কিংবদন্তি
ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনহো এখন ঢাকায়
ভারত সফর শেষে এবার ঢাকায় পা রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের কিংবদন্তি ও ২০০২ সালের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল দলের সদস্য রোনালদিনহো।
তিনবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী ব্রাজিলিয়ান তারকা ফুটবলার বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
আরও পড়ুন: এএফসি মহিলা এশিয়া কাপ: অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ব্রাজিলিয়ান আইকন সরাসরি হোটেল রেডিসনে পৌঁছান। এদিকে তাকে স্বাগত জানানোর জন্য নতুন করে সাজানো হয়েছিল হোটেল রেডিসন।
হোটেলে বিশ্রাম নেওয়ার পর রোনালদিনহো বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা।
বাংলাদেশে সংক্ষিপ্ত অবস্থানকালে হোটেল রেডিসনে বাংলাদেশের পুরুষ ও নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও সাবিনা খাতুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ব্রাজিলিয়ান সুপার স্টার।
পরে তিনি বুধবার রাত ১১টায় রাজধানী ত্যাগের আগে একই হোটেলে নির্বাচিত অতিথিদের মিলন ও শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
এর আগে তিন দিনের সফরে রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় পৌঁছান।
রোনালদিনহো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করে তাকে একটি জার্সি উপহার দেন।
ভারতীয় ক্রীড়া উদ্যোক্তা শত্রু দত্তের আমন্ত্রণে রোনালদিনহো কলকাতা সফর করেন।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশ
ফিফা বিশ্বকাপ: মালদ্বীপের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিলেন সাদ
১ বছর আগে
রক আইকন আইয়ুব বাচ্চু স্মরণে দোয়া মাহফিল
বাংলাদেশের কিংবদন্তি রক আইকন আইয়ুব বাচ্চুর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম মিউজিশিয়ান ক্লাব, ঢাকা (সিএমসিডি)। রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সেলিব্রেশন কমিউনিটি পয়েন্টে দেশের সকল মিউজিশিয়ানদের উপস্থিতিতে দোয়া ও মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
একই দিনে আইয়ুব বাচ্চুর রুহের মাগফিরাত কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে এতিম বাচ্চাদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণানুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ।
সংগঠনটির সভাপতি সৈয়দ শহীদ বলেন,‘ব্যান্ড মিউজিকে বাচ্চু ভাইয়ের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাচ্চু ভাইকে নিয়ে সঙ্গীত ডিপার্টমেন্ট চালু হবে। এটা আশা করতে পারি।’
সংগঠনটির উপদেষ্টা গায়ক ও সঙ্গীত পরিচালক পার্থ বড়ুয়া বলেন, ‘আইয়ুব বাচ্চু ভাইয়ের স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে একটি গিটার প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে যাচ্ছি। শিগগিরই এ নিয়ে আমরা বিস্তারিত জানাতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারব।’
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন আইয়ুব বাচ্চু।
২ বছর আগে
মায়ের কবরের পাশে সমাহিত হবেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার
কিংবদন্তি গীতিকার, পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার গতকাল (৪ সেপ্টেম্বর) মারা গেছেন। আজ (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় তাকে নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়া হয়। পরবর্তী সর্বস্তরের মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
