আয়কর রিটার্ন
অনলাইনে শূন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার উপায়
প্রত্যেক টিন (টিআইএন বা ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার) ধারীর জন্য আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। বিষয়টি কেবল করযোগ্যতার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। যে টিনধারী ব্যক্তি কোনো ধরনের উপার্জনের সঙ্গেই সম্পৃক্ত নন, তারও রিটার্ন দেওয়া আবশ্যিক। এর মূল উদ্দেশ্য হলো নাগরিকের আয়-ব্যয়ের বৈধতা এবং হিসাবের ব্যাপারে সরকারকে অবগত রাখা। যাদের আয় করমুক্ত সীমার মধ্যে রয়েছে তারা কোনো রূপ কর না দিয়েই এই তথ্যাবলি সরকারের কাছে পেশ করতে পারেন। আর এটি এখন খুব সহজেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা যায়। চলুন, অনলাইনে শূন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।
শূন্য রিটার্ন কি
যে পরিপ্রেক্ষিতে কোনো রূপ ট্যাক্স বা কর প্রদান ছাড়াই রিটার্ন জমা দেওয়া হয়, তখন তা শূন্য বা জিরো রিটার্ন হিসেবে অভিহিত হয়। মূলত করমুক্ত সীমার মধ্যে থাকা আয়ের বিপরীতে প্রদানকৃত রিটার্নকেই শূন্য রিটার্ন বলা হয়। ট্যাক্স গ্রহণ বা কর অব্যহতি, রিবেট বা কর রেয়াত বা অগ্রিম প্রদানকৃত কর কিংবা এই সব শর্ত অনুসারে সামগ্রিক আয়ের ওপর আরোপিত কর কমে আসে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যাবতীয় হিসাব-নিকাষের পর চূড়ান্ত প্রদেয় কর শূন্য চলে আসে। এমতাবস্থায় আয়, ব্যয়, সম্পত্তি ও ঋণের সমুদয় তথ্যাদি পেশ করে জিরো রিটার্ন জমা করা আবশ্যিক।
জিরো রিটার্ন জমা প্রদান কাদের জন্য প্রযোজ্য
.
টিনধারী নাগরিকদের করমুক্ত আয়ের সীমা নিম্নরূপ:
- নারী ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বার্ষিক আয় অনুর্ধ্ব ৪ লাখ টাকা- তৃতীয় লিঙ্গ এবং প্রতিবন্ধিদের জন্য ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার কম- ৫ লাখ টাকার কম আয় সম্পন্ন গেজেটভূক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা
উপরোক্ত ক্যাটাগরি ছাড়া বাকি সব স্বাভাবিক ব্যক্তির ক্ষেত্রে আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে
আরো পড়ুন: টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন কিভাবে: শর্তসমূহ ও আবেদন পদ্ধতি
শূন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার অনলাইন পদ্ধতি
সাধারণ পদ্ধতি
প্রথমেই যথারীতি লগইন করতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর ই-রিটার্ন প্ল্যাটফর্মে (https://etaxnbr.gov.bd/#/auth/sign-in)। প্রক্রিয়া শুরুর আগে আয়-ব্যয়, ঋণ ও সম্পত্তির সমর্থনে যাবতীয় প্রাসঙ্গিক নথিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। এতে প্রতিটি তথ্য প্রদান যেমন নির্ভুল হবে তেমনি দ্রুততর হবে পুরো প্রক্রিয়াটি।
ডিজিটাল পরিসেবার সনাতন নিয়মানুযায়ী সিঙ্গেল বা এক পেজ এবং মাল্টিপল পেজ বা ডিটেইল দুই মাধ্যমেই শূন্য রিটার্ন জমা করা যায়।
এক পেজের রিটার্নের ক্ষেত্রে আয়, ব্যায় ও সম্পত্তি সবকিছু সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করতে হয়। এখানে তথ্য প্রদানের ভিত্তিতে হিসাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হয় না। প্রতিটি তথ্য সরবরাহ করতে হয় টাইপ করে। করযোগ্য আয়ের ক্ষেত্রে ধার্য করা নির্দিষ্ট করের পরিমাণটিও একইভাবে উল্লেখ করে দিতে হয়।
সাধারণত আরোপযোগ্য করটি নির্ধারিত হয় মোট আয়ের ওপর ভিত্তি করে। অতপর এই অংশ থেকে কর রেয়াত বাদ দিয়ে হিসেব হয় প্রদেয় কর। জিরো রিটার্নের ক্ষেত্রে যেহেতু আরোপযোগ্য কর শূন্য, তাই পরবর্তী হিসেব ব্যতিরেকে প্রদেয় করও শূন্য রেখে দিতে হয়।
ডিটেইল রিটার্নের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে প্রদান করা তথ্যানুযায়ী হিসাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত হয়।
প্রথম প্রশ্নটির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে করযোগ্য আয় আছে কিনা তা নিরূপণ করা হয়। এর ওপর নির্ভর করে পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহের জন্য প্রাসঙ্গিক অপশনগুলোর কমবেশি হয়ে থাকে। কোনো আয় না থাকলে এই প্রশ্নের ঊত্তরে 'নো'তে টিক চিহ্ন দিতে হবে। এতে ডানপাশে থাকা আয়ের যাবতীয় সেকশন নিস্ক্রিয় হয়ে যাবে। তবে আয় থাকার পরেও তা করযোগ্য না হলে অথবা অব্যহতি বা রেয়াতের মাধ্যমে তার বিপরীতে শূন্য রিটার্ন প্রযোজ্য হয়। সেক্ষেত্রে বেছে নিতে হবে ‘ইয়েস’ ঊত্তরটি।
