আয়কর
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন কিভাবে: শর্তসমূহ ও আবেদন পদ্ধতি
বাংলাদেশের নাগরিকরা আয়কর প্রদান এবং বিভিন্ন কারণে ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (টিআইএন) বা টিন সনদ নিবন্ধন করে থাকেন। ন্যূনতম করযোগ্য আয়সীমার নিচে থাকলে বা টিন সনদের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেলে কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে টিন নাম্বার বাতিল করা যেতে পারে। আসুন জেনে নেই টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন কিভাবে।
টিন সার্টিফিকেট কি?
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দ্বারা ব্যক্তি এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত একটি অনন্য আলফানিউমেরিক কোড হল টিআইএন। এটি সেই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে কর আদায়ের উদ্দেশ্যে একটি অপরিহার্য সনাক্তকরণ ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করে। এই কোডসহ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম, তাদের কাজের ধরণ সম্বলিত নথিটিই টিন সার্টিফিকেট।
এই সনদ সরকারকে সঠিক রেকর্ড বজায় রাখতে, করদাতার সম্মতি নিরীক্ষণ করতে এবং কর সংগ্রহকে সহজতর করতে সহায়তা করে। কর্মচারী, স্ব-নিযুক্ত পেশাদার বা ব্যবসার মালিক; আপনি যেই হোন না কেন, ট্যাক্সের বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য একটি টিন সনদধারী হওয়া আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রে নয়, সুদ কমেছে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের: অর্থ মন্ত্রণালয়
টিন সার্টিফিকেট বাতিলের পূর্বশর্ত
সরকার ঘোষিত টিন সার্টিফিকেট বাতিলের আবেদনের শর্তাবলি
এসকল দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি টিন নিবন্ধন বাতিলের আবেদনের জন্য ছয়টি শর্ত নির্ধারণ করেছে। সেগুলো হলো-
১. যে করদাতাদের কর রিটার্ন দাখিলের কোন বাধ্যবাধকতা নেই
২. মৃত্যু, অবসায়ন, অবলুপ্তি বা অনুরূপ কোনো কারণে করদাতা অস্তিত্বহীন হয়ে গেলে
৩. করদাতা স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করলে এবং বাংলাদেশে তার আয় করার মতো কোনও কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না থাকলে
৪. ডুপ্লিকেট বা একাধিক নিবন্ধন অথবা ভুল তথ্য সম্বলিত নিবন্ধন পেলে
৫. কোন কারণে আইনি মর্যাদা পরিবর্তন হলে
৬. অন্য কোনও আইনানুগ কারণে টিন নিবন্ধন বাতিলের প্রয়োজন হলে |
আরো পড়ুন: প্রবাস স্কিম: প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
কারা টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারবেন
করদাতার আয় আয়কর আরোপ যোগ্য সীমার নিচে থাকলে টিন বাতিলের আবেদন করতে পারেন। ২০২৩-২৪ অর্থ-বছরে নূন্যতম আয়করযোগ্য আয় হচ্ছে-
সাধারণ করদাতার জন্য বছরে করযোগ্য আয় ৩৫০,০০০ (তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকার ঊর্ধ্বে
মহিলা করদাতা, এবং ৬৫ বছর বা তদুর্ধ বয়সী করদাতার ক্ষেত্রে বছরে করযোগ্য আয় ৪০০,০০০ (চার লাখ) টাকার ঊর্ধ্বে।
প্রতিবন্ধি করদাতা এবং তৃতীয় লিঙ্গ করদাতার ক্ষেত্রে বছরে করযোগ্য আয় ৪৭৫,০০০ (চার লাখ পঁচাত্তর হাজার) টাকার ঊর্ধ্বে।
গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার বেলায় বছরে করযোগ্য আয় ৫০০,০০০ (পাঁচ লাখ) টাকার ঊর্ধ্বে।
অনেক সময়ই কারো এই পরিমাণের কম বাৎসরিক আয় থাকা সত্ত্বেও অন্য কোনো প্রয়োজনে টিন সার্টিফিকেট তৈরি করার প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে সার্টিফিকেটটির প্রয়োজন না হলে সেটি বাতিলের আবেদন করতে পারেন।
