রাস উৎসব
দুবলার রাস উৎসব শুরু শনিবার
বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের দুবলার চরে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব শনিবার (২৫ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে সাগর পাড়ে শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসবকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
তবে শুধু সনাতন ধর্মালম্বীরা অংশ নিতে পারবেন রাসপূজা ও পুণ্যস্নানে। রাস উৎসবকে ঘিরে শনিবার থেকে সোমবার তিন দিন সুন্দরবনে পূণ্যার্থী ছাড়া অন্য কারো প্রবেশের অনুমতি দেওয়া বন্ধ করেছে বন বিভাগ।
পূণ্যার্থীরা নির্ধারিত পাঁচটি রুট দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে আবার একই রুট দিয়ে ফিরে আসবেন। সব পূণ্যার্থীর অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের দুবলার চরে রবিবার থেকে রাস উৎসব শুরু
এদিকে রাস ঘিরে জেলা, পুলিশ প্রশাসন ও বন বিভাগের পক্ষ থেকে সেখানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বন বিভাগের বেশ কয়েকটি টিম বৃহস্পতিবার থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন পয়েন্টে টহল শুরু করেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, সরকার নির্ধারিত রাজস্ব জমা দেওয়ার পর বন বিভাগ থেকে পাস (অনুমতি) নিয়ে নির্ধারিত পাঁচটি রুট দিয়ে পূণ্যার্থীরা রাস উৎসবে যেতে পারবেন এবং একই রুট দিয়ে তাদের ফিরতে হবে।
তিনি আরও জানান, পূণ্যার্থীরা শনিবার দুবলার চরে পৌঁছাবে, রবিবার সন্ধ্যায় রাসপূজা এবং সোমবার ভোরে পুণ্যস্নান শেষে আবার ফিরে আসবেন।
তিনি জানান, এই তিন দিন সুন্দরবনে পূণ্যার্থীছাড়া অন্য সব ধরনের প্রবেশের অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে ১৬টি টিম গঠন করা হয়েছে। ওই টিমের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে।
এ ছাড়া বন বিভাগ রাস উৎসবকে ঘিরে বিশেষ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: দুবলারচরে পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ৩ দিনের রাস উৎসব
যে পাঁচটি রুট দিয়ে পূণ্যার্থীরা রাস উৎসবের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন সেগুলো হলো-
১) ঢাংমারী/চাঁদপাই স্টেশন-ত্রিকোনা আইল্যান্ড হয়ে দুবলার চর।
২) বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলারচর হয়ে দুবলার চর।
৩) বুড়িগোয়ালিন, কোবাদক থেকে বাটুলা নদী-বল নদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদীর পর দুবলার চর।
৪) কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা এরপর শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর।
৫) নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর।
সুন্দরবন বিভাগ জানায়, শনিবার সকালের ভাটায় পূণ্যার্থীরা সুন্দরবন বিভাগের নির্ধারিত রাজস্ব জমা দিয়ে নির্ধারিত রুট দিয়ে লঞ্চ ও ট্রলার নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করবেন। রবিবার সন্ধ্যায় পূজা-অর্চনা শেষে সোমবার ভোরে সাগরের লোনা জলে পুণ্যস্নানের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে তিন দিনের রাস উৎসব। ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যে পূণ্যার্থীরা ফিরে আসবেন। কোনো অবস্থাতেই কোনো পূণ্যার্থী আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে পারবেন না।
বন বিভাগের তথ্য মতে, সরকার নির্ধারিত জনপ্রতি পুণ্যর্থীদের তিন দিনের জন্য ৭৫ টাকা, নিবন্ধনযুক্ত প্রতিটি ট্রলারের (তিন দিন) জন্য ৩০০ টাকা, নিবন্ধনবিহীন প্রতিটি ট্রলারের (তিন দিন) জন্য ১ হাজার টাকা এবং প্রতিটি ট্রলারের অবস্থান ফি (প্রতিদিন) বাবদ সরকারকে ৩০০ টাকা রাজস্ব দিতে হবে।
দুবলার চরে রাস উৎসব আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু সন্তু জানান, সরকারের নির্দেশনা মেনে সেখানে রাসপূজা ও পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে। তাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শনিবার সকালের ভাটায় পূণ্যার্থীরা লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা নিয়ে দুবলার চরে রওনা হবে। লোকালয় থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে দুবলার চরে বিকালের মধ্যে তারা পৌঁছে যাবে। ১০ হাজার পূণ্যার্থী রওনা হবে রাসে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে শেষ হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দানোৎসব
১১ মাস আগে
দুবলারচরে পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ৩ দিনের রাস উৎসব
বঙ্গোপসাগরের মোহনায় নোনা জলে পূণ্যস্নানের মধ্যে দিয়ে দুবলারচরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী তিনদিনের রাস উৎসব শেষ হয়েছে।
বাগেরহাটের সুন্দরবনের দুবলারচরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব উপলক্ষ্যে সোমবার রাতভর পূজা অর্চনা আর প্রার্থনা করা হয়। মঙ্গলবার সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণার্থীরা সাগরে নোনা জলে পূণ্যস্নানে অংশ নেন। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ পূর্ণার্থীরা শান্তি ও মঙ্গলকামনায় পূণ্যস্নান করেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস রাস উৎসবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা অর্চনা আর প্রার্থনা করার পর সাগরে পূণ্যস্নানে অংশ নিলে সব পাপ মোচন হবে। মিলবে সুখ-শান্তি আর সমৃদ্ধি।
এবছরও দুবলারচরে রাস উৎসবে ধর্মীয় রীতি মেনে পূজা অর্চনা আর পূণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলা বা কোন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল না। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই অংশ নিয়েছে পূজায় আর পূণ্যস্নানে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে শেষ হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দানোৎসব
