের কারণে দিনে ৬৫০০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমরা বারবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আর্থিক ক্ষতির কারণ এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ড এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছি।’
হরতাল-অবরোধের প্রচার-প্রচারণা স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে পুরোপুরি ব্যাহত করতে ব্যর্থ হলেও, এই অস্থিরতা পরিবহন খাতকে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে এবং পণ্য পরিবহনকে ব্যাহত করেছে; যার ফলে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে।
একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি সরকার প্রত্যাখ্যান করায় বিরোধীরা রাস্তায় অবস্থানের আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে বৃহত্তর সংলাপের প্রস্তাব ডিসিসিআই সভাপতির
পরিবহন মালিকেরা জানায়, এ খাতের আনুমানিক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে প্রতিদিন প্রায় ১৬১ কোটি টাকা। এ হিসেবে ২০ দিনের হরতাল-অবরোধে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ২২০ কোটি টাকা।
ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ইউএনবিকে বলেন, ‘হরতাল ও অবরোধের ফলে আর্থিক ক্ষতি বহুমাত্রিক এবং আপনি এটি শুধু আর্থিক পরিসংখ্যানে হিসাব করতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক বা অন্য কোনো কারণে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হলে বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশের আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী দল ও বৈশ্বিক ক্রেতারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। তারপরে তারা তাদের ক্রয় আদেশ এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনাগুলো আরও সুরক্ষিত ও স্থিতিশীল এলাকায় সরিয়ে নেয়।
থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘যখন একটি বড় বৈশ্বিক ক্রেতা একটি দেশ থেকে অর্ডার স্থানান্তর করে, তখন ছোট ক্রেতারাও তাদের অনুসরণ করে।’
ড. দেবপ্রিয়র কথার প্রতিধ্বনি করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, একটি ক্রমবর্ধনশীল অর্থনীতির জন্য বৈশ্বিক বিনিয়োগ ও বৈশ্বিক ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে প্রতিটি সেক্টরে স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, কারণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পূর্ণরূপে আর্থিক লাভ বা ক্ষতির সঙ্গে সম্পর্কিত। ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীরা সব সময়ই আর্থিক লাভের জন্য বিনিয়োগের জায়গা সন্ধান করে। তারা নিরাপদ স্থানে বিনিয়োগ করতে জন্য পছন্দ করে।
বিক্ষোভে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে পরিবহন খাতে। দূরপাল্লার আন্তঃজেলা বাসগুলো স্টেশনে অলস বসে আছে। অগ্নিসংযোগের ভয়ে সিটি বাসগুলোকে কম যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। এতে অনেক পরিবহন শ্রমিক কর্ম ও বেতনহীন হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ গভীর খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে: ড. দেবপ্রিয়
মহাখালী আন্তঃনগর বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম ইউএনবিকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন প্রায় ৭০০ গাড়ি ছেড়ে যায়। হরতাল-অবরোধের কারণে তা এখন দিনে ১০০-তে নেমে এসেছে।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন, সপ্তাহে মাত্র দুই দিন বাস চালানোর ফলে শ্রমিকদের মজুরি ও জ্বালানি খরচ মেটানোটা আর্থিকভাবে চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। ফলে ব্যবসার মালিকরা বাস পরিচালনার খরচ ও ব্যাংক ঋণের কিস্তিসহ অন্যান্য ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, রাজধানীতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাস চলাচল করে। মালিক ও শ্রমিকেরা মিলে প্রতিদিন ১ দশমিক ৫৮ কোটি টাকা আয় করেন, গড়ে প্রায় ৪৫০০ টাকা।
তবে, এই আয় ৩২ দশমিক ৫০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। যার ফলে হরতাল-অবরোধের কারণে রাজধানীতে বাস চলাচলের জন্য দৈনিক ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে।
মাহবুবুর বলেন, সাধারণ পরিস্থিতিতে সারাদেশে প্রায় ২ লাখ দূরপাল্লার বাস ট্রিপে প্রত্যেকে প্রায় ১০ হাজার টাকা আয় করে, যার ফলে দেশব্যাপী দৈনিক ২০০ কোটি টাকা আয় হতো।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখার তথ্য অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর থেকে ২৯ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মোট ২২৮টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখা শুধু অগ্নিসংযোগের ঘটনা রেকর্ড করে।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম শাখার উপসহকারী পরিচালক শাহজাহান সিকদার বলেন, একটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার পর ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ঘটনাস্থল থেকে বা ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থেকে তথ্য পায়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সময়ে অগ্নিসংযোগের আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, তবে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমকে সেগুলো জানানো হয়নি।
