গণঅভ্যুত্থান
এক মাসের মধ্যে হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলার প্রতিবেদন এক মাসের মধ্যে দিতে তদন্ত সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মো. তাজুল ইসলাম জানান, বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
তিনি বলেন, পলাতক আসামিদের বিষয়ে আদালতকে জানাতে তদন্ত সংস্থাকে নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে সকালে নয়জন সাবেক মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে ট্রাইবুনালে হাজির করা হয় এবং তাদের এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে সহজতর করেছে বিচার বিভাগ: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর সোমবার তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এসব আসামির সবাই অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ট্রাইব্যুনালের যাদের হাজির হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন-সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, শ্রমিক পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।
এছাড়াও রয়েছেন-সাবেক মন্ত্রী ড. দীপু মনি, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এবং ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম।
সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককে হাজির করার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তাকে হাজির করা যায়নি।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর ১৪ আসামিকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হাজির করার নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এছাড়া সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল কাফি, আরাফাত হোসেন, আবুল হাসান ও মাজহারুল ইসলামকে ২০ নভেম্বর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন আদালত।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ ও হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তথ্যপ্রযুক্তিতে জমা পড়ে। জুলাই ও আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ১০০০ এর বেশি মানুষ নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন।
আরও পড়ুন: ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনাকে গ্রেপ্তারে আইজিপিকে আইসিটির প্রধান কৌঁসুলির চিঠি
৩ দিন আগে
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিদেশে চিকিৎসার দাবি বিএনপির
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিদর্শন করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় তারা এ দাবি জানান।
আন্দোলনে ভুক্তভোগী প্রত্যেক নাগরিককে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে প্রতিশ্রুত আর্থিক সহায়তা দ্রুত দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান দলের নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যাদের অবস্থা সংকটাপন্ন এবং এ দেশে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়, তাদের দ্রুত শনাক্ত করতে সরকারের প্রতি আমারা আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ করে যারা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বা আঘাত পেয়েছেন এবং তাদের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়, তাদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে।’
এর আগে সালাহ উদ্দিন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।
বুধবার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জুলাই মাসের আন্দোলনে আহতদের দেখতে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিদর্শনে যান। এ সময় আহত রোগীদের ক্ষোভের মুখে তিনি সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হন।
আরও পড়ুন: মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
পরে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন- এমন একদল রোগী যথাযথ চিকিৎসার দাবিতে নিটোরের সামনের সড়ক অবরোধ করেন।
পরিদর্শন শেষে সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শুনেছি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার এই হাসপাতালে এসেছিলেন কিন্তু সব রোগীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি, এতে তাদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, রোগীরা তাদের জানিয়েছেন, চিকিৎসা ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনো সহযোগিতা তারা পাননি।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি, চিকিৎসার বাইরেও তাদের সহায়তা প্রয়োজন। অনেকে জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুত এক লাখ টাকা তারা এখনো পাননি। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব তাদের এই সহায়তা দিতে।’
তিনি বলেন, বুধবার রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাসপাতালে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সালাহউদ্দিন জানান, ওই টাকা তারা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে আহতদের মধ্যে বিতরণের জন্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের অন্যান্য নেতারা হাসপাতালে গিয়ে জুলাই মাসের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