এছাড়াও কারও পূর্ববর্তী আয় অনুযায়ী কর দেওয়ার প্রয়োজন থাকায় তিনি টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে পারেন। কিন্তু পরবর্তীতে আয় কমে কর সীমার বাইরে চলে আসায় আর টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নাও হতে পারে। এসময় টিন সার্টিফিকেটটি বাতিল করতে পারেন।
এছাড়া কোন করদাতা ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার টিন সার্টিফিকেটটির আর প্রয়োজন থাকে না। তাই তার টিন সার্টিফিকেটটিও বাতিল করা যেতে পারে। পিতার মৃত্যুর পর টিআইএন বাতিল করার দায়িত্ব বর্তায় তার উত্তরাধিকারীদের উপর। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে বাবার এমন কোন ব্যবসা আছে কিনা যার টিআইএন বাতিল করলে ব্যবসা সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র বাতিল করে নতুন করে করতে হয়। এধরনের বড় জটিলতা তৈরি হলে, উত্তরাধিকারগণ মৃত বাবার টিআইএন বাতিলের আবেদন করতে পারবেন না।
কোন বাংলাদেশি যদি কাজের জন্য দেশের বাইরে থাকেন এবং তার যদি বাংলাদেশে করযোগ্য কোন আয় না থাকে তাহলে তিনি বাংলাদেশে ট্যাক্স দিতে বাধ্য নন। সেক্ষেত্রে তার বাংলাদেশে থাকাকালীন নিবন্ধিত টিআইএন সনদ বাতিলের আবেদন করতে পারেন।
একজন ব্যক্তি মাত্র একবারই টিন সার্টিফিকেট করতে পারবেন। কোনোভাবেই ডুপ্লিকেট বা একাধিক টিআইএন করা যাবে না। নিবন্ধনকারী বা কর কর্মকর্তা কর্তৃক ভুলের কারণে নিবন্ধিত টিনটির তথ্য ভুল হলে তা সংশোধনের জন্য টিন বাতিলের দরকার পড়ে।
আরো পড়ুন: প্রগতি স্কিম: বেসরকারি চাকরীজীবীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- আবেদনকারীর বর্তমান টিন সার্টিফিকেটের একটি প্রিন্ট কপি
- জাতীয় পরিচয়পত্র ও তার একটি ফটোকপি
- পর পর কমপক্ষে তিন অর্থ-বছরের শূন্য কর রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তি স্বীকার পত্রের ফটোকপি
টিন সার্টিফিকেট বাতিলের আবেদন পদ্ধতি
টানা তিন বছর শূন্য রিটার্ন দাখিল
যেহেতু পর পর কমপক্ষে তিন অর্থ বছরের শূন্য রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দেখাতে হবে, তাই আপনাকে আগামী তিন বছরের প্রস্তুতি নিতে হবে। অতঃপর টানা তিন বছর শূন্য রিটার্ন দাখিল করে যাবেন। প্রতি কর রিটার্ন দাখিলের পর একটি কর রিটার্ন প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দেয়া হবে। এগুলো পরবর্তীতে সংযুক্তির জন্য সংরক্ষণ করে রাখবেন।
কর সার্কেল অফিসে আবেদন
তৃতীয় বছরের শূন্য রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়েই সম্পন্ন করতে হবে আবেদনের কাজটি। এসময় বিগত দুই বছরের রিটার্ন প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দুটি সঙ্গে নিয়ে আপনার কর সার্কেলের অফিসে চলে যাবেন। অতঃপর সেখানকার উপকর কমিশনার বরাবর একটি আবেদনপত্র লিখবেন। এখানে টিন সনদ বাতিলের জন্য যাবতীয় কারণ সুষ্পষ্টভাবে ব্যাখা করবেন। লেখা শেষ হলে বিগত তিন বছরের রিটার্ন প্রাপ্তি স্বীকার পত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজগুলো সংযুক্ত করে আবেদনপত্র জমা দিয়ে দিবেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, আয়কর অফিসে আবেদন জমা দেয়ার জন্য টিন সনদের মালিকের যাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তিনি যেতে অপারগ হলে, তার পরিবর্তে তার প্রতিনিধি হিসেবে যে কেউই আয়কর অফিসে উপস্থিত হয়ে দরখাস্ত জমা দিতে পারবেন।
আরো পড়ুন: সুরক্ষা স্কিম: স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
টিন সার্টিফিকেট বাতিলে প্রয়োজনীয় খরচ
টিন সার্টিফিকেট বাতিলের আবেদনের সমুদয় পদ্ধতিতে সরকার ঘোষিত কোন রকম খরচ নেই। অর্থাৎ করদাতাগণ বিনামূল্যেই তাদের টিন সার্টিফিকেটটি বাতিল করতে পারবেন।
টিন সার্টিফিকেট বাতিলের আবেদন পরবর্তী কার্যক্রম