অ্যাসেস্মেন্ট শিরোনামের এই পেজটির অন্যান্য অপশনগুলো যেকোনো রিটার্ন প্রদানের নিয়মেই পূরণ করে দিতে হবে। ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’তে ক্লিক করার পর পরের পেজে আসবে ‘অ্যাডিশনাল ইনফরমেশন’। পূর্বের পেজে করযোগ্য আয়ের প্রশ্নের ঊত্তরে 'নো' বলা হলে এখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিবেটে 'নো' অপশনটি নির্দিষ্ট হয়ে থাকবে। একই কারণে এই পেজে ন্যূনতম কর হিসাবের বেশ কিছু অপশন দেখাবে না। শুধু থাকবে কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার এবং আইটি১০বি ক্যাটাগরি। এগুলোর প্রত্যেকটির জন্য যথাযথ তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
যাদের সম্পত্তি ও ঋণ রয়েছে তাদের জন্য আইটি১০বি সাবমিট করা উচিত। তারপর সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউতে ক্লিক করার পর আসবে ব্যয়ের হিসাবের পেজ। সেই সঙ্গে ডানপাশে আরও কিছু ট্যাব যুক্ত হয়ে যাবে। সেগুলো হলো- ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট এবং রিটার্ন রিভিউ। পূর্ব পেজে আইটি১০বি অ্যাক্টিভ রাখা হলে এই পেজে নতুন ট্যাব হিসেবে অ্যাসেট অ্যান্ড লায়াবিলিটিস থাকবে।
সম্পূর্ণ ফর্ম পূরণের পর ‘প্রসিড টু অনলাইন রিটার্ন’ এবং তারপর পরের রিভিউ পেজে ‘সাবমিট রিটার্ন’-এ ক্লিক করলে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়ে যাবে।
আরো পড়ুন: অনলাইনে ই-টিন সার্টিফিকেট করার পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
সঞ্চয়পত্রে শূন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম
এক্ষেত্রে ডিটেইল রিটার্ন নির্বাচন দিয়ে কার্যক্রম শুরু করতে হবে। করযোগ্য আয় আছে কিনা- প্রশ্নের ঊত্তরে ‘ইয়েস’ অপশনে টিক দিতে হবে। এর ফলে ডানপাশে সক্রিয় হয়ে ওঠা ‘হেড্স অফ ইনকাম’ থেকে ‘ইনকাম ফ্রম ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসেট্স’-এর পাশে টিক দিয়ে রাখতে হবে।
একই কারণে পরের ‘অ্যাডিশনাল ইনফরমেশন’ পেজে রেয়াতের অপশনটি সক্রিয় থাকবে। রেয়াত ক্লেইম করার জন্য এখানে ‘ইয়েস’ অপশন বেছে নিতে হবে। একই সঙ্গে আইটি১০বি ক্যাটাগরিকেও সচল রাখতে হবে।
‘ইনকাম’ পেজ-এ দেখা যাবে ‘এক্সপেন্ডিচার’ ও ‘রিবেটসহ’ অন্যান্য সাধারণ ট্যাবগুলো। এই পেজে প্রধান কাজ হচ্ছে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা সংক্রান্ত তথ্যাদি প্রদান করা।
‘কর রেয়াত’-এর পেজে ইনভেস্টমেন্ট ক্যাটাগরির অধীনে ‘অ্যাপ্রুভ্ড সঞ্চয়পত্র’-এ টিক দিয়ে আবারও সঞ্চয়পত্রের তথ্য লিপিবদ্ধ করতে হবে। এখানে সঞ্চয়পত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগের জন্য নির্ধারিত রেয়াতটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত হবে।
সঞ্চয়পত্রে রেয়াতের সর্বোচ্চ সীমা হলো ৫ লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ এর থেকে বেশি হলেও রেয়াত এই ৫ লাখই আসবে।
পরের পেজে ব্যয় হিসাবের পালা। এখানে স্থান পাবে সঞ্চয়পত্র থেকে মুনাফা লাভের সময় প্রদানকৃত উৎসে করের পরিমাণটি। ‘পেমেন্ড অফ ট্যাক্স অ্যাট সোর্স’-এর ঘরে মোট উৎসে কর দেখাতে হবে। এর মধ্যেই পূর্বে ‘ইনকাম’ পেজে উল্লেখ করা সঞ্চয়পত্রের উৎসে করও থাকবে।
পূর্বে যেহেতু আইটি১০বি সক্রিয় রেখে আসা হয়েছে তাই এবার যথারীতি আসবে ‘অ্যাসেট্স অ্যান্ড লায়াবিলিটিস’। এখানেও পাওয়া যাবে ‘ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসেট্স’-এর অপশন, আর এখানেও সঞ্চয়পত্রের তথ্যাদি পূর্বের অনুরূপ হতে হবে। পরবর্তী কাজ হচ্ছে সঞ্চয়পত্রসহ অন্যান্য যাবতীয় সম্পদ ক্রয়ের তহবিলের উৎস পরিমাণসহ টাইপ করা।
সবশেষে সমন্বয়করণের সময় নির্ভুল হিসাবের নিমিত্ত্বে ‘ফান্ড আউটফ্লো’ এবং ‘সোর্স অফ ফান্ড’-এর পরিমাণের মধ্যে সমতা রাখতে হবে। তারপর ‘সেভ এ্যান্ড কন্টিনিউ’ দিয়ে সামনে এগোলে আসবে ‘ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট’-এর পেজ, যেখানে পরিশোধের জন্য চূড়ান্ত করটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে উল্লেখ থাকবে।
প্রথমেই কর্তনকৃত উৎসে কর নিশ্চিত করতে চলতি অর্থ বছরে উৎসে কর দেওয়া হয়েছে কিনা-এই প্রশ্নের ঊত্তরে ‘ইয়েস’ দিতে হবে। অতঃপর ‘ট্যাক্স পেমেন্ট আপডেট স্ট্যাটাস’-এর অপশনে ‘ইয়েস’ ক্লিক করলে একটি লেজার পেজ-এ নিয়ে যাওয়া হবে।