বিএনপি নেতা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা ও সমর্থন অব্যাহত রাখব। আমাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হলে গণঅভ্যুত্থানে যারা নিহত ও আহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করব।’
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা কীভাবে গণহত্যা চালানোর পর আবার বাংলাদেশে রাজনীতি করার কথা ভাবতে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সালাহউদ্দিন।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে নির্বাচনি রোডম্যাপের দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশের পরিকল্পনা বিএনপির
১ সপ্তাহ আগে
গণঅভ্যুত্থানই অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
গণঅভ্যুত্থানই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রবিবার (১০ নভেম্বর) সচিবালয়ে বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত একটি সমন্বয় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এই মন্তব্য করেন।
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সরকারের বৈধতা এসেছে গণঅভ্যুত্থান থেকে। যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা হলো লিগ্যাল রেটিফিকেশন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম।’
আরও পড়ুন: নতুন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন আরও তিনজন
সরকারকে বৈধতা দিতে অধ্যাদেশ হচ্ছে, একইসঙ্গে সংস্কার কাজ কতদূর এগোলো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ১০৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আগেই এই সরকারের বৈধতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং যে অধ্যাদেশের কথা বলা হচ্ছে, তার মাধ্যমে আরও লিগ্যাল রেটিফিকেশন হবে।’
‘গত তিন মাসে আমাদের কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি আপনারা দেখেছেন। সংস্কার কমিশনের সঙ্গে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা নিয়মিত বৈঠক করছেন এবং রিপোর্টের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম চলবে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করার জন্যই সংস্কার কমিশনগুলো গঠন করা হয়েছে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বসে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সংস্কার কার্যক্রম শেষ করার রূপরেখা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা আশা করি একটি নতুন বাংলাদেশ যেটার কথা আমরা মুখে বলছি, সেটার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন: পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশের বাইরে বসে তাদের অফিশিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া পেজে পোস্ট করছেন। শ্রমিকদের উস্কানি দিতে শনিবার তাদের পেজে কয়েকটি পোস্ট করা হয়, যা তার নজর এড়ায়নি।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে আপনাদের একটা ভূমিকা থাকা উচিত। আমরাও কাজ করছি।’
‘(আওয়ামী লীগের) এসব কর্মকাণ্ডে কেউ সাড়া দেয়নি। তা না হলে আজকের আওয়ামী লীগের আহ্বানে এত বড় একটা কর্মসূচিতে শ্রমিকেরা মিছিল নিয়ে আসত। কেউ তো আসেনি।’
আরও পড়ুন: উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ছে, শপথ নিচ্ছেন আরও ৫ জন
১ সপ্তাহ আগে
গণঅভ্যুত্থানে আহত ৭ বাংলাদেশিকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেবে তুরস্ক
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ৭ বাংলাদেশিকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেবে তুরস্ক। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তুর্কি সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত সাক্ষাৎকালে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে কর অব্যাহতি: দেশে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাড়ানোর পরিকল্পনা
রবিবার (৩ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ২৭ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের টেলিফোন সংলাপকালে এরদোয়ান অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এর জন্য তুরস্কের একটি সরকারি প্রতিনিধিদল গত ১৩ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করে। এসময় নির্বাচন ব্যবস্থা, আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয়ে তুকি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাসমূহের বৈঠক হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের কার্যক্রম শুরু
২ সপ্তাহ আগে
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ২৪৫ জনকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে: সারজিস
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত ২৪৫ জন এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি অর্থ সহায়তা পেয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা সারজিস আলম মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), চক্ষু ইনস্টিটিউট, ট্রমা সেন্টার, সিআরপি সাভারসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৪৫ জন আহতকে ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন।