আবেদন জমা হওয়ার পর আপনার কর সার্কেলের উপকর কমিশনের কর্মকর্তারা আপনার আয়কর ফাইলটি নথিভুক্ত করবেন। এ সময় আবেদনে উল্লেখিত কারণসমূহ ভালোভাবে যাচাই করে দেখা হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনার টিন সার্টিফিকেটটি চূড়ান্তভাবে বাতিল হয়ে যাবে। এরপর নতুন করে টিন সার্টিফিকেট করতে পারবেন।
শেষাংশ
বাংলাদেশের নাগরিকরা যেমন প্রয়োজনে ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (টিআইএন) বা টিন নিবন্ধন করতে পারেন তেমনি এই সনদ বাতিল করতে পারবেন। টিন সনদ বাতিলের আবেদনের শর্তাবলি খেয়াল রেখে সহজেই আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন। উপরোক্ত আলোচনায় টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন কিভাবে সে ব্যাপারে একটা স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন: অনলাইনে ই-টিন সার্টিফিকেট করার পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১ বছর আগে
সাংবাদিকদের আয়কর কর্তৃপক্ষকেই পরিশোধ করতে হবে: হাইকোর্ট
সংবাদপত্রের সাংবাদিক ও কর্মচারীদের নবম ওয়েজবোর্ডের গ্র্যাচুইটি ও আয়কর সংক্রান্ত মস্ত্রিসভার সুপারিশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এতে ‘আয়কর’ ও ‘আনুতোষিক’ সংক্রান্ত দুটি সুপারিশের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রবিবার রায় দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি সোহরাওয়ারদীর বেঞ্চ।
এর ফলে সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর আগের মতোই কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করতে হবে।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী আকতার হামিদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী দিদারুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। পরে আইনজীবী দিদারুল আলম জনান, এ রায়ের ফলে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সাংবাদিক-কর্মচারীদের আয়কর আগের মতোই মালিকপক্ষকে দিতে হবে। আর বছরে মূল বেতনের সমান দুটি গ্র্যাচুইটি পাবেন সাংবাদিক-কর্মচারীরা।
আরও পড়ুন: বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ: খুলনার বার সমিতির সভাপতিসহ ৩ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হয়। পরে বিচারপতি নিজামুলহক ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আহ্বায়ক করে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি মন্ত্রিসভায় এ নবম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদ বাস্তবায়ন সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। যাচাই-বাছাইয়ের পর ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা করে সরকার।
সে প্রজ্ঞাপনের সপ্তম অধ্যায়ের ৩ নম্বর শর্তে বলা আছে, ‘সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীদের বেতনের ওপর আরোপিত আয়কর সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদেয় হবে। ’
একই অধ্যায়ের ৭ নম্বর শর্তে বলা হয়েছে, ‘সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীরা প্রত্যেক বছরে অথবা তার অংশ বিশেষ ছয় মাস বা এর অধিক সময় চাকরির জন্য সর্বেশেষ প্রাপ্ত বেতনের ভিত্তিতে নির্ধারিত দুই মাসের মূল বেতনের সম পরিমাণ অর্থ গ্র্যাচুইটি হিসেবে প্রাপ্য হবেন। ’
অথচ প্রজ্ঞাপনে ‘সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, কার্যকরণ ও প্রয়োগ’ শিরোনামের দ্বাদশ অধ্যায়ের ৪ নম্বর শর্তে মন্ত্রীসভা কমিটির সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, সাংবাদিক, কর্মচারীদের নিজেদের আয় থেকে আয়কর পরিশোধ করবেন এবং বছরে মূল বেতনের সমান একটি গ্র্যাচুইটি পাবেন।