গতকাল রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছিল গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃতদেহ। তার মেয়ে দিঠি আনোয়ারের জন্য অপেক্ষার আজ ‘সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটে’র উদ্যোগে শহীদ মিনারে প্রয়াত কিংবদন্তিকে আনা হয়।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মরদেহ নেয়া হয় বিএফডিসির প্রাঙ্গণে। সেখানে বাদ জোহর গাজী মাজহারুলের প্রথম জানানজা পড়ানো হয়। এতে দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের দ্বিতীয় জানাজা বাদ আসর অনুষ্ঠিত হবে গুলশানের আজাদ মসজিদে। জানা যায়, এরপর তাকে বনানী কবরস্থানে মা খোদেজা বেগমের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে।
এর আগে রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) অসুস্থ হয়ে পড়লে সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয় গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে। এরপর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, গাজী মাজহারুল আনোয়ার এদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির পথিকৃৎ। প্রায় ২০ হাজারের মতো গান লিখেছেন তিনি। বিবিসি বাংলার জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় স্থান পেয়েছে তার লেখা তিনটি গান। এই কিংবদন্তির ছিল একাধিক প্রতিভা। শুধু গান লেখা নয়, তিনি একাধারে একজন সফল সুরকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক।
আরও পড়ুন:কিংবদন্তি গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন
পাঁচবার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ পেয়েছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ২০০২ সালে গাজী মাজহারুল আনোয়ার ‘একুশে পদক’ পান। ২০২১ সালে সংস্কৃতিতে অর্জন করেন ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বাধীন দেশের সর্বপ্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড’ পান এই কিংবদন্তি।
আরও পড়ুন:গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
২ বছর আগে
সুস্থ আছেন ফুটবল কিংবদন্তি পেলে
ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কিংবদন্তি পেলে সুস্থ আছেন বলে তার সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছেন।
৮১ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেছেন। যেখানে তাকে সাও পাওলোর বাইরে তাদের বাড়িতে স্ত্রী মার্সিয়া আওকির সঙ্গে হাসতে দেখা যায়।
ছবিটির সাথে একটি বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের এই ছবিটি পাঠাচ্ছি, শুধুমাত্র আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য। আমি আমার স্ত্রীকে আমার সঙ্গে থাকার জন্য, হাসির জন্য, আমার বাড়ির শান্তির জন্য এবং আপনাদের সমস্ত প্রেমময় বার্তাগুলোর জন্য খুব কৃতজ্ঞ। আমি খুব ভালো আছি এবং আমার স্বাস্থ্যের যত্ন নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন:এশিয়া কাপ ২০২২: পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারাল ভারত
গত বছরের সেপ্টেম্বরে কোলন টিউমার অস্ত্রপাচারের পর পেলে বেশ কয়েকবার হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মূত্রনালীর সংক্রমণের কারণে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় হাসপাতালে কাটিয়েছেন তিনি।
ব্রাজিলের হয়ে ১৯৫৮, ১৯৬২ এবং ১৯৭০ বিশ্বকাপ জিতা পেলে ৯২ ম্যাচে ৭৭ গোল করে এখনো দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা।
আরও পড়ুন:এশিয়া কাপ: ১৪৮ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক আফিফ
২ বছর আগে
সংগীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ী আর নেই
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও সুরকার বাপ্পি লাহিড়ী আর নেই। মঙ্গলবার মধ্যরাতে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