তিনি বলেন, এখন স্বচ্ছভাবে শনাক্ত করার কাজের জন্য কিছুটা সময় লাগছে। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষ করে পর্যায়ক্রমে আহতদের কাছে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যাকে আমরা মুক্তিযোদ্ধা তালিকার মতো প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না। এজন্য আমরা যাচাইয়ের দিকে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিচ্ছি।
এছাড়া জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ২০০ শহীদ পরিবারকে চার দিনের মধ্যে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: পুলিশ বিচারের ঊর্ধ্বে নয়, তাদেরও বিচার হবে: সারজিস
আওয়ামী লীগ নিজেদের কর্মের ফল ভোগ করছে: সারজিস আলম
৩ সপ্তাহ আগে
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা-গ্রেপ্তার নয়: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ঘটনার জন্য কোনো মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে সোমবার মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে নবযাত্রা সূচিত হয়েছে। এ গণঅভ্যুত্থানকে সফল করতে যেসব ছাত্র-জনতা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনের মাঠে থেকে এর পক্ষে কাজ করেছেন, ১৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার জন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না।’
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অসত্য তথ্য দিয়ে কোনো সুবিধা অর্জনের বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ওসিদের বদলির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ ইসি’র
১ মাস আগে
গণঅভ্যুত্থানে নিহত শিশুদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে মোট ১০৫ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
রবিবার (৬ অক্টোবর) দুই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১০৫ জন শিশুর মৃত্যু বিষয়টি এটি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ চূড়ান্ত করেছে। আমরা সেখান থেকে তথ্য নিয়ে এসেছি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ক্লিন এয়ার প্রকল্পে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব শিশু দিবসে সোমবার (৭ অক্টোবর) আমরা নিহত প্রত্যেক শিশুর পরিবারের হাতে ৫০ হাজার টাকা করে দেব।
তিনি বলেন, শিশু হিসেবে ১৮ বছর বয়স ধরে এ তালিকা করা হয়েছে।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুদান হস্তান্তরের এ অনুষ্ঠানটি হবে বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
তিনি বলেন, সমাজসেবা কার্যালয় ও উপজেলা রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের মোট ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৮৯৮ টাকার সেবা দেওয়া হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-শ্রমিক-জনতা পুনর্বাসন ও চিকিৎসার জন্য বিশ্বব্যাংক থেকে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা পাচ্ছি। এটির ফরমালিটি শেষ পর্যায়ে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১২টি ডে কেয়ার রয়েছে জানিয়ে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান একটি ছোট্ট কর্নার আমরা দাবি করছি এই ডে কেয়ারের জন্য। এজন্য আমরা সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে একটা চিঠি দেব। ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডে কেয়ার খোলার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বেসরকারি ক্ষেত্রে ডে কেয়ারটা আনতে যাচ্ছি, রোজগার এবং সেবা দুটোই যাতে আমরা দিতে পারি। আমাদের লক্ষ্য মাথায় রেখে আমরা ধীরে ধীরে সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস
১ মাস আগে
অসহনীয় যানজট থেকে মুক্তি মিলছে না ঢাকাবাসীর
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে রাজধানীতে অসহনীয় রূপ নিয়েছে যানজট। আগেও যানজটের সমস্যা ছিল তবে এখন যতই সময় যাচ্ছে তা আরও প্রকট হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যত্রতত্র পার্কিং, যেখানে-সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করানো, ফুটপাত দখল, গাড়ির তুলনায় রাস্তার সংকট, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপকদের অদক্ষতা, দুর্নীতি ও অনিয়ম, পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার অভাব, আইনের বাস্তবায়ন না হওয়া, রাজধানীকেন্দ্রিক শিল্পকারখানা স্থাপন এবং অফিস-আদালত ঢাকায় কেন্দ্রিকরণ বাড়তে থাকায় যানজটও ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভেঙে পড়ে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা। বেশ কিছুদিন কর্মবিরতির পর সড়কে দায়িত্ব পালন শুরু করে ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু তাদের মধ্যে আগের মতো কাজে গতি দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন নগরবাসী।
তারা মনে করে, পুলিশ যদি আগের মতো সড়কে কাজ না করে তবে এই যানজট দিনকে দিন বেড়েই চলবে।