নবম ওয়েজবোর্ডের মন্ত্রীসভা কমিটির এই সুপারিশ চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুজ্জামান। তখন রিটটির প্রাথমিক শুনানির পর ২৫ নভেম্বর আদালত রুল জারি করেন। রুলে আয়কর ও গ্র্যাচুইটি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়েছেন। মন্ত্রী পরিষদ সচিব, তথ্য সচিব ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জাবাব দিতে বলা হয়। সে রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর সুপারিশ দুটিকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: বিপিসির এসএওসিএল-এ ৪৭২ কোটি টাকা অনিয়মের ব্যাখ্যা চেয়েছে হাইকোর্ট
চট্টগ্রামে কুকুর লেলিয়ে হিমাদ্রী হত্যা: ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল
২ বছর আগে
বদির দুর্নীতি মামলা এক বছরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত রাখতে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলার বিচার কার্যক্রম আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রবিবার (২২ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে গত ২২ জানুয়ারি এই মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
আদালতে এদিন বদির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম সোহেল। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির মামলা, অভিযোগ গঠন বাতিলে বদির আবেদন খারিজ
খুরশীদ আলম খান বলেন, এর আগে গত জানুয়ারিতে হাইকোর্ট জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগ গঠনের আবেদন খারিজ করেছিলেন। এরপর মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত রাখতে ফোজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারায় আবেদন করেন। আবেদনে তারা বলেন, এর আগেও সম্পদের হিসাব বিবরণীতে তথ্য গোপনের অভিযোগে তার তিন বছরের দণ্ড হয়েছে। তাই এ মামলা চলতে পারে না। হাইকোর্ট তার আবেদন খারিজ করে মামলার বিচার এক বছরের মধ্যে শেষ করতে বলেছেন।
উল্লেখ্য, ৫৬ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ গোপন ও ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর বদির বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর ২০১৭ সালে এ মামলার কার্যক্রম সচল হয়। এরপর ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বদির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন চট্টগ্রামের বিচারিক আদালত। ওই আদেশ বাতিল চেয়ে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিভিশন করেন বদি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: সম্রাটের জামিন আবেদন ফের নামঞ্জুর
এর আগে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের হিসাব বিবরণীতে তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক মো. আবদুস সোবহান ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর রমনা থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি আবদুর রহমান বদি ২০১৩-২০১৪ কর বছরে তার দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬৫ টাকার নিট সম্পদ প্রদর্শন করেন। কিন্তু ২০১৪ সালের ২০ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে নিজের এবং তার ওপর নির্ভরশীলদের সর্বমোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ প্রদর্শন করেছেন পাঁচ কোটি ৩৫ লাখ ৫৮ হাজার ২৭২ টাকা। এ ক্ষেত্রে আসামি বদি তিন কোটি ৮৪ লাখ ৯ হাজার ২৮৬ টাকার সম্পদ গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন।
এ ছাড়া আবদুর রহমান বদি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় নিজের এবং তার ওপর নির্ভরশীলদের মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ প্রদর্শন করেছেন ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৯২ হাজার ৭২৩ টাকা। এ ক্ষেত্রেও বদি ৫ কোটি ৬৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৪ টাকার সম্পদ গোপন করে মিথ্যা তথ্য সংবলিত সম্পদবিবরণী দাখিল করেছেন। আসামি বদি ইচ্ছাকৃতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনে মিথ্যা তথ্য-সংবলিত সম্পদ বিবরণী দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারার অপরাধ সংঘটন করেছেন। এ মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর সম্পদের হিসাব বিবরণীতে তথ্য গোপনের অভিযোগে বদিকে তিন বছরের সাজা দেয়া হয়। এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে সে জামিনে আছে।