বাপ্পি লাহিড়ী গত বছর কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাকে মুম্বাইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের পরিচালক দীপক নামজোশি বুধবার সকালে গণমাধ্যমকে বলেন, বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য লাহিড়ী এক মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং সোমবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার তার স্বাস্থ্যের আবারও অবনতি হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন তার রক্তচাপ কম ছিল এবং স্পন্দন অনুভব করা যাচ্ছিল না। আমরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।’
লাহিড়ী হিন্দী চলচ্চিত্র শিল্পসহ বাংলা গানের গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক হিসেবে পরিচিত। তিনি নিজের লিখিত অনেকগুলো গান স্বকণ্ঠে ধারণ করেছেন। ১৯৮০'র দশকের চলচ্চিত্র বিশেষ করে ডিস্কো ড্যান্সার, নমক হালাল এবং শরাবী'র ন্যায় বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করে তিনি সমাদৃত হন।
রিয়েলিটি শো বিগ বস ১৫-তে অভিনেতা সালমান খানের সাথে তাকে শেষবারের মতো পর্দায় দেখেন দর্শকেরা। বাঘি ৩ মুভির জন্য গাওয়া 'ভাঙ্কাস' গানটিই বলিউডে গাওয়া তার শেষ গান।
লাহিড়ীর মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে অক্ষয় কুমার, সঙ্গীতশিল্পী এ আর রহমানের মতো বলিউড তারকারা সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক জানিয়েছেন।।
মোদি টুইটে বলেন, ‘লাহিড়ীর মৃত্যু সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তার প্রাণবন্ত প্রকৃতি সবার মনে থাকবে। তার পরিবার ও ভক্তদের প্রতি সমবেদনা।’
আরও পড়ুন: কিংবদন্তি গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আর নেই
বিচারপতি নাজমুল আহাসান আর নেই
‘মাসুদ রানা’র লেখক-প্রকাশক কাজী আনোয়ার হোসেন আর নেই
২ বছর আগে
কবি শামসুর রাহমানের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী আজ
কবি,কলাম লেখক ও সাংবাদিক শামসুর রাহমানের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী আজ শনিবার। একুশে পদক জয়ী এই সাহিত্যিক ১৯২৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার ৪৬,মাহুতটুলি এলাকায় নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
কিংবদন্তি এই কবির জন্মবার্ষিকী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করছে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।
দিনটি উপলক্ষে রবিবার বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একটি একক লেকচার সেশনের আয়োজন করবে একাডেমি কর্তৃপক্ষ। এ অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট গবেষক ও কবি অধ্যাপক খালিদ হোসাইন মূল লেকচার প্রদান করবেন।
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদা সভাপতিত্ব করবেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেবেন একাডেমির সম্পাদক এএইচএম লোকমান।
কবি শামসুর রাহমানের পৈতৃক বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা থানার মেঘনা নদীর তীরে পাড়াতলী গ্রামে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়ার সময় তিনি প্রগতিশীল লেখক-শিল্পী সমিতির সঙ্গে জড়িয়ে যান। মধুর ক্যান্টিনের আড্ডায় পাঠ করতেন নিজের কবিতা। সেই সঙ্গে অবিচলিতভাবে যুক্ত ছিলেন ভাষা আন্দোলনে।
১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান পাশ করার পর তিনি পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। দৈনিক মর্নিং নিউজে সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা শামসুর রাহমান রেডিও পাকিস্তান, দৈনিক পাকিস্তান (পরে দৈনিক বাংলা) সাপ্তাহিক বিচিত্রা, অধুনা প্রভৃতি গণমাধ্যমে কাজ করেছেন।
