জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন কিভাবে: শর্তসমূহ ও আবেদন পদ্ধতি
বাংলাদেশের নাগরিকরা আয়কর প্রদান এবং বিভিন্ন কারণে ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (টিআইএন) বা টিন সনদ নিবন্ধন করে থাকেন। ন্যূনতম করযোগ্য আয়সীমার নিচে থাকলে বা টিন সনদের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেলে কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে টিন নাম্বার বাতিল করা যেতে পারে। আসুন জেনে নেই টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন কিভাবে।
টিন সার্টিফিকেট কি?
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দ্বারা ব্যক্তি এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত একটি অনন্য আলফানিউমেরিক কোড হল টিআইএন। এটি সেই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে কর আদায়ের উদ্দেশ্যে একটি অপরিহার্য সনাক্তকরণ ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করে। এই কোডসহ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম, তাদের কাজের ধরণ সম্বলিত নথিটিই টিন সার্টিফিকেট।
এই সনদ সরকারকে সঠিক রেকর্ড বজায় রাখতে, করদাতার সম্মতি নিরীক্ষণ করতে এবং কর সংগ্রহকে সহজতর করতে সহায়তা করে। কর্মচারী, স্ব-নিযুক্ত পেশাদার বা ব্যবসার মালিক; আপনি যেই হোন না কেন, ট্যাক্সের বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য একটি টিন সনদধারী হওয়া আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রে নয়, সুদ কমেছে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের: অর্থ মন্ত্রণালয়
টিন সার্টিফিকেট বাতিলের পূর্বশর্ত
সরকার ঘোষিত টিন সার্টিফিকেট বাতিলের আবেদনের শর্তাবলি
এসকল দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি টিন নিবন্ধন বাতিলের আবেদনের জন্য ছয়টি শর্ত নির্ধারণ করেছে। সেগুলো হলো-
১. যে করদাতাদের কর রিটার্ন দাখিলের কোন বাধ্যবাধকতা নেই
২. মৃত্যু, অবসায়ন, অবলুপ্তি বা অনুরূপ কোনো কারণে করদাতা অস্তিত্বহীন হয়ে গেলে
৩. করদাতা স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করলে এবং বাংলাদেশে তার আয় করার মতো কোনও কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না থাকলে
৪. ডুপ্লিকেট বা একাধিক নিবন্ধন অথবা ভুল তথ্য সম্বলিত নিবন্ধন পেলে
৫. কোন কারণে আইনি মর্যাদা পরিবর্তন হলে
৬. অন্য কোনও আইনানুগ কারণে টিন নিবন্ধন বাতিলের প্রয়োজন হলে |
আরো পড়ুন: প্রবাস স্কিম: প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
কারা টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারবেন
করদাতার আয় আয়কর আরোপ যোগ্য সীমার নিচে থাকলে টিন বাতিলের আবেদন করতে পারেন। ২০২৩-২৪ অর্থ-বছরে নূন্যতম আয়করযোগ্য আয় হচ্ছে-
সাধারণ করদাতার জন্য বছরে করযোগ্য আয় ৩৫০,০০০ (তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকার ঊর্ধ্বে
মহিলা করদাতা, এবং ৬৫ বছর বা তদুর্ধ বয়সী করদাতার ক্ষেত্রে বছরে করযোগ্য আয় ৪০০,০০০ (চার লাখ) টাকার ঊর্ধ্বে।
প্রতিবন্ধি করদাতা এবং তৃতীয় লিঙ্গ করদাতার ক্ষেত্রে বছরে করযোগ্য আয় ৪৭৫,০০০ (চার লাখ পঁচাত্তর হাজার) টাকার ঊর্ধ্বে।
গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার বেলায় বছরে করযোগ্য আয় ৫০০,০০০ (পাঁচ লাখ) টাকার ঊর্ধ্বে।
অনেক সময়ই কারো এই পরিমাণের কম বাৎসরিক আয় থাকা সত্ত্বেও অন্য কোনো প্রয়োজনে টিন সার্টিফিকেট তৈরি করার প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে সার্টিফিকেটটির প্রয়োজন না হলে সেটি বাতিলের আবেদন করতে পারেন।
এছাড়াও কারও পূর্ববর্তী আয় অনুযায়ী কর দেওয়ার প্রয়োজন থাকায় তিনি টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে পারেন। কিন্তু পরবর্তীতে আয় কমে কর সীমার বাইরে চলে আসায় আর টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নাও হতে পারে। এসময় টিন সার্টিফিকেটটি বাতিল করতে পারেন।
এছাড়া কোন করদাতা ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার টিন সার্টিফিকেটটির আর প্রয়োজন থাকে না। তাই তার টিন সার্টিফিকেটটিও বাতিল করা যেতে পারে। পিতার মৃত্যুর পর টিআইএন বাতিল করার দায়িত্ব বর্তায় তার উত্তরাধিকারীদের উপর। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে বাবার এমন কোন ব্যবসা আছে কিনা যার টিআইএন বাতিল করলে ব্যবসা সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র বাতিল করে নতুন করে করতে হয়। এধরনের বড় জটিলতা তৈরি হলে, উত্তরাধিকারগণ মৃত বাবার টিআইএন বাতিলের আবেদন করতে পারবেন না।
