শ্রম আদালত
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে রংপুর শ্রম আদালতে মামলা
‘ন্যায্য মজুরি না দেওয়া ও শ্রম আইন লঙ্ঘনের’ অভিযোগে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে রংপুর শ্রম আদালতে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ফার্ম ম্যানেজার ফারুকুল ইসলাম বাদী হয়ে রংপুর শ্রম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতাসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী শামীম আল মামুন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে 'হাতিয়ার' হিসেবে শ্রম আইনের ব্যবহার বন্ধের আহ্বান অ্যামনেস্টির
আইনজীবী বলেন, ‘ড. ইউনূসসহ কৃষি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বাদীকে ৯ লাখ ৭৫ হাজার ১২৫ টাকা মজুরি, গ্র্যাচুইটি ও উপার্জিত ছুটির টাকা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বাদীর ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হয়নি।’
ড. ইউনূস ও গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ বাদীকে বিভিন্ন সময় চাপ দিয়ে অবসরে যেতে বাধ্য করে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: প্রতিহিংসাবশত ড. ইউনূসকে কারাগারে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে বিচার চলবে: আপিল বিভাগ
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নোবেল বিজয়ী ও গ্রামীণ কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বিচার কার্যক্রম বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন বিভাগের (ডিআইএফই) কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান বলেছেন, এখন শ্রম আদালতে তার বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো আইনি বাধা নেই।
ইউনূসের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূরজাহান বেগম ও শাহজাহান।
আরও পড়ুন: প্রফেসর ইউনূসকে ‘জিরো ওয়েস্ট অ্যাডভাইজরি বোর্ড’-এর সদস্য নিযুক্ত জাতিসংঘের মহাসচিবের
মামলার এজাহারে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকম অধিদপ্তরের পরিদর্শকদের পরিদর্শনে দেখা গেছে, যে ১০১ জন কর্মী-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা ছিল, তাদের তা করা হয়নি।
তাদের জন্য কোনো অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি এবং কোম্পানির লাভের পাঁচ শতাংশও আইন মেনে শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি।
অভিযোগের ভিত্তিতে, শ্রম আইনের ৪, ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ১২ অক্টোবর শ্রম আদালত চার আসামিকে জামিন দেন।
পরে ৭ ডিসেম্বর মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন অধ্যাপক ইউনূস।
১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট একটি মামলার প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন।
গত বছরের ১৭ আগস্ট হাইকোর্ট (এইচসি) মামলাটি বাতিলের আবেদন খারিজ করে দেয়।
পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন অধ্যাপক ইউনূস।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের পক্ষে ৪০টি নাম ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন কেন: প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা চলবে: হাইকোর্ট
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এ রায়ের ফলে তার বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে এ মামলা চলতে আইনগত কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন।
এর আগে, গত ১৩ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা এ মামলার কার্যক্রম নিম্ন আদালতে দুই মাস স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলা কেন বাতিল হবে না, এই মর্মে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেয়া হয়। আপিল বিভাগের আদেশ অনুযায়ী শুনানি শেষে বুধবার রুল খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের মামলা বাতিল আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি ১১ আগস্ট
মামলার অন্য আসামিরা হলেন-গ্রামীণ টেলিকমের এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূর জাহান বেগম ও শাহজাহান। এই তিন আসামিও পৃথকভাবে মামলার আবেদন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের কিছু লঙ্ঘন দেখতে পান। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেয়ার কথা থাকলেও তা তাদের দেয়া হয়নি। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে এ মামলা করা হয়।
পরে মামলা বাতিল চেয়ে ড. ইউনূস হাইকোর্টে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। যে রুল বুধবার খারিজ করেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূস-হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দাবি নিক্সনের
মহামারি-পরবর্তী বিশ্ব: বন্ধ হবে কি শ্রম অধিকার লঙ্ঘন?
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রম অধিকারগুলো। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে অর্থ সাশ্রয়ের জন্য বেছে নিয়েছিল কর্মী ছাঁটাইয়ের পথ।
ড. ইউনূসের ৫ মামলা স্থগিতের আদেশ বহাল
শ্রম আদালতে করা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাঁচ মামলায় হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।