এবার বামপাশের মেন্যু থেকে ‘ক্লেইম সোর্স ট্যাক্স’-এর অধীনে ‘সঞ্চয়পত্র’-এ যেতে হবে। এই পেজে কর্তন করা উৎসে করসহ সঞ্চয়পত্রের অন্যান্য তথ্যাবলি পুনরায় উল্লেখ করতে হবে। তারপর ‘সেভ’ করার পরে নিচে সঞ্চয়পত্র টিডিএস লিস্টে তথ্যগুলো এক সারিতে প্রদর্শিত হবে।
এরপর বামপাশের মেন্যুতে একদম নিচে ‘ট্যাক্স পেমেন্ট স্ট্যাটাস’-এ যেতে হবে। ফলে স্ট্যাটাস পেজ-এ উৎসে করের আপডেটটি এক নজরে দেখানো হবে।
এখন নিচে ডানদিকে ‘গো টু ই-রিটার্ন’-এ ক্লিক করে আগের সেই ‘ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট’ পেজে ফিরে যেতে হবে। এ সময় দেখা যাবে চূড়ান্ত প্রদেয় করের সেকশনে শূন্য হয়ে গেছে। অতঃপর ‘প্রসিড টু অনলাইন রিটার্ন’-এ ক্লিক করলে পরের পেজে এতক্ষণ ধরে প্রদান করা প্রতিটি তথ্য একসঙ্গে দেখাবে। পুরো রিটার্নে কোনো ভুল আছে কিনা তা একবার দেখে নিয়ে ‘সাবমিট রিটার্ন’-এ প্রেস করলেই কাজ শেষ।
আরো পড়ুন: ই-রিটার্ন: অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন যেভাবে
শেষাংশ
অনলাইনে শূন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রধান শর্ত হলো টিনধারী ব্যক্তির মোট আয় করমুক্ত সীমার মধ্যে থাকা। এক পেজের রিটার্নের মাধ্যমে খুব কম সময়েই এই কার্যক্রমটি সম্পন্ন করে ফেলা যায়। এখানে প্রদেয় কর শূন্য করার জন্য কোনো সূক্ষ্ম হিসাব-নিকাষের বিড়ম্বনা নেই। আর ডিটেইল রিটার্নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সেকশনে সরবরাহ করা তথ্যগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্যতা ও সঙ্গতি রাখা বাঞ্ছনীয়। বিশেষত কর রেয়াত, অগ্রিম পরিশোধ করা কর এবং কর অব্যহতির তথ্যাবলি ই-রিটার্ন লেজারে আপডেট করে নেওয়া উচিত।
৮ ঘণ্টা আগে
ই-রিটার্ন: অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন যেভাবে
বিগত করবর্ষের ন্যায় এবারও যথারীতি অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিলের সুবিধা থাকছে। দেশের যেসকল নাগরিকের টিআইএন (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার) নম্বর আছে, তারা এই সুযোগটি নিতে পারবেন। সুতরাং নথিকরণ, ভিড় এবং সময় ক্ষেপণের বিড়ম্বনা এড়িয়ে এবারও ঘরে বসেই আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। সদ্য টিনপ্রাপ্ত থেকে শুরু করে দীর্ঘ দিন যাবত আয়কর প্রদানকারী সব পেশার মানুষকে একটি নির্ভরযোগ্য প্লাটফর্মের আওতাভুক্ত করেছে এই ইলেক্ট্রনিক পরিষেবা। প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য পৃথক অ্যাকাউন্ট বা প্রোফাইলের ব্যবস্থা থাকায় প্রতিবার বিগত বছরের হিসেব নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয় না। চলুন, এই পরিষেবাটি ব্যবহারের পূর্বশর্ত এবং পদ্ধতি সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ই-রিটার্ন দাখিলের জন্য কি কি প্রয়োজন
এনবিআর (ন্যাশনাল বোর্ড অফ রেভেনিউ)-এর ইলেক্ট্রনিক ট্যাক্স রিটার্ন সিস্টেমটি ব্যবহারের জন্য দরকার হবে একটি বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নাম্বার এবং ই-টিন নম্বর। এখানে মূলত মোবাইল নাম্বারটি জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি কার্ডের সঙ্গে যুক্ত আছে কিনা তা যাচাই করা হয়।
বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের জন্য মোবাইল থেকে *১৬০০১# নাম্বারে ডায়াল করতে হবে। এরপরের কাজ হলো এনআইডির সর্বশেষ চারটি সংখ্যা উল্লেখ করে সেন্ড করা। এর কিছুক্ষণ পরেই মোবাইলে ম্যাসেজের মাধ্যমে উল্লেখিত এনআইডি নাম্বারের সঙ্গে সংযুক্ত ফোন নাম্বারগুলোর তালিকা পাঠানো হবে। এই নাম্বারগুলো প্রত্যেকটি বায়োমেট্রিক করা। অন্যথায় এই তালিকা সম্বলিত ম্যাসেজটি আসবে না।
আরো পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার পদ্ধতি
ই-রিটার্নের সঙ্গে সংযুক্তি হিসেবে আলাদা করে কোনো কাগজপত্র দিতে হয় না। কেবল প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি নির্ভুলভাবে দিতে হয়। তবে তথ্যের ত্রুটিহীনতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সঙ্গে থাকা আবশ্যক। তাছাড়া কর অফিস থেকে যাচাইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিটি তথ্য-প্রমাণ যেন দেখানো যায় তার জন্যও কাগজপত্র আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা বাঞ্ছনীয়।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার পদ্ধতি
.
