শ্রমিক ধর্মঘট
চট্টগ্রাম বন্দরে দেশজুড়ে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে পণ্য খালাস বন্ধ
নৌযান শ্রমিকরা মধ্যরাত থেকে দেশব্যাপী ধর্মঘট শুরু করায় রবিবার চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাত থেকে ডাকা ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে নিয়োজিত লাইটার জাহাজ, অয়েল ট্যাংকারসহ প্রায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ এই ধর্মঘটের ডাক দেয়।
চট্টগ্রাম বন্দরসহ সব নৌবন্দরে লাইটার জাহাজ ও অন্যান্য নৌযান রাখার জন্য পোতাশ্রয় নির্মাণ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালে পরীক্ষা কেন্দ্র, নৌ-আদালত স্থাপনসহ ১০ দফা দাবিতে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছে নৌযান শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: ধ্বংস করা হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের পচনশীল ৭৩ কনটেইনার পণ্য
বাংলাদেশ লাইটার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মো. নবী আলম বলেন, ১৫ নভেম্বর ১০ দফা দাবি নিয়ে এই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হয়। তাই মধ্যরাত থেকে বন্দরের বহির্নোঙরে রাখা বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সাধারণ শ্রমিকরা। একই সঙ্গে মাঝিরঘাট ও সদরঘাট এলাকার ১৮টি বেসরকারি ঘাটেও লাইটার জাহাজে করে পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ রয়েছে।
নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা বেতন,কর্মরত অবস্থায় নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, ভারতীয় লাইনে প্রটোকলে ল্যান্ডিং পাস ইস্যুসহ ১০ দফা দাবিতে ধর্মঘট চলছে। লাইটার জাহাজ, ট্যাংকার, যাত্রীবাহী লঞ্চ এ কর্মবিরতির আওতায় রয়েছে।
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপরে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের লান্ডিং পাস প্রদানসহ ভারতীয় সীমানায় সবধরনের হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সকল লাইটারিং জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌপরিবহন অধিদ্প্তরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।
আরও পড়ুন: লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ
চট্টগ্রাম বন্দর রিজিওনাল শিপিং হাব-এ পরিণত হয়েছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে
চট্টগ্রামে লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপেক্ষর সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় ফলপ্রসূ আলোচনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দরে চলা লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে বন্দর ভবনে স্থানীয় সংসদ সদস্য, বন্দর চেয়ারম্যান, লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন, লাইটারেজ শ্রমিক ফেডারেশন ও ঠিকাদার সমিতির নেতাদের যৌথ সভা শেষে শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।জানা যায়, পতেঙ্গা চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু ও লাইটারেজ শ্রমিকদের কাছ থেকে ঘাটে টাকা না নেয়ার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন লাইটার জাহাজ শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি শেখ মোহাম্মদ ঈছা মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বন্দর ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় ফলপ্রসূ আলোচনার প্রেক্ষিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘাট সম্পর্কিত লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের যে দাবি ছিল তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দেয়ায় কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় নেতারা।
আরও পড়ুন: লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ
রাতে বন্দর ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন, লাইটারেজ শ্রমিক ফেডারেশন ও ঠিকাদার সমিতির নেতৃবৃন্দ এছাড়াও স্থানীয় সাংসদ এম এ লতিফ ও বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহানসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে চেয়ারম্যান ও পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে শুক্রবার ভোর থেকে ধর্মঘটশুরু করে লাইটার শ্রমিকরা। ফলে দিনভর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস, কর্ণফুলীর ১৬ ঘাটে পণ্য লোড-আনলোডসহ চট্টগ্রাম থেকে নদী পথে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকে।
বাংলাদেশ লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নবী আলম জানান, গতবছর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন চরপাড়া এলাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি ঘাট নির্মাণ করে। শ্রমিকরা সেই ঘাট ব্যবহার করে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ সেটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়। তারা ঘাট ব্যবহারে দশ টাকা মাশুল নির্ধারণ করে। এ নিয়ে ইজারাদারের লোকজনের সঙ্গে শ্রমিকদের প্রায়ই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে থাকে। গত ৩ নভেম্বর শ্রমিকদের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনা ঘটে। কিন্তু পতেঙ্গা থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নেয়। এ অবস্থায় শ্রমিকরা চরপাড়া ঘাট ত্যাগ করে আনোয়ারায় পারকি সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এলাকা থেকে লাইটারেজ জাহাজে ওঠানামা শুরু করেন। কিন্তু সম্প্রতি বন্দর কর্তৃপক্ষের ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে পারকি থেকে জাহাজে ওঠানামা বন্ধ করে দেন। এরপর শ্রমিকরা চাইনিজ ঘাট এলাকা থেকেও জাহাজে ওঠা নামার চেষ্টা করলে বন্দর কর্তৃপক্ষ সেখানেও অভিযান পরিচালনা করে। এরপর শ্রমিকদের লাগাতার ধর্মঘট শুরু করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম পৌঁছেছে ইউক্রেনের সাড়ে ৫২ হাজার টন গম
চট্টগ্রামে ডাম্পিং এ ফেলে দেয়া মিট অ্যান্ড বোন মিল পণ্য পাচার কালে ১০ ট্রাক জব্দ
২ বছর আগে
শ্রমিক ধর্মঘটে অচল ফরিদপুর নৌবন্দর
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে চলা ধর্মঘটে ফরিদপুর নৌবন্দরের কার্যক্রম অচল পড়ে হয়ে পড়েছে।
৪ বছর আগে