এদিকে রাজধানীতে বাড়ছে বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি অটোরিকশা, অ্যাম্বুলেন্স, রিকশা, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, মালবাহী ভ্যান, কাভার্ডভ্যান, ঠেলাগাড়ি ও ট্রাকের সংখ্যা। সড়কের তুলনায় যানবাহনের মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যাধিক্য এবং অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত চলাচলই যানজট বাড়ার অন্যতম কারণ, যার ধকল পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
গণঅভ্যুত্থানের পর জনরোষের শিকার হয় পুলিশ। থানা ও সড়ক ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান পুলিশ সদস্যরা। এই অবস্থায় ছাত্র-জনতা সড়কে ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্ব নেয়। সেসময় অনিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক অবস্থার সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে উঠে আসে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ হাজারো অবৈধ যানবাহন।
অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাফিক পুলিশ সড়কে আসলেও সড়ক আইন মানতে চাননি এসব যানবাহনের চালকরা। এমন কি ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তাচ্ছিল্য করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন তারা।
আগে শহরের অলিগলিতে চললেও ৫ আগস্টের পর থেকে প্রধান সড়কে ব্যাপক হারে বেড়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা। এতে সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে বিশৃঙ্খলা।
যানজট নিয়ে গণপরিবহন যাত্রীদের যেসব অভিযোগ—
প্রেস ক্লাব, পল্টন মোড়, মৌচাক ও নতুন বাজার মোড়ে অপেক্ষমাণ বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকায় যানজট প্রতিদিনের চিত্র হলেও আগের থেকে এখন প্রকট আকার দেখা দিয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসে বসে থাকতে হয়। পুলিশ থাকলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যায় না।
পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আগেই যানজট নিরসনে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি জানান যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: ১৫টি খাল খনন করলেই দূর হবে ঢাকার ৮০ শতাংশ জলাবদ্ধতা
ব্যাংক কর্মকর্তা রুহুল আনিসুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, ‘সড়কে দিনকে দিন যানজট বেড়েই চলেছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাস্তায় আগের চেয়ে বেড়েছে যানজট। ট্রাফিক পুলিশ সড়কে যেন থেকেও নেই। কারণ আগের মতো ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে না। আগে যেভাবে তারা সড়কে দায়িত্ব পালন করতেন এখন অনেকটা তারা নীরব দর্শকের মতো দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ যদি আগের মতো সড়কে কাজ না করে তবে এই যানজট দিন দিন বেড়েই চলবে।’
কুড়িল-নতুনবাজার থেকে প্রতিদিন গণপরিবহন গ্রীন ঢাকায় যাতায়াতকারী ফেরদৌস বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকে ঢাকায় অসহনীয় যানজট বাড়ছেই। আগের থেকে এখন বেশি যানজট, কেউ কাউকে মানছে না ফলে রাস্তায় একটা অরাজকতা চলছে। ট্রাফিক পুলিশ আরও কঠোর থাকলে এসব কমে যেত। কিন্তু আগের মতো সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে যানজট ব্যাপক বেড়ে গিয়েছে। পল্টন থেকে বাসে উঠলে আগে কুড়িল আসতে সময় লাগত ১ ঘণ্টা। এখন দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লেগে যায়।’
এছাড়াও মূল সড়কগুলোতে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকগুলো চলে আসায় যানজট ও দুর্ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এলোমেলোভাবে গাড়ি চালানো, প্রায়ই উল্টো দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া-এসব কারণে দুর্ঘটনা ঘটছেই। সড়ক আইন মানছেন না কেউই। ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে তারা চলছেন নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো।
যানজট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা—
ঢাকার যানজট নিরসনে দ্রুত ও কার্যকর সমাধান খুঁজতে পুলিশ ও দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আরও পড়ুন: একাধিক মাস্টারপ্ল্যান, ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরও ডুবছে ঢাকা
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বৈঠকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুই সিটি ট্রাফিক সিস্টেম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশ দেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের যানজট নিরসন হবে। আমাদের অবিলম্বে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।’
যানজট নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ কি বলছেন—