ই-ট্যাক্স এনবিআর সাইটে নিবন্ধন
প্রথমেই সরাসরি চলে যেতে হবে এনবিআর-এর ই-রিটার্ন ওয়েবসাইটে (https://etaxnbr.gov.bd/)। এখানে প্রদত্ত পরিষেবাগুলো থেকে ‘ই-রিটার্ন’ অপশনে গেলে একটি নতুন উইন্ডো আসবে, যেখানে সাইটটিতে নিবন্ধন করা আছে কিনা- তা জানতে চাওয়া হবে।
এখানে ‘আই অ্যাম নট ইয়েট রেজিস্টার্ড’ বাটনে ক্লিক করা হলে নিবন্ধন পেজে নিয়ে যাওয়া হবে।
এই সাইনআপ পেজে ১২ সংখ্যার টিন নাম্বার,বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নাম্বার এবং ক্যাপচা সঠিকভাবে পূরণ করে ‘ভেরিফাই’তে ক্লিক করতে হবে।
এরপর উল্লেখিত ফোন নাম্বারে ম্যাসেজের মাধ্যমে ছয় অংকের একটি ওটিপি কোড আসবে। এটি সাইনআপ পেজের নির্দিষ্ট স্থানে বসিয়ে পরপর দুইবার একটি নতুন পাসওয়ার্ড সরবরাহ করতে হবে।
এখানে উল্লেখ্য যে,পাসওয়ার্ডটি অবশ্যই আলফানিউমেরিক তথা অঙ্ক,অক্ষর ও বিভিন্ন চিহ্ন সম্বলিত হতে হবে। সহজ বা ছোট পাসওয়ার্ড গ্রহণযোগ্য নয়। বিধায় নিবন্ধন প্রক্রিয়া সামনের দিকে অগ্রসর হবে না। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিয়ে সাবমিট করার সঙ্গে সঙ্গেই ই-রিটার্ন অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে।
এখানে মনে রাখতে হবে যে,ই-টিন যেহেতু এনআইডি দিয়ে করা হয় তাই এই সিস্টেমে দেওয়া নাম এবং মোবাইল নাম্বারের সঙ্গে বায়োমেট্রিক করা ব্যক্তির নাম একই হতে হবে। অর্থাৎ একজ ন ব্যক্তি তার নিজের বায়োমেট্রিক ভেরিফাই করা ফোন নাম্বার দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে তা থেকে অন্যজনের রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন না।
নিবন্ধনের পর এবার সেই টিন নাম্বার,পাসওয়ার্ড ও নতুন ক্যাপচা পূরণ করে সাইন ইন করলে ই-রিটার্ন ড্যাশবোর্ডটি দেখা যাবে।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রে যেভাবে বিনিয়োগ করবেন
রিটার্ন জমার ক্যাটাগরি নির্বাচন
ড্যাশবোর্ডে বাম পাশের মেনু বারে ‘সাবমিশন’ মেনুতে রয়েছে দুই ধরনের রিটার্ন পেজ। একটি সিঙ্গেল পেজ ও অপরটি রেগুলার রিটার্ন পেজ।
সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন
প্রধানত ৭টি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে এক পেজ-এ রিটার্ন জমা দেওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো:
• বার্ষিক করযোগ্য আয় অনূর্ধ্ব পাঁচ লাখ টাকা
• সঞ্চিত সম্পদের পরিমাণ ৫০ লক্ষ টাকার কম
• গণকর্মচারী নন
• মোটরগাড়ির মালিকানা নেই
• সিটি করপোরেশনে কোনো বাড়ির মালিকানা নেই
• বিদেশে কোনো পরিসম্পদ নেই
• কোনো কোম্পানির শেয়ার নেই
এই মাধ্যমে এক পেজের মধ্যেই রিটার্নের যাবতীয় তথ্যাদির খসড়া করা যায়। এর মধ্যে থাকে আয়ের উৎস,মোট আয়,জীবনযাপন ব্যয়,সামগ্রিক পরিসম্পদ,আরোপযোগ্য কর,কর রেয়াত,উৎসে কর্তিত কর, প্রদেয় কর এবং রিটার্নের সঙ্গে দেওয়া কর।
সব তথ্য প্রদান শেষে পেজটি ড্রাফট হিসেবে রাখা যায়,আবার ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করে সঙ্গে সঙ্গেই অনলাইন জমা সম্পন্ন করা যায়।
আরো পড়ুন: বন্ডে বিনিয়োগের আগে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি
রেগুলার ই- রিটার্ন
উপরোক্ত ৭ শর্তের বাইরে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তিকেই এই বিস্তারিত রিটার্ন পদ্ধতিতে অগ্রসর হতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় কর যাচাই, আয়-ব্যয়,বিনিয়োগ,সম্পদ,ঋণ এবং কর রেয়াতের মতো সনাতন পদ্ধতির বিষয়গুলো বিস্তারিত তথ্যের জন্য পৃথক স্ক্রিনে দেখানো হবে।
কর যাচাইয়ের তথ্য
এ অংশে প্রথমেই রিটার্ন স্কিম ঘরে সেল্ফ,এসেস্মেন্ট বর্ষ ও ইনকাম বর্ষের ঘরে সাল ও তারিখ পূর্ব নির্ধারিত থাকবে। আয় করমুক্ত হলে আয়ের পরিমাণের পাশাপাশি ‘রেসিডেন্ট স্ট্যাটাস’ উল্লেখ করে দিতে হবে।
ডানপাশের হেডস অব ইনকামের নিচে যে অপশনগুলো রিটার্নদাতার জন্য প্রযোজ্য শুধুমাত্র সেগুলোতেই তিনি টিক দেবেন। এই হেডগুলোর মাধ্যমে ব্যক্তির আয়ের উৎস বা খাত নির্ধারিত হয় এবং সে অনুসারে পরের স্ক্রিণগুলো ভিন্ন হয়ে থাকে।
পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য একদম নিচের দিকে রয়েছে ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ বাটন।
আরো পড়ুন: ২০২৪ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ১০ মুদ্রা
অতিরিক্ত তথ্য
পূর্বের স্ক্রিণে প্রদত্ত তথ্যে জের ধরে এখানে যাচাইকরণের জন্য আরও বিস্তারিত তথ্য দিতে হয়। যেমন- কাজের স্থান,মুক্তিযোদ্ধা বা প্রতিবন্ধী কিংবা অন্য প্রতিবন্ধীর আইনি অভিভাবক কিনা, বিনিয়োগের জন্য কর রেয়াত,কোনো কোম্পানির শেয়ার আছে কিনা,মোটরগাড়ি বা সিটি করপোরেশনে নিজস্ব বাড়ি ইত্যাদি।
আইটি১০বি
এই সেকশনটির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে আইটি১০বি। যাবতীয় সম্পদের পরিমাণ যদি ৪০ লাখ টাকা বা তার বেশি হয় সেক্ষেত্রে এই হেডটিতে টিক মার্ক দিতে হবে। প্রদত্ত পরিমাণ সম্পদ না থাকলে আর এই অপশনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে এক্ষেত্রে ব্যক্তির পরিবারের বার্ষিক খরচের হিসেব অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
এরপর ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ দিয়ে পরবর্তী ধাপে যাওয়ার পর একে একে এসেস্মেন্ট,ইনকাম,এক্সপেনডিচার,এসেট্স অ্যান্ড লায়াবিলিটিস এবং ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট ট্যাবগুলোর ভিন্ন ভিন্ন পেজগুলো আসবে।
