গণঅভ্যুত্থান
আ.লীগ সরকারও শ্রীলঙ্কার মতো গণঅভ্যুত্থানের মুখোমুখি হবে: মোশাররফ
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনার সবক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতায় জনগণ বিরক্ত হওয়ায় শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও গণঅভ্যুত্থান হবে।
তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণের ভয়ে তারা আমাদের ঢাকায় সভা-সমাবেশ করতে দেয় না। আমি বলতে চাই দেশে আজ বা কাল বিস্ফোরণ নয়, গণঅভ্যুত্থান হবে; কারণ জনগণ প্রস্তুত রয়েছে।’
এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, অতীতে পাকিস্তান শাসনামলে জনগণ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আইয়ুব খানের মতো শক্তিশালী একনায়ককে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল।
মোশাররফ বলেন, ‘এরশাদের মতো একজন স্বৈরাচারী শাসক বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন। অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষ বারবার স্বৈরাচারী শাসকদের পদত্যাগে বাধ্য করেছে। শ্রীলঙ্কা পারলে আমরাও পারব ইনশাআল্লাহ। খুব শিগগিরই বাংলাদেশে সেই দিন আসবে।’
বুধবার জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ‘লুট’ করেছে: নজরুল
রাজধানীর সিদ্দিক বাজারের একটি ভবনে বিস্ফোরণের বিষয়ে মোশাররফ বলেন, সরকারের ব্যর্থতা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে দেশে এখন মানুষের জীবন নিরাপদ নয়।
দেশে খারাপ কিছু ঘটার জন্য বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর জন্য তিনি ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নিন্দা করেন।
মোশাররফ বলেন, ‘সরকার বলেছে (সিদ্দিক বাজার) বিস্ফোরণে বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। পঞ্চগড়ে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে...একজন মন্ত্রী এলাকায় যেতেই ওই সম্প্রদায়ের লোকজন বলেছে যারা আপনাদের সঙ্গে এসেছে তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে এবং আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। কিন্তু মন্ত্রীরা বলেছেন এতে বিএনপির হাত থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, দেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় সরকার বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ক্রমবর্ধমান ঘটনা নিয়ে কম উদ্বিগ্ন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই সরকারের গাফিলতি ও ব্যর্থতার কারণেই এসব বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলো তাদের (সরকার) ব্যর্থতার কারণে আক্রান্ত হয় এবং তাদের গুণ্ডা ও ক্যাডাররা এ ধরনের হামলা চালায় ও এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়। কিন্তু তারা অন্যের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিস্ফোরণের জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে বিএনপি
জাতীয় নির্বাচনে আ.লীগকে আর প্রহসন করতে দেয়া হবে না: ফখরুল
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান হবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বুধবার থেকে শুরু হতে যাওয়া বিভাগীয় শহরে তাদের দলের সমাবেশের মধ্য দিয়ে সারাদেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি সমাবেশের মাধ্যমে একটি গণঅভ্যুত্থান হবে। হাজার হাজার মানুষ এই সমাবেশে অংশ নেবে। আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে এই শাসনের পতন ঘটাব।’
মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের দুই অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ঐক্যজোট ও ডেমোক্রেটিক লীগের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
দলের পরিকল্পিত বিভাগীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামীকাল (বুধবার) চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি বন্দরনগরীর পলো গ্রাউন্ডে সমাবেশ করতে যাচ্ছে, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন মির্জা ফখরুল।
চলমান বিদ্যুৎ সংকট, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং বিএনপির আন্দোলনের সময় ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের গুলিতে বিরোধী দলের পাঁচ নেতাকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এটিই হবে প্রথম বিভাগীয় সমাবেশ।