আরও পড়ুন: জামিন আবেদন নামঞ্জুর: কারাগারে হাজী সেলিম
২ বছর আগে
ঘরে বসেই করা যাবে আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ
আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজতর করতে ডিজিট্যাক্স নামক একটি ওয়েব অ্যাপলিকেশন নিয়ে এসেছে দেশ ইউনিভার্সেল নামক একটি প্রতিষ্ঠান। শনিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)-এর কার্যালয়ে ডিজিট্যাক্সের এ অনলাইন ট্যাক্স অ্যাপলিকেশনটি উদ্বোধন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (করনীতি) মো. আলমগীর হোসেন।
এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্ন ফরম ও সম্পদের হিসাব-নিকাশ এখন অনলাইনে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পূরণ করা যাবে। ঘরে বসেই করা যাবে আয়কর পরিশোধ ও রিটার্ন ফাইল দাখিল। বাসায় বসেই নেয়া যাবে আয়কর সংক্রান্ত যেকোনো সেবাও।
ডিজিট্যাক্সের মূল ফিচার বর্ননা করে প্রতিষ্ঠানটির টিম মেম্বার সৈয়দা নুসরাত হায়দার বলেন, আমাদের দেশে বিভিন্ন লেভেলের টেক্স পেয়ার রয়েছে, এর মধ্যে অধিকাংশই আয়কর ক্যালকুলেশন এর নিয়মাবলী ও আইন কানুন যথাযথভাবে জানেন না। ফলে সুচারুভাবে রিটার্ন প্রস্তুত করতে পারেন না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট খাতে ইনপুট দিয়ে সহজেই রিটার্ন প্রস্তুত করতে পারেন সে ব্যবস্থা নিয়ে এসেছি। আমাদের সিস্টেমে রয়েছে আইন অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয় আয়কর গণনা পদ্ধতি যাতে করে ব্যবহারকারীরা সহজেই আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত করতে পারেন। ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে, বাংলা ভাষায়ও সফটওয়ারটি ব্যবহারের পদ্ধতি রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলই ভালো জানেন কুমিল্লার ঘটনা কিভাবে ঘটেছে: তথ্যমন্ত্রী
করদাতা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে রিটার্ন পূরণ করে নিজে আয়কর অফিসে জমা দিতে পারেন অথবা গ্রাহক যদি চান, তবে ডিজিট্যাক্সের পেশাদার আইনজীবীর মাধ্যমে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
ডিজিট্যাক্সের সিস্টেমটি এনবিআরের সাথে ইন্টিগ্রেট করতে পারলে ভবিষ্যতে তাদের মাধ্যমেই করদাতারা অনলাইনে তার রিটার্ন সাবমিট করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সৈয়দা নুসরাত হায়দার। এতে করে মেনুয়াল পেপার বেইজ সাবমিশন প্রয়োজন হবে না এবং সরকারও ডাটা এন্ট্রি ছাড়াই রিয়েল টাইম আপডেট পাবে বলে জানান তিনি।
করদাতার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বিষয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেক করদাতার ব্যক্তিগত আইডি ও পাসওয়ার্ড থাকবে। তিনি ছাড়া আর কেউ এ তথ্য দেখতে পাবেন না। করদাতা তার তথ্য সেইভ করে রেখে যেকোনো সময় তা আবার এডিট করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লাসহ সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা উদ্দেশ্যমূলক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার একটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে আয়করের আওতায় আনার জন্য এরইমধ্যে অনেক ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগের সাথে ব্যক্তি পর্যায়ে আমরা কাজ করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর অংশ হিসেবে আমরা এই সফটওয়্যার টি ডেভলপ করেছি। ভবিষ্যতে সরকারের সাথে ইন্টিগ্রেটেড হয়ে একসাথে কাজ করতে পারবো এটাই আমাদের লক্ষ্য।