কোন বাংলাদেশি যদি কাজের জন্য দেশের বাইরে থাকেন এবং তার যদি বাংলাদেশে করযোগ্য কোন আয় না থাকে তাহলে তিনি বাংলাদেশে ট্যাক্স দিতে বাধ্য নন। সেক্ষেত্রে তার বাংলাদেশে থাকাকালীন নিবন্ধিত টিআইএন সনদ বাতিলের আবেদন করতে পারেন।
একজন ব্যক্তি মাত্র একবারই টিন সার্টিফিকেট করতে পারবেন। কোনোভাবেই ডুপ্লিকেট বা একাধিক টিআইএন করা যাবে না। নিবন্ধনকারী বা কর কর্মকর্তা কর্তৃক ভুলের কারণে নিবন্ধিত টিনটির তথ্য ভুল হলে তা সংশোধনের জন্য টিন বাতিলের দরকার পড়ে।
আরো পড়ুন: প্রগতি স্কিম: বেসরকারি চাকরীজীবীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- আবেদনকারীর বর্তমান টিন সার্টিফিকেটের একটি প্রিন্ট কপি
- জাতীয় পরিচয়পত্র ও তার একটি ফটোকপি
- পর পর কমপক্ষে তিন অর্থ-বছরের শূন্য কর রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তি স্বীকার পত্রের ফটোকপি
টিন সার্টিফিকেট বাতিলের আবেদন পদ্ধতি
টানা তিন বছর শূন্য রিটার্ন দাখিল
যেহেতু পর পর কমপক্ষে তিন অর্থ বছরের শূন্য রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দেখাতে হবে, তাই আপনাকে আগামী তিন বছরের প্রস্তুতি নিতে হবে। অতঃপর টানা তিন বছর শূন্য রিটার্ন দাখিল করে যাবেন। প্রতি কর রিটার্ন দাখিলের পর একটি কর রিটার্ন প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দেয়া হবে। এগুলো পরবর্তীতে সংযুক্তির জন্য সংরক্ষণ করে রাখবেন।
কর সার্কেল অফিসে আবেদন
তৃতীয় বছরের শূন্য রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়েই সম্পন্ন করতে হবে আবেদনের কাজটি। এসময় বিগত দুই বছরের রিটার্ন প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দুটি সঙ্গে নিয়ে আপনার কর সার্কেলের অফিসে চলে যাবেন। অতঃপর সেখানকার উপকর কমিশনার বরাবর একটি আবেদনপত্র লিখবেন। এখানে টিন সনদ বাতিলের জন্য যাবতীয় কারণ সুষ্পষ্টভাবে ব্যাখা করবেন। লেখা শেষ হলে বিগত তিন বছরের রিটার্ন প্রাপ্তি স্বীকার পত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজগুলো সংযুক্ত করে আবেদনপত্র জমা দিয়ে দিবেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, আয়কর অফিসে আবেদন জমা দেয়ার জন্য টিন সনদের মালিকের যাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তিনি যেতে অপারগ হলে, তার পরিবর্তে তার প্রতিনিধি হিসেবে যে কেউই আয়কর অফিসে উপস্থিত হয়ে দরখাস্ত জমা দিতে পারবেন।
আরো পড়ুন: সুরক্ষা স্কিম: স্ব-নিযুক্ত বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মীরা যেভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করবেন
টিন সার্টিফিকেট বাতিলে প্রয়োজনীয় খরচ
টিন সার্টিফিকেট বাতিলের আবেদনের সমুদয় পদ্ধতিতে সরকার ঘোষিত কোন রকম খরচ নেই। অর্থাৎ করদাতাগণ বিনামূল্যেই তাদের টিন সার্টিফিকেটটি বাতিল করতে পারবেন।
টিন সার্টিফিকেট বাতিলের আবেদন পরবর্তী কার্যক্রম
আবেদন জমা হওয়ার পর আপনার কর সার্কেলের উপকর কমিশনের কর্মকর্তারা আপনার আয়কর ফাইলটি নথিভুক্ত করবেন। এ সময় আবেদনে উল্লেখিত কারণসমূহ ভালোভাবে যাচাই করে দেখা হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনার টিন সার্টিফিকেটটি চূড়ান্তভাবে বাতিল হয়ে যাবে। এরপর নতুন করে টিন সার্টিফিকেট করতে পারবেন।
শেষাংশ
বাংলাদেশের নাগরিকরা যেমন প্রয়োজনে ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (টিআইএন) বা টিন নিবন্ধন করতে পারেন তেমনি এই সনদ বাতিল করতে পারবেন। টিন সনদ বাতিলের আবেদনের শর্তাবলি খেয়াল রেখে সহজেই আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন। উপরোক্ত আলোচনায় টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন কিভাবে সে ব্যাপারে একটা স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন: অনলাইনে ই-টিন সার্টিফিকেট করার পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
এনবিআর ২৩’ অর্থবছরে ভ্যাট থেকে সর্বোচ্চ ১.২৫ লাখ কোটি টাকা আয় করেছে
২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯২ শতাংশ ভ্যাট আদায়ে বড় সাফল্য অর্জন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
২৩’ অর্থবছরে এনবিআরের মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বিভাগের সংগ্রহ ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এই অর্থবছরে ১ দশমিক ২৫ লাখ কোটি টাকা আয় করেছে। ২২’ অর্থবছরে এই আয় ছিল ১ দশমিক ৮ লাখ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) অর্থনীতিতে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বার্ষিক কর্মক্ষমতা প্রতিবেদনে এই অর্জনকে 'ব্যতিক্রমী' বলে অভিহিত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি শাখা অর্থ বিভাগ।
এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত ২২ অর্থবছরের তুলনায় ১৭ হাজার ৪ কোটি টাকা বেশি ভ্যাট সংগ্রহ করা হয়েছে।
এর মধ্যে অর্থবছরের শেষ মাস জুন মাসে এনবিআরের অর্জন উল্লেখযোগ্য।
জুন মাসে ১৭ দশমিক ৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ ১৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: টিআইএনধারীদের জন্য ন্যূনতম ২০০০ টাকা করের পক্ষে এনবিআর চেয়ারম্যান
সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে সংগৃহীত ভ্যাট থেকে সর্বোচ্চ রাজস্ব সংগ্রহের জন্য দায়ী সিগারেট। যার পরিমাণ ৩২ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটরদের অবস্থান। যা থেকে ৯ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় করা হয়েছে।
এনবিআরের ভ্যাট বাস্তবায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সদস্য মইনুল খান ইউএনবিকে বলেন, অর্থবছরে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি ছিল। ব্যয় নিয়ন্ত্রণ নীতির কারণে বেশ কয়েকটি প্রকল্প থেকে ভ্যাট পাওয়া যায়নি।
ব্যবসায়ীরা জানান, অনেক কোম্পানি নিয়মিত এলসি খুলে পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতে না পারায় স্বাভাবিক উৎপাদন করতে পারছে না।
এছাড়া ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্যকে ভ্যাট অব্যাহতি দিতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, ‘আমি মনে করি ভ্যাটের ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি একটি বড় অর্জন।’
আরও পড়ুন: রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআর-বেসরকারি খাতের অংশীদারিত্ব জরুরি: ডিসিসিআই সভাপতি
আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর
১ কোটি ১৬ লাখ মানুষের করযোগ্য আয় থাকলেও অধিকাংশই রিটার্ন জমা দেয় না: এনবিআর কর্মকর্তা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (কর তথ্য) মোহাম্মদ জাহিদ হাসান বলেছেন, অন্তত এক কোটি ১৬ লাখ মানুষের করযোগ্য আয় আছে। কিন্তু এদের মধ্যে গতবছর মোটামুটি প্রতি চার জনে একজন রিটার্ন জমা দিয়েছেন।
শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা এনবিআরের অংশীদার ও এনবিআর ব্যবসা সহজ করার জন্য বিভিন্ন বিধিবিধানের সংস্কার ও আধুনিকায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর
গত বছর করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর বা টিনধারী ৮৩ লাখের মধ্যে মাত্র ২৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষ তাদের রিটার্ন জমা দেয়, যা মোহাম্মদ জাহিদের কাছে 'অসন্তোষজনক'।
ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান তার বক্তব্যে বলেন, বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে সরকারকে মাঝে মাঝে এসআরও’র মাধ্যমে আর্থিক বিল, ভ্যাট ও ট্যাক্স ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন করতে হয় এবং একজন উদ্যোক্তা হিসেবে একজন ব্যবসায়ীকে এসব বিষয়ে স্পষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
তিনি জানান, ‘আমরা কিছু পরিবর্তন দেখেছি যেমন নগদ লেনদেনের সীমা বাড়ানো, ৩৮টি বিভাগের জন্য বাধ্যতামূলক রিটার্ন জমা দেয়া, কেন্দ্রীয় ভ্যাট নিবন্ধন ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত রাসায়নিকের ওপর পাঁচ শতাংশ ভ্যাট ছাড়, কম্পিউটার আনুষঙ্গিক আমদানিতে ভ্যাট বৃদ্ধি, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে স্থানীয় ব্যবসার সুরক্ষার জন্য ট্যাক্স ও ভ্যাট ছাড়।’
তিনি আরও বলেন যে ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের তাদের হিসাব বই বজায় রাখার জন্য এই পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে জ্ঞান থাকা উচিত।
আরও পড়ুন: চার মাসে ৯০৯০১.৯৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় এনবিআরের
৩৩০টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে এনবিআর
আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বাণিজ্য সংস্থার আবেদন বিবেচনা করে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার তারিখ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
বুধবার ঢাকার সেগুনবাগিচাস্থ রাজস্ব ভবনের সভাকক্ষে জাতীয় আয়কর দিবস ২০২২ উপলক্ষে এক সেমিনারে বক্তৃতাকালে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম আনুষ্ঠানিকভাবে সময় বাড়ানোর ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