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নাজমুল হাসান ইউএনবিকে বলেন, সড়কে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। যানজটের জন্য পুলিশ কখনোই দায়ী না। এখানে বেশ কিছু বিষয় কাজ করছে। পুলিশ আগের চেয়েও অনেক বেশি কর্মস্পৃহা নিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া সড়কে এখন প্রায় দেখা যায় দাবি আদায়ের জন্য বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জমায়েত হচ্ছেন। এতে করে সড়কের ট্রাফিক সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে ৫ আগস্টের পর কাভার্ড ভ্যানগুলো সড়কে নেমে যাচ্ছে আর এসবে কারণেও ট্রাফিক জ্যাম বেড়েছে। এই বিষয়টি নিয়েও আমরা সর্বোচ্চ কাজ করছি।’
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা এখন সড়কে উঠে যাচ্ছে, তবে আমরা তাদের প্রতিহতের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমরা শুরুতে কয়েক দফা তাদের বুঝিয়েছি, কয়েক দফা তাদের ওয়ার্নিং দিয়েছি, এখন আমরা মামলা দিতে বাধ্য হচ্ছি।’
ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন শত শত ব্যাটারির রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কারও রিকশার তার ছিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে, কারও সিট খুলে নেওয়া হচ্ছে। এ রকম লঘুশাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে জনবল ও যানবাহন স্বল্পতার কারণে রেকারিং কিংবা ডাম্পিং করা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দিন দিন কঠোর হচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সড়কে এ ধরনের একটি যানবাহনও চলতে দেওয়া হবে না।’
আরও পড়ুন: যানজটে বিপর্যস্ত রাজধানী: মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় বেড়েছে দুর্ভোগ
নাজমুল হাসান বলেন, রাজধানীর ১২৮টি রুটের বাস চালকদের সচেতন করতে কাজ করা হচ্ছে। ব্যাটারিচালিত রিকশার পাশাপাশি বেশ কিছু লাইসেন্সবিহীন বাস সড়কে উঠে যাচ্ছে, আর এতে যানজট বাড়ছে। আমরা এই লাইসেন্সবিহীন বাসগুলোকে সড়কে উঠা বন্ধ করতে কাজ করছি।
নগর পরিকল্পনাবিদ যা বলছেন—
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নগর ও অঞ্চল বিভাগের অধ্যাপক নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান ইউএনবিকে বলেন, ‘ঢাকা শহরে গাড়ির সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, সে অনুযায়ী রাস্তা বাড়ছে না। গত কয়েকবছর বছরে ঢাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। যেখানে প্রাইভেট গাড়ি কমানোর কথা, সেখানে প্রতিনিয়তই গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। এক্সিসটিং রোড এত গাড়ির ভার নিতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেগা সিটি মানেই প্রচুর গণপরিবহন; কিন্তু সেই গণপরিবহনের মাত্রা কিন্তু বাড়ছে না। গণপরিবহন যত ভালো করা যায়, ততই প্রাইভেট গাড়ির প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হবে এবং তারা গণপরিবহনে যাতায়াত করবে।’
নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, ঢাকার যানজট নিরসনে ২০০৫ সালে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (এসটিপি) প্রণয়ন করে সরকার। ২০০৫ সালের সেই প্ল্যানটাকে যদি বাস্তবায়ন করা যেত তাহলে ২০২৪ সালে এসে অনেক উন্নতি করার কথা ছিল। অর্থাৎ যানজট বাড়ার কথা ছিল না। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
ড. আদিল আরও বলেন, বিশ্বের অনেক বড় বড় শহরেই যানজট দেখা যায়। কিন্তু সেটা পরিমিত লেভেলের। কিন্তু ঢাকার যানজট বড় সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে করা যায়, তবে যানজট নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। ঢাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বড় অভাব রয়েছে। বর্তমানে ঢাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে খারাপ। এটিকে আরও আধুনিক করতে হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৮ কিলোমিটার যানজট
১ মাস আগে
একক কৃতিত্ব দাবি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ক্ষুণ্ণ করে: ঢাবি শিবির সেক্রেটারি
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব এককভাবে নেওয়া প্রচেষ্টা আন্দোলনের ঐক্যের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই অভ্যুত্থান ছিল সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
তিনি বলেন, 'আন্দোলন কোনো একটি গোষ্ঠী বা মতাদর্শের দ্বারা পরিচালিত হয়নি। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদকে প্রতিহত করার জন্য একত্রিত হয়েছিল। একক কৃতিত্ব দাবি করা অভ্যুত্থান চেতনার পরিপন্থী।’ ‘রাজনৈতিক দল, মত নির্বিশেষে বাংলাদেশের জনগণ দেশকে একটি অত্যাচারী শাসনের কবল থেকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছে।’
ফরহাদ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পর্কিত সহিংসতার অভিযোগগুলোর কথা বিশেষত ‘রগ কাটা’ এর কুখ্যাত অনুশীলন তুলে ধরেন। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আপনি 'গুগলে 'রগ কাটা' লিখে সার্চ দিলে সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত এ ধরনের অপরাধের অসংখ্য খবর পাবেন। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে শিবিরের সংশ্লিষ্টতার কোনো রেকর্ড নেই।”
আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহতদের নামের খসড়া তালিকা প্রকাশ