চলমান আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে জনসভা করার ঘোষণা দেয় বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের নামে সরকারের ব্যাপক লুণ্ঠন প্রকাশ পেয়েছে: বিএনপি
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে বিশাল জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে দলটি।
দুই পক্ষের সঙ্গে কথা হয়
দুই দলের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার হরণকারী বর্তমান অনির্বাচিত ও লুটেরা শাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন সেই দ্বিতীয় দফা আলোচনা করছি এবং আমরা যুগপৎ আন্দোলনের মূল দাবিগুলো নিয়ে কথা বলছি।’
ফখরুল বলেন, তারা ইতোমধ্যে ১১টি দলের সঙ্গে তাদের দ্বিতীয় ধাপের রাজনৈতিক সংলাপে বসেছেন। ‘বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করতে একমত হয়েছি।’
আলোচনায় নিজ নিজ দলের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব ও ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি।
দুই দলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খানও উপস্থিত ছিলেন।
গত ২ অক্টোবর কল্যাণ পার্টির সঙ্গে প্রথম বৈঠকের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শুরু করে বিএনপি।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের দাবি ও ইস্যু চূড়ান্ত করতে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এবং অলি আহমেদের এলডিপি, কল্যাণ পার্টি, লেবার পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এবং মুসলিম লীগের সঙ্গেও আলোচনায় বসে দলটি।
এর আগে, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ‘পুনরুদ্ধার’ করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করার রূপরেখা তৈরি করতে ২৪ মে থেকে শুরু হওয়া সংলাপের প্রথম পর্বে ২৩টি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘ভয়ংকর স্বৈরাচারী’ বলে অভিহিত করেছে বিএনপি
গণঅভ্যুত্থানের দিবাস্বপ্ন দেখছে বিএনপি : কাদের
১৯৯০ ও ২০২১ সালের প্রেক্ষাপট এক নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘৯০’র গণঅভ্যুত্থানের মতো আরেকটি গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করার বিএনপির যে পরিকল্পনা সেটি দিবাস্বপ্ন।’
তিনি বলেন, ‘১৯৯০ ও ২০২১ সালের প্রেক্ষাপট এক নয়। তাই ৯০’র গণঅভ্যুত্থানের মতো আরেকটি গণঅভ্যুত্থান করে সরকার পতনের পরিকল্পনা বিএনপির দিবাস্বপ্ন।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের জবাবে মঙ্গলবার নিজ বাসভবনে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
এর আগে সোমবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সরকার পতনের জন্য ৯০’র গণঅভ্যুত্থানের মতো আরেকটি গণঅভ্যুত্থান করতে শিক্ষার্থী ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভুলে যাওয়ার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের
ফখরুল বলেন, ‘১৯৯০ এর দশকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও জনগণ তৎকালীন স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করেছিল। আমদের নেত্রী খালেদা জিয়া সেটার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আমাদের আবার সে ধরনের আরেকটি গণ জাগরণ প্রয়োজন।’
‘এ সরকারকে আর সময় দেয়া যায় না’ মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকারের সময় নির্ধারণের উনি কে?’
ওবায়দুল কাদের জানান, দেশের সংবিধান ও মানুষ সরকারকে সময় প্রদান করেছে এবং ক্ষমতার মালিক আল্লাহ ও দেশের ভোটাররা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবকে সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও বিভিন্ন সংগঠনের সমাবেশের জায়গা উল্লেখ করে কাদের বলেন, বিএনপি প্রেসক্লাবকে রাজনৈতিক প্লাটফর্মে পরিণত করেছে।
প্রেস ক্লাবের ভেতর বিএনপি সমাবেশ করে যা অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য বলে দাবি করেছেন সেতুমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: অরাজকতা সৃষ্টি করলে কঠোর হাতে দমন: ওবায়দুল কাদের
দুদককে সড়ক মন্ত্রণালয়েও তদন্তের আহ্বান কাদেরের
শনিবার শহীদ জিহাদ দিবস পালন করবে বিএনপি
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কর্মী নাজির উদ্দিন জিহাদের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শনিবার ‘শহীদ জিহাদ দিবস’ পালন করবে বিএনপি।