যেসব ঘটনার তথ্য জানানো হয় না, সেক্ষেত্রে স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। অর্থাৎ, পরিবহন কর্মচারীরা নিজেরাই বা যাত্রী ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম শাখার উপ-সহকারী পরিচালক বলেন, এক্ষেত্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
শাহজাহান বলেন, গত এক মাসে ২৮ অক্টোবর থেকে ২৯ নভেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত মোট ২১৭টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সবসময়ই অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি করে: আহসান মনসুর
১১ মাস আগে
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সবসময়ই অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি করে: আহসান মনসুর
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বা অনিশ্চয়তা সবসময় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুর।
ইউএনবিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির প্রসঙ্গও তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি এখন যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে তা গত ২৫ থেকে ৩০ বছরে দেখা যায়নি। তাই রাজনৈতিকভাবে এই গুরুতর পরিস্থিতি মোকাবিলা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ড. মনসুর বলেন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনীতির জন্য একটি দ্বৈত আঘাত। তাই বর্তমান অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্য যেকোনো নির্বাচনের সময়ের চেয়ে আলাদা।
তিনি বলেন, 'জাতীয় নির্বাচন যদি আন্তর্জাতিকভাবে এবং দেশের জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য না হয়, তাহলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বেশিভার গন্তব্য পশ্চিমা দেশগুলো থেকে কী পদক্ষেপ ও প্রতিক্রিয়া আসবে তা নিয়েও উদ্বেগ বাড়বে।’
আরও পড়ুন: অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৯৭ বিলিয়ন ডলার
এরই মধ্যে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পে শ্রমের সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ, শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের নিরাপত্তা এবং কাঙ্ক্ষিত মজুরি নিয়ে বিদেশিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউয়ের (ইউপিআর) আওতায় চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারিতে রয়েছে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমাধান ও শ্রম অধিকার সুরক্ষিত করার পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আইএমএফের ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় প্রসঙ্গে আইএমএফের সাবেক জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. মনসুর বলেন, ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি বিলম্বিত করার কোনো কারণ নেই। যেহেতু ঋণপ্রাপ্তির জন্য নির্ধারিত সব শর্ত পূরণ করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: খোলা বাজারে ১৫ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি
তিনি বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে দুই অঙ্কের মুদ্রাস্ফীতি বিরাজ করছে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। এক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতির হার ৪-৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে বাংলাদেশকে আরও বেশি কিছু করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেডা) নিয়ন্ত্রিত না হয়ে বিনিময় হারকে টেকসই করার জন্য বাজারভিত্তিক বৈদেশিক বিনিময় হারের উপর জোর দেন তিনি।
ড. মনসুর টেকসই অভ্যন্তরীণ বৈদেশিক মুদ্রার বাজারের জন্য মানি লন্ডারিং বা মূলধন উত্তোলন বন্ধে নীতি সংস্কার ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন। যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো পক্ষপাত বা প্রভাবমুক্ত হয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে পারে।
আরও পড়ুন: আইপিওর যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ভূমিকা থাকা উচিত: এটিএম তারিকুজ্জামান
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘বিপুল জনবল ও ভৌগোলিক অবস্থানের সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, নীতিগত সংস্কারের অভাব এবং দুর্বল নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কারণে বাংলাদেশ বড় অঙ্কের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণ করতে পারছে না। রাজনৈতিক অস্থিরতা এফডিআইয়ের জন্য আরেকটি বাধা হিসেবে কাজ করবে।’
রাজনৈতিক সমাধান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই এবং যারা শক্তিশালী অবস্থানে বা ক্ষমতায় আছেন তাদের জন্য বিরোধী দলের সহনশীলতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ড. মনসুর বলেন, সামগ্রিক বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আসন্ন নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের জন্য সর্বোত্তম উপায় এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সংলাপ ও নির্বাচনে সমান সুযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি মনে করেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। যেহেতু এখানে যা ঘটছে, তা সারাবিশ্ব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তাই কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই যৌক্তিকভাবে এগিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: শেয়ারবাজারে নিরবচ্ছিন্ন লেনদেনের জন্য নতুন ডাটা সেন্টার চালু ডিএসইর
১১ মাস আগে