শামসুর রাহমানের প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘প্রথম গান,দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে। তিনি ৬৬টি কাব্যগ্রন্থ, চারটি উপন্যাস, একটি প্রবন্ধগ্রন্থ, একটি ছড়ার বই ও ছয়টি অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।
দীর্ঘ সাহিত্য জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক, জীবনানন্দ পুরস্কার ও স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হয়েছেন। সেই সঙ্গে ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে।
কবি শামসুর রাহমান ১২ দিন কোমায় থাকার পর ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গুগল ডুডলে কবি শামসুর রাহমান
বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমদের ৯৬ তম জন্মবার্ষিকী আজ
৩ বছর আগে
মানসপটে সালমান শাহ ও কিছু বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি বনে যাওয়া
১৯ সেপ্টেম্বর। এই দিনটি সালমান শাহ’র ভক্তদের জন্য বিশেষ একটি দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এই হার্টথ্রব। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় এই চিত্রনায়কের প্রয়াণের পর পেরিয়ে গেছে ২৫টি বছর। এরপরেও সিনেমাপ্রিয়দের হৃদয়ে তাঁর জনপ্রিয়তার ঘাটতি হয়নি এতটুকুও। এখনো আর্কাইভ ঘুরে দর্শকশ্রোতারা প্রাণভরে উপভোগ করেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘আনন্দ অশ্রু’ এবং ‘স্বপ্নের নায়ক’। অনুসরণীয় এই অভিনেতাকে এ প্রজন্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। চলুন, সালমান শাহ স্মরণে তাঁর কিছু সেরা চলচ্চিত্র এবং জীবন কড়চা নিয়ে আলাপচারিতায় মেতে ওঠা যাক।
সালমান শাহ: চলচ্চিত্রের এক প্রবাদপুরুষের জীবনকথা
৩৬০ আউলিয়ার দেশ সিলেটের দাড়িয়া পাড়ার সালমান শাহ ভবনটি তাঁর জন্মস্থান। এটি সালমান শাহের নানা বাড়ি এবং পূর্বে এর নাম ছিলো আব-এ-হায়াত ভবন। কমর উদ্দিন চৌধুরী ও নীলা চৌধুরীর বড় সন্তান শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। আর এই ইমন-ই কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবি নির্মাণের সময় হয়ে যান সালমান শাহ।
সালমান শাহের পড়াশুনা শুরু হয় খুলনা জেলার বয়রা মডেল হাইস্কুলে যেখানে চিত্রনায়িকা মৌসুমীও পড়তেন। ঢাকার ধানমন্ডি আরব মিশন স্কুল থেকে ১৯৮৭ সালে ম্যাট্রিক পাশ করে ইন্টারমিডিয়েটের জন্য ভর্তি হন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। পরবর্তীতে বি.কম. শেষ করেন ধানমন্ডির মালেকা সায়েন্স কলেজ থেকে যেটি বর্তমানে ডক্টর মালিকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নামে পরিচিত।
সালমান ১৯৯২ এর ১২ আগস্ট খালার বান্ধবীর মেয়ে বিউটি পার্লার ব্যবসায়ী সামিরা হকের সাথে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন।
জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে হানিফ সংকেতের কন্ঠে ‘নামটি ছিল তার অপূর্ব’ গানের মিউজিক ভিডিওতে মডেলিংয়ের মাধ্যমে সালমানের টিভি পর্দায় আগমন। ১৯৮৫ সালের টিভি নাটক ‘আকাশ ছোঁয়া’র মধ্য দিয়ে তিনি নাটকে কাজ করা শুরু করেন। তাঁর করা বেশ কিছু বিজ্ঞাপনও সে সময় খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো।
অত:পর ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’র মাধ্যমে প্রবেশ করেন সিনেমা জগতে। এরপর থেকে শুরু করে তিনি সর্বমোট ২৭টি সিনেমাতে কাজ করেন যার সবগুলোই ব্যবসা সফল হয়।
চলচ্চিত্র জগতের এই ক্ষণজন্মা উজ্জল নক্ষত্র ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসায় মাত্র ২৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর রহস্যময় মৃত্যু নিয়ে সারা দেশে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশি তদন্তে চূড়ান্তভাবে আত্মহত্যা-ই তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি সালমান শাহকে এশিয়ান জার্নালিস্ট হিউম্যান রাইটস এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন আয়োজিত 'এজাহিকাফ পারফরমেন্স এ্যাওয়ার্ড ২০১৬' তে মরণোত্তর সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