শিগগিরই ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান ফরহাদ। ‘আমরা আমাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেছি, শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হবে। আমাদের শুধু কিছুটা সময় দরকার।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি প্রসঙ্গে ফরহাদ বলেন, 'ক্যাম্পাসে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি থাকবে। কাউকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করা হবে না। সবকিছু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্ধারণ করবে। এই কাঠামো তৈরি হলে ছাত্র রাজনীতি নতুন ও সংস্কার করা রূপ ধারণ করবে।
ছাত্রশিবিরকে সাধারণ ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে কীভাবে গ্রহণ করা হয়েছে জানতে চাইলে ফরহাদ দাবি করেন, সংগঠনটির ক্যাম্পাস জীবনে পুনঃপ্রবেশ ইতিবাচক। ‘ফ্যাসিবাদ দুটি কাজ করেছে- তারা শিবিরের অফিস বন্ধ করে দিয়েছে এবং ভয় দেখিয়েছে। কিন্তু আমাদের পুনরুত্থানের পর এই ভয়ের ভিত ভেঙে গেছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী আমাদের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। গত পাঁচ বছরে যারা আমাদের আচরণ ও ব্যক্তিত্ব পর্যবেক্ষণ করেছেন, তারা অনলাইনে আমাদের ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন।’
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরিচয় প্রকাশ করা হয় এবং সম্পাদক হিসেবে ফরহাদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।
ফরহাদ সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং কবি জসীমউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
তিনি জসীম উদ্দীন হল বিতর্ক ক্লাবের সভাপতি (২০২২-২৩) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তার অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের বর্তমান সভাপতি।আরও পড়ুন: ঢাবি শিবির নেতৃত্ব প্রকাশ্যে আসায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি
১ মাস আগে
গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় চীনের মেডিকেল টিম সন্তুষ্ট: সচিব
চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসাসেবা দিতে বাংলাদেশর সরকারের আমন্ত্রণে সফররত চীনের মেডিকেল টিম আহতদের চিকিৎসায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহ্ মো. হেলাল উদ্দীন এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে অতি অল্প সময়ের মধ্যে চীনা মেডিকেল টিম বাংলাদেশে আসেন। এ টিমটা বাংলাদেশে এসেছে ২২ সেপ্টেম্বর এবং কাজ শুরু করেছেন ২৩ সেপ্টেম্বর। এই সময়ের মধ্যে তারা ১৬০ জন রোগী তারা ভিজিট করেছেন। এর মাঝে তারা ১০৫ জন রোগীর মেডিকেল রেকর্ডস পরীক্ষা করেছেন।
আরও পড়ুন: নবনিযুক্ত সচিব আনোয়ার উল্যাহর সংসদ সচিবালয়ে যোগদান
তিনি আরও বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করার সঙ্গে চীন সরকার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল টিম গঠন করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই টিমকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। এটা অসাধারণ একটা ব্যাপার। তারা এই সীমিত সময়ের মধ্যে পাঁচটি হাসপাতাল ভিজিট করেছেন। এই মেডিকেল টিমটি রোগীদের দেখে ডাক্তারদের চিকিৎসার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন।
এছাড়া এই ১০৫ জন রোগীর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা খুবই গুরুতর। চীন থেকে যে টিমটি এসেছে সেটি মূলত একটি অ্যাসেসমেন্ট টীম। তারা গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে আমাদের একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট পাঠাবেন। গুরুতর আহত রয়েছেন তিনজন। এদের মধ্যে দুইজন আইসিইউতে আছন, একজন চোখে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। আরও নার্ভ ইনজুরড কিছু রোগী রয়েছেন।
সচিব ড. হেলাল উদ্দীন বলেন, গুরুতর আহতদের ব্যাপারে আমাদের প্রাথমিক চেষ্টা থাকবে যাতে বাংলাদেশে সুচিকিৎসা করা যায়। চীনের মেডিকেল অ্যাসেসমেন্ট টিমের রিপোর্ট দেখে তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ নেব।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যাতে চাইনিজ এক্সপার্টেদের দেশে এনে চিকিৎসা দেওয়া। অথবা আমাদের প্রয়োজনীয় মেডিকেল যন্ত্রপাতি বা দক্ষতার ঘাটতি থাকলে আহতদের বিদেশে পাঠানোর চিন্তা ভাবনা করছি। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় খুবই আন্তরিক। গুরুতর আহতসহ সকল আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো ঘাটতি থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, চীন থেকে আগত মেডিকেল টিম গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং তাদের চিকিৎসা আমরা আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী দিতে পারছি কিনা এটা তারা পর্যবেক্ষণ করেছেন। এটি নিয়ে তারা খুবই সন্তুষ্ট।
আমাদের হাসপাতালগুলোর ইকুইপমেন্ট বিষয় ক্যাপাসিটি লিমিটেশন আছে কিনা এ বিষয়টিও তারা দেখেছেন। এ জায়গায় আমাদের কিছু ঘাটতি আছে বলে উল্লেখ করেন সচিব হেলাল।
সংবাদ সম্মেলন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম সাইফুল ইসলামসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আইন ও বিচার বিভাগের নতুন সচিব গোলাম রব্বানী
১ মাস আগে