আরো পড়ুন: ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেভাবে বিনিয়োগ করবেন
আয়ের বিস্তারিত বিবরণ
এখানে রয়েছে বৈদেশিক আয় বা কর-অব্যাহতি এবং বেতন বা করযোগ্য বিনিয়োগ ছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে আয়।
‘এনি আদার ইনকাম’ অপশনে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিস্তারিত তথ্যসহ অন্যান্য আয়ের উৎস এবং সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের হিসেব যুক্ত হবে। এই তথ্যগুলো নেট আয়ের হিসাবে যুক্ত হবে।
ব্যয়ের খাত
এই বিভাগটিতে সারা কর বছরে মোট আয়ের বিপরীতে প্রতিটি ব্যয়কে একত্রিত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে গৃহস্থালি ও ইউটিলিটিসহ বাসস্থান, খাদ্য, পোশাক, পরিবহন, বাচ্চাদের স্কুল খরচ এবং অন্যান্য বিবিধ ব্যয়।
সম্পদ, ঋণ ও বিনিয়োগ খাত
এখানে যুক্ত হবে বিমা, ডিপোজিট প্রিমিয়াম সার্ভিস, সঞ্চয়পত্র, প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং স্টক বা শেয়ারসহ যাবতীয় বিনিয়োগগুলো। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি অপশনের সংশ্লিষ্ট স্থানগুলোতে রয়েছে স্পষ্ট ও বিস্তারিত তথ্য প্রদানের জায়গা।
কর ও পরিশোধ
সামগ্রিক রিটার্নে কোনো করযোগ্য আয় বা বকেয়া অথবা অগ্রিম কর থাকলে তার স্বয়ংক্রিয় হিসাব হবে এই অংশে। উৎসে কর্তনকৃত কর এবং অগ্রিম কর প্রদান করা হলে তা নেট হিসেবে বাদ যাবে। আয়ের উপর কোনো কর বকেয়া বা ধার্য না হলে প্রদেয় করের পরিমাণ শূন্য হবে আর এভাবে প্রদান করা রিটার্ন ‘শূন্য রিটার্ন’ নামে পরিচিত।
আরো পড়ুন: পুরনো স্বর্ণ বিক্রির সময় যে কারণে দাম কেটে রাখা হয়
যাবতীয় ডেটা সরবরাহের পর ট্যাক্স পেমেন্ট স্ট্যাটাসে ক্লিক করলে কর হিসাবের একটি সারাংশ দেখানো হবে। অতঃপর কোনো করযোগ্য পরিমাণ উল্লেখ থাকলে এবার তা পরিশোধের পালা।
এর জন্য ‘পে নাউ’ বাটনে ক্লিক করলে অর্থপ্রদানের জন্য কার্ড, অনলাইন ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিং-এই তিনটি অপশন প্রদর্শিত হবে। এগুলোর যেকোনোটি নির্বাচন করে অনায়াসে নেট করটি তাৎক্ষণিকভাবে পরিশোধ করা যাবে।
ই-রিটার্ন সনদ সংগ্রহ
রিটার্ন জমা দেওয়ার পর কর প্রদানের রশিদ ও রিটার্ন সনদসহ প্রত্যেকটি ট্যাক্স রেকর্ড সঙ্গে সঙ্গেই প্রস্তুত হয়ে যাবে। এই গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো যেকোনো সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে এখান থেকে ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করে কাজে লাগানো যাবে।
এতক্ষণ ধরে যে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তার সবগুলো সহ পুরো রিটার্নটি অ্যাকাউন্টে নিরাপদে সংরক্ষিত অবস্থায় থেকে যায়। এতে করে পরের বছরে নতুন করে পুরোনো হিসাব নিয়ে চিন্তায় পড়তে হয় না।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক পরিবর্তন করে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের উপায়
শেষাংশ
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের এই পদ্ধতি পুরোনো নথিকরণ এবং জটিল হিসেব-নিকেশের বিড়ম্বনা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। তবে ই-ট্যাক্স এনবিআর সাইটে তথ্য প্রদানের পূর্বে অবশ্যই রিটার্নের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি কাগজপত্র যোগাড় করে রাখা উচিত। ই-রিটার্নের সঙ্গে কোনো কাগজ জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও তথ্য পূরণে ত্রুটিহীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সেগুলো সঙ্গে রাখা জরুরি। অ্যাকাউন্ট খোলা এবং তা যেকোনো সময় ব্যবহারের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক ভেরিফাইড ফোন নম্বর অপরিবর্তিত রাখার কোনো বিকল্প নেই। প্রদান করা প্রতিটি তথ্য এই অ্যাকাউন্টে সংরক্ষিত থাকে ফলে পরের বছরে জমা দেওয়ার সময় রিটার্নের তথ্যে সামঞ্জস্যতা রাখা যায়।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে নগদায়ন বা পুনরায় চালু করার উপায়
৩ সপ্তাহ আগে
এনবিআরকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর আহ্বান এফবিসিসিআই’র
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো চিঠিতে ফেডারেশন বলেছে, নতুন আয়কর আইন ২০২৩- এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আয়কর সার্কুলার প্রকাশে দেরি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা রিটার্ন দাখিলে প্রস্তুত নন।
আরও পড়ুন: এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন করলেন সালমান এফ রহমান
তাই রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো প্রয়োজন।
চিঠিতে বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে অনেক করদাতা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
আরও কয়েকটি ব্যবসায়িক চেম্বার কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য এনবিআরকে অনুরোধ করেছে।
রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা আরও দুই মাস বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশন।