রবিবার বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে নৌযানে করে সনাতনধর্মাবলম্বীরা রাস উৎসবে অংশ নিতে যান সুন্দরবনের দুবলার চরে। সোমবার পূজা অর্চনা আর মঙ্গলবার পূণ্যস্নানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় তিনদিনের রাস উৎসব।
জানা গেছে, লোকালয় থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় আলোর কোলে প্রায় ২০০ বছর ধরে শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সেখানে শ্রীকৃষ্ণের পূজা অর্চনার পাশাপাশি দরবেশ গাজী ও দরবেশ কালুর স্মরণে মানত দেয়া হয়।
মেলার প্রবর্তক হিসেবে কারও কারও মতে মতুয়া গুরু সন্ন্যাসী হরিজন ও রাজা প্রতাপাদিত্যর নাম শোনা যায়।
২০১৯ বছর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে দুবলারচরে রাস উৎসব হয়নি। আর করোনার কারণে গত দুই বছর ২০২০-২০২১ সালে শুধু ধর্মীয় রীতি রক্ষার্থে পূজা অর্চনা আর পূণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়। এবছরও শুধুমাত্র ধর্মীয় রীতি রক্ষায় পূজা অর্চনা ও পূণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, দুবলারচরে এবছরও রাস মেলা হয়নি। শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলবম্বীরা পূজা অর্চনা আর পূণ্যস্নান অংশ নিয়েছে। নির্ধারিত পাঁচটি পথ (রুট) দিয়েই শুধুমাত্র পূণ্যার্থীরা দুবলারচরে প্রবেশ করেছে। আবার একই পথে তাদেরকে ফিরতে হয়। অন্য ধর্মের মানুষদের রাস উৎসবে যাওয়ার অনুমতি ছিল না।
আরও পড়ুন: কাল থেকে শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী লালন সাঁই’র তিরোধান উৎসব
কক্সবাজারে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উদযাপিত
২ বছর আগে
দুবলার চরের রাস উৎসবে যেতে ৫ নৌপথ
প্রতি বছরের মতো এবারও রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী সুন্দরবনের দুবলার চরে ‘রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্য স্নান’ অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবে অংশ নিতে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি রুট নির্ধারণ করে দিয়েছে।
এসব পথে তীর্থযাত্রী ও দর্শণার্থীদের জানমালের নিরাপত্তায় বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর টহল দল নিয়োজিত থাকবে।
পাঁচটি রুটের মধ্যে বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে যাওয়া যাবে দুবলারচর। এছাড়া কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা অত:পর শিবসা নদী-মরজাত হয়েও দুবলার চরে যাওয়া যাবে। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর, ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ হয়ে দুবলার চর এবং বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়েও দুবলার চরে যাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: খুলনায় জমে উঠেছে শীতের পিঠা বিক্রি
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কর্মকর্তা আবু নাসের মহসিন হোসেন বলেন, পূর্ণিমা পুণ্য স্নানে কেবল তিন দিনের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুমতি দেয়া হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্কবিহীন কোন তীর্থযাত্রীকে পূণ্য স্নান স্থলে যেতে দেয়া হবে না। অনুষ্ঠান স্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও হ্যান্ডওয়াস রাখা হবে বলে জানান তিনি।
বন বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়, তীর্থযাত্রীদের আগামী ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর এ তিন দিনের জন্য দুবলার চরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। প্রবেশের সময় এন্ট্রি পথে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হবে। যাত্রীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দমতো একটি মাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন। বনবিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না।
আরও পড়ুন: খুলনায় রুটি বিক্রেতা রিক্তা এখন ইউপি সদস্য
এছাড়াও প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রঙ দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে। রাস পূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট থেকে প্রাপ্ত সনদপত্র সাথে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, শব্দযন্ত্র বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যেকোনও অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র, হরিণ মারার ফাঁদ, কুড়াল, দড়ি বহন করা থেকে যাত্রীদের বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়,সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালে টোকেন ও টিকিট নিজের সাথে রাখতে হবে। প্রতিটি লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলারকে কন্ট্রোল রুমে আবশ্যিকভাবে রিপোর্ট করারও নির্দেশনা দিয়েছে বন বিভাগ।
৩ বছর আগে
সুন্দরবনের দুবলার চরে রবিবার থেকে রাস উৎসব শুরু
করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সুন্দরবনের দুবলারচরে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা হচ্ছে না। তবে রবিবার থেকে সোমবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাসপূজা শুরু হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৩ বছর আগে
সুন্দরবনে রাস উৎসবে যাওয়ার পথে আটক ৪৯ দর্শনার্থী
সুন্দরবনে রাস উৎসবে যাওয়ার পথে চারটি ট্রলারসহ ৪৯ জন দর্শনার্থীকে আটকের কথা জানিয়েছে বন বিভাগ।
৫ বছর আগে