আরও পড়ুন: সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন: পিবিআই
সালমান শাহ অভিনীত ৭টি সেরা মুভি
কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯৩)
বাংলাদেশের প্রখ্যাত সিনেমা নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালনায় তৎকালীন বলিউড হিট ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ সিনেমার এই রিমেকটি তৈরি করা হয়।
এটি গ্রামের কোন্দলরত দুটি প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে মেয়ের এক নিষ্পাপ প্রেমকাহিনী। রাজ চরিত্রে অভিনীত সালমানের বিপরীতে এখানে রেশমী চরিত্রে ছিলেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। এই ছবিটির মাধ্যমে অভিষেক ঘটে সালমান-মৌসুমী জুটির।
সিনেমাটি নির্মাণের সময় সালমানকে ‘সনম বেওয়াফা’ হিন্দি ছবির রিমেকে কাজ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’-এর প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ থেকে সালমান ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমাতে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন।
এ সিনেমাতে প্লে-ব্যাক গানের মধ্য দিয়ে অভিষেক ঘটে আধুনিক গানের জনপ্রিয় শিল্পী আগুনের।
আনন্দ অশ্রু (১৯৯৭)
শিবলী সাদিক পরিচালিত একটি ত্রিভুজ প্রেমের গল্প নিয়ে নির্মিত এই সিনেমাটি। এখানে সালমান শাহের বোহেমিয়ান গান পাগল অভিনয় বহুল প্রশংসিত হয়। তাঁর বিপরীতে ‘দোলা’ চরিত্রে অভিনয় করেন চিত্রনায়িকা শাবনূর।
ট্র্যাজেডি নির্ভর এই সিনেমাটি সে সময় হাজারো দর্শক হৃদয় জয় করেছিল। আজও গ্ল্যামার জগতের প্রতিটি মহল এই সিনেমার গল্পের সাথে নামকরণের সার্থকতা খুঁজে পান।
প্রয়াত গীতিকার ও সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সঙ্গীতে এ সিনেমার গানগুলো এখনো দর্শকশ্রোতাদের হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছে। গানগুলোতে কন্ঠ দিয়েছিলেন কনক চাঁপা ও প্রয়াত কন্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর।
আরও পড়ুন: জামিনের পর কারামুক্ত বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির স্বামী
স্বপ্নের নায়ক (১৯৯৭)
আলী হাসানের সংলাপ ও নাসির খানের পরিচালনায় এটি ৯০ দশকের সেরা রোমান্টিক সিনেমাগুলোর একটি। সালমানের বিপরীতে এখানে ছিলেন সে সময়ের ব্যস্ততম নায়িকা শাবনূর।
সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে আসে সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর। তাঁর মৃত্যুর কারণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয় ছবিটির চিত্রনাট্যে। সমসাময়িক চিত্রনায়ক আমিন খান সালমানের এই অসম্পন্ন ছবিটিতে কাজ করার মাধ্যমে বেশ দর্শকপ্রিয়তা পান।
ছবিটি মুক্তির পর থেকে এর শিরোনামটি জুড়ে যায় সালমান শাহের নামের সাথে। এখনো হাজারো ভক্তদের হৃদয়ে তিনি স্বপ্নের নায়ক।
তুমি আমার (১৯৯৪)
তমিজউদ্দিন রিজভী ও জহিরুল হকের পরিচালনায় সালমান শাহ অভিনীত আরো একটি ব্লকবাস্টার ‘তুমি আমার’। এখানে মেধাবী ছাত্র অথচ বেকার এক যুবক ‘আকাশ’ নামের চরিত্রে অভিনয় করেন সালমান। ছবিটিতে হিরোইন হিসেবে কাজ করেছেন শাবনূর।
আবু তাহেরের সঙ্গীত পরিচালনায় সিনেমার গানগুলোতে কন্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ, সামিনা চৌধুরী, কনক চাঁপা এবং দুই বাংলায় প্রসিদ্ধ গায়িকা রুনা লায়লা।
সালমান শাহের অভিনয় জীবনে এটি ছিল তাঁর অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। আর তাঁর বিপরীতে নায়িকা শাবনূরের এটি ছিলো প্রথম কাজ।
সুজন সখি (১৯৯৪)