আরও পড়ুন: অর্থনীতির স্বার্থে সহিংসতা পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি এফবিসিসিআই'র আহ্বান
পাটের সোনালি অতীত ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে এফবিসিসিআই: মাহবুবুল আলম
১ বছর আগে
আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য ২ মাস চেয়ে আইনজীবীদের আবেদন
বাংলাদেশ কর আইনজীবী সমিতি (বিটিএলএ) জানিয়েছে, কর বছরের ২০২২-২০২৩ এর সার্কুলার প্রাপ্তিতে বিলম্বের কারণে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য দেশের ৬৭টি কর আইনজীবী সমিতি দুই মাস সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছে।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অর্থনীতিতে যে প্রতিকূল পরিস্থিতি রয়েছে তাও বিবেচনায় নেয়ার দাবি জানান তারা। কর আইনজীবীদের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিটিএলএ অ্যাসোসিয়েশনের দাবি মেনে নিয়েছে।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল
বিটিএলএ সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম বলেন, এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে পৃথক আবেদন করা হয়েছে।
কর আইনজীবীদের সংগঠনগুলো বলছে, অর্থনৈতিক মন্দা ছাড়াও এ বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রচারণায় বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে, ৮০ লাখেরও বেশি ই-টিআইএন বাহক থাকলেও এখন পর্যন্ত রিটার্ন ফাইলিংয়ের সংখ্যা কম।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দিতে দুই মাস সময় বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার পদ্ধতি
২ বছর আগে
আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার পদ্ধতি
একজন নাগরিকের আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার নিরিখে নির্ধারিত হয় তিনি প্রতি বছর কত টাকা কর দেবেন। বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত ফর্মে নাগরিক কর্তৃক প্রদানকৃত নির্দিষ্ট অর্থ-বছরে (১ জুলাই থেকে পরের বছর ৩০ জুন) তার আয়ের সকল তথ্যাবলী যাচাই করে আয়কর কর্তৃপক্ষ এই আয়করের পরিমাণটি ঠিক করেন। ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার প্রত্যেক টিআইএন (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার) ধারীর জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক করেছে। এই হিসাবপত্রটি জমা না দিলে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে জরিমানাসহ নানান ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই নথিপত্র জমা করা উচিত। চলুন, সরকারকে নিজের আয়ের বিবরণী জানানোর এই পদ্ধতিটি সম্বন্ধে জেনে নেয়া যাক।
কাদের জন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া জরুরি
করযোগ্য আয়কারী
* যাদের আয় বছরে ৩ লক্ষ টাকার উপরে
* নারী, তৃতীয় লিঙ্গ, এবং ৬৫ বছর থেকে শুরু করে তদুর্ধ্ব বয়সের ব্যক্তি; যাদের আয় বছরে
৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার উপরে
* প্রতিবন্ধী; যাদের আয় বছরে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার উপরে
* গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা; যাদের আয় বছরে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার উপরে|
পড়ুন: ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ট্যাক্স রিটার্ন ডকুমেন্ট লাগবে না: এনবিআর|
এছাড়াও যাদের জন্য রিটান দাখিল আবশ্যক
→ যারা ১২ অঙ্কের টিন সনদ গ্রহণ করেছেন
→ পূর্ববর্তী ৩ বছরের যেকোন বছরে যাদের আয় করযোগ্য হয়েছে কিংবা যাদের কর নির্ধারণ হয়েছে
→ যাদের নামে নির্দিষ্ট কোন কোম্পানির শেয়ার আছে
→ যারা কোন ফার্মের অংশীদার
→ যে সকল সরকারি কর্মকর্তার বেতন বছরের যে কোন সময় ১৬ হাজার টাকা বা তার বেশী
→ কোন নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পদের কর্মী
→ কর্ম থেকে অব্যাহতি পাওয়া বা আয় কমে যাওয়া অবস্থায় যারা করযোগ্য হয়েছেন
→ যারা কোন ধরনের মোটর গাড়ির মালিকানা পেয়েছেন
→ ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণকারি ব্যবসায়ী
→ মূল্য সংযোজন কর আইনের অধীনে থাকা কোন সংঘের সদস্য
→ চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, আইনজীবী, অ্যাকাউন্টেন্ট, স্থপতি, প্রকৌশলী,
→ সার্ভেয়ার কিংবা এ জাতীয় কোন কাজের পেশাজীবী হিসেবে কোন স্বীকৃত সংস্থায় নিবন্ধিত ব্যক্তিরা
→ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে নিবন্ধিত আয়কর কর্মকর্তা
→ শিল্প বিষয়ক চেম্বার বা ব্যবসায়িক সংস্থার সদস্য ব্যাক্তিরা
→ সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/সংসদ সদস্য নির্বাচনে প্রার্থী ব্যাক্তিরা
→ স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি, আধা সরকারি অথবা স্থানীয় সরকারের টেন্ডারে অংশগ্রহণকারি ব্যক্তিরা
→ কোম্পানির পরিচালনার পরিষদে নিযুক্ত ব্যক্তিরা
→ লাইসেন্স করা অস্ত্রের মালিকানা প্রাপ্ত ব্যক্তিরা
→ স্থান, মোটরযান, বাসস্থান বা অন্যান্য সম্পদ সরবরাহের মাধ্যমে শেয়ারড আর্থিক কার্যক্রম-এ অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা|
পড়ুন: ২০২১-২২ অর্থবছরে কালো টাকা সাদা করায় সাড়া কম: এনবিআর ডাটা|
যাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে না