আয়কর আইনজীবিরাও এর মাধ্যমে তাদের ক্লায়েন্টদের কর সেবা দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সৈয়দা নুসরাত হায়দার।
অ্যাপলিকেশনটি উদ্ভোধন করে এনবিআর সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, মানুষের মধ্যে কর দেয়ার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। করদাতার সংখ্যাও বাড়ছে। এতো বিপুল সংখ্যক করদাতাকে প্রচলিত পদ্ধতিতে করসেবা দেয়া সম্ভব নয়। করদাতাকে সেবা দিতে সব কিছু অনলাইন করা ও রিটার্ন দাখিল স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি করার বিকল্প নেই। এনবিআর অনেক আগেই এ উদ্যোগটি নিয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে রিটার্ন ফরম পূরণ, দাখিল ও পেমেন্ট সিস্টেম চালু করছি। বেসরকারিভাবে ডিজিট্যাক্সের এগিয়ে আসা কর সেবাকে ডিজিটাল করার উদ্যোগ আরও সহজতর হবে।
তিনি বলেন, রিটার্ন দাখিল অনলাইন করার পাশাপাশি এক নভেম্বর থেকে আমরা আয়কর মাস পালন করছি। করদাতারা স্বাচ্ছন্দে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
আইসিএবির প্রেসিডেন্ট মাহমুদুল হাসান খসরু বলেন, আয়কর আইন হলো পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিনতম একটি আইন। এটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। এ আইন নিয়ে এতো বড় উদ্যোগ নেয়ায় ডিজিট্যাক্স প্রশংসার দাবি রাখে।
তিনি বলেন, ডিজিট্যাক্সের এ উদ্যোগটি করদাতাদের সহায়তা করবে। এর ফলে বিপুল মানুষকে রিটার্ন দাখিলে আগ্রহী করা যাবে। সরকারও রাজস্ব পাবে।
এর আগে শুভেচ্ছা বক্তব্যে ডিজিট্যাক্সের এডভাইজার ও দেশ ইউনিভা্র্সেল নির্বাহী পরিচালক মোসারাত নাইমা বলেন, ডিজিট্যাক্স একটি স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্স রিটার্ন ফরম পূরণের ওয়েব অ্যাপলিকেশন। রেজিট্রেশন করার পর করদাতা তার আয়ের তথ্য দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কর গণনা হয়ে যাবে।
৩ বছর আগে
দুই বছরে মাত্র ৭৫০ ডলার আয়কর দিয়েছেন ট্রাম্প!
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বছর ২০১৬ এবং হোয়াইট হাউসে যাওয়ার প্রথম বছর ২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল ইনকাম ট্যাক্স (আয়কর) বাবদ মাত্র ৭৫০ ডলার প্রদান করেছেন বলে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
৪ বছর আগে
সাংসদ সহিদ ও তার পরিবারের আয়করের নথি চেয়েছে দুদক
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সহিদ ইসলাম, তার পরিবার ও শ্যালিকার আয়করের নথিপত্র চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
৪ বছর আগে
জাতীয় আয়কর দিবস শনিবার
আয়কর বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং মানুষকে নিয়মিত করদানে উৎসাহিত করতে শনিবার দেশব্যাপী পালিত হবে জাতীয় আয়কর দিবস-২০১৯।
৪ বছর আগে
অগ্রিম আয়কর দিলেন ইউসিবি’র এমডি
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহম্মদ শওকত জামিল বুধবার অগ্রিম আয়কর চেক প্রদান করেছেন।
৫ বছর আগে
অন্যতম সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী ইউসিবি
ব্যাংকিং খাতে অন্যতম সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী নির্বাচিত হয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেড।
৫ বছর আগে
আয়কর মেলা শুরু, রিটার্ন জমা দিলেন প্রধানমন্ত্রী
করদাতাদের কর সংক্রান্ত ওয়ান-স্টপ সেবা এবং ঝামেলামুক্ত পরিবেশে আয়কর রির্টান জমার সুযোগ করে দিতে বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী দশম জাতীয় আয়কর মেলা-২০১৯।
৫ বছর আগে