আরও পড়ুন: চার মাসে ৯০৯০১.৯৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় এনবিআরের
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২২ লাখ আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে।
তিনি বলেন, অনেক নতুন করদাতা এ বছর স্বেচ্ছায় রিটার্ন জমা দিচ্ছেন এবং অনেক করদাতা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। এসব বিবেচনায় সময় বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া সহজ করা হচ্ছে যাতে মানুষ ঝামেলামুক্ত পরিবেশে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করযোগ্য আয়ের সবাইকে রিটার্ন জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ৩৩০টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে এনবিআর
বড়ধরনের কর ফাঁকির জন্য লোকসান গুনছে এনবিআর
চার মাসে ৯০৯০১.৯৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় এনবিআরের
বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) জুলাই-অক্টোবর মেয়াদে ৯৭ হাজার ৩০৬ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৯০ হাজার ৯০১ দশমিক ৯৯ কোটি টাকা আদায় করেছে।
এনবিআরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের (২২ অর্থবছর) তুলনায় অক্টোবরে এ পর্যন্ত রাজস্ব সংগ্রহ গড়ে ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে জুলাই-অক্টোবর মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৯ হাজার ৬২২ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: ৩৩০টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে এনবিআর
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৪০৪ দশমিক ৮৭ কোটি টাকার ঘাটতি দেখা গেলেও, জুলাই-অক্টোবর মেয়াদে সামগ্রিক রাজস্ব আদায় রাজস্ব বোর্ডের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক বলে জানিয়েছেন এনবিআরের একজন সদস্য।
ওই কর্মকর্তা বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। বিভিন্ন সংকট সত্ত্বেও এনবিআরের রাজস্ব আদায় এখন পর্যন্ত সন্তোষজনক হয়েছে।
বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরে (জুলাই ২০২২-জুন ২০২৩) এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: বড়ধরনের কর ফাঁকির জন্য লোকসান গুনছে এনবিআর
প্রথম ত্রৈমাসিকে রাজস্ব সংগ্রহ ১৩% কমেছে: এনবিআর
৩৩০টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে এনবিআর
অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নয় এমন ৩৩০টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের জন্য কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
শনিবার বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে দেশে কোনও প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা হয়নি। আমদানি নিরুৎসাহিত করতে কতটা শুল্ক বাড়ানো যায় তা মূল্যায়ন করছে বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশন এবং এনবিআর।
আরও পড়ুন: বড়ধরনের কর ফাঁকির জন্য লোকসান গুনছে এনবিআর
বাণিজ্য সচিব সাংবাদিকদের বলেন, এসব পণ্য নিয়ন্ত্রণ করে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব।
বাংলাদেশ সরকার আমদানি নিরুৎসাহিত করতে গত মে মাসে ১৩৫টি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছিল।
তারপরও বাণিজ্য ঘাটতি খুব একটা কমেনি। ফলে অন্য কোনও পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো যেতে পারে কি না তা যাচাই করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশনকে অনুরোধ করে বলে জানায় সূত্রটি।
সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে কমিশন ৩৩০টি পণ্যের তালিকা তৈরি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। পরে মন্ত্রণালয় তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠায়।
প্রধানত বিলাসিতা এবং কম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পণ্য তালিকায় প্রাধান্য পায়।
আরও পড়ুন: প্রথম ত্রৈমাসিকে রাজস্ব সংগ্রহ ১৩% কমেছে: এনবিআর
২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ট্যাক্স রিটার্ন ডকুমেন্ট লাগবে না: এনবিআর
ভ্যাট ফাঁকি রোধে ১০ হাজার ইএফডি বসাবে এনবিআর
মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ফাঁকি রোধে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য বড় শহরে ১০ হাজার ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস (ইএফডি) বসাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