→ যে অনিবাসিদের বাংলাদেশে স্থায়ী কোন ভিত্তি নেই
→ জমি বিক্রি করা বা ক্রেডিট কার্ড নেয়ার জন্য যাদেরকে ১২ অঙ্কের টিন করতে হয়েছে, অথচ কোন করযোগ্য আয় নেই
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা
প্রতি বছর কর দিবস ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই করদাতাকে তার আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে হয়। জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে এই কর দিবসের মধ্যে যে কোন সময় রিটার্ন দেয়া যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার কারণে এই সময়ের ভেতর জমা করা সম্ভব নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে করদাতাকে রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট ফর্মে উপকর কমিশনার বরাবর উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে আবেদন করতে হবে।
আবেদন মঞ্জুর হলে বর্ধিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা দেয়া যাবে। এখানে করদাতার উপর কোন জরিমানা আরোপ না হলেও বিলম্ব সুদ এবং অতিরিক্ত সরল সুদ আরোপিত হবে।
পড়ুন: এনবিআর ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডকে সহায়তা করে: চেয়ারম্যান
আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
বেতনভুক্তদের ক্ষেত্রে
* নির্দিষ্ট অর্থ-বছরে করদাতার বেতন বিবরণী
* প্রতি বছরের আয়ের কোন অংশ ব্যাংক সুদ থেকে আসলে, ঐ ব্যাংক হিসাবের নথি বা ব্যাংক সার্টিফিকেট
* বিনিয়োগ ভাতা বা বীমা প্রকল্প থাকলে তার প্রমাণাস্বরূপ নথি|
নিরাপত্তা জামানতের সুদের ক্ষেত্রে
* নির্দিষ্ট অর্থ-বছরে ক্রয়কৃত বন্ড বা ডিবেঞ্চারের অনুলিপি। বন্ড বা ডিবেঞ্চারটি ব্যাংক/কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রয় করে থাকলে, সেই ব্যাংক/প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে প্রত্যয়নপত্র
* সুদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সুদ কেন্দ্রিক আয়ের জন্য সেই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়ন পত্র|
পড়ুন: ভ্যাট ফাঁকি রোধে ১০ হাজার ইএফডি বসাবে এনবিআর|
বাড়ি/জমি-সম্পত্তির মালিকদের ক্ষেত্রে
* এক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র/ভাড়ার রশিদের অনুলিপি। এর সাথে প্রাপ্ত বাড়িভাড়া ব্যাংকে জমা রাখলে সেই ব্যাংক হিসাব বিবরণী
* পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন কর/ভূমি রাজস্ব প্রদানের রশিদের কপি
* বাড়ি ক্রয় বা নির্মাণের উদ্দেশ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলন করলে ঐ ঋণের সুদের বিপরীতে ব্যাংক হিসাব বিবরণী এবং ব্যাংক সনদপত্র|
ব্যবসায়ী ও নির্দিষ্ট দক্ষতার পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে
* এক মালিকানা বা অংশীদারি ব্যবসার এবং নির্দিষ্ট পেশা থেকে লব্ধ আয়-ব্যয়ের বিবরণী
মূলধনী লাভ থেকে আয়ের ক্ষেত্রে
* করদাতার স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর অথবা বিক্রি হলে তার দলিলের অনুলিপি
* মূলধনী উৎসে আয়কর জমা হলে তার চালানের অনুলিপি
* পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত কোম্পানীর শেয়ার লেনদেন থেকে আয় করলে তার বিপরীতে প্রত্যয়নপত্র|
পড়ুন: আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ১৩৫ পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ এনবিআরের
অন্যান্য উৎসের আয়ের ক্ষেত্রে
* ব্যাংক/অন্য প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত নগদ টাকা থেকে লাভ গ্রহণ করলে তার ব্যাংক হিসাব এবং ডিভিডেন্ট ওয়ারেন্টের অনুলিপি বা সনদপত্র
* ব্যাংক/অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত সুদের ক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গার সময় কিংবা সুদ প্রাপ্তির সময় নেওয়া সনদের অনুলিপি
* এছাড়া অন্য কোন ধরনের উৎস থেকে আয় করলে ঐ উৎসের প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র
কর পরিশোধের প্রমাণ স্বরুপ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
* যারা ইতোমধ্যে কর দিয়েছেন, তাদের কর পরিশোধের বিপরীতে চালান কপি, পে-অর্ডার, ব্যাংক ড্রাফট, একাউন্ট-পে-চেক
* উপরোক্ত যে কোন উৎস থেকে আয়ের ভিত্তিতে আয়কর প্রদান করা হলে কর আরোপকারী কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নপত্র|
পড়ুন: বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আদায় তিন লাখ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই
আয়কর রিটার্ন ফরম
দরকারি সব কাগজপত্র প্রস্তুত হয়ে গেলে এবার রিটার্ন ফর্ম পুরনের পালা। এনবিআর(ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভেনিউ) থেকে প্রতি বছরই এই ফর্মে নতুন কিছু পরিবর্তন আনা হয়। নতুন বা পুরাতন যে কোন রিটার্ন ফর্ম করদাতা তার নিকটস্থ আয়কর অফিস থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পারবেন।
এছাড়াও এনবিআর-এর ওয়েবসাইট থেকেও প্রয়োজনীয় ফর্মগুলো ডাউনলোড করা যাবে। করদাতার জন্য প্রযোজ্য ফর্মগুলো নির্ভুল ও প্রাসঙ্গিক তথ্য সরাবরাহের মাধ্যমে যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। এ সময় কোন বিষয় নিয়ে কোন রকম সন্দেহ বা বিড়ম্বনা সৃষ্টি হলে ব্যক্তিগত আইনজীবীর পরামর্শ নেয়া উত্তম।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার পদ্ধতি