১৯৭৫ সালের খান আতাউর রহমান পরিচালিত নামকড়া সাদা-কালো সিনেমা সুজন সখি’কে রঙিন পর্দায় পুনঃনির্মাণ করেন শাহ আলম কিরণ। ফারুক-কবরী জুটির বদলে এবার নাম চরিত্রে সালমান-শাবনূর। বেশ কটি শহুরে চরিত্রে কাজ করার পর এই গ্রাম কেন্দ্রিক ভালবাসার গল্পেও সালমান শাহ নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন।
ইতোমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হওয়া গানগুলো এই সিনেমার মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয়ে পাকাপোক্ত ভাবে নিজেদের জায়গা করে নেয়। এখনো ‘সব সখিরে পাড় করিতে’ গানটি মানুষের মুখে মুখে রটে যায়।
বিক্ষোভ (১৯৯৪)
বাংলাদেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী এই চলচ্চিত্রটি অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছিল ছাত্র রাজনীতির অবস্থাকে। ফরিদা হোসেনের সাসপেন্স সমৃদ্ধ কাহিনী নিয়ে সর্বকালের জন্য সময়োপযোগী সিনেমাটি পরিচালনা করেন মহম্মদ হান্নান।
এখানেও সালমান-শাবনূর জুটির অসামান্য নৈপুণ্য দর্শকসহ সিনেমা সমালোচকদের মন কেড়ে নেয়। সালমান শাহ এখানে ছাত্রদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন এবং একজন নিবেদিত প্রাণ ছাত্র কর্মী অনিক চরিত্রে অভিনয় করেন।
দেশবরেণ্য কন্ঠশিল্পী প্রয়াত সৈয়দ আব্দুল হাদী ও প্রয়াত সুবীর নন্দীসহ আরও বেশ কিছু জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী সিনেমার গানগুলো গেয়েছেন।
স্বপ্নের ঠিকানা (১৯৯৫)
বাংলাদেশী সর্বোচ্চ লাভজনক সিনেমাগুলোর মধ্যে এম এ খালেক পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
এখানে সালমান শাহের চরিত্রের নাম সুমন। সিনেমাটিতে তাঁর প্রধান সহকর্মী হিসেবে ‘সুমি’ চরিত্রটি রূপায়ন করেন চিত্রনায়িকা শাবনূর।
তথাকথিত ধনী-গরিবের প্রেমকাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে এই সিনেমাটি একটি মাইলফলক রচনা করেছিল। সেই দিক থেকে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’-এর পরে জনপ্রিয়তা শীর্ষে এই ছবিটিকে বিবেচনা করা হয়।
মুলত এই চলচ্চিত্রটির পর থেকেই সালমান-শাবনূর জুটির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠে যায়।
হিন্দি গানের বাংলা রূপায়ন তখন থেকেই ছিলো আর বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমীদের কাছেও তার গ্রহণযোগ্যতা ছিলো ব্যাপক। এ ছবিতে বলিউড হিট গান ‘নীল সমুন্দর’র বাংলা ভার্সনটি বেশ দর্শকপ্রিয়তা লাভ করে।
রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন ও প্রয়াত এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া এ সিনেমার প্রতিটি গান এখনো চির নবীন হয়ে আছে।
আরও পড়ুন: ওয়েব সিরিজ ‘বলি’: অভিনব চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী
অবশেষে
সালমান শাহ তাঁর অভিনয়ে কারুকাজ দেখাতে পেরেছিল মাত্র তিন বছর। ক্যারিয়ারের এই স্বল্প পরিসরেই তিনি নিজের অভিনয়ের একটা আলাদা ধরণ এবং ক্ষেত্র তৈরি করেছিলেন। তাঁর ছবির দর্শকরা যেমন করে এখনো রূপালী পর্দায় তাঁর অভাব বোধ করে, ঠিক তেমন করেই চলচ্চিত্র নির্মাতারা যে কোন নায়ককে নির্দেশনা দেয়ার মুহূর্তে অনুভব করেন সালমান শাহকে। তাঁর প্রয়াণ দিবসে বিশ্ব বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের টক অফ দ্য স্ট্রীটে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে তার মৃত্যুর ঘটনাকে বিশ্বনন্দিত অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো’র মৃত্যুর ঘটনার সাথে তুলনা করা হয়।
৩ বছর আগে
এসপি বালাসুব্রাহ্মণ্যম স্বভাবজাত কিংবদন্তি: অক্ষয়
পাঁচ দশক ধরে ক্যারিয়ারে ১৬টি ভাষায় ৪০,০০০ এরও বেশি গানে সুর দেয়া ভারতের কিংবদন্তি প্লেব্যাক শিল্পী এসপি বালাসুব্রাহ্মণ্যমের শুক্রবার চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
৪ বছর আগে