২০২২-২৩ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন চেইন ও সুপার শপে ইএফডি বসানোর জন্য বরাদ্দ রেখেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
ইএফডি হলো ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার বা ইসিআরের উন্নত সংস্করণ এবং এটি এনবিআর আমদানি করে।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি ব্যবহার করা হলে ভ্যাটের টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনবিআরের প্রধান সার্ভারে স্থানান্তরিত হবে।
আরও পড়ুন: আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ১৩৫ পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ এনবিআরের
এনবিআর সূত্র জানায়, এই ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীরা বিক্রির তথ্য গোপন করতে পারবেন না এবং প্রতিদিনের লেনদেনের প্রকৃত তথ্য এনবিআরের সার্ভারে স্থানান্তরিত হবে যা জালিয়াতি কমাতে সাহায্য করবে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর লক্ষ্যে দুই বছর আগে ২০২০-২১ এর বাজেটে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস সিস্টেম চালু করা হয়।’
এরপর থেকে চার হাজার ৫৯৫টি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মোট ১০ হাজার ইএফডি মেশিন স্থাপন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে মেশিন স্থাপনের পাশাপাশি প্রোগ্রামটি সচল রাখার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি। এই পদক্ষেপের ফলে আশা করি ২০২৬ সালের মধ্যে ভ্যাট আদায় কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছাবে।’
আরও পড়ুন: এ বছরও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হতে পারে এনবিআর
এবারের বাজেটে এনবিআরের মাধ্যমে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট থেকে আসবে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা যা মোট আদায়ের ৩৭ শতাংশ।
এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়।
সব খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে এই মেশিন সিস্টেমের আওতায় আনা হলে রাজস্ব আয় বাড়বে বলে জানান তারা।
ঈদের ছুটিতে খোলা থাকবে কাস্টমস হাউস
২৯ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত (ঈদের দিন ছাড়া) সীমিত পরিসরে কাস্টমস হাউসগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
বুধবার এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম গতিশীল রাখতে এবং বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে ঈদুল ফিতরের ছুটি এবং সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাস্টম হাউসগুলোর কার্যক্রম সীমিত সময়ের জন্য খোলা থাকবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় কাস্টমস কর্মকর্তার ৮ বছর কারাদণ্ড
ভোজ্যতেলের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে সব ধরনের ভোজ্যতেলের ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহার করেছে সরকার।
সোমবার এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, সোমবার থেকে এই কর ছাড় কার্যকর হবে এবং আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।
তবে ব্যবসায়ীরা আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানালেও এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
আরও পড়ুন: ভোজ্যতেল আমদানিতে ১০ শতাংশ ভ্যাট কমানো হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
এর আগে বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ভোজ্যতেলের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
পরবর্তীতে তিনি বলেন, ভোজ্যতেল, চিনি, মটরসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক শিগগিরই প্রত্যাহার করা হবে।
এনবিআর সয়াবিন তেলের ওপর উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে পাঁচ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করে থাকে।
আরও পড়ুন: এনবিআরকে ভোজ্যতেল আমদানির ওপর ভ্যাট কমিয়ে সর্বনিম্ন করার নির্দেশ মন্ত্রিসভার
ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ভোজ্যতেলের আমদানির ওপর ভ্যাট ১০ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ভ্যাট পাঁচ শতাংশ কমানো হবে।
একই সঙ্গে ভোজ্যতেলের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানান তিনি।
বন্ডে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রচারণার পরিকল্পনা ঢাকার
কোভিড মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার কমপক্ষে পাঁচটি বন্ডে বিনিয়োগ উৎসাহিত করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ প্রস্তুত করছে।