এ পদ্ধতিতে হিসাব জমা করার জন্য প্রথমে করদাতাকে এনবিআর-এর ওয়েবসাইটের ই-ট্যাক্স রিটার্ন পেজে প্রবেশ করতে হবে। এই পৃষ্ঠার মাধ্যমে করদাতা ইরিটার্ন সাইটে নিবন্ধন করতে পারবেন। এর জন্য সোজা চলে যেতে হবে ‘ইরিটার্ন’ অপশনে। পরের পৃষ্ঠায় নিচে লেখা ‘রেজিষ্ট্রেশন’ বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে।
এবার এখানে ইংরেজিতে করদাতার ১২ অঙ্কের টিন সংখ্যা ও মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। অতঃপর ক্যাপচা বসানো, মোবাইল নাম্বার যাচাইয়ের জন্য ওটিপি দেয়া এবং পাসওয়ার্ড ঠিক করার মাধ্যমে নিবন্ধনের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে।
পড়ুন: পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনলে কোনো প্রশ্ন করা হবে না: অর্থমন্ত্রী
এবার আবার ই-ট্যাক্স রিটার্ন সাইটে যেয়ে ১২ অঙ্কের টিন সংখ্যা ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ‘সাইন ইন’ করতে হবে। এরপরেই করদাতা ইরিটার্ন সাইটে তার নিজস্ব ইউজার ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করতে পারবেন। এখন বাম পাশের তালিকা থেকে ক্লিক করতে হবে ‘রিটার্ন সাবমিশন’-এ।
আর এর ফলেই তিনি পৌছে যাবেন অনলাইনে রিটার্ন জমা দেয়ার মুল অংশে। এখানে আয়ের উৎস ও হিসাব সহ প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সঠিক ভাবে সরবরাহ করতে হবে। প্রতি পৃষ্ঠাতেই তথ্য দেয়ার পর নিচের ‘সেভ এ্যান্ড কন্টিনিউ’ বাটনে ক্লিক করে পরের পৃষ্ঠায় যেতে হবে।
সবগুলো পৃষ্ঠায় তথ্য দেয়া শেষ হলে চূড়ান্ত ভাবে আয়কর রিটার্নের সারসংক্ষেপ দেখানো হবে। এখানে তথ্য সব ভালো ভাবে যাচাই করার পর ‘ভিউ রিটার্ন’ বাটনে ক্লিক করলে তা করদাতাকে তার রিটার্ন ফর্মটি সম্পূর্ণরূপে পূরণ করা অবস্থায় দেখাবে। এখান থেকে সবকিছু আরো একবার নিরীক্ষা করে নিয়ে নিচের দিকে ‘ভেরিফিকেশন’-এ টিক মার্ক দিয়ে দিতে হবে। সবশেষে ‘সাবমিট রিটার্ন’ বাটনে ক্লিক করলেই সফলভাবে দাখিল হয়ে যাবে আয়কর রিটার্ন।
জমাকৃত আয়কর রিটার্নের একটি কপি ডাউনলোডের পর প্রিন্ট করে পরবর্তী প্রয়োজনের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।
পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ
কোথায় আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়
কর প্রদানকারিদের শ্রেণীর উপর ভিত্তি করে রির্টান দাখিলের পৃথক পৃথক আয়কর সার্কেল নির্দিষ্ট করা থাকে। যেমন- ঢাকা জেলায় অবস্থিত যে সকল বেসামরিক সরকারি ও পেনশনভুক্ত কর্মকর্তার নাম এ, বি এবং সি অক্ষরগুলো দিয়ে শুরু হয়েছে, তাদেরকে ঢাকা কর সার্কেল-৭১ ও কর অঞ্চল-৪-এ রিটার্ন জমা দিতে হয়।
নতুন করদাতারা তাদের নাম, চাকুরিস্থল অথবা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা যে কর অঞ্চলের অধীনে পড়েছে সেখানে গিয়ে ১২ অঙ্কের টিন সংখ্যা উল্লেখ করে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। এছাড়া প্রয়োজনে তারা নিকটস্থ আয়কর অফিস কিংবা কর পরামর্শ কেন্দ্র থেকে সার্কেল অফিস সম্বন্ধে জেনে নিতে পারবেন।
শেষাংশ
দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের টাকা নাগরিকদের আয়কর থেকে আসে। সরকারি কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনীর বেতন-ভাতার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের একটা বেশ বড় অংশই নির্ভর করে এই আয়করের উপর। তাছাড়া সরকারি যাবতীয় পরিষেবাগুলোকে সুষ্ঠুভাবে নাগরিকদের কাছে পৌছে দিতে আয়করের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। তাই নিজেদের স্বার্থেই আয়কর নিশ্চিত করতে প্রতিটি সচেতন নাগরিকের আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া উচিত।
পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল
২ বছর আগে
আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল
আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
মঙ্গলবার এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ মোমেন ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে এনবিআর জানিয়েছিল, এই বছর আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময়সীমা বাড়ানো হবে না। তবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনা করে আরও বেশি করদাতা যাতে তাদের রিটার্ন জমার সুযোগ পান সেই জন্য সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে।
গত ১ জুলাই থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া শুরু হয়েছিল।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে আগের বছরের মতো এবারও কর মেলা বাতিল করেছে এনবিআর।
গত অর্থবছরে ৬০ লাখ করদাতা শনাক্তকরণ নম্বরের (টিআইএন) মধ্যে প্রায় ২৪ লাখ তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঘরে বসেই করা যাবে আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ
পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য এনবিআরকে অনুরোধ
৩ বছর আগে
করের আওতা বাড়াতে এনবিআরের সর্বাত্মক চেষ্টা
কর ফাঁকিবাজদের লাগাম টেনে ধরতে এবং কর জাল সম্প্রসারণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
৪ বছর আগে